মনের পিঞ্জরে শেষ পর্ব || Ariyana Nur

মনের পিঞ্জরে শেষ পর্ব
Ariyana Nur

৬ বছর পর…….
সময়ের সাথে সাথে মানুষ যেমন পরিবর্তন হয়।তেমনি মানুষের সাথে সাথে সম্পর্কও পরিবর্তন হয়।সময়ের সাথে সাথে কোন সম্পর্কের মধ‍্যে ফাটল ধরে অথবা কোন সম্পর্কের রুপ আস্তে আস্তে গভীর হতে থাকে।
জিদান সোফায় বসে একমনে ল‍্যাপটবে কাজ করছে।এমন সময় একটা ৩বছরের মেয়ে গুটিগুটি পায়ে জিদানের সামনে এসে দাড়িয়ে বলল…..

—মামা… মামা… মা তোমালে ডাতছে।
জিদান ল‍্যাপটব থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে তার মেয়ে জিনিয়া দাড়িয়ে রয়েছে।নিজের মেয়ের মুখে নিজেকে মামা বলে সম্মধোন করতে শুনে জিদান হতাশ হল।এটা যে কার শেখানো কাজ তাও জিদানের অজানা নয়।ইশরা প্রায় দিনই তাদের মেয়ে জিনিয়াকে শিখিয়ে দেয় জিদান কে মামা বলে ডাকতে।মা ভক্ত মেয়ে মা যা বলে তাই করে।এই নিয়ে জিদান,ইশরার সাথে রাগ করলে ইশরা দাত কেলিয়ে হেসে বলে…….

—আমি ভাইয়া বলতে পারলে মেয়ে মামা ডাকলে সমস‍্যা কোথায়?তুমি আমার দশটা না পাচটা না একটা মাত্র আপন চাচাতো ভাই।তাই তো মাঝে মাঝে একটু আকটু জিদ ভাইয়া বলে ডাকি সাথে মেয়েকে দিয়েও মামা ডাকাই।ভালো করি না বল?
এমন আরো উল্টাপাল্টা কথা বলে ইশরা,জিদানের মাথা উলট পালট করে দেয়।ইশরা এখনো সেই আগের দুষ্টুমি দিয়ে জিদানকে সব সময় রাগিয়ে রাখে।সবার কাছে ইশরা বড় হলেও জিদানের কাছে সে আগের মতই আছে।আগের মতই তার সকল পাগলামো জিদানকে ঘিরেই শুরু হয় আর জিদানের কাছেই শেষ।
জিদান ল‍্যাপটবটা পাশে রেখে মেয়েকে নিজের কোলে বসিয়ে বলল……

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—আম্মু পাপাকে কেউ কি মামা বলে ডাকে বল?এটা তো পচা মেয়েদের কাজ।আমার আম্মু কি পচা?
জিনিয়া,জিদানের কথা শুনে জিদানের দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে বলল……
—না আমি পতা না।আমি অনেত ভালো।
জিদান মেয়ের মাথায় আদর দিয়ে বলল…..
—তাহলে পাপাকে মামা বলে ডাকো কেন?আর ডেকো না ঠিকাছে?
জিনিয়া গাল ফুলিয়ে বলল…..
—তাইলে মা তেন বললো তোমালে মামা বলে ডাততে।
—তোমার মা তো দুষ্টু তুমি কি দুষ্টু?
জিনিয়া মাথা নাড়িয়ে বলল…..
—না আমি অনেত ভালো।
জিদান মেয়ের গালে আদর দিয়ে বলল….
—আমার গুড আম্মু।

ইশরাকে হাফসা বেগম শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছে।ইশরা মুখ ভাড় করে দাড়িয়ে রয়েছে।হাফসা বেগম শাড়ি পরাতে পরাতে ইশরার দিকে এক পলক তাকিয়ে বলল…..
—কিরে এমন মুখ ভাড় করে দাড়িয়ে রয়েছিস কেন?
ইশরা গাল ফুলিয়ে বলল……
—বড় মা আমি এমন কেন বলতো?এখন অব্দি শাড়ি পরতে পারি না।আমার দ্বারা বুঝি আর শাড়ি পরা শিখা হবে না।
ইশরার গাল ফুলানো কথা বলা দেখে হাফসা বেগম মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।ইশরা কাদো কাদো গলায় বলল…..
—বড় মা তুমি হাসছো।

হাসফা বেগম ইশরার কথায় কান না দিয়ে ইশরাকে আয়নার দিকে ঘুড়িয়ে বলল…..
—মাশাল্লাহ।আমার মেয়েটাকে কত সুন্দর লাগছে।কারো যেন নজর না লাগে।
—পেত্নীর উপর এমনিতেও কারো নজর লাগবে না।
কথাটা বলতে বলতে জিদান,জিনিয়াকে কোলে নিয়ে রুমে প্রবেশ করল।ইশরা,জিদানের দিকে তাকিয়ে বলল……
—বড় মা দেখো তোমার ছেলে আমাকে পেত্নী বলছে।কিছু বল।
হাফসা বেগম জিদানের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলল……
—জিদান তুই আমার মেয়েকে পেত্নী বলছিস কেন?কোন দিক দিয়ে ওকে পেত্নী
লাগছে।

জিনিয়াও তার দাদুর সাথে তাল মিলিয়ে বলল……
—পাপা তুমি মাতে পিতনি বলতো তেন?
জিনিয়া কিছু একটা ভেবে মাথা চুলকিয়ে বলল…..
—মা পিতনি কি?
জিনিয়ার কথা শুনে জিদান হাসতে হাসতে বলল……
—মা তোমার নাতনীকে এবার বল পেত্নী কি?আমি ওকে বুঝাতে গেলে কিন্তু এখানে ভূমিকম্প শুরু হয়ে যাবে।
ইশরা,জিদানের দিকে কয়েক সেকেন্ড রাগি চোখে তাকিয়ে থেকে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল……
—আম্মু বল তো মাকে কেমন লাগছে?
জিনিয়া মায়ের দিকে গোল গোল চোখ করে তাকিয়ে থেকে বলল…….
—অনেত সুন্দর লাগছে।আমিও ছালি পরবো।
হাফসা বেগম জিনিয়াকে কোলে নিয়ে বলল…..
—চল দাদু আমি তোমায় শাড়ি পরিয়ে দেই।
হাফসা বেগম জিনিয়াকে নিয়ে চলে যেতেই জিদান ইশরার সামনে দাড়িয়ে ইশরার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…..
—হঠাৎ শাড়ি পরলে যে?

ইশরা মাথা ডলতে ডলতে জিদানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলল……
—মারলে কেন?
—মেয়েকে আবার মামা বলতে বলেছো কেন?
—যা করেছি বেশ করেছি আরো করবো।এবার মেয়েকে দিয়ে দিন রাত মামা ডাকাবো।দেখি তখন কি করিস?
জিদান,ইশরার মাথায় শাড়ির আচল টেনে দিয়ে বলল……
—এমনিতেই তোকে ভংকর সুন্দর লাগছে।এর মধ‍্যে আর রাগ করিস না।তাহলে কিন্তু তোর দিক থেকে চোখ সরাতে পারবো না ইশু।তখন কিন্তু সবার কথা শুনে তুইও লজ্জা পাবি।
ইশরা,জিদানের হাতে চাপর মেরে রাগি গলায় বলল…..
—মিথ‍্যাবাদী মিথ‍্যা বলার জায়গা পাওনা।একটু আগে বললা পেত্নী লাগছে।এখন আসছে তেল মাখতে।
জিদান মুচকি হেসে ইশরাকে জরিয়ে ধরে বলল……
—কোনটা মনের কথা কোনটা মুখের কথা সেটাও কি বুঝিস না।তুই শুধু আমার।পেত্নী হলেও আমার থাকবি পরি হলেও।
ইশরা জিদানের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলল……
—আমাকে না রাগালে হয় না?আরেক বার পেত্নী বললে সব সাজ নষ্ট করে দিবো কিন্তু বলে দিলাম।
জিদান,ইশরার নাক টেনে দিয়ে বলল…..
—পাগলী।
ইশরা কিছু না বলে জিদানকে ভেঙচি কাটলো।

সান অফিস থেকে বাসায় আসতে না আসতেই একটা চার বছরের মেয়ে দৌড়ে এসে সান এর কোলে উঠে সান এর গলা জড়িয়ে ধরে কাদো কাদো গলায় বলল…..
—পাপা পাপা জানো মা না আমাকে আজ অনেক বকেছে।বলেছে আমি না পচা।একটুও ভালো না।বলেছে রিদান ভাইয়া ভালো।(রিধির ছেলে)বল পাপা আমি কি অনেক পচা?
মেয়েটা আর কেউ না সান আর ইশফার মেয়ে সাইফা।সাইফা তার বাবা ভক্ত।বাড়িতে সারাদিন কি হয় না হয় সান বাড়িতে আসতে না আসতেই টেপ রেকর্ড এর মত সব গড়গড় করে সানকে বলতে থাকে।
সান মেয়ের গালে আদর দিয়ে বলল…..

—না মা তুমি তো আমার পিন্সেস।আমার লিটল পরি।তুমি কি পচা হতে পারো।
সাইফা গাল ফুলিয়ে বলল…..
—তাহলে মা বললো কেন আমি পচা?আমি কিছু জানি না তুমি মাকে বকে দাও।
সান এর কথার আওয়াজ পেয়ে ইশফা কিচেন থেকে বের হয়ে ওড়নার এক কোনে হাত মুছতে মুছতে বলল……
—শুরু হয়ে গেছে পাপার আদরের দুলালীর পাপার কাছে নালিশ করা।
সান ইশফার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল……
—তুমি আমার মেয়েকে বকেছো কেন?
কোন সাহসে তুমি আমার মেয়েকে বকেছো?
ইশফা কাপাল ভাজ করে সান এর দিকে তাকিয়ে বলল……
—তোমার বিচ্ছু মেয়েকে যে দুটো লাগাইনি সেটাই তোমার মেয়ের ভাগ‍্য।ফাজিল মেয়ে সারাদিন আমাকে জ্বালিয়ে মারে।পুরো বাপের মত হয়েছে।রাগ যেন নাকের ডগাই থাকে।মন মত না হলেই ভাংচুর শুরু।আরো দেও মেয়েকে আল্লাদ।
ইশফা সানকে ইচ্ছে মত ঝেড়ে দিয়ে নিজের কাজ করতে চলে গেলো।সান বোকার মত ইশফার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
সাইফা মাথায় হাত দিয়ে বলল…..

—উফ পাপা তোমায় বললাম মাকে বকে দিতে এখন দেখি মা তোমায় বকে গেলো।
সাইফার কথা শেষ হতে না হতেই পিছন থেকে সিনথিয়ার হাসির শব্দ পাওয়া গেলো।সিনথিয়া হাসতে হাসতে সামনে এসে বলল……
—ভাইয়া দেখলি তো আমার দোয়া অক্ষরে অক্ষরে আল্লাহ্ কবুল করেছে।তোর সব হিরোগিরি শেষ।ভাবি তোকে বাঘ থেকে বিড়াল বানিয়ে দিয়েছে।
সান সিনথিয়ার মাথায় গাট্টা মারতেই সিনথিয়া চেচিয়ে বলল……
—ভাবি দেখো ভাইয়া আমায় মারছে।
ইশফা কিচেন থেকে চেচিয়ে বলল……
—ভাই তোমাদের মধ‍্যে আমায় টেনো না।আম্মু এখানেই আছে আম্মুকে বল।
মিসেস শিকদার ইশফার পাশে দাড়িয়ে কাজ করছে।ইশফার কথা শুনে তিনি জোর গলায় বললেন…….
—এই একদম না।তোদের ঝামেলা তোরাই মিটা।আমাদের টানবি না।আমাদের মা,মেয়েকে শান্তিতে কাজ করতে দে।দরকার পরলে সামনে যে বড় জজ আছে তার কাছে নালিশ দে।
ইশফা কাজ করতে করতে বলল…….

—মেয়েটা দিন দিন পাজি হয়ে যাচ্ছে মা।একদম আপনার ছেলের মত হয়েছে।কারো কথাই শুনে না।সারাদিন শুধু দুষ্টুমো।
—ছেলে কেন আমার মেয়েটা কি কম পাজি নাকি।বাবা,মা দুজনই তো পাজি।শুধু শুধু আমার নাতনীর দোষ দিচ্ছো কেন?
ইশফা গাল ফুলিয়ে বলল……
—মা আমি পাজি?আপনি আমাকে এভাবে বলতে পারলেন?
মিসেস শিকদার মিষ্টি হেসে বলল…….
—তুমি তো আমার মিষ্টি পাজি মেয়ে।যে সব সময় তার মিষ্টি শাষন দিয়ে আমাদের আগলে রাখে।সাথে আমার পাজি ছেলেটাকে টাইট দিয়ে রাখে।যে নিজের সরলতা, কোমলতা দিয়ে আমাদের মনে নিজের জায়গা করে নিয়েছো।
ইশফা এক গাল হেসে বলল…….
—আম্মু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।এমনিতেই দিন দিন ফুলে যাচ্ছি।এতো প্রশংসা করলে আরো ফুলে যাব।
মিসেস খান মুচকি হেসে ইশফার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল……
—পাজি মেয়ে।সাধে কি আর পাজি বলি।
সান সিনথিয়ার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…..

—পেত্নী তোকে বিয়ে দিয়েছি কি এখানে পরে থাকার জন‍্য।যা শশুর বাড়ি যা।
সাইফা সান এর দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে বলল…….
—পাপা তুমি জানো না আঙ্কেল বিদেশে গেছে।ফুপিমনি একা বাসায় ভয় পাবে না বল।আমার ফুপি মনির কিছু হয়ে গেলে আমি ফুপিমনি কোথায় পাবো?
সিনথিয়া সাইফাকে কোলে নিয়ে বলল……
—ওলে আমার ফুপি মনিটারে।আমার জন‍্য কত আদর।(সান এর দিকে তাকিয়ে)
মেয়ের থেকে কিছু শিখ।
সিনথিয়া সাইফার গালে আদর দিয়ে বলল…..
—চল ফুপিমনি আমরা আঙ্কেল কে ফোন করে বলি তোমার জন‍্য সুন্দর সুন্দর খেলনা পাঠাতে।
সাইফা খুশি হয়ে বলল……
—চল চল।
সান হতাশ হয়ে বলল…….
—কি দিন আসলোরে সান কেউ তোরে পাত্তাই দেয় না।

সান ফ্রেস হয়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে ইশফা হাতে জুস নিয়ে দাড়িয়ে আছে।সান গাল ফুলিয়ে ইশফার পাশ কেটে বেডে গিয়ে হেলান দিয়ে বসে পরল।ইশফা মিষ্টি হেসে জুস এর গ্লাসটা সাইড টেবিলে রেখে সান এর সামনে বসে সান এর বাহু জরিয়ে ধরে সান এর কাধে মাথা রেখে বলল……
—রাগ করেছো?
সান কিছু না বলে চুপ করে রইল।ইশফা সান এর থেকে কোন উওর না পেয়ে আবার বলল…..
—কি হল কথা বলছো না কেন?
সান গম্ভীর গলায় বলল……
—ছাড়ো আমায়।ভালো লাগছে না।
সানের কথা শুনে ইশফা আরেকটুকু সানকে ঝেকে ধরে বলল…….
—বললেই হল।ছেড়ে দিব এতো সহজ ছাড় পাওয়া।কান খুলে শুনে রাখুন মিঃসূর্য আপনাকে ধরতে আমার আপনার পারমিশন লাগে না।বুঝেছেন মিঃ।
সান ইশফার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল……
—সারাজীবন এমনটাই থেকো আমার বাঘিনী হয়ে।
ইশফা নরম গলায় বলল……
—আছি তো তোমার পাশে তোমার বাঘিনী হয়ে।

দেখতে দেখতে চোখের পলকে ছয় ছয়টা বছর পার হয়ে গেছে।এই ছয় বছরে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে।ছয় বছর আগে ধুমধাম করে ইশফা,সান, ইশরা, জিদান,ইশান,তুশির একসাথে বিয়ে হয়।
এক বছরের ব‍্যবধানে দু’বোনের ঘর আলো করে কন্যা সন্তানের আগমন হয়।
শফার মেয়ের বয়স চার বছর আর ইশরার মেয়ের বছর তিন।ইশান আর তুশির সাড়ে চার বছরের একটা ছেলে আছে।হেনা,শিপন,লিপি,সিনথিয়া সবারই বিয়ে হয়ে গেছে।সবাই সবাই সাংসারিক জীবন নিয়ে ব‍্যাস্ত।নিরব,রিধি তাদের ছেলেকে নিয়ে এক বছর ধরে বাহিরে সেটেল হয়েছে।

মনের পিঞ্জরে পর্ব ৫০+৫১+৫২+৫৩

মানুষকে একদিন না একদিন তার কর্মের ফল ভোগ করতে হয়।হোক সেটা মৃত্যুর পরে বা পূর্বে।দু’বছর হল আওলাদ খান মারা গেছেন।দীর্ঘ দিন তিনি বিছনায় পরা ছিলেন।দু’পা প‍্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিলো তার।গলায় ঘা হয়ে যাওয়াতে কোন মত একটু জুস, ফলের রস খেয়েই দিন কাটিয়েছে।ক্ষুধার জ্বালায় খাবার খাওয়ার জন‍্য ছটফট করলেও কিছু খেতে পারেনি।মৃত‍্যুর আগে শরীরের অনেক অনেক জায়গায় ঘা হয়ে পচন ধরে গিয়েছিলো তার।অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পরে থেকেও মনের মধ‍্যে একটু অনুসুচনা তৈরি হয়নি।নিজের রাগটাকে সে মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত ধরে রেখেছে।তার অসুস্থতার খবর পেয়ে জিদান আর ইশরার স’পরিবার তাকে দেখতে যাওয়াতে দূর দূর করে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে।জিদান আগেও তাকে নানান ভাবে মানানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি।সে তার কথাই অটুল ছিলেন।দীর্ঘ দিন প্রতি নিয়িত মরন যন্ত্রণা সহ‍্য করতে করতে সে পরকালে গমন করেন।আওলাদ খানের মৃত্যুর পর জিদান হাফসা বেগমকে তার কাছে নিয়ে আসেন।আর আওলাদ খান যে সব টাকা পয়সা রেখে গিয়েছিলো তা মসজিদ, মাদরাসা আর গরিবদের মাঝে দান করে দেন।সেখান থেকে কানা করিও জিদান নিজের কাজে খরচ করেনি।

এলি খারাপ বন্ধুদের চক্রে পরে ড্রাগ এডিকট্রেড হয়ে এখন ট্রিটমেন্টের উপর আছে।এলি দীর্ঘদিন ট্রিটমেন্ট নেওয়ার পর কিছুদিন ভালো থাকে তারপর আবার সেই আগের মত হয়ে যায়।
ছয় বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি সান,ইশফা,ইশরা,জিদান এর ভালোবাসা।সাময়ের সাথে সাথে তাদের ভালোবাসা গভীর থেকে গভীর হতেই চলেছে।এভাবেই যেন চলতে থাকে তাদের জীবন।একে অপরের ভালোবাসা, দুষ্টু,মিষ্টি খুনসুটি দিয়ে।

~~~~~~সমাপ্ত~~~~~~

(লেখাঃ Ariyana Nur) এই লেখিকার আরও লেখা গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন এবং এই গল্পের সিজন ২ পড়তে চাইলেও এখানে ক্লিক করুন