মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না গল্পের লিংক || সাদিয়া জাহান উম্মি

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ১
সাদিয়া জাহান উম্মি

-‘ তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে মেয়ে।তুমি কি আমার ছোটো নাত বউ হবে?রানি করে রাখব তোমায়।এটা এই বুড়ো দাদুর প্রমিস।’
হঠাৎ এহেন একটা কথা অথৈর কর্ণকুহরে এসে পৌছতেই চকিত দৃষ্টিতে তাকায় অথৈ।অবাক দৃষ্টিজোড়া নিবদ্ধ করলো তার পাশে হাস্যজ্জ্বল মুখে দাঁড়ানো একজন বয়স্ক লোকের দিকে।ভার্সিটি শেষে বন্ধুদের বিদায় দিয়ে বাসার দিকেই যাচ্ছিলো অথৈ।রিকশা না পাওয়ায় ওকে হেটেই যেতে হচ্ছিলো।কিন্তু হঠাৎ করে কেউ এসে এমন একটা কথা বলবে ভাবতেও পারিনি ও।অথৈ নিজের ভাবভঙি পরিবর্তন করে নিলো মুহূর্তেই।কঠোরভাবে বলে উঠল,’ এসব আপনি কি বলছেন? মাথা ঠিক আছে আপনার?’

সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তিটি হলেন আতিক মাহাবুব মির্জা।বয়স তার সত্তর পেরিয়েছে।কিন্তু তাকে দেখলে তা মনে হয় না।তার সারা শরীরে যেন আভিজাত্যের ছোঁয়া।এখনও সে তার বয়সের তুলনায় অনেকটা ফিটফাট আছেন।তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট। অথৈকে একদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কয়েকটা লম্প’ট ছেলেদের পেটাতে দেখেছিলো।মূলত ওই ছেলেগুলো একটা মেয়েকে হ্যারাস করছিলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সেই কারনেই অথৈ আর তার বন্ধুরা মিলে ওই ছেলেগুলো কেলিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিলো।সেইদিনই আতিক মাহাবুবের অথৈকে পছন্দ হয়ে যায়।যে করেই হোক এই মেয়েকে তার নাতবউ তিনি বানাবেনই মনে মনে পণ করে নেন।সেই থেকে মেয়েটার পিছনে লোক লাগিয়েছে রেখেছেন উনি।কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চুপচাপ থাকলেও আজ অথৈকে রাস্তায় দেখে।আর নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।এদিকে অথৈ ভাবছে।

এই লোকের বোধহয় মাথা টাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।নাহলে মাঝ রাস্তায় এইভাবে কোনো মেয়েকে তার নাতিকে বিয়ে করার জন্যে প্রস্তাব কে দেয়?রাগ লাগছে অথৈর।এমনিতেই গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার।যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি যেতে চাইছে ও।কিন্তু এখন আবার এই ঝামেলা। অথৈকে এইভাবে রাগে চোখ মুখ লাল করে তাকিয়ে থাকতে দেখে শুকনো ঢোক গিলল আতিক মাহাবুব মির্জার এসিস্ট্যান্ট সিয়াম।সে ফিসফিস করে আতিক মাহাবুবের কানে কানে বলল,’ স্যার, মেয়েটাকে আমার সুবিধার লাগছে না।যেই হারে রাগে লাল হয়ে গিয়েছে।কখন জানি বো’মা টোমা মেরে আমাদের না উড়িয়ে দেয়।’

সিয়ামের কথায় বেজায় বিরক্ত হলেন আতিক মাহাবুব।বললেন,’ আহ,সিয়াম তুমি একটু চুপ থাকবে? আর এতো নড়ছ কেন?’
‘ নড়ছি কি আর ইচ্ছে করে স্যার?এই মেয়ে যেই ভয়া’কর রাগি।বলা তো যায় নাহ কি থেকে, কি করে ফেলে।চলুন নাহ স্যার।আমরা বাসায় চলে যাই।’
‘ জাস্ট সাট-আপ সিয়াম’

আতিক মাহাবুবের ধমকে সিয়ামের মুখটা একটুখানি হয়ে গেলো।তবে ভয়ের পরিমান বিন্দু মাত্র কমেনি।স্যার আর কিভাবে বুঝবে তার কষ্ট।সে তো আর জানে না।এই মেয়ে তার কি অবস্থাটাই না করেছিলো।আতিক মাহাবুবের কথা মতো।দুজন গার্ড অথৈর জন্যে বরাদ্ধ করে রেখেছিলো।যারা সর্বদা অথৈর আশেপাশে থাকে।কিন্তু এই মেয়ে যে এতো চালাক তা ওরা বুঝতে পারেনি।

অথৈকে যে তারা ফোলো করছে বিষয়টা বুঝতে পেরে সেই গার্ড দুটোকে ধরার জন্যে তাড়া করা শুরু করে দিয়েছিলো ওর বন্ধুদের নিয়ে।গার্ডস’রা উপায় না পেয়ে সিয়ামকে ফোন করেছিলো।গার্ডসদের দিক নির্দশনা দিয়ে সিয়াম তাড়াতাড়ি রওনা হয়ে গার্ডসদের কাছে যাওয়ার জন্যে।লোকেশন মোতাবেক পৌছে দেখে অথৈ আর তার বন্ধুরা অলরেডি গার্ডস দুটোকে ধরে ফেলেছে।সিয়াম চোখে সানগ্লাস আর মুখে মাস্ক পরে দ্রুত তাদের কাছে গিয়েছিলো।অনেক বলে কয়েও অথৈ আর তার বন্ধুদের বোঝাতে পারেনি সিয়াম।

অথৈর ভাষ্য মতে গার্ডস দুটো মেয়ে পাচার কারি।আর এখন সিয়ামও নাকি তাদের সাথে সংযুক্ত।উপায় না পেয়ে সিয়াম গার্ডসদের ইশারা করল অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার স্প্রেটা অথৈদের উপর প্রয়োগ করার।গার্ডসরা ইশারা বুঝতে পেরে তাই করল।অথৈর সাথের বন্ধুদের অজ্ঞান করতেই সিয়াম গার্ডসদের বলল চলে যেতে।অথৈকে কিছু করেনি।কারন ওকে কিছু করলে আতিক মাহাবুব ওকে আস্ত রাখবে নাহ।

অথৈ যেন এতে আরও হিংশ্র হয়ে যায়।সিয়াম পালাবার পায়াতারা করার আগেই অথৈ রাগে ফোসফাস করতে করতে দৌড়ে এসে সিয়ামের মেইন পার্টস বরাবর জোড়েসোড়ে একটা কিক মেরে বসে।সিয়াম সেখানে হাত চেপে ধরে ব্যথায় জোড়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে বসে পরে।গার্ডস দুটো সিয়ামের এমন করুণ অবস্থা দেখে,আবারও দৌড়ে সিয়ামের কাছে আসে।অথৈর মুখেও স্প্রে ছিটিয়ে দেয়।ফলে অথৈও অজ্ঞান হয়ে যায়।তারপর বিশাল দেহী গার্ডসগুলো সিয়ামকে কাধে উঠিয়েই সেখান থেকে পালিয়ে যায়।সিয়াম পাক্কা তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলো।

অবশ্য অথৈকেও তিনি দোষ দেন নাহ।কারন এইভাবে একটা মেয়েকে অলটাইম ফোলো করলে।সেই মেয়েটার মনে তাদের নিয়ে বাজে ভাবনা আসবে এটা স্বাভাবিক।অথৈকে তারও অনেক পছন্দ হয়েছে।কারন কজনই বা পারে এইভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে? সব দোষ তো তার স্যারের।তার কারনেই সেদিন আর একটু হলেই সিয়ামের প্রাণ বেড়িয়ে যেতো।সেইদিনের ঘটনা মনে করেই।আজ অথৈকে দেখে তার ভয় লাগছে।

সিয়াম ভয়ার্ত চোখে অথৈ’র দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলল,’ স্যার! আপনি তো আর জানেন না এই মেয়ে কি ড্যাঞ্জারাস।সেদিন কি লা’ত্থিটাই না মে’রেছিল আমাকে।আর একটু হলেই আমার বংশের বাতিটাই নিভে যেতো।আমার বউ আমাকে ফেলে চলে যেতো।তবে উপরওয়ালার কৃপায় আমি বেঁচে গিয়েছি।কিন্তু দ্বিতীয়বার আর এমন কিছু সম্মুখীন আমি হতে চাই না স্যার।’

আতিক মাহাবুব সিয়ামের কাঁপাকাঁপি দেখে মহাবিরক্ত হলেন।এই গাধাটাকে নিয়ে কোনো কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব নাহ।কি মিষ্টি তার নাতবউ।তাকে দেখে এমন কাঁপাকাঁপি করার কি আছে আজব?আতিক মাহাবুব অথৈকে উদ্দেশ্য করে নরম গলায় বলেন,’ তুমি ভারি মিষ্টি একটা মেয়ে।তাই তো বললাম তোমাকে আমার অনেক ভালো লেগেছে।আমার ছোটো নাতির বউ করে নিয়ে যেতে চাই তোমায় বোন।’

আতিক মাহাবুবকে এতো নম্র ভাষায় কথা বলতে দেখে কিছুটা নরম হয়ে আসে অথৈ।কারন ওর বাবা মা সবসময় বলেছেন অকারনে গুরুজনদের সাথে কোনো প্রকার বাজে আচরণ না করতে।যাতে তারা মনে কষ্ট পায় এমন কথাও বলতে নাহ।অথৈ জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলল।রাগটা দমিয়ে নিয়ে কণ্ঠে যথাসম্ভব ভদ্রতা বজায় রেখে বলল,’ আমাকে যেহেতু আপনার এতোই পছন্দ হয়েছে। আপনি এক কাজ করুন দাদু।আপনি আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান।আমার মা বাবা যদি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।তবে আমারও কোনো আপত্তি থাকবে নাহ।’

আতিক মাহাবুব ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলেন।তিনি মনে মনে ধারণাই করে নিয়েছিলেন অথৈ এমন একটা কথাই বলবে।এতোদিন যাবত মেয়েটাকে দেখে আসছেন যে তিনি।আতিক মাহাবুব হেসে বলেন,’ এটা তো আরও উত্তম কথা বললে।আমি এটাই করব।খুব শীঘ্রই আমার ছোটো নাতিকে নিয়েই তোমাদের বাড়ি যাবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।’
এ কোন পাগলের পাল্লায় ফেললে তুমি আল্লাহ্।মনে মনে কথাটা বলেই অথৈ জোড়পূর্বক হেসে বলে,’ জি অবশ্যই যাবেন।তাহলে আমি যাই দাদু।আসলে ভীষণ ক্লান্ত আমি।’

‘ হ্যা হ্যা অবশ্যই। সাবধানে যেও।’
অথৈ আতিক মাহাবুব থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত কেটে পরল।আতিক মাহাবুবও গাড়িতে উঠে বসলেন।সিয়াম এসে উনার পাশে বসতেই তিনি শান্ত কণ্ঠে বললেন,’ আমার দাদু ভাইয়ের জন্যে এই মেয়েই পার্ফেক্ট সিয়াম।ওর থেকে উত্তম মেয়ে আমি আর খুঁজে পাবো নাহ।বাঘের সাথে তো বাঘিনীকেই মানায় বলো?তাই নাহ?’
‘ তা যা বলেছেন স্যার।’
‘হুম।চলো যাওয়া যাক।’
অতঃপর আতিক মাহাবুব মির্জা আর সিয়াম গাড়ি স্টার্স্ট দিয়ে নিজের গন্তব্যে চলে গেলেন।

মির্জা বাড়িতে বসার ঘরে সবাই উপস্থিত।আতিক মাহাবুব মির্জা হচ্ছেন সকলের মধ্যমণি।তিনি সবাইকে ডেকেছেন জরুরি কথা বলার জন্যে।কিন্তু যার বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। সে নিজেই এখানে উপস্থিত নেই।আর তিনি হলেন এই মির্জা বাড়ির ছোটো নাতি আরিহান রুদ্রিক মির্জা।

আতিক মাহাবুব মির্জার একমাত্র ছেলে আরহাম মাহাবুব মির্জার, দুই ছেলে বড়ো ছেলের নাম আরিয়ান আশরিফ মির্জা আর ছোটো ছেলে আরিহান রুদ্রিক মির্জা।বাবা আর দাদুর ছায়াতলেই বড়ো হয়েছে তারা।কারন তাদের মা রুদ্রিকের তিন বছর বয়সের সময় মারা গিয়েছিলেন। আর তাদের দাদি তো আরিয়ানের জন্মের আগেই মারা গিয়েছেন।আরিয়ানের বিয়ে হয়েছে বছর চারেক হবে।তার স্ত্রীর নাম রোজা।মেয়েটা ভারি মিষ্টি।এদিকে আতিক মাহাবুব মির্জা তার বড়ো নাত বউকে উদ্দেশ্য করে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,’ বড়ো নাত বউ রুদ্রিক কোথায়?’

রোজা দাদুর পাশে বসে পরল।তারপর মিষ্টি হেসে বলে,’ দাদুভাই এতো হাইপার হচ্ছেন কেন?রুদ্রিক কেমন আপনি তা জানেন নাহ?এখনও বাড়ি ফিরেনি।বাহিরে বন্ধুদের সাথে আছে বোধহয়।’
‘ ওর কারনে আমি এই দুপুরের টাইমে আরহাম আর আরিয়ানকে অফিস থেকে ডেকে আনালাম।তারা এসে হাজির।আছে ওইটার এখনও খবর নেই।’

আরিয়ান বলে উঠল,’ দাদু তুমি শুধু শুধুই এসব করছ।তুমি তো জানোই রুদ্রিক বিয়ের জন্যে রাজি হবে নাহ।’
‘ হ্যা বাবা।আরিয়ান ঠিক বলছে।ওকে ওর মতো থাকতে দেও।’ আরহাম মাহাবুব বলে উঠলেন।
‘ সেটা আমি বুঝে নেব।’ আতিক মাহাবুবের কথা শুনে আরহাম সাহেব বিরবির করলন,’ কতো বুঝ তুমি।সেই তো রুদ্রিক আসলে আমাদের দিয়েই সব বলাতে চাও।তখন তো তোমার এতো দাপট কোথায় পালায় বাবা?’

আরিয়ান হেসে দিলো আরহাম সাহেবের কথা শুনতে পেয়ে।এদিকে ছেলেকে হাসতে দেখে আরহাম সাহেব চোখ রাঙালেন।
এদিকে তাদের কথপকথনের মাঝে হঠাৎ করে কেউ এসে দুম করে বসে পরল আতিক মাহাবুবের সামনের সোফায়।আতিক মাহাবুব প্রথমে চমকে গেলেও পরিমুহূর্তে নিজেকে সামলে নেন।কারন এসব তার গুনোধর ছোটো নাতি ছাড়া আর কেউ করবে নাহ।বেশ আয়েশ করে সোফায় বসে আছে রুদ্রিক।

অত্যন্ত সুন্দর উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের এই যুবক দেখতে। লম্বাচূড়া,পেশিবহুল শরীরের অধিকারি এই ছেলেটিকে যে একবার দেখবে সেই প্রেমে পরতে বাধ্য হবে।এক কথায় রুদ্রিক অত্যন্ত সুদর্শন একজন ছেলে।আতিক মাহাবুবকে দেখে রুদ্রিক ভ্রু নাচালো।এতোক্ষণের সঞ্চয় করা সাহস সব হাওয়ার সাথে উড়ে গেল।।নাতির বিরক্তি ভরা কুচকানো মুখশ্রী দেখে আতিক মাহাবুব বুঝলেন।তার নাতির মুড ভালো নেই। কিন্তু আজ তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল।যে করেই হোক আজ বিয়ের কথা তিনি বলবেনই।আতিক মাহাবুব নরম কণ্ঠে বললেন,’ কোথায় গিয়ে ছিলিস?তোর বাবা আর ভাই সেই কখন অফিস থেকে এসে পরেছে।’

‘ কাজ ছিলো দাদু।’
‘ কি এমন কাজ শুনি?’
‘ ওহ তুমি বুঝবে নাহ।এখন বলো কি বলবে?যার জন্যে এইভাবে ডেকে আনিয়েছ?’
আতিক মাহাবুব নড়ে চড়ে বসলেন।ইশারা দিলেন ছেলেকে বলার জন্যে কথাটা।আরহাম সাহেব মাথা দুলিয়ে না করলেন।মানে তিনি বলতে পারবেন নাহ।

আরহাম সাহেব আরিয়ানকে খোচাখুচি শুরু করলেন।আরিয়ান বিরক্ত হলো এদের এমন বাচ্চামো কান্ডে।কিন্তু ও নিজেই তো সাহস পাচ্ছে না।তাই ইশারা করল রোজার দিকে।রোজা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।প্রতিবার এমনটাই হয়।ঘুরফিরে তাকেই রুদ্রিককে সব বলতে হয়।রোজা রুদ্রিকের উদ্দেশ্যে বলল,’ দাদু এমননি বাবা আর তোমার ভাইও চাচ্ছেন তুমি বিয়ে করে নেও এইবার।দাদুর একটা মেয়েকে ভীষণ পছন্দ হয়েছে।তিনি চাচ্ছেন তুমি তার সাথে গিয়ে মেয়েটাকে দেখে আসো।’

রুদ্রিক তার ভাবির কথা শুনে লম্বা শ্বাস ফেলল।তার দাদু বিগত কয়েকটা দিন যাবত এইভাবে হাত ধুয়ে পরেছেন।তাকে বিয়ে করানোর জন্যে।এইবার বোধহয় তাকে আর রেহায় দিবেন নাহ।যাক কোনোরকম মেয়েটাকে দেখে আসতে পারলেই হলো।তারপর নাকচ করে দিবে।বলবে মেয়ে পছন্দ হয়নি।রুদ্রিক উঠে দাড়ালো।সবার উদ্দেশ্যে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,’ দাদুকে বলে দেও তার পছন্দের মেয়েকে আমি দেখতে যেতে রাজি।তবে সেটা আমার সময় মতো।আমি ফ্রি সময় পেলে জানিয়ে দিবো।আর মেয়ে দেখতে গিয়ে যদি মেয়ে পছন্দ না হয়।তাহলে তার পছন্দ করা মেয়ের সাথে আমি তাকেই বিয়ে দিয়ে তবেই শান্ত হবো। কথাটা কানে ভালোভাবে ঢুকিয়ে নিতে বলো তাকে।’

এই বলে রুদ্রিক গটগট পায়ে নিজের রুমে চলে গেলো।এদিকে রুদ্রিকের লাস্ট কথা শুনে আরহাম সাহেব,আরিয়ান আর রোজা হেসে দিলো।রোজা হাসতে হাসতে বলল,’ দাদু বিয়ের করার জন্যে তৈরি থেকো।কারন রুদ্রিক তো জীবনেও এসে বলবেনা যে ওর মেয়ে পছন্দ হয়েছে।কারন ও তো বিয়েই করতে চায় নাহ।’
আতিক মাহাবুব সবাইকে হাসতে দেখে উঠে দাঁড়ালেন।নিজের রুমের দিকে যেতে যেতে বললেন,’ সেটা তো সময়ই বল দিবে বড়ো নাত বউ।তখন দেখব তোমাদের সঙ্গে এতো হাসি কোথায় যায়?’

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন।আবারও ফিরে আসলাম নতুন গল্প নিয়ে।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।সবাই লাইক কমেন্ট করে পাশে থাকবেন।আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যগুলোই কিন্তু আমাকে লিখার অনুপ্রেরণা দেয়।

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ২