মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ৫৪

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ৫৪
সাদিয়া জাহান উম্মি

রিধি লুকিয়ে লুকিয়ে থাকছে।ইহান ওকে যেই থ্রেড দিয়েছে।না লুকিয়ে উপায় আছে?ইহানকে দেখতে পেলেই।এই কতোক্ষন অথৈয়ের পিছনে লুকোচ্ছে তো আবার পিহুর পিছনে।নাহলে আবার আহিদ আর প্রিয়ানের পিছনে।ওর এমন লুকোচুরিতে বেজায় বিরক্ত সকলে।আহিদ দাঁত কিরমির করে বলে উঠে,

‘ তুই যদি একবার এই কেঁউচ্ছার (কেঁচো) মতো এর পিছনে ওর পিছনে চিপকাস ?তাইলে আমি নিজে তোরা টাইন্না নিয়া ইহানের ভাইয়ের কাছে দিয়া আসমু।সত্যি কইতাছি।’
রিধি কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকালো আহিদের দিকে।বলে উঠল,
‘ তুই না আমার জিগরি দোস্ত।তুই এমন কথা কইতে পারলি আমারে? ‘
‘ তুই যেই কির্তি করতাছস না কইরা উপায় নাই।’
পিহু হেসে বলে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ কি এমন থ্রেড দিয়েছে ভাইয়া?যে তুই এমন ভয়ে আছিস?’
রিধি দুঃখী দুঃখী ফেস করে বলে,
‘ আর বলিস না।সেদিন হাসপাতালে একটু দুষ্টুমি করেছিলাম।এরজন্যে সে আমাকে টেক্সট করে থ্রেড দেয়।আমাকে নাকি বাগে পেলে নাকি কঠিন শাস্তি দিবে।’
অথৈ ঝুকে আসল রিধির কানের কাছে।দুষ্টু হাসি ওর ঠোঁটের কোণে।ফিসফিস করে বলে,’ শাস্তিটা কিন্তু মিষ্টিও হতে পারে।যেমন ধর ভাইয়া তোকে কিস টিসও করতে পারে।ইয়্যু হ্যাভ টু ট্রায় ইট রিধি।’

রিধি খুকখুক করে কেশে উঠল।হতভম্ব চোখে তাকায় অথৈয়ের দিকে।বলে,
‘ তোর কি লজ্জা শরম নেই?বড়ো ভাইকে নিয়ে এসব মন্তব্য করিস কিভাবে?’
‘ ভাইয়া কি এখানে আছে?নেই তো।তাহলে আমি লজ্জা পাবো কেন?আর তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড।আর বেস্টফ্রেন্ডের কাছে কোনো কথা বলার সময় লজ্জা পায় না।’
অথৈ চোখ টিপে দিলো রিধিকে।রিধি অথৈ মনে মনে সাংঘাতিক গালি দিলো।বিরবির করে বলে,
‘ দুই ভাই বোনই সেম।অসভ্য কোথাকার।’

পরক্ষনে অথৈয়ের কথা মনে পরে গেলো।তাতেই রিধি লজ্জায় লাল নীল হয়ে গেলো।আচ্ছা অথৈয়ের কথাই যদি সত্যি হয়ে যায়?তবে কি করবে রিধি?ও তো মনে হয় মরেই যাবে ইহানের স্পর্শ সহ্য করতে না পেরে।
পিহু নিজের কাঁধ দ্বারা রিধির কাঁধে ধাক্কা দেয়।চোখের ইশারায় সামনে তাকাতে বলে,

‘ সামনে তাকা।তুই যার ভয়ে নিজেকে লুকাচ্ছিলি।সে তোকে পেয়ে গিয়েছে।এখন কোথায় লুকাবি?’
রিধি চোখ বড়ো বড়ো করে সামনে তাকালো।রুদ্রিক,ইহান ওরা সবাই এদিকেই আসছে।রিধি ‘ আল্লাহ্ গো।’ বলে উলটো দিকে দৌড়।এদিকে রুদ্রিকরা অথৈদের কাছে আসতেই রিধিকে এমন দৌড়ে পালাতে দেখে আশ্চর্য হয়ে যায়।নীল অবাক হয়ে বলে,

‘ এই রিধি এইভাবে দৌড়ে পালালো কেন?’
সাফাত বলে,
‘ হ্যা আসলেই।কি হয়েছে ওর?অসুস্থ নাকি?’
অথৈ হেসে বলে,

‘ আরে না ভাইয়ারা তেমন কিছু না।ওর কিছু একটা মনে পরে গিয়েছে।সেইটা আনতেই দৌড় লাগিয়েছে।’
এদিকে ইহান মনে মনে হাসছে।মেয়েটা আসলেই পাগল।নাহলে দূর থেকে ওকে দেখেই এইভাবে দৌড় দিতে পারে?নাহ,অনেক হয়েছে।দুজন যেহেতু দুজনকেই ভালোইবাসে।তাহলে আর লুকোচুরি নয়।আজ ইহান নিজের মনের কথা বলে দিবে রিধিকে।তাইতো কাল রিংও কিনে এনেছে রিধির জন্যে।ইহান রুদ্রিককে ধীর স্বরে বলে,

‘ দোস্ত নার্ভাস লাগছে।যাবে এখন?’
রুদ্রিক শান্ত গলায় বলে,
‘ নার্ভাসন্যাসের কিছুই নেই।রিধির কাছে যাবি।ভালোবাসি বলে রিংটা পরিয়ে দিবি।ব্যস সিম্পল বিষয়।’
‘ তোর কাছে সিম্পল লাগলেও আমার কাছে না।’
‘ এমনভাবে বলছিস যেনো আমি এই অধ্যায় পার করে আসিনি।লিসেন তোর বোনকে ভালোবাসি বলতে গিয়ে কোনো জড়তা কাজ করেনি আমার মাঝে।ওকে জিজ্ঞেস করে দেখ।’

রুদ্রিকের কথা শুনে ইহান নাক মুখ কুচকে বলে,
‘ সালা মাথা খারাপ তোর?বড়ো ভাই হয়ে ছোটো বোনের কাছে এসব জিজ্ঞেস করব?’
‘ আমি তো জাস্ট বললাম।জিজ্ঞেস করবি কিনা সেটা তোর বিষয়।এখন যা রিধির কাছে।সময় নষ্ট করিস না।’
ইহান সম্মতি জানালো।তারপর চলল রিধির কাছে।

এদিকে রিধির ভার্সিটির পিছনে।বড়ো কড়ই গাছটার নিচে বসে আছে।ও পণ করেছে আজ ও এখান থেকে একপাও নড়বে না।এখানে সচরাচর কোনো মানুষ আসে না।তাই এই জায়গাটাই সেফ মনে করে রিধি এখানে লুকিয়ে পরেছে।
রিধি বিরবির করছে,

‘ হুহ আমাকে থ্রেড দেয়।আমাকে নাকি শাস্তি দিবে।কচু দিবে।আমি আগে খুঁজে পাক না আগে।আর তাছাড়া আমি উনাকে ভয় পাই নাকি?আসুক একবার।কলম দিয়ে গুতো দিয়ে দিবো।’
‘ গাছের নিচে বসে বসে এসবই প্লানিং করো বুঝি?তা নেও স্বয়ং আমি নিজেই এখানে হাজির।গুতো দিয়ে দেখাও।’
আচমকা ইহানের কণ্ঠস্বর কানে এসে লাগতেই রিধি চমকে যায়।হরবর করে দাঁড়িয়ে পরে।দ্রুত পিছনে ফিরেই ইহানকে গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।

ইহান বাঁকা হেসে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।এইবার ইহান সোজা হয়ে দাঁড়ালো। একপা একপা করে আগাতে থাকে রিধির দিকে।রিধিও পিছাতে থাকে।একসময় আবারও পিছনে ঘুরে দৌড়ে পালাতে যাবে।তার আগেই ইহান বড়ো বড়ো পায়ের ধাপ ফেলে এগিয়ে এসে রিধির হাতটা খপ করে ধরে ফেলে।তারপর দেয় টান।টান দেওয়াতে রিধি নিজেকে সামলাতে না পেরে ইহানের বুকের মাঝে এসে ঠায় নেয়।ইহান রিধির কোমড় পেচিয়ে ধরে।রিধিকে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে।

আরেকহাতে রিধির গাল স্পর্শ করে।ইহানের হাতের শীতল স্পর্শে রিধির দেহ কেঁপে উঠে দৃশ্যমান রূপে।বুক কাঁপছে রিধির।ইহান গাঢ় চোখে রিধির দিকে তাকিয়ে আছে।ওই চোখের চাহনী যে রিধি সহ্য করতে পারে না।রিধির অন্তর সহ পুরো শরীর শিরশিরানি অনুভূতিতে ছেঁয়ে যায়।রিধি শুকনো ঢোক গিলল।দৃষ্টি নিচের দিকে নিতে নিলেই ইহান রিধির গাল চেপে ধরে শক্ত করে।মুখটা ওর মুখোমুখি করে উঁচু করে ধরে।ইহান শীতল কণ্ঠে বলে উঠে,

‘ কি?সব সাহস ফুস হয়ে গেলো?তুমি না বললে তুমি আমাকে ভয় পাও না।তবে পালাচ্ছিলে কেন তাহলে?’
রিধির এলোমেলো দৃষ্টিতে এদিক সেদিক তাকাতে থাকে।কাঁপা গলায় বলে উঠে,
‘ আ..আমি এমন কি..কিছু বলিনি।আপ..আপনি ভুল শুনেছেন।’
‘ আচ্ছা মানলাম আমি ভুল শুনেছি।কিন্তু হাসপাতালে যে আমাকে নিয়ে মজা করেছিলে?সেটা মনে আছে তো?এইবার শাস্তির জন্যে প্রস্তুত হও।’
রিধি আমত আমতা করে বলে,

‘ ওই কথাটাকে এতো সিরিয়াসলি নেওয়ার কি আছে আজিব?আমি তো এমনি একটু দুষ্টুমি করেছিলাম।’
ইহান গাঢ় স্বরে বলে,
‘ কিন্তু আমি যে তোমার সব কথাই সিরিয়াসলি নিয়ে নেই বেবিগার্ল।’
ইহানের বলা ‘ বেবিগার্ল।’ সম্বোধন শুনে রিধির যেন শরীরের পশম দাঁড়িয়ে গেলো।পরক্ষনে নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতে লাগল ইহানের কাছ থেকে।কিন্তু পারলো না তো কিছুই।উলটো ইহান আরও শক্তি প্রয়োগ করে ধরল।সহ্য করতে না পেরে রিধি বলে,

‘ ব্যথা পাচ্ছি।’
‘ তো ছোটাছুটি করছ কেন?’
‘ আর করব না!’
ইহান এইবার একটু আস্তে করে ধরল রিধিকে।তবে ছাড়লো না।ইহান বলে,
‘ শাস্তির জন্যে প্রস্তুত তো?’
রিধি ভয়ে ভয়ে বলে,
‘ ক..কি শাস্তি?’
‘ সেটা একটু পরেই দেখতে পাবে।এখন চোখ বন্ধ করো।’

রিধি চোখ বন্ধ করার বদলে আরও বড়ো বড়ো চোখ করে তাকায়।ইহানের হাসি পেয়ে গেলো।তাও হাসল না।যথাযথভাবে মুখটা গম্ভীর করে রাখল।এদিকে রিধি ভাবছে।লোকটা তাকে চোখ বন্ধ করতে বলছে কেন?
ওকে কি মেরে ফেলবে নাকি?ও চোখ বন্ধ করল আর লোকটা যদি ওকে গুলি করে দেয়?অথবা সামনে যেই নদীটা আছে সেখানে যদি ছুরে মারে?ও তো সাতার জানে না।এখন কি করবে রিধি?রিধি আতঁকে উঠে,

‘ নাহ প্লিজ।আমাকে পানিতে ফেলবেন না।আমি সাতার জানি না।’
রিধির এমন আগামাথা ছাড়া কথায় ইহান তাজ্জব বনে গেলো।পরক্ষনেই বুঝতে পারল মেয়েটা ভয়ের কারনে উল্টাপাল্টা ভাবছে।ইহান এইটার একটা সুযোগ নিলো,
‘ চোখ বন্ধ করে ফেলো ঝটপট তাহলে নদীতে ফেলব না।’
রিধি চোখ পিটপিট করল,

‘ সত্যি বলছেন?নদীতে ফেলবেন নাহ?’
‘ তুমি যদি আর একটা কথা বলো তাহলে এইবার সত্যি সত্যি ফেলে দিবো।’
‘ নাহ, নাহ।করছি তো বন্ধ।’
রিধি দ্রুত চোখ বন্ধ করে নিলো।একটু পর অনুভব করল ইহানের স্পর্শগুলো আসতে আসতে ওর কাছ থেকে সরে যাচ্ছে।রিধি ঠোঁট কামড়ে ধরল।এই লোক কি করতে চাইছে কে জানে?হঠাৎ ইহানের ভারি কণ্ঠস্বর শোনা গেলো।
‘ বা-হাতটা সামনের দিকে বাড়িয়ে দেও রিধি।’

রিধি কোনো দ্বিমত করল না।ভদ্রভাবে সামনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো।দেখা যাবে কিছু জিজ্ঞেস করলে সত্যি সত্যি নদীতে ছুরে মারবে।নাহ বাবা তা দরকার নেই।এর থেকে ভালো ইহান যা বলছে তা চুপচাপ মেনে নেওয়া।
হঠাৎ রিধি অনুভব করল তার হাতের অনামিকা আঙুলে কিছু একটা পরানো হচ্ছে।রিধি অনুমান করতে পারছে সেটা কি হতে পারে।রিধির সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।তবে কি এতোদিন পর ওর ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে?রিধির বন্ধ চোখের পাতা ভিজে যায় চোখের জলে।
ইহান ফের বলে,

‘ এইবার চোখ মেলে তাকাও রিধি।’
রিধি আস্তে আস্তে এইবার চোখ খুলে তাকায়।তাকাতেই দেখতে পায় ইহান এক হাটুতে ভড় দিয়ে বসে আছে।আর ইহানের হাতে রিধির বামহাতটা।আর সেই হাতের অনামিকা আঙুলে জ্বলজ্বল করছে স্বর্ণের আংটি।রিধি ডানপাতে মুখ চেপে ধরে কেঁদে ফেলে।ইহান হাসল।সে জানে রিধির এই কান্না দুঃখের নয়।বরংচ সুখের কান্না।তাইতো আটকালো না।কাঁদুক না একটু সুখের কান্না।ইহান কোমল গলায় বলতে লাগল,

‘ আই লাভ ইয়্যু রিধি।আজকের জন্যও তোমাকে ভালোবাসি, আগামীকালের জন্যও তোমাকে ভালোবাসি, চিরকালের জন্যও আমি তোমাকেই ভালবাসবো।
আমি চাই আমার জীবনের প্রতিটি সময় তোমার সাথে কাটাই, প্রতিটি সেকেন্ড আমি তোমার জীবনের সাথে ভাগ করতে চাই।তুমি কি আমার হবে রিধি?আমার একান্ত ব্যক্তিগত মানুষ।যার কাছে আমি আমার সুখ,দুঃখ,আনন্দ,বেদনা সব ভাগ করে নিতে পারব।আমার সহধর্মিণী, আমার বউ হবে রিধি?’

এতো সুন্দর করে কেউ যদি মনের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে।তবে কি তাকে ফিরিয়ে দেওয়া যায়?আবার যদি সেই মানুষটা হয় তারই ভালোবাসার মানুষ।রিধিও পারে না।ধুঁকরে কেঁদে উঠে মেয়েটা।সেই না বুঝা বয়স থেকে ইহানকে ওর প্রচন্ড ভালালাগতো।বড়ো হতে হতে সেই ভালোলাগা বদলে যে কবে ভালোবাসায় রূপ নিয়েছিলো নিজেও জানে না।এই দিনটার জন্যে কতো অপেক্ষা করেছে রিধি।আজ তা পূরণ হলো।খুশিতে রিধির মন চাচ্ছে মরে যেতে।রিধি কাঁদতে কাঁদতে বলে,

‘ আমিও আপনাকে ভালোবাসি।আই লাভ ইয়্যু সো সো মাচ ইহান।’
ইহান ঠোঁট প্রসস্থ করে হাসল।তারপর উঠে দাঁড়ালো।ইহান উঠে দাঁড়াতে দেরি।আর রিধির ওর উপর ঝাপিয়ে পরতে দেরি নেই।ইহানের বুকের মাঝে একদম লেপ্টে গিয়েছে মেয়েটা।দুহাতে খামছে ধরেছে ইহানের পিঠ।কাঁদছে অবিরত।চেয়েও কান্না থামাতে পারছে না।এতো প্রতিক্ষার পর আজ ইহান আর ও এক হয়েছে।ইহান হাসল রিধির পাগলামিতে।দু হাতে রিধিকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো।তারপর পর পর তিন চারটা চুমু খেলো রিধির চুলের ভাজে।রিধি কাঁদতে কাঁদতে বলে,

‘ কেন এতো দেরি করলেন?কেন? আমি এই দিনটার জন্যে বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছি ইহান।অনেক অপেক্ষা করেছি।’
ইহান ধীর স্বরে বলে,
‘ আমি বোকা ছিলাম রিধি।তুমি যে আমার জন্যে সীমাহিন ভালোবাসা জমিয়ে রেখেছ তা বুঝতে পারতাম না।তোমার চোখের গভীরতা বুঝতাম না।যে গভীরতায় আমার জন্যে এক সাগর ভালোবাসা ছিলো।আমি দুঃখিত জান।আমাকে মাফ করে দেও।’
রিধি আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল ইহানকে।ইহান হেসে বলে,

‘ তবে কি জানো অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।’
রিধি পিটপিট করে ইহানের দিকে তাকায়।ইহান ফট করে রিধির কপালে একটা চুমু দিয়ে দেয়।রিধি আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেলে।এই ভালোবাসার স্পর্শটুকুর জন্যে সে বছরের পর বছর কাঙালের মতো ছিলো।আজ যেন এক ঝটকায় সব পেয়ে গেলো।রিধি চোখ মেলে ইহানের দিকে তাকায়।ভেজা চোখেই হেসে ফেলে।সাথে হাসে ইহানও।

হঠাৎ কয়েকজোড়া করতালির আওয়াজে ইহান আর রিধি চমকে উঠে।এদিক ওদিক তাকাতেই দেখে রুদ্রিক,অথৈ,নীল,মারিয়া,প্রিয়ান,পিহু,সিয়া,অনিক,আহিদ,সাফাত ওরা সবাই এখানে হাজির।আর ওরাই হাত তালি দিচ্ছে।রিধি বড়ো বড়ো চোখে তাকায়।পরক্ষনে হুশ আসে ও ইহানের সাথে চিপকে আছে।দ্রুত সরে আসে ইহানের কাছ থেকে।ইহান বিরক্ত হয়ে তাকায় ওদের দিকে বলে,

‘ দিলি তো সব নষ্ট করে।এখনই একটু রোমান্টিক মুডে ট্রান্সফার হচ্ছিলাম দুজনে।কাবাবে হাড্ডি হতে চলে এসেছিস সবগুলো।’
রিধি ইহানের এমন লাগামছাড়া কথায় লজ্জায় লাল হয়ে যায়।গালগুলো ফুলে ফেঁপে উঠেছে লজ্জায়।অথৈ এগিয়ে যায় রিধির কাছে।রিধির কানে কানে দুষ্টু হেসে বলে,
‘ বাহ বাহ বাহ।এই আমার ভাইকে দেখে দৌড়ে পালালি।আর এখন এসে দেখি একদম ফ্যাবিকলের মতো চিপকে আছিস।’
পিহু চিল্লিয়ে উঠল,

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ৫৩

‘ ওই অথৈ তুই ফুসুরফাসুর করে কি বলছিস?হ্যা?’
‘ এদিকে আয়!’
অথৈ ডাকে পিহুকে।পিহু যেতেই অথৈ পিহুকে বলে কথাটা।তা শুনে পিহুও হেসে ফেলে।এদিকে রিধি লজ্জায় শেষ।
এইবার একে একে সবাই অভিনন্দন জানালো ইহান আর রিধিকে।আর সবাই ওদের দুজন থেকে ট্রিটও চাইলো।ইহান আর রিধিও রাজি হয়ে যায়।ট্রিট দিবে ওদের।

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না শেষ পর্ব