মন পায়রা পর্ব ৬

মন পায়রা পর্ব ৬
নুসাইবা ইসলাম

জন্মদিন গেলো আজ ১০ দিন হয়ে গেছে স্বাভাবিক ভাবেই সব চলছিলো, সেদিনের ছাদের কথা আজও যখন তামিম ভাবে তখন চেয়েও নিজের কষ্ট কান্ট্রল করতে পারেনা।সেদিন তামিম গিয়েছিলো ফিহাকে নিজের মনের কথা বলতে কিন্ত ফিহা তাকে ফিরিয়ে দেয়।

ফিহাঃ আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি তামিম, তুমি কিভাবে এসব চিন্তা নিজের মাথায় আনছো? উই আর ফ্রেন্ড রাইট একসাথে বড় হয়েছি আমরা,ছিহঃ তোমার মনে আমার জন্য এসব ছিলো?
তামিমঃ চুপ করো ফিহা, এটা আমাদের মন আমাদের হাতে কিছু নাই, আমরা আমাদের মন কে কান্ট্রল করত্র পারি না। এখানে হয়তো আমি দূরবল তোমার প্রতি তবে এতোটা নয় যে তোমার অপমান সয্য করবো।
ফিহাঃ তাহলে বললে কেনো,এসব কথা তোমার মোখে আমি জেনো আর না শুনি তামিক। তা না হলে ভুলে যাবো আমরা প্রতিবেশি।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সেদিনের এসব কথা তীরের মতো বিধে ছিলো তামিমের,ক্ষত বিক্ষত হয়ে ভেঙে যায় তার মন। সেদিন থেকে আর কোনো কথা বলে না ফিহার সাথে,আর না সেয়ার করে তামিম এ সাথে।এসব ভাবনার মাঝে মনে পড়ে আজ তিথিকে আনতে যাইতে লেট হয়ে যাচ্ছে, তাই দ্রুত নিচে নেমে গেলো।নিচে তাহিম কে পেয়ে দুই বন্ধু একসাথে রওনা দিলো,ফায়াজ তো বেজায় খুশি আজ।আজ তিথীর ৯ম শ্রেনীর শেষ ফাইনাল পরিক্ষা। তামিম বলেছিলো আজ নিতে আসবে তাই তিথি অপেক্ষা করছিলো, এমন সময় কেউ তিথির সামনে ব্লাক রোজ নিয়ে হাটু গেড়ে বসে পড়লো। তিথি গোলাপ টাকে দেখে খুশি হয়ে পড়লো কারণ এটা তার প্রিয় ফুল, সামনে তাকিয়ে দেখে রুদ্র ভাইয়া। রুদ্র হলো ফায়াজ আর তামিম এর অনেক পুরানো বন্ধু কিন্তু রুদ্র মাদক ব্যাবসায় ধরা খাওয়ার পড় ফায়াজ তার তামিম কথা বলা বন্ধ করে দিছে রুদ্র এর সাথে।এসব ঘটনা তাহিম আর তামিমের ফ্যামিলির কেউ জানেনা।

রুদ্রঃ তিথুপাখি আমি তোমাকে ভালোবাসি অনেক,খুব খুব করে চাই,জানিনা কিভাবে কখন তোমার জন্য মন পাগল হয়েছে!
তিথিঃ আমিও আপনাকে অনেএএএএএক ভালোবাসি ভাইয়া!
এই বলে তিথি রুদ্র এর থেকে কালো গোলাপ নিলো,রুদ্র বসা থেকে উঠে দাড়ালো৷ এসব দেখে ফায়াজ এর মাথায় রক্ত উঠে গেলো,এই শীত এও সে ঘামছে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগ কান্ট্রল করছে। ফায়াজ এসে সোজা তিথির হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসাই দিলো,তামিম ও কিচ্ছু বলছেনা ও বেচারা নিজেই সক এর মধ্যে আছে।তিথি বেচারি ও ভাই হিসেবে এতো ভালোবাসে তা বলতে চেয়েছিলো, কিন্তু এসবের মাঝে এই বজ্জাত কেনো তার সাথে এই বিহেভ করছে?

তিথিঃ আমাকে ছেড়ে দিন ফায়াজ ভাইয়া, আমাকে ধরার সাহস কই পেলেন এভাবে?
ফায়াজঃ যাস্ট সাট ইউর মাউথ,আর একটা কথা বললে থাপ্পর মাইরা লাল করে দিবো বেদ্দপ মেয়ে।
ফায়াজ একটু জোরে চেচিয়ে বলে এতে তিথি ভয় পেয়ে যায়৷। করুন চোখ তিথি তামিম এর দিকে তাকায়,তামিম বোনের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে কি বলতে চাচ্ছে তিথি।
তামিমঃ ফায়াজ এমন রুড বিহেভ তুই আমার বোনের সাথে করতে পারিস ন।
ফায়াজঃ আমি কি করতে পারি তার ধারনাও নাই তোর কাছে, আরে ইডিয়েট তোর রাগ হচ্ছে না তোর বোন বললো অই ক্রিমিনাল কে ভালোবাসে।

কি মনে করে গাড়ি চালানো বাদ দিলো ফায়াজ, তিথি এর হাত থেকে ফুলটা নিয়ে রাস্তায় ফেলে দিলো। ফুলের জন্য এবার তিথি কান্না করা শুরু করলো তার সাথে আজ হচ্ছেটা কি? তামিম কিছু বলতে গিয়েও বললো না ফায়জ এখন পুরাই রেগে আছে কিছু বললে যদি উলটা হয়ে যায়। ফায়াজ এবার গাড়ি স্টার্ট দেয়, তিথি রেগে যায় এসব ব্যাবহারে ম
তিথিঃ গাড়ি থামান ফায়াজ ভাইয়া, আমি বলছি গাড়ি থামান না হলে আমি চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দিবো।
ফায়াজঃ যদি সাহস থাকে তাহলে দে? তোকে কি আমি ধরে রাখছি।

তিথিঃ তামিম ভাইয়া আমি কিন্তু মজা করছি না, গাড়ি থামি কি তুমি আমাকে অন্য গাড়ি দিয়ে নিয়ে যাবা না কি লাফ দিবো।
তামিমঃ আমি কিছু বলছিনা তিথি চুপচাপ বসে থাক আর আমাকেও রাগাইস না। আমি চাইনা তোর সাথে উচু গলায় কথা বলি বা কিছু।

তিথি ভাইয়ের এমন কথায় অনেক কষ্ট পেলো,চুপচাপ বসে ভাবছে সে কি এমন করলো যে তার ভাই আর ফায়াজ এতোটা রাইগা গেছে। সে তো সামান্য ফুল টা নিয়েছে রুদ্র যে তার ভাই এর মতো সেই কথাটিও বলার সুযোগ তারে দিলো না। তামিম আর ফায়াজ তিথি কে তিথির বাসায় গেলো,গিয়ে তিথির বাবা-মাকে সব বললো। ফায়াজ আর তামিম শুধু নিজের দিকের কথা বললো, তিথিকে বলার সুযোগ ই দিলোনা৷ তিথির বাবা-মাও এসব বিশ্বাস করে,আর তিথিকে থাপ্পর দেয়। ফায়াজ বস৩ নিজের চুল ধরে টানতা লাগলো। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার। কিভাবে কি করবে কে জান, উঠে নিজেদের ফ্লাটের দিকে যেতে লাগলো।

চারোদিকে নিস্তব্দতা ঝেকে বসেছে, শুনশান বাড়ি । কোনো কথা নেই কারো মুখে,একটি ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিলো সব,কেই বা জানতো আজ এমন কিছু হবে। ঘড়ের দরজা আটকে এলোমেলো ভাবে ফ্লোরে শুয়ে আছে তিথি। শুয়ে শুয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে সে, সবাই যে তাকে ভুল বুঝলো। তার জিবন এ এতো বড় একটস ঘটনা ঘটে গেলো কিভাবে এসব মেনে নিবে সে। ফায়াজের মা বসে কান্না করছে কারণ তার ছেলে চলে যাচ্ছে বিদেশ।
ফায়াজের মাঃ তুই যদি আগে থেকেই ঠিক করেছিস যে তুই বিদেশে চলে যাবি তাহলে কেনো অই বাচ্চা মেয়েটা কে বিয়ে করলি এতো নাটক করে?

ফায়াজঃ আমার কোনো কথা ভালোলাগছে না যাও এখান থেকে।
হ্যা অইঘটনার পর রাতেই ফায়াজ তিথিকে বিয়ে করে, ফায়াজ আর তিথির পরিবার বিয়েতে রাজি ছিলো না কিন্তু ফায়াজের জিদের কাছে হার মানতে হলো তাদের। আজ সকালে ফায়াজ অনেক খুশি ছিলো কারণ তার জবের জন্য তাকে ১ বছর এর জন্য বিদেশে থাকতে হবে। এটা তার ক্যারিয়ার জন্য অত্যাধিল জরুরি।আজ তিথিকে বলে বিদায় নিতো। এখন ফায়াজ চলে যাচ্ছে প্লেনের উদ্দেশ্যে সাথে তামিম যাচ্ছে এগিয়ে দিতে,অইদিন চলে গেলো ফায়াজ।

তিথির এমন অবস্থা হয়েছে অইদিনের জন্য,ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকলো তিথি। চঞ্চল সেই মেয়েটি হয়ে গেলো চুপচাপ। সারাদিন নিজের রুম এ বসে থাকা ঠিকমতো না খাওয়া,পড়াশুনা না করা সব হয়ে গেলো। তিথি উপর ঘটনা টির অনেক খারাপ প্রভাব পরেছে। ছোট্ট মনটায় অনেক খারাপ প্রভাব পড়েছে।

.. বর্তমান….
পুরানো কথা ভাবছিলো তিথি,আজ সেই ফায়াজ কতোটা বদলে গেলো৷ তার দিকে তাকায় না অবদি, তিথি যে তার জন্য কতোটা পুড়ছে তা কি ফায়াজ জানে?কতোটা ভালোবেসে ফেলছে সে ফায়াজ কে। আর কতো পুড়াবে ফায়াজ এই ছোট্ট অনুভুতিকে তার। সে তো আর সইতে পারবে না।

মন পায়রা পর্ব ৫

তিথিঃ এতোটা বদলে গেলেন আপনি ফায়াজ,ভালোবাসার অনুভুতি টা কি সে এখন বুঝে কিন্ত কষ্ট টা তো সে কাউকে দেখাতে পারছে না। এই একটা বছর যে কতো কষ্ট করে কাটাইছি জানেন আপনি? আমার অনুভুতি কি বুঝবেন আপনি, ভালোবাসেন কি আমাকে?
আপনার থেকে এসব জানা তো হলো না আমার ফায়াজ,,,

মন পায়রা পর্ব ৭