মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৬

মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৬
ফাবিয়াহ্ মমো

গায়ে জ্বর। অসহন জ্বর। মাথা ঘুরছে। সবকিছু অসহ্য লাগছে। ঘোরের মধ্যে কাতরাচ্ছে মেহনূর। ঠোঁট ফাঁক করে থেমে-থেমে দম ছাড়ছে। লাগাতার জলপট্টি করছে মাহতিম। কি করলে জ্বর কমবে বুঝতে পারছেনা। মুশকিল হলো, রাত গভীর। বাইরেও ঝুম বৃষ্টি। হাসপাতালে যেতে চাইছে না। গায়ের চামড়া যেন দগ্ধ অনলের মতো পুড়ছে। মোটা কম্বল টেনে গলা পযর্ন্ত ঢেকে দিলো।

তবুও থরথর করে কাঁপছে মেহনূর। কপাল থেকে গরম পট্টিটা নিতেই ফোন বাজলো মাহতিমের। পাশেই মাহতিম শুকনো মুখে তাকিয়ে আছে। কারোর জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ কানে ‘ ঠকঠক ‘ জাতীয় শব্দ এলো। মাথাটা ডানদিকে ফিরাতেই দরজার দিকে চাইলো। দরজার কাছে রুমানা ম্যাম দাঁড়িয়ে আছে। ত্রস্তভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ালো মাহতিম, অনুমতিজ্ঞাপনে মাথা দুলিয়ে ভেতরে আসতে বললো। আজ্ঞা মতো ভেতরে ঢুকলো রুমানা। পা চালিয়ে কাছে আসতেই শঙ্কিত মুখে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– তুমি এই রাতে এসেছো কেন? তোমার কি একটুও জানের ভয় নেই? সঙ্গে আবার বউ নিয়ে এসেছো! কেন তুমি বারবার রিস্ক নিচ্ছো মাহতিম? আমাকে কি একটু বলবে? তোমার এমন কাজকর্ম দেখলে আমিতো ভেবেই পাই না। আজ যে এভাবে আসলে, পথে যদি কিছু হতো? ওরা কি ছেড়ে দেওয়ার লোক?

রোষের সাথে কথাগুলো শোনালো। তার রাগ হচ্ছে এখন। মাহতিমের এমন উদ্ভট কীর্তি দেখলে মাথা ঠান্ডা থাকে না। ওর নির্ভীক চেতনা দেখলে ভয় পেতে হয়। বড্ড ভয় লাগে। ছেলেটা এমন বেপরোয়া আচরণ করে যে, মাঝে-মাঝে দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয়। চোখে চশমা এঁটে বিছানায় বসলো রুমানা। ডানহাতের উলটোপিঠে মেহনূরের কপাল স্পর্শ করলো। চুপচাপ পাশে দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো মাহতিম। হাতদুটো বুকের কাছে ভাঁজ করে ছোট্ট প্রশ্ন করলো,

– ওকে হাসপাতালে নেবো?
কপাল থেকে হাত সরালো রুমানা। সঙ্গে আনা ছোট্ট চামড়ার ব্যাগে হাত ঢুকালো সে। প্রত্যুত্তরে বললো,
– দাঁড়াও, একটু দেখে নেই। এখনই কিছু বলতে পারবো না। জ্বর তো সিরিয়াস কেস। এভাবে আনাটা ঠিক হয়নি আনসারী। জার্নি প্লাস জ্বরে মেয়েটা সাফার করছে।

ব্যাগ থেকে যন্ত্রটা বের করলো সে। যন্ত্রটা ছিলো ডিজিটাল থার্মোমিটার। থার্মোমিটারের চোখা দিকটা ওর দুঠোঁটের মাঝে গুঁজে দিলো। ব্যাগ থেকে পুনরায় ছোট্ট একটা নোটপ্যাড ও কলম বের করলো রুমানা। কলমে কিছু খসখস লিখতেই পেজটা ছিঁড়ে মাহতিমের দিকে বাড়িয়ে দিলো। হাতদুটোর বন্ধন খুলে পেজটা হাতে নিলো মাহতিম। বাঁ ভ্রুঁটা উঁচু করে লেখাগুলোয় তীক্ষ্ম চোখ বুলালো। অন্যদিকে রুমানা টেমপারেচার দেখে বললো,

– দেখেছো? প্রায় একশো চার। কয়েক পয়েন্ট কম আছে। বাকিটা তুমি জানো। এভাবে কিন্তু রাখা যাবে না।
ডানহাতের পেজটা থেকে চোখ সরালো মাহতিম। মেহনূরের দিকে একপলক তাকিয়ে রুমানার দিকে চাইলো। কয়েক মিনিট আপনমনে চিন্তা কষে কাগজটা পকেটে পুড়লো। রুমানার দিকে বিদায়সূচক ইঙ্গিত দিয়ে শান্ত গলায় বললো,
– জ্বর নামানোর দায়িত্ব আমার। আপনার প্রেসক্রাইভ মোতাবেক, এইস এক্স-আর ছয়শো পঁয়ষট্টি এম.এল. এটা আমার কাছে আছে। বাকিটা আমি দেখতে পারবো।
রুমানা ব্যাগের চেইন লাগিয়ে বসা থেকে দাঁড়ালো। লম্বা ফিতাটা কাঁধে ঝুলিয়ে অনুযোগ করে বললো,

– হ্যাঁ, কিন্তু জ্বর কমলে দুই বেলা। জ্বর কিভাবে নামে জানোই তো? স্পন্ঞ্জ নাহয় গোসল। এখন আসি। যদি কোনো সমস্যা হয় ফোন দিবে। আমি সজাগ আছি।
কাজ শেষে বিদায় নিলো রুমানা। দরজাটা আঁটকে দিলো মাহতিম। ফিরে এলো বিছানার কাছে। জ্বরটা নামাতে হবে। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে সোফার দিকে ছুঁড়লো।

বাঁহাতের ঘড়িটা খুলতে-খুলতে মেহনূরের দিকে তাকালো। মোটা কম্বলটার নিচে কুঁকড়ে আছে মেহনূর। চক্ষুকোলের শেষপ্রান্ত থেকে অবদমিত অশ্রু ঝরছে। দৃশ্যটুকু দেখে মাহতিমের অন্তঃপুরটা কেমন গুমরে উঠলো। হৃদয়ের আলিসান প্রাসাদে মেহনূরের বেদনার্ত চিত্রটা নিতে পারলো না। ব্যথিত দৃষ্টিতে বিছানায় বসে মেহনূরের দিকে এগুলো। ডানহাতের ভরটা বালিশে ফেলে মুখটার উপর ঝুঁকলো। পূর্ণ দৃষ্টিদুটো চোখে-ঠোঁটে-কপালে রাখতেই বাঁহাত দিয়ে ওর গালটা পাঁচ আঙ্গুলে ছুঁলো। নরম গালটায় মৃদ্যু ঝাঁকুনি দিতেই নরম সুরে ডাকলো,

– ও মেহনূর?
গালটা ধরে মৃদ্যু ঝাঁকুনি দিতেই মেহনূর নড়েচড়ে উঠলো। দু’চোখের পাতা খুব ভারী। মনেহচ্ছে কেউ যেন পাথর বসিয়ে রেখেছে। গলা কেমন শুষ্ক-শুষ্ক ঠেকছে। যেন কতদিন সে পানি খায়নি। শরীরটা এতো অদ্ভুত লাগছে, এতো শূন্য-শূন্য অনুভূতি, যেনো প্রতিটি অঙ্গপ্রতঙ্গে অন্য কিছুর নিয়ন্ত্রণ। মেহনূর জ্বরের আড়মোড়া ভেঙ্গে চোখদুটো খুলল। লাল-লাল চক্ষু মেলতেই খুব সামনে, অতি নিকটে একটি সম্মোহন মুখ দেখলো। অতিশয় ব্যগ্র হয়ে তাকিয়ে আছে। তার চুপটি দেখে হাসলো মেহনূর। খুবই হালকা ঠোঁটে হাসলো। আলতো গলায় বললো,

– এভাবে তাকালে আমার লজ্জা করে। আপনার চোখদুটোর চাহনি খুব প্রখর। মনেহয় এই চোখ দিয়েই আমায় ছুঁয়ে দিচ্ছেন।
মাহতিম হাসতে চাইলো, কিন্তু পারলো না। এমন মূহুর্তে কি হাসা যায়? গালটা দৃঢ়ভাবে ধরে ওর দিকে আরেকটু ঝুঁকে এলো। গাড়িতে যেই ক্ষণটুকুর জন্য মন বিহ্বল ছিলো, নোমানের কারণে যেই লগ্নটা ছেড়ে দিয়েছে, অনুরাগের যেই অল্প সময়টুকু তখন পেয়েছিলো, সেটা আবারও উদ্ধার করলো মাহতিম। মেহনূরের উষ্ণ-জরাক্রান্ত-নীরস ঠোঁটদুটোকে নিজের অধর ভাঁজে ছোঁয়ার জন্য উদ্যত হলো সে। মাহতিমের অভিলাষী ইচ্ছাটা বুঝতে পেরে মেহনূর বাধা দিলো। মাথাটা ডানে-বামে নাড়িয়ে দূর্বল সুরে বললো,

– আমার ঠোঁটে এখন রাজ্যের জীবানু। খবরদার, চুমু খেতে যাবেন না।
মাহতিম শুনলো না। ড্যাবড্যাব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেই মুখ নামিয়ে দিলো। চোখদুটো বন্ধ করে দীর্ঘ আশ্লেষের ছোঁয়া বসালো। পরোয়া করলো না কিছুই। তোয়াক্কা করলো না জ্বর। মেহনূরের গালটা ধরে গভীর-অধীর-অতল উষ্ণতা দিয়ে ঠোঁটদুটো আবদ্ধ করলো। নিজের অধরযুগলের কারাগৃহে ক্ষণেক্ষণে বন্দি মেহনূরকে বিহ্বল করে দিলো। ভাবাবিষ্ট মেহনূর আকম্প অধরসন্ধিতে বশবর্তী হয়ে ডুবে গেলো। খুব নির্মল কায়দায় কম্বলের নিচ থেকে ডানহাতটা বের করলো সে।

মাহতিমের পিঠ ছুঁয়ে, ঘাড় ছুঁয়ে, মাথায় হাত রাখলো। হাতের তেলোয় আদুরে চুলগুলোকে নাড়াচাড়া করতেই হঠাৎ খামচে ফেললো মেহনূর। চোখদুটো খিঁচুনি দিতেই ঠোঁটে সুক্ষ ব্যথা অনুভব হলো। মূহুর্ত্তের দাড়িপাল্লায় ওই পরিমাণটুকু ভারী হলো না। হেরে গেলো মাহতিমের দেওয়া সুখদ অনুভূতির কাছে। কিছু সময় পর নিচের অধর দংশনটা মুক্ত হলো। ওকে ছেড়ে দিতেই চোখের দিকে চাইলো মাহতিম। গালটা ছেড়ে দিয়ে শরীর থেকে কম্বল উঠাতে-উঠাতে বললো,

– এখন তো পালাই-পালাই করলে চলবে না ম্যাডাম। আমিতো ছাড়ার জন্য কোয়ার্টারে আনিনি। পুরোটা রাস্তায় যেমন কম্বলে মুড়িয়ে বুকে করে এনেছি, এখানেও আমার অধিকার খাটাতে প্রস্তুত। দুই বছর তো কম না। সতের করে আনলাম, এখন তো বিশ ছুঁই-ছুঁই। এই বিশের বয়সটা নাহয় আমার সাথেই কাটান। দেখেন, মাহতিম আনসারী আপনাকে যত্ন-আত্তি করে কিনা।

কম্বলটা পুরোপুরি সরিয়ে ফেললো মাহতিম। মেহনূর অনুরক্ত দর্শকের মতো সবকিছু দেখছে। কিভাবে গা থেকে মোটা কম্বলটা উঠালো, দেহটা গুটি পাকিয়ে কোলে তুললো, এরপর রওনা দিলো ওয়াশরুমের দিকে। সেখানে সিলভার ট্যাপের কাছে ছোট্ট একটা টুল পাতা আছে। মেহনূরকে পাঁজকোলে করে টুলটায় বসলো মাহতিম। ট্যাপটা ছেড়ে মেহনূরের মাথাটা এগিয়ে দিলো। মেহনূরের মাথায় যখন ট্যাপের ঠান্ডা পানিটা পরছে, তখন মেহনূর চোখ বন্ধ করে হাসি ছুঁড়ে বললো,
– পুরোনো জিনিসে এখনো মন ঘঁষবেন?

বাঁহাতে সিক্ত মাথা ধরেছে মাহতিম। ডানহাতে মেহনূরের লম্বা কেশে আঙ্গুল বুলিয়ে পানি ছোঁয়াচ্ছে। ওর মুখ থেকে এমন আপত্তিকর কথা শুনে চুলে হাত থামালো সে। কথাটার ঘোরতর আপত্তি করে চুলগুলো খামচে ধরে বললো,
– কি বললে?

চুলের কিন্ঞ্চিত ব্যথায় নিচের ঠোঁট কামড়ালো মেহনূর। চোখ খুলে মাহতিমের দিকে তাকালো। ট্যাপের পানির জন্য ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছে না। তবুও হিমশিম চাহনিতে তাকাতে গিয়ে খিলখিল করে হেসে ফেললো। নিকষ কালো অন্ধকারের রাত্রি কেটে যখন ভোরের আলো ফুটে, একবুক আশা নিয়ে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে প্রাণসঞ্চার করে, সমস্ত কালোদিন ধুয়ে-মুছে নববর্ষের মতো আনন্দ জাগায়, ঠিক তেমনি একটা স্বচ্ছ অনুভূতি টের পেলো মাহতিম।

যেন একটা মোহ, যেন একটা আনন্দ, এই কয়েক মিনিটের মূহুর্ত্তকে মনোরম করে তুলেছে। হাস্যরত মেহনূরকে শক্ত করে ধরলো মাহতিম। যেই বেদনাগ্রস্ত শোকটা মনে বুনে এসেছিলো, সেই বুননটা অদৃশ্য কাঁচিতে খুলে যাচ্ছে। বয়ে আনা ক্ষতটার যেনো ধীরে-ধীরে শুকিয়ে আসছে। মেহনূরের দিকে তাকিয়ে বহুক্ষণ পর প্রাণটা জুড়িয়ে এলো। ঠোঁটে তৃপ্তির হাসিটুকু ঝুলিয়ে মাহতিম শান্তি পেলো।

ছল করেছে মাহতিম। পুরো বোকা বানিয়ে দিয়েছে। প্রত্যেকটা পদক্ষেপ এমনভাবে রেখেছে, যেখানে কোনো সংশয় নেই। রজনী চোখদুটো বন্ধ করলো। ইজিচেয়ারে দুলতে-দুলতে নিজেকে শান্ত রাখলো। তার কার্যকরী মাথাটা খুব খাটাতে হবে। এখনো উদ্দেশ্যটা সফল হয়নি। মাহতিম এখন আগের চেয়েও চালাক। গোপনে-গোপনে কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কিচ্ছু বুঝা যাচ্ছে না। গভীর ষড়যন্ত্রের রসাতলে দিনদিন ডুবছে।

যদি সে মাহদির ঘটনা জেনে যায়? যদি জেনে যায় ওর মৃত্যুটা স্রেফ দূর্ঘটনা না, তখন? অবশ্য প্রমাণ রাখেনি রজনী। কিন্তু তাও সাবধানের মার নেই। একটা গুরুত্বপূর্ণ কলের জন্য আবারও অপেক্ষা করছে। দুলতে-দুলতে ডান পাশে হাত বাড়ালো সে। গোল টেবিল থেকে কাঁচের গ্লাসটা তুলে ঢকঢক করে গিললো। তিঁকুটে স্বাদটা গলা দিয়ে নামতেই কোলের বস্তুটা বিপ্ করলো। খালি গ্লাসটা টেবিলে রেখে রিসিভ করলো রজনী। কানে রাখতেই ওপাশ থেকে সাড়া চেয়ে বললো,

– হ্যালো,
রজনী আলাদা গাম্ভীর্য বজায় রেখে বললো,
– হ্যাঁ, শুনতে পাচ্ছি।
একটা পুরুষালী কন্ঠ বেশ চিন্তার সুরে বললো,
– ম্যাডাম, খবরটা বেশি ভালা না।
কথাটা শুনে রজনী শান্ত রইলো না। তৎক্ষণাৎ দোল থামিয়ে স্থির হলো। কথাটা নির্ঘাত ভয়াবহ! রাত তিনটের দিকে স্বাভাবিক কল আসে না। রজনী কানে ফোন এঁটে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার শূন্যদৃষ্টি অদূরের কোনো ঝিকমিক সড়ক দেখতে ব্যস্ত। রজনীর সাড়া না-পেয়ে পুরুষ কন্ঠটা বললো,

– ম্যাডাম শুনতাছেন?
নিজের ভয়ংকর পরিপন্থী নিয়ে ভাবছে রজনী। ভাবনায় এতো মশগুল ছিলো যে, কলের ব্যাপারটা খেয়াল করেনি। অতঃপর পুরুষ কন্ঠের ছোট্ট প্রশ্নে সংবিৎ ফিরে পেলো। ভাবনার দুনিয়ায় বহু-বহু হিসাব ঝুলছে। সেসব হিসাবের খাতা আঁটি করে শান্ত সুরে বললো,
– খবরটা বলো।

পুরুষ কন্ঠটা সময় নিলো। এদিকে ধুকপুক করছে রজনীর। শান্তি-স্বস্তি দুটোই নেই। তার চেহারার অবস্থা ম্লান। চোখের দৃষ্টি স্থির। ব্লাড প্রেশারটা খারাপ লাগছে। বুকের ধুকপুকনি কমেনি। রজনী অস্থির-চন্ঞ্চল-বেচইন হয়ে ঢোক গিললো। হঠাৎ বুঝতে পারলো তার শরীর ঘামছে। প্রেশারটা হাই হয়েছে। নিশ্বাসটা বেশ উত্থাল। অনেকগুলো নিশ্বাস ছাড়ছে। অস্বাভাবিক হারে দম নিচ্ছে। মনের মধ্যে ত্রাস কাজ করছে। রজনী উত্তেজনার চোটে কিছু বলবে, ঠিক তখনই লোকটা আতঙ্কের সুরে বললো,

– সব উলোট-পালোট করতাছে ম্যাডাম। জা;নো:য়ারের মতো সবাইরে ধরতাছে। কিচ্ছু বাদ রাখেনাই। শিবলুরে ধইরা ফেলছে। কই থেকে খুঁজছে জানি না। পাওয়ার পর কু;ত্তার মতো পি:টাইতাছে। এখনো ছাড়েনাই। শিবলু যদি মুখ খুলে বিরাট লস্ হইবো ম্যাডাম! ওয় কিলারের নাম বইলা দিবো। আপনের এই একটা কেসের লিগা সবাই ফাঁইসা গেছি। সবাই হায়-হায় কইরা মাথা থাপড়াইতাছে।

মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৫

এতোদিন ধইরা কত্তা মানুষ মারলো, কত্তাডি গুম করলো, কেউ টিকিটাও খুঁইজা পায়নাই। পুলিশও মাল খাইয়া সইরা গেছে। কেউ কাউরে বাজাইতে আহে নাই। এখন আপনের একটা কেসের লিগা সবাইর তেরোটা বাজতাছে। আমাগোর এখন শেল্টার লাগবো ম্যাডাম। সময় বেশি নাই। হাতে সময় খুব কম। কহন কোন্ দিয়া কি কইরা লায়, বুঝতে পারতাছি না। আপনে যদি এহন হেল্প না করেন, তইলে আমি সত্য বইলা দিমু। ওই স্যারের কাছে লুকাইতাম না। হেয় বহুত পাষাণ। যেই অত্যাচারডি করতাছে, হুনলে এহন ম:রতে চাইবেন।

মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৭