মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ গল্পের লিংক

মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১
ফাবিয়াহ্ মমো

সুডৌল কোমরের বাঁপাশে মৃদ্যু চাপ খেলো মেহনূর। বজ্রাহতের মতো চমকে গেলো সে। পাশের ছেলেটা পৈশাচিক আনন্দে চুপ করে আছে। চলন্ত অটোর ভেতর নিরীহ গা ছুঁয়ে-ছুঁয়ে লোলুপ স্পর্শ চালিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় কঠিনভাবে চাপ দিতে নেবে, ওমনেই হাতটা খপ করে আঁটকা পরলো। ছেলেটা কিন্ঞ্চিত বিষ্ময় নিয়ে বামে তাকাতে নিলো, কিন্তু আফসোস! তাকাতে পারলো না! হাতে মোচড় খেয়ে এমন জোরে ধাক্কা খেলো, চোখে-মুখে অন্ধকার ছাড়া কিচ্ছু দেখতে পেলো না! কানে শুধু হৈচৈ শব্দ ছাড়া কিছু শুনতে পাচ্ছে না। অনুভব করতে পারলো, চলন্ত অটো থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। মাথাটা ছোটোখাটো পাথরের সাথে বারি খেয়ে রক্ত ছুটছে। তার বন্ধু লাভলু সমানে তাকে ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে। অস্থির কন্ঠে বলে যাচ্ছে,

– তাড়াতাড়ি উঠ্ মামা! ম:রতে না চাইলে তাড়াতাড়ি উঠ্! ভুল জায়গায় হাত পরছে! ছেড়ি এইডা টাউট মাল! তুতুতুতুই —
শেষের ‘ তুই ‘ শব্দটা বলতে গিয়ে তোতলাতে লাগলো লাভলু। যেনো বীভৎস ভৌতিক ভেলকি দেখে হৃৎপিন্ড থেমে গেছে! এরপরই শুরু হলো চিৎকার! আহাজারি বেদনায় ‘ ছাইড়া দেন, ছাইড়া দেন ‘ চিৎকারগুলো মুখর হয়ে উঠলো। র:ক্তাক্ত মাথাটা একটু নাড়া দিয়ে চোখ খুলে তাকালো। আসল পৈশা:চিক শয়:তানটার নাম জামিল চৌধুরী।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

পাশের গ্রাম থেকে এ গ্রামে লোলুপ ইচ্ছা মেটাতে এসেছে। কলেজের কিছু মেয়েদল দেখে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষাটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জামিল আধো-আধো দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকালো! তখনই শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল স্রোত বেয়ে গেলো। মেয়েটার বয়স কত হবে? ওইটুকুনি মেয়ে তাদের সাথে একাই লড়াই করছে? তাকে সজোড়ে ধাক্কা মে:রে অটো থেকে ফেলে দিয়েছে? তার বন্ধু লাভলুকে এখন বাঘিনীর মতো প্যাঁদাচ্ছে? মাথার চোটে সর্বহারার মতো শুয়ে আছে জামিল। চোখদুটো আপনা-আপনি বুজে আসছে তার। মাথার ভেতর ঝিঁঝিপোকার শব্দ বাজছে। ব্যথায় চিৎকার করতে মন চাইছে। সমস্ত স্নায়ু নির্জীব হয়ে শূন্যে তলিয়ে যাচ্ছে।

পড়নে গোলাপী রঙের কামিজ, সাদা ফকফকে পাজামা। কামিজের স্লিভদুটো কবজি পযর্ন্ত ঢাকা। গোলাপী রঙের ওড়নায় সাদা রঙের বাউন্ডারি। গলায় এক প্যাঁচ দিয়ে বুকের দুপাশে ওড়না ঝুলালো মেহনূর। চোখের দৃষ্টি ভয়াবহ করুণ! রাগে শরীরের ভেতর দপদপানি চলছে! অদ্ভুত ক্ষোভে টালমাটাল হয়ে চোয়াল শক্ত করেছে। খুবই ধীরগতিতে ডান পা থেকে চটি জুতা খুললো। চোখদুটো লাভলুর দিকে স্থির করে তাকালো। একদম পলকহীন ভঙ্গিতে শক্ত হলো সে। লাভলু হঠাৎ কথা বলতে-বলতে চট করে থামলো।

‘ তুতুতুতুই ‘ শব্দটা বলতে পারলো না সে। ততক্ষণে জুতাটা ডানহাতে তুলেছে মেহনূর। কাধের ব্যাগটা সুরাইয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিঃশব্দে এগিয়ে আসলো। লাভলু ইতিমধ্যে ভীতু চোখে কাঁপছে। মেহনূর এক সেকেন্ডও নষ্ট করলো না! ঠোঁট কুঁচকে শ্বাস টেনে শূন্যে ডানহাত তুললো। বাতাসের তাল কেটে তীব্র শব্দযোগে এক ঘা কষালো। গালের চামড়াটা ছিঁলে যাওয়ার মতো কঁকিয়ে উঠলো লাভলু! তবুও চিৎকার শুনে থামলো না মেহনূর।

জুতা দিয়ে পি:টিয়ে-পি:টিয়ে মুখের অবস্থা দূর্দশা করলো। ঠোঁটের কোণা ফেটে, গাল কেঁটে, চোখের কাছটায় চামড়া উঠে গেলো। ইচ্ছেমতো শরীরের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে পে:টালো মেহনূর। অটোচালক সিটে বসে হতভাগার মতো হা করে আছে। এমন অকল্পনীয় দৃশ্য দেখে সুরাইয়ার বুকটা ঢিপঢিপ করে কাঁপছে। সাবা বড়-বড় চোখে স্তব্ধ হয়ে ঢোক গিলছে। কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছে না! ওর কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছে না, মেহনূর এতোটা বদলে গেছে। লাভলু দুহাত জোড় করে বারবার আকুতি-মিনতি করছে,

– আমারে ছাইড়া দেন। ছাইড়া দেন আপা। আমি জীবনেও আপনেগো গেরামে আইতাম না। ম:ইরা যামুগা আফা। ও আফা আর মা:ইরেন না। ও আফা গো,
চিৎপটাং করে শুয়ে পরলো লাভলু। হাতদুটো এখনো বুকের কাছে ক্ষমার আর্জি জানিয়ে যাচ্ছে। জুতা ধরা হাতটা এবার নিচে নামালো মেহনূর। বুক ফুলিয়ে হাঁপাতে-হাঁপাতে চটি জুতাটা নিচে ফেললো। জুতাটা ডানপায়ে গলিয়ে শক্ত গলায় বললো,

– তোর চেহারাটা নষ্ট করলাম না! আজ কপালগুণে তুই বেঁচে গেলি। তোর বন্ধুকে নিয়ে এখুনি এই গ্রাম থেকে পালাবি! যদি কোনোসময় তোদের দেখতে পাই, এবার লাঠি এনে ঠেঙ্গাবো! ছাড়বো না!
‘ থু ‘ করে একদলা থুথু ফেললো মেহনূর। একদম সরাসরি লাভলুর মুখে মা:রলো সেটা। রাগে-ঘেন্নায় শরীরের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে রাগের হুলকো ছুটে বেড়াচ্ছে। পুনরায় অটোতে উঠে আগের মতো বসলো সে। সাময়িক উত্তেজনা কাটিয়ে সাবা একটু নড়লো, সুরাইয়া এখনো ছোট মুখে চুপ করে আছে। দু’বোন চুপচাপ শাড়ি ধরে অটোতে গিয়ে চড়লো। মেহনূর নিজের ব্যাগটা সুরাইয়ার কাছ থেকে নিয়ে নিলো। কোলের উপর বই মেলতেই সংযত গলায় বললো,
– শফি চাচা, অটো ছাড়ুন। সোজা বাড়িতে গিয়ে থামবেন। যদি মহিলা যাত্রী পান, তবে উঠাবেন। কিন্তু পুরুষ যাত্রী আপাতত তুলবেন না।

আদেশ শুনে অটোটা ছাড়লো বৃদ্ধ শফি। একটু আগের দৃশ্যপটের জন্য তিনি এখনো নিষ্প্রভ। মাথার উপর দুপুরের দ্বিপ্রহরের সূর্য। পাকা রাস্তায় অতো মানুষজন নেই। ভরদুপুরের ক্লান্ত সময়ে গাড়ির চলাচল কিছুটা কমেছে। খালি রাস্তা পেয়ে জোরে অটো হাঁকাচ্ছে। বাতাসে-বাতাসে অটোর ভেতরটা জমজমাট ঠান্ডা। মেহনূর শান্ত ভঙ্গিতে চুপচাপ খোলা বইয়ে ডুবেছে। এমন একটা ভাব, যেনো কিছুই হয়নি। মেহনূরের আরো একটা অদ্ভুত আচরণ নিয়ে সাবা ও সুরাইয়া একে-অন্যের দিকে চাইলো। সাবা চোখের ইশারায় বোঝালো,

– মেহনূর আর স্বাভাবিক নেই। একদম শেষ!
ইশারাটুকু বুঝতে পেরে নিস্ফল ভঙ্গিতে সুরাইয়া বোঝালো,
– মাত্র তো শুরু বুবু। সামনে কি কি হয়, আন্দাজও করতে পারছিনা।

সুরাইয়ার ইশারাটা বুঝতে পেরে বাঁয়ে তাকালো সাবা। সোনালি পাঁকা ধানের জমিতে উদাস দৃষ্টিতে তাকালো। পাক্কা দুটো বছর কেটে গেছে। সময়ের গতিময়তা দেখে অবাক হওয়া লাগে। জীবনের সবটুকু সুখ-দুঃখ কিভাবে ফিরে আসবে, কারোর পক্ষে জানা নেই। নশ্বর এই দুনিয়ার মোহ-মায়ায় সবাই যেনো মত্ত। কখন-কিভাবে সময়ের স্রোত ভেসে যায়, তা ধারণার বাইরে। অটোর উলটো সিটে যে মেয়েটা চুপচাপ বসে আছে, বইয়ের পাতায় মগ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তাকে এখন চেনা যায় না। একটা মানুষ এতো বদলে যায়? আঘাত পেলে স্বভাব এতো শক্ত হয়?

নরম-কোমল-শান্ত মনটা একেবারে পাথর বনে যায়? এতো-এতো প্রশ্ন সাবার মস্তিষ্কে সারাদিন কিলবিল করে বেড়ায়। কখনো উত্তর পায়নি সে। এখনো পায়নি। যদি এ প্রান্তের মানুষটা এমন শক্ত হয়, তাহলে ওপর প্রান্তের মানুষটা কিরকম হালে আছে? কেমন আছে সেই আনসারী? যার নাকের ডগায় রাগ থাকলেও ঠোঁটে থাকতো হাসি। যার স্বভাব ছিলো কাঠিন্য, কিন্তু আচরণ ছিলো খাঁটি। আজ অবধি তার রাগের খোলস দেখতে পায়নি সাবা। সবসময় শুনেছে রেগে গেলে মানুষটা চুপ হয়ে যেতো। কথা বলাই থামিয়ে দিতো। নিজেকে আড়াল করে সবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে ফেলতো। আজ তিনি কেমন আছেন? বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। দুটো মানুষের আকস্মিক বিচ্ছেদ আজও সবকিছু বিষিয়ে তোলে। সামান্য ভুল বুঝাবুঝিতে বিচ্ছেদ হবে? ঠিক বিশ্বাস হয়না। মন মানতে চায় না। মনেহয়, মেহনূরের দোষ আছে। আবার মনেহয়, ওই মানুষটা সব জানে। আচ্ছা, আনসারী কি ইচ্ছে করেই মেহনূরকে দূরে ঠেলেছে? শক্ত কারণ আছে কি?

বাড়িতে পা দিতে-না-দিতেই সুজলা চেঁচিয়ে উঠলেন। তাঁর কানে অতর্কিত ঘটনাটা লোক মারফত এসে গেছে। শোনার পর প্রচণ্ড আক্রোশ নিয়ে দাওয়ায় বসে অপেক্ষা করছেন। মোল্লাবাড়ির প্রধান কর্তা এখন তিনিই। সমস্ত কারবার এখন তিনিই দেখেন। মেহনূর নতমুখে সুজলার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। একমাত্র বড়মার আদেশ-নিষেধ এবং চোখ রাঙানিকে প্রচণ্ড ভয় পায় মেহনূর। বড়মার কাছে আসলে বুকের কলিজা যেনো হাতে চলে আসে। সুজলা গমগম কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,
– ওই ছেলেকে পি:টালি কেন?

মেহনূর ঢোক গিলে চোখ তুললো। একপলক সুজলার গরম চাহনিতে চোখ রেখে আবার চোখ নামিয়ে ফেললো। নিচু সুরে বলতে লাগলো,
– গায়ে হাত দিয়েছিলো। বিশ্রীভাবে উত্যক্ত করছিলো। তাই ওর হাত মো:চড়ে —
কথাটা শেষ হওয়ার পূর্বেই ঝাঁজিয়ে উঠলেন সুজলা। বসা থেকে সোজা দাঁড়িয়ে তিনি নাক ফুলিয়ে বললেন,
– যদি তোর কিছু হতো? এ্যাই, উত্তর দে মেহনূর! যদি তোর কিছু হতো, কে উদ্ধার করতো? চুপ করে থাকবি না! উত্তর দে!

সুজলার বজ্রকন্ঠে চোখ খিঁচালো মেহনূর। ভয়ে দু’পা অজান্তেই পিছিয়ে ফেললো। ওড়নাটা দুহাতে খামচে ধরলো সে। সাবা ও সুরাইয়া ভয়ের চোটে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছে। গোয়ালঘর থেকে একছুটে দৌঁড়ে আসলো শেফালি। এসেই দেখলো মেহনূরকে আচ্ছা মতোন ঝাড়ছে। শেফালি দ্রুত পরিস্থিতিটা ঠান্ডা করার জন্য মেহনূরের পাশে এসে দাঁড়ালো। ওর পক্ষ নিয়ে সুজলার কাছে বললো,

– এই গরমের ভিত্তে আফনে ওরে ঝাড়তাছেন? এইড়া কুনো সময় হইলো? দেহি যাইতে দ্যান তো, আগে ঠান্ডা হোক। পরে ঝাড়িয়েন। ওমা? থাম্বার লাগান খাড়ায় আছেন ক্যান? যাইতে দ্যান।
শেফালির এমন পক্ষপাতিত্ব স্বভাব দেখে রাগে কটমট করছেন সুজলা। প্রতিবার মেহনূরের পক্ষ নিয়ে এইভাবে ওকে বাঁচিয়ে দেয় শেফালি। আপাতত গরমের তীব্রতা দেখে পথ ছাড়লেন তিনি। শেফালি শান্ত ভাবে মেহনূরকে টেনে এনে বাড়ির আঙিনায় ঢুকালো। চৌকিতে বসিয়ে নিচু মুখে ফিসফিস করে বললো,

– পাকনামানী করবার যাস ক্যা ছেড়ি? ওই রাস্তা কি ভালা? বাড়িত আসবার পর ভাবীরে কইবার পারোস না? যদি ওই পুলাগুলান ক্ষতি করতো? তোর জামাইরে কি মুখ দেখাইতাম ছেড়ি? এহনো ক্যান এগ্লা বুঝোস না?
আচমকা শান্তমুখের খোলসটা বদলে গেলো ওর। মেজমার দিকে সরাসরি দৃষ্টি ফেলে শক্ত গলায় বললো,
– আমার কেউ নেই মেজমা। যার নাম উল্লেখ করলেন, আমি তাকে কিছুই ভাবি না। বারবার পুরোনো কথা টেনে আমার আত্মসম্মানে ঘা দিবেন না। আমাকে নিয়ে অসহ্য লাগলে বলে দিবেন। আমি এখান থেকেও চলে যাবো।
প্রচণ্ড রাগ উঠলো শেফালির। নিচের ঠোঁট কামড়ে ডান হাত তুলে থাপ্পড়ের ভঙ্গি করলো। মুখে কপট রাগ ফুটিয়ে বললো,
– বেশি পকর-পকর করলে একটা দিমু! পাংখা গজায়া গেছে তোর? হ্যাঁ? তোর পাংখা কইলাম মটমট কইরা ভাঙ্গি দিমু। চুপ থাক ছেড়ি।

শেফালির শাষানো ধ্বনিতে শান্ত হলো মেহনূর। দুজনের অবস্থা দূর থেকে দেখছেন সুজলা। বুকের উপর দু’হাত ভাঁজ করে শক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। ভেতর থেকে দীর্ঘ চাপা নিশ্বাসটা ছাড়তে-ছাড়তে বললেন,
– আনসারীর বউ আনসারীর মতোই হয়ে গেছে। সেটা কেউ স্বীকার করুক, বা না-করুক! সময় বদলায়।
দরজার কাছে দাঁড়িয়ে চিন্তাভাবনায় মশগুল ছিলেন সুজলা। হঠাৎ পেছন থেকে অপরিচিত কন্ঠ শুনতে পেলেন তিনি। চিন্তার চাঁদরে ফুটো হতেই সুজলা পিছু ফিরে তাকালেন। তখনই কপালে অসংখ্য ভাঁজ যুক্ত হলো, সুজলা ভ্রুঁ কুঁচকে তাকালে পুরুষালী কন্ঠটা সৌজন্য গলায় শুধালো,

– জ্বী, শুনুন? আমি একজনের খোঁজ করছি। একটা গোলাপী ড্রেস পরা মেয়ে কি এই বাড়িতে ঢুকেছে? কাইন্ডলি তাকে একটু দরকার। একটু জরুরি প্রয়োজন। প্লিজ ইনফোটা দিয়ে দিন।

মন বাড়িয়ে ছুঁই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ২