সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ২০

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ২০
লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা

নিরবতার বেড়াজালে আবদ্ধ সদ্য বিয়ে নামক সম্পর্কে বাঁধা পড়া এক জোড়া কপোত-কপোতী। ছোট নয় আবার বেশ বৃহৎ নয়, ইট পাথর দ্বারা তৈরি মধ্যম আকৃতির কক্ষ জুড়ে গোলাপ,রজনীগন্ধার সুভাস বইছে বাতাস মাধ্যমে। জানালার কপাট দু’টো মেলা। প্রবেশদ্বার পেয়ে সাঁই সাঁই করে অবলীলায় সমীরণ একে অপরের সঙ্গে লেপ্টে থাকা দুই দেহ স্পর্শ করছে৷ প্রতি বার কায়ার উষ্ণতা কমিয়ে হিম শীতল করে তুলছে।

প্রিয়ু নিস্তব্ধ প্রহর দীর্ঘ করতে পারে নি। প্রশস্ত শক্ত বুকে নিজেকে আরো একটুখানি গুটিয়ে নিল। চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ বারি খেল দেয়ালে,দেয়ালে। স্পষ্টত দেখতে পায় আয়ুশ প্রিয়ু কাঁপছে। বৃষ্টি মুখর নিশীথিনী মানেই নিঃসন্দেহে প্রকৃতির নির্জীব, ঠান্ডা, আদ্রসিক্ত রূপ। বাহিরের বাতাসের কারণে শীতলীকরণ যন্ত্র বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও কক্ষ টা অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এ বুঝি বরফে পরিণত লাভ করবে। এমনিতেই কিছুক্ষণ পূর্বে ঘরে ঢুকে প্রিয়ুকে ছুঁতেই অনুভব করে ওর গায়ের তাপমাত্রা স্বাভাবিক নয়। তবুও মেয়েটা দিব্যি লাজুক ভঙ্গিতে বসে ছিল। তার জন্য সেকেন্ড, মিনিট অতিক্রম করেছে অপেক্ষায়। শুধু যে এই কয়েক মিনিট প্রতীক্ষায় কাটিয়েছে এটা নিতান্ত ভুল। কেননা মেয়েটা বছরের পর বছর আশা বুনন করেছে তার থেকে একটু ভালোবাসা পাওয়ার নিমিত্তে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আয়ুশ প্রিয়ুকে বুক থেকে সরিয়ে উঠে দাঁড়াল। হতভম্ব হয়ে গেল প্রিয়ু। ব্যগ্র কন্ঠে বললো,’ কোথায় যাচ্ছো?’
‘ জানালা টা বন্ধ করে আসি প্রিয়ু। তোমার শরীর কাঁপছে জ্বরে। আর ফ্রেশ হয়ে নাও। নিচে যাবে খেতে। রুমে এসেছি পর্যন্ত জড়িয়ে ধরে আছো। কই গিয়ে হাসবেন্ড এসে তোমাকে ছুঁবে তা না তুমি নিজেই বলা নেই কওয়া নেই বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লে। আমি কি এত নির্লজ্জ প্রিয়ুকে বিয়ে করে এনেছি?’
লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে বসে রইল প্রিয়ু। আয়ুশের কন্ঠে দুষ্টমির ছাপ বিশদ। এই প্রথম বার আয়ুশ তাকে এমন করে লজ্জা দিল। ঘরে ঢুকে ওকে স্পর্শ করতেই উত্তেজিত হয়ে জড়িয়ে ধরে আয়ুশকে। প্রিয় মানুষটাকে অনেক সাধনার পর পাওয়ার ফলে অস্থিরতা চেপে রাখতে পারে নি।

আয়ুশ জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দেয়। নরমাল একটা শাড়ি এনে প্রিয়ুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,’ এত ভারী কাজের বেনারসি পড়ে আছো,কষ্ট হচ্ছে না?এর জন্যই বোধহয় জ্বর উঠেছে। যাও পাল্টে ফেলো। আমি রহিমা খালাকে আমাদের খাবার টা রুমে পাঠিয়ে দিতে বলি। আমার কাছে ওষুধ আছে,খাবার খেয়ে মেডিসিন নিবে তারপর ঘুম। ‘
প্রিয়ু তড়াক করে লাফিয়ে উঠল। চক্ষুদ্বয় বড় বড় করে প্রশ্ন করে বসে,’ ঘুম?’
ভ্রুঁ কুঁচকে তাকাল আয়ুশ। গলা ঝেড়ে বললো,

‘ ঘুমাবে না তো কি করবে?’
প্রিয়ুর ইচ্ছে করছে আয়ুশের মাথায় চাপড় মেরে বলতে ‘ বাসর রাতে মানুষ কি করে?বিড়াল মারে না?তুমি শিখো নি মারা?রসকষহীন মানুষ একটা।’
কিন্তু লজ্জায় কিছু বলতে পারল না। কিঞ্চিৎ রেগে বিছানা ছেড়ে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। মিনিট কয়েক অতিবাহিত হতেই দরজা মেলে রিনরিনে স্বরে বললো,
‘ আয়ুশ এদিকে আসো তো। ‘

পাঞ্জাবি পরিবর্তন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আয়ুশ। প্রিয়ুর মোলায়েম কন্ঠের ডাক অবজ্ঞা করার সাহস হয় নি তার। কিন্তু ওয়াশরুমে কেন ডাকছে মেয়েটা?প্রশ্ন বিহীন এগিয়ে গিয়ে নরম গলায় আওড়ায়,’ বলো। ‘
প্রিয়ু উল্টো ঘুরে ধীর কন্ঠে বলে উঠলো,’ কোমরের কাছের সেফটিপিন টা খুলে দাও না,আমি পারছি না৷ খুব বাজে ভাবে শাড়ির সাথে আঁটকে গিয়েছে হয়ত। ‘
ঠোঁটে ঠোঁট চেপে আয়ুশ প্রিয়ুর কথা মোতাবেক সেফটিপিন খোলায় মনোনিবেশ করলো। খুলতেই শাড়ি সরে গিয়ে চক্ষে পড়ে মেয়েটার ফর্সা উন্মুক্ত কোমর। গলা শুকিয়ে আসে তার। আনমনে, মস্তিষ্কের বিরোধিতা করে হাত প্রিয়ুর কোমর স্পর্শ করে।

ঘাড়ে,কাঁধে তপ্ত নিঃশ্বাস আছরে পড়ছে। নেত্র যুগল নিমীলিত হয়ে আসে প্রিয়ুর। অনুভব করে সুপুষ্ট হাতে একজন সুদর্শন পুরুষ ওর কোমর জরিয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়েছে। শ্রবণ হয় আয়ুশের মাদকতা মেশানো কন্ঠস্বর,
‘ ইচ্ছে করে নিয়ন্ত্রণ হারা করার জন্য কাছে টানলে তাই না?ভেবেছিলাম জ্বরে ভোগা মেয়েটাকে আদরের রোগে আক্রান্ত করবো না কিন্তু মেয়েটাই এখন ইনিয়ে বিনিয়ে কাছে টানছে। কি চাইছো?তোমার ইজ্জত সঁপে দিবে আমার হাতে?’
প্রিয়ুর দেহের পশম খাঁড়া হয়ে গেল। শিরশির করছে সমগ্র গা। সরে যেতে নিলে আরো কঠিনভাবে নিজের বুকে পিছন থেকে বেঁধে রাখে আয়ুশ। গাঢ় স্বরে ডেকে উঠে, ‘ প্রিয়ু। ‘
সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ুর সাড়া,’ হু। ‘

‘ আজ একটা সত্যি কথা বলতে চাই। ভেবেছি কখনও বলব না,তখন আমার বিবেক আমার মনের দুয়ারে কড়া নেড়ে জানায় যাকে ভালোবাসি তাকে ঠকানো উচিত না। তোমার আগে একটা মেয়ে আমার মনে দাগ কেটে যায় এক পলকে। তাকে প্রথম দেখি এতিমখানায় একটা কাজে গিয়ে। কয়েকটা মেয়ের সাথে বসে ওদের কথা শুনছিল চুপচাপ। সেদিন থেকে নিজের আবেগ,অনুভূতিতে আমি শুধু মেয়েটাকে খুঁজে পেতাম। কিন্তু আমার সেই অনুভূতির নাম হয় নি কখনো। হতেও দেই নি আমি। সে শুধুই এক সমুদ্র আবেগ থেকে গেল, যার কূল কিনারা পাই নি।

আর চেষ্টাও করি নি। কারণ সময় আমার অনুকূলে থাকে নি,তাকে পাওয়ার সাধ্য দূর চিন্তা করাও হারাম হয়ে উঠেছিল। তুমি জীবনে আগেই ছিলে। আকার ভঙ্গিতে কত-শত বার বুঝাতে চাইতে ভালোবাসার কথা,বুঝেও এড়িয়ে যেতাম। কিন্তু আজ আমি সত্যিই তোমাকে চাই। খুব বেশি চাই। জীবন সুন্দর কে তোলার জন্য বেশি কিছু প্রয়োজন নেই প্রিয়ু কেবল ভালো সঙ্গী হলেই চলে। যেটা তুমি।’
অন্তঃস্থল কড়াভাবে কেঁপে কেঁপে উঠে প্রিয়ুর। নিজেকে সামলে শঙ্কিত কন্ঠে বলে উঠলো,’ সেই মেয়েটা শ্রেয়া?
কোমরে হাতের বাঁধন ঢিলে হয়ে যায় মুহুর্তেই। ঠাহর হতেই প্রিয়ু চট করে ঘুরে তাকায়। চোখ রাখল আয়ুশের চোখে। মৃদু হেসে বলে,

‘আচ্ছা আয়ুশ আমরা যা করি তার পিছনে আমাদের স্বার্থ লুকিয়ে থাকে তাই না?এই যে আমি তোমাকে চাই এর পিছনের স্বার্থ হলো ভালোবাসা। তেমনি শ্রেয়ার জন্য আমার কাছে যখন সাহায্য চাইলে এর পিছনেও কিন্তু তোমার মনে ওর জন্য অনুভূতি ছিল। তাতে আমার একটুও কষ্ট নেই বিশ্বাস করো। হতে পারে ও তোমার প্রথম অনুভূতি কিন্তু আমি আমার বরের শেষ ঠিকানা। শ্রেয়া আমার কাছে আসার প্রথম কয়েকটা দিন তোমার ওর প্রতি অস্থিরতা বলে দিত ও ঠিক কতটা ক্ষত করেছে তোমাকে। চাইলে ওর হাত টা ধরতে পারতে কিন্তু এমনটা করো নি। ভাইয়ের বউয়ের প্রতি সম্মানের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছো অনুভূতিদের চাপা দিয়ে। অদৃশ্য হয়ে হাতে হাত না রেখেই নতুন পথে হাঁটতে শিখিয়েছো মেয়েটাকে। এমন একটা ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবতীর কাতারে ফেলতে একবারও হকচকাবো না,পিছিয়ে আসব না। ‘
এতটুকু বলে প্রিয়ু লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল। পরক্ষণেই শুনতে পেল আয়ুশের অনুরোধসূচক কন্ঠস্বর,

‘ ক্যান আই কিস ইউ লেট লতিফ প্রিয়ু?’
প্রিয়ুর অধরে লজ্জালু রেখার দেখা মিলে। মাথা ঝাঁকিয়ে পায়ের আঙ্গুল মেঝেতে ভর দেয়। উঁচু হয় খানিকটা। আয়ুশ কোমর জরিয়ে কপালে আঁকে ওষ্ঠের পরশ। ধীরে ধীরে গাল,চিবুক ছুঁয়ে দেয় ঠোঁটের সাহায্যে। কন্ঠনালি ভারি হয়ে আসে৷ বলে,
‘ আজ তুমি অসুস্থ। অন্যদিন আদর করি?’
প্রিয়ু মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকাল। নিজের চেহারা দেখাবে না আয়ুশকে। ভিতরে ভিতরে অত্যধিক রাগ হচ্ছে। সাথে সাথেই হকচকিয়ে উঠে। কোলে তুলে নিয়েছে আয়ুশ ওকে৷ জড়োসড়ো হয়ে পাঞ্জাবি খামচে ধরলো। কন্ঠনালি গলিয়ে বেরিয়ে এলো,’ ফ্রেশ হবো না?’

‘ পরে একেবারে গোসল সেড়ে নিও৷ নিজে যখন উস্কে দিয়েছো বাঁধা আর মানছি না। ‘
হাসফাস অবস্থা প্রিয়ুর। মুখ ফস্কে বেরিয়ে এলো,
‘ এখনও তো গভীর রাত হয় নি৷ ‘
আয়ুশের দু’ পা থেমে গেল তৎক্ষনাৎ। কিয়ৎক্ষণ নির্নিমেষ চেয়ে রইল প্রিয়ুর দিকে। চাহনি বুঝতেই এক হাতে মুখ ঢাকার চেষ্টায় লেগে পড়ল ও। এমতাবস্থায় প্রচন্ড হাসি পেল আয়ুশের। একটু ঝুঁকে ফিসফিস করে বললো,
‘ সকাল,দুপুর , সন্ধ্যা, রাত সব টাইম ফ্রি আমি তোমার জন্য। শুধু একটু ইশারা করলেই দিনের আলোতেও রুমে আঁধার নামিয়ে দিব। বুঝলে সুন্দরী?’
প্রিয়ু ফটাফট বলে উঠলো,’ ছি!বিশ্রী লোক। ‘

শ্রেয়া বেনারসি পাল্টে বসে আছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল অনেক সময় পেরিয়ে গেছে অথচ তূর্য আসার নাম গন্ধ নেই। সেই দু’টো কারণ বলে যে অপেক্ষা করো বলে গেল আর এলো না। প্রতিবার ওকেই কেন তূর্যর জন্য চাতক পাখি হতে হয়?আর কত গুণবে অপেক্ষার প্রহর?কত প্রশ্ন জমে আছে,কখন করবে?রাত একবার পেরোলে সকাল ঠিকি আসবে কিন্তু বিশেষ এই সন্ধিক্ষণ টা ফিরে আসবে না। বিয়ের প্রথম রাতকে সন্ধিক্ষণ বলা ভুল না। শুধু কি দু’টো দেহের মিলনের কারণে শ্রেয়া এমনটা ভাবছে?একদমই না। দু’টো হৃদয়েরও মিলন ঘটে। তূর্য বলেছে হৃদয়ের টান এটার অর্থ অনেক রকম ভেবে নিয়েছে ও। প্রথম যেটা ভাবল সেটা হলো ভালোবাসা। শ্রেয়ার সত্তায় তোলপাড় সৃষ্ট করে তুলেছে দ্বিতীয় কারণ খানা। ঠিক করে নিল আজ তূর্য কে সব বলবে,সেদিন ছেড়ে যাওয়ার জন্য ক্ষমা চাইবে। ওর দৃঢ় বিশ্বাস তূর্য ফেলে দিবে না ওর কথাগুলো।
তূর্য রহিমাকে সাথে নিয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। রাশি ভারী গলায় বলে উঠলো,’ আমাকে খাবারের প্লেট টা দিয়ে তুমি গিয়ে শুইয়ে পড়ো খালা। ‘

রহিমার মন চাইল শ্রেয়াকে একটা বার দেখার। তবে তা প্রকাশ করলো না। প্রতুত্তরে জানালো, ‘ আচ্ছা। ‘
তূর্য ওনার হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ল। সোফার সামনে অবস্থিত ছোট টি টেবিল টার উপর প্লেট টা রেখে বললো,’ খেয়ে নাও। ‘
নানান চিন্তায় এতটাই মশগুল শ্রেয়া ঘুণাক্ষরেও রুমে কারো প্রবেশের টের পায় নি। গম্ভীর স্বর কর্ণপাত হওয়া মাত্র হুড়মুড়িয়ে উঠে দাঁড়াল। প্লেটের দিকে চেয়ে নিম্ন স্বরে বললো,’ আপনি খাবেন না স্যার?’
তূর্য মোবাইলটা হাতে নিয়েছিল সবে৷ নরম, মায়াময় কন্ঠস্বর শ্রবণনালি ভেদ করে সোজা গিয়ে বিঁধল হৃদয়স্থলে। তৎপরে কপাল কুঁচকে এলো। বিরক্ত ভঙ্গিতে বললো,

‘ খেয়ে নিয়েছি। পরে মনে হলো বাসর ঘরে ফুলের মাঝে ছাত্রীকে অভুক্ত বসিয়ে এসেছি,তার খাতিরযত্ন করতে হবে না?বেশ রোমান্টিক ব্যাপার না?স্যারের বাসর ঘরে ছাত্রী। ‘
পুনরায় দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো,’ খেয়ে জলদি বেলকনিতে আসো। এখন আর বৃষ্টি নেই। কথা আছে তোমার সাথে। ‘
শ্রেয়া জিহ্বা কাটল কথার মানে বুঝতে পেরে। মনে মনে প্রতিজ্ঞাবাক্য আওড়ায়,’ ভার্সিটিতে স্যার,বাসায় জামাই। উঁহু!প্রাণের স্বামী। ‘

কয়েক লোকমা খেয়ে গুটি গুটি পায়ে বারান্দার খোলা দরজার অভিমুখে একপাশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়াল। তূর্য তীক্ষ্ণ নজর নিক্ষেপ করলো ওর দিকে। লম্বা,বলিষ্ঠ হাত দ্বারা টেনে নিকটস্থে এনে হাজির করে। আকস্মিক টানে ঈষৎ ব্যাথা অনুভব করে শ্রেয়া। চোখ কুঁচকে আসে। পানি পড়ায় পিচ্ছিল মেঝেতে পড়তে গিয়েও বেঁচে যায়। এ ক’দিনের পরিচয়ে তূর্যর স্পর্শে এত রূষ্টতা অনুভব করে নি। মনটা কেমন ভীরু ভীরু হয়ে পড়ছে। ভীত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, ‘ কি বলবেন?’
ওকে দেয়ালের সাথে দাঁড় করিয়ে নিচু হয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে দুর্বোধ্য হাসল তূর্য। এক হাতের পাঁচ আঙ্গুলে আঙ্গুল আবদ্ধ করলো। নাকে নাক ছুঁয়ে দিয়ে চক্ষু মেলে প্রগাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নিষ্পলক।
গরম নিঃশ্বাসে লালের আস্তরণে ঢাকা পড়েছে শ্রেয়ার শ্বেত ত্বক। নিঃশ্বাস আলিঙ্গনে ক্ষীণ কাঁপছে নরম,গোলাপি অধর যুগল। নিমিষেই তূর্যর কন্ঠে ক্রুদ্ধতার ছোঁয়া,

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৯

‘ পাগল রা কি মানুষের কাতারে পড়ে না?অন্য গ্রহের প্রাণী?তাদের সাথে সংসার করলেই ম*রণ?আমি খুব খারাপ শ্রেয়সী। সবাই নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে চায়,আমিও সেটা চাই কিন্তু খারাপ স্বভাব ত্যাগ করে নই। মানুষ তার অপরাধীর কাছ থেকে প্রতি*শোধ নিতে পছন্দ করে, আমি ভালোবাসি শিক্ষা দিতে। ‘

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ২১