সবটাই তুমিময় পর্ব ৩৩ || লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩৩
লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

যে মেয়েটা একটা মানুষের কাছ থেকে শুধু ভালোবাসি শোনার জন্য মরিয়া হয়ে আছে,সেই মানুষটার কাছ থেকেই বিয়ের কথা শুনতে পেয়েছে।তার মনে কতোটা সুখ অনুভুত হতে পারে তার আন্দাজ হতেই মুখ চেপে ধরে ডুকরে কেদে উঠলাম আমি।খুশিতে।তানহার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।শ্বাস থামিয়ে অনেকটা সময় পাথরের মতো দাড়িয়ে শুধু তিহানের দিকে তাকিয়ে রইলো ও।চোখের জলধারা বইছেই ওর।একটসময় ঠোটে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে আস্তেকরে তিহানের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো হাত।বললো,

-মজা করছিস?
-ন্ না তান্নু।আ’ম…আ’ম সিরিয়াস।আমি তোকে বিয়ে করতে চাই।
-কেনো?
একটু থেমে গেলো তিহান।তারপর বাচ্চাদের মতো করে বলতে লাগলো,
-আমি চাই তুই আমার কাছে,আমার সামনে থাক।ওই বিদেশ টিদেশ যেতে হবে না তোকে।বিয়েটা হয়ে যাক,তুই আমার কাছেই থাকবি।
তানহা দমে গেলো।সাথে আমিও।ভেবেছিলাম আজ তিহান তানহাকে বলবে ওকে ভালোবাসে,ওকে ছাড়া থাকতে পারবে না ও,এজন্য ওকে বিয়ে করতে চায়।কিন্তু তেমনটা হয়নি।ও শুধু চায় ওর বন্ধু,তানহা এদেশেই থাকুক।ওর দায়িত্ববোধ মুহুর্তেই অঙ্কুরের বিয়ে করার কারনটাকে মনে করিয়ে দিলো।উনি জরিয়েই ছিলেন আমাকে।ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে নিলাম নিজেকে।তানহার দিকে এগোতে যাবো,অঙ্কুর হাত ধরে আটকে দিয়ে বললেন,
-ওদের নিজেদের মতো করে কনফেস করতে দাও অদ্রি।অন্তত আমাদের মতো লুকোচুরি দিয়ে শুরুটা নাইবা হলো।
-এখানে কনফেস করার কিছুই নেই তো!তিহান শুধুমাত্র তানহাকে যেতে দেবে না বলে বিয়ের কথাটা বলেছে।
-তিহানের যেতে না দিতে চাওয়ার কারন যে শুধু বন্ধুত্ব,সেটা তোমার অতিরিক্ত যে ব্রেইনটা,সেটা বলছে।তিহান না।সো স্টপ রাইট হেয়ার!

উনি একটানে আবারো কাছে টেনে জাপটে ধরলেন আমাকে।ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি।তানহা নাকটা ডলে বললো,
-শুধুমাত্র এজন্য বিয়ের কথা বললি তুই।দয়া করছিস আমাকে তিহান?
তিহানের বিস্ফোরিত চাওনি।তানহা চোখমুখ মুছে মুখ ফিরিয়ে নিলো।একটা শুকনো ঢোক গিলে শক্তভাবে বললো,
-আজ আমি বাড়িছাড়া,কেউই নেই আমার,কিছুই নেই।এজন্য দয়া হচ্ছে তোর।যাইহোক,এসব কথা থাক।বাড়ি যা তুই!বন্ধু হিসেবে অনেক ভেবেছিস।আর ভাবতে হবে না।চিল ইয়ার!যোগাযোগ হবে তো আমাদের!
-তানহা প্লিজ।এভাবে বলিস না!
-কিভাবে বললাম?আরেহ্!তুইই বা এমন কেনো করছিস?দেশ ছেড়ে যাবো,পৃথিবী ছেড়্…
-তানহা!
তানহা মুচকি হাসলো।তিহানের চেহারায় স্পষ্ট,ওই হাসিটা ওর ভালোলাগেনি একদমই।পান্জাবীর হাতাটা টেনে একপা এগিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-আমাকে ঘিরে আমার অনেক অভিযোগ তান্নু।তোকে ছাড়া কাউকে বলার নুন্যতম ইচ্ছে নেই।হয়তো এজন্য,কারন আমি বুঝে গেছি,তুই ছাড়া অন্য কারো শোনারও নুন্যতম আগ্রহ নেই।তাই তোকেই বলবো।তোকে ভালোবাসি কথাটা স্বীকার করতে পারছি না এটা যেমন সত্য,গত এক সপ্তাহ আমার শুধু তোকে হারিয়ে ফেলার ভয় হয়েছে তানহা।এটাও তেমনি সত্য।যার কোনো কারনই খুজে পাইনা আমি।তোকে নিয়ে তো তোর বাবার ইন্সিকিওর হওয়ার কথা।তবে আমিও ইন্সিকিওর ছিলাম কোথাও।বারবার মনে হতো,তোকে হারিয়ে ফেলবো।আচ্ছা তান্নু,এটা বল,আমিতো আন্নুকে ভালোবাসি,ভার্সিটিতে এমন কতো দিনই ছিলো,ও গায়েব হয়ে যেতো,দেখা হয়নি,যোগাযোগ হয়নি ওর সাথে,তবুও ওর অনুপস্থিতিতে কিন্তু এমন হারানোর ভয় হয়নি আমার।ওর বিয়ে হয়ে গেছে শুনে ভেঙে পরেছিলাম,কতটা,তা তুইও জানিস।তুইতো এটাও জানিস তারপরও নতুন করে জুড়তেও শুরু করেছি নিজেকে।কিন্তু তোর ক্ষেত্রে?তোর বিয়ের কথা শুনে মনে হলো আমার চারপাশ যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে।এমনটা তো হওয়ার কথা না।আমি তো…

-থাম তিহান!আর বলিস না।তোর এ সবটার কারন বন্ধুত্ব।শুধুই বন্ধুত্ব।আন্নুকে হারিয়ে এতোটা ভীতু হয়ে গেছিস যে,তোকে শান্তনা দেওয়া বন্ধুটাকে হারানোর ভয়টা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।আর কিছু না!
-তবে এই বন্ধুত্বটাকেই আমি সুযোগ দিতে চাই তানহা!সারাজীবন নিজের করে আগলে রাখতে চাই তোকে।নিজেকে সপতে চাই তোর কাছে।আমাকে সামলানোর দায়িত্ব নিতে পারবি না তুই তানহা?
তানহার চোখ আবারো ভরে উঠলো।কান্না আটকাতে ঠোট কামড়ে ধরে বললো,
-তুই যেটাকে সুযোগ দেওয়া বলছিস,সেটা শুধুই তোর দায়িত্ববোধ তিহান।

-কথা দিচ্ছি,তা ভালোবাসায় মুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা আমি করবো।তানহা?তুই তো ভালোবাসতি আমাকে।আজ বুঝি তোর জীবনের মুল্য,টাকার মুল্য মনে পরছে?আজ বুঝি বুঝতে পারলি?আমি তোর যোগ্য নই।আজ বুঝি তিক্ত সত্যিটা মেনে নিচ্ছিস?আমার সাথে ওই কুড়েঘরে থাকা সম্ভব না তোর।আজই সব বাস্তবতা অনুভব হলো তোর?আমার আর তোর মাঝের আকাশ পাতাল ব্যবধানটা এক হবার নয়!আজই সবটা বুঝে গেলি তুই?
তানহা অবাক চোখে তাকালো।তারপর জোর করে হাসিমুখ করে বলতে লাগলো,

-ভালোবাসতাম?ভালোবাসি তিহান।ভালোবাসি।তোকে এতোটাই বেশি ভালোবাসি যে,আমার জীবনের সবচেয়ে অমুল্য জিনিস এই ভালোবাসাটাই হয়ে আছে।আর টাকার মুল্য?তোর হাত ধরে জীবনের পথ পারি দেওয়ার ইচ্ছা আমার।জীবনের মুল্যও তো সেখানেই।ভালোবাসায়।যোগ্যতা?যে মানুষটা ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের মাঝে সম্মানটাকেও পুরোপুরি জিইয়ে রাখতে পারে,তার চেয়ে অসাধারন ব্যক্তিত্বের মানুষ পৃথিবীতে হয় না তিহান।তোর কুড়েঘর তো আমার কাছে তিক্ত সত্য কোনোদিনই ছিলো না।ওটা তো ভালোবাসায় জড়ানো এক বলয়।যার মাঝে এমন কয়েকটা মানুষ বাস করে যারা একে অপরকে ভালোবাসে,যত্ম করে।তোর আর আমার মাঝের আকাশপাতাল তফাৎটা বাস্তবতা না তিহান,এই দুরুত্বটা আমাদের টেনে দেওয়া।তুই যেটাকে টাকা আর দারিদ্রতা দিয়ে বিচার করেছিস,আমি সেটাকে বন্ধু হারানোর ভয় দিয়ে,দুরুত্ব একে,আরো কাছে টানার চেষ্টা করেছি।এগুলোই আমার জীবনের চরম সত্য তিহান।আজীবন থাকবে।তোর জন্য আমার ভালোবাসাটা কোনোদিনও বদলাবে না তিহান।কোনোদিনও না।বন্ধু হিসেবে আমি তোকে শান্তনা দেওয়ার অধিকার খাটাতে পারবো।কিন্তু তা বলে,শুধু দায়িত্ববোধের জন্য বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনকে অপমান করে,তোকে সামলানোর অধিকার নিতে পারবো না রে।পারবো না।

অঙ্কুর ছেড়ে দিয়ে হাত ধরলেন আমার।দু আঙুল কপালে স্লাইড করে বিড়বিড়িয়ে বললেন,
-দুজনে মিলে সবটা ঘেটে দিলো আবার!কথা একটাও জানে না ঠিকমতো।
আমি এগোচ্ছিলাম।উনি হাতে টান মেরে বললেন,
-শোনো অদ্রি,এখন আমি কথা বলবো।তুমি একটু টু শব্দও করলে…
-আমি বলবো!তানহা যা ভেবেছে,ঠিক ভেবেছে!কোনো দরকার নেই,এই দায়িত্ব নামের বিয়ের আর বিয়ে নামে ছেলেখেলার!কোনো দরকার নেই!

কোমড়ে দুহাত রেখে গাড়ির সাথে চেপে ধরলেন উনি আমাকে।ছেড়ে দিন বলে ধাক্কাধাক্কি করতে লাগলাম।উনি ঘাড় বাকিয়ে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষন।তারপর ঠোটের বাকা হাসিটা প্রসারিত করে বললেন,
-আমাকে আমার কাজ করতে দাও অদ্রি।ভুলে যেওনা,আমার বউ তুমি।সো ডোন্ট টক সো মাচ!নইলে বেশি কথা বলা ওই ঠোটজোড়া পরম আদরে আটকে দিতে এতোটুকো আটকাবে না আমার।মাইন্ড ইট!
আমাকে ছেড়ে দিয়ে তানহা তিহানের দিকে এগোলেন অঙ্কুর।মুর্তির মতো দাড়িয়ে রইলাম ওভাবেই।উনি তানহার কাছে গিয়ে গলার টাইটা ঢিল করে বললেন,

-আচ্ছা তানহা?তুমি তো তিহানকে ভালোবাসো।আজ যখন ও নিজেকে তোমার কাছে,তোমার মতো করে গুছিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দিতে চাইছে,কেনো মানা করছো বলোতো?রাজি হচ্ছো না কেনো বিয়েতে?
-দায়িত্বের বিয়ে!তার পরিনতি চাক্ষুস দেখলাম তো ভাইয়া।
অঙ্কুর মৃদ্যু হাসলেন।তানহার তাচ্ছিল্য বুঝেছেন উনি।বললেন,
-সে তুমি যাই দেখে থাকো না কেনো,চোখে যা দেখা যায়,তাই কিন্তু সবসময় বাস্তব না।বর যদি বন্ধু হতে না পারে,সেটা যেমন একটা মেয়ের জন্য চরম দুর্ভাগ্যের,তেমনি বন্ধু যদি বর হয়,একটা মেয়ের জন্য সেটা কিন্তু চরম পাওয়া তানহা।
-আমি নিজেকে কারো কাছে দায়িত্বের বোঝা বানাতে চাইনা।অনেক ছোট হয়েছি জীবনে।তা বলে এতোবড় অপমান মানতে পারবো না।

তিহান ব্রিজের উপর হাত রেখে দাড়িয়েছিলো।অন্ধকারে ঘেরা পানির দিকে একধ্যানে তাকিয়ে বলে উঠলো,
-ওকে ওর সিদ্ধান্ত নিতে দিন স্যার।
-ফাইন,এজ ইউ উইশ।
ঠোট উল্টে,দুকাধ উচিয়ে কিছু করার নেই বুঝালেন উনি।তারপর পকেটে দুহাত গুজে গাড়িতে হেলান দিয়ে তানহা তিহানের দিকে তাকিয়ে রইলেন।আমি এগিয়ে গিয়ে তানহার কাধে হাত রাখলাম।মাথা নেড়ে বুঝালাম ওর সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে।ও‌ জরিয়ে ধরলো আমাকে।নিরবে কেদে যাচ্ছিলো।অঙ্কুর তখনো ঠোটে হাসি ঝুলিয়ে।যেনো মজার কিছু ঘটেছে।এমন সময় হাসা যায়?খানিকটা নিরবতার পর উনি উত্তেজিত হয়ে বললেন,
-ওহ্!একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম।তিহান?আমি কিন্তু তানহার বিয়ের আসরে বলে এসেছি কনে বয়ফ্রেন্ডের সাথে পালিয়েছে।এতে ওর পাপা হয়তো তোমাকেই সন্দেহ করছে।কেসটেস ফাইল করলে সেটা তোমার এগেনিস্টেই হবে।একটু মানসিকভাবে প্রস্তুত থেকো।

তিহান ওভাবেই দাড়িয়ে চুপচাপ।তানহা ছেড়ে দিলো আমাকে।অঙ্কুর বললেন,
-এখন তুমি ভাবছো,প্রমান নেই,কিছু করতে পারবে না,ইত্যাদি,ইত্যাদি!কিন্তু তিহান,এমনটা কিন্তু একদমই না!একটু ক্রিয়েটিভ কাজ তানহার পাপাও করে রেখেছে।আর আমিও তাকে আন্ডারেস্টিমেট করে ছোট একটা ভুল করেছি।
তিহান পিছন ফিরলো।ভ্রুকুচকে তাকিয়ে রইলো অঙ্কুরের দিকে।তানহা এগিয়ে গিয়ে বললো,
-মানে?কি করেছেন আপনি?

-আসলে,তোমাদের বাসার গেইটের যেপাশে সিসিক্যামের মুখ করা,ওইপাশ দিয়েই তিহান কোলে করে গাড়িতে তুলেছে তোমাকে।সো,ওই ফুটেজ দেখলে তারা কনফার্ম,তুমি পালাও নি,তিহান তুলে নিয়ে গেছে তোমাকে।
তানহা বড়বড় চোখে তাকালো অঙ্কুরের দিকে।উনি ঘাড়টা চুলকে বললেন,
-ইয়ে,আমি তো আর জেনেবুঝে গাড়িটা ওখানে দাড় করাই নি!পরে আসার সময় দেখি,ওইদিকেই তোমার পাপার সিসিক্যাম তাক করা!ওটা নষ্ট করার সুযোগ হয়নি।তারআগেই…

-আপনি….
তানহা তেড়ে এগোলো অঙ্কুরের দিকে।উনি দুপা পিছিয়ে ভয়ার্ত চেহারা করে বললেন,
-আরে আরে,রাগ করছো কেনো?বললাম তো,ইচ্ছে করে করিনি।তাছাড়া তিহান ফাসলে তোমার কি?
-ও আমার বন্ধু!
-ধুরু!ছাড়োতো!কানাডা গেলে ওর চেয়ে ভালো অনেক বন্ধু পাবে!
অঙ্কুরের গা ছাড়া জবাব।তানহা মাথা চেপে ধরে চেচিয়ে বললো,
-এতোবড় ভুলটা কি করে করলেন আপনি?

অঙ্কুর গাল ফুলিয়ে মাথা নিচু করে নিয়ে বিড়বিড় করে বললেন,
-ভুলটা তো তুমি চাইলেই শুধরে নিতে পারো।এখন তুমি যদি তিহানকে বিয়ে করে নাও,পুলিশ তো ওর কিছু করতে পারবে না।ইউ বোথ আর এডাল্ট।নিজেদের ইচ্ছেমতো বিয়ে করতে পারো তোমরা।এটা বলে তিহানকে ছেড়ে দেবে।
তানহা মাথা তুলে তাকালো।তিহান বললো,
-দেখুন স্যার,যা হবার,হয়ে গেছে।আমার সাথে যা হবার,হবে।এসব নিয়ে ভেবে আর কোনো লাভ নেই।আমি আসছি।টেক কেয়ার তানহা।যেখানেই থাকিস,ভালো থাকিস।
ও হাটা লাগালো।তানহা কি একটা ভেবে চেচিয়ে বললো,
-দাড়া তিহান!

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩২

ও দাড়িয়েছে।তবে পেছন ফেরেনি।তানহা অঙ্কুরের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বললো,
-আমার তিহানের সাথে কিছু কথা বলার আছে।একা!
-বলো।কিছু কথা কেনো?অনেক কথাই থাকা উচিত তোমাদের।আফটার অল,বন্ধুকে ছেড়ে চিরতরে বিদেশ চলে যাবে বলে কথা।বলে নাও কথা,শেষবারের মতো।চলো অদ্রি।
অঙ্কুর কথা শেষ করে আমার হাত ধরে টেনে আবারো গাড়ির অন্যপাশে নিয়ে আসলেন।এদিক থেকে ওদের দেখা যাচ্ছে না,কোনো কথাও শোনা যাচ্ছে না।উনি গাড়িতে হেলান দিয়ে বুকে হাত গুজে দাড়ালেন।আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন,

-শুনলাম গ্রামে যাওয়ার কথা বলেছো দাদুর কাছে?
-আপনি এখন এইসব কথা বলছেন?ওদিকে তানহা তিহান…
-ওদের বিয়েটা হচ্ছেই।আর দেখবে,ওরা খুব তাড়াতাড়ি দুজন দুজনের ভালোবাসাটাও বুঝতে শুরু করবে।এতো ভেবো না তো!
কথাটা বলে কলার কোটটা দুবার ঝাড়লেন উনি।হাতাটাও টেনে গুটিয়ে নিলেন।ওনার এই চরম আত্মবিশ্বাস প্রতিবার বিস্মিত করে আমাকে।বলেই ফেললাম,
-আপনি এতোটা নিশ্চিত কিভাবে?
অঙ্কুর আমার দিক ফিরলেন।মুচকি হেসে বললেন,
-কারন এটা আমার বিশ্বাস অদ্রি।আর তুমি তো জানোই,অঙ্কুরের বিশ্বাস কোনোদিন হারেনি।দেখে নিও,তেমনটাই হবে,যেমনটা আমি ভেবেছি।হারবে না আমার বিশ্বাস।না আজ তানহার ভালোবাসার ক্ষেত্রে,নাইবা আমার ভালোবাসার ক্ষেত্রে।

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩৪