স্পর্শানুভূতি গল্পের লিংক || writer:Nurzahan akter (allo)

স্পর্শানুভূতি পর্ব ১
writer:Nurzahan akter (allo)

স্যানিটারি ন্যাপকিন হবে ম্যম! ন্যাপকিনটা দিলে আমার অনেক উপকার হতো (হাসি হাসি মুখে)

আমি কথাটা শুনে পাশে তাকিয়ে দেখি, একটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকেই কথাটা বলছে,দেখে মন হচ্ছে ভদ্র ঘরের ছেলে।সুঠাম দেহ,ফুল ড্রেস ব্ল্যাক লম্বাতে ৫’১০ এমনিতেই হবে!উনার বলা কথাটা শুনে আমার মাথাটা গরম হয়ে গেল।কারন কিছু কিছু ছেলে আছে মেয়েদের টিজ, আর লজ্জা দেওয়ার জন্য এসব জিজ্ঞাসা করে।আমি সিট থেকে উঠে দাড়িয়ে বললাম…

আমিঃনাইজেরিয়ান উগান্ডা,ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা,কাঁচা কলার হালুয়া তোর তো সাহস কম না,তুই আমাকে টিজ করার জন্য এসব বলছিস?(দাঁতে দাঁত চেপে)

ছেলেটাঃসরি!এসব কি বলছেন?আমি আপনাকে কখন টিজ করলাম।(অবাক হয়ে তাকিয়ে)

মেয়েটিঃতোর সরির মায়েরে বাপ,আমাকে টিজ করবি আর আমি মুখ বুঝে মেনে নিবো তা তো হবে না,আমাকে বোকা সোকা মেয়ে ভাবলে ভুল করবে বাচ্চু,বাম থেরাপি দিলে বুঝবি আমি কে?(রাগি চোখে তাকিয়ে)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ছেলেটিঃআপনি অযথা আমাকে ভুল বুঝছেন?আ,,মি

আমিঃচুপ একদম চুপ!তা এই চলন্ত ট্রেনে তোর ন্যাপকিন পড়তে ইচ্ছে হলো কেন?ছেলে হয়ে ন্যাপকিন চাচ্ছিস এটা কোন দেশের ভদ্রতা শুনি,বাদরামী করার জায়গা পাস না তাই না।(দাঁতে দাঁত চেপে)

অচেনা ছেলেটাঃআমি কখন বললাম ন্যাপকিন আমি পড়বো!আসলে….(অবাক হয়ে)

আমিঃতোর আসলে-নাকলে তোর কাছেই রাখ।বেশি কথা বললে ইফটিজিং এর কেসে ফাসিয়ে দিবো।তুই আমাকে চিনিস না বাচ্চু,তারাতারি এখান থেকে কেটে পড় তা না হলে তোর খবর আছে।(রেগে গিয়ে)

ধুর মাথা!মেজাজটাই গরম করে দিলো।এসব হাগল -পাগল কোথা থেকে আসে কে জানে?(মেযেটিসিটে বসে পড়ে)

ছেলেটাঃআপনি এভাবে রেগে যাচ্ছেন কেন?আমাকে কিছু বলার সুযোগটা তো দিন!আপনি শুধু শুধু আমাকে ভুল বুঝছেন।আসুন আমার সাথে…(হাত ধরে টেনে)
মেয়েটিঃকতবড় সাহস আমার হাত ধরিস?বুঝে গেছি তোর মরার পাখনা গজিয়েছে।
ছেলেটিঃ shut up!আর আসুন আমার সাথে…(রাগ দেখিয়ে)

ছেলেটা মেয়েটার হাত একপ্রকার টেনে নিয়ে গেল একটা সিটের সামনে। আর ছেলেটি আরেকটা মেয়েকে দেখিয়ে বললো।

ছেলেটাঃবোন তোমার সমস্যার কথাটা উনাকে বলো প্লিজ!উনি তোমাকে সাহায্য করবে আশা করি।আর তোমরা কথা বলো আমি একটু আসছি(ওদের কথা বলার সুযোগ দিয়ে)

(★★★উপরে যাদের কথা শুনছিলেন তারা হচ্ছে আমার গল্পের নায়ক-নায়িকা।ছেলেটি হচ্ছে রাসেল তাওসীফ আর মেয়েটি হচ্ছে মিষ্টু তাহিয়াত।রাসেল ট্রেনে করে অফিসের কাজে ফেনীতে যাচ্ছে আর মিষ্টু যাচেছ ফেনীতে ওর ফুপির বাসায় । রাসেলের সামনে সিটে একটা মেয়েকে কাঁদতে দেখে, কেন কাদছে কারন জানতে চাই?আর মেয়েটির সাথে কথা বলে জানতে পারে মেয়েটার পিরিয়ড হয়েছে বাট ওর কাছে ন্যাপকিন নাই এজন্য কাঁদছে। রাসেল মেয়েটাকে কাঁদতে নিষেধ করে আর কারো সাহায্য নেওয়ার জন্য উঠে দাড়ায়। কি মনে করে মিষ্টুর সামনে যায় আর মিষ্টু
থেকে একটা ন্যাপকিন চাই বাট মিষ্টু ভুল বুজে এত কথা শুনিয়ে দেয়।
আর বাকিটা তো উপরেই দেখলেন★★★)

মিষ্টু মেয়েটার কাছে থেকে ওর সমস্যা কথা শুনে আর ওর ব্যাগ থেকে ন্যাপকিন আর একটা ড্রেস বের করে দেয়,তারপর ট্রেনের ওয়াশরুমে গিয়ে ড্রেসটাও বদলে নিতে বলে।মেয়েটি ওয়াশরুমে গেল আর মিষ্টু দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকলো,মেয়েটি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে মিষ্টুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।মিষ্টু একটা হাসি দিয়ে মেয়েটির চোখ মুছে দেয়।মিষ্টু মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে….

মিষ্টুঃআপু এটা কমন ব্যাপার তুমি কেদো না!তোমার জায়গাতে আমি থাকলে হয়তো আমিও কাঁদতাম।এসব নিয়ে মন খারাপ করো না!এবার বলো তো আপু তোমার নাম কি?আর তুমি কি একাই যাচ্ছো, নাকি সাথে কেউ আছে?(একটা হাসি দিয়ে)

মেয়েটিঃআমি তখন কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না!এজন্য কেঁদে দিসিলাম।আর আমার নাম মুনিরা!আমি কুমিল্লা যাচিছ!না সাথে কেউ নেই আমি একাই যাচ্ছি।

মিষ্টুঃআপু তোমার নামটা খুব সুন্দর!আর আমার নাম মিষ্টু!
তুমি তো বললে তুমি একা একা যাচ্ছো,তাহলে ওই ছেলেটা কে হয়?

মুনিরাঃতোমার নামটা তো আরো মিষ্টি,তোমার নামের মত তুমি খুব মিষ্টি একটা মেয়ে ।আর ওই ভাইয়াটা আমার কেউ হয় না!আমি কাঁদছিলাম দেখে ওই ভাইয়াটা আমার সাথে কথা বলে আর তোমাকে ডেকে আনে। তোমার আর ওই ভাইয়ার কথা আমি কোনদিনও ভুলবো না।(কৃতজ্ঞারসূচক একটা হাসি দিয়ে)

মিষ্টুঃওহহ! আর ধন্যবাদ দিতে হবে না আপু।তুমি আমার বড় সো ছোট বোনকে কেউ ধন্যবাদ দেয় না।(হাসি দিয়ে)

মিষ্টু আর মুনিরা যে যার সিটে গিয়ে বসে!মিষ্টু আবার উঠে রাসেলকে খুজতে থাকে আর দেখে একটা সিটে বসে লেপটপে কিছু করছিলো আর স্প্রাইট খাচ্ছিলো।রাসেলের পাশের সিটে গিয়ে মিষ্টু দুম করে বসে পড়লো।রাসেল আড়চোখে দেখলো বাট এমন একটা ভাব নিলো যেন ও মিষ্টুকে চিনেই না।মিষ্টু রাগি চোখে তাকিয়ে রাসেলের হাতে থাকা স্প্রাইট কেড়ে জানলা দিয়ে ফেলে দিলো আর একমুটো বাদাম রাসেলের হাতে দিলো আর….
মিষ্টুঃ আমি মিষ্টু!আর আমি কাউকে সরি বলি না!যেহেতু আমি ভুল বুঝেছিলাম এজন্য বাদাম দিয়ে ভাব করে নিতে এসেছিলাম,কিন্তু আপনার মত উল্লুকের সাথে ভাব না করাটাই বেটার।(মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেল)

রাসেলঃযা বাবা!এ কেমন মেয়ে পাল্লায় পড়লাম,না কিছু বলতে দেয় আর না কিছু শুনতে চাই। নিজেই বকবক করে,আর নিজেই ভুল বুঝে এত এত কথা শুনিয়ে চলে গেল।আর কি বলে গেল এটা, সরি বলবে না বাট বাদাম দিয়ে ভাব করবে!আর হাজিবাজি এসব কোন দেশের গালি দিয়ে গেল।
(কনফিউড হয়ে)

মিষ্টু আর ওর কাজিন রাএি একসাথে বেড়াতে যাচ্ছে, মিষ্টু বকবক করছে আর রাএি বাধ্য মেয়ের মত শুনছে,না শুনেও তো উপায় নেই।মিষ্টু রাএির দিকে তাকিয়ে বলছে,,

মিষ্টুঃ আপু!আমি যার সাথেই কথা বলি তার সাথেই ঝগড়া লেগে যায়! বারবার কেন এমন হয় বলতে পারিস?(মন খারাপ করে)

রাএিঃআরে বোকা এটাও একটা গুন যেটা সবাই পারে না।আর তুই তো নোবেল পাওয়ার মত ঝগড়ুটে সমস্যা নাই বোন তুই চালিয়ে যা।ইনশাআল্লাহ দেখবি খুব তারাতারি সেই নোবেলটা তুই পেয়ে যাবি।(পাম দিয়ে)

স্পর্শানুভূতি পর্ব ২