তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ১৭
Suraiya Aayat
ভার্সিটি থেকে বাড়ি এসে আরূ রুমে বসে আছে, বিছানার উপর বসে দুহাত দিয়ে বিছানার চাদরটা কে শক্ত করে মুঠি করে ধরে আছে , সারা শরীর জুড়ে অস্থিরতা বিরাজমান , এই শীতেও দরদর করে ঘামছে আর বারবার কেবল মনে পড়ছে পুরনো স্মৃতিগুলো ৷ কেন ভুলতে পারছেনা আরিশকে ! ওকে তো ভুলতেই হবে ৷ জেদের বশে নিজের জীবনের এত বড় একটা সিদ্ধান্ত কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিয়ে ফেলেছে ও ৷ যাকে চেনে না, জানে না , সে কি করে, কোথায় থাকে , তার সম্পর্কে কোন বিন্দুমাত্র হিতাহিত ধারনা টুকুও আরূর নেই, এমনকি যখন বিয়েতে হূট করে রাজি হয়ে গেল তখন নামটাও যানতো না , সেই পরিস্থিতিতে আসফির সঙ্গে বিয়েতে রাজী হয়ে গেছে আরু ৷ আসলে ওর আরিশকে দেখে যেন মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলে তাই সেই মুহূর্তে মাথায় যেটা এসেছে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও ৷
মানুষ সবসময় বলে যে আবেগের বশে কোন কাজ করলে পরে সেই ব্যাপারটা নিয়ে রিগ্রেট করতে হয় কথাটা যেন আজকে আরু বেশ ভালই উপলব্ধি করতে পারছে, আর তার সত্যতা টা বুঝতে পারছে…
ভার্সিটি থেকে আসার সময় আসফি খানিকটা জোর করেই আরুর কাছ থেকে ওর ফোন নাম্বার টা নিয়েছে , যদিও বা আরূর দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না তবুও অনেকটা বাধ্য হয়েই ওকে দিতে হয়েছে , যতই হোক আরিশের সামনে আসফিকে নিজের উডবি বলে পরিচয় দিয়েছে এমনকি এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে করবে বলেও জানিয়েছে , আর কথাটা যখন বলেছে ওকে রাখতেই হবে তাই সামান্য কিন্তু কিন্তু করে হলেও নাম্বারটা ওকে দিতে হলো আশফিকে ৷
আরু বাড়ি পৌঁছাতেই আসফি কল করেছে এটা জানতে যে ও ঠিকমতো বাড়ি পৌঁছেছে কি না , তারপরে আশফির নাম্বারটা সেভ করারো প্রয়োজন বোধ করেনি আরূ….
আরিসের বলা শেষের কথাটার অর্থ এখনো উদ্ধার করে উঠতে পারল না, কি বোঝাতে চাইল সেটাও বুঝলো না ৷
__” উনি কি বুঝাতে চেয়েছেন সেটা আমার ভেবে কি লাভ , কোন দরকার নেই আমার জানার বা বুঝার ,উনি যদি নিজের মানুষ ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পারেন আর আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন তাহলে আমি কেন পারিনা !”
আরূ আর কোনরকম দেরি না করে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে ওর আব্বু আম্মুর রুমে গেল….
শীতের দিন তাই সন্ধ্যাটা তাড়াতাড়ি হয়ে যায়, ভার্সিটিতে পাঁচটা অবধি ক্লাস করে বাড়ি আসতে আসতে অলরেডি চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে তাই এই মুহূর্তে ওনারা দুজন ওনাদের নিজেদের রুমে থাকবে এটাই স্বাভাবিক ৷
দুজনে রুমে বসে কোন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন সেই মুহূর্তে আরূ গিয়ে পৌঁছল…
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
আরমান সাহেব সামান্য চমকে উঠলেন আরূর উপস্থিতিতে ৷ উনারা এতক্ষণ আরুকে নিয়ে কথা বলছিলেন ৷ এরপর ওর জীবনে কি হবে তা কিছুই উনারা জানেন না, সে নিয়ে খুবই চিন্তিত না ওনারা , তাছাড়া এত বড় একটা আঘাত মেয়েটা একা মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছে কাউকে কিছু বলছে না এতে ওর যে কষ্ট হচ্ছে তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা টুকু উনাদের আছে ৷
__” আরু মামনি তুমি কি কিছু বলবে?”
আরূ গিয়ে ওর আব্বুর পাশে গিয়ে বসল মাথা নিচু করে তারপরে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,,,
__” আমি বিয়ে করতে চাই বাপি ৷”
কথাটা শুনে ওনারা দুজন বেশ অবাক হলেন তা তাদের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ৷
আরূর মা আমতা আমতা করে বললেন,,,,
__” এসব তুই কি বলছিস মা !”
আরূ এবার রেগে গেল তারপরে সামান্য চেঁচিয়ে বলল ,,,,,,
__” কেন বিয়ে করাটা কি অন্যায়ের নাকি অপরাধের কোনটা যে আমি বিয়ে করতে পারব না বা আমি বিয়ে করার কথা বললে সেটা ভুল যে তোমরা বিশ্বাস করতে পারছ না ৷ নিজেরা তো আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে ছিলে এবার আমি যখন নিজে বিয়ে করার কথা জানাচ্ছি তাহলে প্রশ্নবোধক চিহ্ন টা কেন আসছে? কেন নিজের জীবনটাকে নিজের মতো করে উপভোগ করতে পারব না আমি? সারাজীবন তোমাদের কথা শুনে চলে এসেছি আর তোমরা যে সব সময় যে সিদ্ধান্তটা নেবে সেটাই সব সময় ঠিক হবে তার কোনো মানে হয় না, আমার কথার ও তো একটা গুরুত্ব থাকা দরকার তাই নয় কি ? ”
(একনাগাড়ে কথাগুলো বলে দিলো আর এখন মনের মাঝে যা আসছে সেটাই বলে দিচ্ছে ও , কোন রকম কোন দ্বিধা ছাড়াই ৷)
__” আসলে আমি সেভাবে বলতে চাইনি রে মা , হঠাৎ করে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছিস তো সেই জন্যই বললাম ৷”
আরমান সাহেব আরূর মা কে থামিয়ে দিয়ে বলতে আরুর মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন,,, ,
__” তোর কি কাউকে পছন্দ?
__” হ্যাঁ বাপী , আমার একজনকে পছন্দ আর আমি তাকে বিয়ে করতে চাই আর সেটা খুব তাড়াতাড়ি পারলে এই এক সপ্তাহের মধ্যেই ৷”
কথাটা শুনে আরমান সাহেবের মুখে কিঞ্চিৎ হাসি ফুটে উঠল আর একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন উনি ৷উনি আরূর কথাটা বিশ্বাস করেছেন কারণ আরূর কথা মতো আরূর মা আরূর বাবাকে কথাটা জানায় নি যে ও আরিশকে কতকা ভালোবাসে আর কতটা আরিশকে চাই ৷
__” তুই যা বলছিস তাই হবে মা ৷তবে ছেলেটাকে আমাদের সাথে এখনো পরিচয় করালি না তো ৷”
__” উনার নাম আসফি রহমান , উনি একজন ইঞ্জিনিয়ার , উত্তরাতে উনার বাড়ি, আশা করি তোমাদের কোনো আপত্তি থাকবেনা ৷”
__” এটা আর বলতে বাকি রাখে না মা ৷”
__” তাহলে বিয়েটা তাড়াতাড়ি ঠিক করো আমি ওনাকে কালকে আসতে বলেছি….”
কথটা বলে আরু নিজের রুমে চলে গেল….
আরুর মা আরুর ববার সামনে মুখে মিথ্যা হাসি ফোটালেন কারন উনি তো জানেন যে ওনার মেয়ে কতটা ভালবাসেন আরিশকে , তাই আরূ যে জোর করেই বিয়েটা করছে আরিশকে ভোলার জন্য বাধ্য হয়ে তা উনি বেশ ভালোই বুঝতে পারছেন ৷ তবে এভাবে কি ভালো থাকা সম্ভব ? এভাবে কি একসাথে দুটো মনের বলিদান দেওয়া নই ?
আরমান সাহেব ঘুমিয়ে পড়তেই আরুর মা ফোনটা নিয়ে বেরিয়ে এলেন রুম থেকে , রাত প্রায় 11:00 প্রায় ৷ এতক্ষণ আরমান সাহেব ওনার সাথে কথা বলছিলেন আর তাছাড়া এই মুহূর্তে কোথাটা শোনা মাএই অনিকা খানকে ফোন করলে উনি হয়তো রাগ করতেন তাই উনি এতখন অপেক্ষা করছিলেন আরমান সাহেবের ঘুমানোর ৷
বেশ কয়েকবার রিং হলেও ফোনটা কেউ ধরল না দেখে উনি মনে মনে ভাবলেন,,,,
__” এত রাত্রে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে তাই সকালেই কথাটা জানাবো, বলে উনিও ঘুমিয়ে পড়লেন….”
__” হ্যাঁ আপনি কোথায়?”
__” আমি তো তোমাদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে ৷”
আরু মনে মনে,,,,,
__” বলদ একটা ৷”
__” কুড়ি মিনিট ধরে কেন দাঁড়িয়ে আছেন, আমাকে ফোন করতে পারেননি?”
__” তোমার ফোনে আমি অন্তত 35 বার মিসড কল দিয়েছি কিন্তু তুমি ফোনটা ধরোনি তাই আরকি ৷”
আরু এবার ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল 37 টা মিসডকল , অবাক হয়ে নিয়ে আবার ফোনটা কানে নিয়ে সামান্য মিষ্টি সুরে বলল,,,,,
__” আসলে আমি ব্যস্ত ছিলাম ৷ আপনি ভিতরে আসুন, আমার আব্বু আম্মু দুজনেই বাসায় রয়েছে…”
__” আচ্ছা আমি আসছি কিন্তু আমার না কেমন ভয় ভয় লাগছে ৷”
আরূর ইচ্ছা করছে এখন আশফিকে স্টুপিড, গাধা, গরু সবকিছু বলতে কিন্তু তবুও নিজেকে সংযত করে নিয়ে বললো,,,,
__” বেশী কথা না বলে তাড়াতাড়ি আসুন ৷”
আসফি আর আরমান সাহেব অনেকক্ষণ ধরে ওদের বিয়ে নিয়ে আলোচনা করলেন ৷ আশফিকে ওনার বেশ পছন্দ হয়েছে ৷
__” আঙ্কেল আমার বাবা-মা চিটাগং থাকেন তাই উনারা বিয়ের দিন উপস্থিত হবেন ৷”
__” কোন সমস্যা নেই বাবা , তবে আজকে তোমাদের ইংগেজমেন্ট হয়ে গেলে ভালো হতো নয় কি !”
__” না না আমাকে আজকে না , হলুদের দিন এঙ্গেজমেন্ট টা হলেই ভাল হয় ৷”
__” আচ্ছা ঠিক আছে…..”
__” তার মানে আগামী 28 শে ডিসেম্বর তোমাদের বিয়ে ৷”
__” হমম আঙকেল ৷”
আসফি বাড়ি চলে যেতেই আরূর মা অনিকা খানকে ফোন করতেই ফোনটা সুইচ অফ বললো….
উনি যেন সব আশাভরসা হারিয়ে ফেললেন ,উনা এখনো হাল ছাড়েননি , কেন জানিনা উনার বারবার মনে হচ্ছে যে হয়তো ভালো কিছু হলেও হতে পারে কিন্তু তেমনটা তো কিছুই হচ্ছে না দেখে উনি বার বার আশা হারিয়ে ফেলেছেন ৷
আরও কিছুক্ষণ পর ফোন করতে উনি ফোনটা ধরলেন ৷
__” কিরে তোকে কতক্ষণ ধরে ফোন করছি তুই জানিস ? আমার আরূর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, কিছু একটা কর না , আমি এখনো আশা ছাড়িনি কিছু হলেও হতে পারে আরিশকে বুঝিয়ে ৷”
উনি জানেন যে এরকমটা সম্ভব নয় , একটা মানুষের অনুভূতিকে কখনোই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, আর তার ওপর বিয়ের মত একটা সম্পর্ক তো অনেক বড় ব্যাপার , তবুও সান্ত্বনা দিচ্ছেন নিজের মনকে যে আরিশকে বললে যদি আরিশ মেনে যায় , তাই কোন কিছুই বলতেই উনি ছাড়ছেন না ৷
__” এটা কি বলছিস আরু মামনির বিয়ে? মানে হঠাৎ করে এক দিনের মধ্যে কিভাবে কি?”
এর পরে উনি অনিকা খানকে সবটা বললেন প্রথম থেকে,,,,,
__” আমি আমার ছেলেকে বোঝাবো ,নিজের সাধ্যের বাইরে চেষ্টা করবো , তবুও আরূ মামনি কে হারাতে পারবো না আমরা ৷”
বলে উনি ফোনটা কেটে দিলেন, তাড়াতাড়ি করে এখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন আরিশের কাছে যাবেন তাই ৷
উনাকে এমন হুড়মুড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে বেরোতে দেখে সানা জিজ্ঞাসা করল,,,,,
__” আম্মু তুমি কোথায় যাচ্ছ?”
__” তোর ভাইয়ার কাছে, আজ ওর একদিন কি আমার একদিন….সবকিছুর আজকে একটা বোঝাপড়া হবে, এভাবে আর চলবে না ৷”
পড়ন্ত বিকালের কমলা আভার সূর্যের কিরন আরিশের ব্যালকনির সাদা পর্দা ভেদ করে গোটা ঘরকে অদ্ভুত এক রঙে রাঙিয়ে তুলেছে ৷
হাতে থাকা ক্যাকটাসটা নিয়ে ঘরের একদিকের দেওয়ালে যেখানে 19 টা ক্যাকটাসের সমাহার আর 1 টা রাখলেই ফাঁকা জায়গাটি পূরন হবে তাতে আলতো করে রেখে দিলো ওর কালেকশানের শেষ ক্যাকটাসটি ৷
__” কথা দিয়েছিলাম যে সঠিক সময়ে জায়গাটা পূরন করবো, আমি আমার কথা রেখেছি ৷ ”
কথাটা বলে বিছানার ওপরে থাকা গিটারটা নিয়ে ব্যালকনিতে থাকা বিন ব্যাগটায় বেশ আয়েশ করেই বসলো আরিশ,,,,,,
শুকনো কন্ঠে গানটা ধরলো,,,,,,
আমার সকল আভিযোগে তুমি,,,,,
তোমার মুখের মিষ্টি হাসিটা কি আমি,,,,
আমার না বলা কথার ভাজে
তোমার গানের কতো সুর ভাসে
তোমার নিয়ে আমার লেখা গানে
অযথা কতো স্বপ্ন বোনা আছে
আমার হাতের আঙুলের ভাজে
তোমাকে নিয়ে কতো কাব্য রটে হে
ভুলিনিতো আমি ,তোমার মুখে হাসি,
আমার গাওয়া গানে তোমাকে ভালোবাসি
আসো আবারো কাছে
হাতটা দিয়ে পাশে
তোমায় নিয়ে যাবো আমার পৄথিবীতে…..
এ হে,,,,,,,,এএএএএএ
এই পৄথিবীতে,,, ওহো হো !”
আরিসের গান শুনে যেন প্রকৃতি ও যেনো আরিশের গানের সুরে আসক্ত হয়ে যায় , এতোটা মধুর কন্ঠে গানটা ও গায় যে যে কেউ ওর গানের প্রতি আসক্ত হতে বাধ্য যেমনটা আরুও হয়েছিল ৷ তবে সমগ্র আরিশ মানুষটাই আরুর কাছে এক প্রকার আসক্তি ৷ আর একটা মানুষের প্রতি আসক্তি চাইলেই কি কমানো যায় ? হয়তো বা নয় !
গানটা শেষ হতেই ফোনের রিংটোন টা বেজে উঠতেই আরিশ প্যান্টের পকেট থেকে ফোনটা বার করে নিয়ে কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে প্রান্ত বলে উঠল ,,,,,,
__” আন্টির তোর রুমে যাচ্ছে, আমি কোন ভাবেই আটকাতে পারলাম না আন্টিকে , জানি না এরপর কি হবে !
__” আসতে দে ৷”(মুচকি হেসে)
বলে ফোনটা কেটে দিল আরিশ ৷
একটা মিস্ট্রিয়াস স্মাইল দিয়ে বেলকনির রেলিং ধরে তাকিয়ে রইল বাইরের দিকে…..
__” আরিশ কোথায় কোথায় তুই ? আজ তোকে আমার প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে, তোকে আমার কথা মানতেই হবে সে তুই চাস আর না চাস ৷”
তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ১৬
কথাটা বলে উনি হুড়মুড় করে আরিশের রুমে ঢুকে গেলেন, এর আগে কখনো আরিশের এই বাসার রুম উনি দেখেননি তাই উনি জানেন ও না যে রূমটক ঠিক কেমন আর কিই ব আছে !”
আরিশের রুমে পা রাখতেই দরজাটা হাত দিয়ে আলতো করে ছেড়ে দিতেই ধক করে বন্ধ হয়ে গেল দরজাটা ৷ গোটা ঘর অন্ধকার , আর সূর্যের আলোটা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে চারিদিকের দেওয়ালে থাকা ফটোগুলো যেন ঝকমক করছে , সামনের দিকে তাকাতেই দেওয়কলে আটকে রাখা ফটোটা দেখে উনি থমকে গেলেন, উনি অবাক হচ্ছেন সবকিছু দেখে ৷ ওই ফটো ফ্রেম টা থেকে চোখ সরিয়ে রুমটা ভালো করে চোখ বোলাতেই ওনার সমগ্র শরীর শিউরে উঠল, এটা কি সত্যি দেখছেন উনি নাকি এটা কোন কোন আজগুপি গল্প…..
উনি চুপচাপ রুম টা ভালো করে দেখছেন, দেওয়াল জুড়ে আটকে রাখা ছবিগুলো যেন বাস্তব হয়ে ফুটে উঠছে সেখানেই…..
আরিস প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে ধীর পায়ে রুমের দিকে গেলো,,,,,
হঠাৎ রুমের ভিতরে আরিশের ছায়ামূর্তি দেখে উনি ছলছল চোখে আরিশের দিকে তাকালেন ৷
কাপাকাপা গলায় বললেন,,,,
__” আব্বু এগুলো কি ?”
__” তোমার বৌমা ওরফে আবরার আরিশ খানের ঊডবি বউ, তোমার পছন্দ হয়নি ৷”
উনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন,,,,,
__” মাশাআল্লাহ !”
আরিশকে জড়িয়ে ধরে উনি কেঁদে উঠলেন ৷আরিশের ঠোঁটের কোনেও এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো ৷