এক চিলতে রোদ পর্ব ৩৮ || nilcafervalobasha

এক চিলতে রোদ পর্ব ৩৮
Nondini Nila

শুরু হলো ভাইয়া কাজ দেওয়া আমাকে। অফিসে যাওয়ার আগে একের পর একটা দিতেই থাকি। এটা দে ওটা দে বলে পাগল করে ফেলে। উফফ কঠিন না হলেও ঘুরতে ঘুরতে আমি শেষ। প্রথমে আমাকে রুমে ডেকে পাঠালো আমি যেতেই ভাইয়া তার শার্ট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,
“যা আয়রন কর।”
বলেই বাথরুমে ঢুকে গেল। আমি শার্ট হাতে নিয়ে তাকিয়ে আছি। ভাইয়া আমার মুখের সামনে ঠাস করে দরজা আটকে দিলো। আমি পিন কালারের শার্ট হাতে দাঁড়িয়ে।
শার্ট টা খুব সুন্দর আগে পরতে দেখি নি। আজ প্রথম পরবে বোধহয়।
এই শার্ট আয়রন করতে দিলো। এটা তো করাই লাগছে। আমি শার্ট এর ভাঁজ খুলে মেলে তাকিয়ে আছি‌। এটা তো করাই আছে আমি আর কি করবো? ভীতু মুখ করে শার্টের দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে এমন দাঁড়িয়ে থাকতে থেকে বললো,
“এমন খাম্বার মত দাড়িয়ে আছিস কেন?”

আমি হকচকিয়ে গেলাম ভাইয়ার কথা শুনে। তারপর মিনমিন করে বললাম,
” এটাতো সব করাই আছে দেখা যায়। আর কি করবো। এই দেখুন আয়রন করা। আমি….
আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো, ‘ করা আছে নাকি দেখতে বলি নাই‌।করতে বলেছি। তাই চুপচাপ কাজ শেষ কর।’
বলেই তোয়াল নিয়ে মুখ মুছতে লাগলো। আমি বিরক্ত হয়ে শার্ট হাতে ছোট টেবিল এর কাছে এসে আয়রন হাতে নিলাম।
আবার আয়রন করতে হলো। তারপর ভাইয়ার এটা দে ওটা দে বলে আমাকে পাগল করলো আমি শেষে বিরক্ত হয়ে বললাম,
” আপনার সব তো হাতের কাছেই আছে তাও এমন চেঁচিয়ে চাইছেন কেন?”
ভাইয়া তার লোশন হাতে মাখতে মাখতে বললো,
” আছে তো কি? তোকে না বললে কাছ করানো হবে নাকি?”
আমি কটমট চোখে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলাম। কেন যে কাজ করতে গেছিলাম আল্লাহ জানে।
ভাইয়া শার্ট আমার সামনেই পরতে গেলে আমি চেঁচিয়ে উঠি। ভাইয়া চমকে উঠে বলে,
“কি হলো এমন চেঁচিয়ে উঠলি কেন?”
“আপনি আমার সামনে চেঞ্জ করছেন কেন?”
“তো কি হয়েছে?” অবাক হয়ে।
আমি রুমের বাইরে এসে বললাম।

“আপনি তারাতাড়ি চেঞ্জ করে নিচে আসুন খাবার দিচ্ছি‌।”
বলেই নিচে চলে এলাম। তার কথার অপেক্ষা না করে।খাবার টেবিলে রাখছে লতা আমি প্লেট এগিয়ে রাখলাম। তখন চাচি খাচ্ছিলো। আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
” এসেছে আমার ছেলের মাথা খেয়ে।’
আমি ভাইয়া খাবার সাজাচ্ছিলাম। কথাটা কানে এলো আমি শক্ত করে দাঁড়িয়ে খাবার সাজাচ্ছি‌। চাচির দিকে তাকালাম না। চোখে আমার জল চলে এলো।
আড়ালে মুছে নিলাম।ভাইয়া তখন এলো আমি মাথা উঁচু করে তার দিকে তাকালাম। পিন কালারের সাথে সাদা কোর্ট পরেছে খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।নীল জিন্সের প্যান্ট।
ভাইয়া খাবার টেবিলে বসে তার পাশের চেয়ারে আমাকেও টেনে বসিয়ে দিলো। আমি আঁতকে উঠলাম,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

“কি করছেন?”
“এখন থেকে তুই ও আমাদের সাথেই খাবি।”
ভাইয়া কথা শুনে চমকে আমি চাচির দিকে তাকালাম। আগুন চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তখন ইলা বলে উঠলো,
“হোয়াট! ইহান তুই এই ঊষাকে আমাদের সাথে খেতে বলছিস? এতো বাড়াবাড়ি কিন্তু মানা যাচ্ছে না আর।”
ইলা আপুর কথায় ইহান ভাই বললো,
” এখানে বাড়াবাড়ির কি হলো? আমার ব‌উ হবে ও তখন তো এখানেই বসে খাবে তাই না। এখন সমস্যা কি?”
ইলা আপু বললো, তোর ব‌উ হলেই এখানে বসে খেতে পারবে না সে।ওর কোন যোগ্যতা নাই তোর ব‌উ হবার তবুও তুই চাইছিস। তাই দাঁত চেপে আমরা সহ্য করছি। কারণ জীবন তোর তুই নিজের ইচ্ছায় যা খুশি কর। তাই বলে ওকে আমাদের সাথে খাবার পারমিশন দেবো না।”
“ওর এইখানে বসে খাবার যোগ্যতা বা অধিকার আমাদের থেকে বেশি আছে ওর। বরং আমাদের এইখানে বসে এই খাবার খাওয়ার যোগ্যতা নাই।”
“কি বলতে চাইছিস তুই? এই টেবিলে খাবার খাওয়ার যোগ্যতা বা অধিকার আমাদের নেই। এই খাবার আমাদের টাকার, আর এই টেবিলটাও তো এসবের মধ্যে অধিকার আমাদের না তো কার আছে।”
রাগে আপুর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। আমি তাদের দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। তখন ভাইয়া কথা শুনে আমি থমকে গেলাম।

ভাইয়া আপুর কথার জবাব এ বললো,
“সিরিয়াসলি এসব তোদের টাকার। আচ্ছা এই টাকা কোথা থেকে এসেছে আব্বুর ব্যবসা থেকে রাইট। তো জিজ্ঞেস করতো আব্বু কে সত্যি এইটাকা তার নিজের নাকি অন্য কারো।’
“আব্বুর বিজনেস এর টাকা আমাদের না তো কার।”
তখন চাচা উঠে দাঁড়ালো আর উঁচু গলায় বললো,
” ইলা চুপ করো। সামান্য বিষয় নিয়ে এতো ঝামেলার কি দরকার? ঊষা এখানে খাবে তো সমস্যা নাই। আজ থেকে ঊষা এখানে আমাদের সাথে খাবে।”
বলেই পানি খেলো তাকে কেমন জানি অস্থির লাগছে। চাচি চেঁচিয়ে উঠল,
“কি বলছো তুমি?”
“বেশি বাড়াবাড়ি করো না। তোমার এই বাড়াবাড়ির জন্য সব না শেষ হয়ে যায়।”
চাচি দমে খাবার টেবিলে থেকে উঠে গেলো
ইলা আপু চাচির পেছনে পেছনে গেলো কিছু বলতে বলতে।‌দুই মিনিটে টেবিল ফাঁকা হয়ে গেল। আমি হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে দেখলাম সবার কর্ম কান্ড।
ভাইয়া খাবার মুখে পুড়ে দিলো আমার এতো চিন্তার মাঝে এসবে আমি বিরক্ত হয়ে খাবার মুখে বললাম,

“আমাকে দিলেন কেন ? আমি এখানে খাবো না এতো ঝামেলা করে।”
“মার খাবি। কথা না শুনলে মেরে ফেলবো একদম। এখন খাবার খা আর আমার লেট হয়ে যাচ্ছে। ”
“আপনার লেট হচ্ছে তো আমাকে খাওয়াচ্ছেন কেন?”
“আজ আর খাবি না আমি জানি। তাই পেট ফুলে করে রেখে যাচ্ছি।”
আমি চমকে উঠলাম। সত্যি আজ আমার খাওয়া হতো না কিন্তু ভাইয়া জানলো কি করছ?
মানুষটা মনের খবর ও বুঝে যায় কি করে?
ভাইয়া আমার মাথায় গাট্টি দিয়ে বললো,
” কি ভাবছিস? তারাতাড়ি হা কর!”
আমি বললাম,” আপনি নিজের খাওয়া কমপ্লিট করেন।”
“তোকে হা করতে বলেছি।”
‘কেউ খেলো না ঠিক মতো আর আমি খেয়ে নেব।”
“সবাই খাবে এখন একটু ঢং করলো। বিলিভ না হলে একটু পর উঁকি দিয়ে দেখিস।”
আমি বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া জোর করে নিজে ও আমাকে খাইয়ে দিলো।
ভাইয়া চলে যাওয়ার পর আমি উঁকি দিচ্ছি কখন খাবে দেখার জন্য। চাচা ও এখনো যায়নি তাই মনে হচ্ছে খেয়ে যাবে।

এদিকে ইলা ওর বাবা মায়ের রুমে খাটে বসে আছে চোখ বড় করে।বিষ্ময়ে ওর মুখটা হা হয়ে গেছে।অবাক সুরে বলল,
“সব কিছু হুমায়ূন কাকার?”
ইলিনা বেগম ফুঁসে ওঠে বললো, এই টাকা ঊষার বাবার তো কি। তিনি শুধু ব্যবসায় টাকা দিতো বাকিটা তো তোর বাবাই দেখেছে। সে তো তার ব্যাংকের চাকরি নিয়ে বিজি থাকতো। মাসে একবার অফিস এ বসতো।”
ইলা সেসব এ পাত্তা না দিয়ে বললো।
‘তাও মালিক তো সে ছিলো।”
“ছিলো তো কি?”
“তাহলে ঊষার দাবী তো আছেই। এখানে ইহান তো ঠিক বলেছে।”
“কিসের দাবিদার কিছু নাই। পরিশ্রম তোর আব্বু করেছে সব আমাদের।”
ইলা চুপ করে গেলো এসবে কখনো মাথা ঘামায় না আজ ও ঘামালো না। কিন্তু চরম অবাক হয়েছে এটা শুনে।
ঊষার অপেক্ষার অবসান করে খাবার টেবিলে এসে বসলো সবাই।ও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলো। সবাইকে দেখে মনে মনে বললো, সত্যি তো ভাইয়ার কথা ঠিক হলো। আগের বার যখন চাচিরা খাবার ছেড়ে চলে গেলো। আমি সারাদিন তাদের জন্য কষ্ট পেয়ে না খেয়ে ছিলাম ঘর বন্ধ করে‌। তারমানে তারা সেদিন ও খেয়েছিলো।

নিজের বোকা কাজের জন্য লজ্জিত হয়ে রুমে চলে এলাম। ইলা আপু আজ বাসায় র‌ইলো আমার সাথে ভালো মন্দ কোন কথা বললো না। আমি আমার মতো ছিলাম। কিন্তু তার আমাকে কাজ দিতে বাদ পরেনি।এটা ওটা এনে দেওয়ায় জন্য ডেকেছে আমি দিয়েছি।শেষ।
বিকেলে রিফাত ভাই আর আপু আসলো খুশিতে আপুকে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম। আপু আজ থাকবে। আনন্দে আত্মহারা হয়ে আপুর জন্য পছন্দের খাবার রান্না করতে গেলাম। সন্ধ্যায় পরে আপু ,ভাইয়া ,আমি আর ইলা আপু বসে আছি। ইলা আপু ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। আমি আর আপু কথা বলছি।আপু আমাকে জিজ্ঞেস করলো সবার মুখ ওমন থমথমে অবস্থা কেন?
আমি সকালের কথা বলে দিলাম। আপু আমার মাথা টেনে বুকে জড়িয়ে বললো,

“আমার ভাই তোকে খুব ভালোবাসে রে ঊষা। তুই আমার ভাইকে কষ্ট দিবি না কখনো। সব কথা মেনে চলবি কেমন। ও তোর ভালো ছাড়া খারাপ চাইবে না। যা সিদ্ধান্ত নেবে তোর ভালো ভেবেই। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। ওর ছায়া তোর সঙ্গে থাকবে যা তোর জন্য দরকার। পৃথিবীতে একা বাচা সম্ভব না কারো শক্ত হাতের প্রয়োজন যে হাত আমাদের আগলে রাখবে সঠিক পথ দেখাবে।”
ইলা আপু আর রিফাত ভাইয়া একটু দূরে সোফায় বসে কিছু কথা বলছে। তাই আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে না। আমরা বিছানায় বসা।আমি চুপ করে আপুর কথা শুনছি।আপু আমাকে অনেক কথা বললো।আমি কিছু বললাম না সব মনোযোগ দিয়ে শুনলাম।
রাতে চাচাজান ও ভাইয়া আসার পর খাবার টেবিলে খাওয়ার ধুম পরলো। ভাইয়া আমাকে বসাতে চাইছিলো কিন্তু জায়গা নাই‌। তাই জোর করলো না। কিন্তু নিজেও খেলো না। আজ জামাই এসেছে তাই নানা ধরনের খাবার তৈরি করেছে। সবার শেষে ভাইয়া আমাকে নিয়ে বসলো খেতে। লজ্জায় আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল তখন। কিন্তু ভাইয়ার গম্ভীর মুখ দেখে না করতে পারিনি খেতে হয়েছে।ড্রয়িং রুমের সোফায় সবাই গোল হয়ে বসলো। তাদের মাঝে কথা হচ্ছে বিয়ে নিয়ে। ইমা আপুর চাচা শশুর এর মেয়ের বিয়ে। চাচাশ্বশুর গ্ৰামে থাকে। তো সেখানে যাওয়ার জন্য দাওয়াত দিতে এসেছে আপু। কিন্তু প্রবলেম কেউ যাবেনা। ইলা আপু গ্ৰামের নাম শুনেই না করে দিয়েছে। গ্ৰামে গরম আবার বৃষ্টির দিন এখন তো কাঁদা ছোড়াছুড়ি তাই যাবেই না। তাকে রাজি করানো দায় তাই সে বাদ। চাচা অফিস রেখে যাবে না। তার লস হয়ে যাবে।সেও বাদ চাচির কোমর ব্যাথা কিন্তু তাকে রাজি করালো যেতেই হবে। সে বাধ্য হয়ে রাজি। ভাইয়া যাবেনা তার চাকরির কেবল দের মাস এখন অফ দেওয়া ঠিক না।

তাকেও বাদ এবার আপু বললো,
“তোমাদের কারো যেতে হবেনা আমার ঊষা যাবে আমার সাথে।”
ভাইয়া আতকে উঠে বললো,
” হোয়াট? ইম্পসিবল ঊষা কোথাও যাবেনা।”
আপু কড়া চোখে তাকাল ভাইয়ার দিকে আর বললো,” তোর কথা মতো।নিজে তো যাবিই না আবার ওকেও আটকে দিচ্ছিস কেন?”
ভাইয়া দাঁড়িয়ে বললো, “যেখানে ইহান যাবেনা সেখানে ঊষা কেন যাবে?”
“ওরে,তাহলে তুই কেন না করছিস। ঊষার তো বিয়েতে যাওয়ার ইচ্ছা। দেখছিস না আমি ওর কথা বলতেই মুখ উজ্জ্বল লাগছিলো্ আর না করতেই কালো করে ফেলেছে।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, ” “আমার ছুটি হবে না তো।”
‘বেশি দিন না দেখিস দুইদিন পাস কিনা চেষ্টা করে দেখ।”
ভাইয়া আমার দিকে ইশারা করলো আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। মনে মনে বিয়েতে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা। গ্ৰাম দেখা হবে তাই আরো বেশি উত্তেজিত আমি। কিন্তু ভাইয়ার জন্য যাওয়া হবেনা মন খারাপ আমার। ভাইয়া আমার থেকে কোন ইশারা না পেয়ে বললো,

এক চিলতে রোদ পর্ব ৩৭

” আচ্ছা চেষ্টা করবো বিয়ে কবে?”
“এইতো এক তারিখ গায়ে হলুদ।”
ভাইয়া চলে গেলো।আমি খুশি মনে দাড়িয়ে আছি চেষ্টা করবে যেহেতু বলেছে তাহলে যাবার আশা আছে।
রাতের কফিতে দিতে গেলে ভাইয়া জিজ্ঞেস করে,
“তোর বিয়েতে যাওয়ার ইচ্ছা?”
আমি কাচুমাচু মুখ করে বললাম, হুম।
ভাইয়া আমাকে টেনে তার পাশে সোফায় বসিয়ে দিলো।কফি ছোট টেবিলের উপর রেখে আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো,
” এখন যদি যেতে না পারিস খুব কষ্ট পাবি।”
আমার ঘাড়ে ভাইয়ার গরম নিঃশ্বাস পড়ছে। আমি কাঁপছি অদ্ভুত ভাবে। ভাইয়া দুইহাত আমার কোমরে রেখে আমাকে ধরে রেখেছে। আর থুতনি আমার কাঁধে। আমি শক্ত হয়ে বসে আছি। কথার উত্তর দিচ্ছি না।
ভাইয়া আবার জিজ্ঞেস করতেই বললাম কাঁপা কাঁপা গলায়,
” কষ্ট পাবনা কিন্তু মন খারাপ হবে। সেটা বিয়েতে না যাওয়ার জন্য না আমার গ্ৰাম দেখার ইচ্ছা আছে তাই।”
ভাইয়া আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কাঁধে হাত রেখে বলল,
” গ্ৰামে কি দেখার আছে?”
আমি বললাম, ” যা আছে তাই দেখার ইচ্ছে?”
ভাইয়া আর কিছু বললো না কিন্তু পরদিন জানতে পারলাম তার ছুটি হয়েছে। খুশিতে আমার নাচতে ইচ্ছে করছে। তার মানে যাওয়া হবে উফফ।

যথারীতি আমরা র‌ওনা হলাম। দুই গাড়ি ভড়ে। আটঘন্টা পর এসে গন্তব্যে পৌঁছালাম। কিন্তু সমস্যা গাড়ি বাড়ি পর্যন্ত গেলো না। কাঁচা রাস্তা আর বৃষ্টির জল কাদামাটি হয়ে আছে তার মধ্যে গাড়ি যাবে না।
সবাই মুখ ভার করে গাড়ি থেকে নামলো।
কাদা ময় রাস্তা হেঁটে যেতে হবে কি মুশকিল! চাচি চেঁচিয়ে উঠলো সে যাবেনা । তাকে রিফাত ভাই ও ভাইয়ের বোন জামাই ধরে নিয়ে যাচ্ছে।‌আমি আর ভাইয়া যাচ্ছি হুট করেই ঠাস করে শব্দ হলো। পেছনে তাকিয়ে দেখি রিফাত ভাইয়ের বোনের ছেলে – মেয়ে বাচ্চা গুলো কাঁদায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।
ওদের অবস্থা দেখে আমি হাসতে হাসতে শেষ। আমার হাসি দেখতে গিয়ে ভাইয়াও পরে গেলো ক্ষেতে। আমি হাসি থামিয়ে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। ভাইয়ার ব্রাউন রঙের জিন্স প্যান্ট ও নীল রঙের শার্ট কাঁদা শেষ। আমি মুখে হাত দিয়ে দিলাম অবাক হয়ে। আবার গলা ফাটিয়ে হেসে উঠলাম। সবাই হেসে ফেললো এটা দেখে ভাইয়া আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।

এক চিলতে রোদ পর্ব ৩৯