এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৫ || অনেক কষ্টের গল্প

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৫
তানজিল মীম

“খুব মনোযোগ সহকারে আমরা তাকিয়ে আছি সামনের দুজন গাইডের দিকে’!!আমাদের সবাইকে মনোযোগভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠলেন একজনঃ
———-“শুরুতেই সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলবো!আমরা সবাই একজোট হয়ে রেলগাড়ির মতো করে ছুটবো’!!আর সবাই একসাথে হাঁটার চেষ্টা করবো কেউ কোথাও না বলে থেমে যাবে না!!কারন সামনে ক্ষনে ক্ষনে বিপদ আসার উপক্রম’!! আশেপাশে সাপ বাঘের উপক্রমই বেশি’!!সুন্দরবনে প্রায় ৪৫০টি বাঘের বসবাস তাই সবাই সাবধান আর সর্তকতার সাথে সামনে এগোবো’!!কারন আমরা চাচ্ছি না কেউ বাঘের ক্ষপরে পড়ো’!!যেহেতু আমরা মানুষ বেশি তাই সবাই একসাথে থাকার চেষ্টা করবো’!!কেউ দল ছেড়ে কোথাও যাবো না’!!বুঝতে পেরেছো সবাই….
“ওনাদের কথা সবাই উৎসাহের সাথে বললোঃ

———“ইয়েস!
“সবার কথা শুনে গাইডটি আবারো বলে উঠলঃ
———-“তাহলে যাওয়া যাক স্টুডেন্ট….
———“অবশ্যই(সবাই)
“গাইডটি আবারো সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ
———“আমি আবারো বলছি কেউ দল ছেড়ে একা কোথাও যাবে না…..
“ওনার কথা সবাই মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সমর্থন দিলাম আমরা সবাই’!!তারপর এঁকে এঁকে সবাই পাড়ি জমালাম বন দেখার উদ্দেশ্যে…
!!
“সারি সারি গাছপালা অতিক্রম করে এগোচ্ছি আমরা’!!আশেপাশে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা হলো হরিন’!!হাতের মুঠো ক্যামেরায় হরিণদের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম আমি’!!প্রকৃতি বরাবরই পছন্দের আমার’!!আর প্রকৃতির সৌন্দর্যকে ক্যামেরা বন্দী করা প্যাশন আমার’!!মেঘের ছবি,খোলা আকাশের মাঝে উড়ে যাওয়া পাখির ছবি সহ নানা ধরনের প্রকৃতির ছবি ক্যাপচার করে সেগুলোকে এলবাম তৈরি করে সাজিয়ে রাখতে ভালোবাসি আমি’!!সামান্য দূরত্বের একটা মস্ত বড় গাছের ডালে দুটো হলদে পাখি বসে আছে সেটা আমার চোখ এড়াইনি’!!যার কারনে সেগুলো দেখেই ক্যামেরায় ক্যাপচার করতে ব্যস্ত আমি’!!এমন সময় পিছন থেকে কাঁধে হাত দিয়ে বলে উঠল তুলিঃ

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

———-“তুই তো দেখছি খুব ভালো ফটোগ্রাফার….
“তুলির কথা শুনে হাল্কা হেঁসে বললাম আমিঃ
———-“না তেমন কোনো ব্যাপার না আসলে ছবি তুলতে ভালোবাসি আমি বিশেষ করে প্রকৃতির…
———-“হুম তা তো দেখতেই পাচ্ছি তবে সাবধান হ্যাঁ আবার না এই ছবি চক্করে কোনো বিপদে পরিস….
———“না পরবো না….
———“হুম না পরাই ভালো…
“বলেই সামনে এগিয়ে গেল তুলি’!!তুলি যেতেই আরিফা আর রিতু বলে উঠলঃ
———“কি বললো রে তুলি তোকে….
———“তেমন কিছু নয় বললো ছবির চক্করে কোনো বিপদে না পড়তে…..
———-“ওহ বাবা এ দেখি ভুতের মুখে রাম রাম….(রিতু)
———-“থাম তো তুই খারাপ কি বললো ও…
———-“খারাপ কথা কিছু বলে নি কিন্তু তোর ভালো মন্দ ও আবার কবে থেকে ভাবতে শুরু করল(আরিফা)
———“এটা অবশ্য তুই ঠিক বলেছিস একটু খটকা আমারো লেগেছে…
“এমন সময় পিছন থেকে রিয়াদ স্যার বলে উঠলেনঃ
———-“এতো বক বক কিসের চুপচাপ সামনে এগোও সবাই….
“রিয়াদ স্যারের কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলাম আমরা’!!তারপর মিনমিন করে তিনজন একসাথে বলে উঠলামঃ

———“জ্বী স্যার…..
“কোনো কথা না বারিয়েই আমরা হাঁটা শুরু করলাম সামনে’!!আশেপাশের পরিবেশ কেমন একটু ছমছমে’!!ভয় ভয় লাগছে একটু’!!গাছগুলোও কেমন একটু ভয়ংকর টাইপের’!!কাছ থেকে কখনো জঙ্গল দেখা হয় নি আমার’!!টুকটাক টিভিতেই দেখেছিলাম’!!হর্ঠাৎই চোখ গেল একটা বড় গাছের উঁচু মগডাল পেঁচিয়ে থকা একটা বিশাল বড় সাপ’!!যেটা দেখে ভয়ে দু-কদম পিছিয়ে গেলাম আমি’!!
“আমাকে পিছনে যেতে দেখে রিয়াদ স্যার আমার কাঁধ ধরে বললেনঃ
———“কি হলো…
“আমি হাতের ইশারায় উঁচু মগডালে থাকা সাপটাকে দেখালাম’!!রিয়াদ উপরে তাকিয়ে সাপটাকে দেখে বুঝে গেছে তানজু ভয় পেয়েছে তাই রিয়াদ মুচকি হেঁসে বলে উঠলঃ
———“ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমি তো আছি….
“বিনিময়ে আমিও আর কিছু না বলে হাল্কা হেঁসে সামনে এগোতে শুরু করলাম’!!

“অন্যদিকে তুলি তানজুর প্রতি রিয়াদ স্যারের এত কেয়ার দেখে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে সে’!!হাতের মুঠো শক্ত করে হাঁটছে সে’!!এই মুহূর্তে তানজুকে মটেও সহ্য হচ্ছে না তাঁর…..
“তুলি নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে যথাসম্ভব হাঁটছে’!! হর্ঠাৎই একটু থেমে সে রিয়াদ স্যারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হেঁসে বললোঃ
———–“আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে স্যার….
“আচমকা কারো মুখে এমন কথা শুনে চমকে ওঠে রিয়াদ’!!পাশ ফিরে তুলিকে দেখে হাল্কা হেঁসে বলে উঠলেন উনিঃ
———-“থ্যাংক ইউ….
———-“আগে কখনো এসেছিলেন স্যার সুন্দরবনে ঘুরতে….
———“এসেছিলাম বলতে প্লানিং ছিল সব বন্ধুরা মিলে একসাথে আসার কিন্তু সময় করে আর আসা হয় নি….
———“ওহ….
———-“হুম…..
———-“আপনাদের বাড়িতে কে কে আছে স্যার….
———-“হুম আমি, বাবা মা আর বড় বোন…. কেন তুমি জানতে না….
———-“আসলে তেমন নয় একটু আকটু জানতাম…
“এমন হাজারো প্রশ্ন করে যাচ্ছে তুলি রিয়াদকে’!!আর রিয়াদ একটা একটা করে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে’!!বিরক্ত লাগছে তার তারপরও কিছু বলতে পারছে না সে…..

“এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল রিয়াদের’!!রিয়াদ ফোনটা তুলে তুলিকে বললোঃ
———“এক মিনিট তুলি…
“বলেই সরে আসে রিয়াদ’!!মনে মনে খুশি হয়েছে সে যাক ভালো সময়ই ফোনটা বেজে উঠল’!!ফোনটা কানের কাছে নিয়ে বলে উঠল রিয়াদঃ
———-“উফ দোস্ত বাঁচাইছো….
“ফোন তুলেই হ্যালোর জায়গায় এমন কথা শুনে অবাক হয় অপূর্ব’!!কারন ফোনটা অপূর্বই করেছে’!!অপূর্ব অবাক হয়ে বললোঃ
———-“কেন কি হইছে….
———-“আর বলিস না একটা স্টুডেন্ট একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছিল আমি তো প্রায় বিরক্তের পর্যায় চলে গেছিলাম’!!স্টুডেন্ট দেখে কিছু বলতেও পারছিলাম না ভালোই হয়েছে তুই আমায় ফোন করেছিস না হলে এখনও হয়তো প্রশ্ন করেই যেত…..
“রিয়াদের কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ অপূর্ব!অপূর্বের হাসি দেখে রিয়াদ বলে উঠলঃ

———–“তুই হাসছিস….
———–“হাসবো না তো কি করবো যাগ গে আগে বল আমার বোনটা কেমন আছে?”
———-“তোর বোন তো ভালোই আছে!”
———-“যাক নিশ্চিত হলাম!খুব একটা দুষ্টুমি করছে না তো….
———-“তোর বোন আবার দুষ্টুমি করবে না জানিস কালকে কি হয়েছে….
“বলেই থেমে যায় রিয়াদ’!!কারন চাইছে না এই মুহুর্তে নৌকায় ওঠার ঘটনাটা বলতে অপূর্বকে!কথা মাঝখানে রিয়াদকে চুপ হয়ে যাওয়াতে অপূর্ব বলে উঠলঃ
——–”কি হলো থেমে গেলি কেন?
——–“হুম বলবো সব তবে ফোনে নয় সামনাসামনি…
———“ঠিক আছে আজকে রাতেই ফিরছিস তো…
———-“হুম…..
———-“ঠিক আছে তাহলে পড়ে কথা হবে তোরা ইনজয় কর আর হ্যাঁ খেয়াল রাখিস আমার বোনের….
———-“হুম রাখবো বাই তাহলে…
———“বাই….
“বলেই ফোন কেটে দেয় অপূর্ব’!!রিয়াদও মুচকি হেঁসে ফোনটা পকেটে নিয়ে নেয়’!!হর্ঠাৎই চোখ গেল তার তানজুর দিকে’!!অপলকভাবে তাকিয়ে আছে সে’!!কারন তানজু হাতে একটা হলদে রঙের প্রজাপতি হাতে নিয়ে মজা করছে সাথে ছবি তুলছে’!!তানজুর কাজে হাসলো রিয়াদ’!!মনে মনে আবারো বললো সেঃ
——–“পাগলী একটা….

———-“ঠিক মতো তুলছিস তো,ছবি যদি সুন্দর না হয় তাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন বলে দিলাম….
“কিছুটা উচ্চ স্বরে কথাটা বলে উঠলাম আমি আরিফাকে’!!কারন কিছুক্ষন আগেই ঘাসের উপর বসে থাকা একটা ছোট্ট প্রজাপতি নিজের হাতে বন্দী করেছি আমি’!!এখন সেইটা নিয়েই ছবি তুলছি আর কি’!!আমরা ভাবনার মাঝে আরিফা বলে উঠলঃ
———“দোস্ত কম হলেও ২০ টা ছবি তুলছি আর তোলা লাগবে না….
“আরিফা কথা শুনে বলে উঠলাম আমিঃ
———“ঠিক আছে তবে হ্যাঁ ছবি যদি ভালো না হয় তাহলে তোর কিন্তু খবর আছে বলে দিলাম….
———“আচ্ছা বোইন তোর যা করার তুই পরে করিস এখন চল….
———“যাচ্ছি তো…
———“যাচ্ছিস তো থেমে থেমে…
———“আরে জঙ্গলে কি শুধু হাঁটার জন্য আসছি নাকি দু একটা ছবি না তুললে স্মৃতি থাকবে নাকি…
———“বোইন এখানে দুই একটা ছবি….
“হাসলাম আমি’!!তারপর আরিফা, রিতু আর আমি তিনজন মিলে একসাথে আরো কিছু ছবি তুলে হাঁটা শুরু….

“পাক্কা চার ঘন্টা হেঁটে ক্লান্ত আমরা সবাই’!!তাই জঙ্গলের একটা সুনশান নীবর স্থানে বসে আছি আমরা সবাই’!!আর আমাদের সাথে আছে সুন্দরবনে গাছ থেকে সংগ্রহ করা ফলমূল’!!এগুলো সবই সুন্দরবনে সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে আনা’!!সবাই এই সুনশান জায়গায় বসে এগুলো খাচ্ছি আর এটা ওটা নিয়ে গল্প করছি’!!
আশেপাশের পরিবেশ দিয়ে সুন্দর ঠান্ডা বাতাস বইছে’!!এমন সময় হর্ঠাৎই এক ভয়ংকর আওয়াজ হলো এক জায়গায় এক ঝাঁকে বসে থাকা পাখিরা সব একসাথে উড়ে গেল’!!যার শব্দ শুনে আমরা সবাই পুরো কেঁপে উঠলাম’!!আমাদের সাথে থাকা গাইডগুলো আমাদেরকে ইশারা করে বললেনঃ
———“হুস!সবাই চুপ আমার মনে হচ্ছে আমাদের আশেপাশে কোথাও বাঘ আছে…
“ওনাদের কথা শুনে ভয়ে বুক কেঁপে উঠল আমার’!!আমরা সবাই নিজেদের জায়গায় থেকে উঠে দাঁড়ালাম’!! সবাই এক জোট হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম’!!হর্ঠাৎই তুলি হাতের ইশারায় বলে উঠলঃ
———“স্যার ওই দেখুন….
“তুলির কথা শুনে আমরা সবাই ওদিকে তাকালাম’!!আমাদের কাছ থেকে বেশ কিছুটা দূরেই আছে একটা বাঘ আর একটা হরিন যুদ্ধ করছে’!!খুব ভালো ভাবে দেখলে বাঘটা একদম মেরেই ফেলেছে হরিনটাকে’!!আর হরিনটা আপ্রাণ চেষ্টা করছে নিজের প্রান রক্ষা করার’!!হর্ঠাৎই ক্ষপ করে বাঘটা হরিনের গলায় কামড় দিল’!!দূর থেকে এমন দৃশ্য দেখে ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠল আমার’!!সবকিছু কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে বার বার শুধু হরিনটার আর্তনাদ করা ভেসে আসছে সামনে আর শরীর থেকে বেরিয়ে আসার রক্ত দেখে ঝিম ধরে যাচ্ছে আমার মাথায়’!!কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না!!মাথাটা চেপে ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি’!!……

“অন্যদিকে রিয়াদ হর্ঠাৎই তাকালো তানজুর দিকে’!!তানজুর অবস্থা বুঝতে পেরে তানজুর মাথা চেপে ধরলো সে তার বুকের সাথে’!!কারন অপূর্ব তাকে বলেছিল তাকে তানজু রক্ত ভিষণ ভয় পায়’!!
“রিয়াদ তানজুকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলঃ
———-“কিছু হয় নি শান্ত হও তুমি….
“আচমকা কেউ আমায় ধরাতে আমি ঘাবড়ে গেলেও তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ
———–“ওখানে রক্ত….
———–“কিছু হয় নি তুমি শান্ত হও…
“বিনিময়ে আমি কিছু না বলেই সামনের ব্যক্তিকে জড়িয়ে ধরলাম’!!”রক্ত” এটা আমার একটা দূর্বলতা খুব বেশি রক্ত দেখতে পারি না আমি’!!রক্ত দেখলেই কেমন যেন লাগে আমার’!!সবকিছু কেমন অন্ধকার অন্ধকার হয়ে যায়….

“রাত_১০ঃ০০টা…..
“আমরা অনেক আগেই শিপে এসে পৌঁছেছি’!!মোটামুটি ওই সময়টা বাদে আর বাকি সময়গুলো খুব সুন্দরভাবেই কেটেছে আমাদের’!!আজকের আর কালকের দিনগুলো একদমই স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমার জীবনে’!!জাহাজ ছুঁটতে তার আপন গতিতে’!!কারন আমার আমাদের দুদিনের ভ্রমণ শেষ করে কাল যে যার বাসায় পৌছাবো..সবাই বেশ ফুড়ফুড়ে মুডে আছে’!!জাহাজের ছাদে বসে সবাই এটা ওটা নিয়ে আড্ডা করছে সাথে মজাও’!!আমার থেকে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে রিয়াদ স্যার’!!উনিও বেশ সবার সাথে মজা করছে’!!আর আমি জাহাজের কিনারায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি’!!ঠান্ডা ফুড়ফুড়ে বাতাস ভালোই লাগছে’!!তখনকার বিষয়টা এখনও মাথা থেকে যাচ্ছে না আমার’!!
………

———-“ভালোই তো ছেলে পটাতে পারিস তুই….
“আচমকা কারো মুখে এমন একটা শুনে হকচকিয়ে উঠলাম আমি’!!চোখের সামনে তুলিকে দেখে বলে উঠলাম আমিঃ
———-“কি বলতে চাইছিস তুই….
———-“কেন তুই বুঝতে পারছিস না….
———-“কি বুঝতে পারছে না ও আর কিসব বলছিস তুই (রিতু)
———-“ওহ এখন তো কেউ ভাজা মাছটা উল্টিয়ে খেতে পারছিস না….
———–“মুখ সামলে কথা বল তুলি….(রিতু)
———-“কি মুখ সামলে কথা বলবো এতদিন জানতাম তানজু খুব ভালো মেয়ে আর যাই হোক ছেলেদের প্রতি ওর কোনো ইন্টারেস্ট নেই কিন্তু আজ যা দেখলাম….
————“কি দেখেছিস তুই (রিতু)
———–“কেন তোরা দেখিস নি নাকি কিভাবে রিয়াদ স্যারকে একদম লেপ্টে ছিল ও ছিঃ….
———-“ভুলে যাস না তুলি তখন ও খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল….
———-“হুম ভয় পাওয়া বা ছাই সবই নাটক ছিল রিয়াদ স্যারকে জড়িয়ে ধরার বাহানা মাএ…
“আমার লাইফে কোনো ছেলেকে নিয়ে এমন বাজে কথা কেউ বলে নি’!!কেমন যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি আমি’!!আমার দূর্বলতা নিয়ে এতটা বাজে কথা শুনতে হবে কখনো ভাবি নি আমি’!!

“এদিকে তুলির কথা শুনে রিতু ঠাসস করে মারলো এক থাপ্পড় তুলিকে’!!রিতুর কাজে তুলি হা হয়ে গেল তারপর তাদের মাঝে শুরু হলো দস্তাদস্তি’!!ওদেরকে এইভাবে দস্তাদস্তি করতে দেখে ওদের মাঝখানে গিয়ে থামাতে লাগলাম আমি’!!কারন আর যাই হোক এই মুহুর্তে কোনো সিনক্রিয়েট করতে চাইছি না আমি’!!জাহাজে মিউজিক চলার কারনে তেমন কেউ এই বিষয়টা নজরে দিচ্ছে না’!!
“হর্ঠাৎই মিউজিক সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেল’!!আর সাবর চোখ আসলো এদিকে’!!রিয়াদ স্যারও ওদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললোঃ
———-“এই কি করছো তোমরা….
“কিন্তু কেউ থামছে না তাদের কাজে’!!আমি গিয়ে তুলির হাত ধরতে গিয়েই ঘটলো আরেক ভয়ংকর ঘটনা’!!আচমকা তুলি তার হাত দিয়ে আমাকে ছাড়াতে গিয়ে মারলো এক ধাক্কা’!!জাহাজের একদম কিনারায় থাকায় আমি পড়ে গেলাম জাহাজের উপর থেকে নিচে….
“হুট করে এমন একটা ঘটনা ঘটে যাওয়াতে সবাই জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রইল’!!কিছুক্ষণের জন্য সবাই জাস্ট বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে’!!

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৪

“এদিকে আমি শূন্যে ভাসছি আমি বুঝতে পেরেছি আজই শেষ দিন আমার’!!আর হয়তো ফেরা হবে না’!!কারন এখান থেকে আমি সোজা নদীর মাঝখানে পড়ে যাবো আর নদীর স্রোত কোথায় নিয়ে যাবে আমায় কে জানে’?
“সবাই তাকিয়ে আছে তানজুর দিকে’!!অন্যদিকে রিয়াদ উপর থেকে এমন দৃশ্য দেখে সেও জাহাজের উপর থেকে লাফ দিলো নিচে….
“রিয়াদের আরো অবাক সবাই’!!কি হতে চলেছে সামনে কেউ কিছু বুঝতে পারছে না…
“এরই মাঝে মাইকে এনাউন্সমেন্ট করা হলোঃ
———-“সামনে কোনো ঝড় আসছে আমরা তাড়াতাড়ি যে যার কেভিনে ঢুকে পড়ি ফাস্ট….
এই মুহুর্তে কে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না’!!সবাই ছুটছে যে যার রুমের দিকে’!!
“আর এদিকে চার বন্ধু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে’!!রিতু আরিফা তো অলরেডি কেঁদে ভাসিয়ে দিয়েছে’!!অবশেষে দিহান আর হৃদয় দুজনকে জোরজবরদস্তি করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের রুমে…..

“অন্যদিকে পানির নিচে আস্তে আস্তে তলিয়ে যাচ্ছি আমি!!শ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে’!!ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আমার’!!এমন সময় মনে হলো কেউ ধরলো আমায়’!!হর্ঠাৎই খুব জোরে একটা ঢেউ আসলো আর কিছু মনে নেই……

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৬