এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৯ || অনেক কষ্টের গল্প

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৯
তানজিল মীম

——–“স্যার আপনি এভাবে এগোচ্ছেন কেন?
“একপ্রকার ঘাবড়ে গিয়ে কথাটা বলে উঠলাম আমি রিয়াদ স্যারকে’!!কিছুক্ষণ আগে রিয়াদ স্যারের কথাটার আগামাথা কিছুই বুঝতে না পেরে বলে উঠলাম আমিঃ
———“স্যার কি বললেন আপনি আমি কিছুই বুঝি নি…
———-“তোমার এত বুঝে কি লাভ,তাড়াতাড়ি এই জায়গাটা পরিষ্কার করো?”
———-“কি আমি??পারবো না আমি….
“আমার কথা শুনে হুট করেই রিয়াদ স্যার এগিয়ে আসতে লাগলেন আমার দিকে’!!
“বর্তমানে….
“আমার কথা শুনে রিয়াদ স্যার বলে উঠলেনঃ
——–“কি বললে তুমি?
——–“কি বলছি আমি, কিছুই তো বলি নি স্যার…
———-“তোমাকে জায়গাটা পরিষ্কার করতে বলেছি না…
———“যদি না করি কি করবেন আপনি?
———“কি করবো দেখবে তুমি…
———-“ম মা মানে..(কাঁপা কাঁপা গলায়)
———“মানে বোঝাচ্ছি তোমায়…
“বলেই আমার হাত ধরে দিলেন টান’!!আচমকা টান দেওয়াতে আমি এসে পরলাম একদম রিয়াদ স্যারের বুকের কাছে’!!রিয়াদ স্যারের কাজে অবাক হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
———-“ক কি করছেন আপনি..?
———“তুমি কাজটা করবে না….
“বলেই একটু ঝুঁকে পরলো রিয়াদ স্যার আমার দিকে’!!সাথে সাথে ঘাবড়ে গিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি’!!

“এদিকে রিয়াদ তানজুর কাজে মুচকি হাসলো’!!তানজুর মুখের সামনে থাকা চুলগুলো ফু দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলে উঠল রিয়াদ তানজুর কানে কানেঃ
———“মিস লাউডস্পিকার একটু ভাবো এখানে তুমি আমি ছাড়া কেউ নেই,এখন তোমার সাথে যদি কিছু করি তাহলে কিন্তু…
“রিয়াদ স্যারের কথা আর কাজে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!একটু ভয়ে ভয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
———“কি করবেন আপনি…
———“কি করবো?
“বলেই আস্তে আস্তে আমার চোখের সামনে থেকে কপালের পাশে লেপ্টে থাকা চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিলেন রিয়াদ স্যার’!!ওনার কাজে ঘামতে শুরু করলাম আমি’!!
“হুট করেই রিয়াদ স্যার উচ্চ স্বরে হাসতে শুরু করলো’!!তারপর হাসি থামিয়ে বললেন উনিঃ
——–“তোমায় তো কিছু করার আগেই ঘেমে একাকার হয়ে গেছো!যদি সত্যি সত্যি কিছু করে বসি তাহলে কি হবে তোমার সেটাই ভাবছি…।
“বলেই আচমকা আমার গলায় থাকা ওড়নাটা টান মেরে নিয়ে গেলেন উনি’!!ওনার এমন কাজে অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছি আমি’!!অবাক হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
———–“এটা কি হলো আপনি আমার ওড়না নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন স্যার…
“রিয়াদ স্যার হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠলেনঃ
———-“আঁধ ঘন্টার মধ্যে যদি রুম পরিষ্কার না হয় তাহলে তুমি আর তোমার ওড়না কোনোটাই থাকবে না…..

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

“বলেই হন হন করে বেরিয়ে গেল উনি’!!আর ওনার এমন কাজে হা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি’!!পরক্ষণেই রেগে মেগে বলে উঠলাম আমিঃ.
———-“শালা শয়তান,আমার ওড়নাও নিয়ে গেল তারওপর আবার থ্রেড ও দিয়ে গেল!!একা পেয়ে যা ইচ্ছা তাই করতাছে, উফ ভালো লাগছে না ও ভাইয়া কবে খুঁজে বের করবে আমায়, বাড়ি যামু আমি…?
“বলেই নেকা কান্না জুড়ে দিলাম আমি’!!অপর পাশে আমার কান্না শুনে রিয়াদ স্যার বলে উঠলঃ.
———-“লাউডস্পিকার কেঁদে লাভ নেই আগে কাজ করো তারপর দুজন একসাথে বসে কাঁদবো ঠিক আছে…
“বলেই চলে গেল রিয়াদ!!
“আর আমি হাবলার মতো বসে রইলাম’!!রিয়াদ স্যারের কথা শুনে হাসিও পাচ্ছে আবার কান্নাও পাচ্ছে….
__________________________
“পাক্কা আঁধ ঘন্টা বসে রুমটা পরিষ্কার করলাম আমি’!!এখন ঠিকঠাক লাগছে সবকিছু!কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলে উঠলাম আমিঃ
——–“উফ! যাক বাবা রুমটা পরিষ্কার হয়ে গেছে…
“ভাবতেই শান্তি শান্তি লাগছে খুব’!!
———-“এখন তাহলে দেখা যাক টিউবলাইট স্যার কোথায় গেলো আমার ওড়না নিয়ে’!!গায়ে থাকা ব্লাক জ্যাকেটটা গায়ে সুন্দর মতো জড়িয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!আশেপাশে কোথায় রিয়াদ স্যারকে দেখতে পাচ্ছি না’!!কিন্তু যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা হলোঃ

“বিশাল সমুদ্র সৈকত’!!রোদ্রের তাপে পানিগুলো একদম চিক চিক করছে’!!এখান থেকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে সমুদ্রটাকে’!!ইস যদি এখন আমার ক্যামেরাটা থাকতো সুন্দর সুন্দর ছবি তোলা যেত’!!ভাবতেই আফসোস লাগছে একটু’!!না জানি ভাইয়া,আম্মু,দিহান, আরিফা,হৃদয় আর রিতু কি করছে,,আচ্ছা ওঁরা কি আমায় না পেয়ে খুব কাঁদছে!!না জানি আব্বু আম্মুকে কতো বকাবকি করছে, আব্বু কি জেনে গেছে আমি সুন্দরবন এসেছি’–এঁকের পর এক কথা এসে আঁটকে যাচ্ছে মাথায়’!!আর ভাবতে পারছি না আমি চোখ বেয়ে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পরল নিচে’!!এমন সময় কাঁধে হাত রেখে বলে উঠল রিয়াদ স্যারঃ
———“কেঁদো না দেখবে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছাতে পারবো….
———“ভাইয়া আমাদের খুঁজে পাবে তো স্যার…
———“নিশ্চয়ই পাবে!
———-“আপনি মিথ্যে বলছেন স্যার….(কেঁদে কেঁদে)
———“হুর!পাগলী মেয়ে এত কাঁদলে চলবে নাকি দেখবে ঠিক খুঁজে বের করবে আমাদের অপূর্ব!!
———-“ঠিক তো স্যার!
———-“একদম এখন চলো তো আমার সাথে….
“রিয়াদ স্যারের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে বললামঃ
———“কোথায় স্যার….
———“চলো আমার সাথে গেলেই দেখতে পাবে….
“আমিও আর কিছু না ভেবে চললাম রিয়াদ স্যারের সাথে….

“কিছুটা দূর হাঁটতেই হর্ঠাৎই রিয়াদ স্যার চোখ চেপে ধরল আমার’!!এতে বেশ অবাক হই আমি কিন্তু কিছু বললাম না’!!আরো কয়েক কদম হাঁটতেই রিয়াদ স্যার চোখ খুলে দিলেন’!!সামনে তাকাতেই চোখ আঁটকে গেল আমার’!!কারন আমাদের সামনেই আছে একটা অসম্ভব সুন্দর দেখতে পাহাড়ি ঝর্না’!!মুহূর্তের মধ্যে খুশি হয়ে গেলাম আমি’!!এমন একটা জায়গায় ঘুরতে আসা কতোদিনের ইচ্ছে আমার’!!আমি দৌড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম ঝর্নার পাশে’!!খুশি হয়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করলাম পানি’!!অসম্ভব ঠান্ডা কিন্তু ভালো লাগছে!!ঝর্নার পানিতেই ভিজতে লাগলাম আমি…
“অন্যদিকে রিয়াদ তাকিয়ে আছে তানজুর হাসি খুশি মুখের দিকে’!!এই হাসিটা দেখার জন্যই তো রিয়াদ এতোক্ষণ অপেক্ষা করেছিল’!!এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিয়াদ তানজুর দিকে’!!সেই প্রথম দিনের মতো আবারো নতুন করে মায়ায় আটকাচ্ছে রিয়াদ’!!নেশালো ঠোঁট, মায়াবী চোখ,ঘন কালো লম্বা চুল সাথে মন মাতাল করা হাসি’!!সবকিছুতেই মুগ্ধ রিয়াদ সেই প্রথম দিন থেকে’!!তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেলে রিয়াদ তানজুর দিক থেকে’!!কারন তানজুর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকার শক্তি যে নেই রিয়াদের’!!আনমনে হাসলো রিয়াদ’!!না জানি আপন মানুষদের কাছ থেকে কতোটা দূরে চলে এসেছে তাঁরা!!রিয়াদের ভাবনার মাঝখানে হর্ঠাৎই তানজু হাত টেনে বলে উঠলঃ

———“চলুন স্যার ভিজি….
———“মাথা খারাপ তোমায় ঠান্ডা লেগে গেলে তখন…
———-“আরে স্যার কিছু হবে না চলুন না’!!
———-“না না….
———-“আরে আসুন স্যার কিছু হবে না!
“এমন সময় আকাশে কালো মেঘ এসে ভর করলো’!!চারপাশ পুরো অন্ধকারের ঢেকে যাচ্ছে’!!রোদ্র মাখা দুপুরটা হর্ঠাৎ অন্ধকারে ঢেকে সন্ধ্যায় নেমে এলো’!!হুট করে প্রকৃতির এমন পাল্টে যাওয়াতে কিছুটা ভরকে গেলাম আমি’!!তবে ভালো লাগছে হয়তো বৃষ্টি হবে’!!রিয়াদ স্যার প্রকৃতির এমন বদল দেখে বলে উঠলেনঃ
———“তাড়াতাড়ি চল এখান থেকে মনে হয় প্রচন্ড বেগে জড় আসবে….
“জড় আসবে” শুনতেই বুকের ভিতর এক অজানা ভয় এসে গ্রাস করলো আমায়’!!!জড় সাথে আকাশের ভয়ংকর বাজ তারওপর অজানা দ্বীপ ভাবতেই ভয়ে আঁতকে উঠছি আমি’!!আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রিয়াদ স্যার আমার হাত ধরে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন’!!আমিও বেশি কিছু না ভেবে হাঁটা শুরু করলাম’!!অর্ধেক পথ যেতেই মুসুল ধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল’!!আমি আর রিয়াদ স্যার দুজনেই ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছি’!!বিষয়টা মন্দ না ভালো লাগছে খুব’!!আশেপাশে থাকা পাখিরাও উড়ে যাচ্ছে এদিক সেদিক’!!

“সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরটার সামনে আসতেই থেমে গেলাম আমি’!!উদ্দেশ্য অল্প হলেও বৃষ্টিতে ভেজা’!!আমায় থেমে যেতে দেখে রিয়াদ স্যার বলে উঠলঃ
——–“কি হলো থেমে গেলে কেন?
“বিনিময়ে আমি কিছু বললাম না হাল্কা মিষ্টি হাসলাম’!!রিয়াদ স্যার হয়তো আমার হাসির কারনটা বুঝতে পেরেছে’!!তাই উনি বলে উঠলেনঃ
———“ঠিক আছে তবে দু’মিনিট কিন্তু ততক্ষণে না হয় আমি আগুনের ব্যবস্থা করি!
“বিনিময়ে মাথা নাড়িয়ে হা সর্মথন দিলাম’!!রিয়াদ স্যারও আর কিছু না বলে ঢুকে পরলেন সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরটায়….
“আর আমি আনন্দের সাথে ভিজতে লাগলাম বৃষ্টিতে’!!
“জীবন তো এমনই হয় হর্ঠাৎ কান্না হর্ঠাৎ হাসি’!!হর্ঠাৎ আনন্দ তো হর্ঠাৎ বেদনা’!!এই মুহুর্তে কষ্টে আছি তাই বলে কি জীবনের খারাপ সময়ে মন মরা হয়ে বসে থাকবো নাকি’!!জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে আনন্দের সঙ্গে পার করতে পারলেই জীবন সুন্দর মনে হবে’!!ভাগ্যে যা আছে সেটাই হবে তাই প্যারা নাই জাস্ট চিল “তানজু”!!ভেবেই আনন্দে মেতে উঠলাম আমি’!!

“পাথরের সংঘর্ষে আগুন জ্বালাচ্ছে রিয়াদ’!!এই টেকনিকটা এর আগেও ইউস করেছে রিয়াদ’!!তাই খুব একটা কষ্ট ছাড়াই রিয়াদ জ্বালিয়ে ফেললো আগুন’!!জীবনে বেঁচে থাকার জন্য তিনটে জিনিস থাকা আবশ্যক পানি,আগুন আর বাসস্থান!!বর্তমানে ওদের কাছে সবই আছে খাওয়ার জন্য পানি সাথে গাছ থেকে পেরে আনা ফলমূল,থাকার জন্য এই ছোট্ট কুঁড়েঘর আর নিজেদের তাপে রাখার জন্য এই আগুন’!!আর সবচেয়ে বড় যেটা আছে সেটা হলো প্রিয় মানুষটি কাছে’!!হর্ঠাৎই রিয়াদের মনে পড়ে গেল তানজুর কথা মেয়েটা হয়তো এখনও বাহিরে ভিজছে'”!!! রিয়াদ আগুন জ্বালিয়েই চলে গেল বাহিরে’!!
“দু’হাত অপসারিত করে আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে তানজু’!!কিছুটা দূর থেকে এমন দৃশ্য দেখে চোখ আঁটকে যায় রিয়াদের’!!পরক্ষণেই তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যায় রিয়াদ তানজুর কাছে’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

——–“আর কতো ভিজবে লাউডস্পিকার এরপর তো ঠান্ডা লেগে যাবে….
“আচমকা রিয়াদ স্যারের কথা শুনে চমকে উঠলাম আমি’!!একপ্রকার ভুলেই গেছিলাম যে আমি বৃষ্টিতে ভিজছি আমি তো আকাশের পানে তাকিয়ে নানা চিন্তায় মগ্ন ছিলাম’!!রিয়াদ স্যারের কথা শুনেই নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলাম’!!
||
“রাত_৮ঃ০০টা…..

“জাহাজের কেভিনে বসে জানালা ভেদ করে তাকিয়ে আছে অপূর্ব বাহিরে’!!আজ দু’দিন হতে চললো কিন্তু বোন আর বন্ধুর কোনো খবরই পেলো না তাঁরা’!!তাহলে কি সত্যি সত্যি চিরকালের মতো হারিয়ে ফেললো সে তার প্রিয় মানুষদের’!!ভাবতেই বুকের ভিতর দক করে উঠছে অপূর্বের’!!কি করবে এখন বাড়ি ফিরে যাবে কিন্তু বাড়ি ফিরে কি বলবে সে বাবা মাকে!ভাবতেই আরো বেশি খারাপ লাগছে অপূর্বের’!!সবকিছু এলেমেলো লাগছে তার কাছে’!!আর কিছুদিন আগেও কিনা সুন্দরবনে আসার সময় কতটাই না হাসি খুশি ছিল অপূর্ব আর রিয়াদ’!!অপূর্ব তো ভেবেছিল ওঁরা ফিরে এলেই দু’পরিবারকে জানিয়ে রিয়াদ আর তানজুর বিয়েটা দিয়ে দিবে’!!কারন সে তো আগে থেকেই জানতো রিয়াদ তার প্রিয়সীকে কতোটা ভালোবাসে’!!সবচেয়ে বড় কথা রিয়াদ যে তার প্রিয়সীকে হারানোর ভয়েই নিজেও নিখোঁজ হয়ে গেল আজ’!!ওঁরা কি আধও বেঁচে আছে?ভাবতেই নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে অপূর্বের কাছে’!!একটা কু-লু পেলেই অপূর্ব কিছু করতো!

——–“প্লিজ আল্লাহ একটা হদিস দেও ওদের!কামছেকাম ওরা বেঁচে আছে কিনা এটা তো জানাও প্লিজ গড…
“রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো অপূর্ব’!!বাহিরে মুসুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে’!!এই মুহূর্তে জাহাজে অপূর্ব আর ওর কিছু ফেন্ড,দিহান হৃদয়,রিতু,আরিফা,তুলি,আফরিন, আফরিনের বাবা আর টাকলা স্যার রয়েছেন’!!আর বাকি সবাই চলে গেছে’!!অবশ্য থেকেই বা কি করতো সবাই তো ভেবে নিয়েছে ওঁরা বেঁচে নেই!!

“দীর্ঘশ্বাস ফেললো অপূর্ব!!কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে তার’!!কিন্তু কিছু বলতে পারছে না সে’!!জীবন যে এ কেমন পরিস্থিতিতে ফেললো তাদের কিছুতেই বুঝতে পারছে না অপূর্ব!!চোখ মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরল অপূর্ব’!!অপূর্বের মন বলছে ওঁরা বেঁচে আছে আর মস্তিষ্ক বলছে অন্যকিছু..
“কিন্তু অপূর্ব বিশ্বাস করে মানুষের মন যেটা বলে সেটাই হয়’!!অপূর্ব ভেবে রেখেছে কালকে সকালেই ট্রলার করে পাশেপাশের সব ছোট্ট বড় জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজবে ওঁদের’!!
——–”প্লিজ তাড়াতাড়ি ফিরে আয় না তোরা,প্লিজ আয় না আর যে ভালো লাগছে না তোদের ছাড়া রিয়াদ-তানজু….

“বাহিরে মুসুল ধারে বৃষ্টি বইছে’!!সাথে বিশাল বিশাল বাজ পরছে’!!ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার’!!এমন একটা মুহূর্তে আগুনের সামনে চুপচাপ বসে আছি আমি আর রিয়াদ স্যার এই অজানা দ্বীপের এই ছোট্ট কুঁড়েঘরে’!!শীত করছে খুব’!!প্রকৃতির এই ভয়ংকর রূপ রীতিমতো ঘাবড়ে দিচ্ছে আমাকে’!!হর্ঠাৎই রিয়াদ স্যার ফিস ফিস বলে উঠলেনঃ
———–“খুব ভয় করছে ”লাউডস্পিকার”…..
“রিয়াদ স্যারের এমন ফিসফিস করে কথা বলায় আরো ঘাবড়ে গেলাম আমি’!!একটু রেগেই বলে উঠলাম আমিঃ
———-“এসব কি স্যার আপনি দেখছেন আমি ভয় পাচ্ছি তারওপর আরো ভয় দেখাচ্ছেন কেন আমায়….
“হাসলেন রিয়াদ স্যার’!!তারপর বলে উঠলেন উনিঃ
———–“সরি “লাউডস্পিকার”!আসলে কি বলো তো তোমায় না ভয় পেতে দেখতে আমার হেব্বি লাগছে…..
———–“হু???
———-“সরি বললাম তো!
————“আপনি খুব পঁচা স্যার আপনি দেখছেন আমি ভয় পাচ্ছি কোথায় একটু শান্ত্বনা দেবেন তা না উল্টো ভয় দেখাচ্ছেন!!(নেকা কান্না করতে করতে)
“তানজুর কাজে রিয়াদ অবাক’!!এই মেয়েটা যে এই হুটহাট কি করে কান্না করে দেয় বুঝে উঠতে পারে না রিয়াদ’!!রিয়াদ তার দু’কানে হাত দিয়ে বলে উঠলঃ
———“সলি লাউডস্পিকার ভুল হয়ে গেছে!!
“রিয়াদ স্যারের কাজে হাসলাম আমি’!!এমন সময় আকাশের খুব জোরে শব্দ করে বাজ পরলো’!!সাথে সাথে ভয়ে আঁতকে উঠে রিয়াদ স্যারকে জড়িয়ে ধরলাম আমি’!!

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ১৮

“আচমকা এমনটা হওয়াতে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিলো রিয়াদ’!!তারপর নিজেও খুশি হয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল তানজুকে”!!

“সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙল আমার’!!সামনেই রিয়াদ স্যারকে দেখে মুচকি হেঁসে তাকালাম আমি’!!কেনো জানি না এখন রিয়াদ স্যারকে খুব ভালো লাগে আমার’!!আজ দুদিন হলো আমরা একসাথে আছি’!!আগে তো একটুও সহ্য হতো না রিয়াদ স্যারকে আর আজ কিনা তাকেই ভালো লাগছে আমার’!!সত্যি নিয়তি খুব অদ্ভুত জিনিস’!!সূর্যের আলোতে আলোকিত হয়ে আছে রিয়াদ স্যারের মুখ’!!আনমনে মুচকি হাসলাম আমি’!!রিয়াদ স্যারের চুলগুলো পড়ে আছে তার কপালে ইচ্ছে করছে হাত দিয়ে সরিয়ে দেই’!!কিন্তু আবার ভাবলাম না থাক যদি দেখে ফেলে তখন কি ভাববে আমায় উনি…

“এই রকম নানা আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতে উঠে বসলাম আমি’!!তারপর উঠে চলে গেলাম আমি বাহিরে’!!এখন পরিবেশটা একদমই পরিষ্কার হয়ে গেছে’!!সূর্যের প্রবল তাপে এখনই চারপাশের ভেজালো ভাবটা চলে যাচ্ছে’!!হর্ঠাৎই পাহাড়ের উপর থেকে আমার থেকে কিছুটা দূরে নিচে কিছু একটা উড়তে দেখে অবাক হয়ে সেদিকে পা বাড়ালাম আমি……..

এক মুঠো কাঠগোলাপ পর্ব ২০