শঙ্খ শেষ পর্ব  || Ayda Islam Konika || Golpo Bazar

শঙ্খ শেষ পর্ব 
Ayda Islam Konika

ইশশশশ কত সেজে ফেলেছি আমাকেই বউ বউ লাগছে। সবাই না কনফিউজড হয়ে যায়। কে বউ আর কে বউয়ের বন যাই হোক। কয়েকটা সেল্ফি তো বান্তা হে। বলেই গেচ গেচ করে কয়েকটা পিক তুলে নিল। সবাই বাগানে ফোটসোট করাচ্ছে আমি কেন করাবো না আমিও করাব। যেই ভাবা সেই কাজ দিলাম এক দৌড় হঠাৎ করে সামনে চলে আসে একটা লোক হাতে তার ছিল গোলাপের পাপড়ি। আমার ধাক্কা লাগার ফলে বেচারার হাত থেকে গোলাপ ফুলের ডালাটা থেকে ফুল গুলো পরে যায় আমি পরে যেতে নিলে কেউ আমাকে হিরো ইস্টাইলে এসে ধরে ফেলে । আর তখনই ক্যামারা মেন তাদের ছিব ক্লিক করে। ঐশী তাড়াতাড়ি নিজেকে জোভানের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়। আর জোভানের থেকে দূরে দূরে থাকে। তিন কবুল আর কাগজ কলমে স্বাক্ষর দিয়ে মিতু হয়ে গেলো সারা জীবনের জন্য আলভীর। মেয়ের বাসায় থেকে মিতুর সাথে যাবে ঐশী। কিন্তু হঠাৎ করেই সে না বলে দিয়ে ম্যাগিকে যেতে বলে। কিন্তু পরে ঐশী যায়। মিতু অনেক কান্না করে। সবাই

বাসায় পৌঁছে যায়। ঐশীকে তার গেস্ট রুম দেখিয়ে দিয়ে আসে। আর সে সেখানেই গিয়ে ঘাপটি দিয়ে বসে আছে। অতীত কেনো তার পিছু ছাড়ছে না। চেয়েছিল তো সব ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করবে কিন্তু সেই অতীতই আজ তার সামনে দাড়িয়ে। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে এত বছর পর দেখেও তারা একেঅপরকে অচেনার মতো করে দেখছে।

হঠাৎই রুমের দরজা খুলে কেউ রুমে আসে ঐশীর ভালো করেই মনে আছে সে দরজা লাগিয়ে দিয়ে ছিল। সে সামনে জোভানকে দেখে ঐশী দাড়িয়ে যায় আর বলে
— আপনি এত রাতে এখানে কিভাবে!!! জোভান নিজের পকেটে চাবিটা ঢুকিয়ে বলে
— বাহ বাহ!!!! বেশ ভালোই চেন্জ হয়েছো ২ বছরে। আমাকে চিনও না¡! ঐশী নিজের চোখের জলটা মুছে বলে
— হ্যা সেটাই কি ভালো না? আর কত কষ্ট পাবো একটা মানুষের জন্য। আর এত রাতে একটা মেয়ের ঘরে ঢুকতে আপনার লজ্জা করলো না জোভান চৌধুরী!! জোভান চিৎকার দিয়ে বলে
—- #শঙ্খ,, নামটা অনেকদিন পর শুনলো ঐশী। আগে এই নামটায় খুজে পেত অনেক ভালোবাসা আর
এখন হয়তো সেটা আছে বা নেই কিন্তু সেটা আর ঐশী খুঁজে না। জোভান এসে ঐশীর বাহু চেপে ধরে বলে

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

— কেনো করেছিলে এমন আমাকে ছেড়ে কেন গিয়েছিলে ঐ একটা সামান্য ঝগড়ার জন্য ? ঐশী কষিয়ে একটা চড় লাগিয়ে দেয় জোভানের গালে আর বলে
— সেটা সামান্য ঝগড়া ছিলনা জোভান। কি যাতাই না বলেছিলে আমার,,,, ছিঃ ভাবতেই ঘৃণা লাগে। রওশান শুধু আমার ভালো বন্ধু ছিল। সবসময় এমন হয়না যে একটা ছেলে একটা মেয়ে প্রেমিক প্রেমিকাই হবে। আমি পিওর ছিলাম তুমি আমাকে আমার ফ্যামেলিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিলেন। কেন এসেছেন আমার জীবনে? আপনিতো ভালো করেই জানতেন মিতু আপু আমার মামাতোবোন। আমিতো ভেবেছিলাম বিয়েটাই হবে না। জোভান বলে
— আমি এতটাও খারাপ না। নিজের ভাইয়ার পেছন্দের মানুষটাকে তার থেকে আলাদা করে দিব। ঐশী বলে

—- বেশতো এবার বলুন এত রাতে এখানে কি করেন? জোভান গিয়ে ঐশীর পাশে বসে পরে আর তা দেখে ঐশী উঠে যেতে চাইলে জোভান ঐশীর হাত ধরে নিজের পাশে বসিয়ে দেয়। বলে
— সেদিন রাগের মাথায় এমনটা হয়েছিল প্লিজ মাফ করে দাও। ঐশী রেগে গিয়ে জোভানের শার্টের কর্লার ধরে বলে
—+ ছেলে খেলা এটা ছেলে খেলা পেয়েছিস? নিজে আমাকে দূরে, ঠেলে দিয়েছিলি আমি না। তোর জন্য অপেক্ষা করতাম কাঁদতাম। কিন্তু এখন!! এখন আর না। আমি ভালো আছি। পারবো না তো শঙ্খ হতে। চলে যা আমি চাই না তোর এই মুখ দেখতে। ঐদিন জোভান একটা কথা বলে চলে যায় সেটা ছিল এমন
—- হবে তো তুমি আমারই শঙ্খ যতদিন না তুমি চাইবে আসবো না তোমার কাছে। যেদিন চায়বে তুমি আমায় বিলেয়ে দিব সেটা বলে সে আর আসেনি ঐশীর সামনে।

আজ হঠাৎ করে মিতুর কল আসে যে জোভান নাকি কার এক্সিডেন্টে মারা গেছে। সেটা শুনে ঐশীর পায়ের নিচে থেকে জমি সরে যায়। আর সেটা শুনে সে সহ পুরো পরিবার দৌড়ে যায় মিতুর শশুড় বাড়ী। গিয়ে দেখে সব চুপচাপ বাসা অন্ধকার আর কেউ নেই ঐশীর পরিবারও কেমন অন্ধকারে মিলিয়ে যায় আর হঠাৎ করেই একটা লাইট জ্বলে উঠে সেখানে ঐশী আর জোভান সমুদ্রে শঙ্খ হাতে দাড়িয়ে আছে। এখান থেকেই তাদের প্রেমকাহিনী শুরু হয়। আর সেখান থেকেই জোভান ঐশীকে শঙ্খ ডাকে। ঐদিন তারা টুরে গিয়ে সেখানে সে ঐশীকে পছন্দ করে ঐশী যখন কলেজে তখন সে ভার্সিটিতে পড়ে। তারপরই আরেকটা ছবি সেটা ছিল ঐশীর জন্মদিন পালনের ছবি। ছুরি নিয়ে হাতে নিয়ে সে জোভানের দিকে তাক করে আছে। তারপরের পিকটা হলো বসন্তের ঐদিন সে জোভানের জন্য শাড়ি পরেছিল। ঐশীর কান্না করা অবস্থায় হেসে দেয়। আর তখনই কেউ তার পিছনে আসে আর বলে

শঙ্খ পর্ব ২

—- তোমার সামনে দাড়ানোর সাহস আমার নেই। ভালোবাসি তোমাকে তাই কাউকে সহ্য করতে পারেনি। মানি অনেক ভুল করেছি কিন্তু সত্যি ভালোবাসি। বলেছিলাম তোমার সামনে কখনোই আসবো না। দেখো তোমার সামনে এসেও তোমার থেকে আমি অনেক দূরে। আজ না এসে আর পারলাম না। আজ আমার #শঙ্খ এর জন্মদিন সেটা আমি ভুলি কি করে? হ্যাপি বার্থডে ভালোবাস #শঙ্খ
বলেই চলে যেতে চাইলে ঐশী গিয়ে জড়িয়ে ধরে তাকে। আর ঢুকরে কেঁদে বলে
—- আমিও বাসি যেওনা আমাকে ছাড়া। তোমার #শঙ্খেরও খুব কষ্ট হয় তোমার থেকে দূরে থাকতে। তোমার তোমার কোথায় লেগেছে দেখি আর বাকি সবাই কোথায় মিতু আপু না বললো তোমার। আর সাথে সাথে লাইট ওন হয়ে যায়। আলভী বলে

—- শালী সাহবে এটা একটা ট্রিক ছিল তোমার মনে আবার জোভানের জন্য ভালেবাসা জাগানোর। আর ঐশী কটমট দৃষ্টিতে তাকায় জোভানের দিকে জোভান একচোখ মেরে ফ্লাইং কিস দেয়। মিতু বলে
—- কিছু দিন আগে জোভানের রুমে গিয়ে ঘর গুছানের সময় একটা সার্ভেন্ট তোর আর জোভানের একটা পিক পায় জোভান সেদিন অফিসে ছিল। তাই সেটা আমাকে দেখাতে আনে আমি সেটা দেখে জোভান অফিস থেকে আসলে তোর আর ওর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি পরে অনকে জোরাজোরি পর সব সত্যি বলতে বাধ্য হয়। তারপর দুই পরিবারকে রাজি করিয়ে তোকে টাইট দিলাম। ঐশী আবার কেঁদে দেয় এটা কোনো কথা হলো তাই বলে এভাবে। জোভান ঐশীকে জড়িয়ে ধরে বলে
—- কাঁদে না আমি আছি তো। অনেক সময় পর সে নিজের কান্না থামায়। তারপর সবাই মিলি কেক কাটে। ঐশী কেক কাটে তারপর তার বাবা এবং তারপর জোভান কে খায়িয়ে দেয়। সেটা দেখে সবাই বলে
— আমরাতো বনের জলে ভেসে আসছি। তারপর সবাইকে খায়িয়ে দেয় । সব শেষে জোভানে একটা রিং নিয়ে বসে আর বলে

—- ওয়াদা করলাম কখনো ভুলবুঝবো না আগলে রাখবো তোমাকে। নিজের করে রাখবো। আমি অনেক অগোছালো একটু গুছিয়ে দাও। সত্যি বলছি একটুও জ্বালাবো না। সবসময় আগলে রাখবো। বিয়ের পর সপ্তাহে ছুটিতে রান্না করব ঘর গুছিয়ে দিব। আর আমাদের বেইবি হওয়ার পর ও ডাইপারও,,, ঐশী নিচু হয়ে জোভানের মুখ আটকে দিয়ে বলে
—- আমি রাজি আমি রাজি।
আর সবাই হাহাহা করে হেসে দেয়।

———সমাপ্ত——–

বেচেথাকুক সব ভালোবাসা গুলো। মাঝে মাঝে ভুলবুঝা বুঝির কারনে আমরা হারিয়ে ফেলি ভালোবাসার মানুঢটাকে। এটা একটা ছোট অনুগল্প ছিল। তাই এটা এখানেই ইতি টানলাম। আল্লাহ হাফেজ ?? ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে।