শঙ্খ পর্ব ১ || Ayda Islam Konika || valobashar golpo

শঙ্খ পর্ব ১
Ayda Islam Konika

আমার বান্ধুবীর বিয়ে,,মানে মামতো বোনের বিয়ে,, হাত ভরে মেহেদী দিয়ে বসে আছি এখন সমস্যা হচ্ছে আমার খুব পানি তেষ্টা লেগেছে কোনোরকম লেহেঙ্গাটা নিয়ে নিচে নামলাম। কিন্তু ওমা একি কই কেউই তো নেই। যাই কিচেনে গিয়ে দেখি হয়তো কেউ থাকবে। কিচেনে গিয়ে দেখি কেউ একজন ফ্রিজ খুলে কিছু একটা খুজছে। আমারা নূপুরের আওয়াজ পেয়ে আমার দিকে ভ্রু-কুচকে তাকায় এতো আমাদের জামাইয়ের চাচাতো ভাই। জোভান। ব্যাটা সবসময় সিরিয়াস মডুেই থাকে,, যে কইবার তাকে দেখেছি তাকে দাঁত কেলিয়ে হাস দেখেনি। আর যেদন মিতুকে (মামতো + বেস্ট ফ্রেন্ড) দেখতে আসে সেও এসেছিল,,, তখনই তাকে দেখি চোখে মুখ গম্ভীর করে তাকিয়ে ছিল কিছু সময় আমার দিকে কিন্তু আমি যখন তা দেখে নিজের দাঁত কেলিয়ে হাসি দেই সে চোখ ফিরিয়ে নেয়।
আমি জোভান কে বললাম,,,,

—- কি গো বিয়াই সাহাব,,,,ফ্রিজে কি চুরি করছেন। জোভান রেগে ফ্রিজটা লাগিয়ে দিয়ে বলে
— হুয়াট ননসেন্স কি চুরি করছি মানে? গরমের দিন তাই,,, থামিয়ে বললাম
—ওহহ,, আচ্ছা তাহলে আমার মতো ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা হওয়া খাচ্ছেন। কথাটা আমি মজা করে বললেও সে বলে
— তোমার মতো ইডিয়ট এর দ্বারা এটাই সম্ভব আর তুমি কে? আমি একভ্রু নাচিয়ে বলি
— আমি আপনার ভাবির মামাতো বোন। জোভান
— হুয়াট ইভার । বলেই ফ্রি থেকে পানির বোতল টা বের করে একটা গ্লাসে ঢেলে তিনবারে ঢকঢক করে খেয়েনিল। আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে সে আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বলে
— কি হয়ছে পানি খাবে? আমি মাথা নারালাম সে বলে
— নিয়ে খাও,,, বলেই বেটা বোতলটা ফ্রিজে ঢুকিয়ে ফ্রিজ লাগিয়ে চলে যায়।
ফাজিল,,,,নর্দমার কিড়া,,,, ফাউল এটিটিউড নিয়ে ঘুরেবেড়ায় আমার কম এটিটিউড আছে? এইদিন দিন না আমারও দিন আসবে। আর মনে করছি সেই প্রথম দিনটার কথা।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

মাথা ব্যাথায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম,,, আরে আরে কি ভাবছেন অসুস্থ আমি?? মটেও না আমি অনেক শক্তিশালী একটা মেয়ে। আর মাথা ব্যাথা হওয়ার মূল মধ্যম কারণ হচ্ছে,, আমার মিতু আপুর বিয়ে। যেদিন তাকে পাত্র পক্ষ দেখতে এসেছে ছিল । সে চুপচাপ বসে ছিল তাদের সামনে আর ঠিক তখনই আমি বাসায় আসি আমার বিদ্যাভান্ডার মানে কলেজ থেকে,,,, এতো মানুষ দেখে আমিতো অবাক আর একটা কেউ আমি চিনিনা। আমাদের আত্মীয়স্বজন সবাইকে না চিনলেও কম বেশি চিনি। তাই নিজের মনের কৌতূহল দূর করতে সরাসরি জিজ্ঞেস করে বসি বড় মা মানে ( আমার বড় চাচািকে)।
— বড় মা উনারা কারা। সবার সামনে জিজ্ঞেস করতাে মা আমার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে উপরে আসতে বলে,,, বড় আমাকে ফিসফিস করে বলে

—- মিতুকে দেখতে এসেছে। আমি বললাম
— তো দেখুক আমার কি তাতে? হঠাৎ করেই চোখ যায় একটা ছেলে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে তাও গম্ভীর দৃষ্টিতে,,, আমি দাঁত কেলিয়ে হাসি দেই আর সে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর এই মহান ব্যক্তি আর কেউ না জোভান বাবুই ছিল। আমিতো ভেবেছিলাম আমার জন্য মনে হয় বিয়েটা ভেঙে যাবে। কিন্তু না সেটা হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ্। তারা মিতু আপুকে অনেক পছন্দ করে।
হঠাৎ করে পানি ঢালার শব্দে আমার ভাবনার সুতো ছিড়ে যায় আর আমি বাস্তবে ফিরে আসি। দেখে জোভানই গ্লাসে পানি ঢালছে। জোভান চলে যাচ্ছিল পরে তার মনে পরে ঐশীর হাতে মেহেদী। তাই সে আবার ফিরে আসে । ঐশী খুশি হয়ে বললো

—- Awwwwwwwww so cute,,, আপনি অনেক ভালো। কথাটা বলার পরই জোভান পানির গ্লাসটা নিয়ে ঐশীর মুখের কাছে ধরে,,, একটু খাওয়ার পরই আমার তালুতে উঠে যায় আর না চাও সত্ত্বেও আমার মুখ থেকে পানি ছিটকে গিয়ে পরে জোভানের মুখে। আমি শেষ মিতু আপুর বিয়ে হবে আর আমার চল্লিশা ?। সে রেগেমেগে বম হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ভয়ে দেই একটা দৌড় কিন্তু সে আমার হাত ধরে ফেলে। আমি জোরে চিৎকার দিয়ে বলি
—- আমার মেহেহহহহহহহহহহহদী,,,,,। জোভান আরেক হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে টেবিলের সাথে লাগিয়ে দেয় । হার্ট বেচারা আমার মনে মধ্যে নাচানাচি করছে,, চোখমুখ খিচে বন্ধ করে ফেলি,,তারপর আস্তে আস্তে যখন চোখ খুলি,,, তারপর জোভান আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে চলে যায় । আমার মনে হয় তার মাথায় সমস্যা আছে। কিন্তু আমার মেহেদী,,, সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েগেছে। এক প্রকার আমার কান্নাই আসছে। তাড়াতাড়ি নিজের রুমে গিয়ে মেহেদীটা ধুয়ে আসি দেখি বেশ ভালোই কালার হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় ডিজাইন নষ্ট হয়েগেছে। কষ্ট আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কি আর করার। হঠাৎই আমার রুমে কেউ নক করে। দরজা খুলে দেখি আমার চাচাতো ভাই ম্যাগি দাড়িয়ে উনাকে ম্যাগি বলার কারণ তার মাথার কুঁকড়ানো চুল তার নাম নীল। আমার থেকে ৫ বছরের বড়। কিন্তু আমি তুই বলেই ডাকি । নীল আমাকে বলে

—- ডান্স করবি না? আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম,, আমি ম্যাগির চুল টেনে বলি
— হারামি আগে বলিস নাই কেন,,, বলেই ওর হাত ধরে উপরে দৌড়। আর গিয়ে সরাসরি ইস্টেজ উঠে যায় আর গানে ধুমিয়ে ডান্স করি। সবার করা হাত তালি দেয়,, আর খুব প্রশংসা করে আমার।
ডান্স করে আমি বেশ ক্লান্ত।
আহহহহ কি যে গরম লাগছে আমার বলে বুঝাতে পারবো না। গিয়ে একটা চেয়ারে বসে পরলাম। তখনই আমার মা এসে আমরা পাশে বসতে বসতে বলে

— কিরে কি হয়েছে? পানি তেষ্টায় কথা বলতে পারছিনা তখনও পানি খেতে পারেনি আর এখন নাচানাচি করে আমার প্রাণ পাখি উড়াল দেয় দেয় অবস্থা। আমি আম্মুকে বললাম
— পানি,,, খাবো। বলেই নিচে চলে গেলাল উপরে যে পানীয় ব্যাবস্থা নেই তা না আসলে সেখানে, কোক, পেপসি রাখা আর সেগুলো খেলে আমার বমি বমি লাগে। এখন আর উপরে যাবো না। সবাই অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যাস্থ আর আমি আমার রুমে গিয়ে চেন্জ করে নিয়ে মুখটা ধুয়ে আসি। আহহহহ এখন শান্তি হালকা হালকা লাগছে। আজকে সারাদিন অনেক ইন্ঞ্জয় করেছি। কিন্তু এটা ভেবে খারাপ লাগছে মিতু আপু আমাদের ছেড়ে চলে যাবে। কত স্মৃতি দুষ্টামি করেছি আমরা। অনেক স্মৃতি রেখে চলে যাবে আমাদের কাঁদিয়ে সে। কিন্তু প্যারা নাই যখন ইচ্ছে হবে গিয়ে দেখে আসবো। হঠাৎই মনে পরে যে ফেসবুকে পিক আপলোড দেয়নি তাড়াতাড়ি লগিং করে ফেসবুকে ঢুকি। আর সুন্দর সুন্দর দুইটা পিক পোস্ট করে কেপশন দিলাম,,, Awww Amar Ki CUTE APUR Holod soundha,, আর সাথে সাথে পোস্ট।

এখন একটু ঘুমাবো খুব ঘুম পাচ্ছে । সারাদিন কম খাটাখাটনি করিনি। নিচে কিচেনে গিয়ে এক কাপ কফি করে নিয়ে আসি। ধোঁয়া উড়ন্ত কফির মগটা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছি বেলকনিতে আর আমার দৃষ্টি আমার রুমে,,, দেখে মনে হয় না এটা কোনো মেয়ের রুম বর্তমানে ধোবা ঘাট মনে হচ্ছে জুয়েলারি আর কাপড়ের সমহার ,, যাকগে কফিটা গরম গরম শেষ করে ঘর গুছিয়ে নিলাম। যেই না লাইটটা ওফ করে ঘুমাতে যাবো তখনই আমার বাচ্চা মানে আমার ফোনটা কান্না করে উঠে। স্কিনে দেখলাম আননোন নাম্বার তাই রিসিভ করলাম না। আমার ফাউ পেঁচাল পারা সময় নাই তখনই আবার সেই একই নাম্বার থেকে কল এইবার ভাবলাম হয়তো আমার কোন বান্ধবী হবে,,,তাই

শঙ্খ পর্ব ২