শঙ্খ পর্ব ২ || bangla romantic love story

শঙ্খ পর্ব ২
Ayda Islam Konika

ফোনটা রিসিভ করার পর আমি বললাম
— হ্যালো কে? ঐপাশ থেকে কোনো রেসপন্স নেই,,, আমি আবারও বললাম
— কে বলছেন? হ্যালো!!!! কিন্তু কোনো রকম আওয়াজ নেই। মুহূর্তেই মেজাজটা খারাপ হয়ে যায়। এত রাতে ফোন করেছে কেন তামশা করতে? যত্তসব। ফোনটা কেটে দিলাম আমার ঘুমের বারোটা বাজালো। সকালে বড় চাচি এসে ঘুম থেকে উঠায় আমাকে
—- হাই তুলতে তুলতে উঠে বসি,,,, বড় চাচি বলে
— তাড়াতাড়ি নাশতা করেনে ফ্রেশ হয়ে আয়। আমি ব্রাশটা নিয়ে ছাঁদে চলেগেলাম। দেখতে কাজ কত দৌড়-আগালো। মিতু আপুর মা-বাবা নেই তাই আমাদের সাথেই থাকে,,,, বরাবরই তার সাথে সবার অনেক ভালো সম্পর্ক। সবাই তাকে নিজের মেয়ের মতোই ভাবে। আর তার যে বিয়েটা হচ্ছে সেটা হলে তার বরেদের বাঙলোতে অনেক সুন্দর আর বড় বাড়িটা। আমি ছাঁদ গিয়ে দেখি জোভান কিছু লোকদের বোকাঝোকা করছে। তার কথার মাধ্যমে বুঝতে পারলাম যে তার অনেক বড় ভুল করেছে আর ভুলটা হলো সে ডেকরেশনের জন্য গোলাপ ফুল আনতে বলে ছিল কিন্তু তার ভুল করে কম নিয়ে এসেছে। আমি তাদের কাছে গিয়ে বলি

—- সমস্যা কি ভুলতো হতেই পারে। জোভান আমাকে মাথা থেকে পা অব্দি ভালো করে দেখে হাত ধরে টেনে নিচে নামতে লাগলো। আরের আরে কি হচ্ছে টাকি এইসব,,, সে আমাকে সোজা আমার
রুমে নিয়ে আসে আর দরজাটা আটকে,, দরজার সাথে চেপে ধরে। আর বলে
—- উড়না কই তোমার? তুমি কি বাচ্চা? যে এভাবে ঘুরে বেরাবে? এমন করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে মনে হয় আমাকে খেয়ে ফেলবে আর চেপেও ধরেছে অনেক জোড়ে। তখনই দরজায় বড় মা আবার নক করে।

—- কিরে ঐশী মা তোর হলো? আমার মুখ দিয়ে কথা বেরুচ্ছে না আমি অনেক কষ্ট করে বলি।
—- তু,,,,তুমি যাও আমি আসছি। জোভান ঠিক আগের মতোই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বড় মা বলে
— তোর গলার আওয়াজ এমন কেন? তুই ঠিক আছিসতো কোনো সমস্যা হয়েছে? আমি বললাম
—- না তুমি যাও তো। বড় মা আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে বলে চলে যায়। জোভান আমাকে বলে
— তুমি চাইলেই বলতে পারতে তোমার বড় মাকে৷ বাঁকা হাসি দিয়ে। আমি বলি
—- দেখুন আমার ভালোলাগছে না ছাড়ুন আমাকে, আর আপনি ছেলে আমি মেয়ে দুজনকে একা একরুমে থকাটা মানুষ ভালো চেখে দেখবেন না। জোভান এবার আমার হাত ছেড়ে গাল চেপে ধরে বলে
— লোকে কি ভাববে যদি সেটা তুমি ভাবতে এভাবে বের হতে না। নেক্সট টাইম এমন কিছু হলে জানে মেরে ফেলবো।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

বলেই দরজা খুলে আসেপাশে দেখে চলে যায়। ব্যাপরটা আমার মটেও ভালো লাগেনি। কিন্তু দোষটা আমারও ছিল৷ মনটা নিমেষেই খারাপ হয়ে যায়। নিচে গিয়ে খেতে বসি ঠিক তখনই আমার পাশে বসে জোভান। যেটা আমার মটেও ভালো লাগেনি। কোনরকম এক গ্লাস জুস খেয়ে যেই না উঠতে যাবো। রাক্ষসটা আমার দিকে এভাবে তাকায় মনে হয় সে ব্রেকফাস্ট না বরংচ এখন আমাকে গিলে খাবে । কোনরকম একটা শুকনো ঢুক গিলে আবার খেতে বসলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ। দুপুর গড়িয়ে এলো তাই গোসল করাটাই বেটার হবে। ওয়াশরুমে গিয়ে দেখি পানি আসছে না। দিব না নিজের বোনকে এমন বাড়িতে বিয়ে এখন আমি কি করবো? তাই জামা কাপড় নিয়ে নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে পরি। সামনে যেতেই মিতু আপুর ননদের সাথে দেখা । আমাকে দেখে বলে

— ঐশী আপু!! এই নামটায় ডাকায় আমি রিদির দিকে তাকাই। রিদি বলে
— এভাবে ঘুরছ কেন? আমি বললাম
— আর বোলনা পানি আসছেনা । রিদি বলে
— আমার রুমে যাও। সোজা গিয়ে ঠিক তিন নাম্বার রুমটা। আমি ওকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে এলাম রিদি রুমে। কিন্তু ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ আসছে। ভূত নাকি না হয়তো ভুলে রিদি শাওয়ার ওফ করতে ভুলে গেছে মেয়েটাও না। রুমের দরজা বন্ধ করে। ওয়াশরুমে ঢুকে যাই। আর যা দেখে তা দেখে তার হাত থেকে জামা গুলো পরে যায় সে দেখে একটা দানব মাথা নিচু করে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে জোভান আর আলভি (বর) একসাথে ছিল একই রুমে তো আলভি শাওয়ার নিতে যায় জোভানের লেট হচ্ছিল আর তার সে রিদির রুমে চলে আসে। কাজ বেশি থাকায় আর অন্য চিন্তায় মগ্ন থাকায় সে রুমের দরজা লক করতে ভুলে যায়। আর তখনই ঐশী আসে। ঐশীর ভাব দেখে জোভান বুঝতে পারলো কি হতে যাচ্ছে। ঐশী যেই না চিৎকার দিতে যাবে জোভান বিদ্যুৎ এর গতিতে তাকে নিজের কাছে নিয়ে এসে মুখ চেপে ধরে। শাওয়ারের পানিতে দুজন ভিজে একাকার। জোভান ঐশীর মুখ চেপে ধরে রাখছে। আর ঐশী উমমমমম উমমমম করছে। জোভান ঐশীকে বলে

—- ইউ ইস্টুপিট এখানে কি কর? আর রুমের দরজাতো লক ছিল!!, ঐশী
—- উমমমমম উমমমম । জোভান বলে
—- হাত সরাতে পারি কিন্তু চিৎকার দিবে না? ঐশী মাথা দোলায়। জোভান ছাড়ার সাথে সাথে ঐশী দৌড় দিতে গেলে জোভান তাকে ধরে ফেলে আর এক ঝটকায় নিজের বুকের সাথে ঐশীর পিঠ লাগিয়ে চুলের ঘ্রাণ নিতে নিতে বলে
— কোথায় যাচ্ছো? ঐশী এবার রেগে গিয়ে বলে
— তো কি আপনার সাথে ভিজবো? একে তো রুমের দরজা বা ওয়াশরুমের দরজা দুইটার একটাও লাগাননি,,, তার উপর আমাকে ভিজিয়ে দিয়েছেন আর এভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন মনে হচ্ছে আপনার বিয়ে করা বউ আমি আমকে ছাড়ুন। জোভান বলে
— তোমাকে ধরে রাখার শক আমার নেই। তুমি এখানে কি কর ? ঐশী বলে
— কেমন বাসা আপনাদের যদি আমাদের বাংলোতে বিয়ে হতো হয়তো এতো ঝামেলা পোহাতে হতো না। পানি নেই, পানি আসছিলনা। জোভান ঐশীকে বলে

শঙ্খ পর্ব ১

— তুমি চেন্ঞ্জ করে নাও আমি বাইরে গিয়ে করে নিচ্ছে। বলেই চলে গেলো। ঐশীর আর কি করার জামা গুলো হাতে নিয়ে দেখে অনেকটাই ভিজে গেছে। কিন্তু এখন তার এগুলো পরেই বের হতে হবে। ঐশী চেন্ঞ্জ করে এসে দেখে জোভান নেই হয়তো চলে গেছে ঐশী নিজের রুমে গিয়ে ড্রেস পাল্টে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয়। তারপর নিজের মতো নিজের মুখকে রঙ ইয়ে মানে সরি মেকাপ করতে লাগে ? ঐশী আজকে রেড কালারের লেহেঙ্গা সাথে রেড ইস্টোন দিয়ে তৈরি। হাইলাই করা চুলগুলো এক সাইডে সিথী করে বিগ কার্ল করে। ইস্মুকি আই ডার্ক লিপস্টিক সব মিলিয়ে ওয়াও এবার জুয়েলারির পালা গলায় ডায়মন্ডের চুকার আর একটা কানে দুল। হাতে চুড়ি। এক কথায় যাকে বলে ওয়াও। ঐশী আয়নায় তাকিয়ে দেখে আর বলে

—- ইশশশশ করত সেজে ফেলেছি আমাকেই বউ বউ লাগছে। সবাই না কনফিউজড হয়ে যায়। কে বউ আর কে বউয়ের বন যাই হোক। কয়েকটা সেল্ফি তো বান্তা হে। বলেই গেচ গেচ করে কয়েকটা পিক তুলে নিল। সবাই বাগানে ফোটসোট করাচ্ছে আমি কেন করাবো না আমিও করাব। যেই ভাবা সেই কাজ দিলাম এক দৌড় হঠাৎ করে সামনে চলে আসে একটা লোক হাতে তার ছিল গোলাপের পাপড়ি। আমার ধাক্কা লাগার ফলে বেচারার হাত থেকে গোলাপ ফুলের ডালাটা থেকে ফুল গুলো পরে যায় আমি পরে যেতে নিলে কেউ আমাকে হিরো ইস্টাইলে এসে ধরে ফেলে

চলবে?

বিদ্রঃ নামটা শঙ্খ দেওয়াতে অনেকের প্রশ্ন এটা হিন্দুদের? আচ্ছা শঙ্খতো একটা সামদ্রিক প্রানী এখানে হিন্দু মুসলিম কেন আসছে? আর অনেক হিন্দু আপুরা আমার গল্প পরে কই তারা তো কিছু বললে না তাহলে আপনারা কেন বলছেন। আর আমি যেহেতু মুসলিম তাই মুসলিম ধর্মেরই হবে গল্পটা। আশা করি কেউ আর গল্পের নাম নিয়ে ট্রল করবে না।

শঙ্খ শেষ পর্ব