ভুলতে পারিনি তাকে পর্ব ১৯ || নীল ক্যাফের ডায়েরী

ভুলতে পারিনি তাকে পর্ব ১৯
Mahfuza Akter

—-এতোক্ষণে ফোন রিসিভ করার সময় হলো, স্টুপিড? সেই কখন থেকে কল দিচ্ছি!
তন্ময়ের ধমক খেয়ে স্নেহার মুখটা পুরোই চুপসে গেল। অনেকটা ভীতু গলায় বললো,
—আসলো ফোনটা সাইলেন্ট মুডে ছিল!
—ঘরের ভেতর কেউ ফোন সাইলেন্ট করে রাখে, স্টুপিড?
স্নেহা বিরক্ত হয়ে নাক-মুখ কুঁচকালো। এই লোকটা কথায় কথায় এতো স্টুপিড, স্টুপিড বলে কেন? নিজের কোন বুদ্ধির ঢেঁকি? মনে মনে তন্ময়কে ইচ্ছে মতো গালাগালি করে জিজ্ঞেস করল,

—আপনি এতোবার কল দিচ্ছিলেন কেন? কোনো দরকার আছে নাকি ইম্পর্ট্যান্ট কিছু বলবেন?
তন্ময় অনেকটা আবেগী সুরে বললো,
—প্রায় একঘন্টা ধরে তোমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। আজ রাজশাহী থেকে আবার ঢাকায় এসেছি শুধু মাত্র তোমায় সারপ্রাইজটা দিবো বলে।
স্নেহা আহ্লাদী স্বরে বললো,
—সারপ্রাইজ দিবেন? সত্যিইইই!!!
তন্ময় স্নেহার বাচ্চামো দেখে নিঃশব্দে হাসলো। মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে বললো,
—হুম, সত্যি। এখন কি বাইরে আসবে নাকি আমি চলে যাবো?
—এই না না। আমি এক্ষুনি আসছি।
বলেই ঘর থেকে এক প্রকার ছুটে বেরিয়ে গেল।
তন্ময় গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

—স্নেহময়ী, ইউ ক্যান নেভার ইম্যাজিন হাও মাচ ইউ মিন টু মি। আজ তোমার জন্য সবচেয়ে সুখকর মুহুর্ত ওয়েট করে আছে। আজ তোমায় আমি আমার ভেতরে জমে থাকা সব অনুভূতি গুলো বলবো, তোমাকেও বলতে হবে।
ভেবেই ঠোঁট প্রসারিত করে হেসে দিলো তন্ময়।
শ্রুতি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখলো, স্নেহা অনেকটা দৌড়ে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে সিঁড়ির দিকে যাচ্ছে। চোখে মুখে অন্যরকম উত্তেজনার ভাব ও খুশির ঝিলিক দেখে খানিকটা অবাক হলো শ্রুতি। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই স্নেহা বললো,
—জুনিয়র ভাবি, নিচে তন্ময় স্যার এসেছে।
শ্রুতি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে একটু হাসলো, কিন্তু কিছু বললো না। স্নেহা ছুটে সিঁড়ির দিকে চলে গেল, আর শ্রুতি তার পেছন দিয়ে ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছে।

স্নেহা পা চালিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগলো। মাঝামাঝি যেতেই সিঁড়ির ওপর পড়ে থাকা তেলে স্লিপ কেটে একদম চিৎ হয়ে পড়ে যায় ও মাথার পেছন দিকে সিঁড়ির রেলিং-এ বেশ জোরেশোরে বারি লাগে। চিৎকার দেওয়ার আগেই স্নেহা টাল সামলাতে না পেরে তেলের ওপর দিয়ে পিছলে সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে নিচের দিকে পড়তে থাকে। সিঁড়ির প্রতিটা স্টেপের ধারালো প্রান্তগুলো স্নেহার হাতে, পায়ে, পিঠে প্রচন্ড রকমের আঘাত হানছিলো। সিঁড়ির শেষপ্রান্তে গিয়ে পড়তেই স্নেহা ‘ভাইয়া’ বলে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো।
স্নেহার চিৎকার শুনে শ্রুতি ছুটে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল। আর আভাসও দৌড়ে নিজের ঘর থেকে সিঁড়ির কাছে চলে আসলো। সিঁড়ি ও ফ্লোর জুড়ে রক্ত ছড়িয়ে পড়েছে। স্নেহার নাক, কান, মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত স্রোত বয়ে চলেছে, ব্যথায় ছটফট করছে স্নেহা। আভাস একদম স্তব্ধ হয়ে গেছে বোনের এই অবস্থা দেখে। এরই মধ্যে তানিয়া আহসান সেখানে উপস্থিত হন। শ্রুতি সিঁড়ি দিয়ে নামতে নিলেই স্নেহা তার রক্তাক্ত হাত দিয়ে বাঁধা দিয়ে অতি কষ্টে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,

—নে,নে,নেমো না। স,স,সিঁড়িতে ত,ত,ত,তেল জাতীয় ক,ক,কিছু আছে।
আভাস কোনোকিছু কানে না নিয়ে দিশেহারা হয়ে স্নেহার দিকে পা বাড়ালেই শ্রুতি হাত ধরে বাঁধা দিলো। তানিয়া আহসান মুহুর্তের মধ্যে একটা লম্বা কার্পেট এনে সিড়িতে বিছিয়ে দিতেই সবাই হন্তদন্ত হয়ে স্নেহার কাছে গেল।
নিচ থেকে হট্টগোলের শব্দ শুনে আরিহা খান ও নাতাশার মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো।
—কাজ হয়ে গেছে। চল এবার এন্ট্রি নেওয়া যাক।
নাতাশা হাসিমুখে সম্মতি জানিয়ে আরিহা খানের সাথে বের হয়ে এলো। বারান্দার রেলিং ধরে নিচে তাকাতেই দেখলো শ্রুতি, আভাস আর তানিয়া আহসান বসে আছে এবং আভাসের কোলে স্নেহার রক্তাক্ত দেহ। আরিহা খান নিজের মেয়ের এই অবস্থা দেখে চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে গেল। (এবার বুঝ কেমন লাগে?)
আভাস স্নেহার মাথা নিজের কোলে রেখে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

—একটু দেখে শুনে চলাফেরা করতে পারিস না? আমি তোকে এখনি হসপিটালে নিয়ে যাবো।
বলেই উঠতে যাবে এমনসময় স্নেহা আভাসের হাত ধরে আটকে দিলো। আভাস অবাক চোখে স্নেহার দিকে তাকাতেই স্নেহা জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে ফেলতে বললো,
—ভাইয়া, আমাকে কি তুমি মিস করবে? আমি কীভাবে তোমাকে ছাড়া থাকবো? আমার একা থাকতে অনেক ভয় করে, ভাইয়া।
আভাস স্তব্ধ হয়ে স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে। শ্রুতি ক্রন্দনরত অবস্থায় স্নেহাকে ধমক দিয়ে বললো,
—কী যা তা বলছো তুমি, হে? আর আপনি, আপনি এখনো বসে আছেন কেন? তাড়াতাড়ি আপুকে নিয়ে হাসপাতালে চলুন।
তানিয়া আহসান চোখের পানি মুছে শ্রুতির সাথে একমত হয়ে বললো,

—হ্যাঁ, আভাস। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন ওকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত।
আভাস আর কালবিলম্ব না করে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো।
এদিকে তন্ময় অনেকক্ষণ যাবৎ স্নেহার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু স্নেহার কোনো হদিশ নেই দেখে আরো কয়েকবার কল দিলো। কল রিসিভ করছে না দেখে তন্ময় রেগে বাড়ির ভেতরে পা বাড়ালো। মেইনডোর দিয়ে ঢুকতেই চোখের সামনে আভাসের কোলে স্নেহার রক্তান্ত অবস্থা দেখে থমকে গেল তন্ময়।

In hospital…………
তন্ময় অপারেশন থিয়েটারের সামনে বসে নিজের চুল নিজেই টানছে। আজ তার জন্যই স্নেহার এই অবস্থা। সে যদি স্নেহাকে না ডাকতো, তাহলে স্নেহার সাথে এমনটা হতো না। আভাস স্নেহাকে রক্ত দিতে গেছে। আরিহা খানকেও এডমিট করা হয়েছে, তার জ্ঞান এখনো ফেরেনি। তানিয়া আহসান ও আরাফ আহসান বসে বসে নীরবে চোখের পানি ফেলছেন আর নাতাশা মনে মনে আফসোস করছে। কী থেকে কী হয়ে গেল?
শ্রুতি তন্ময়ের পাশে বসে ওর কাধে হাত দিয়ে বললো,
—ভাইয়া, তুমি যদি এমন বিধ্বস্ত হয়ে বসে থাকো তাহলে কীভাবে চলবে বলো তো? স্নেহা আপু ঠিকই সুস্থ হয়ে উঠবে, দেখো!
তন্ময় ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে শ্রুতির কাঁধে মাথা রেখে বললো,

—আমি যে নিজেকে শান্ত রাখতে পারছি না, বোন! আমি কী নিয়ে বাঁচবো যদি স্নেহময়ীর কিছু হয়ে যায়? ওকে বল না আমার কাছে ফিরে আসতে! আই সয়্যার, আর কখনো ওকে বকবো না। সবসময় শুধু ভালোবাসবো। ওকে ছাড়া যে আমার চলবেই না! আই ব্যাডলি নিড হার।
শ্রুতির চোখ দুটোও জলে ভরে উঠছে। আজ সারাদিন স্নেহার সাথে কতোই না আড্ডা দিলো! স্নেহা বেশ ভাব নিয়ে বলেছিলো,
—জানো শ্রুতি, আমি না ভাইয়ার থেকে তিন বছরের ছোট! আবার তুমি আমার থেকে তিন বছরের ছোট। সো তুমি আমার জুনিয়র ভাবি। তোমাকে কিন্তু আমি জুনিয়র ভাবি বলেই ডাকবো!
শ্রুতি ভাবনার মাঝেই হেসে দিলো। হঠাৎ আভাস বিমর্ষ চেহারায় তার পাশে বসতেই ভাবনার রাজ্য থেকে বেরিয়ে এলো শ্রুতি।

কিছুক্ষণ পর, ওটি থেকে ডাক্তার বের হয়ে আসতেই আভাস তার দিকে ছুটে গিয়ে বললো,
—ডক্টর, কেমন আছে আমার বোন? ও ঠিক আছে তো?
ডক্টর নিজের মুখ থেকে সার্জিক্যাল মাস্কটা সরিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
—মি. খান, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আপনার বোনের মাথার পেছন দিকে আঘাত লাগায় অপারেশনের তাগিদে মাথার চুল গুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে। ওনার সারা শরীরের হাড়ে ইন্টার্নালি অনেক ইনজিওরি হয়েছে। তাই আমরা এখনি কিছু বলতে পারছি না, কারণ ওনার পালস রেট অনেক স্লো আর আমরা তার থেকে কোনো রেসপন্স পাচ্ছি না। যদি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফেরে, তাহলে আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
আভাস আর তন্ময় একদম পাথর গেছে একথা শুনে।
ডক্টর আবার বলে উঠলো,

—আরেকটা কথা বলার ছিল। উনি যদি বেঁচেও যান, তবে ওনার দেহের বাঁ পাশ প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। এক্সকিউজ মি।
বলেই ডক্টর চলে গেলেন। শ্রুতি কাউকে সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে নিজেই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কাঁদতে লাগলো। আভাস আর তন্ময় চোখাচোখি হতেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে।
২৪ ঘন্টা হতে আর চার ঘন্টা বাকি। স্নেহাকে সিসিইউ তে রাখা হয়েছে। এতোক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও স্নেহার জ্ঞান ফেরেনি বলে আভাস স্নেহার সাথে দেখা করতে চাইলে ডাক্তাররা তার ঘোর বিরোধিতা করলো। তাদের মতে,
—আমরা আইসিইউ তেই কাউকে ঢুকতে দেই না, সেখানে সিসিইউ তে তো প্রশ্নই ওঠে না।
আভাস রাগান্বিত স্বরে বললো,

—তাহলে কি আর চার ঘন্টা পর দেখা করতে দেবেন? আমরা কেউ যাবো না, জাস্ট একজন যাবে, তাতেও আপনাদের সমস্যা?
অনেক তর্কাতর্কি ও জোরাজুরিতে ডক্টর রাজি হলেন। আভাস চোখের ইশারায় তন্ময়কে ভেতরে যেতে বললো। তন্ময় অবাক চোখে আভাসের দিকে তাকাতেই আভাস ওর হাত ধরে সিসিইউ এর ভেতরে চলে গেল।
স্নেহার দুই হাত, দুই পা আর মাথায় ব্যান্ডেজ করা। এক হাতে রক্তের ও আরেক হাতে স্যালাইনের নল লাগানো। মুখে অক্সিজেন মাস্ক। আভাস স্নেহাকে একপলক দেখে আর সহ্য করতে পারলো না, চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেল।
তন্ময় স্নেহার পাশে বসে ওর মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে তার।

—স্নেহময়ী! আমি কাঁদছি, স্নেহময়ী। আর ইউ হেয়ারিং মি? এভাবে কেন শুয়ে আছো তুমি? আমার জানটাই নিয়ে নিতে, আমি একবারও আপত্তি করতাম না। আমার সব কিছু অন্ধকার লাগছে, স্নেহময়ী। তোমাকে আমি আর কখনো স্টুপিড বলবো না! কখনো কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবো না! কখনো রাগারাগি করবো না, বকা দিবো না। তুমি চাইলে আমায় সারারাত ফোন দিয়ে বিরক্ত করো, আমি সব সহ্য করতে প্রস্তুত! জাস্ট এভাবে একা ফেলে চলে যেও না। সহ্য হবে না আমার। আমার মনের কথা গুলো কি তোমায় বলা হবে না, স্নেহময়ী? আমার স্বপ্ন গুলো কি পূরণ হবে না? তুমি কেন চুপ করে আছো, স্নেহময়ী? একবার কথা বলো, প্লিজ। আচ্ছা কথা বলতে হবে না, জাস্ট চোখ খুলে তাকাও।
তন্ময় মাথা নিচু করে বসে আছে। হেঁচকি তুলে কাঁদছে সে। বেশ কিছুক্ষণ পর, একজন নার্স এসে তাড়া দিয়ে বললো, বাইরে যেতে। তন্ময় স্নেহার দিকে একবার করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বের হতে যাবে এমন সময় দেখে স্নেহার হাতের আঙুলগুলো অনবরত নড়ছে। স্নেহার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, বন্ধ চোখের কোণা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। স্নেহা জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
তন্ময় নার্সকে চিৎকার দিয়ে বললো,

—স্নেহময়ী রেসপন্স করছে। ডক্টরকে ডাকুন, ফাস্ট।
নার্স হালকা কেঁপে উঠে ডাক্তারকে ডেকে আনলো। ডাক্তার স্নেহাকে চেক করবেন বলে তন্ময়কে বাইরে যেতে বললেন। তন্ময় একবার স্নেহার দিকে তাকিয়ে শার্টের হাতায় চোখ ডলতে ডলতে বেরিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর,
ডক্টর এসে বললেন,
—থ্যাংক গড, আপনাদের পেশেন্ট ডেঞ্জার জোন থেকে বেরিয়ে এসেছে। ওনাকে আইসিইউ তে শিফট করা হয়েছে। তবে ওনার সারা শরীরের পেইনের কারণে ওনি ভেতরে ভেতরে কাতরাচ্ছে। আমি ব্যথার ও ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি। তবে একটা ব্যাড নিউজ আছে।

ভুলতে পারিনি তাকে পর্ব ১৮

সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই হুট করে কোথা থেকে যেন আরিহা খান ছুটে এসে পাগলের মতো বলতে লাগলেন,
—কী খারাপ খবর? কীসব উল্টাপাল্টা কথা বলছেন আপনি? আমার মেয়ের কিছু হলে……….
আভাস বিরক্ত হয়ে বললো,
—আপনার পাগলামি বন্ধ করুন। যত্তসব! ডক্টর আপনি বলুন, প্লিজ। কী ব্যাড নিউজ? ও ঠিক হয়ে যাবে তো?
ডক্টর বললেন,
—আপনার বোনের সারা শরীরের বাঁ পাশ অকেজো হয়ে গেছে। ওনি আর কখনো হাঁটাচলা করতে পারবে না।
আরিহা খান এটা শোনার সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেল। নাতাশা আর কয়েকজন নার্স মিলে ওনাকে কেবিনে নিয়ে যায়। ডক্টর সবার বিমর্ষ চেহারার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে বললেন,

—তবে একটা উপায় আছে। আপনারা চাইলে ওনাকে সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। লং-টার্ম ট্রিটমেন্ট করালে ওনার হাড়গুলো রিপেয়ার করা সম্ভব। তবে এতে মিনিমাম তিনবছর সময় লাগবে। বুঝতেই পারছেন, অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু এতে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
তন্ময় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—ও বেঁচে আছে এটাই আমার কাছে অনেক। আমি ওর ট্রিটমেন্টও করাবো। অবশেষে আমার স্নেহময়ী আমার কাছে ফিরে এসেছে, আমি এতেই খুশি।

ভুলতে পারিনি তাকে পর্ব ২০