You are mine part 3 || valobashar golpo 2021

You are mine part 3
Poly Anan

“ওই তোরা শহরের অলিতে গলিতে একটা জলজ্যান্ত মানুষকে খুজে দিতে পারিস না। তোদের আমি কেন কাজে রাখছি…!
ঈশান চিৎকার দিয়ে কথাটি বলেই একটি চেয়ার তুলে গাডদের সামনে আছাড় দেয়।ভয়ে সবার আত্না কেঁপে উঠে। গত তিনদিন থেকে পাগলের মতো হন্ন হয়ে খুজে যাচ্ছে ঈশাকে। কিন্তু গাডদের মাঝে কেউ এখনো ঈশার সন্ধান দিতে পারেনি তাই ঈশানের মেজাজ পুরোপুরি বিগড়ে গেছে।তার মাথার আঘাত টি অনেক গুরুতর ভাবেই লেগেছে।তাই তাকে পুরো পুরি সাত দিনের বেড রেস্টে রাখা হয়েছে।সব কিছু উপেক্ষা করে সে ঈশাকে নিজে খুজে বের করার সিধান্ত নেয়। কিন্তু তার কাছের বন্ধু রাসেল তাকে আশ্বাস দেয় গাডরা ঈশাকে খুজে এনে দেবে।কিন্তু একে একে কেটে যায় তিনদিন। এখনো গাডরা ঈশার কোন খবর এনে দিতে পারেনি। তাই রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পরে ঈশান।
” রাসেল ঈশার বাড়িতে কে কে আছে এখন…(গম্ভীর কন্ঠে)

“তার বাড়িতে কয়েকজন কেয়ারটেকার আর সার্ভেন্ট ছাড়া আর কেউ নেই।আমরা টাকা খাইয়ে তাদের থেকে জানতে চেয়েছি ঈশা কোথায় কিন্তু সবার একই কথা, তার বাবা দেশের বাইরে গেলে ঈশা বাড়িতে তেমন থাকে না। কখনো বন্ধুদের বা রিলেটিভদের বাড়িতেই সময় কাটায় সে।
“ওর বন্ধুদের থেকে খবর নিয়েছিস? আর রিলেটিভদের বাড়ি কোন এলাকায়(কপাল কুচকে)
” নিয়েছি ঈশান।আমরা তাহা আর নিশিকে ভয় পর্যন্ত দেখিয়েছি কিন্তু তাদের একটাই কথা ঈশার ফোন বেজে চলছে কিন্তু সে রিসিভ করছেনা।ঈশার সাথে গত তিনদিন থেকে কারো সাথে যোগাযোগ হচ্ছে না।আর তেমন কোন রিলেটিভ নেই ঈশার। তবে একজন ফুফু আছে তার।ঈশার বেশ কেয়ার করে ঈশাও তাদের খুব ভালোবাসে।তাদের বাড়ি কোথায় তা কেউ যানে না।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

আমরা লিমনের পেছনে লোক লাগিয়েছি তেমন কোন বিষয় আমাদের চোখে পড়েনি।
“ওয়েট ওয়েট…আমাকে বাংলো থেকে বের করার পর তোরা কেউ কি আর বাংলোতে গিয়েছিস?
” না.আমরা তো তোকেই নিয়েই ব্যস্ত।সেদিকে যাওয়ার সময় পাই নি।
“ঈশার ফোনটা বোধহয় বাংলোতেই আছে!
রাসেল গাড়ি বের কর আমি বের হবো(রাসেল কে উদ্দেশ্য করে)
” কিন্তু তুই এই শরীর নিয়ে এখ…..
রাসেলকে পুরো কথা বলয়ে না দিয়ে তার দিকে চোখ গরম করে তাকায় ঈশান……রাসেল ভয়ে বলে.
“আ..আচ্ছা।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ জোর কদমে তৈরি হচ্ছে ঈশান এমন সময় ঘরে ডুকে তার মা মাহমুদা। তিনি বেশ কয়েকবার ঈশানের কাছ থেকে এবং রাসেল সহ অনন্য গাডদের কাছে জানতে চেয়েছে ঈশানের মাথা ফাটালো কে। কিন্তু সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে ঈশান কেউ যেন সত্যটা না বলে কাউকে তার জন্য সব গাডকে আগে থেকেই হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।সবাই যানে ঈশান বাইক এক্সিডেন্টে মাথা ফাটিয়েছে। কিন্তু কেউ যানেনা ঈশানের মাথা ফাটিয়েছে ঈশা।

” কিরে ঈশান তুই এই শরীর নিয়ে বাইরে কেন যাচ্ছিস?
“কাজ আছে মা। তাই বের হচ্ছি।
” তোর আর কি কাজ আমি যানিনা ভাবছিস। সারাদিন এইসব গুন্ডামি করে বেড়াস রাস্তার ছেলের মতো সাংগো পাংগো নিয়ে ঘুরিস।
“আবার শুরু করেছ তুমি মা।
” কি শুরু করেছি আমি। ভালো কথাই বলছি। তোর বাবার অফিসে তোর বাবার সাথে কাজে হাত মেলা কিছুদিন পর বিয়ে করে সংসার কর।আমাকে ও বউমা এনে দে বুড়ি হয়ে যাচ্ছি আর কত দেখবো এই সংসার।
” তোমার বউমাকে খুজতে যাচ্ছি মা(শাটের কলার ঠিক করতে করতে)
“এএএ কি বলছিস(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
” হ্যা ঠিক বলছি মা..(বাকা হেসে?)আমি যাই এখন লেট হয়ে যাচ্ছে।
ঈশান হাতে ঘড়ির বেল্ট লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বেরিয়ে পরে।

“আল্লাহ আমার কি হয়েছে! আমি ইদানীং লিমনকে এতো মিস করছি কেন? প্রেমে টেমে পড়ে যাই নি তো?।ইসস কি যে বলি। সে ও আমাকে ভালোবাসে অনেক বার বুঝিয়েছে কিন্তু আমি তো পাত্তা দিলাম না। তবে এবার কি রাজি হয়ে যাবো…..!
মূহুর্তেই ঈশার ঈশানের কথা মনে পড়ে যায়,
” ও আল্লাহ আমি এগুলো কি ভাবছি ওই পাগলটা যদি যানে আমি লিমনের সাথে লাইন মারছি তবে তো লিমনের সাথে উলটা পালটা কিছু করে বসবে।(মাথায় হাত দিয়ে)
ঈশা তার রুমের মধ্যে পায়চারি করতে থাকে। কি করবে সে একদিনে লিমনের জন্য ফিলিংস আর অন্যদিকে ঈশানের ভয়।সব চিন্তা তার মাথায় জট হয়ে লেগে গেছে।
“ঈশু মামনি কি ভাবছিস তুই?
পেছন থেকে কারো কথায় চমকে তাকায় সে।
” ওহ ফুফু তুমি!না কিছু ভাবছিনা।
“তাহলে মন মরা হয়ে বসে আছিস কেন?
” কই ফুফু আমি তো ঠিক আছি।
ঈশার ফুফু আতিয়া এবং ফুফা আবসার সাথে তাদের একমাত্র ছেলে হাসিনকে নিয়ে তাদের পরিবার।বর্তমানে ঈশা তাদের বাসায় গা ঢাকা দিতেছে।
তাদের কথার মাঝে রুমে তার ফুফাতো ভাই হাসিন প্রবেশ করে,
“কিরে ঈশু তোর ব্যাপার টা কি?(ভ্রু কুচকে)
” কোন ব্যাপার ভাইয়া(ভ্রু কুচকে)
“আগে দেখতাম তুই ফোন ছাড়া এক মূহুর্তেও চলতি না। সারাদিন ফোন গেলাতে ব্যস্ত থাকতি কিন্তু আজ তিনদিন তোর কাছে তোর ফোন নেই আবার আমার ফোনটাও নিচ্ছিস না ঘটনা কি?(সন্দেহ দৃষ্টিতে)

” আরে দূর ভাইয়া কোন ঘটনা না।আমার এই একা ঘরে আর ভাল্লাগছেনা চলোনা ভাইয়া ছাদে যাই!(কথা ঘুরিয়ে)
তাদের কথার মাঝে সুর মেলালেন আতিয়া,
“যা মেয়েটাকে নিয়ে ঘুরে আয় আসার পর থেকে একা বাসায় বসে আছে.
“চল ঈশা তোর সাথে এইবার ফুসকা গেলা হলোনা রেডি হয়ে নে ফুসকা গিলতে যাবো।(হাসতে হাসতে)
” সত্যি ভাইয়া(উত্তেজিত হয়ে)
“তোর হাসিন ভাইয়া কখনো মিথ্যা বলেছে চল…
” ওক্কে ভাইয়া আমি যা……
কথাটা শেষ করার আগেই চুপসে যায় ঈশা।তার মনে পড়ে যায় ঈশানে দেওয়া ফুসকা থেরাপির কথা। একসাথে ঠেসে মুখে ঝাল ফুসকা ডুকিয়ে দেওয়ার কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে তার।ফুসকা খাওয়া যেন এই জীবনের জন্য হারাম হয়ে গেসে।
“ভাইয়া আমি যাবো না!(ভয়ে চুপসে)
” যাবিনা মানে।ফুসকার সাথে তুই আপস করছিস। আজ এই দিন ও আমাদের দেখা লাগলো(অবাক হয়ে)

“তুমি যাও আমি যাবো ফুসকা খেতে আমার এখন ইচ্ছে করছেনা!
” তুই যাবি মানে যাবি। না হলে চুল টেনে নিয়ে যাবো বদমাইশ মেয়ে যা রেডি হয়ে আয়(ধমক দিয়ে)
“যাচ্ছি যাচ্ছি?(মুখ ভেংছে)
……
বাংলো থেকে ঈশার একটি পায়েল এবং মোবাইল ফোন খুজে পায় ঈশান আর রাসেল।তাদের কাজ শেষ হলে ঈশান ড্রাইভিং সিটে বসে পরে আর রাসেল তার পাশে বসে।
” রাসেল পাগলিটার ফোনের লক খোল।
“আমি যানবো কিভাবে তার লক কি? আর এখানে পিন লক দেওয়া(ভ্যাবাচেকা খেয়ে)
” আমি বলছি খোল…… 25256….. কি খুলেছে?(গাড়ি স্টাট দিয়ে)
রাসেল ঈশানের বলা পিন গুলো দিয়ে ওকে করে দেয় তখনি ঈশার মোবাইল আনলক হয়ে যায়।
“তুই যানলি কি করে ওর লক কি??আর এতো সহজ লক কেউ দেয়(অবাক হয়ে)
“শেষ যখন দেখা করেছিলাম আমি ফোনে তোর সাথে কথা বলছিলাম. সে ভেবেছে আমি হয়তো কথা বলাতেই ব্যস্ত কিন্তু আমার চোখ ছিল তার ফোনের উপর আমার কক্সবাজার যাওয়ার কথাটা তখন লক খুলে সে নিশিকে মেসেজে বলে।ও ভেবেছে আমি ওকে হয়তো খেয়াল করিনি আসলে তকে যখন সামনে পাই তখন আমার চোখ অন্যদিকে যায় না শুধু তার মাঝেই আবব্ধ থাকে(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)

“Wow what a love!(মুচকি হেসে)
” আচ্ছা এবার চেক কর।!
রাসেল খেয়াল করে মেসেজবক্সে প্রায় ৭৭+ মেসেজ যেগুলো শুধুমাত্র লিমন দিয়েছে।
“দেখ লিমন ওকে না পেয়ে ৭৭+ মেসেজ দিয়েছে মাই গড।
” মেসেজ গুলা পড়…।
রাসেল গলা ঝেরে লিমনের দেওয়া মেসেজ গুলো পড়তে শুরু করে,
~কিরে কই তুই।,/~দেখ ঈশু তোর খোজ খবর পাচ্ছিনা কেন………./ঈশু ওই পাগলা কুত্তাটা তোকে কিছু করেছে আমাকে যাস্ট একবার বল ওই কুত্তাটার শাস্তি আমার ভাইয়া দিবে….
এইটুকু পড়ে লিমন একটি ঢোক গিলে ঈশানের দিকে তাকায়।
“তোকে পাগলা কুত্তা বলেছে(অবাক হয়ে)
” আর কি কি বলেছে পড়তে থাক…..
এইরকম ঈশানকে গালি দেওয়া সহ বেশ কয়েকটি মেসেজ পড়ে। কিন্তু একটা মেসেজ পড়তে গিয়ে থমকে যায় রাসেল
~আমি যানি ঈশা তোর মনে আমার জন্য ফিলিংস আছে।তাই এইসব উটকো ঝামেলা বাদ দিয়ে তুই আমার কাছে চলে আয়। আমরা কোট ম্যারেজ করে নেবো।দেখবি তোর বিয়ে হয়ে গেলে ওই পাগলটা তোকে ছেড়ে দিবে।তুই শুধু অনুমতি দে সব ব্যবস্থা আমার ভাইয়া করে দেবে।
রাসেল মেসেজটি পড়ে ঈশানের দিকে তাকায়।রাগে ঈশানের ফর্সা মুখ লাল হয়ে গেছে। ঈশান বাকা হাসি দিয়ে বলে,

You are mine part 2

“বিয়ে করবে তাইনা, হা বিয়ে!যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ তাদের কি হাল করি সেটা শুধু দেখ।(দাতে দাত চেপে)রাসেল লিমনের ভাই কে খোজ লাগা।কি এমন ভাই কার পাওয়ারে সে এতো সাহস দেখাচ্ছে যে ঈশান শাহরিয়ারের উপর টক্কর দেয়।আর ঈশুর ফোন আমার কাছে দে।
” ওকে…
কথাটি বলে রাসেল বাইরের জানালা দিয়ে তাকায় আর ঈশানের উদ্দেশ্য জোরে চিল্লিয়ে বলে,
“Ishan, stop driving early!
ঈশান সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করে। আর রাসেলের দৃষ্টি অনুসরন করে বাইরের দিকে তাকায়।
মূহুর্তেই ঈশানের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। আশে পাশের পরিবেশটা একবার ভালো করে পরখ করে গাড়ি থেকে নেমে পরে। সাথে রাসেলো।
..
” কিরে ঈশু কয় প্লেট ফুসকা খাবি?
হাসিন হাসতে হাসতে প্রশ্ন করে ঈশাকে।
“আমার জীবনে ফুসকা একটা অভিশাপরে ভাই কি আর কমু তোরে(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে -মনে মনে)
” কিরে কথা বলছিস না কেন?
“না বেশি খাবো না তাড়াতাড়ি ১প্লেট নিয়ে খেয়ে বাড়ি যেতে হবে জলদি করো।
ঈশা বার বার ওরনা দিয়ে তার মুখ ঢেকে নিচ্ছে কেননা সে যানে ঈশান যে করেই হোক তাকে খুজে বের করবে।

“বাইদা ওয়ে ঈশু তুই এইভাবে গরমের মধ্যে ওরনা প্যাচিয়ে আছিস কেন?ঘেমে গেছে তোর মুখ।
“ক..ক.. কই গরম আমার গরম লাগছেনা। রোদের তাপে স্কিনের প্রবলেম হবে ত..তাই মুখ ঢাকছি!(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
” এই তোর কি হয়েছে?পাগল হয়েছিস নাকি!একদিকে তোর এত গরমেও গরম লাগছেনা আবার অন্যদিকে বলছিস রোদ লাগছে তোর মুখে, এদিকে রোদ কোথায় পেলি এদিক টাতো সম্পূর্ণ ছায়া।বিকেলের মিষ্টি ছায়া আর তুই রোদ খুজে নিচ্ছিস। পাগল হলি নাকি?
“ওহ রোদ নেই আমি তো ভুলেই গেছি!
তার কথার মাঝে ফুসকা প্লেট নিয়ে আসে হাসিন।
” নে খা…

“ওয়াও! দারুন দেখতে হয়েছে খেতেও নিশ্চই ভালো হবে আমার তো এখনি জিবে জল চলে এলো?।
ঈশা ফুসকা তুলে মুখে দিতে গেলেই পেছন থেকে এক পরচিত কন্ঠ তার কানে ভেসে আসে।
” ওওঅঅ মামা ফুসকা নাকি সেই টেস্ট হয়েছে তাহলে আমাকেও একপ্লেট দাও!
ঈশা আর হাসিন দুজনে পেছনে ঘুরে তাকালে
একজনের মুখে ফুটে উঠে এক চিলতে হাসি আর আরেক জন যেন আকাশ থেকে পড়লো..……..

You are mine part 4