শিমুল ফুল পর্ব ৪৮

শিমুল ফুল পর্ব ৪৮
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

পুষ্পর চোখ ছলছল করে উঠে।এটা কি তার শিমুল?শিমুলের থেকে এমন কিছু তো আশা করার কথা ছিলো না।তাহলে কি তাদের ভালোবাসায় ঘাটতি আছে?এটা তো তাদের প্রথম বাচ্চা,প্রথম বাচ্চাকেই খু/ন করতে বলছে?বছরখানেক আগেও তো বলেছিলো আল্লাহ দিলে শিমুল রাজি কিন্তু এখন কি বলছে এসব?পুষ্পর মাথা ঘুরে উঠে।চোখের কোন বেয়ে গড়িয়ে পড়ে বিন্দু বিন্দু পানি।

তার পেটে কেউ আছে যাকে কিনা এখনো চোখের দেখা দেখেনি ছুঁয়েও দেখা হয়নি তারপরেও না দেখা অনাগত বাচ্চাটার জন্যই পুষ্পর প্রচুর মায়া।শিমুলের বলা কথা শুনে তার বুকটা কাঁ/পছে,হাত পা মৃদুতালে কাঁ/পছে।শিমুল সেই কথাগুলো বলার পর থেকে এক দৃষ্টিতে পুষ্পর দিকে তাকিয়ে আছে।তার চেহারা প্রতিক্রিয়াহীন।পুষ্প শক্তমুখ করে রাখা শিমুলের চোখে চোখ রাখে।কান্নায় তার গলা বুজে আসতে চায়।তারপরেও বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আমি সামলে নিবো।প্লিজ।”
শিমুল উঠে দাঁড়ায়।পুষ্পর হাতটা তার বলিষ্ঠ হাতের মুঠোয় পুরে বললো,
“চলো দেরী হচ্ছে।”
পুষ্প দাঁতে দাঁত চেপে কা/ন্না আটকানো চেষ্টা করে।শিমুল কোথায় যাওয়ার কথা বলছে?ফার্মেসী তে?বাবুটাকে মা/রার এতো তাড়া।কি নি/ষ্ঠুর শিমুল!
“কোথায় যাবো?”

শিমুল পকেটে মোবাইল রাখতে রাখতে বললো,
“যেখানে যাবার কথা।”
পুষ্প মুচরা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে দাঁড়ায়।শিমুলকে রেখে বাহিরের দিকে ছুটে যেতে যেতে বললো,
“আমি তোমার সাথে যাবো না।”

এটা বলে পুষ্প হসপিটালের বাহিরে পা রাখে।রাত তখন নয়টা বাজে বোধহয়।চারিদিকের আলোর ঝলকানিতে রাতের গভীরতা টের পাওয়া যাচ্ছে না।পুষ্প সামনে পা বাড়ানোর আগেই শিমুল ঝাপটে ধরে নেয়।পুষ্প শিমুলের সাথে পেরে উঠে না কিন্তু হালও ছাড়ে না।যে শিমুল বাচ্চাটাকে মে/রে ফেলতে চাইছে তার সাথে যাওয়া আর দো/যখে যাওয়া একি কথা।পুষ্প মুচরামুচরি করে নিজেকে ছাড়াতে চায়।

শিমুলের মুখ তখন ক/ঠিন দেখাচ্ছে।পুষ্পকে একহাতে জড়িয়ে রেখেই সি এন জি ঠিক করে তাতে পুষ্পকে উঠিয়ে নিজেও উঠে।সি এন জি তে বসে পুষ্প অজোড়ে কাঁ/দে।এটা তো অ/বৈধ বাচ্চা না এটা তাদের পবিত্র ভালোবাসার ফসল তবুও কেনো সে এই দুনিয়ার আলোর দেখা পাবে না।শিমুল হাত দিয়ে পুষ্পকে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।শিমুলের কথা পুষ্পর বিশ্বাস হয় না।বারবার মনে হয় শিমুল মিথ্যে বলছে এমন কিছু সে করতেই পারেনা।শিমুলকে তার খুব ভালো করেই চিনা কিন্তু মুখের কথা তো আর অবিশ্বাস করা যায় না।প্রিয় পুরুষের সানিধ্যে এসে পুষ্প আকুল হয়ে কেঁদে বলে,

“আমি বাচ্চাটাকে মা/রতে চাই না শিমুল।তুমি এই সিদ্ধান্ত বদলাও।”
গাড়ি তখন সাই সাই করে ছুটছে।শিমুল হাত দিয়ে পুষ্পর চোখ মুছিয়ে বলে,
“একটু চুপ করে থাকো না।”
শিমুলের কথা শুনে পুষ্প মাথা নেড়ে বললো,
“বাবুটা আসুক।আমি পড়ালেখা চালিয়ে যাবো।তোমার ইচ্ছাও পূরণ করবো।কসম করছি।”
“চুপ করোনা পুষ্প।”

তখনি গাড়ি থেমে যায়।পুষ্প ভাবে ফার্মেসীর কাছে বুঝি থেমেছে।বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখে শিমুলের প্রিয় ব্রিজের উপর তাদের গাড়িটা থেমেছে।শিমুলের মন খারা/প কিংবা ভালো হলে সে এখানে আসে মাঝেমধ্যে সাথে পুষ্পকেও নিয়ে আসে।ভাড়া মিটিয়ে শিমুল আর পুষ্প নেমে দাঁড়ায়।পুষ্প কিছু বুঝে উঠার আগে শিমুল তাকে পাজকোলা করে তুলে নেয়।পুষ্প আ/ৎকে উঠে।খাবলে ধরে শিমুলের গলা।শিমুল কি তাকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেবে নাকি?না না শিমুল এটা করতে পারেনা।সে ধরা গলায় বললো,

“কি করছো?”
অনেকক্ষণ পরে শিমুল হাসে।মিষ্টি করে হেসে বললো,
“আমার বাবুর মায়ের হাটতে কষ্ট হয় তাই কোলে করে কষ্ট কমানোর চেষ্টা করছি।”
“মানে?”
শিমুল ব্রিজের কিনারে যেতে যেতে বললো,
“তুমি এতোদিন আমার সাথে থেকে এই চিনলে আমায়?”

পুষ্প শিমুলের কথার মানে ধরতে পারে না।শিমুল তাকে কোল থেকে নামিয়ে দাঁড় করায়।তারপর ব্রিজের উপর হাত রেখে জোড়ে কয়েকবার শ্বাস নেয়।পুষ্প অবাক চোখে শিমুলকে দেখছে তখনি শিমুল দু’হাত মুখের কাছে নিয়ে চি/ৎকার করে বললো,

“শুনছো পৃথিবী আমি বাবা হচ্ছি।শুনছো তোমরা আমাদের পাখি আসছে।আমি বাবা হচ্ছি।”
শিমুলে মুখের উচ্ছাস দেখে পুষ্প হতবিহ্বল হয়ে মুখে হাত চেপে ধরে।আশেপাশের পথচারীরা অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকায়।শিমুলের কথাগুলো নদীর পানির সাথে প্রতিধ্বনি হয়ে আবার ফিরে ফিরে আসে।সে পুষ্পর দিকে তাকায় মুখে বিজয়ী হাসি।পুষ্প যেনো পাথর হয়ে গেছে।শিমুল হাসতে হাসতে এগিয়ে পুষ্পর কোমড়ে দু’হাত রেখে বললো,

“ভ/য় পেয়েছিলে?”
পুষ্প শিমুলের বুকে এলোপাতাড়ি কি/ল ঘু/ষি মে/রে বললো,
“এমনটা করলে কেনো?তুমি জানো আমি কতোটা ভ/য় পেয়েছিলাম?”
“আমি তোমার রিয়েকশন দেখতে চেয়েছিলাম।”
“তাই বলে এসব বলে?একটা মায়ের কাছে এই কথাগুলো কি তুমি বুঝ?”
“তুমি যে আমার কথাগুলো এতো সিরিয়াসভাবে নিবে ভাবিনি।”
তারপর চুপ থেকে বললো,

“তুমি আমাকে এখনো চিনতে পারোনি নাকি নিজেই নিজেকে প্রকাশ করতে পারিনি বুঝালাম না।”
পুষ্প মন খারাপ করে বললো,
“কি সব বলছিলে মাথায় শুধু খা/রাপ চিন্তাই আসছিলো ভালোগুলো ভাবার অবকাশ পাইনি।”
শিমুল পুষ্পর অবস্থাটা বুঝতে পারে।পুষ্পকে ব্রিজের উপরে বসিয়ে পুষ্পর পেট জড়িয়ে ধরে।চিকচিক চোখে জামায় ঢাকা পেটের দিকে তাকিয়ে বললো,

“আমার প্রথম বাচ্চা আমি নষ্ট করে ফেলবো কেনো?আমার জান কু/রবান করে হলেও তাকে দুনিয়ায় আনার চেষ্টা করবো।”
পুষ্প কাঁ/দে।শিমুল পুষ্পর কান্নারত মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আল্লাহ আমাদের ভালোবাসার ফুল দুনিয়ায় পাটাচ্ছে পুষ্প।একটা কুট্টুসপাখি।””
পুষ্প মাথা নাড়ে।শক্ত করে শিমুলকে জড়িয়ে ধরে।ফিসফিস করে বলে,
“আমি তোমাকে ভু/ল বুঝেছিলাম।”
শিমুল বলে,

“এটা স্বাভাবিক ছিলো।”
“তারপরেও অনেক উল্টাপাল্টা চিন্তা করে ফেলেছি।”
শিমুল পুষ্পর কথা পাত্তা না দিয়ে বললো,
“তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ জানাই বলো তো?”
“কেনো?”

“দুনিয়ার সবচেয়ে খুশীর সংবাদটা আমাকে শুনানোর জন্য।তুমি জানো খবরটা শুনে আমার হাত পা শিরশির করেছে।”
“আমিও তো খুশী হয়েছি।সেই হিসেবে তুমিও তো ধন্যবাদ পাওনা।”
শিমুল মাথা হালকা নিচু করে পুষ্পর পেটে চুমু খায়।
“বাবুটা এখানেই তো তাইনা?”
রাস্তায় দাঁড়িয়ে শিমুলের পাগলামি দেখে পুষ্প হেসে দেয়।সে মাথা নাড়ে।শিমুল পুষ্পর অফোলা পেটে হাত রেখে বললো,
“ও কি আমাকে শুনতে পাচ্ছে?”

শিমুলের পাগলামি কথায় পুষ্প আবারো মিষ্টি করে হাসে।কান্নাভেজা চোখে মিষ্টি হাসির রেশ সোডিয়ামের আলোতে জ্বলমল করে উঠে।শিমুল মুগ্ধ হয়ে তার রানীকে দেখে।পুষ্প বললো,
“পাচ্ছে বোধহয়।”
“তাহলে বাবুর সাথে একটু কথা বলি?”
“বলো।”

শিমুল পেটের সাথে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে ফিসফিস করে বললো,
“সোনামনি তুমি এভাবে সারপ্রাইজ হয়ে আমাদের কাছে আসবে আমি কখনো কল্পনা করিনি,যাইহোক বাবা তোমাকে ভালোবায়ায়া আরম্ভ করে দিয়েছে।”
শিমুলের কথা শুনে পুষ্প হেসে বললো,
“আমিও ভাবিনি এভাবে খবরটা পাবো।”

“এতো সতর্ক থাকার পরেও যখন চলে এসেছো তাহলে বাবাকে বাবা ডেকে পুরুষ জীবন পূর্ণ করে দিও।”
তারপর পুষ্পর মুখটা দু’হাতের আজলায় নিয়ে বললো,
“আমার এতো খুশী লাগছে কেনো পুষ্প?”
তারপর পুষ্পর হাতটা বুকের হৃদপিণ্ডের উপর রেখে বললো,
“দেখো বুকটা কিভাবে লাফাচ্ছে।”

পুষ্প শিমুলের হৃদস্পন্দন অনুভব করে।শিমুল নিঃসন্দেহে একজন ভালো স্বামী পুষ্পর ধারনা সে একজন ভালো বাবাও হবে।সে শিমুলকে আঁকড়ে ধরে।
“এমন মজা করার মানে হয়না।আমি কতোটা ভ/য় পেয়েছিলাম জানো?”
শিমুল হাসে।কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
“আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।”
“আমারো।”

“এতো সাবধান থাকলাম তাও মনে হয় উনার আসতে খুব তাড়া।”
শিমুল পুষ্পর কপালে ঠোঁট লাগিয়ে বিশুদ্ধ ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।পুষ্পকে বলে,
“আজকে তোমাকে একটা গো/পন কথা বলি?”
শিমুলের গোপন কথা কী যা পুষ্প জানে না।জিজ্ঞাস্য চোখে পুষ্প তার দিকে তাকায়।শিমুল অন্ধকার নদীর দিকে তাকিয়ে বলে,

“এই ব্রিজে দাঁড়িয়ে একদিন আমি ম/রতে চেয়েছিলাম।”
পুষ্প চমকে উঠে শিমুলের দিকে তাকিয়ে থাকে।শিমুল বলে যায়।
“ভাবছি সেদিন এমন বি/শ্রী কাজটা করে ফেললে আজকে এতো খুশীর খবরটা শুনার সৌভাগ্যই হতো না।”
পুষ্প অবাক হয়ে বললো,
“তুমি এসব ভেবেছিলে?”

“হ্যাঁ।আসলে পুরুষদের পকেটে টাকা না থাকলে মাথা নষ্ট হয়ে যায়।আশেপাশের সবকিছু বি/ষের মতো লাগে।মানুষিক চাপ নিতে না পেরেই এমন পা/গলামি করতে বসেছিলাম।”
পুষ্প শিমুলের বুকে মাথা রেখে বললো,
“আমার কি হবে ভাবোনি?আমার কথা মনে হয়নি?”

“ভেবেই তো কিছু করিনি।আর দেখো আজকে আমার কতো খুশীর দিন।আমি নাকি বাবা হবো।”
শিমুলের গলা কেঁপে ওঠে।পুষ্প টের পায় তাইতো আরো শক্ত করে শিমুলের বুকে লেপ্টে থাকে।
“কি দিয়ে তোকে ধন্যবাদ জানাই বল তো।আমার পা/গলী যে আমাকে বাবা হওয়ার স্বাধ অনুভব করাচ্ছে।”
“ধন্যবাদ লাগবে না।বেশী বেশী ভালোবেসো তাতেই আমি খুশী।”
“শিমুল হাত দিয়ে চোখের পানি আড়াল করার চেষ্টা করে।পুষ্পর তা নজর এড়ায় না।সে নিজেই শিমুলের চোখ মুছে দেয়।

” কাঁ/দছো যে।”
শিমুলের গলা বুজে আসে।
“আমার যে কি অনুভূতি হচ্ছে প্রকাশ করার মতো না।”
পুষ্প মুগ্ধ চোখে শিমুলকে দেখে।শিমুল তখনো পুষ্পর পেটে হাত ভুলাচ্ছে।তারপর হঠাৎ বললো,
“এতো ছোট পেটে বাবুটা জায়গা হবে তো?”

আজকাল পুষ্প কিছু খেতে পারেনা।ঘরে এখন প্রায়ই গরুর মাংস রান্না হয়।পুষ্প মাংসের দিকে তাকিয়ে আগের কথা ভাবে এই মাংস নিয়ে কতো কাহীনি হলো।আর এখন নিজের হাতে রান্না করে যতক্ষন ইচ্ছা খাওয়া যায়।সব নিজের ইচ্ছামতো কিন্তু এখন খেতে ইচ্ছা করেনা।রাবেয়া ছাড়া সবাই তার সাথে যা আচরণ করেছে তা কখনো ভুলে যাওয়ার না বুকের গহীনে ঠিক গেথে আছে।তাছাড় ঢাকায় আসার পরে টাকার জন্য তারা গরুর মাংস তো দূরের কথা ভালো মন্দই খেতে পায়নি।

এখিন শিমুল ভালো বেতন পায়,ইংরেজি প্রফেসর বিধায় ছাত্র ছাত্রী অনেকেই প্রাইভেট পড়ে।ছোট পরিবারটা বেশ সচ্ছল এখন।বাড়ি থেকে চলে আসার পরে দুইবার গ্রামে শিমুলদের বাড়ি গিয়েছে।দুই তিন দিন থেকে চলে এসেছে।শেষবার গিয়েছিলো রোজার ঈদে।ওখান থেকে এসেই তো জ্বর হলো।আর দু’দিন পরে কোরবানীর ঈদ।গ্রামে যেতে হবে।শওকত হাওলাদার নিজে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছেন কবে গ্রামে যাচ্ছে।

উনার ফোনের কারণেই কিনা শিমুল বেশ খুশী।উৎফুল্ল মনে টিকেট কেটে আনে।পুষ্প আর শিমুল মিলে ব্যাগ গোছায়।পুষ্পর বাচ্চা হবে শুনে সবাই বেশ খুশী কিন্তু পেশকারা আর আসমা খুশী কিনা বলা যাচ্ছেনা,পুষ্প তাদের খুশী হওয়াও আশা করেনা।মাত্র আড়াই মাসেই পুষ্পর অবস্থা নাজেহাল।সে কিছুই মুখে দিতে পারেনা সারাক্ষণ বমি করে।

ডাক্তার দেখানো হলে ডাক্তার তাকে ইমিস্টেড ওষুধ সাজেস্ট করে,উনার ভাষ্যমতে খাওয়ার আগে খেলে নাকি ব,/মি কমবে কিন্তু কিসের কি ওষুধ সহই পুষ্প গড়গড়িয়ে ব/মি করে দেয়।এতো য/ন্ত্রণা কেনো।পুষ্প যা খেতে পারবে বলে শিমুল সব আনে কিন্তু পুষ্প খায় পেটে আর থাকেনা সাথে সাথেই ওয়াশরুমে গিয়ে ব/মি করে আসে।তার ব/মি দেখে শিমুলেরই খা/রাপ লাগে।বর্তমানে ধরতে গেলে বাসার সব কাজ শিমুলই করে।মাঝে মাঝে পুষ্পর পেটে কান লাগিয়ে বাবুর সাথে কথা বলে।ব্যাগ গোছানো হয়ে গেলে দু’জনে গ্রামের উদ্যেশে বেরিয়ে পরে।

গ্রামে যাওয়ার পরেই পেশকারার তোপের মুখে পড়ে।উনি মুখ বাকিয়ে বলে,
“খুব তো বড়ো কথা বলছিলো অফিসার হবে!বা*ল হইছে!বাচ্চা নিয়া বা*ল কামাইবো।মুখে মুখে রাজার মাইয়া বিয়া করা খুব সহজ।বিয়া করতে গেলে দেখা যায় কতো ধানে কতো চাল।”
পুষ্প থেমে থাকেনা।আস্তে করে বলে,

“মুখের ভাষা ঠিক করেন।আপনার নাতী এসব শুনলে মুখ চেপ্টা করে ফেলবে।”
“বাবা ঢাকা থেকে এসে তো মুখ দিয়ে চেটাং চেটাং কথা ভালোই বের হয়।”
“আসলে আপনাদের ব্যবহারে মুখ সামলানো কষ্ট।আগে নিজে ভালো হোন তারপর দেখবেন দুনিয়া কতো সুন্দর।”
“জ্ঞান দিতে বলিনি।যাও সামনে থেকে।তোমার জামাই না বড়ো বড়ো কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলো।বউকে এই বানাবে সেই বানাবে।বানাইছে ডেগ মাস্টার।”

পুষ্প অন্তরে শুকিয়ে যাওয়া র/ক্ত গলগগিয়ে ছুটে।
“বাচ্চা হলেই যে কিছু করতে পারবোনা কে বললো?”
পেশকারা সেখান থেকে চলে যেতে যেতে বললো,
“কি করবা জানা আছে।”

শিমুল ফুল পর্ব ৪৭

এই অ/মানুষদের ছোবল থেকে বাঁচাতেই শিমুল আগে ক্যারিয়ারে ফোকাস করার কথা বলেছিলো।পুষ্পর প্রতিজ্ঞা আরো কঠিন হয়।বাচ্চাকে বাধা মেনে পিছিয়ে থাকার মেয়ে সে না।পেশকারার দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমার বাচ্চা আমার শক্তি হবে বাধা না।সময় হলেই আমার অবস্থান বুঝবেন।”

শিমুল ফুল পর্ব ৪৯