অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ১০

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ১০
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

মেঘের আড়ালে সূর্যের লুকোচুরি খেলা। ঘন হয়ে এলো কালো মেঘ। হঠাৎ ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। তবুও যেন উত্তাপ কমছেনা। রামি এক পা’ও হলের সামনে থেকে নড়লো না। তার আকুল চোখজোড়া সেই জানালায় স্থির হয়ে রইলো। ঘামে ভেজা শরীর এবার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেল। ভেজা চুলের আগা থেকে কয়েক ফোঁটা পানি কপাল ছুঁয়ে চিবুক পর্যন্ত গড়ালো।
অরু একটি ছাতা হাতে ছুটে বেরিয়ে এলো। রামির উপর ছাতার ছাউনি ধরেই দম ছাড়লো। কড়া স্বরে বলল,

“এভাবে বৃষ্টিতে শরীর ভেজাচ্ছ কেন?”
হঠাৎ চমকে উঠলো রামি। জানালায় স্থির চোখজোড়া সামনে তাকিয়ে বিস্মিত নজরে তাকিয়ে বলল,
“তুই নেমে এসেছিস কেন? তোর না পড়া আছে?”
অরু নাক ফুলিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। মুখ ঝামটা মে*রে বলল,
“তুমি পড়তে দিলে কোথায়?”
রামি কপাল কুঁচকে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আমি তোকে বাঁধা দিলাম কখন?”
অরু স্বচ্ছ দৃষ্টিতে তাকিয়ে অকপটে বলল,
“বাঁধা না দিয়েও বাঁধা দিয়ে ফেলেছো। এখন বাসায় চলে যাও।”
রামি অরুর চোখে চোখ রাখলো। ধীর স্বরে বলল,
“যেতে ইচ্ছে করছেনা। তুই পড়তে যা।”
অরু তেজী গলায় বলল,
“আমার হলের সামনে তোমার কী কাজ? যে-কোন সময় জ্বর আসবে। তোমার তো আবার ডিউটিতে ফিরতে হবে।”
রামি মলিন হেসে বলল,

“বৃষ্টিতে ভেজা দেখলি, অথচ পুড়ে যাওয়াটা দেখলিনা!”
অরু থমকে গেল। সত্যিই তো রামি অনেকক্ষণ ধরে তার জন্য তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে ছিল। তীব্র অপরাধবোধ নিয়ে বলল,
“আমি খেয়াল করিনি তুমি রোদে দাঁড়িয়ে ছিলে।”
রামি আলতো হাসলো। পরক্ষণেই বড়ো দম নিয়ে ফিসফিস শব্দে বলে উঠলো,
“রোদে নয়, কারো উত্তাপে প্রতিনিয়ত পুড়ে যাচ্ছি। কেবল এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায়।”

অরু অবাক চোখে তাকালো। তার চোখজোড়া বিচরণ করছে রামির পুরো মুখশ্রীতে। রামি মিটিমিটি হেসে বলল,
“এভাবে তাকাবি না অরু। নি*র্ঘা*ত আমার প্রেমনদীতে ডুবে ম*র*বি।”
অরু নজর সরিয়ে নিলো। নাক ফুলিয়ে ছাতা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির পানিতে জ্বরনদী বানাও। আর সেই নদীতে তুমিই ডুবে ম*র।”
রামি ফোড়ন কে*টে বলল,

“আমি নাহয় জ্বরনদীতে ডুবে ম*র*বো। তা তুই কেন আমাকে টে*নে তোলার এতশত চেষ্টা করছিস?”
অরু তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো। অতঃপর তেজ দেখিয়ে বলল,
“আমার না আসাটাই উচিত ছিল। তুমি জ্বর নিয়ে ডিউটি করতে। ভীষণ ভালো হতো।”
ধপধপ পা ফেলে বৃষ্টি মাথায় করে চলে গেল অরু। রামি ছাতা ধরে মাথা ঝাঁকিয়ে হাসলো। মনটা হালকা হয়েছে অনেকটা। অরুর সাথে দেখা করাটা কাজে দিয়েছে।

অরু রুমে ফিরে গায়ের ভেজা জামা হাত দিয়েই ঝেড়ে নিলো। পুরোপুরি ভিজে যায়নি। এখন একটুও জামা পরিবর্তনের ইচ্ছে নেই। জানালায় উঁকি দিয়ে দেখলো রামি গিয়েছে কিনা। তার ফোনের মেসেজ টিউন বেজে উঠলো। পেছন থেকে হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ অপশন অন করলো।
❝এতটা ভালোবাসা দেখানো উচিত নয় অরু। আমি কিন্তু চাকরি-বাকরি ছেড়ে তোর পড়াশোনা বন্ধ করে বাসায় বসে থাকবো বলে দিলাম।❞

অজান্তেই অরুর গাল দুটো লজ্জায় আরক্তিম হয়ে উঠলো। ফোন থেকে চোখ সরিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখতে পেল রামি চলে যাচ্ছে। ছাতা মাথায় শার্টের পেছন দিকটা দেখা যাচ্ছে। ফোঁস করে উঠে ফিরতি বার্তা পাঠালো,
❝তুমি কে আমার পড়াশোনা বন্ধ করার?❞
অরু অপেক্ষা করলো। কিন্তু প্রত্যুত্তরে আর কোন বার্তা এলোনা।

ফোন রেখে অল্প ভেজা শরীর নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। ছোটোবেলা থেকেই রামির সাথে প্রতিটি মূহুর্ত কেটেছে দুষ্টুমিতে। কখনো অন্যভাবে তাকে নিয়ে ভাবা হয়নি। কিছুদিন যাবত রামির পরিবর্তনগুলো নজরে পড়ার পরও ভেবে দেখেনি। এমনকি বিয়ের প্রস্তাবটা নিয়েও অরু এতটা ভাবেনি। তার মাথায় কেবল দুষ্টুমিটাই ঘুরপাক খেয়েছে। আজ কেন জানেনা রামিকে দেখে ভাবতে ইচ্ছে করছে। মনে হলো সত্যিই রামির মাঝে তাকে পাওয়ার প্রবণতা আছে। একটু না, অনেক বেশি।

ইরা সবার জন্য সন্ধ্যার নাস্তা বানাচ্ছে। তাকে সাথ দিয়েছে অমি। টুকটুক করে তাকিয়ে রইলো ইরার হাতের দিকে। কী সুন্দর করে লুচি বেলে নিচ্ছে। অমি গুলুমুলু মিষ্টি দেখতে। চিকন ঠোঁট জোড়া ঈষৎ ফুলিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখেই বলল,
“মা, আমিও বানাবো।”
ইরা হেসে বলল,
“তুমি বানাতে পারবে?”
“হ্যাঁ, খুব পারবো। আমি সবগুলো বানিয়ে তোমার কষ্ট কমিয়ে দেব।”
ইরা হাত থামিয়ে অমির গালে টুক করে চুমু খেয়ে নিলো। তার চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। বলল,

“আমার সোনা বাবা, তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। মা বানিয়ে নিচ্ছি।”
অমি বারণ শুনলোনা। সে লুচি বানাবেই। অগত্যা ইরা বাধ্য হয়েই অমির হাতে সবটা ছেড়ে সরে দাঁড়ালো। অমি নিচে বসে যত্ন করে লুচির জন্য রুটি বেলে নিচ্ছে। একটু পরপরই হাত দিয়ে বারবার ঘুরিয়ে দিচ্ছে। যেন তার ভীষণ পাঁকা হাত। কিন্তু বিধিবাম। রুটি গোল হয়নি। অনেকটা চারকোন আকারের হয়ে যাওয়ায় গাল ফুলিয়ে বলল,
“মা এটা তোমার মতো সুন্দর হয়না কেন?”
ইরা মিষ্টি হেসে বলল,

“খুব সুন্দর হয়েছে। দেখ বালিশের মতো চারকোনা।”
অমির ফোলা গালে হাসি ফোটে উঠলো। রুটি হাতে দৌড়ে গেল ঈশিতার কাছে। সে ড্রইং করছে। রুটি মেলে ধরে অমি উৎফুল্ল হয়ে বলল,
“দেখ ঈশু, ভাইয়া তোমার জন্য লুচি বানিয়েছি। তুমি কী করছো?”
ঈশিতা বলল,
“জাতীয় মাছ আঁকছি।”

অমি গালে আঙ্গুল ঠেকিয়ে ভাবুক হয়ে তাকালো। কৌতুহল নিয়ে প্রশ্ন করলো,
“জাতীয় মাছ কী?”
“ইলিশ। জাতীয় ফল আছে, ফুল আছে, পাখি আছে।”
অমি বুঝলোনা। তবুও জানতে চাইলো,
“এগুলো কী?”
“জাতীয় ফল কাঁঠাল, জাতীয় ফুল শাপলা আর জাতীয় পাখি দোয়েল।”
অমি জিজ্ঞেস করলো,

“তাহলে জাতীয় মা কী?”
ঈশিতা চোখ তুলে তাকালো। বলল,
“জাতীয় মা বলতে কিছুই হয়না।”
অমি জেদ ধরে বলল,
“জাতীয় মা’ও হয়।”
ঈশিতা জানে যে পর্যন্ত জবাব না দেবে সে পর্যন্ত অমি কথা পেঁচিয়ে যাবে। বলল,
“জাতীয় মা ইরা।”
“তাহলে জাতীয় ঘর কী?”
ঈশিতা বলল,
“আমাদের ঘর।”

“জাতীয় পাপা কী? জাতীয় দাদুআপু কী? জাতীয় ঈশু কী? জাতীয় চাচ্চু কী? জাতীয় আম্মু কী? জাতীয় অমি কী?”
“আমার মাথা।”
ঈশিতা বিরক্ত হয়ে জবাব দিতেই অমি গোলগোল চোখে তাকিয়ে বলল,
“জাতীয় মাথা কী?”
রাগে কেঁদে ফেললো ঈশিতা। অমিকে কোলে তুলে রুমের বাইরে রেখেই দরজা বন্ধ করে দিল। অমি এবার তরীর কাছে গেল। মাথায় রুটি রেখে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মন খা*রা*প করে বলল,

“আম্মু ঈশু তার ভাইয়াকে বের করে দিয়েছে।”
তরী বলল,
“ঈশু কী হয় তোমার? নাম ধরে ডাকে না বাবা। তোমরা কয় ভাই-বোন বলো?”
অমি আঙ্গুল তুলে দেখালো তারা দুই ভাই-বোন। তরী জিজ্ঞেস করলো,
“কে কে?”
অমি বোকা স্বরে জবাব দিলো,

“তুমি আর আমি।”
তরী কপাল চাপড়ে বলল,
“আমি, তুমি ভাই-বোন?”
অমি দ্রুত মাথা নেড়ে বলল,
“নাহ্।”
“তাহলে বললে কেন?”
“আমি ঈশুর ভাই, তুমি খালামনি-মামার বোন। তাই আমরা ভাই-বোন।”
ছেলের লজিক শুনে মাথা ঘুরে উঠলো তরীর। অল্পদিনে পা*গ*ল হয়ে যাবে সে৷

এমদাদুল হকের সাথে একপ্রকার তর্কাতর্কিতে দু’পক্ষের মাঝে হাতাহাতি লেগে যায়। মিঠুর বেশ কিছু জায়গায় ভীষণ লেগেছে। রিয়াজ বেশি জ*খ*ম হওয়ায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলো। মাথার আ*ঘা*ত বেশ গভীর। তাকে এডমিট করে পকেট হাতড়ে মুঠোফোন বের করলো। একটা নম্বরে ডায়াল করলো। চোয়াল শক্ত করে বলল,
❝আমি রিয়াজকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। ভালোভাবে আপ্যায়ন করে নাও মেহমানকে।”

ফোন কে*টে বেরিয়ে পড়লো মিঠু। তার কাঁটাছেড়া থেকে রক্ত ঝরছে। দাড়ির পাশটা ক্ষ*ত হয়েছে বেশ। সুহা প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে কিছু ঔষধ নিলো। মিঠু হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে গিয়েই পাশের ঔষধ দোকানে সুহার দিকে নজর পড়লো। সামনে এগিয়ে সুহা নিজেও লক্ষ করলো মিঠুকে। চেহারা আর হাতে কাঁটাছেড়া দেখে ভুরু কুঁচকে গেল তার। এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“আপনার এই অবস্থা কেন?”
মিঠু উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে ধরে চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করলো। শক্ত গলায় বলল,

“ঝামেলা হয়েছে। রিয়াজের অবস্থা সিরিয়াস। ওঁকে এডমিট করেছি।”
সুহা আৎকে উঠলো।
“সে-কী? এখন দেখা করা যাবে?”
“নাহ্, চিকিৎসা চলছে। আমি অন্যকাজে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর আবার আসবো।”
সুহা বলল,
“তাহলে আমিও অবনির মায়ের ঔষধটা দিয়ে আসি।”
মিঠু তীক্ষ্ণ চোখে ঔষধের দিকে তাকাতেই সুহা বলল,

“আন্টি অসুস্থ। আঙ্কেল বাসায় থাকেন না। অবনি আন্টির কাছে থাকায় আমিই ঔষধ নিতে এসেছি। আপনি কি আমায় সামনে নামিয়ে দিতে পারবেন?”
মিঠু না করলোনা। চুপচাপ গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো। সুহা উঠে বসলো। মিঠুর মুখে গম্ভীরভাব। ড্রাইভিং এর পাশাপাশি আশেপাশে তাকাচ্ছে। সুহা অনেকক্ষণ ধরেই মিঠুর ক্ষ*ত গুলো পরখ করছে। এখনো র*ক্ত ঝরতে দেখে বলল,

“আপনি ট্রিটমেন্ট নেন নি কেন?”
মিঠু ভারী গলায় জবাব দিলো,
“লাগবে না। এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।”
সুহা চোখ ছোটো করে তাকালো। মে*জা*জ খা*রা*প হলো তার। তবে খুব একটা প্রকাশ করলোনা। ঠান্ডা গলায় বলল,
“আপনি কি নিজেকে নায়ক ভাবেন? না, তাদের তো আবার চার-পাঁচটা গু*লি লাগলেও কিছুই হয়না।”
মিঠু নির্বিকার রইলো। সামনে তাকিয়ে একমনে ড্রাইভ করছে। অবনির বাসা এসে যাওয়ায় সুহা আর কথা বাড়ালো না। বলল,

“এখানেই নামিয়ে দিন।”
গাড়ি থামতেই সুহা নেমে পড়লো। মিঠু জানালায় মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি কি রিয়াজকে দেখতে যেতে চান?”
“হ্যাঁ।”
“তবে এখানেই থাকুন। আমি কাজ সেরে হসপিটাল যাওয়ার পথে আপনাকে তুলে নেব।”
মাথা নেড়ে সায় জানালো সুহা। মিঠু চলে গেল।
ঘন্টা দুয়েক অপেক্ষার পরই মিঠু গাড়ি নিয়ে হাজির। হর্ণের শব্দে সুহা নেমে পড়লো। মিঠু তাকে নিয়ে হসপিটালে পৌঁছে গেল। রিয়াজের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। সুহা বাসায় ফিরে যাবে। মিঠুকে বলে বিদায় নিতে গিয়েও আরেকবার মিঠুর কাঁ*টা স্থানে চোখ পড়লো। মিঠুকে আরেকবার বলল,

“এভাবে না দাঁড়িয়ে নিজের ক্ষ*ত গুলোর চিকিৎসা নিন।”
সুহা একজন নার্স ডেকে বলল,
“উনার ক্ষ*ত*স্থা*ন ড্রেসিং করে দিন।”
নার্স এগিয়ে এসে তুলোয় মেডিসিন নিতেই মিঠু গমগমে গলায় বলল,
“আমি পারবো।”
সুহা সাহস করে এগিয়ে এসে বলল,
“আপনি দেখবেন না। আমি ড্রেসিং করে দিচ্ছি।”

মিঠু বাঁধা দিলোনা। গালে মেডিসিন পড়তেই জ্বলে উঠলো। চোখ ঈষৎ কুঁচকে এলো। তা দেখে সুহা ফুঁ দিয়ে ধীরগতিতে ড্রেসিং শেষ করলো। মিঠু মনযোগ দিয়ে কিছু দেখলো। তার চোখে মুগ্ধতার ঘোর লেগেছে। সুহা কাজ শেষ করেই বলল,
“আমি যাচ্ছি।”
মিঠু বলল,
“চলুন আমি পৌঁছে দিচ্ছি।”
সুহা অবাক হলেও পরক্ষণে হেসে ফেললো। বলল,

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৯

“আপনার এখন এখানে থাকা উচিত।”
মিঠু নিজেও অনেকটা অবাক হলো নিজের কাজে। সে রিয়াজের কাছে থাকবে বলেই এখানে এসেছে। যে কোন মূহুর্তে তার জ্ঞান ফিরতে পারে। নিজের সংকোচ আড়াল রেখে বলল,
“ঠিক আছে। সাবধানে যাবেন।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ১১