অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ২০

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ২০
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

ঝলমল করা গোধূলি। শেষ দিগন্তে সূর্যের লুকোচুরি খেলা। রক্তিম আভা ছড়িয়েছে অন্তরিক্ষে।
বাইকের পেছনে অরুকে নিয়ে রামির প্রেমিক মন চনমনে হয়ে উঠেছে। ঠোঁটের কোনে এক চিলতে প্রশান্তির হাসি। ফুরফুরে মনে পেছনে বসা অরুর হাত পেছন থেকে রামির শার্ট আঁকড়ে আছে। নিজেকে যতই গভীরে লুকিয়ে রাখতে চায়, ততই যেন অনুভূতি গুলো বেসামাল হয়ে পড়ে।

এই যে রামির এত কাছে সে, নিজেকে শক্ত দেখায়। অথচ ভেতরে ভেতরে ঢলে পড়ে সে, প্রতিনিয়ত ব্যাকুল হয়ে উঠে মন। প্রকাশ করতে কীসের যেন এক জড়তা! কাছাকাছি এলেই মনে হয়, এই মানুষটার সঙ্গে আমার মা*রা*মা*রি, ঝ*গ*ড়া*ঝা*টি সম্পর্ক। চোখে চোখ রাখতেও ভীষণ লজ্জা হয়। এমনিতে যতটা চটপটে স্বভাবের, একটু প্রেম নিয়ে তাকালেই সব হাওয়া শেষ হয়ে যায়। বুকের ভেতর দুরুদুরু কম্পন সৃষ্টি হয়। হাত-পা অসাড় হয়ে আসতে চায়। জড়তা কাটিয়ে উঠতে না পারায় সম্পর্কের ভীত্ মজবুত হয়না।
অরুর ঘোর কাটলো রামির ডাকে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“অরু।”
“হুঁ?”
“শক্ত করে ধরে বস। পড়ে যাবি।”
অরু মনে মনে হাসে। সে ঠিকঠাকই বসেছে। পড়ে যাওয়ার কোন রিস্ক নেই। রামি চায় সে আরেকটু কাছাকাছি থাকুক। অরু নির্দ্বিধায় হাতের বাঁধন শক্ত করলো।
বাইক পার্ক করে দুজন রাস্তায় নামলো। ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া রামি অনুভব করলো অরুর অপ্রত্যাশিত স্পর্শ। মেয়েটা তার বাঁ হাত দু-হাতে জড়িয়ে হাঁটছে। স্থির হলো চোখজোড়া। পা থামলো না। অধর কোন বিস্তৃত হলো। তাদের আশেপাশে কপোত-কপোতীর ভীড়। অরু হাওয়াইমিঠাই দেখে বায়না ধরলো।

“আমি হাওয়াইমিঠাই খাবো।”
রামি বিনাবাক্য ব্যয়ে কিনে দিল। অরু একটুখানি মুখে দিয়ে বলল,
“এত সহজে কিনে দিলে, তুমি তো সহজ কথার মানুষ না।”
রামি সামনে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে আনমনে বলল,
“এত মিষ্টি করে আবদার করলে, তা ফেরানোর সাধ্যি আছে কার?”

অরু লজ্জা পেয়ে হাসলো। রামি এক পলক তাকালো। দৃষ্টি অনড় রেখে ধীর গলায় বলল,
“আমি যদি কখনো হারিয়ে যাই, তোর খা*রা*প লাগবে?”
অরুর ভুরু কুঁচকে গেল। ঝটপট জিজ্ঞেস করলো,
“কোথায় হারাবে?”
রামির স্বর নিস্তেজ হয়ে এলো। মলিন হেসে বলল,
“আমি ফ্লাইং এ আছি। টিবিতে বড়োসড়ো হেডলাইন দিয়ে বিমান ক্র্যাশ হওয়ার সংবাদ পাঠ করা হচ্ছে। যদি সেখানে আমার মৃ*ত্যু সংবাদ আসে?”

অরুর খাওয়া থেমে গেল। ধ্বক করে উঠলো বুকের ভেতর। চোখের কোনে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে। রামি শান্ত চোখে অরুকে পর্যবেক্ষণ করে নিঃশব্দে হাসলো। আজ অরুর চোখে নিজের জন্য কিছু একটা দেখেছে। রামির হাসি দেখে চোখের পানি আর বাঁধা মানলোনা। ফ্যালফ্যাল করে কেঁদে ফেললো অরু। মায়ের পর থেকেই সে কারো মৃ*ত্যু সংবাদ নিতে পারেনা। সহজেই দুর্বল হয়ে পড়ে।

সেখানে প্রিয়দের হারানো তাকে ভেতর থেকে ভেঙে গুড়িয়ে দিতে সক্ষম। অরু আচমকা এক অভাবনীয় কাজ করে বসলো। লোকজনে ভরা জায়গায় রামির বুকে ঝাপিয়ে পড়লো। দুহাতে পেছন দিকে শার্ট আঁকড়ে ধরে হেঁচকি তুলে কাঁদছে। রামি বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। সমস্ত বোধবুদ্ধি হারিয়ে বসলো। মিনিট দুয়েক এভাবেই অতিবাহিত হওয়ার পর এবার আস্তে আস্তে তার একটা হাত অরুর পিঠের উপর পড়লো। আলগোছে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ফিসফিস শব্দে বলল,

“আশেপাশে সবাই দেখছে অরু।”
অরুর মাঝে কোন হেলদোল নেই। এখানে যারা আছে, তারা প্রায় সকলেই প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল। রামিও আর নিজ থেকে অরুকে সরালো না। আপনা-আপনি অরুর কান্না থামতেই সে ঝটপট সরে এলো। এবার তার ভীষণ লজ্জা হচ্ছে। কী দরকার ছিল এতটা আবেগি হয়ে যাওয়ার! রামির চোখে চোখ রাখতেই লজ্জা পাচ্ছে। দূরে দূরে হাঁটছে অরু।
রামি জোর করেই তার হাত মুঠোয় নিয়ে পাশাপাশি দাঁড়ালো। একটু পর মিটিমিটি হেসে শুধালো,

“কেঁদেছিলি কেন, অরু?”
অরু দৃষ্টি লুকানোর চেষ্টা করছে। রামি ইচ্ছে করেই তাকে বেকায়দা ফেলছে। লজ্জা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে হুট করেই রেগে গেল। রামির হাত ছাড়িয়ে একা একাই সামনে এগিয়ে গেল। ধুপধাপ পা ফেলে হাঁটছে। রামি হেসে ফেললো। পেছন থেকে গলা উঁচিয়ে বলল,

“আস্তে হাঁট, পড়ে পায়ে ব্যথা পাবি।”
পাশ থেকে একজন জিজ্ঞেস করলো,
“কে হয় আপনার?”
অরুকে রাগানোর জন্য এবারেও গলার স্বর বাড়িয়ে রামি লোকটিকে জবাব দিলো,
“কিছুই হয় না। ছোটোবেলায় এ-কে আমরা ড্রেনে পেয়েছিলাম। এখন বড়ো হয়ে আমাদের উপরই কর্তৃত্ব ফলাচ্ছে, জেদ দেখাচ্ছে।”

অরু ফোঁস করে উঠলো। সামনে থেকেই অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে। রামি এগিয়ে গিয়ে হাত ধরতেই ঝাড়ি দিয়ে আগের মতোই আগে আগে হাঁটা ধরলো।
সন্ধ্যা নামলো আয়োজন করে। দিনের সমাপ্তি ঘটিয়ে রাতের শুরুভাগ। রামি পেছন পেছন হাঁটছে। অরু রাগে ফেটে পড়ছে। সে না-হয় হাত ছাড়িয়ে এসেছে, রাগ দেখাবে, তাই বলে রামি তাকে জোর করবে না? ভেতরে ভেতরে রাগ হজম করলেও মুখে কিছু বলছে না। ভর সন্ধ্যায় হঠাৎ ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলো, সেই সাথে মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। রামি দ্রুত পা চালিয়ে অরুর হাত ধরে টে*নে নিয়ে গেল। বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে গিয়েও ব্যর্থ হলো। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বৃদ্ধ, যুবক অনেকেই ছাউনির নিচে দাঁড়িয়েছে। রামি একপাশে অরুকে দাঁড় করিয়ে হাত দিয়ে আগলে রেখেছে। অরু গমগমে স্বরে বলল,

“আমি বাড়ি যাব।”
“বৃষ্টি কমুক।”
“আমি এখনই যাবো।”
রামি মৃদু ধমক দিয়ে বলল,
“বৃষ্টি হচ্ছে অরু। এখন ভিজে যাবি।”

অরু গাল ফুলিয়ে আছে। আর কথা বললো না রামির সাথে। বৃষ্টির তোড়জোড় কমে গেল। একে একে সকলেই ভেজা রাস্তায় কদম ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। রামি অরুকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। বারকয়েক ডাকলেও অরু সাড়া দিলো না। রামি তপ্ত শ্বাস ছাড়লো। অরুকে আর ঘাটালো না। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর নিজ থেকেই অরুর রাগ পড়ে গেল। গুটিগুটি পায়ে রামির নিকট এগিয়ে গিয়ে তার কনিষ্ঠ আঙ্গুল মুঠোবন্দী করে নিলো। রামি আড় চোখে তাকিয়ে বলল,

“রা*গ পড়ে গিয়েছে?”
অরু একপলক মাথা তুলে তাকালেও কিছুই বললো না। দুজন আরও কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে বাইকে চেপে বসলো। অরুকে বাসার সামনে নামিয়ে দিল রামি। অরু দাঁড়িয়ে রইলো। হাতে ওড়না পেঁচিয়ে যাচ্ছে। রামি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে শুধালো,
“কিছু বলবি?”

অরু ব্যস্ত ভঙ্গিতে দু-দিকে মাথা নাড়িয়ে রামিকে স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো কাজ করলো। রামির গালে দু-ঠোঁটের ছোঁয়া দিয়ে দৌড়ে বাসার ভেতর চলে গেল। রামি যেন বিদ্যুতের শক পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে রইলো। এখনো তার ঘোর কাটেনি। অবাক হয়ে অরুর যাওয়ার পথে তাকিয়ে রইলো। পরক্ষণে গালে হাত ছুঁইয়ে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া আকস্মিক ঘটনা রোমন্থন করলো। তার ঠোঁটে ফোটে উঠলো প্রাপ্তির হাসি। প্রাপ্তির খাতা এক কানা পূর্ণ হলো আজ। প্রফুল্লচিত্তে বাসার ভেতর প্রবেশ করতেই সাদাদের তীক্ষ্ণ চোখের মুখে পড়লো। কেমন জহুরী নজরে তাকে পর্যবেক্ষণ করছে। রামি দাঁত কেলিয়ে বলল,

“এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই। সরো, বউয়ের মিষ্টি মিষ্টি ভালোবাসা নিয়ে এসেছি।”
সাদাদ দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
“নির্লজ্জ ব্যাটালোক। আমার মতো হতে শেখ।”
রামি হো হো করে হেসে বলল,

“এত লজ্জা তোমার! বউ থাকতেও ছোটো ভাইয়ের বউয়ের দিকে নজর দাও। ছিহ্!”
“নজর তো তুই দিয়েছিস আমার অরুর উপর।”
“খবরদার! আমার বউয়ের নাম মুখে নিবে না।”
মুখ ঝামটা মে*রে ঘরে ঢুকে পড়লো রামি। পেছন থেকে সাদাদ হাসলো। ছোটোদের সাথে এমন ঝগড়াঝাটি সে বেশ উপভোগ করে। দরজা আটকে ইরার কাছে চলে গেল। সেদিন তার রা*গ ভাঙাতে গিয়ে প্রচুর নাকানিচুবানি খেতে হয়েছে।

বাবা তরী আর মাহমুদকে ডাকলেন রাতের খাবারের আগে। তরী ঘরের বড়ো মেয়ে আর মাহমুদও এতদিন জামাই কম বড়ো ছেলের দায়িত্ব পালন করেছে বেশি। তাই কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের মতামত জরুরী। তরী মাহমুদ আসলো। মিঠুও বাসাতেই রইলো। অরুও আছে। বাবা ভাবলেন রামি বাদ থাকবে কেন! সে-ও তো মেয়ের জামাই। তাকেও ডেকে পাঠানো হলো। রামি অমিকে ঘাড়ে চড়িয়ে নিয়ে এলো। গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অমি ব্যাঘাত ঘটাবে। তাই মাহমুদ রামিকে ধমকে বলল,

“অমিকে মায়ের কাছ থেকে নিয়ে এসেছিস কেন? এখানে গুরুত্বপূর্ণ কথা হবে। দিয়ে আয় ওঁকে।”
অমি ত্যাড়ামো করে বলল,
“আমি যাবো না।”
তার নানাভাই বলল,
“থাক না। আমার নানাভাই চুপচাপ বসে থাকবে। কাউকে বিরক্ত করবে না।”
অমিও বাধ্য ছেলের মতো চুপটি করে বসে আছে।
মাহমুদ নম্র গলায় বলল,

“বাবা আপনি বলুন।”
তরীর বাবা গম্ভীর মুখে বললেন,
“মিঠুর বিয়ের ব্যাপারে ভাবছি। এতদিন ওঁকে বললেও সে গা দেয়নি। অরুর ও বিয়ে হয়ে গেল।”
মাহমুদ বলল,
“এটা তো ভালো সিদ্ধান্ত। ঘরে এমনিতেই একজন মেয়েমানুষের প্রয়োজন। মেয়েরা যেভাবে সংসার আগলে রাখতে পারে, পুরুষ সেভাবে পারে না।”
তরী বলল,

“এখন ওঁর পছন্দ আছে কি-না সেটা জেনে নেওয়া দরকার।”
রামির সাথে অনেক আগেই এই ব্যাপারটা শেয়ার করা শেষ। মাঝখানে অরুর সাথেও সুহার পরিচয় করিয়ে দিল মিঠু। বাকি বাবা, মাহমুদ আর তরী তিনজনই সুহার ব্যাপারে অজ্ঞাত। মিঠু তরী আর মাহমুদের উদ্দেশ্য বলল,
“তোমাদের দুজনের সাথে আমার একান্ত কিছু কথা আছে।”
তরী আর মাহমুদ উঠে গেল মিঠুর সাথে। ছাদের দরজা খোলা। মিঠু গলা ঝেড়ে বলল,

“আমার পছন্দের মেয়ে আছে। কিন্তু একটা সমস্যা হয়ে যাবে।”
মাহমুদ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“কী সমস্যা?”
তরীও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মিঠু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“নাম সুহা। পরিবার থেকে আলাদা থাকে। মামা বাড়িতেই ছিল। এখন বলতে গেলে সম্পূর্ণ একা। অতীতের কোন একটা ঘটনার জের ধরে ভবিষ্যতে এগোতে চাইছে না মেয়েটা। কিন্তু এভাবে কতদিন একটা মেয়ে একা একা বাঁচবে?”
মাহমুদ প্রশ্ন করলো,

“তুমি আমায় ক্লিয়ার করে বলো। মেয়েটাকে তুমি পছন্দ করো নাকি তার পরিস্থিতি দেখে সাহায্য করতে চাইছো?”
মিঠু সময় নিলো না। ঝটপট উত্তর দিলো,
“পছন্দের চেয়ে বেশি কিছু। আমি বিয়ে করলে সুহাকেই করবো। পরিস্থিতি দেখে কোন সিদ্ধান্ত নেই নি আমি।”
তরী বলল,“সবই বুঝলাম। কিন্তু এখানে সমস্যার কী আছে? আমরা আগে প্রস্তাব দিয়ে দেখি।”
“উনার অভিভাবক হিসেবে উনার বান্ধবীর পরিবার আছে। তাদের ধরলে ব্যাপারটা সহজ হবে। অন্যথায় সুহাকে রাজি করানো কষ্ট সাধ্য ব্যাপার।”

মিঠুর কথার প্রত্যুত্তরে মাহমুদ শুধালো,
“এখন তুমি কী চাইছো?”
“আমি কী চাই, সেটা তো বললামই। তোমাদের সবটা জানানোর উদ্দেশ্য হলো বাবাকে ম্যানেজ করা। কোন সমস্যা হলে যেন সামলে ওঠা যায়। আমি সুহাকে-ও চাই আবার বাবাকে-ও অবহেলা করতে পারবো না।”
মাহমুদ বলল,
“আচ্ছা, বাকিটা আমরা সামলে নেব।”

অতঃপর তিনজনই নিচে নেমে এলো। অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো মিঠুর পছন্দ করা মেয়েকে দেখতে যাওয়া হবে। মাহমুদ শশুরকে সামলে নিলো। সবাই রাতের খাবার এখানেই শেষ করলো। যাওয়ার আগে অমি মিঠুর উদ্দেশ্য বলল,
“বাবা তোমাকে পুতুল বউ এনে দেব, ঠিক আছে? কান্না করো না।”
মিঠু সহ সকলেই হাসলো অমির কথায়। মাহমুদ আর তরী অমিকে নিয়ে চলে গেলেও রামি আজ এ বাসায় থেকে গেল। আগামীকাল সে চলে যাবে। আজকের রাতটুকু মিঠুর সাথে আড্ডা দেওয়া যাবে। সকাল হতেই আর ওঁর নাগাল পাওয়া যাবে না। অর্ধরাত্রি দুজনে আড্ডা দিয়ে একসাথে শুয়ে পড়লো।

অরু ভালোভাবে দরজা আটকে শুতে গেল। সন্ধ্যার পরের ঘটনা মনে পড়লেই লজ্জা লাগে। মিঠুর বিয়ে নিয়ে আলোচনার সময় রামির থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছে। রামির সাথে চোখাচোখি হলেই অদ্ভুতভাবে হাসে, যা অরুর লজ্জা বাড়িয়ে দিতে যথেষ্ট। ঘন্টাখানেক এপাশ-ওপাশ করলো রামি। মনটা পড়ে আছে অরুর কাছে। মিঠু চোখ বন্ধ রেখেই বলল,
“অনুমতি দেওয়া হলো। ছটপট না করে ও ঘরে চলে যা।”
রামি আর কিছু শোনার অপেক্ষা না করেই বিছানা ছেড়ে অরুর দরজায় সামনে দাঁড়ালো। ঠকঠক করে দু-বার করাঘাত করে ডাকলো,

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ১৯

“অরু!”
অরু গভীর ঘুমে মগ্ন। সামান্য ডাকে তার ঘুম ভাঙলো না। রামি পকেট থেকে ফোন হাতড়ে অরুর নাম্বারে কল দিল। প্রথমবার রিং হতে হতেই কে*টে গেল। দরজার বাইরে থেকেই অরুর ফোনের শব্দ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে রামি। অথচ মেয়েটা এখনো ঘুমে আচ্ছন্ন। দ্বিতীয়বারে রেসপন্স করলো অরু। কল রিসিভ করে ঘুম জড়ানো গলায় বলল,
“কল দিচ্ছো কেন?”
“দরজা খোল্ অরু। আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছে।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ২১