অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ১২

অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ১২
অস্মিতা রোদৌসি

আপনাকে ভালোবাসি বলেই যে আপনাকে আমায় বিয়ে করতেই হবে এমন তো কোনো কথা কোথাও লেখা নেই।ভালোবাসলেও বিয়ে করতে হবে???
কোমরে হাত দিয়ে কথা গুলো বললো নীলা।তার সামনেই দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো শুনে যাচ্ছে মুহিত।
____ তুমি তাহলে রিহানকেই বিয়ে করবে???
___জি অবশ্যই।কেন বিয়ে করবোনা বলেন তো???

মুহিত আর কিছু না বলেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো।আর এদিকে নীলা খিলখিল করে হাসতে লাগলো।মুহিতকে জ্বালিয়ে তার কাটা ঘায়ে কিছুটা মলমের ছোঁয়া পেয়েছে এমন মনে হচ্ছে নীলার।
>___ কি হয়েছে এমন করছেন কেনো???ঠিক করে কি রান্নাটাও করতে দিবেন না??রেগে বললাম আমি।
___কেনো বউ আমি কি করলাম হুমমম??আমি তো তোমাকে সাহায্য করছি।বললো অভ্র।
____ আমার কোমর পেঁচিয়ে ধরে কানের কাছে বকবক
শুরু করছেন আর বলছেন আমাকে সাহায্য করছেন??
বাহ!!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

____রান্না ঘরে একা একা রান্না করছো বোরিং লাগেনা বুঝি??
___না বোরিং লাগেনা।আপনি আসার ফলেই আমার বোরিং লাগছে।যান এখান থেকে যান। যবে থেকে আপনি আমার জিবনে এসেছেন তবে থেকেই খুব বোরিং ফিল করছি আমি।ইচ্ছে করে নিজেকে___এটুকু বলতে না বলতেই অভ্র আমার তার দিকে ঘুরিয়ে বুকের সাথে চেঁপে ধরলো।

___প্লিজজজ জান এমন কথা বলো না।আম সরি।আমি তোমাকে ভালোবাসি জন্যই বার বার তোমার কাছে ছুটে আসি।তোমাকে ভালোবাসি বলেই শাসন করি।ভালোবাসি বলেই তোমাকে জ্বালাইতে।ভালোবাসি বলেই অন্যকারো সাথে তোমাকে সয্য করতে পারিনা আমি।যদি আমার ভালোবাসা তোমার কাছে বিষাক্ত, বোরিং, অসহ্য লাগে তাহলে আমি আর তোমায় কাছে আসবোনা ভালোবাসার দাবি নিয়ে।আমি চাইনা আমার জন্য আমার ভালোবাসার মানুষটা কষ্ট পাক!!!
মলিন হেঁসে কথাগুলো বলেই চলে গেলো অভ্র।

তার কথাগুলো সোজা তীরের মতো আমার বুকে বিঁধেছে।তার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি।তার চোখগুলো কেনো জেনো আমায় খুব টানে তার কাছে।এমন তো কখনো রিদ ভাইয়ার জন্য আমার মনে হয়নি।কেনো জানিনা আমি মন মনে এখন খুব করেই চাই অভ্রকে।তার আশেপাশে থাকতে ভিষন ভালো লাগে আমার।প্রতিদিন তাকে ভেজা চুলে দেখলেই যেন কোনো এক ঘোরে চলে যাই।কিন্তু কেনো???আমি তো অভ্রকে ভালোবাসিনা তাহলে???

আসলেই আজকে অভ্রকে খুব হার্ড করেছি আমি।এটা করা ঠিক হয়নি আমার।একজনের রাগ আরেক জনের উপর ঝাড়া এই বদ অভ্যাস আমার মনে হয় যাবেনা।ধুত বলেই রান্নায় মন দিলাম।

এদিকে অভ্র ব্যালকানিতে দাড়িয়ে আকাশ পানে চেয়ে আছে।আজ কেনো যেন নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।মেঘার মন বোঝার চেষ্টা করেনি সে।মেঘলা ইচ্ছে গুলো দাম দেয়নি সে।মেঘাকে বোঝার চেষ্টা করেনি সে।

নাহ সে আর মেঘার কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করতে যাবেনা।মেঘার কাছ থেকে নিজেকে সড়িয়ে নিবে সে।
সে একাই ভালোবেসে যাবে মেঘাকে।
মনে মনে কথা গুলো ভাবতেই চোখগুলো ঋ
ছলছল হয়ে উঠলো অভ্র।রকিং চেয়ে বসে চোখ বুঝে রইলো কিছুক্ষণ।
এইযে চলুন খাবার রেডি বলেই অভ্রের দিকে তাকালাম আমি।অভ্রমের মুখটা কেমন যানি ফ্যাকাশে লাগছে।
তা দেখেই বুকটা কেঁপে উঠলো আমার।

___হুম বলেই অভ্র আমাকে পাশ কাটিয়ে নিচে চলে গেলো।
আমিও পিছে পিছে গেলাম।খাওবার টেবিলে নিলা,আমি আর অভ্র।মুহিত ভাইয়া এসেছিলো।কিছুক্ষণ থেকেই চলে গেছে।আর বাবা ব্যাবসার কাজে
বাহিরে গেছে কয়েকদিনের জন্য।
খাওয়ার সময় একটা কথাও বললো না অভ্র।এনমি হলে খাওয়ার সময় দু ভাইবোন বকবক করতো।আজ দুজনেই চুপ মেরে গেছে।

খাওয়া শেষে রুমে চলে গেলে দুজনেই রুমে চলে গেলো।আমি খালাবাটি গুছিয়ে সব পরিষ্কার করে প্রায় দেড় ঘন্টা পর রুমে ধুকলাম।কদিনের জন্য ছুটি নিয়েছে রহিমা আন্টি।তাই সব কাজ আমাকে করতে হচ্ছে।
রুমে ঢুকেই দেখি খাটের একপাশে গুটিশুটি হয়ে কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে অভ্র।তা দেখে কলিজাটা মোচর দিয়ে উঠলো আমার।আসলেই অভ্র হয়তো আমার ব্যাবহারে খুব কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু তখন আমার রাগ উঠছিলো খুব আর রাগের সময় কারো কথা আমার সয্য হয়না। তাই মিহির উপর রাগ গুলো অভ্রর উপরে ঝেড়েছি।

বিকেলে মিঠি আমাকে ফোন দিয়েই হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিয়েছে।অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ভেবে ছিলাম হয়তো বাড়িতে কিছু হয়েছে তাই মিয়িকে বলছিলাম___
___কিরে মিঠি কাঁদছিস কেনো???বাড়িতে কিছু হয়েছে নাকি???
____ না।কেঁদে কেঁদেই উওর দিলো মিঠি।
____তাহলে কেনো কাঁদছিস???
____আপু ও আমাকে ভালোবাসে না। বলেই ফের কাঁদতে লাগলো মিঠি।
____কে তোকে ভালোবাসে না???
____ রি রি রিদ ভাইয়া!!!!আমি রিদ ভাইয়াকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু সে আমায় ভালোবাসে না।
কথাটা শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়লো বলে আমার এমন মনে হলো।

____কিহ??কি সব আবুল তাবোল কথা বলছিস তুই মিঠি]???
___আমি যা বলেছি তাই সত্যি আপু।আমি রিদ ভাইয়াকে ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি তাকে।
মিহির কথা শুনে বুকে চিনচিন করে ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো।সাথে প্রচন্ড রাগও উঠে গেলো।আমার মতো ঐ একি ভুল করলো মিঠি।ও প্রতারক, ঠক টাকে ভালোবেসে ফেললো।
_____ আপু প্লিজজজ কিছু তো বলো।তুই অন্তত আমার পাশে থাক।মিঠির এমন কথায় ঘোর কাটলো আমার।রাগ করে ফোন কলটা কেঁটে দিলাম কোনো উত্তর না দিয়েই।

রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে আমার।ইচ্ছে করছে রিদ ভাইয়াকে কাঁচা চিবিয়ে খাই।আমার জিবনটা নষ্ট করে সাধ মেটেনি এখন আমার ছোট বোনটার জিবনটা নষ্ট করার ধান্দায় আছে।আমাকে কষ্ট দিয়ে তার শান্তি হয়নি।এখন আমার বোনকে কষ্ট দিচ্ছে। নাহ এটা আমি কিছুতেই মানবো না।কিছুতেই না।কেন এমন করছে রিদ ভাইয়া তা আমায় জানতেই হবে।
সেই রাগ নিয়ে রান্না করছিলাম তখনি পিছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরে অভ্র।তাতে যেন আরো রাগ উঠে যায় আমার।একেবারে আগুনে ঘি ঢালার মতো।

? [পরের অংশ উপরে বর্ণনা করা হয়েছে]?
রুমের দরজা লাগিয়ে লাইট অফ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে তার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
নাহ আজ অভ্র জড়িয়ে ধরেনি।এর আগে প্রতিদিন তার বুকের সাথে জড়িয়ে ঘুমাতো। আজ তা করলো না।তাতে কি হয়ছে আমি তো আর অভ্রকে ভালোবাসি না।
তার বুকে মাথা না রেখে ঘুমলেও চলবে আমার।এগুলো মনে মনে বলে নিজেকে শান্তনা দিলাম।
সারাটা রাত এপাশ ওপাশ করতেই গেলো।কিছুতেই ঘুম হলো না।কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।কয়েকদিন অভ্রের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আমি অভস্ত্য হয়ে গেছি।তা ভাবতেই অবাক হলাম আমি।রাগে এখন নিজের চুল নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছে করছে।

অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ১১

সকালে উঠে নামাজ পড়ে বাগাবে গেলাম হাটতে।আমার উঠার আগেই অভ্র মসজিদতে নামাজ পড়তে চলে গেছে।
একটু পরেই আবার রুমে ফিরে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে চা,পরোটা, আলুর দম,আর ডিম মামলেট করলাম।এগুলো অভ্রের খুব পছন্দের।তাই স্পেশালি তার জন্যই বানানো।
খাবার টেবিলে নীলা আর আমি বসে অভ্রের জন্য অপেক্ষা করছি।কিন্তু তার আশার না-মি নেই।চর নীলা কেনো জানিনা কাল রাত থেকে মন মরা হয়ে আছে।এই দুই ভাই বোন আমার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আংরা করে দিচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর আগমন ঘটলো অভ্র মহাশয়ের।তা দেখেই নীলা বলে উঠলো___

___কিরে ভাইয়া আজ এত লেট করে বাসায় ফিরলি কেনো???
___এনমি।
___খাবি না??তারাতারি আয় আজ তোর ফেভারিট পরোটা আর আলুর দম রান্না করেছে ভাবি।
___নাহ তোরা খেয়েনে।আমি হোটেল থেকে খেয়ে এসেছি।বলতে বলতেই সিড়ি বেয়ে রুমে চলে গেলো অভ্র।
কথাটা শুনেই মন খারাপ হয়ে গেলো আমার।যার জন্য এত কিছু করলাম আর সে???
____এই মেঘা ভাইয়ার জন্য আর অপেক্ষা না করে খেয়ে নে।বলেই খাওয়া শুরু করলো নীলা।
আমিও কোনোমতে অল্প খেয়ে উঠে পড়লাম।কারণ খিদে লেগেছিলো আমার খুব।খিদে আমি একটু ও সয্য করতে পারিনা চর যাই হোক!!!

অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ১৩