আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৬ || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৬
Maishara Jahan

সায়ন,,,, ঠিক করেছো ভাইয়া,,, আমার বউকে কেও মারতে এলে তো আমি ওদের নিজ হাতে মারতাম,,ঠিক করেছো।
অয়ন,,,, হুমম,,তুই রেস্ট কর, আমরা ফ্রেশ হয়ে আসি।
সবাই ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে। খাবার খেতে বসে। সায়ন অয়নের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,, তো কেমন মজা করলা সেখানে।
অয়ন খেতে খেতে বলে,,,,,, হুমম প্রথম প্রথম তো ভালো লাগছিলো পরে তো যা হলো তার জন্য মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে।
সায়ন,,,, আচ্ছা ভাবী তোমার কি কারো সাথে কোনো শত্রুতা আছে।
আমি গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে বললাম,,,, এমন তো কিছু মনে পড়ছে না।
প্রহর,,,,,,, ভেবে দেখো, হয়তো কোনো আপন জন।

আমি প্লেটে চামচ ঘুরাতে ঘুরাতে বললাম,,,,,, এমন কিছু মনে পড়ছে না, হতে পারে আমার অতীতের কোনো শত্রু।
অয়ন আমার দিকে কপাল কুঁচকিয়ে বললো,,,, অতীতের মানে, আর সেমন কিছু হলে তো তোমার মনে থাকার কথা।
আমি একটা আফসোসের নিশ্বাস ছেড়ে বললাম,,,,, আমার অতীত খুবি অগোছালো আমার কাছে।
প্রহর,,,,, মানে কি বলতে চাও।
,,আমি শুধু জানি আমার একটা এক্সিডেন্টে কিছুদিনের বা অনেক দিনের স্মৃতি মুছে গেছে আমার জীবন থেকে। হয়তো মুছে যাওয়া দিন গুলিতে এমন কেও ছিলো।

অয়ন,,,, তুমি এটা জানতে যে, তোমার কিছু স্মৃতি চলে গেছে।
,,,,,অনেক অপরিচিত মানুষ আমাকে এসে বলতো, আমি নাকি তার এটা লাগি, সেটা লাগি, একদিন অতিষ্ট
হয়ে আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করায় ওনি আমাকে বলেন। অয়ন যখন আমাকে জোর করে বিয়ে করে, তখন ভেবেছিলাম ও আমার অতীতের কোনো শত্রু তাই চুপ করে ছিলাম।
এটা শুনে সায়ন আর প্রহর ফিস করে একটু হেঁসে দেয়।
অয়ন চোখ ছোট করে মুখ বেকিয়ে খাবার খেতে খেতে বলে,,,,, অতীতের শত্রু,, আর কিছু ভাবতে পারলে না,,, চুপ করে তো একদমি ছিলে না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সায়ন আমার দিকে একদম সিরিয়াস লুক দিয়ে বলে,,, আচ্ছা তুমি অতীতে কাওকে ভালোবাসতে না তো আবার, হয়তো তোমার কোনো প্রেমিক ছিলো, যে তোমাকে ভালোবাসতো আর তুমি তাকে।
আমি গভীর চিন্তার পরে বলি,,, না,, এমন হলে তো অনেক আগেই সে আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করতো, আমাকে এসে বলতো।
সায়ন,,,,,, হয়তো কোনো কারনে বলতে পারেনি।
আমার মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে, মনে করার চেষ্টা করছি কিন্তু সবি যে গুলাটে, তবে আমারো এমন হয় যে, কাওকে তো আমি ভালোবাসতাম হয়তো।

আমাকে এমন চিন্তিত দেখে অয়ন সায়নকে ইশারা দিয়ে না করে কিছু বলতে। প্রহর প্লেটে শব্দ করে আমার আর্কষণ পাওয়ার জন্য,আমিও তার দিকে তাকায়,প্রহর আমাকে বলে,,, এসব নিয়ে এখন চিন্তা করে কোনো লাভ নেয়, বুঝলেন মেম। এসব কিছু হলে তো এতো দিনে ঠিক যেনে যেতে।
আমি চিন্তিত হয়ে বললাম,,,,,,, অফফ এসব ভাবতে গেলে আমার মাথা ব্যাথা করে।
অয়ন অস্থির হয়ে বললো,,,, এসব ভাবার তোমার কোনো দরকার নেয় নীর, এ সব ফালতু কথা সায়ন মজা করে বলেছে।
সায়ন,,,,আরে হ্যাঁ আমরা তো জাস্ট মজা করছিলাম। সরি ফর দ্যাট।
,,,, ইট’স ওকে,, সরি বলার দরকার নেয়।
অয়ন আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,,,, অতীতের শত্রু হোক বা কাছের তাকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলবো, তোমার কিছু হতে দিবো না।

আমি হালকা হেঁসে বললাম,,,,,, আমি জানি।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই রুমে গেলাম, আমার কিছু ভালো লাগছে না, মাথায় শুধু ঐসব কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, কিন্তু আমার চোখ আকাশ দেখছে না, আমার চোখ অতীত দেখার চেষ্টা করছে।
হঠাৎই কারো স্পর্শে বাস্তবে ফিরে এলাম। অয়ন আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরেছে। জরিয়ে ধরে আমার ঘাড়ে একটা কিস করলো, আমি চমকে গিয়ে বললাম,,,, কি করছেনটা কি।
অয়ন নেশা ভরা কন্ঠে বললো,,, তোমাকে ভালোবাসার চেষ্টা করছি।
আমি মুখটা বেকিয়ে বললাম,,,,, এতো ক্ষন ফ্লাইটে থেকে আপনি টায়াট হয়ে গেছেন না।
অয়ন আমার ঘাড়ে তার নাক ঘষতে ঘষতে বললো,,,, হুমম অনেক টায়াট হয়ে গেছি। এখন তুমি ভালোবাসা দিলে, আমার ভালো লাগবে।

,,,,আরে আপনি রেস্ট করলে ঠিক হয়ে যাবেন।
,,,,, না, তোমাকে ভালোবাসলে ঠিক হয়ে যাবো।
আমি অয়নকে ছাড়িয়ে কোমরে দু হাত রেখে বললাম,,, যান চুপচাপ ঘুমাতে জান।
অয়ন আমার দিকে এগিয়ে এসে বলে,,,, আমি অনেক তৃষ্ণার্ত নীর, আই ওয়ান্ট ইউ।
বলে আমাকে কোলে করে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। ওনি আমাকে কিস করতে নেয়, আমি আমার মুখে হাত রেখে বলি,,, আমাকে স্পর্শ করবেন না, বলে দিলাম।
ওনার চেহেরাটা আমার কানের কাছে এনে নেশা ভরা কন্ঠে বলে,,, সত্যি করে বলবে, আমার স্পর্শ তোমার ভালো লাগে না, কাছে পেতে ইচ্ছে করে না তোমার, হুম
এটা বলে আমার দিকে যেভাবে নেশায় তাকিয়ে আছে, তাতেই আমি দিশেহারা, আর বলবো কি। অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,, আমি জবাব পেয়ে গেছি।
এটা বলে মুখ থেকে আমার হাত সরিয়ে, নিজের দু ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আমার ঠোঁটে।

প্রহর তার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে স্নেহার অনেক গুলো মিসকল। প্রহর শুধু একটা ছোট মেসেজ লিখে পাঠিয়ে দেয় যে, কাল দেখা হবে। এটা লেখার পর নিজের মোবাইল অফফ করে শুয়ে পড়ে।
বেলকোনির দরজা খুলা তাই, সেখান দিয়ে জোরে বাতাস আসায় মারুর ছবি থেকে পর্দাটা পড়ে যায়,যেটা প্রহর এঁকেছিলো। প্রহর মারুর ছবির দিকে তাকিয়ে অতীতে ফিরে যায়।
অতীত,,,,,,

মারু তাদের কাল ঘুরাতে নিয়ে যাবে এটা বলে, দুজনে তাদের বাসায় ফিরে যায়। যেতেই তাদের মামা রিফান খান বলে,,,, তোরা কোথায় গেছিলি, এখানের কিছু চিনিস, যদি হারিয়ে যেতি তখন।
অয়ন,,,,আরে মামা,তোমাকে এখানে কে না চিনে চেয়ারম্যান বলে কথা,তোমার নাম বললেই বাসায় এনে পৌঁছে দিতো। তাছাড়া মোবাইল ফোন তো আছেই, শুধু শুধু চিন্তা করে লাভ নেয়। প্রহরের কাঁধে হাত রেখে বলে,,, চল প্রহর ছাদে যায়।
প্রহর তার কাঁধ থেকে অয়নের হাতটা সরিয়ে বলে,,,এই গরমে আর প্রখর রোদে তুই যা ছাদে, আমি তো সাওয়ার নিতে গেলাম। ছাদে যাওয়ার মজা তো যখন রোদ থাকবে না, মিষ্টি বাতাস থাকবে, তখনি ভালো লাগে।
,,,,কথাটা অবশ্য ঠিক, সাওয়ার তো আমিও নিবো ভাবছি।

বলে প্রহরের দিকে তাকায়, প্রহর অয়নের তাকানো দেখে দেয় দৌড়, পিছনে পিছনে অয়নও দৌড় দেয়।কারন দুজনে একি রুমে থাকে সো ওয়াশ রুম ও একটা। প্রহার তাড়াতাড়ি দৌড়ে ওয়াশ রুমে ডুকে অয়নকে ধাক্কা দিয়ে দরজা বন্ধ করে ফেলে।
অয়ন বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে একটা বিরক্তি নিশ্বাস ফেলে বলে,,,, দূররর,এখন কি করবো।
প্রহর দরজাটা একটু ফাঁক করে মাথাটা বের করে বলে,,, যা ছাদে গিয়ে রোদ পোহা, না হলে মামার অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে তাদের সাথে আড্ডা দে। দেখ গিয়ে হয়তো তোর ড্রিম গার্ল পেয়ে যেতে পারিস।
বলে প্রহর দরজা বন্ধ করে দেয়,অয়ন বিছানায় শুয়ে ভাবতে থাকে, ড্রিম গার্ল তো মনে হয় পেয়ে গেছি, এখন মনে হয়না অন্য কোনো দিকে মন যাবে। লাভ ইন ফাস্ট সাইট,,,, নোট বেড [খারাপ না]

দুজনে সাওয়ার নিয়ে খেতে আসে, দুজনের জন্য অনেক কিছু রান্না করা হয়। একদম পঞ্চম ভোগ। এতো কিছু দেখে অভাক হয়ে প্রহর বলে,,, মামা পুরো গ্রাম দাওয়াত দিছো নাকি। এতো কিছু খেলে আর উঠে দাঁড়ানো যাবে না।
রিফান খান,,,,, এই তো কয়েকটা খাবার, আরো কতো কিছু রান্না করা রয়ে গেছে, সে পড়ে হবে নে,, আমার ভাগ্নেরা আসবে আর তাদের জন্য এটুকু করবো না, সারা জীবন ঐ বিদেশের ঘাস পুস খেয়ে দেশের স্বাদ ভুলে গেছিস, এখন খেয়ে আবার মনে কর।
অয়ন,,,,,, মামা তোমার ভাষন শুনা থেকে ভালো আমরা খাওয়া শুরু করে দিয়।
দুজনে খাওয়া দাওয়া শেষ করে পেট ধরে বসে বলে,,, খাবার গুলো জোস ছিলো, কিন্তু সমস্যা হলো বেশি খেয়ে ফেলেছি, এখন উঠতে পারছি না।

প্রহর,,,,অয়ন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যা।
অয়ন,,,, তাহলে আমাকে উঠাবে কে।
দুজনে কষ্ট করে গিয়ে বিছানায় গা ছেড়ে দেয়। অয়ন পেটে হাত দিয়ে বলে,,,,, আমার ডায়েট এর বারোটা বেঝে গেলো।
প্রহর,,,,,, সেম, অয়ন আমি ভাবছিলাম কি, কালকে না গেলে হতো না, আরো কয়েকদিন থাকি এই জায়গায়, কতো দিন পরে আসলাম মামার বাড়ি।
অয়ন,,,,, আমিও তাই ভাবছিলাম,,তাছাড়া জায়গাটা তো খারাপ না। আরো তিন চারদিন থাকায় যায়।
প্রহর,,,,,, হুমম আমিও তাই ভাবছিলাম।
কাল সকালে দুজনে উঠে রেডি হয়ে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ে, মারুর বাসার সামনে এসে দাঁড়ায় কিন্তু কথা হচ্ছে, মারুকে ডাকবে কিভাবে। দুজনে একটা বুদ্ধি করে পানি খাওয়ার বাহানায় দুজনে ভিতরে যায়, সেখানে মারু বারান্দায় বসে পা ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে পেয়ারা খাচ্ছিলো।

দুজনকে দেখে পেয়ারা গলায় আটকে গেলো মনে হলো। দুজনে ইশারা দিয়ে বাহিরে আসতে বললো। তারপর তারা পানি খেয়ে বাহিরে এসে অপেক্ষা করতে থাকে, মারু বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে বের হয়।
এসে কোমরে ধরে বলে,,,,, এতো সকাল সকাল কে আসে।
প্রহর হাসি দিয়ে বলে,,,,, আমরা আসি।
মারু ব্রু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,,, আপনাদের কোনো উল্টা পাল্টা নিয়ত নেয় তো আবার, শুনেন আমাকে গ্রামের অশিক্ষিত মেয়ে মনে করবেন না, আমার সাথে কিছু করতে এলে দুজনকে জানে মেরে ফেলবো বলে দিলাম, আমাকে আপনারা চিনেন না।
অয়ন,,,, তো চিনাও, আমি মানে আমরা চিনতে চাই তোমাকে।
প্রহর,,,,, আমাদের দেখে তোমার কি কোনো বাজে ছেলে মনে হয়৷
,,,,মনে হওয়াতে কি এসে যায়।

অয়ন,,,,,ঠিক আছে, বেশি কথা না বলে,, ঘুরাতে নিয়ে যান।
,,, ঠিক আছে, চলেন কোথায় যাবেন।
প্রহর,,,,যেখানে আপনি নিয়ে যাবেন।
মারু একটা বিরক্তি ভাব নিয়ে, নদীর পাড়ে নিয়ে যায় ঘুরাতে। কাশ ফুটে একাকার হয়ে আছে। আমি কয়েকটা কাশ ফুল নিয়ে দুজনের হাতে ধরিয়ে দিয়, আর একটা আমি নিয়ে হাঁটছি।
প্রহর,,,,,, জায়গাটা অনেক সুন্দর, এখানে বসে অনায়সে একটা কবিতা লিখা যায়।
,,,আপনি কি লেখক নাকি।
,,,,,, হুমম,, এমনি কিছু একটা।
,,,,শুনেছি লেখকরা নাকি বোরিং হয়।

প্রহর একটু হাসি দিয়ে বলে,,,, আমার তো তা মনে হয়না, তবে আপনার মনে হলে আপনি আমাকে চান্স দিয়ে দেখতে পারেন, মানে বন্ধুত্ব করে, এক মূহুর্তের জন্যও বোর হলে কথা বলা বন্ধ করে দিবো।
,,,হুমম বেশ ইন্টারেস্টিং,,
অয়ন,,,,,, আচ্ছা ডক্টরদের কি মনে হয়।
,,,শুনেছি ওরা নাকি একটু লুচু টাইপের হয়।
প্রহর ফিক করে হেঁসে দেয়, আমি একটু চোখ ছোট করে তাকিয়ে বললাম,,,,, কেনো আপনি ডক্টর নাকি।
অয়ন মুখ বেকিয়ে বললো,,,,, এক বছর পরে হয়ে যাবো,, আর ডক্টরা মোটেও লুচু হয়না, এমন ফালতু কথা কোথায় থেকে শুনেছেন।
,,, যেখান থেকেই শুনেছি কিন্তু শুনেছি। আচ্ছা আপনাদের নামটা কি সেটাই তো জানা হলো না।
প্রহর বলে,,, আমার নাম প্রহর আর ওর নাম অয়ন।

আমি একটু হেঁসে দিয়ে বললাম,,,,, অয়ন আবার কেমন নাম,, নয়ন শুনেছে কিন্তু অয়ন শুনিনি।
বলে হাসতে থাকে, অয়ন রাগে বলে,,,, শুনোনি তো এখন শুনে নাও। অয়ন মানে কি যানো।
,,, না, কি মানে।
অয়ন,,,, বাংলা দেশে থেকেও বাংলা ভাষার জ্ঞানের খুব অভাব দেখা যায়, তোমার মনে।
আমি রাগে বললাম,,,আপনি তো জানেন তো বলেন শুনি কি এমন হাতি ঘোড়া অর্থ।
অয়ন,,,, হাতি ঘোড়া না,, অয়ন মানে হলো অগ্নি আগুন।
,,, ওহহ তাই তো আগুনের মতো মাথাটাও গরম।
প্রহর,,,, আচ্ছা আমার নামটা কেমন সেটা বললে না।
,,,আপনার নামটা আমার ভালো লেগেছে।

অয়ন মুখ ফুলিয়ে ফুলিয়ে হাঁটছে, লুচু বলাতে মনে হয় মন না মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। একটু পরে আমি নদীর মাঝখান দিয়ে বাঁশের সেতু। তো আমি এটা দেখিয়ে বললাম,, আমরা এর উপর দিয়ে যাবো।
প্রহর,,,,, কিন্তু এটা তো নিরাপদ মনে হচ্ছে না, মাত্র একটা বাঁশে পা রাখার জন্য আরেকটাতে ধরার জন্য আছে।
আমি একটু হেঁসে বললাম,,,,, কেনো ভয় পেলেন নাকি, চিন্তা করেন না ডুববেন না,গলা সমান পানি, আর আপনারা যে লম্বা।
অয়ন,,,, আমরা সাঁতার পারি,,ওই চল এখন গলা সমান পানি থাকুক বা মাথ সমান, যাবো মানে যাবো।
,,,আস্তে আস্তে কিন্তু যাবেন,পড়ে টরে যাবেন না তো আবার।
অয়ন,,,এখন মাঝখানে গিয়ে হাত উঠিয়ে দেখাবো, চল তো।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৫

প্রহর ও অয়নের পিছনে পিছনে যায়। আমি সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছি। দুজনে মাঝখানে গিয়ে হাত উঠিয়ে একটা ভাব নিয়ে দেখাচ্ছে,মনে মনে যে ভয় পাচ্ছে এটা বুঝা যাচ্ছে।
আমি একটা ডেবিল মার্কা দিয়ে সেতুর বাঁশ ধরে নাড়াতে থাকি, দুজনে চিল্লিয়ে বলতে থাকে,,আরে পরে যাবো, কি করছেনটা কি।
প্রহর,,,,,, আরে পড়ে যাবো, আমাদের কি এখানে ফেলার জন্য এনেছেন নাকি।
দুজনে শক্ত করে ধরে থাকে, আমিও নাছোড় বান্দা, আমার কিছু বান্ধবীদের আগেই এখানে লুকিয়ে রেখেছিলাম, তাদের ডাকি, তারাও এসে জোরে জোরে নড়াতে থাকে, আর তারা নদীতে পড়ে যায়, আমরা হাসতে থাকি।
আমি জোরে বললাম,,,, ঘুরার স্বাদ মিটেছে, নাকি আরো বাকি আছে।

অয়ন,,,, ছাড়বো না তোমাকে, বলে দিলাম।
,,,, আপনার মাথা একটু বেশিই গরম তাই ঠান্ডা করতে সাহায্য করেছি বুঝলেন, দুজন এখানে সুইমিং করুন আমরা যায়।
বলে হাসতে হাসতে চলে যায়। এই কথা মনে করাতেই প্রহর হাসতে হাসতে অতীত থেকে ফিরে আসে।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৭