আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৩ || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৩
Maishara Jahan

প্রহর চলে যায়, মারু বসে বসে ভাবছে,,, লোকটাকে অনেক চিনা চিনা লাগলো,, আর এক মিনিট,, এখন অয়ন বাসায় নেয়, মারু পালানোর এতো বড়ো সুযোগ কোথায় পাবি। কিন্তু পালিয়ে যাবো কোথায়,, আরে দূর আগে বের হয়ে নিয় পড়ে ভাবা যাবে।
মারু চুপি চুপি রুম থেকে বের হয়ে মেইন দরজার দিকে যায়, আশেপাশে ভালো করে তাকিয়ে চুরের মতো বের হতেই চার পাঁচটা বডিগার্ডের মতো লোক এসে হাজির, ভয়ে দৌড় দিতে ইচ্ছে করছে।
ওদের মধ্যে একজন বললো,,মেম আপনি বের হতে পারবেন না,কিছু লাগলে বলেন।

আমি মনে একটু সাহস জোগার করে মুখে হাসি এনে বলি,,, একটু কাজ আছে তাই বাহিরে যাচ্ছি, একটু পরেই চলে আসবো,হিহিহি।
বডিগার্ড একদম কঠোর ভাবে বললো,,, আপনাকে বের হতে দিলে অয়ন স্যার আমাদের মেরে ফেলবে।
এবার একটু রাগ দেখিয়ে বললাম,,,,,,আরে দূররর এতো ভয় পাওয়ার কি আছে আপনার অয়ন স্যারকে, আপনার বডি দেখছেন, আপনারা সবাই মিলে ধরলে ঐ অয়ন বাঁচবে। এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেয়। আমি বলছি আমাকে যেতে দিন।
বডিগার্ড এবারো কঠোর ভাবে বললো,,,,, সরি মেম অয়ন স্যারের হুকুম, আপনাকে বাহিরে কোনো ভাবেই যেতে না দিতে। আপনি বাহিরে গেলে আমাদের অনেক প্রবলেম হবে৷

,,, আরে দূরর আপনার অয়ন স্যার আমাকে দেখে ভয় পায়, আমার হাত দেখতে অনেক নরম কিন্তু এভাবে মুঠ করলে অনেক শক্ত হয়ে যায়, এক ঘুষিতে আপনার স্যারকে উগান্ডা পাঠিয়ে দিতে পারবো। আর আমাকে এখন যেতে না দিলে আমি পরে অয়নকে বলবো আপনারা আমাকে যেতে দেননি, তখন আপনাদের কি হবে।
,,,, ঠিক আছে মেম আমি একবার অয়ন স্যারকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে নিয়।
বডিগার্ড ফোনটা বের করতেই মারু হাত দিয়ে থামিয়ে বলে,,, আরে থাক থাক লাগবে না, আমি তো বাহিরে বলতে এই বাগানে যাওয়ার কথা বলছিলাম, আপনারা মেইন গেডে দাঁড়িয়ে থাকেন আমি একটু বাগানটা ঘুরি।
বডিগার্ড,,,,, এই কড়া রোদে আপনি বাগানে ঘুরবেন।
আমি ব্রু কুঁচকিয়ে বললাম,,, কেনো আপনার কোনো সমস্যা আছে।
,,না,, আপনার ইচ্ছে করলে পিল্জ জান।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আমি হুম বলে না চাইতেও বাগানে চলে আসলাম, আল্লাহ!! রোদে মনে হয় আজ পুড়েই যাবো। এতো গরমে ভালো জিনিস ও ভালো লাগবে না। একটু হাঁটা হাঁটি করে উপরে তাকিয়ে বলছি,,, আরে সূর্য আমার উপরেই কি আজ আপনার সব তাপ ঢালবেন নাকি। আপনার কি একটু মায়া দয়াও নাই। একে বলে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা।
এদিকে মারু দৌড়ে গরমে পাগল হয়ে, গাছ পালা আর সূর্যের উপরে নিজের রাগ দেখাচ্ছে, আর এদিকে উপর থেকে প্রহর এগুলে দেখে হাসছে।

মারু মেজাজ খারাপ করে ভিতরে যায়, গিয়ে সোজা ওয়াশ রুমে গিয়ে গোসল করে। অনেক ক্ষন পরে গোসল করে বের হয়ে দেখে অয়ন সোফায় বসে আছে। অয়ন মারুকে দেখে দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
মারু একটা ইনোসেন্ট হাসি দিয়ে বলে,,,,,আপনি এসে গেছেন।
অয়ন মারুর দিকে এগোতে থাকে, মারু পিছনে যেতে যেতে বলে,,,, আ আ আপনি আমার দিকে এভাবে কেনো আসছেন।
অয়ন ডেভিল একটা হাসি দিয়ে বলে,,,,,তোমার শক্তি দেখার জন্য।
আমি যেতে যেতে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়, অয়ন আমার সামনে এসে দাঁড়িয়। ভয়ে আমার শরীর কাঁপছে, কোনো রকমে বললা,,, মানে।

ওনি ওনার চেহেরা কিছুটা আমার সামনে এনে বললো,,,, তুমিই তো বলেছো, আমি নাকি তোমাকে দেখে ভয় পায়। তোমার হাতের মুঠোয় নাকি অনেক শক্তি। সেটাই আমি দেখতে চাই কতো শক্তি আছে।
আমি জোর করে হাসি দেওয়ার চেষ্টা বললাম,,,,, ঐ বডিগার্ডরা আপনাকে যা যা বলেছে সব মিথ্যা।
অয়ন দেওয়ালের এক পাশে হাত রেখে বললো,,,,, ওরা আমাকে কিছুই বলেনি।
,,,তাহলে আপনি জানলেন কি করে।
অয়ন আরেকটু কাছে এসে আমার চোখে চোখ রেখে বললো,,,,, আমার এই দুই চোখ সব সময় তোমাকে ফলো করে, তুমি কি করো না করো সব কিছুর দিকে নজর রাখে।
আমি কয়েকটা ডোগ গিলে বলি,,,, আমাকে নজর বন্ধী করে রাখবেন নাকি।

অয়ন মুশকি হেঁসে বললো,, বন্দী তো আমি তোমাকে অন্য জায়গায় করতে চাই, কিন্তু তুমিই তো বুঝো না,শুধু পালিয়ে যেতে চাও, আর এই জন্য দরকার পরলে তোমাকে শুধু নজর বন্দী না ঘর বন্দী করে রাখতেও ভাববো না৷
কথা শুনে আমার রাগ করা উচিত নাকি কান্না করা উচিত কিছু বুঝছি না, না বুঝেই বললাম,,,,, আপনি এমন কেনো।
অয়ন একটু দূরে গিয়ে বললো,,, আমি যেমনি হয় শুধু তোমারি আর তুমিও। আচ্ছা সব কথা বাদ দিয়ে তোমার শক্তি দেখাও আমাকে, দেখি।
আমি মন খারাপ করে বলি,,, আমার শক্তি ফুঁসস হয়ে গেছে, তাছাড়া দেখাবো কিভাবে।
অয়ন টেবিলের পাশে নিচে দুই হাঁটু গেড়ে বসে বলে,,, যদি আমাকে পাঞ্জায় হাড়াতে পারো তাহলে তোমাকে আমি এখান থেকে যেতে দিবো।

আমি একটা লাফ দিয়ে বললাম,,,, সত্যি।
অয়ন টেবিলে হাত রেখে বললো,,,, হুমম৷ সত্যি।
আমি মনে মনে ভাবলাম আজ শরীরের সব শক্তি লাগিয়ে দিবো, এতো দিন মা যে দুধ ডিম খায়িয়েছে তার কছম।
আমিও আল্লাহর নাম নিয়ে অয়নের হাত ধরে বসে পড়লাম, পাঞ্জা লড়াই শুরু, ওনি শুধু হাত ধরে আছে আর আমি শরীরের সব শক্তি লাগিয়ে দিচ্ছি তাও কোনো ঘোড়ার ডিম হচ্ছে না।

আর না পেরে দুই হাত লাগিয়ে দিলাম, অয়ন কিছু না বলে শুধু তাকিয়ে আছে, আমি প্রাণ পন চেষ্টা করছি। অনেক ক্ষন পর হাঁপিয়ে এক হাত ছেড়ে দিয়ে বললাম,,,, বুঝতে পেরেছি আমার মায়ের খাওয়ানো ডিম দুধের কোনো দাম নেয়, আমি পারবো না।
আমি আমার আরেক হাত ও ছেড়ে দিতে চাই কিন্তু অয়ন ধরে রেখেছে, আমি আবারো চেষ্টা করি হাত ছাড়ানোর। এবার অয়ন আমার হাতটা জোরে চাপ দিয়ে ধরে, নিজের দিকে টান দেয়৷ আমি অনেকটা অয়নের দিকে ঝুঁকে যায়।

অয়নের চোখে এখন স্পষ্ট রাগ দেখা যাচ্ছে। সে রাগে বলে,, কি বলেছিলাম আমি, আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা না ভাবতে, কিন্তু তাও আজ চেষ্টা করেছো। আজ মাফ করছি কিন্তু আরেক বার এমন ভুল হলে এর ফল তোমার জন্য অনেক কষ্টকর হবে।
অয়ন তার চেহেরা আমার চোখের একদম সামনে এনে বলে,,,,, আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভুলে যাও, সারা জীবন তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে৷ আমায় ছেড়ে কোথাও যেতে দিবো না।
হাতে ব্যাথা পাওয়ার কারনে মারুর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পাড়ে, অয়ন বিষয়টা বুঝতে পেরে হাত ছেড়ে দেয়। তার পর উঠে গিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়।

মারু বসে বসে ভাবতে থাকে,, এই লোকটা আমার কাছ থেকে কি চাই, আর আমারি বা কেনো, ওকে এতো আপন লাগে। আর এভাবে আটকে রাখার মানেটাই বা কি। সুন্দর মতো আমার মা বাবার কাছে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলেই বা কি হতো হুহহ। এভাবে জোর করার কি ছিলো।
মারু রেডি হয়ে বসে থাকে, অয়ন সাওয়ার নিয়ে বের হয়। মারু একবার তাকিয়ে অন্য দিকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলে,,,,, এই আপনি পুরো কাপড় পড়ে ওয়াশ রুম থেকে বের হতে পারেন না, শুধু টাওয়াল পড়ে চলে আসেন।
অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,,,, আমার রুম আমি যেভাবে খুশি আসবো, থাকবো।
আমি অয়নের দিকে ফিরে বলি,,, এক্সকিউজ মি, এটা আমারো রুম ওকে, আপনার একার না।

,,ওহহ তাহলে আমিও তোমার,, যাক তাহলে নিজেকে আমার বউ হিসাবে মানো তাহলে।
,,, জ্বী না,, আমি বলছি যে আমিও তো এই রুমে থাকি নাকি। আর একটা মেয়ের সামনে এভাবে আসতে লজ্জা করে না।
,,,না করে না, আমি আমার বউয়ের সামনে এসেছি কোনো অন্য মেয়ের সামনে না,, তুমি চাইলে তুমিও
বলে আটকে যায়, মারু বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে বলে,,, আমিও চাইলে কি হুমম।
অয়ন শার্ট পড়তে পড়তে বলে,,,,, না কিছু না।
,,, কিছু না মানে,, আপনি কি ভাবেন আমি অবুঝ,আপনি কি বলতে চান আমি বুঝি না।
অয়ন মারুর দিকে ফিরে দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে,,, বুঝো যখন তাহলে জিজ্ঞেস করছো কেনো। আমার মুখ থেকে শুনতে চাও বুঝি।
আপনার সাথে কথা বলাই ভুল, বলে মারু রুম থেকে বেরিয়ে যায়। যেতেই সবাই তাকে খাবার টেবিলে ডাকে। মারু গিয়ে চুপচাপ বসে পড়ে।

একটু পরে অয়ন প্রহরকে নিয়ে নিচে আসে। প্রহর বসতেই মারু জিজ্ঞেস করে,,,, কি লেখক বাবু কি এতো ভাবছেন, নিজের কোনো কাহিনি নাকি।
অয়ন সাথে সাথে বসে মারুর হাত ধরে বলে,,,,,, নীর তোমার প্রহরের কথা মনে আছে, আর কি কি মনে পড়েছে।
মারু অয়নের দিকে তাকিয়ে আছে, ওর কথা বুঝার চেষ্টা করছে৷ প্রহর হেঁসে দিয়ে বলে,,,, অয়ন তোর মজা করার অভ্যাসটা এখনো গেলো না, আরে নীরকে না মানে মারুকে আমি বলেছি আমাদের সম্পর্কে কিছু।
অয়ন হতাশা নিয়ে বলে,,ওহহহ।
অয়নের বাবা,,,,,, অয়ন এতো চিন্তিত হয়ে লাভ নেয়, সব ঠিক হয়ে যাবে।
অয়ন কোনো জবাব দিচ্ছে না, শুধু চুপচাপ নিজের খাবার খাচ্ছে।
অয়নের বাবা কিছু বলতে নিয়েও বললো না। আমি শুধু ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। প্রহর সব সব নিরবতা ভেঙে বললো,,আরে মারু তুমি তো দেখি কিছুই খাচ্ছো না।

অয়ন ভাতের এক নলা নিয়ে আমার মুখের সামনে ধরে, আমি অবাক হয়ে অয়নের দিকে তাকায়, অয়ন ইশারা করে খেতে বলে। আমি ও ইশারা করে না করে দিয়। অয়নের মা হাসতে হাসতে বললেন,,, আরে খাও খাও আমার ছেলে এতো ভালোবেসে দিয়েছে।
লজ্জায় আমি কারো দিকে তাকাতে পারছি না। এবার অয়ন রাগী চোখে খেতে ইশারা করে, আমি ও ভয়ে খেতে থাকি। কিছুই করার নেয়। অয়ন বার বার মুখের সামনে ধরছে আর আমার খেতে হচ্ছে। এখানে কারো দেখি তেমন লজ্জা নেয়। সত্যি বলতে, জানি না আমার এতো ভালো কেনো লাগছে, নিজের অজান্তেই চোখের কোনায় পানি জমে গেছে। মনের মধ্যে আলাদা একটা তৃপ্তি পাচ্ছি।
প্রহর ওদের দিকে তাকিয়ে মুশকি হেঁসে নিজের চোখ সরিয়ে নেয়। নিচের দিকে তাকিয়ে খাবারে মন দিয়েছে, আস্তে আস্তে তার মুখের হাসিটাও চলে গেছে।

দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে যায়,, একজনের চিৎকারে বাড়ির সবাই নিচে চলে আসে। অয়ন বড় একটা হাসি দিয়ে বলে,,সায়ন তুই,, বলে জরিয়ে ধরে। সায়ন ও জরিয়ে ধরে।
সায়ন,,,,,আরে ভাই আমাকে একা ফেলে চলে এলে তোমরা সবাই, এটা আমার সাথে করতে পারলে।
প্রহর,,, সায়ন আমিও কিন্তু এখানে আছি।
সায়ন প্রহরকে গিয়ে জরিয়ে ধরে বলে,,,,তুমি আমাকে ভুলে গেলেও আমি যায়নি।
প্রহর,,,,,,, তোকে তো চাইলেও ভুলতে পারবো না, ছোট ভাই বলে কথা।
সায়ন,,,,ভাই তুমি নাকি বিয়ে করেছো,, ভাবী কোথায়।
অয়ন ইশারা দিয়ে দেখায়,সায়ন আমার দিকে তাকায় আমি শুধু মুশকি হাসি। সায়ন আমার কাছে এসে বলে,,আমার আসার কথা কাল ছিলো কিন্তু আপনাকে দেখার জন্য আজ চলে এসেছি। আচ্ছা ভাবী আপনার কোনো ছোট বোন আছে নাকি।
,,না কেনো।

সায়ন হেঁসে বলে,,, ভালো হয়েছে নেয়, আমার জিএফ আছে, আপনার বোন থাকলে সেও হয়তো আপনার মতো সুন্দর থাকতো তাহলে আবার গন্ডগোল হয়ে যেতো।
সায়নের কথা শুনে মারু হেঁসে দেয়। প্রহর সায়নের কানে ধরে বলে,,, এসেই শুরু হয়ে গেছে জনাব। যা আগে ফ্রেশ হয়ে আয়।
রাতে সবাই এক সাথে বসে আমাদের কথায় বলছে।
সায়ন,,,,, আরে দূরর আমাকে ছাড়া বিয়ে করেছো, এই বিয়ে আমি মানি না, আমার ভাইয়ের বিয়ে আর কোনো আয়োজন হয়নি, এটা কোনো কথা হলো। আমি খুব তাড়াতাড়ি একটা পার্টি রাখবো কি বলো প্রহর ভাইয়া।
প্রহর হেঁসে শুধু হুমম বলে। আমার এখানে কিছুই বলার নেয়। সবাই এসব কথা বার্তায় বলছিলো। অনেক ক্ষন পরে এসে বিছানায় নিজের শরীরটা লাগালাম, আহহ শান্তি।

তখনি দেখছি অয়ন আসছে, আমি চুপচাপ ঘুমের বান ধরে থাকি। অয়ন এসে মারুর দিকে তাকিয়ে মুশকি হেঁসে দরজা বন্ধ করে লাইট অফ করে দেয়, শুধু ডিম লাইট জ্বলছে। অয়ন এসে আমার পাশে শুয়ে পড়ে।
ওনি কি এখানে শুবেন নাকি,, আল্লাহ আমার যেনো কেমন কেমন লাগছে। জীবনের প্রথম কোনো ছেলে আমার পাশে শুয়েছে। আমি একটু গুটি শুটি মেরে শুলাম। অয়ন শুয়ে মারুকে দেখে হাসছে। মারু উল্টো দিক করে শুয়ে আছে।।
অয়ন আমাকে পিছন দিক দিয়ে জরিয়ে ধরে, আর গায়ে যেনো কারেন্ট লেগে গেছে। আমি অয়নকে ধাক্কা দিয়ে উঠে বসি। আমার হার্ট বিড এখনো খুব জোরে জোরে ধুক ধুক করছে।
অয়ন উঠে বসে বলে,,,,কি হয়েছে।

আমি একটু রাগী ভাবে বলি,,,,, কি হয়েছে মানে, আপনি আমাকে জরিয়ে ধরেছেন কেনো। আপনি আমার সাথে ঘুমাবেন না।
,,এটা আমার রুম আমি এখানেই ঘুমাবো। আর তুমি আমার পাশে শুয়ে থাকলে জরিয়ে ও ধরবো।
,,শুবো না আপনার পাশে আমি।
অয়ন লম্বা হয়ে শুয়ে বলে,,, এই বিছানা থেকে এক পা নামলে খবর আছে।
,,,কি করবেন আপনি হুমম,, বলে নামতে নিয়ে অয়ন আমাকে টান দিয়ে নিজের বুকে ফেলে শক্ত করে আমাকে চেপে ধরে। আমি ছটফট করে বলছি,,,,,, আরে কি করছেন,, ছাড়েন আমাকে।
অয়ন আরো শক্ত করে ধরে বলে,,, চুপচাপ আমার বুকে এভাবেই ঘুমাও এটাই তোমার শাস্তি।

অনেক জোরাজোরি করেও লাভ হয়নি এক চুল ও নড়তে পারিনি। তাই শান্ত হয়ে শুয়ে আছি। ওনার হার্ট বিড ও অনেক দ্রুত চলছে। অনেক ভালো লাগছে এই হার্ট বিডের শব্দ শুনতে। এই শব্দ শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না।
সকালে উঠে দেখি আমার পাশে কেও নেয়। ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়,তখন জানতে পারি অয়ন হসপিটালে গেছে অনেক আগে, একটু পরেই চলে আসবে। বাহিরে অনেক জোরে বৃষ্টি হচ্ছে।
আমার ভালো লাগছে না, বার বার দরজায় দিকে তাকাচ্ছি, কখন আসবে ভেবে। প্রহর আমার কাছে এসে বসে, দুজনে কথা বলছি তখনি দরজার বেল বাঝে, আমি দৌড়ে যায়। গিয়ে অবাক হয়ে যায়।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২

রিয়ান দাঁড়িয়ে আছে, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে পুরো। আমাকে হঠাৎ করেই জরিয়ে ধরে। আমি কিছু বুঝার আগেই বলে,,, তুই ঠিক আছিস তো, জানিস আমাকে ঐ অয়ন আটকে রেখেছিলো। ছেড়ে দেওয়ার পর পরি আমি তোর কাছে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু মা বাবা ভয়ে আসতে দেয়নি। অনেক কষ্টে এসেছি তোকে নিতে।
আর কিছু বলার আগেই প্রহর রিয়ানকে আমার থেকে ছাড়িয়ে ঘুষি মেরে ফেলে দিয়ে বলে,,,তোর সাহস কি করে হয় মারুর গায়ে হাত দেওয়ার। প্রহর রিয়ানকে মারতে যায় আমি গিয়ে আটকায়। তখনি অয়ন চলে আসে।রিয়ানকে দেখে রেগে গিয়ে বলে,,, তুই এখানে, সাহস কি করে হলো তোর এখানে আসার।

রিয়ান,,,,,তোর সাহস কি করে হলে আমার মারুকে বিয়ে করার। আমরা ভালোবাসি দুজনকে।
এটা শুনে অয়নের মাথায় রাগ উঠে যায়, সে রিয়ানকে মারতে যায়, আমি অয়নকে আটকাতে যায়। অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে, রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে।
অয়ন রিয়ান এর দিকে তাকায়, রিয়ান পুরো ভিজে আর মারুর শাড়ী সামনের সাইড পুরোটা ভিজা। অয়ন রাগী ভাবে মারুকে জিজ্ঞেস করে,, তোমার শাড়ী ভিজলো কিভাবে।
আমি কিছু বলার আগেই রিয়ান বলে আমাকে জরিয়ে ধরেছে তাই, তোর কোনো সমস্যা। এটা শুনে অয়ন প্রচুর রাগে রিয়ানকে একটা ঘুষি মেরে মারুর হাত শক্ত করে ধরে টেনে উপরে নিয়ে যেতে থাকে।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৪