আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৬ || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৬
Maishara Jahan

মারু জোর করে অয়নকে রুমে নিয়ে গিয়ে বসায়।অয়ন মারুকে জরিয়ে ধরে। মারু ছাড়াতে চাইলে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
আমাকে আস্টে পিস্টে জড়িয়ে ধরে বলছে,,,,,আজ তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি কি নিয়ে বেঁচে থাকতাম। তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি শেষ হয়ে যেতাম। আল্লাহ শত শত শুকরিয়া তোমার কিছু হয়নি।
আমি চুপচাপ বসে থাকি, কেনো জানি না, তবে অয়নকে আমার বাঁধা দিতে ইচ্ছে করছে না। মনে চাচ্ছে ওর বুকের গভীরে লুকিয়ে যেতাম। নিজের অজান্তেই আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায়।

কিছু ক্ষন পর অয়ন এক প্রকার তাড়াহুড়ো করেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সরি বলে। আমিও আমার হুশে চলে আসি। আমি অয়নকে ঠিক ভাবে শুয়িয়ে দিয়ে, উপরে কম্বল দিয়ে দিয়। আমি ফাস্টেট বক্স আনতে যেতে নিয়, অয়ন উঠে তাড়াতাড়ি বলে,,,,,কোথায় যাও।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি উনার চেহেরায় ভয়ের ছাপ। আমি শান্ত স্বরে বলি,,,,,, ফাস্টেট বক্স আনতে যাচ্ছি, জ্বরটা তো মাপতে হবে নাকি। আপনি চুপচাপ শুয়ে থাকেন।
উনি শুয়ে বললেন,,,,, হুমম।
আমি গিয়ে বক্সটা নিয়ে আসি। উনার জ্বরটা মাপি, ১০২ জ্বর। আমি অভাক হয়ে বললাম,,,,, এতো জ্বর নিয়ে আপনি কাজে গেছেন কি করে।

অয়ন মুখটা ভার করে বললো,,, আমি বুঝতে পারিনি যে এতো জ্বর।
আমি ব্রু কুঁচকিয়ে বললাম,,,,, একটা সত্যি কথা বলেন তো, আপনি ডক্টরি পাশ করেছেন তো নাকি নকল করে পাশ করেছেন।
অয়ন কপাল কুঁচকিয়ে বললো,,,,, মানেহহ
,,,মানেটা হলো এই যে, আপনার এতো জ্বর আর আপনি বুঝতে পারেন নি। নিজের শরীরেরটা বুঝতে পারেন না তাহলে অন্য জনেরটা কিভাবে বুঝবেন আর ঠিক করবেন।
অয়ন অন্য দিকে তাকিয়ে একটু আস্তে করে বললো,,,,, মাথায় সারা ক্ষণ তোমার চলে যাওয়া ঘুরতে থাকলে অন্য কিছু মনে থাকবে কি করে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

,,,,কি বললেন।
,,, নাহহ কিছু না।
,,,,হুমম শুনে ফেলেছি আমি,, আপনাকে আর ঐ চিন্তা করা লাগবে না।
অয়ন তাড়াতাড়ি শুয়া থেকে উঠে বসে বলে,,,,, মানে।
,,,মানেটাও এখন আমাকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আপনি বুঝে নিন না৷
অয়ন আমার হাত ধরে বলে,,,না পিল্জ, যা বলবে স্পষ্ট করে বলো, না হলে তোমার কথার মানে খুঁজতে খুঁজতে আমি হার্ট অ্যাটাক করবো নিশ্চিত।
,,,হয়েছে আর হার্ট অ্যাটাক করা লাগবে না,, আমি ভাবছি।
অয়ন আতংক নিয়ে বলে,,,, কি ভাবছো।
,,,ভাবছি আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়ায় যায়।
,,,,, মানে।

,,,,,অফফ সব একদম বুঝিয়ে বলতে হবে,, মানে আমাদের বিয়েটাকে আমি একটা সুযোগ দিতে চাই।
এ কথা শুনার সাথে সাথে অয়ন খুশিতে কি করবে না করবে বুঝে উঠতে পারছে না, আমাকে জরিয়ে ধরতে চেয়েও ধরেনি। উনার চেহেরার খুশি দেখে আমার মুখে হাসি চলে আসে৷
উনি খুশিতে বলেন,,,,,,উফফ আমি যে কি খুশি আজকে তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না৷ মনে হচ্ছে আমার বুকের উপর থেকে কেও পাথর সরিয়ে নিয়েছে।

,, হয়েছে এতো খুশি হয়ে লাভ নেয়, আপনি শুয়ে থাকেন, আমি আপনার জন্য কিছু নিয়ে আসছি। দেখে তো মনে হচ্ছে কিছুই খাননি।
আমি উঠে যেতে নিয় অয়ন আমার হাত ধরে টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। আমিও অয়নকে জরিয়ে ধরি। তখনি দরজায় টুকা পড়লে আমরা সরে যায়। সায়ন আসে রুমের ভিতরে। আমি চলে যায় অয়নের জন্য খাবার আনতে।
অয়ন,,,,,,, কে করেছে এমন কিছু জানতে পেরেছিস।
সায়ন,,,,,, না ভাইয়া কিছুই জানা যায়নি,, তবে মনে হচ্ছে আমাদের কাছের কেও করেছে।
,,,কাছের কেও মানে,,, তোর হঠাৎ এমন মনে হলো কেনো।
,,, কারন সবাই যার যার কাজ করছিলো, আর তার প্রমানও পাওয়া গেছে,শুধু বাড়ির লোকদের ছাড়া। কিন্তু বাড়ির লোকেরা কেও এমন কেনোই বা করবে।

,,, বাড়ির লোক,,, বাবা মারতে চাই না তো আবার নীরকে।
,,, বাবা কেনে মারতে যাবে ভাবীকে অদ্ভুত।
,,,,উনার আমাদের খুশি সহ্য হয় নাকি। আমরা খুশি থাকি এটা উনি চান না।
,,, তুমি সব সময় বাবাকে দোষারোপ কেনো করো আমি এটাই বুঝতে পারি না। আচ্ছা যাই হোক এটা যেই করে থাকোক আমি তাকে খুঁজে বের করবোইন,তুমি কোনো টেনশন নিয়ো না।
,,,হুমম।

বলে সায়ন চলে যায়। মারু নিচে যায় খাবার আনতে। কিচেনে যেতেই প্রহর ও কিচেনে ডুকে বলে,,,,, মারু তুমি ঠিক আছো তো, তোমার কোথাও লাগেনি তো।
,,, আরে না, আমার কিছু হয়নি, আমি একদম ঠিক আছি।
,,,এতো বড়ো ঝুমুর পড়লো আর কোথাও লাগেনি।
,,কেনো আপনি চান নাকি যে, আমার লাগোক।
,,, আমি এটা কেনো চাবো, আমি চাই যেনো কোনো দিন তোমার কোনো কিছু না হোক, সব সময় ভালো আর সুস্থ থাকো।
আমি খাবার বাড়তে বাড়তে বললাম,,,,,, হুমম জানি, আমি এমনি মজা করছিলাম৷ আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করি।
,,,, হুমম করো৷

,,,আচ্ছা আপনার সাথে বা অয়নের সাথে আমার কি আগে কোনো দিন দেখা হয়েছিলো।
প্রহর মারুর সামনে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,, কেনো, তোমার হঠাৎ এমন মনে হলো কেনো।
মারু একটা ট্রেতে খাবার নিয়ে প্রহরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, জানি না, আপনাদের চেহেরা গুলো আমার চিনা কিছু মানুষের সাথে মিলে যায়।
,,,কার সাথে।
,,, সেটা তোহহ আমিও জানি না, তবে মনে হলো এমন।
আচ্ছা এখন আমি যায়, পড়ে আবার কথা হবে।
,,হুমম ঠিক আছে।

আমি খাবার নিয়ে এসে দেখি উনার চোখ বন্ধ। খাবারটা টেবিলে রেখে আস্তে করে কয়েকটা ডাক দিলাম, কিন্তু কোনো সারা নেয়৷ আমি ভাবলাম হয়তো ঘুমিয়ে গেছে। আমি ওনার একটু কাছে গিয়ে বসি।
আমার মাথাটা একটু কাছে নিয়ে গেলাম ওনার চেহেরার দিকে। মনে মনে ভাবলাম, আমার হাসবেন্ড দেখতে তো মাশাল্লাহ। এতো জ্বরের মধ্যেও কিউট লাগছে, আর আমার জ্বর উঠে ভালোও হয়ে গেছে তাও মনে হচ্ছে মরে গেছি।
আমি অয়নের গালে হাত রাখি, নাহ জ্বরটা একটু বেশিই বেড়েছে দেখা যায়। আমি একটা বড় রুমাল ভিজিয়ে আনি। ঐটা দিয়ে ওনার মুখ মুছিয়ে দিয়। শার্টের তিনটা বোতাম খুলতেই চোখ আটকে গেলো, নিজের কাছেই নিজেকে লুচু লুচু মনে হচ্ছে। তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ওনার বুকটা মুছে দিতে থাকি।

তারপর রুমালটা ওনার কপালে রেখে বোতাম গুলো লাগাতে থাকি, হঠাৎ করে চেয়ে দেখি ওনি আমার দিকে চেয়ে আছে, আমি তাড়াতাড়ি শার্ট থেকে হাত সরিয়ে বলি,,,, দেখুন আপনি যেমন ভাবছেন ওমন কিন্তু আমি কিছু করছিলাম না।
ওনি মুশকি হেঁসে বললো,,,, আমি এখনো তেমন কিছুই ভাবিনি। তুমি চাইলে ভাবতে পারি।
,,,না না, কিছু ভাববেন না, আমি তো জাস্ট মুছিয়ে দিচ্ছিলাম।
,, হুমম এতো কেয়ার হঠাৎ।
,,, আপনি ও আমার অনেক খেয়াল রেখেছেন আর আমি কারো উদার রাখি না, আপনার পাওনা দিয়ে দিচ্ছি।
,,,তাই নাকি,, তাহলে আরেকটা পাওনা বাকি আছে সেটাও মিটিয়ে দাও।
,,,কি।

,,,,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, সেটা আমাকে সুদে আসলে ফিরিয়ে দাও।
,,,,, সেটা আমি কিভাবে ফিরিয়ে দিবো অদ্ভুত।
,,,,,, আমাকে ভালোবেসে।
আমি কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে বললাম,,,,, এসব উল্টো পাল্টা কথা মাথা থেকে বের করে খেয়ে নিন।
,,আমি একা একা কিভাবে খাবো, আমার হাত ব্যাথা করছে।
,,,জ্বর উঠলে আবার হাত ব্যাথা করে নাকি।
,,,,আমার করে, আমার তো পুরো শরীর ব্যাথা করছে। আমি তো নিজে নিজে খেতে পারবো না,এখন কি করি, না খেয়ে থাকতে হবে মনে হয়।
,, এতো রচনা না বলে,, বললেই হয় খায়িয়ে দিতে।
,,,বুঝেছো যখন দাও।
,, আমি কাওকে খায়িয়ে দিতে পারি না, কোনো দিন দেয়নি।
,,মিথ্যাুক আমাকে তো কতো বার,, বলে অয়ন থেমে যায়।
,,, থেমে গেলেন যে, কতো বার কি।
,,,, আরে মানে হলো কয়েকবার খায়িয়ে দিলেই অভ্যাস হয়ে যাবে।

আমি আর বেশি কিছু না ভেবে রুটির সাথে মাংস খায়িয়ে দিচ্ছি। উনার ঠোঁট বার বার আমার হাত স্পর্শ করছে, জানি না কেমন লাগছে। এই স্পর্শ আমার অনেক চিনা লাগছে। অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে খাচ্ছে, আমি উনার চোখের দিকে তাকাতে পারছি না, না জানি কেনো অনেক লজ্জা করছে উনার এমন ভাবে তাকানোতে।
খাওয়া শেষ করে ওনি ফাস্টেট বক্সটা নিয়ে একটা ইনজেকশনটা বের করে নিজের হাতে নিজে পুশ করছে। আমি অন্য দিকে তাকিয়ে উনার পা শক্ত করে চেপে ধরেছি। একটু পরে বলে,,,,, এই যে মিস আমার পাটা ছেড়ে দিন, হয়ে গেছে।
আমি তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়।
অয়ন ভালো হয়ে শুয়ে বলে,,,,,, এখন তুমি কি করবা।

,,,,কি করবো মানে।
,,, আমি তো যে কোনো সময় ঘুমিয়ে যেতে পারি, তখন তুমি কি করবে।
,,,জানি না, দেখি কি করা যায়।
,,,তোমার শরীরটাও বেশি ভালো না, তুমিও আমার সাথে চুপচাপ শুয়ে থাকো।
,,, আমার ঘুম আসছে না।
,,, চোখ বন্ধ করে থাকলে ঠিক ঘুম এসে যাবে।
,,, না আমি ঘুমাবো না।
,,,তুমি ঘুমাবে নাকি ঘুমের ইনজেকশন দিতে হবে আবার।
,,,, না,,, ঘুমাবো।
,,হুমম গুড গার্ল।

আমিও অয়নের পাশে শুয়ে পড়ি। আমি সোজা হয়ে শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছি। কারন অয়ন আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে আছে। কিছু ক্ষন পর তাকিয়ে দেখি অয়নের চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে।
সে আমার দিকে এগিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে, আমি তো সোজা হয়েই শুয়ে আছি। আমি উঠতে নিয়ে কিন্তু পারি না, অয়ন শক্ত করে ধরে ঘুম ঘুম চোখে বলে,,, পিল্জ ঘুমাতে দাও না। এভাবে ঘুমাতে আমার ভালো লাগছে। বলেই আরেকটু কাছে এসে চেপে ধরে।
আমি কিছু বলিনি, হয়তো বলতে পারিনি, অয়নে মুখ আমার গলার খুব কাছে, উনার নাক স্পর্শ করছে আমার গলা। উনার নিশ্বাস আমার গলায় পড়ায় নিজেকে বেশামাল লাগছে। আমিও চুপচাপ চোখ বন্ধ করে এসব ভাবা থেকে নিজেকে আটকানোর চেষ্টা করি। একটু পর আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।

বেশ অনেক ক্ষন পরে কারো পায়ের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, উঠে আশে পাশে তাকিয়ে কাওকেই দেখতে পায় না। অয়ন আমাকে ঠিক একি ভাবে জরিয়ে ধরে আছে, খুব কষ্টে আস্তে আস্তে উনার হাত ছাড়িয়ে আমি উঠে বসি।
রাত হয়ে গেছে, অয়নের জ্বরটাও কমে গেছে। আমি ফ্রেশ হয়ে দুলনায় বসে বসে চোখ বন্ধ করে গুন গুন করছি। একটু পর কারো মাথা নিজের কাঁধে অনুভব করে চোখ খুলে দেখি অয়ন আমার পাশে কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে।

,,,ওহহ সরি, আমার কারনে আপনার ঘুমটা ভেঙে গেলো।
,,,,, প্রতিদিন এভাবে ঘুম ভাঙলে আমার কোনো আপত্তি নেয়। জানো আমি কি স্বপ্নে দেখেছি।
,,,, কি দেখেছেন।
,,,,দেখেছি আমি আর তুমি সমুদ্রে ঘুরতে গেছি, যাবে আমার সাথে।
,,,,,ওয়াও সমুদ্রে,, নিয়ে গেলে যাবো, তাছাড়া কক্সবাজারে গেলে তো মন্দ হয়না।
,,,, কক্সবাজারে না আমরা অন্য কোথাও যাবো।
,,,, আপনি যে বললেন সমুদ্রে যাবেন।
,,,,,, কক্সবাজার ছাড়া কি আর কোনো দেশে সমুদ্র নেয়।
,,,, আচ্ছা দেশে বাহিরে নিয়ে যাবেন বুঝি, কোথায় নিয়ে যাবেন।
,,,এটা সারপ্রাইজ থাক। আচ্ছা তুমি কোনো স্বপ্ন দেখো না।
,,,,হুমম দেখি তো।
,,,, কি স্বপ্ন।

,,,,সেটা ঠিক আমিও জানি না, আমার স্বপ্ন আপনার স্বপ্নের মতো ঠিক স্পষ্ট না, সব কিছু গুলসে, স্পষ্ট কিছুই না। অনেক গুলো মানুষের কতা শুধু কানে বাঝে। শুধু প্রতিদিন এটা বুঝতে পারি, কেও ভালোবেসে তাড়া করে, কেও বা মারার জন্য।
অয়ন মাথা উঠিয়ে মারুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,, নীর এটা শুধু স্বপ্ন, আমি তোমার বাস্তবটা এতোটা রঙিন করে দিবো যে স্বপ্ন ও রঙিন হবে।
,,,,,সত্যি
অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,,, সত্যি।
তখনি একজন সার্ভেন্ট খাওয়ার জন্য ডাকতে আসে।
অয়ন,,,,, তুমি যাও, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ওকে।
,,,হুমম ঠিক আছে।

আমি রুম থেকে বের হয়ে যেতে থাকি, তখনি গিটার আর গানের আওয়াজ আসতে থাকে। আমি সেই আওয়াজের পিছনে পিছনে যায়। আওয়াজটা সায়ন এর রুম থেকে আসে। আমি একটু ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে যায়৷
সায়ন নিচে বসে গান গাইছিলো, সামনে একটা মেয়ের ছবি রাখা সেদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে। আমাকে দেখে গান গাওয়া বন্ধ করে বলে,,,, আরে ভাবী তুমি।
ছবিটা লুকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আমি বলে দিয়,,,, ঐটা লুকিয়ে লাভ নেয়, আমি দেখে ফেলেছি, মেয়েটা কে শুনি।
সায়ন ছবিটা হাতে নিয়ে বললো,,,, আমার জান।
,,,তা তোমার জানের নামটা কি শুনি।
,,, দিয়া,, ওর নাম দিয়া,, আমার কাছে গান শুনার বায়না করছিলো, তাই গান গাইছিলাম।
সায়নের কানে ব্লুটুথ ইয়ার ফোন দেখে বলি,,,, ও আচ্ছা। তা খেতে আসবে না।
,,, দিয়া আমার সাথে রাগ করেছে, ওর রাগ না ভাঙা পর্যন্ত আমি খেতে পারবো না, আপনি জান, আমি পরে ঠিক খেয়ে নিবো।
,,তাহলে আমি এক কাজ করি তোমার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৫

,,,থেংক্স ভাবী।
বলে আমি চলে আসি। সবাই আমরা খেতে বসি। অয়ন ও চলে আসে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা যার যার রুমে চলে আসি। রাত অনেক হয়েছে কিন্তু ঘুম নেয় কারো চোখে।
অয়ন,,,,ঘুমাও না কেনো।
,,আমার ঘুম আসছে না, আপনি ঘুমান না কেনো।
,,,আমারো ঘুম আসছে না। আচ্ছা চলো তাহলে ছাদে যায়।
আমি লাফ মেরে উঠে বসে বলি,, হুমম চলেন যায়। এমনিতেও আমার ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছিলো, কতো দিন হলো রুমেই বসে আছি।
,,,তাহলে ছাদে না, চলো বাইকে তোমাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

,,,তাহলে তো আরে ভালো চলেন যাই।
দুজনে বাড়ি থেকে বের হয়। অয়ন তার বাইক নিয়ে আসে, আমি অয়নের পিছনে বসি।অয়ন বলে,,এই যে মিস ভালো করে ধরে বসুন আমি কিন্তু বাইক আস্তে চালাই না।
আমি কোনো কিছু না ভেবে অয়নকে শক্ত করে ধরে বসি, জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারলে বাইকে উনাকে ধরে বসতে পারবো না।
উনি বাইক স্টাট দিয়ে নিয়ে যায়।ইশশ অনেক ভালো লাগছে কতোদিন পরে বের হয়েছি তাও আবার রাতে।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ৭