আমার গল্পে তুমি পর্ব ২২+২৩+২৪

আমার গল্পে তুমি পর্ব ২২+২৩+২৪
সুমাইয়া সুলতানা সুমী

একি তুমি আর্দ্র কে এগুলো কি দিচ্ছো?? আর ভাবি ওই মেয়েটা আর্দ্র কে কি সব ভুলভাল জিনিস গায়ে লাগিয়ে দিচ্ছে আর তুমি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছো??
আহ লিজা এভাবে চেঁচাচ্ছো কেনো দেখছো তো আর্দ্র ঘুমাচ্ছে আর ইয়ানা কোনো ভুলভাল জিনিস দিচ্ছে না ,, আমিই ওকে এটা দিতে বলেছি, ইয়ানা আর্দ্র কে তেল মালিশ করে দিচ্ছে।

কিহ?? তেল? ইয়াক, আর্দ্র যদি জানতে পারে ওকে তোমরা এসব ভুলভাল জিনিস দিচ্ছো তাহলে কিন্তু ও ভীষণ রেগে যাবে।
আপু তেল দেওয়া হয়ে গেছে আমি বরং যায় পরশ কে পড়াতে হবে,, আর হ্যাঁ লিজা ম্যাম কাউকে তেল দিলে তার কোনো ক্ষতি হয়না বরং ভালোই হয় সেটা আপনি না বুঝলেও আমি বুঝি, আপু আমি গেলাম রুমে পরশ একা আছে।
দেখলে ভাবি মেয়েটা কীভাবে আমায় ইনসাল্ট করে গেলো?? ওর এতো সাহস কীভাবে হয়।
আহ লিজা এতো রাগ করছো কেনো, আচ্ছা শোনো তোমাকে আমার একটা কথা বলার আছে।
কিহ বলো। বিরক্তি নিয়ে বলল লিজা

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলছি যে অনেক তো হলো তুমি আর কত আর্দ্রর জন্য অপেক্ষা করবে আর আর্দ্র ও তো বয়স কম হচ্ছে না তাই আমি বলছি কি তুমি তোমার মা বাবা কে আসতে বলো এবার তোমাদের বিয়েটা বরং দিয়ে দেওয়াই ভালো, আমি অনিক আর মা বাবা কে বলবো।
সত্যি বলছো ভাবি?? ইস তুমি তো আমাকে একদম খুশি করে দিলে আমার যে কি খুশি লাগছে তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না আমি এখুনি যাচ্ছি মম আর ড্যাড কে ফোন করতে, আমি ওদের সামনের সপ্তাহেই আসতে বলছি।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও।

এবার জমবে মজা, আসল খেলা তো এখন শুরু হবে আমার কিউট দেবর মশাই,, আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল অন্তরা।
ইয়ানা পরশকে পড়ানো শেষ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে ডয়িং রুম পার করে কেবলি বেরোতে যাবে তখনি শুনতে পেলো অন্তরা বাড়ির সবাইকে বলছে আর্দ্র আর লিজার বিয়ের কথা অন্তরার কথাশুনে অনিক সহ আর্দ্রর বাবা মা বলল।
এসব কি বলছো অন্তরা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?? তুমি জানো না লিজা কত মর্ডান ও আমাদের সাথে খাপখাইয়ে নিতে পারবে না।
হুমম তেমার মা ঠিকি বলেছে অন্তরা, লিজা যতই বলুক ও আর্দ্রকে পছন্দ করে তবুও আমার মনে হয় না ও পারবে।
আরে ওকে তো একটা সুযোগ দিয়ে দেখতেই পারি আমরা তাইনা, আর ও সেই ছোট থেকে আর্দ্র কে পছন্দ করে আমি লিজাকে বলেছি ওর বাবাকে ফোন করে আসতে ওনারা মনে হয় সামনের সপ্তাহে আসবে,, ইয়ানার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলল অন্তরা।
কিন্তু অন্তরা তুমিই তো সেদিন বললে,, আহ অনিক সেদিন বলেছি তো কি হয়েছে আমি আজকে দেখেছি আর্দ্রর অসুস্থ হওয়ায় লিজা কতটা পাগল হয়ে গিছিলো।

ওদের কথা শুনে ইয়ানা ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেলো,,, আগুন লাগিয়ে দিয়েছি এবার শুধু দেখার পালা কি হয়।
কিন্তু অন্তরা আর্দ্র যদি রাজি না হয় তখন??
আরে তোমাকে ওতো ভাবতে হবে না আর্দ্রকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার তুমি এতো চিন্তা করো না, আর হ্যাঁ তোমার সাথে কথা আছে আমার।
দেখো যেটা ভালো মনে হয় করো, আর্দ্র বিয়ে করলেই হলো নয়তো ও যা ছেলে দেখা গেলো বিয়ে আর করলো না আর আমাদের শেষ বয়সে ওর বউটাও দেখা হলো না,।
বাবা আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন আর্দ্রর বউ আমি আপনাকে দেখিয়েই ছাড়বো তাও আবার সুন্দরী বউ,, বাঁকা হেসে বলল অন্তরা অনিক তো হা করে ওর বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে কি হচ্ছে বেচারা কিছুই বুঝতেছে না।

রাগে রাগে কোনো রিক্সা না নিয়ে হাঁটতে শুরু করেছে ইয়ানা আর একা একাই বকবক করছে,, কি ভাব ওনি বিয়ে করবে কত সখ করুক গা বিয়ে তাতে আমার কি আমি কেনো এতো ভাববো ধুত ভালো লাগে না ওনি বিয়ে করবে টা কেনো ,, বিয়ে না করলে কি হয় না ওনি তো ওনিই বিয়ে করবেই,, এভাবে নিজে নিজেই ভুলভাল বকছে আর হাঁটছে ইয়ানা রাগে চোখে পানি চলে এসছে এভাবে হাঁটতে হাঁটতেই বাড়ি চলে এসেছে , পায়ের সান্ডেল টা ছুড়ে ফেলে ধপধপ করে নিজের রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিয়ে শুয়ে পড়লো,,।

—কিরে দরজা আটকে দিলি কেনো?? খাবি না??
—তুমি যাও তো আম্মু খেয়ে শুয়ে পড়ো আমি খাবো না ভালো লাগছে না।
—খাবি না কেনো?? কি হয়েছে মাথা বেথ্যা করছে নাকি আয় তেল দিয়ে দিই।
— আম্মু তুমি যাও প্লিজ আমি খাবো না ভালো লাগছে না।
–কি যে হলো মেয়েটার,, আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে শুয়ে পড়।
আরে কি হয়েছে আমাকে এভাবে টেনে আনলে কেনো অনিক তুমি জানো না আমার এই অবস্থায় এভাবে টানাটানি করা নিষেধ।
ওহ সরি,, কিন্তু তুমি আমায় এটা বলো যে তোমার মাথার মধ্যে কি চলছে তুমি হঠাৎ করে আর্দ্রর বিয়ে দিতে চাইছো কেনো তাও আবার লিজার সাথে ব্যাপারটা কি বলো তো।

আরে তুমি তো জানোই আর্দ্র আর ইয়ানার বিষয় টা, দুজন দুজনকে মনে মনে পছন্দ করে ঠিকি কিন্তু বলছে না আর আজকে আমি ইয়ানার সামনে আর্দ্রর বিয়ের কথা বলেছি দেখবা ও সারারাত ভেবে কালকে ঠিকই আর্দ্র কে ওর মনের কথা বলে দিবে, আর আমাদের আর্দ্র কালকে ওর বিয়ের কথা শুনলে ও ইয়ানা কে হারানোর ভয়ে নিজের মনে যা আছে সেটা বলে দেবে আর এটাই আমার প্লান।
তুমি শিওর তো তোমার এই প্ল্যান কাজ করবে?? ওরা দুজন দুজনের মনের কথা বলবে??

আরে আমি ১০০% শিওর আর তাছাড়া তুমি দেখলে না পরশের জন্মদিন এর দিন ওতো ঝড় বৃষ্টির রাতে আর্দ্র কেমন ছুটে গিয়েছিলো ইয়ানার কাছে আবার আর্দ্র লিজার হাত ধরায় ইয়ানা কেমন পা পুড়ে যাওয়ার অভিনয় করল,, এমন আরো অনেক কারণ আছে, আমি ওদের দুজনের চোখে একে অপরের জন্য ভালোবাসা দেখেছি,, তুমি শুধু দেখতে থাকো কাল সকালে কি হয়, আমি তো শিওর আর্দ্র লিজাকে বিয়ে করার কথা শুনে সাফ মানা করে দিবে।
অন্তরা এতোটা শিওর হওয়া ভালো নয় কিন্তু, দেখো যেনো হিতে বিপরীত না হয়ে যায়।
,,,সকালে,,,,

আর্দ্র রেডি হয়ে নিচে নেমে সবার সাথে খাওয়ার টেবিলে বসল তাও আবার লিজার পাশে এতে তো লিজা লজ্জায় মাথায় তুলতে পারছে না তখনি কবির বলল,,, আর্দ্র তোর সাথে কিছু কথা ছিলো।
হ্যাঁ বাবা বলো, খেতে খেতে বলল আর্দ্র।
বলছি যে আমরা সবাই ভেবেছি যে তোর এবার বিয়েটা করা দরকার এবার কিন্তু তুই না করতে পারবি না,, তাই আমরা লিজার বাবা মাকে আসতে বলেছি।
কবিরের কথা শুনে আর্দ্রর গলায় খাবার আটকে গেলো, হঠাৎ তোমাদের মাথায় আমার বিয়ের ভূত চাপলো কেনো, আর তোমরা লিজার বাবা মাকেই বা আসতে বলেছো কেনো??

কারণ আমরা ঠিক করেছি লিজার সাথেই তোর বিয়ে দেবো কেননা লিজা তোকে ছোট বেলা থেকে চেনে জানে বোঝে তাই আমরা ঠিক করেছি লিজাকেই তোর বউ করে আনবো,,, এদিকে তো লিজার লজ্জায় লাল নীল হয়ে যাচ্ছে।
কবিরের কথা শুনে আর্দ্র জোরে বলল হোয়াট??
দেখেছো অনিক আমি বলেছিলাম না আর্দ্র না করে দেবে দেখেছো আমার কথা মিললো তো, আমি আগেই জানতাম এখন দেখবা আর্দ্র ইয়ানার কথাটা বলবে। ফিসফিস করে অনিকের কানে বলল অন্তরা
আহ অন্তরা তুমি একটু চুপ থাকবা আগে দেখো তো আর্দ্র কি বলে।
ওকে তোমরা যখন ঠিকিই করে নিয়েছো কথা যখন দিয়েই ফেলেছো তখন ঠিক আছে আমি বিয়ে করে নেবো,, আমার খাওয়া শেষ আমি আসছি কথাটা বলে আর্দ্র অফিসের উদ্দেশ্য চলে গেলো।

অন্তরা কেবল গ্লাসে জুস নিয়ে খাচ্ছিলো আর্দ্রর কথা শোনে জুসটা গলায় আটকে গেলো, কাশতে কাশতে ভয়ে ভয়ে অনিকের দিকে তাকিয়ে দেখলো অনিক খাইয়া ফেলাইমো একটা লুক নিয়ে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে,, এদিকে তো লিজা খুশিতে হা করে আর্দ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে ওর যেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না ,, অন্তরা ভয়ে ঢোক গিলে বলল,,, এটা কি হলো এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলো না , এখন কি হবে তাহলে??

কি যেনো বলেছিলে, তুমি চোখ দেখে সব বুঝতে পারো তুমি ওদের দুজনের চোখে ভালোবাসা দেখতে পাও তোমার মাথায় অনেক বুদ্ধি তোমার প্ল্যান ১০০%কাজ করবে, তো এখন এটা কি হলো??
আব,, আমি কি করে জানবো যে তোমার ভাই এভাবে হ্যাঁ বলে দেবে আমি তো ভেবেছিলাম ও সরাসরি না করে দেবে কিন্তু ও যে এভাবে পাল্টি খেয়ে যাবে সেটা তো আমি বুঝিনি এখানে আমার কি দোষ.
এই জন্যই বলে মেয়ে মানুষের মাথায় কম বুদ্ধি ,, এখন দেখছি আমাকেই কিছু একটা করতে হবে।
কি করবে??

যাই করি না কেনো তোমার মতো এতো ঘাটিয়া প্ল্যান করবো না,, আগে তো অফিসে যায় তারপর দেখি ইয়ানা আর্দ্রর বিয়ের কথা শুনে কি করে, আগে ইয়ানার মতি গতি বুঝি তারপর যা করার করতে হবে।
হুম যা ইচ্ছে করো তবে যে করেই হোক বিয়েটা আটকাতে হবে নইলে ওই ঢঙ্গী মেয়েটা আর্দ্রর বউ হয়ে যাবে,, অন্তরা দেখলো অনিক চোখ বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে তাই আমতা আমতা করে বলল,, যদিও বিয়ের ভূতটা বাবা মায়ের মাথায় আমিই ঢুকিয়েছি।
এক বাচ্চার মা হয়ে গেছে আরেকজন আসবে আসবে ভাব তবুও এই মেয়ের মাথায় বুদ্ধি হলো না এখনো বাচ্চায় রয়ে গেলো,, কথাগুলো বলে অনিক রুম থেকে বেরিয়ে গেলো,,, কেনো যে পাকনামি টা করতে গেলাম এই জন্যই বলে বেশি বাড়াবাড়ি করতে নেই।

আর্দ্র নিজের কেবিনে বসে আছে ইয়ানা এখনো আসিনি মেয়েটা আজকে এতো লেট করছে কেনো, আর্দ্র তখন থেকে হাঁসফাঁস করছে ইয়ানা কে দেখার জন্য, মূলত আর্দ্র দেখতে চাই আর্দ্রর বিয়ের খবরটা শোনার পর ইয়ানা কি রিআ্যাকশন হয়, আর্দ্রর ভাবনার মাঝেই অনিক আর্দ্রর কেবিনে আসলো।
কিরে তুই এই সময় আমার কেবিনে কিছু বলবি??
আর্দ্র আমার তোর সাথে কিছু কথা ছিলো,, কি বল?

বলছি কি এই বিয়েতে তুই কি সত্যি রাজি?? মন থেকে বলবি একদম, দেখ মা বাবা বলেছে বলে তুই রাজি হয়েছিস এমনটা হলে বল আমি বাবা কে বুঝিয়ে বলব, অনিকের কথার উত্তর দেবার আগেই দরজায় কেউ নক করল,, আসতে পারি??
হুমম ভিতরে আসো,, ইয়ানা দরজা ঠেলে ভিতরে গিয়ে দেখলো আর্দ্র অনিক দুজনেই আছে, আর্দ্র কে দেখে মনে মধ্যে কেমন একটা জেদ চেপে বসল তাই কোনো কথা না বলে সরাসরি আর্দ্র সামনে গিয়ে একটা কাগজ আর্দ্রর দিকে বাড়িয়ে দিল।

—এটা কি?? ভ্রু কুঁচকে বলল আর্দ্র।
—আমার ছুটি লাগবে আর এটা ছুটির দরখাস্ত।
—এখন কোনো ছুটি দেওয়া যাবে না অফিসে অনেক কাজ আছে।
—জানি আমি এই জন্যই আমার এখন ছুটি চাইনা,, আজ থেকে ঠিক সাতদিন পর আমার সাতদিনের ছুটি লাগবে।
—ছুটি যখন এতোদিন পর লাগবে তখন এতো তারাতারি ছুটির আবেদন করার মানে কি??
—আগে থেকেই করে রাখলাম পরে যদি না দেন তাই।
–তা এতোদিন ছুটি চাইছো কেনো কি দরকার?? ইয়ানার দেওয়া কাগজ টাই চোখ বুলিয়ে বলল আর্দ্র।
—আমার বিয়ে তাই ছুটি লাগবে।

—হয়ে গেলো, একেই এটার এই অবস্থা আবার এখন এ বেঁকে বসল কোন দিকে যে যায় আমি, মন চাইছে অন্তরাকে একে বাড়ে কাঁচাই খেয়ে ফেলি,, দুজনেই সমান কেউ কারো থেকে কম নয় হাড় কেউ মানবে না,,, সালার ইগো,, বিরবির করে বলল অনিক।
—হোয়াট,,আর ইউ ম্যাড?? এসব কি বলছো,, চেয়ার থেকে রেগে উঠে দাঁড়িয়ে বলল আর্দ্র।
—হুমম ঠিকি বলছি এতে এতো রিয়েক্ট করার কি আছে আপনি বিয়ে করতে পারলে আমি পারবো না , আর তাছাড়া ও আমার বিয়ের বয়স হয়েছে একটা মেয়ের এভাবে বেশিদিন ঘরে থাকা লোকজন ভালো চোখে দ্যাখে না।

—লোকজন মাই ফুট, এই তোমার বয়স কত হ্যাঁ পিচ্চি একটা মেয়ে, আর তাছাড়া তোমার এখনো অর্নাস শেষ হয়নি, কেবল কয়দিন হলো একটা ভালো জব পেয়েছে আগে ভালো করে নিজের পায়ে দাঁড়াও তারপর বিয়ের ব্যাপারে ভাববে, তুমি একটা শিক্ষিত মেয়ে হয়ে এটুকু বুঝতে পারছো না??
–আর কত নিজের পায়ে দাঁড়াবো আর আমি যথেষ্টই সাবলম্বী, আমি তো বলছি না যে বিয়ের পর আমি চাকরি টা করবো না যায় সাথে আমার বিয়ে হবে সে বলেছে যে আমি বিয়ের পরেও চাকরি করতে পারবো,, আর আপনি এতো রিয়েক্ট করছেন কেনো??

— আমার রিয়েক্ট করার যথেষ্ট কারণ আছে, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তোমাকে ঠিক পথ দেখানো আমার দায়িত্ব।
— আমার ভাই টা সত্যি এক নাম্বারের গাধা,, সচেতন নাগরিক?? আরে গাধা নিজের মনের কথাটা বল।
— আমি আমার ভালো বুঝি স্যার আপনাকে বোঝাতে হবে না, আর হ্যাঁ ছুটিটা আমার লাগবেই, আসছি আমি।
–দেখেছিস ভাইয়া কতবড় ইডিয়ট একটা মেয়ে, আচ্ছা তুই বল ওর কি বিয়ে করার বয়স হয়েছে??
— আমি কি জানি??
— তুই কি জানিস মানে,,, আর হ্যাঁ তুই একটু আগে জিগাস করলি না যে আমি এই বিয়ে মন থেকে করছি কিনা তাহলে শোন আমি বিয়েটা নিজের ইচ্ছায় আর মন থেকেই করছি, ওকে এখন তুই যা আমি একটু একা থাকতে চাই।
দুটোই এক নাম্বারের ঘার তেড়্যা,,, বিরবির করে কথাগুলো বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো অনিক।

ইয়ানা নিজের কেবিনে এসে চেয়ারে বসে মাথায় হাত রেখে রাতের কথা ভাবতে লাগল,,, রাতে ইয়ানা দরজা বন্ধ করে দিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে ছিলো তারপর হঠাৎ কিছু মন করে শোয়া থেকে উঠে বসে চোখের পানিটা মুছে নিলো, রাগে শরীল জ্বলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে সবকিছু ভেঙ্গে ফেলি , পাশ থেকে ফোনটা নিয়ে সুহাগ এর ফোনে কল দিলো ইয়ানা রাত তখন দশটার বেশি বাজে সুহাগ কেবলি শুয়েছিলো চোখে ঘুম ঘুম ভাব আসতেই ওর ফোনটা বেজে উঠল, এতো রাতে ফোন বাজায় একটু বিরক্ত হলো সুহাগ বালিশের পাশ থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল ইয়ানা কল দিয়েছে মুহুর্তে বিরক্তি মাথা মুখটা হাসিতে পূর্ণ হয়ে গেলো,, ইয়ানার কল কেটে দিয়ে নিজে কল ব্যাক করল।

—হ্যালো হ্যাঁ ইয়ানা এতো রাতে কল দিলি কেনো কোনো সম্যসা হয়েছে নাকি??
–সুহাগ ভাইয়া বিয়ে করবেন আমায়??
–সুহাগের চোখে যাও বা একটু ঘুমের রেশ ছিলো ইয়ানার কথা শুনে তাও কেটে গেলো,, মেয়েটা কি পাগল হয়ে গেলো নাকি রাত বিরাতে ফোন দিয়ে এভাবে মজা করছে।
–কি হলো চুপ করে আছো কথা কেনো?? বলো বিয়ে করবে আমায়??
—এসব কি বলছিস তুই,, এতো রাতে কল দিয়ে এভাবে মজা করার মানে কি ইয়ানা।
–আমি মোটেও মজা করার মুডে নেই আপনি বলুন আমায় বিয়ে করবেন কি না যদি না করেন তাহলে আমি অন্য কাউকে,,,
—আরে না না অন্য কাউকে বলবি কেনো, আ,,আমি রাজি,,সুহাগ যেহেতু ইয়ানাকে পছন্দ করত তাই এই সুযোগ টা হাতছাড়া করল না।

—আচ্ছা তাহলে আমি সকালে মা কে বলবো, আগামী সপ্তাহে বিয়ে হবে, বড় কোনো অনুষ্ঠান হবে না আমি ঘরোয়া ভাবেই বিয়েটা করতে চাই।
—আচ্ছা ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে।
–ওকে তাহলে এখন রাখছি।
,,,,বর্তমান,,,,
আমি কি রাগের বশে কোনো ভুল করলাম?? তখনি আর্দ্র আর লিজাকে একসাথে কল্পনা করল ইয়ানা,, আর রাগে জিদ্দে বলল,, না না ঠিকি করেছি ওনি যদি বিয়ে করতে পারে তাহলে আমি কেনো পারবো না, আমিও পারবো, আমি ও ওনাকে দেখিয়ে দেবো শুধু ওনি নয় আমিও হাসি মুখে বিয়ে করতে পারি হুমম??

কিহ বলছো এসব তুমি??,, তুমি ঠিক শুনেছো তো ইয়ানা নিজে বলেছে যে ও বিয়ে করবে??
তো কি আমি বানিয়ে বানিয়ে বলছি যত্তসব,, এই সব কিছু হয়েছে তোমার জন্য ঝামেলা একটা বাঁধিয়ে বসে আছে,, এখন না পারছি এদিক যেতে না পারছি ওদিক যেতে, মহা মুছিবত দুজনের একজনও বোঝে না।
আরে আমি জানতাম নাকি যে আর্দ্রর বিয়ের কথা শুনে ইয়ানাও নাচতে নাচতে বিয়ে করতে চলে যাবে
হ্যাঁ তুমি তো কিছুই জানো না, তুমি তো এটাও জানতে না যে আর্দ্র বিয়েতে রাজি হয়ে যাবে।

এই বকো না তো, শোনো আমি যা করেছি ভালোই করেছি এটার একটা পরিনতি দরকার ছিলো, আর তোমার ভাই কেমন নিজের মনে কথা না শুনে নিজের ইগোকে বেশি গুরুত্ব দেয়,, আর তুমি জানো না মেয়েদের লজ্জা বেশি তারা আগে আগে কিছু বলে না ছেলেদেরই আগে বলতে হয় কিন্তু তোমার ভাই তো তা বলবেই না গোয়ার একটা।
এই বাজে কথা বলা বন্ধ করোতো, এখন ভাবো কি করে বিয়েটা আটকানো যায়।
হুম এটা ছাড়া আর কি বা করার আছে।

পরশকে পড়ানো শেষ করে ইয়ানা রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলো তখনি সামনে আর্দ্রর সাথে দেখা হয়ে গেলো,, লিজাকে এখন বাইরে দেখা যায় না আর্দ্রর সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর নিজের রুমে বসে মুখে ফেস প্যাক লাগাতে ব্যাস্ত,, ইয়ানা আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে আছে আর্দ্র ও ইয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে যেনো দুজন মনে মনে কিছু বলতে চাইছে কিন্তু মুখে বলতে পারছে না কোথাও একটা বাঁধা পাচ্ছে ,, ইয়ানা চাইছে আর্দ্র আগে বলুক আবার আর্দ্র চাইছে ইয়ানা আগে বলুন,, দুজনের নিরবতা ভেঙ্গে আর্দ্র বলল।
অভিনন্দন নতুন জীবনের জন্য,, আশা করি আগামীতে অনেক ভালো থাকবে।
ইয়ানা ভেবেছিলো আর্দ্র অন্য কিছু বলবে কিন্তু আর্দ্রর মুখে এমন কথা শুনে ভিতরে ভিতরে রাগে জিদ্দে ও বলল,, আপনাকেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা আশা করি লিজা ম্যাম এর সাথে অনেক ভালো থাকবেন।
তাতো বটেই কিন্তু তুমি তো বললে না যে তোমার কার সাথে বিয়ে হচ্ছে নাম কি তার??

নিশ্চয়ই কোনো বখাটের সাথে হচ্ছে না, অনেক ভালো একজন এর সাথে বিয়ে হচ্ছে সে ভালো একটা চাকরি করে ভালো পোস্টে আছে,, আর সব থেকে বড় কথা হলো সে নিজের মনের কথা মুখে বলতে পারে মানুষের মতো ইগোটাকে বড় করে দ্যাখে না বুঝলেন সরুন এখান থেকে বাড়ি যাবো আমি,, এই বলে ইয়ানা গটগট করে চলে গেলো
আর্দ্র ওখানে দাঁড়িয়ে থাকলো ও বুঝতেও পারলো না ইয়ানা ওকে খুঁচা দিয়ে কথাগুলো বলে গেলো
,দেখেছো তোমার ভাইকে কেমন হাবার মতো দাড়িয়ে আছে আজকেও মেয়েটাকে নিজের মনের কথা বললো নাহ৷
আহ অন্তরা চুপ করো তো বকবক করো না,, এদের দুজনকে দেখে মনে হলো এরা দুজনের একজন ও নিজেদের মনে কথা বলবে না।

তাহলে এখন কি করবো আমরা??
কিচ্ছু করার নাই আপাতত বিয়েটা দেখা ছাড়া।
ইগো, এই ইগো শব্দটি ছোট হলেও এটা অনেক কিছুই করতে পারে , যেমন ছোট্ট একটা সরি সম্পর্ক ভাঙ্গতেও পারে তেমনি আবার এই সরিই আবার একটা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে ও পারে,, ভালোবাসায় ইগো থাকতে নেই, ভালোবাসার মানুষের কাছে হাড় মেনে নিলে সেটা হেরে যাওয়া নয় বরং সেখান থেকে আরো ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। আর্দ্র চাইছে ইয়ানা আগে ওকে মনের কথা বলুক আবার ইয়ানা তো মেয়ে ও চাইছে আর্দ্র ওকে আগে ভালোবাসার কথাটা বলুক , কিন্তু দুজনের মধ্যে কেউ একজন যদি ইগোটাকে ছুঁড়ে ফেলে মনের কথাটা বলে দেয় তাহলেই কিন্তু সব সম্যসার সমাধান হয়ে যায় কিন্তু না সেটা কেউ করবেই না। অন্তরা সোফায় বসে নিজের হাতের নক কামড়াচ্ছে আর ভাবছে কীভাবে বিয়েটা আটকানো যায় তখনি ওখানে লিজার মম এলিনা এসে বলল।

হেই বলো না আমাকে কোন শাড়িতে বেশি ভালো লাগবে, আমার একটা মাএ বেবির বিয়েতে আমি আমার মন মতো সাজুগুজো করবো,, ভেবেছিলাম অনেক বড় করে অনুষ্ঠান আমার বেবির বিয়ে দেবো কিন্তু সেটা আর হলো না তবে সম্যসা নেই ওদের প্রথম এনিভার্সিরিতে একটা বড় করে অনুষ্ঠান করবো,, আচ্ছা এখন বলো আমায় কোন শাড়িতে ভালো লাগবে।
আমি মরছি আমার জ্বালায় এ আবার কিসের মধ্যে কি বলছে, আর ওতোবড় একটা মেয়েকে বেবি বলছে, আজ বিয়ে দিলে কালকেই বাচ্চার মা হয়ে যাবে সে নাকি বেবি।
আরে কি হলো তুমি ওমন চুপ করে আছো কেনো?? বলো বলো আর কিছুক্ষণ বাদেই তো বিয়ে,, আমার তো এখনো মুখে প্যাক লাগানোই হলো না।

বিয়ে ওনার মেয়ের নাকি ওনার কে জানে,,, আচ্ছা বলছি যে আন্টি আপনি আপনার পছন্দ মতো এখান থেকে যেকোনো একটা শাড়ি পরে নিন না আপনাকে সব শাড়িতেই সুন্দর লাগবে।
ইউ নটি গার্ল ,, তুমি তো দেখছি কিচ্ছু জানো না তোমার কোনো পছন্দই নাই, থাকো তুমি আমি আমার হাবি কে জিগাস করে আসছি।
এই হাফ মেন্টাল ফ্যামিলির মেয়েকে নাকি আর্দ্র বিয়ে করবে, ওহ আল্লাহ বাঁচাও।
এখন আল্লাহ আল্লাহ করছো কেনো? এই ঝামেলাটা বাঁধানোর আগে মনে ছিলো না,, তুমি জানো না এলিনা আন্টি লিজা ওরা কেমন।
আর কতো কথা শোনাবে অনিক ভালো লাগছে না আমার, একটা ভুল না হয় করেই ফেলেছি তাই বলে এতো কথা শোনাবে তুমি জানো না আমি অসুস্থ , মুখ ফুলিয়ে বলল অন্তরা।

আরে আমার বউ রাগ করছো কেনো আমি তো এমনি বলছি আচ্ছা এখন এটা খেয়ে নাও আমার আবার আর্দ্রর কাছে যেতে হবে।
তা তোমার সেই গুনধর ভাই কোথায় দেখছি নাতো কোথাও।
হয়ত রুমেই আছে তুমি খেয়ে নাও।
আর্দ্র রুমের একবার এপাশ তো আবার ওপাশ এক নাগাড়ে হেঁটেই যাচ্ছে আর হাতে হাত ঘষে নিজে নিজেই বলল,, কি ইডিয়ট মেয়ে বিয়েটা শেষ মেষ করেই ছাড়ছে আবার আমাকে কার্ড দেয় কত্তো বড় সাহস,,, আমার বিয়ের দিনই ওকে বিয়েটা করতে হলো একবার সামনে পাই তখন বোঝাবো মজা,, কিন্তু ও তো বলেছে আগামী সাতদিন অফিসে আসবে না ধ্যাত মাথাটা কাজ করছে না কি যে করবো, তখন ঝোঁকের বসে বিয়েতে কেনো যে হ্যাঁ বললাম।

হেই আর্দ্র বলোনা আমি আজকে কোনটা পড়বো লেহেঙ্গা নাকি বেনারসি, কোনটাতে আমায় বেশি সুন্দর লাগবে বলোনা বলোনা।
লিজা এখন এখান থেকে যা তো এমনিতেই ভালো লাগছে না তার উপর মাথা খাস না তো যা রুম থেকে।
এমন করছো কেনো বলোনা, আজকের পর থেকে তো আমার সবকিছু তুমিই পছন্দ করে দিবা আর তোমারটা আমি
তুই হঠাৎ করে আমায় তুই থেকে তুমি বলছিস কেনো?? ভ্রু কুঁচকে বলল আর্দ্র
তুমি তো দেখি কিচ্ছু বোঝো না নিজের হবু বরকে কি কেউ তুই করে বলে?? তাই আজ থেকে ঠিক করেছে আমি তোকে তুমি বলেই ডাকবো।
তুই যাবি এখান থেকে যত্তসব, মাথা খারাপ করে দেয়, গেট আউট ফ্রম হেয়ার, রেগে চিৎকার করে বলল আর্দ্র ,,,, আর্দ্রর চিৎকারে লিজা ভয় পেয়ে যলদি করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

বাহ আমার মেয়েটাকে কত্ত সুন্দর লাগছে কারো নজর যেনো লেগে না য়ায়,, দাঁড়া একটা নজর টিপ লাগিয়ে দিই,, জানিস তো মা আমি আজকে বড় খুশি অবশেষে তুই যে সুহাগকে বিয়ে করতে রাজি হবি আমি তো ভাবতেই পারি নি।
এতোক্ষণে তো আপনার বিয়ে পরনো শুরু হয়ে গেছে মিস্টার আর্দ্র, হয়ত বিয়ে হয়েও গেছে,, আপনি যদি বিয়েটা করতে পারবেন তাহলে আমি নই কেনো আমিও আর কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য করো হয়ে যাবো,। ইয়ানার ভাবনার মাঝেই কেউ একজন বলল বর এসে গেছে বউকে নিয়ে ডয়িং রুমে যেতে বলছে রাত হয়ে যাচ্ছে তাই দেরি না করে বিয়েটা পরিয়ে দিলেই ভালো হয়, যেহেতু ঘরোয়া ভাবে বিয়ে হচ্ছে তাই বেশি মানুষ নেই।

এই তোরা ইয়ানাকে নিয়ে আয় আমি বরং বাইরে গিয়ে দেখি কার কি লাগবে,, এই বলে ইয়ানার মা বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
চল তোকে সুহাগ ভাইয়ের কাছে দিয়ে আসি,, সত্যি ইয়ানা তুই আজীবন জেদিই রয়ে গেলি, কি হতো নিজের মনের কথাটা আর্দ্র ভাইয়াকে বলে দিলে। রোজা সব জানত।
আমি কেনো বলবো ওনি বলতে পারে না? ওনার মুখ নেই, আর আমি একটা মেয়ে হয়ে কীভাবে আগে নিজের মনের কথা বলবো নিজেকে নির্লজ্জ মনে হয়।

আচ্ছা হয়েছে এখন চল আন্টি তোকে নিয়ে যেতে বলেছে৷
রোজা তুই যা আমি একটু পরে আসছি।
না তোকে আমার সাথেই যেতে হবে চল,,,আরে যাহ কারেন্ট চলে গেলো এই কারেন্ট এর এখনি যাওয়ার ছিলো, তুই একটু বস আমি মোমবাতি নিয়ে আসছি।
রোজা ইয়ানাকে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো বাইরে সরগোল শুনা যাচ্ছে হঠাৎ করে এভাবে কারেন্ট চলে যাওয়াই রোজা মোমবাতি নিয়ে রুমে আাসার আগেই কারেন্ট চলে আসছে,, রোজা মোমবাতি টা নিভিয়ে ইয়ানার রুমে গিয়ে দেখল বিছানা খালি রুমের কোথাও ইয়ানা নেই, তাই দেখে রোজা চিৎকার করে বাইরে এসে বলল, কে কোথায় আছো ইয়ানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আরে ছাড়ুন আমায় এভাবে গুন্ডাদের মতো তুলে এনেছেন কেনো আমায় মিস্টার আর্দ্র ??
উফ তুমি কি ভারি দেখে তো মনে হয় না তুমি এতো ভারি, কি খাও এতো আমার হাত বেথ্যা হয়ে গেছে।
তো আমি কি আপনাকে বলেছি যে আমায় তুলে আনুন, দেখি সরুন আমায় বাড়ি যেতে হবে আজকে আমার বিয়ে,, নিজে তো বিয়ে করে বসে আছেন এখন আমার বিয়ে আটকাতে এসেছেন কেনো।
না আমি বিয়ে করছি আর না তুমি, তবে এবার বিয়ে করবো তাও আবার তোমাকে।
কিহ?? আমি কখনোই আপনাকে বিয়ে করবো না মিস্টার ইগো ওয়ালা।

আমার গল্পে তুমি পর্ব ১৯+২০+২১

তুমি বিয়ে করবা সাথে তোমার ঘাড় বিয়ে করবে, এই বলে আর্দ্র কাউকে ফোন করলো, ফোন করার কিছুক্ষণ পর একটা কার আসলো ওদের সামনে আর কার থেকে যে নেমে আসল তাকে দেখে তো ইয়ানার চোখ কপালে,, একি আপনি??
জি কিউটিপাই না মানে থুরি পরশের কিউটিপাই আর আমার ভাবি,, কোথায় ভাবলাম তোমার সাথে লাইন মারবো কিন্তু আর্দ্র ভাই তা আর হতে দিলো কোথায়।
আকাশ বেশি বকবক না করে গাড়িতে গিয়ে বস আর গাড়ি স্টার্ট দে,,, কথাটা বলে আর্দ্র ফোনটা পকেটে রেখে আবার ইয়ানাকে কাঁধে তুলে নিলো,,।
ওকে ব্রো,

এই ছাড়ুন আমায় ডাকাত একটা,, ইয়ানা মুখে এতো চিৎকার চেঁচামেচি করলেও মনে মনে ভীষণ খুশি হয়েছে, তবে ও এটা বুঝতে পারছে না যে হঠাৎ করে মিস্টার আর্দ্রর কি এমন হলো যে ওনি লিজা ম্যাম কে বিয়ে না করে আমায় বিয়ে করার জন্য এমন করে তুলে আনলো।
অন্তরা আর অনিক ডয়িং রুমে দাঁড়িয়ে আছে, অবশ্য অন্তরা বসে আছে, কেননা বিয়েটা এখানেই হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে, অন্তরার মুখটা এমন করে আছে যেনো ওকে ধরে কেউ জোর এক গ্লাস করলার জুস খাইয়ে দিছে, তখনি অনিকের ফোন বেজে উঠল,, অনিক পকেট থেকে ফোন বার করে দেখলো আর্দ্র কল দিয়েছে।

কি অবস্থা রুমে থেকে আমায় কল দিচ্ছে এই ছেলে বিয়ে করার খুশিতে পাগল হয়ে গেছে,, অনিক কথাটা বলে ফোনটা রিসিভ করে কানে রাখল তারপর ফোনের ওপাশ থেকে যা বলল সেটা শুনে অনিক চিৎকার করে বলল,, ইয়েস,, অনিকের ইয়েস বলা দেখে সবাই ওর দিকে তাকালে অনিকের হাসি হাসি মুখটা চুপষে গেলো তারপর অনেকটা গম্ভীর মুখ করে বলল কিহ??

আমার গল্পে তুমি পর্ব ২৫+২৬+২৭