আমার গল্পে তুমি পর্ব ১৯+২০+২১

আমার গল্পে তুমি পর্ব ১৯+২০+২১
সুমাইয়া সুলতানা সুমী

কথায় বলে সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় জন আসলে সম্পর্ক ভেঙে যায় তবে কিছু কিছু সময় সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় কেউ আসলে মনের না বলা অনুভূতি গুলো বেরিয়ে আসে , ইয়ানার ক্ষেএে ও তাই হয়েছে তখনকার কথাগুলো গুলো মনে করে বিছানায় শুয়ে মিটমিট করে হাসছে ইয়ানা। বিছানা থেকে নেমে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজেকে বলল ,, এই কি হ্যাঁ এমন করে হাসছিস কেনো?? প্রেমে পরেছিস?? আচ্ছা সত্যি কি আমি প্রেমে পড়েছি তাও আবার ওই গাম্বাট রাগী লোক টার এও সম্ভব?? না না আমি এমন টা কখনোই করতে পারি না ওই লোকটাকে কীভাবে আমার ভালো লাগতে পারে ,, তবে ওনি তখন ওভাবে আমার পক্ষে কথা বলায় কেমন যেনো লাগছে মনে হচ্ছে আমি এবার সত্যি সত্যি ওনার প্রেমে পড়ে যাবো , ইয়ানা তখন কার ঘটনা মনে করতে লাগল।

—- কি হচ্ছে এখানে?? আর ইয়ানা তুমি এখনো বাড়ি যাওনি কেনো?? রাত হয়ে যাচ্ছে তো।
—-বাড়িই তো যাচ্ছিলাম কিন্তু আপনার বান্ধবীর জন্য আর যেতে পারলাম কই।
—মানে?? ইয়ানা কি বলছে লিজা।
—দেখ না আর্দ্র আমি শুধু ওকে বলেছি আমাকে একটু হেল্প করতে কিন্তু ও আমায় কতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো, , আচ্ছা তুই বল আমি তো একটা মেয়ে এই এতোবড় ব্যাগ আমি নিতে পারি?? ওকে শুধু একটু বলেছি আমাকে সাহায্য করতে আর ও উল্টে আমায় অপমান করলো, , এ কেমন টিচার রেখেছিস পরশের জন্য যায় নিজের কোনো শিক্ষা নেই সে কি করে পরশকে ভালো কিছু শিক্ষা দেবে বল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—-লিজার কথা শুনে ইয়ানার মন চাচ্ছিলো মুখের উপর সব সত্যি কথা গুলো বলে দিতে কীভাবে একের পর এক মিথ্যা বলে মিস্টার আর্দ্রর কাছে ভালো সাজছে ,, তবে না আমায় শান্ত থাকতে হবে আগে দেখি মিস্টার আর্দ্র কি করে সব ক্ষেএে ধর্য ধারণ করতে হয়।
—সেকি ইয়ানা এটা তোমার কেমন ব্যাবহার আমার জানা মতে তুমি তো এমন নও আর লিজা তো শুধু তোমার কাছে একটু সাহায্য চেয়েছে আর তুমি ওকে অপমান করলে এটা মোটেও ঠিক নয়।

—সব সময় এক পক্ষের কথা শুনে বিচার করা ঠিক নয় মিস্টার আর্দ্র আমি এতোক্ষণ চুপ ছিলাম বলে ওনার বলা কথাগুলো সত্যি এটা কিন্তু নয়৷ আর ওনি যদি সত্যি আমার কাছে সাহায্য চাইতো তবে আমি নিশ্চয়ই ওনাকে সাহায্য করতাম কিন্তু ওনি তা করেননি উল্টে আমাকে হুকুম করেছে যেনো আমি এই বাড়িতে কাজ করি ,, এখন হয়ত আপনি আমার বলা কথাগুলো বিশ্বাস করবেন না কেননা আমি তো এবাড়ির কেউ নয় আর লিজা ম্যাম আপনার বন্ধু আপনি ওনার কথায় বিশ্বাস করবেন।

—- আমি কখনই মিথ্যাকে সমর্থন করি না সেটা তুমি ভালো করেই জানো আর লিজা যদি এমনটা করে থাকে তাহলে অবশ্যই ওকে তোমার কাছে মাফ চাইতে হবে ,, লিজা মিস ইয়ানা যা বলল তাকি সত্যি?? কি হলো চুপ করে আছিস কেনো বল।
—- এই মেয়েটার জন্য আর্দ্রর কাছে খারাপ হওয়া যাবে না নিজেকে আর্দ্রর সামনে ভালো প্রমাণ করতেই হবে ,, আ ,,আসলে আমি আমার ব্যাবহারের জন্য সত্যি অনেক লজ্জিত ,, সরি।
—ইট’স ওকে যে নিজের ভুল বুঝতে পারে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত , , ওকে আমি আসি তাহলে।
,,,,বর্তমান,,,,

–কিরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওভাবে একা একা হাসছিস কেনো??
— ক,,কই আম্মু আমি হাসছি কই এমনিতেই চুল আচঁড়ায়।
–আচ্ছা আয় এখানে বস, , এখন বলত সোহাগ কে তোর কেমন লাগে।
—ভালোই তো দেখতে শুনতে ভালো আর ব্যাবহার ও ভালো কেনো বলোত??
–নাহ কিছু না এমনিতেই তোর পছন্দ হয়েছে এটাই অনেক , আচ্ছা এখন তাহলে শুয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে বেশি রাত জাগা ঠিক নয়।
—ওকে আম্মু।

—আমার মুখে কি হাসার মতো কিছু আছে?? ওভাবে আড়ে আড়ে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছো কেনো??
—-এইরে ওনি কি দেখে ফেললো নাকি ,, ক, কই নাতো আমি আপনার দিকে তাকিয়ে হাসবো কেনো আমি তো এমনি।
—এমনি কি হুমম?? তোমার কিন্তু কাজের প্রতি তেমন মন দেখছি না তোমার ব্যাপারটা কি, বলোত কথাটা বলে আর্দ্র চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে ইয়ানার দিকে যেতে লাগল আর ইয়ানাও ভয়ে পিছাতে লাগল পিছাতে পিছাতে দরজার সাথে লেগে গেলো।
—আপনি এভাবে আমার দিকে আগাচ্ছেন কেনো??

–তুমি পিছিয়ে যাচ্ছো তাই ,, আর তুমি এভাবে পিছাচ্চো কেনো?? কথাগুলো বলতে বলতে আর্দ্র আরো ইয়ানার দিকে এগিয়ে গেলো আর্দ্র আর ইয়ানার মধ্যে এখন মাএ এক হাত ফাঁকা তখনি বাইরে থেকে কেউ দরজায় ধাক্কা দিলো আর ইয়ানা তাল সামলাতে না পেরে সোজা গিয়ে আর্দ্রর গায়ের উপর পড়ল ইয়ানার দু হাত আর্দ্রর কাঁধে আর ভুল বসত ইয়ানার ঠোঁট গিয়ে আর্দ্রর ঠোঁটে ছোঁয়া লাগে।
—এই ইডিয়ট দেখে দরজা খুলতে পারো না এরপর থেকে দেখে শুনে দরজা খুলবে যাও এখন।
—-সরি স্যার।

—মিস ইয়ানা তুমিও এখন যেতে পারো ,, আর্দ্র গিয়ে চেয়ারে বসল, আর ওদিকে ইয়ানা চোখগুলো বড় বড় করে এখনো সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে ,, আর্দ্র কি বলছে সেটা যেনো ও শুনতেই পাইনি।
—মিস ইয়ানা তোমাকে কি যাওয়ার জন্য কার্ড দেওয়া লাগবে?? দাঁতে দাঁত চেপে জোরে বলল আর্দ্র।
— জ ,,, জি হ্যাঁ হ্যাঁ আমি যাচ্ছি , কোনো মতে ওখান থেকে পালিয়ে এলো ইয়ানা, নিজের ডেস্কে এসে তখনকার ঘটনা টা ভাবতে লাগল ,, ছিঃ ওনি কি ভাববে শেষ মেষ কিনা ওনার সাথে আমার লিপকিস হয়ে গেলো ওহ নো এতো দিন যাও আমার ঘুম হতো এখন তাও হবে না৷ আচ্ছা হঠাৎ করে আমার এতো লজ্জা লাগছে কেনো,, কি জানি অফিসে থাকা কালিন ইয়ানা লজ্জাই আর আর্দ্রর সামনে যায়নি যাও বা গেছে তবে ওনার দিকে তাকাইনি পুরো টা সময় নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো আর আর্দ্র এমন ভাবে আছে যেনো কিছুই হয়নি ।

সন্ধ্যায় ,,,,
— আরে ইয়ানা তুমি এসো পড়েছো কিন্তু আজকে তো পরশ বাসায় নেই।
— কেনো আপু চাম্প কোথায় গেছে??
— পরশ আজকে একটু আমার মায়ের বাসায় গেছে, , আমার ভাই এসে ওকে নিয়ে গেছে।
— ওহ তাহলে তো আজকে আর পড়ানো নেই আমি তাহলে আসি এখন।
— আরে কই যাচ্ছো কোথায়ও যাওয়া হবে না বসো আমার কাছে আর শোনো কালকে সকাল সকাল আমাদের বাসায় চলে আসবা ওকে।

— সেকি কেনো আপু কালকে তো শুক্রবার ছুটির দিন তাহলে আবার আমি আসবো কেনো??
— আরে কালকে পরশের জন্মদিন তাই বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে তুৃমি সকাল সকাল চলে আসবা বুঝেছো, তুমি হলে পরশের একমাএ কিউটিপাই তুমি সকাল সকাল চলে আসবা নইলে কিন্তু তোমার চাম্প অনেক রাগ করবে বুঝেছো।
— ওকে আপু।

–লিজা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে দেখল ইয়ানা অন্তরার সাথে বসে গল্প করছে,, এই মেয়েটাকে তো আমার প্রথম থেকেই পছন্দ নয় এসব মেয়েরা বড় লোকের ছেলে দেখলেই হামলে পড়ে কেমন বাড়ির সবাইকে হাত করে নিয়েছে তবে আর্দ্র শুধুই আমার ওকে আমি কিছুতেই হারাতে পারবো না, আমি শিওর এই মেয়েটা আর্দ্রকে পছন্দ করে ,, লিজা সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কথাগুলো ভাবছিলো তখনি আর্দ্র আর অনিক অফিস থেকে আসল আর্দ্র কে দেখেই লিজা পায়ে হাত দিয়ে সিঁড়িতে বসে চিৎকার করতে লাগল,,, আহ আমার পা মনে হয় একেবারে ভেঙ্গে গেছে আহ আমি তো হাঁটতেই পারছি না।

–আরে লিজা ম্যাম কি হলো আপনার।
ইয়ানাকে এগিয়ে আসতে দেখে লিজা রাগে ফুসতে লাগল তবুও জোর করে ওখানেই বসে থাকল,, আরে আমার হাত ধরুন আমি আপনাকে উঠতে সাহায্য করছি।
নাহ তুমি পারবে না আহ অনেক বেথ্যা করছে আর্দ্র প্লিজ হেল্প মি।
দেখি কি হয়েছে?? আর্দ্র গিয়ে লিজার হাত ধরে ওকে দাঁড় করালো তারপর লিজা আর্দ্রর হাতটা চেপে ধরে আর্দ্রর সাথে হেঁটে যেতে যেতে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিলো ,, ইয়ানা ভ্রু কুঁচকে লিজার দিকে তাকিয়ে আছে কেননা ওহ ঠিকই বুঝতে পেরেছ এটা লিজার নাটক ইয়ানা রেগে মুখটা ফুলায়ে তাকিয়ে থাকল।

সবাই টেবিলে খেতে বসেছে লিজা গিয়ে আর্দ্রর পাশের চেয়ারে বসে পড়েছে আর্দ্রর মা আর বাবা আগেই খেয়ে ঔষুধ খেয়ে রুমে চলে গেছে ইয়ানা এখনো যায়নি অন্তরা যেতে দেয়নি বলেছে খেয়ে যেতে।
আরে আপু তোমাকে যেতে হবে না তুমি বসো আমি রান্নাঘর থেকে তরকারি আনছি,, এই বলে ইয়ানা রান্নাঘরে চলে গেলো তারপর তরকারির বাটিতে একটা আঙুল চুবিয়ে দেখলো ওটা তেমন গরম নাহ প্রায় ঠান্ডা হয়ে গেছে তখনি ইয়ানার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো,, তখন আর্দ্রর লিজার হাত ধরাটা কেমন যেনো ভালো লাগছে না ইয়ানার এটা জেলাসি নাকি অন্যকিছু সেটাও বুঝতেছে ইয়ানা ওর শুধু রাগ হচ্ছে আর্দ্র লিজার হাত কেনো ধরবে,, ইয়ানা তরকারির বাটি থেকে কিছুটা ঝোল পায়ের উপর ফেলে দিয়ে ফ্লোরে বসে কান্না করতে লাগল।

আহ আমার পা ইস মনে হয় ফুসকা পড়ে গেছে আহ অনেক জ্বলছে এখন কি করবো,, পা ধরে ইয়ানা কান্নার নাটক করতে লাগল।
আরে মিস ইয়ানার আবার কি হলো তোমরা থাকো আমি দেখে আসছি,, আর্দ্র গিয়ে দেখল ইয়ানা ফ্লোরে বসে আছে। কি হয়েছে এভাবে ফ্লোরে বসে আছো কেনো??
দেখুননা পায়ে তরকারিটা পড়ে গেছে অনেক গরম আহ পায়ে মনে হয় ফুসকা পড়ে গেছে উফ অনেক জ্বলছে।

কই দেখি,, আর্দ্র দেখলো সত্যি ইয়ানার পায়ে তরকারি আর্দ্র নিচু হয়ে ইয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে ডয়িং রুমে গেলো,, লিজা ডাইনিং টেবিলে বসে রাগি চোখে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে ছিলো ইয়ানা লিজাকে দেখে আর্দ্রর গলাটা জরিয়ে ধরল, তাই দেখে লিজা তো রেগে মেগে খাবার টেবিল থেকে উঠে চলে গেছে,, আর্দ্র ইয়ানাকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে ওর পা পরিষ্কার করে দিয়ে ওখানে মলম লাগাচ্ছে আর এদিকে ইয়ানা হুদাই গালে হাত দিয়ে বসে আছে কেননা ওর তো পায়ে লাগেইনি।
অন্তরা আস্তে করে চেয়ার থেকে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে তরকারির বাটিতে হাত দিয়ে দেখলো ওটা ঠান্ডা তেমন গরম না কিছু একটা ভেবে অন্তরা নিজের মনেই হেসে উঠল।

পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে , অন্তরা গাড়ি পাঠিয়ে ইয়ানার মাকে বলে ইয়ানাকে সেই সকালেই নিয়ে এসেছে বাড়ি সাজানোর জন্য লোক আনা হয়েছে তাদের সাথে ইয়ানাও যোগ দিয়েছে, গলার সাথে ফুলের মালা সহ হাতে অনেক গুলো ফুল , দেখে যেনো মনে হচ্ছে কোনো ফুল রাজ্যের ফুল কুমারি ,, আরে ওখানে তো ফুল দেওয়াই হয়নি এই লোকগুলো না শুধু কাজে ফাঁকি দেওয়ার ধান্দা সন্ধ্যাই পার্টি আর এখনো এদের সাজানো হলোই না ,, কথা গুলো বলে ইয়ানা সিঁড়ির দিকে গেলো পুরো সিঁড়ির উপর থেকে নিচে অবধি ফুল দিয়ে সাজানোর জন্য।

কাজের সময় এই বাড়িতে কাউকেই পাওয়া যায় না, সকালে কেউ আমার রুমে কফি টাও দেয়নি আজব ,, মাথাটা ধরেছে এখন এক কাপ কফি হলে ভালো হতো , ভাবি কে বলতে হবে,, কথাগুলি বলতে বলতে আর্দ্র নিচে নামছিলো তখনি সামনে ইয়ানার সাথে দেখা হয়ে গেলো ,, কি ব্যাপার এমন কার্টুন সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছো কেনো??
খুশির ঠেলায় হয়েছে?? নিজে তো কাজ করবেই না আবার অন্য কেউ কাজ করলে শুধু উল্টা পাল্টা বলে, আর্দ্র কে পাত্তা না দিয়ে ইয়ানা নিজের কাজ করতে লাগল সিঁড়ির একদিয়ে হয়ে গেছে তাই অন্য পাশে যেতে গেলে আর্দ্রও নিচে নামতে গেলো কিন্তু পারলো না কেননা দুজনেই সামনাসামনি হয়ে গেছে ইয়ানা যেদিকে যাচ্ছে আর্দ্র ও সেদিকে যাচ্ছে ।

–কি হচ্ছে টা কি সরো সামনে থেকে নিচে নামবো আমি।
—তো যাননা আপনাকে নিষেধ করেছে কে আপনিই তো আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সরুন তো আমার এখনো অনেক কাজ বাকি , ভাব নিয়ে বলল ইয়ানা৷
–ইডিয়ট , ,
— কিহ আমি ইডিয়ট?? কত্তো বড় সাহস আমাকে ইডিয়ট বলল নেহাত ওনি আমার বস আর আপুর একমাত্র দেবর তাই জন্য কিছু বললাম না নয়ত ,, নাহ থাক ওনাকে নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজ করি।

আর্দ্র অন্তরার কাছে কফি চেয়ে উপরে চলে গেছে আর বলে গেছে যাতে কাউকে দিয়ে কফিটা করে ওর রুমে দিয়ে আসতে অন্তরাকে কফি বানাতে নিষেধ করেছ কেননা অন্তরার এখন প্রায় সাত মাস চলছে , তাই অন্তরা ইয়ানাকে বলল আর্দ্রর কফিটা বানাতে ইয়ানা তো জানে না যে আর্দ্র কফিতে চিনি খাইনা তাই ইয়ানা ভুল বসত কফিতে চিনি দিয়ে ফেলেছে তারপর কফিটা আর্দ্র কে দিতে যাবে তখনি ওখানে লিজা এসে বলল ,, এটা নিশ্চয়ই আর্দ্রর কফি রাইট?

— জি এটা ওনার কফিই।
— ওকে তাহলে তুমি কফিটা আমায় দিয়ে দাও আমি গিয়ে আর্দ্র কে কফিটা দিয়ে আসব, তুমি বরং অন্য কাজ করো।
— তাহলে তো ভালোই হয় এই নিন আপনিই বরং কফিটা মিস্টার আর্দ্র কে দিয়ে আসেন। লিজা ইয়ানার থেকে কফিটা নিয়ে বাঁকা হেসে আর্দ্র কে দিতে গেলো গিয়ে দেখল আর্দ্র ওর রুমে বিন ব্যাগে এর উপর বসে ল্যাপটপ কোলের উপর নিয়ে কাজ করছে লিজা গিয়ে আর্দ্র কে বলল,, এই নে তোর স্পেশাল কফি।

—আর্দ্র লিজার থেকে কফিটা নিয়ে মুখে দিয়েই চোখটা বন্ধ করে আবার খুলে বলল , কফিটা কে বানিয়েছে?? লিজা ভেবেছে কফিটা অনেক ভালো হয়েছে তাই হাসি হাসি মুখ করে অনেক ভাব নিয়ে বলল, কেনো আমি বানিয়েছি অনেক ভালো হয়েছে তাই না?? আসলে প্রথম প্রথম যে এতোটা ভালো হবে ভাবিনি।

–লিজার কথা শুনে আর্দ্র কফিটা টি টেবিলের উপর জোরে শব্দ করে রেখে বলল,, ফাস্ট টাইম তাই কিছু বললাম না , কফিটা বানানোর আগে তোর ভাবির থেকে জানা উচিত ছিলো আমি চিনি খাইনা আর তুই যে কফিটা বানিয়েছিস সেটা তে এতো পরিমান চিনি দেওয়া যেন মনে হচ্ছে এটা কফি নয় চিনির শরবত, ওকে পরবর্তী তে যেনো এমনটা না হয় এখন যেতে পারিস।
— লিজা রাগে ফুঁসসে ও ভাবছে ইয়ানা ইচ্ছে করে এটা করেছে যাতে আর্দ্র লিজাকে রাগ করে,। পরশকে কোলে নিয়ে ওর মামা আকাশ আর্দ্রদের বাড়িতে আসল,, হ্যালো মিস কিউটিপাই আমি কি আপনাকে কাজে সাহায্য করতে পারি??

— পরশের দেওয়া নামে অন্যকেউ ডাকায় ইয়ানা পিছনে তাকিয়ে দেখলো পরশকে কোলে নিয়ে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে বয়স আর্দ্রর কাছাকাছি তবে ওনার থেকে ছোটই হবে,,, আপনি??
— আমি হলাম আপনার চাম্প এর একটা মাএ মামা আর আমি আপনাকে কিউটিপাই বলে ডেকেছি বলে রাগ করবেন না প্লিজ পরশের থেকে আপনার এই নামটা জেনেছি ও বলেছে আপনি নাকি অনেক কিউট আর ভালো এখন তো দেখছি সত্যিই তাই। আকাশের সাথে ইয়ানার অনেক ভাব হয়ে গেলো তারপর দুজনে মিলে বাকি কাজগুলোও সেরে নিলো বিকেলের দিকে ইয়ানা অন্তরাকে বলে বাড়ি চলে গেলো বলল সন্ধ্যার সময় একেবারে রেডি হয়ে আসবে অন্তরাও ওকে আর নিষেধ করলো না।
,,,,,সন্ধ্যায়,,,,

সবাই রেডি হয়ে ডয়িং রুমে চলে এসেছে পরশ কেকের সামনে দাঁড়িয়ে পরশ আজকে সুট পরেছে অনেক মিষ্টি লাগছে দেখছে লিজা এতো পরিমাণ মেকাপ দিয়েছে মুখে যেনো ওর মুখের মেকাপ ওঠিয়ে পরোটা বানালে অন্তত বিশজন মানুষ কে সেই পরোটা একটা একটা করে খাওয়ানো যাবে সবাই নিজের কাজে ব্যাস্ত তখন আকাশ দরজার দিকে তাকায়ে আনমনেই বলে উঠল ওয়াও সো বিউটি ফুল, আকাশের কথা শুনে পরশও দরজার দিকে তাকিয়ে বলল বিউটিফুল কিউটিপাই আর্দ্র হাতে ঘড়ি পরতে পরতে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো তখনি বেখেয়ালে ওর চোখ দরজার দিকে পরল দেখলো কালো শাড়ি পরিহিতা এক আগুন সুন্দরী রমনী তার শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে ব্যাস্ত আর্দ্র না চাইতেও ওর চোখ দরজায় দাঁড়ানো ইয়ানার দিকে আটকে গেলো ,, ওদিকে ইয়ানা শাড়ি পড়ে হাঁটতে পারেনা আম্মু শাড়িটা পরিয়ে দিয়েছে অনেক কষ্টে এতোপথ আসলেও এখন জায়গায় এসে কুঁচি পায়ের সাথে জড়িয়ে গেছে তাই ও দরজায় দাঁড়িয়েই শাড়ির কুঁচি ঠিক করতেছে।

লিজার কথায় আর্দ্রর হুশ ফিরলো ,, বল না আর্দ্র আমায় কেমন লাগছে?? আর্দ্র ইয়ানার দিকে তাকিয়ে আনমনে বলে উঠল, অপূর্ব যেনো পরী রাজ্যের কোনো অপ্সরা ভুল করে জমিনে নেমে এসেছে।
আর্দ্রর কথায় লিজা খুশি হয়ে বলল৷ সত্যি বলছিস আর্দ্র??,, কিসের সত্যি আর হ্যাঁ তোকে তেমন ভালো লাগছে না মেকাপটা আর একটু কম করলে ভালো লাগত এখন চল চাম্প এর কাছে যাওয়া যাক,,,লিজা মন খারাপ করে আর্দ্রর পিছনে চলে গেলো পুরো অনুষ্ঠান টা খুব ভালো ভাবেই মিটে গেলো, পার্টি শেষ হতে হতে প্রায় রাত দশটা বেজে গেছে সবাই খাওয়া শেষ করে বিদায় নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে ইয়ানা আকাশের সাথে কথা বলছিলো তখন ও বলল আমি একটু আসছি আপুসহ বাকিদের থেকে বিদায় নিয়ে আসি এই বলে ইয়ানা অন্তরার কাছে যেতে গিয়ে শুনতে পাই।

–কি হচ্ছে কি আর্দ্র তুমি এমন করছো কেনো একে তো এতো রাত মেয়েটা একা যাবে কি করে তুমি গিয়ে দিয়ে আসলে কি এমন হবে।
–সরি ভাবি আমি পারবো না রোজ রোজ ওই মেয়েকে আমিই কেনো দিয়ে আসবো আমি কি ওর ড্রাইভার নাকি??
–হ্যাঁ ভাবি আর্দ্র তো ঠিকি বলেছে ওই মেয়ে কে যে ওকে দিয়ে আসতে হবে আর ও একা এসেছে একাই যেতে পারবে আর্দ্র এখন যাবে না।

–লিজা কিছু মনে করো না তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না তবুও কথাটা বলতে বাধ্য হচ্ছি তুমি বাইরের মানুষ বাইরেই থাকো আমি আর্দ্রর ভাবি আমি আর্দ্রর সাথে কথা বলছি তুমি আমাদের কথার ভিতর নাক না গলালেই আমি খুশি হবো, অন্তরার কথা শুনে লিজা লজ্জায় চুপ করে থাকলো, আর বাইরে থেকে ইয়ানা কথা গুলো শুনে রেগে ওর চোখে পানি চলে আসলো,,, ওনি কি ভাবে কি নিজেকে আমার কাউকে লাগবে না আমি একায় চলে যেতে পারবো কথাটা নিজে নিজে বলেই ইয়ানা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো , ওদিকে আর্দ্রদের কথা বলার মাঝেই আকাশ এসে বলল।
–আপু আর্দ্র ভাই এর যদি সম্যসা হয় তাহলে আমি গিয়ে মিস ইয়ানা কে দিয়ে আসি??
–তাহলে তো অনেক ভালো হয় ভাই তুই বরং যা গিয়ে মেয়েটাকে দিয়ে আয় অনেক রাত হয়েছে,, আড় চোখে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে বলল অন্তরা।

—ইয়ানাকে আকাশ দিয়ে আসবে শুনে আর্দ্র কেনো যেনো অনেক রাগ হলো তাই ও বলল,, কাউকে যেতে হবে না এতোদিন যখন আমিই ওকে দিয়ে আসছি আজকেও আমিই দিয়ে আসবো,, কথাটা বলে গটগট করে বেরিয়ে গেলো আর্দ্র ।
–সেই কাজটাই করবে শুধু শুধু এতোটা পেঁচালো ওই যে বলে না গাধা সেটাই খাই মাঝখানে শুধু হাদলায়,, বিরবির করে কথাটা বলে নিজেই হেসে ফেলল অন্তরা,, আকাশ তো হা করে দাঁড়িয়ে আছে কি হলো বেচারা কিছুই বুঝলো না, আর ওদিকে লিজা রাগে ফুঁসসে কিছু একটা করতেই হবে যে করেই হোক ওই মেয়েকে আর্দ্রর কাছ থেকে দূরে সরাতে হবে।

কি হচ্ছে কি ইয়ানা আমি কিন্তু এভাবে তোমার পিছু পিছু যেতে পারবো না আর দেখতে পাচ্ছো না বৃষ্টি হচ্ছে দ্রুত গিয়ে গাড়িতে বসো।
আমি কি আপনাকে বলেছি যে আমার পিছনে আসুন আপনি যায়না কেনো এসেছেন?? আমি একাই যেতে পারবো আমার কাউকে প্রয়োজন নেই।
ওহ রিয়েলি?? নিজের দিকে একবার তাকিয়ে দেখেছো বৃষ্টি তে ভিজে শাড়ির কি অবস্থা,, এই অবস্থায় তুমি বাড়ি যাবে?? মানুষকে শরীল দেখাতে ভালো লাগে??
ওনার কথা শুনে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি সত্যি শাড়ি ভিজে একদম গায়ের সাথে লেপ্টে গেছে আমি শাড়িটা আরো ভালো করে নিজের গায়ে পেঁচিয়ে নিলাম তবুও ওনার গাড়িতে যাবো না।

কি হলো এভাবে হা করে দাঁড়িতে আছো কেনো?? যাও গিয়ে গাড়িতে বসো, তোমার জন্য আমি ভিজে যাচ্ছি ,।
আমি কি আপনাকে ভিজতে বলেছি?? কেনো এসেছেন ,, আপনাকে বারবার আমার ড্রাইভার হওয়া লাগবে না আপনি যেতে পারেন,, আমি যখন একা আসতে পেরেছি তো একা যেতেও পারবো।

সত্যি ভালো কথা শোনার মেয়ে তুমি নও ,, সব সময় শুধু বকবক করতে জানো,, কথাটা বলে আর্দ্র ইয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করল, কেননা কথা বলতে বলতে ইয়ানা আর আর্দ্র গাড়ির থেকে প্রায় অনেক দূর চলে এসেছে।
এটা কি ধরনের ব্যবহার মিস্টার আর্দ্র, ছাড়ুন আমায়, নামিয়ে দিন,, আপনি না ভদ্র ঘরের ছেলে তাহলে এটা কেমন ব্যবহার মাঝ রাস্তায় বলা নেই কওয়া নেই এভাবে একটা মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন, আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
আর একটা কথা বললে কিন্তু রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যাবো তখন দেখবো কি করো।

দিন তো ফেলে দেখি কতবড় সাহস, কী ভেবেছেন আপনার এই ধমকানিতে আমি ভয় পেয়ে চুপ করে যাবো?? মোটেও না আপনি যতই আমায় ধমকান না কেনো আমি চুপ করবো না আআআআআআ এটা কি করলেন??
বলেছিলাম না বেশি বকবক করলে ফেলে দেবো তো সেটাই করলাম এখন যলদি করে গাড়িতে বসো নয়ত তোমাকে রেখেই চলে যাবো, আর রাত কিন্তু প্রায় এগারোটার বেশি বাজে যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে সেহেতু রাস্তায় তেমন কেউ নেই এখন দ্যাখো তুমি কি করবে নিজের ইগো দেখিয়ে এভাবে রাস্তায় বসে থাকবে নাকি গাড়িতে গিয়ে বসবে,আর হ্যাঁ, আমি গাড়িতে ওয়েট করছি যলদি এসো বেশি দেরি করলে কিন্তু তোমায় রেখেই চলে যাবো।

কি খরাপ লোক এভাবে কেউ রাস্তার উপর ফেলে দেয় আহ আমার কমরটা মনে হয় ভেঙেই গেছে যাবো না ওনার সাথে,, কিন্তু ওনি ঠিকি বলেছে এখন অনেক রাত হয়ে গেছে তার উপর আবার অনেক শীত করছে আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে তো অঙ্গান হয়ে যাবো কি করবো এখন ,,, আমার ভাবনার মাঝেই ওনি গাড়ির হর্ণ বাজাতে লাগল।
আসছি,, সব সময় শুধু এমন করে আহ বাড়ি গিয়ে গরম তেলের শেক নিতে হবে। ,, গাড়ির কাছে যেতেই ওনি ভিতর থেকে গাড়ির দরজা খুলে দিলো আমিও চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসলাম,৷, সেই তো আমার সাথেই এলে মাঝখানে এতো নাটক করার কি দরকার ছিলো।

দেখুন৷ ,,, অনেক দেখেছি আর দেখতে চাই না এখন তুমি চুপ করে থাকো,,।
তখন ইয়ানা রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর আর্দ্র ইয়ানাকে দিতে যাওয়ার জন্য ইয়ানাকে খুঁজতেছিলো তখন অনিক বলল যে একটু আগে নাকি ইয়ানা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে অনিক অনেকবার ডেকেছে তবুও ও শোনেনি,, অনিকের কথা শুনে আর্দ্র তাড়াতাড়ি করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আকাশে অনেক মেঘ ছিলো আর্দ্র বেরোনোর পরপরই আকাশ ভেঙে বষর্ণ শুরু হলো, আর্দ্র কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলো ইয়ানা বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতে হেঁটে যাচ্ছে তখনি ও গাড়ি থামিয়ে ইয়ানার পিছনে গেলো।
নামো তোমার বাড়ি এসে গেছে। আর কালকে হ,হাচ্চু সকাল সকাল চলে আসবা, মনে হচ্ছে তোমার জন্য আমার জ্বর আসবে।
এই শুনুন মোটেও আমার দোষ দিবেন না নিজেই তো আমার পিছনে আসলেন,, আর হ্যাঁ বাসায় গিয়ে সরিষার তেল গরম করে হাতে পায়ে আর কানে ডলে ডলে নিবেন আর ঔষধ খেয়ে নিবেন তাহলে দেখবেন সেরে যাবে, আর আমার কিছু হবে না আল্লাহর রহমতে, কেননা আমার এসবে অভ্যাস আছে।

হোয়াট কি বললে আমি ওই সরিষার তেল নেবো?? নো ওয়ে, আর তোমাকে এতো ঙ্গান দিতে হবে না যাও নামো।
একে তো দেখছি ভালো কথা বললেও দোষ, পরে বুঝবে মজা ,, ইয়ানা গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে চলে গেলো আর আর্দ্র ও গাড়ি ঘুড়ায়ে চলে গেলো।
সকালে,,,,

ইয়ানা অফিসে গিয়ে আর্দ্রর কেবিনের সামনে গিয়ে দরজায় নক করতেই ভিতর থেকে জবাব আসল এসো, ইয়ানা ভিতরে গিয়ে দেখলো ওখানে আর্দ্র নেই তার বদলে অনিক বসে আছে। একি ভা,,না মানে স্যার আপনি?? আর্দ্র স্যার কোথায়??
আরে ইয়ানা এসো বসো, আর্দ্রর কথা আর কি বলবো কালকে তোমাকে দিয়ে আসার পর রাতে সেকি জ্বর, তুমি তো জানোই অন্তরার এই অবস্থা আর মাতো রাতে ঔষধ খেয়ে ঘুমায় সারারাতে আর উঠে না, তারপর আমি আর অন্তরা গিয়ে মাথায় পানি দিয়ে ধুয়ে জোর করে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে এসেছি,, এখনো অল্প জ্বর আছেই তাও অফিসে আসতে চাইছিলো আমি ওকে জোর করে রেখে দিয়ে আসছি।
সত্যি স্যার আপনার ভাইটা বড্ড অবাধ্য কারো কোনো কথা শোনেই না, একদম ইগো ওয়ালা।

হ্যাঁ কিছু বললে??
ক,,,কই কিছু না তো??
আচ্ছা তাহলে চলে কাজ শুরু করা যাক,,, তারপর ওরা কাজ করতে লাগল, ইয়ানা তো পুরো সময় কেমন মনমরা হয়ে ছিলো যেনো ওর শরীল এখানে কিন্তু মন অন্য কোথাও অনিক অবশ্য এটা খেয়াল করেছে,

, আচ্ছা চাম্প তোমার চাচ্চু কোথায়, ওনাকে তো আজকে দেখছি না।
ওহ চাচ্চু?? চাচ্চুর তো অনেক জ্বর হয়েছে তাই রুমে শুয়ে আছে,, ডাক্তার দাদু এসে ওষুধ গিয়ে গেছে তবুও একটু একটু জ্বর আছে তাই শুয়ে আছে।
ওহ আচ্ছা,, বলছি কি তুৃমি একটু পড়ো আমি এখনি আসছি ওকে। আচ্ছা ঠিক আসে।

আমার গল্পে তুমি পর্ব ১৬+১৭+১৮

ইয়ানা পরশের রুম থেকে বেরিয়ে আর্দ্রর রুমে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো আর্দ্র চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে , ইয়ানা আস্তে করে রুমের ভিতর গিয়ে দেখল আর্দ্র ঘুমিয়ে রয়েছে,, ইস ওনার চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে আর নাক টাও কেমন লাল হয়ে আছে ,, ওনার হয়ত বৃষ্টি তে ভিজার অভ্যাস নেই তাই জ্বর চলে আসছিলো তবুও ওনাকে বললাম যে তেল নিতে নিলোই না এখন কেমন কষ্ট পাচ্ছে ।
তা তেলটা তুমিই দিয়ে দাও,, আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু দিতে পারিনি।

একি আপু তুমি কখন আসলে??
যখন তুমি আমার দেবর কে দেখছিলে তখন। তা বলছি কি এই যে আমি তেল গরম করে আনছি তুমিই না হয় দিয়ে দাও।
আমি??? না বাবা যদি রাগ করে।
আরে রাগ করবে কেনো আর ও তো ঘুমিয়ে আছে,,আর তাছাড়া তেল দিলে আরাম লাগবে আর ওতে ও আরো ভালো করে ঘুৃমাতে পারবে।

কিন্তু,,,
আরে দাও তো ও কিছু বললে আমি ওকে বকে দিবো। তুমি দাও
দিই তাহলে?? হুম দাও। তারপর ইয়ানা অন্তরার কাছ থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে আর্দ্রর মাথার কাছে বসে ওর দু হাতে তেল নিয়ে ঘষে আর্দ্র গলায় বুকে দিয়ে দিলো,, বুকে দেওয়ার সময় ইয়ানার মুখ আর্দ্রর মুখের খুব কাছে ছিলো, আর্দ্রর গরম নিশ্বাস সোজা গিয়ে ইয়ানার মুখে পড়ছিলো,, অন্তরা দূর থেকে তাকিয়ে ওদের দূজনকে দেখছিলো।

দুজনের মনেই দুজনকে নিয়ে কিছু একটা আছে কিন্তু কেউ কাওকে সেটা বলবে না, কেউ হার মেনে কারো কাছে মাথা নত করবে না,, তাহলে তো তাদের ইগো হার্ট হয়ে যাবে, হুমম আমাকেই কিছু একটা করতে হবে দেখছি,,,

আমার গল্পে তুমি পর্ব ২২+২৩+২৪