আমার শহরে তুমি পর্ব ১১ || Alisha Rahman Fiza

আমার শহরে তুমি পর্ব ১১
লেখনীতেঃ Alisha Rahman Fiza

ব্রেকফাস্ট শেষ সবার থেকে বিদায় নিয়ে রায়জাদা ভিলার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলাম।রক্তিম আগের মতেই মুখ গম্ভীর করে রেখেছে বুঝতে পারছিনা তার কী হয়েছে?আমি সাহস করে রক্তিমের হাতে হাত রেখে বললাম,
~কী হয়েছে?আপনার রাত থেকে দেখছি অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে।
রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত চাহনি দিয়ে বললেন,
~অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি।
রক্তিমের কথা শুনে আমার বুকটা হুহু করে উঠলো। কী এমন করেছে সে? আমি শুকনো ঢোক গিলে বললেন,
~কী করেছে আপনি?

রক্তিম গাড়ি থামিয়ে দিলেন রাস্তা একপাশে সে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
~গতকাল বাবা ফোন করেছিলেন। বাবা বললেন যে এখনই হাসপাতালে আসতে আমিও ভয় পেয়ে হাসপাতালে চলে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি বাবা আইসিইউয়ের সামনে বসে আছে।বাবা আমাকে দেখে বললেন তার বন্ধু রায়হান চাচ্চু শরীর ভালো না সে গুরুতর অসুস্থ।
এতটুকু বলে সে চুপ হয়ে গেলো।আমি শান্ত কন্ঠে বললাম,
~এতটুকু ব্যাপার হলে আপনি এতোটা চিন্তিত হতেন না।
রক্তিম গাড়ির সীটের সাথে হেলান দিয়ে দুচোখ বন্ধ করে বললেন,

~ বাবা আমার বিয়ে রায়হান চাচ্চুর মেয়ে রাহির সাথে ঠিক করেছিলেন।তারা ভেবেছিলেন আমি আমেরিকা থেকে ফিরে আসলে আমাদের বিয়ে করিয়ে দিবেন কিন্তু আমি তোমাকে বিয়ে করে ফেলি।তাই বাবা গতকাল যখন রায়হান চাচ্চুকে এ কথা বলতে যাবেন তখনই খবর আসে রায়হান চাচ্চু হাসপাতালে ভর্তি আর অবস্থা খারাপ। বাবা সেখানে পৌছায় আর রায়হান চাচ্চুর সাথে দেখা করে। রায়হান চাচ্চু বাবাকে বলে যে সে আজই এই মূর্হূতে আমার আর রাহির আকদ করতে চান।বাবা মানা করতে যাবে কিন্তু ডক্টর বলেছে তাকে কোনো ধরনের প্রেসার দেওয়া যাবে না।তাই বাবা আমাকে ফোন করে সেখানে ডাকে আর বলে আমি যাতে রাহির সাথে আকদ করার অভিনয় করি।
রক্তিমের কথা শুনে আমি ঠান্ডা মাথায় বললাম,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

~আপনি কী আকদটা করে ফেলেছেন?হ্যাঁ বা না।
রক্তিম ছলছল নয়নে বললেন,
~হ্যাঁ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না।প্লিজ অনেক চেষ্টা করেছি আমি।তোমার হয়তো মনে হবে আমি তোমাকে ধোঁকা দিতে চাই এমন কিছু না।অধরা
রক্তিমের দিকে ঝুঁকে তার গালে ঠোঁট ছুয়িয়ে আমি বললাম,
~যদি আপনি আমাকে ধোঁকা দিতেই চেতেন।তাহলে আজ আমাকে সত্যিটা বলতেন না।এই কারণেই আপনাকে মাফ করলাম কিন্তু রায়হান চাচ্চুকেও সময় হলে সব বলে দিতে হবে।আমার বরের উপর আমি কারোও অধিকার সহ্য করতে পারবো না।Got it.

এতটুকু বলে সরে আসলাম রক্তিম আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন সে হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেনা।আমি তার গাল টেনে দিয়ে বললাম,
~এখন চলেন বাসায় না হলে আমার দেবর রাগ করবে তার একমাত্র ভাবী তার এতো বিশেষ দিনে বাসায় নেই।
রক্তিম সামনের দিকে তাকিয়ে আবার ড্রাইভ করা শুরু করলো।সে ড্রাইভ করছে আর বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে তার এ অবস্থা দেখে আমার অনেক হাসি আসছে।কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে আমি জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে থাকলাম।

রায়জাদা ভিলায় আজ খুশির আমেজ হবেই বা না কেন এ বাড়ির ছোট ছেলের বিয়ের তারিখ ঠিক হবে।সাহারা রায়জাদার খুশিতে মাটিতে পা পরছে না রাতকে সে বরাবরই অনেক ভালোবাসে আর রাত তার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করছে এর থেকে বেশি তার কিছুই চাই না।সাহারা রায়জাদা আয়নার সামনে দাড়িয়ে একেরপর এক ডিজাইনার শাড়ি গায়ে জড়িয়ে ধরছে।সে নিজেকে পরিপাটি দেখতে চায় কিন্তু কথায় আছে মানুষের পরিচয় পোশাক দিয়ে নয় বরং তার ব্যবহার দিয়ে বোঝা যায়।সব গুলো শাড়ি শরীরে জড়িয়ে দেখেছে কিন্তু কোনোটাই তার পছন্দ হচ্ছে না।তাই বাধ্য হয়ে শেষের শাড়িটাই তার পছন্দ করতে হলো
তখনই ঘরে প্রবেশ করলো রাত। সাহারা রায়জাদা ছেলেকে দেখে বললো,
~রাত,সারা ও তার পরিবার কখন আসছে?
রাত বললো,
~২টায় পৌছে যাবে।
সাহারা রায়জাদা কার্বাড খুলে একটা বক্স বের করলো আর রাতের হাতে দিয়ে বললো,
~খুলে দেখ তো।সারার জন্য পার্ফেক্ট কি না?
রাত বক্স খুলে দেখলো অনেক পুরনো যুগের নেকলেস এই রকম গহনা দেখে সে ভরকে গেলো আর মাকে উদ্দেশ্য করে বললো,

~মা,তোমার কী বুদ্ধি শক্তি লোপ পেয়েছে।সারার সামনে আমার মান সম্মান কিছু রাখবে না তুমি।এই রকম পুরোনো একটা নেকলেস তুমি সারাকে দিবে।
ছেলের কথায় সাহারা রায়জাদার হাসি হাসি মুখটা নিমেষেই চুপসে যায় সে রাতকে বলে,
~রাত,এটাতো অনেক এক্সপেন্সিভ আর তোর দাদীমা আমাকে এটা দিয়েছে আর তোর বউকে আমি দিবো।
রাত মায়ের কথায় আরো খেপে গেলো আর বললো,
~বুঝেছি,টাকা খরচ করতে চাওনা তাই আমার সারাকে এই থার্ড ক্লাস নেকলেস দিতে চাও।লাগবে না তোমার উপহার
কথা শেষ হতেই রাত হাতে থাকা বক্স বিছানায় ছুড়ে মেরে হনহন করে রুম থেকে চলে গেলো।সাহারা রায়জাদা ছেলের এমন ব্যবহার দেখে অবাক হলেন।একটা সামান্য বিষয় নিয়ে এতো রাগ কেন দেখালো মায়ের সাথে এমন উঁচু গলায় কীভাবে কথা বললো।

বাসায় পৌছাতেই দেখলাম সব সার্ভেন্ট কাজে লেগে গেছে।আমি দাদীমার রুমে গিয়ে তার সাথে দেখা করে নিজের রুমে চলে আসলাম আসলে রক্তিমের জন্য টেনশন হচ্ছে।কেনজানি মনে হচ্ছে তাকে আমি হারিয়ে ফেলবো এ কথাটি ভাবতেই আমার কান্না আসে। আমাদের বিয়ে যেভাবেই হয়ে থাকুক না কেন সে আমার স্বামী আর আমি আমার স্বামীকে কেউর সাথে দেখতে পারবো না।এসব ভাবছি হঠাৎ রক্তিম আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~কী ভাবছো?
আমি মৃদ্যু হেসে বললাম,

~ভাবছি দেবরের বিয়ের তারিখ ঠিক হবে তাই ভাবিতো আর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারবে না তাই কী কী কাজ করবো নিজে কী পরবো তাই ভাবছিলাম।
রক্তিম আমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে বললো,
~তুমি কী আনইজি ফিল করছো?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
~আনইজি কেন ফিল করবো?
রক্তিম বললো,
~না মানে সারার পুরো পরিবার আজ আসবে তাই ভাবলাম আর কি।
আমি তার চুল একহাত দিয়ে ঠিক করে দিয়ে বললাম,
~রক্তিম ভুলটা আমার হলে অবশ্যই আনইজি ফিল হতো।আর সত্য কথা হচ্ছে রাত ঘৃনার পাত্র ভালোবাসার না।কিন্তু আমি চাই সে সুখে থাকে

রক্তিম আমার মুখ তার দুইহাতের বাধনে নিয়ে বললেন,
~তুমি যদি খুশি থাকো আমিও খুশি।আর শোন তোমার বইগুলো প্লিজ গুছিয়ে রাখো নয়তো এলোমেলো হয়ে যাবে।আমি নিচের কাজ গুলো দেখে আসি ডেকোরেশন ঠিকঠাক ভাবে হলো কী না?
আমি বললাম,
~ঠিক আছে।
রক্তিম আমার কপালে ঠোঁট ছুয়িয়ে মুচকি হেসে চলে গেলেন।আমি আমার কাজে লেগে গেলাম সব বই গুলো গুছিয়ে রেখে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম সারার পরিবার এসে পরবে কিছুক্ষন পর।

রক্তিম নিচে এসে ডেকোরেশনের কাজ চেক করছে।তার বাবা রাহাত এসে বললেন,
~তুই কী রাগ করে আছিস?
রক্তিম তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
~রাগ করবো কেন?তুমি তো আর আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওনি তাই না।
ছেলের কথায় যে ব্যাপক অভিমান আছে তা রাহাতের বুঝতে বাকি রইলো না।বাবার এমন নিরবতা দেখে রক্তিম বললো,
~বাবা,তুমি যদি আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে তাহলেও এতো কষ্ট লাগতো না যতোটা এখন এই মূহুর্তে লাগছে।
রক্তিম কথা শেষ করে অন্যদিকে চলে গেলো।আর রাহাত সেখানে দাড়িয়েই তার ছেলের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।রাহাত মনে মনে ভাবছে
~আমি ভুল করেছি তো আমিই শুধরাবো।ছেলের চোখে আমার জন্য ঘৃণা সহ্য করতে পারবো না।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি সাহারা রায়জাদা আমার রুমে দাড়িয়ে আছে।হাতে একটা বক্স আমি তাকে দেখে ভ্রুকুচকে বললাম,

~আপনি এখানে কোনো বিশেষ কাজে এসেছেন নাকি?
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই সাহারা রায়জাদা গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
~এ বাড়ি আমার যখন যেখানে মন চাইবে সেখানেই আসবো।
আমি মুচকি হেসে বললাম,
~ভুল বললেন এই বাড়িটা আমাদের। সে যাই হোক আপনি এখানে কী কারণে এসেছেন?
আমাদের বাড়ি এ কথাটি শুনে সাহারা রাগে কটমট করে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
~তোমার শশুর তোমাকে এই বক্স টা দিয়ে পাঠিয়েছে আর আজকে এই গহনার সেটটাই পরবে।আর শোন তোমার ওই মিডেল ক্লাস সাজ সেজে এসো না।
সাহারা রায়জাদার কথা শেষ হতেই আমি উচ্চ শব্দে হেসে বললাম,

~যতই সুন্দর করে সেজেই আসি না কেন আপনাদের হাই সোসাইটির মতো হতে পারবো না কারণ আমি মনটা পরিষ্কার তাই আপনাদের সাথে যাবে না।
আমার কথায় সাহারা রায়জাদা আর কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো।বিছানায় সেই বক্সটা রাখা আছে আমি একবার সেটার দিকে তাকিয়ে হাতে নিয়ে কাবার্ডে রেখে দিলাম।আয়নার সামনে গিয়ে মাথার টাওয়াল খুলে চুল ঠিক করতে থাকলাম।
রাত তার বারান্দায় দাড়িয়ে সারার ফোনে ট্রাই করছে কিন্তু যতোবার ফোন দিচ্ছে ততবারই বিজি বলছে। কয়েকদিন ধরে সারাকে ফোন করলেই বিজি পাওয়া যায় ব্যাপারটা ভালো ঠেকছেনা রাতের কাছে।একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে চলে গেলো রেডি হতে

শাড়িটা ঠিকভাবে পরে চুল গুলো সেট করে নিলাম তখনই রক্তিম ঘরে প্রবেশ করলো তার মুখটা অনেকটাই মলিন। আমাকে দেখে সে মুচকি হেসে বললো,
~তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।তোমার নাকফুলটা কোথায়?
আমি নাকে হাত দিয়ে দেখি আসলেই নাকফুলটা নেই। আমি চিন্তিত হয়ে বললাম,
~হয়তো ওয়াশরুমে খুলে রেখেছি।
বলেই ওয়াশরুমে গিয়ে দেখলাম আসলেই সেখানেই রাখা।একটা সস্বতির নিশ্বাস ছেড়ে আমি নাকফুলটা হাতে নিয়ে বের হলাম রক্তিমকে বললাম,
~পেয়েছি ওয়াশরুমে ছিল।
বলতে বলতে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নাকফুলটা পরে নিলাম।তখনই মনে পরলো সেই বক্সের কথা আমি রক্তিমকে বললাম,

~আপনার বাবা গহনা দিয়ে গেছেন পড়ার জন্য।আর আপনি তো জানেন আমি
আমার কথা শেষ না হতেই রক্তিম বললো,
~তুমি পরবেনা আমি জানি।
রক্তিমের কথায় মুচকি হেসে বললাম,
~আগামীকাল থেকে ভার্সিটি যাবো।মনে যেন থাকে।
রক্তিম বললো,
~তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ ওয়েট করছে কালকে।
আমি ভ্রুকুচকে বললাম,
~কী সারপ্রাইজ?
রক্তিম বাঁকা হেসে বললেন,
~আগামীকাল দেখে নিও।
আমি আর কিছু বললাম না। আগামীকাল দেখা যাবে কী হয়।

সারার পরিবার এসে পরেছে তাদের ওয়েলকাল অনেক সুন্দর ভাবে করা হলো।রাত অনেক এক্সসাইটেড কিন্তু সারাকে ততোটা এক্সসাইটেড দেখা যাচ্ছে না।সারার বাবা বললেন,
~রাহাত সাহেব,বিয়ের তারিখটা তাহলে ঠিক করা যাক?
রাহাত বললো,
~অবশ্যই।
হঠাৎ সারা তার বাবার উদ্দেশ্যে বললেন,
~বাবা,এখন বিয়ের তারিখ বের করাটা ঠিক হবে না আমার শো রুমটাও এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।তাই ভাবছিলাম আগে নিজের ক্যারিয়ারটা ঠিক করি তারপর না হলে বিয়েটা হোক।
রাত কিছু বলছেনা তার নিরবতা দেখে সাহারা রায়জাদা বললো,
~সারা তুমি কী বলছো?
সারা বিরক্তি নিয়ে বললো,
~আন্টি প্লিজ try to understand. Raat say something i don’t want to marry now.

রাত তার নিরবতা কাটিয়ে বললো,
~সারা যেভাবে বলছে সেভাবেই হবে।
রাতের কথায় রাহাত রায়জাদা বললেন,
~তাহলে আর কথাই রইলোনা। তোমরা ভেবে চিন্তে আমাদের বিয়ের তারিখ জানিয়ে দিও।
সারার বাবা-মা আর কোনো কথা না বলে মেয়েকে নিয়ে চলে যান।সাহারা রায়জাদা রাতের কাছে গিয়ে বললেন,
~তোর কোনো মতামত আছে নাকি সারা যা বলবে তুই তাই করবি।
রাত মায়ের কথায় চেচিয়ে বলে,
~তোমার এতো কীসের প্রবলেম? বিয়ে পরেও হতে পারবে যত্তসব নাটক।
রাতের কথা শেষ হতেই রক্তিম রেগে বললো,
~মায়ের সাথে এটা কেমন ব্যবহার রাত?
রাত রেগে গিয়ে বললো,
~ভাই কোনো কথা বলবে না আজাইরা পাবলিক।

তারপর রাত বিড়বিড় করতে করতে উপরে চলে গেলো।পুরো ঘটনায় আমি নিরব দর্শক শুধু সবার কথা শুনে গেছি এখন ভাবার বিষয় সারা এখন বিয়ে কেন করতে চাইছে না।আমি আর এই ব্যাপারে ভাবলাম না নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাতঃ১০টা সারা আর রাতের নাটকের কারণে দুপুর থেকে রাত হয়ে গেলো।আমি রক্তিমের জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু তার কোনো খবর নেই।রক্তিমের অপেক্ষা করতে করতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম
রক্তিম রুমে এসে দেখলো অধরা ঘুমিয়ে গেছে।রক্তিম সেদিকে তাকিয়ে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে অধরাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বললো,
~অধরা,তুমি আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে তাইতো আমাকে বিশ্বাস করেছো।আজ আমার জীবনের সবচেয়ে খুশীর দিন তুমি আমাকে আপন করে নিয়েছো।আর কালকে আমি এমন সারপ্রাইজ দিবো তোমাকে হয়তে তুমি প্রথমে রাগ করবে কিন্তু মনে মনে খুশি হবে।

সকালে রেডি হচ্ছি ভার্সিটি যাওয়ার জন্য রক্তিমকে অনেক খুশি লাগছে আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~কী হয়েছে এতো খুশি কেন আপনি?
রক্তিম ভ্রুকুচকে বললো,
~কেন তোমার জ্বলছে?
আমি ভেংচি কেটে বললাম,
~কেন জ্বলবে?আপনি কী কারো সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন।
রক্তিম শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
~রাহির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।
রাহি নামটা শুনে মাথা আগুন উঠে গেলো।আমি রক্তিমের কলার ধরে বললাম,
~কী বললেন?আবার বলেন খবরদার যদি সেই মেয়ের সাথে দেখা করতে যান আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
রক্তিম আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো,
~শোনো ময়না পাখি,রাহি তোমার সাথে দেখা করতে চায় আর রায়হান চাচ্চুর শরীর এখন ভালো তাই আমরা তাকে সত্যিটা বলে দিতে চাই।
রক্তিমের কথা শুনে আমার অনেক খুশি লাগতে শুরু করলো।আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
~সত্যি।
রক্তিম মুচকি হেসে বললেন,

আমার শহরে তুমি পর্ব ১০

~তিন সত্যি। আর তোমার আসল সারপ্রাইজ এখন পর্যন্ত বাকি আছে তাই এখন ব্রেকফাস্ট করে ভার্সিটির জন্য রওনা দিতে হবে।
আমরা ব্রেকফাস্ট করে বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে কিন্তু রক্তিম আমার সাথে আসলেন না তার কী যেন কাজ রয়েছে তাই সে আমাকে একাই পাঠিয়ে দিলেন।
ভার্সিটি পৌছে সব ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে সব নোট সংগ্রহ করলাম তারপর ক্যাফে গিয়ে বসলাম আড্ডার মাঝে লিনা বললো,
~দোস্ত জানোস নতুন টিচার জয়েন হইসে। আগে ***** এই ভার্সিটিতে আসিলো এখন আমাদের ভার্সিটিতে আইসে।
আমি বললাম,
~ক্লাস করেছিস?
লিনা বললো,
~নাহ আজকে থেকে স্যার ক্লাস নিবো।
আমি বললাম,
~চল তাহলে যাই নতুন স্যারের ক্লাস করে আসি।
আমি আর লিনা ক্লাসে বসে আছি তখনই ক্লাসরুমে যেই ব্যক্তি প্রবেশ করলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না

আমার শহরে তুমি পর্ব ১২