আমার শহরে তুমি পর্ব ১২ ||  Alisha Rahman Fiza

আমার শহরে তুমি পর্ব ১২
 Alisha Rahman Fiza

আমার সামনে এখন দাড়িয়ে আছে আমার নতুন টিচার আর সেই ব্যক্তিটি আর কেউ নয় স্বয়ং রক্তিম রায়জাদা।তাকে দেখে আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলাম লিনা আমার অবস্থা চিন্তিত হয়ে বললো,
~দোস্ত,তুই ঠিক আছিস?কী হয়েছে?
আমি মাথায় হাত দিয়ে লিনার দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললাম,
~দোস্ত,আমার সব শেষ।
লিনা বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।হঠাৎ রক্তিম গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন,
~আমার ক্লাসে অযথা কথা বল যাবে না।যদি আপনাদের কথা আমার পড়ানো থেকেও জরুরি তাহলে বের হয়ে যেতে পারেন।

রক্তিমের কথায় লিনা ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলো।রক্তিম তার পরিচয় পর্ব শেষ করে ক্লাস নেওয়া শুরু করলেন।আর আমি মনে মনে তার গোষ্ঠী উদ্ধার করতে লাগলাম।
~কেমন বজ্জাত লোক সারপ্রাইজের নামে আমাকে হার্ট অ্যাটাক দিয়ে দিলো।খচ্চর লোক একবার বাসায় পাই তখন কাঁচা খেয়ে ফেলবো আপনার ইগনোর লেভেল আমিও দেখবো।
~এমন ভাব করছে আমাকে চিনে না যাক ভালো আমিও দেখে নিবো।আপনি তো শুধু এখানে ইগনোর করবেন।আর আমি বাসায়ও আপনাকে ইগনোর করবো দেখা যাক কে জিতে।
এতটুকু ভেবে বাঁকা হেসে ক্লাসে মনোযোগ দিলাম।
রক্তিম ক্লাস নিচ্ছে আর ভাবছে অধরা এতো ঠান্ডা ভাবে রিয়েক্ট করছে কেন নিশ্চয় এই মেয়ে মনে মনে ফন্দি আটছে।আমিও কম না এই খেলা তো মাত্র শুরু দেখা যাক কী হয়।
ক্লাস শেষ হলে আমরা ৫-৬ জন মাঠে গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ সাকিব আমার ক্লাসমেট বললো,
~অধরা,তোমার রক্তিম স্যারের ক্লাস কেমন লাগলো?
আমি বললাম,
~ভালোই।
সাকিব বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

~আমারও স্যারের ক্লাস ভালোই লেগেছে।সে প্রতিটি টপিক একদম নিখুঁতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে।
রক্তিমের প্রশংসা শুনতে অনেক ভালো লাগছে।সে যতই রাক্ষস হোক না কেন তার পড়ানো মাশআল্লাহ।
লিনা বললো,
~স্যার কিন্তু দেখতেও মাশআল্লাহ।
লিনার কথায় আমার সব ভালো ভাবনায় জল পরে গেলো।লিনা রক্তিমের এতো প্রশংসা করবে কেন?এতে লিনার কোনো দোষ নেই সব দোষ ওই বিটকেলের এতো ফিটফাট হয়ে ভার্সিটি আসার কী দরকার যত্তসব।আমাকে বোরখা ছাড়া বাইরে বের হতে দিবে না আর নিজে হিরো সেজে থাকবে বেয়াদব ব্যাটা।লিনা আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললো,
~দোস্ত, তুই কী ভাবছিস?
আমি লিনার দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম,
~এতো মাশআল্লাহ বলে লাভ নেই।স্যার বিবাহিত
লিনা অবাক হয়ে বললো,
~তুই কীভাবে জানিস?

আমি ওর প্রশ্ন শুনে আমতা আমতা করে বললাম,
~শুনেছি কারো কাছ থেকে।তুই এতো গোয়েন্দা গিরি করছিস কেন?
লিনা বললো,
~এতো রাগ করছিস কেন?
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমার ফোনে ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো।আমি ভ্রুকুচকে ম্যাসেজ অন করতেই দেখি রক্তিম ম্যাসেজ করেছে,
~ক্লাস শেষ করে ভার্সিটির বাহিরে অপেক্ষা করবে আমরা একসাথে বাসায় যাবো।
তার ম্যাসেজ দেখে আমি কোনো রিপ্লায় দিলাম না।আর তার সাথে কোনো ক্রমেই আজ বাসায় যাবো না যেভাবে একা একা এসেছে সেভাবেই একা একা যাবে।
ভেবেই মজা লাগছে রক্তিম হুতুম পেঁচার মতো আজ আমার অপেক্ষা করবে হি হি হি।এসব ভাবতেই আমি উচ্চস্বরে হেসে দিলাম আর আমার হাসি দেখে সবাই আমার দিকে বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে আছে।আমি হাসি বন্ধ করে বইয়ের দিকে নজর দিলাম

ভার্সিটির বাহিরে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে রক্তিম কিন্তু কোথাও অধরাকে দেখতে না পেয়ে তার মাথায় চিন্তার ভাজ ফুটে উঠে।তাই রক্তিম গাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়ালো একবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে তো ভার্সিটির গেইটের দিকে কিন্তু অধরাকে সে দেখতে পারছে না।এভাবেই অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর রক্তিম তার ফোন বের করলো তখনই তার ফোনে ম্যাসেজ আসে। অধরার ম্যাসেজ এসেছে সে লিখেছে,
~আমি ঠিকঠাক মতো বাসায় পৌছে গেছি।আপনিও চলে আসেন তাড়াতাড়ি রায়হান চাচ্চুর বাসায় যেতে হবে।
অধরার ম্যাসেজ দেখে রক্তিমের চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো।এতোক্ষন ধরে ওয়েট করছি আর এই ম্যাডাম বাসায় গিয়ে এসির হাওয়া খাচ্ছে।একবার শুধু হাতের কাছে পাই তারপর বুঝাবো কতো ধানে কতো চাল।
ফাজিল মেয়ে এগুলো ভেবেই রক্তিম গাড়িতে উঠে বসে তারপর রওনা দেয় বাসার উদ্দেশ্যে।

আমি শাওয়ার নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছি আর মিটমিট করে হাসছি। আর ভাবছি তাড়াতাড়ি করতে হবে যদি রক্তিম এসে পরে তাহলে আমার খবর আছে তাই আমি নিজেকে পরিপাটি করে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম তখনই আমি কারো সাথে ধাক্কা খাই।তাই আমি বললাম,
~সরি,আসলে আমি দেখতে পাইনি।
বলতে বলতে আমি মাথা উঁচু করে দেখি রাত আমার সামনে দাড়িয়ে আছে সে আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।আমি রাতের পাশ কেটে যেতে নিবো তখনই সে বলে উঠলো,
~এভাবে হাঁটা চলা করলে তো ধাক্কা লাগবেই।
আমি বললাম,

~আমি সরি বলেছি।আমার ভুল হয়েছে তা মেনেছি কোনো কাপুরুষের মতো নিজের ভুলকে এড়িয়ে যাইনি।
বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম এই ব্যক্তির সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধে।
আমি চলে আসলাম দাদীর রুমে এখান থেকে আজ বের হবো না সিংহের থাবায় পরার সম্ভাবনা আছে।
দাদীমা আমাকে দেখে বললেন,
~কীরে তুই একা বিড়বিড় করছিস কেন?
দাদীমার কথায় আমি হেসে বললাম,
~ওই এমনেই।
দাদীমা হেসে বললেন,
~পাগলী মেয়ে।

রক্তিম বাসায় এসে রুমে চলে যায় আজ সে এই ফাজিল মেয়েকে ছাড়বে না।রক্তিম বিড়বিড় করতে করতে রুমে গিয়ে দেখে অধরা কোথাও নেই।রক্তিমের রাগ সাত আসমানে উঠে গেলো।রক্তিম শার্ট খুলতে খুলতে নিজে নিজেই বলছে,
~নিশ্চয় দাদীর রুমে লুকিয়েছে।যেখানেই লুকান সুন্দরী আপনাকে আজ আমি ছাড়ছিনা।আমাকে রোদে দাড় করিয়ে নিজে ড্যাংড্যাং করে বাসায় চলে আসা।আজ মজ বুঝাবো
রক্তিম একটা শার্ট আর টাউজার নিয়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে।ফ্রেশ হয়ে এসে মাথা মুছতে মুছতে হাঁটা ধরলো দাদীর রুমের দিকে। রুমের কাছাকাছি পৌছে সে দাদীমা আর অধরার হাসির আওয়াজ আসছে।
রক্তিম হালকা কেশে রুমে ডুকতেই দেখে অধরা ঘুমের ভান করে পরে আছে।দাদী রক্তিমে দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বললো,

~দেখনা মেয়েটা কতো ক্লান্ত হয়ে গেছে। তাই আমার ঘরেই ঘুমিয়ে পরলো এখানেই থাকুক এখন ঘুম থেকে উঠলে তোর কাছে পাঠিয়ে দিবো।
রক্তিম ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
~আমার বউকে আমার এখনই প্রয়োজন। তাই এখনই নিয়ে যাচ্ছি।ঘুমিয়ে গেছে তো কী হয়েছে?কোলে করে নিয়ে যাবো।
আমি রক্তিমের কথা শুনেও কিছু বলছিনা মটকার মতো পরে আছি।আজ যদি এ চোখ খুলি রক্তিম আমাকে সারাজীবনের জন্য চোখ বন্ধ করিয়ে দিবেন।আমি সেভাবেই শুয়ে রইলাম।
রক্তিম হাতের টাওয়াল রেখে অধরাা কাছে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নিলো। অধরাও চোখ বন্ধ করে আছে রক্তিম তাকে নিয়ে হাঁটা ধরলো রুমের উদ্দেশ্যে

রুমে পৌছে রক্তিম অধরাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো।রক্তিম অধরার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলো কতক্ষন এভাবে থাকতে পারবে তা আমিও দেখবো।রক্তিম অধরার দিকে ঝুঁকে তার গালে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলো তারপর আস্তে আস্তে সারা মুখে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলো যেই রক্তিম অধরার ঠোঁটের দিকে যেতে নিবে তখনই অধরা চিৎকার দিয়ে বিছানা থেকে নেমে গেলো আর বললো,
~অসভ্য মানুষ লজ্জা করে না ঘুমন্ত মেয়ের সুযোগ নিতে।

রক্তিমের এমন আচরণে আমি আর ঘুমের নাটক ধরে রাখতে পারলাম না তাই চিৎকার করে উঠলাম।রক্তিমের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।তার এভাবে আগানো দেখে আমি পিছাতে শুরু করলাম একপর্যায়ে আমার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়।রক্তিম আমার একদম কাছে এসে দুই সাইডে তার হাত রেখে আমাকে বন্ধি করে দিলো।আমি মুখ তুলে তাকাতে পারছিনা রক্তিমের গরম নিশ্বাস আমার মুখে পরছে।আমার বুকে কেউ মনে হয় ধিরিম ধারিম ঢোল বাজাচ্ছে নীরবতা আমাদের দুজনের মাঝেই কাজ করছে রক্তিম সেই নীরবতা ভেঙ্গে বললো,
~আমি কী কাউকে বলেছিলাম যে ক্লাস শেষ হওয়ার পর আমার জন্য ওয়েট করতে?
রক্তিমের শান্ত কন্ঠে বলা কথাটা আমার মনে তীরের মতো লাগলে কারণ এটা ঝড় আসার পূর্ব লক্ষন।
আমি কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি রক্তিম এবার একটু চেচিয়ে বললো,

~আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।Answer me damn it.
রক্তিমের ধমকানো শুনে আমি একটু কেঁপে উঠলাম।রক্তিমও সেটা বুঝতে পেরে বললেন,
~কেন আমাকে না বলে বাসায় চলে আসলে?
আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,
~বেশ করেছি।আপনিও তো আমাকে না বলে আমার ভার্সিটিতে টিচার হিসেবে জয়েন করেছেন।
অধরার এমন বাচ্চামী দেখে রক্তিমের হাসি পেলো কিন্তু সে নিজেকে কন্ট্রোল করে বললো,
~এখন আমার ক্যারিয়ার আমি কীভাবে গড়বো তাও তোমাকে জানাতে হবে।
রক্তিমের কথা শুনে আমি কোনো জবাব দিলাম না।রক্তিম আমার কানের পিছে চুল গুলো গুজে বললেন,
~আর কোনোদিন এমন করবে?

আমি ভয়ে মাথা দুদিকে নাড়িয়ে না বললাম।রক্তিম আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,
~যাও দাদীমার কাছে।
আমি দৌড়ে দরজার সামনে এসে কিছু একটা ভেবে আবার চেচিয়ে বললাম,
~বেশ করেছি ১০০বার এমন করবো।
বলেই দৌড় লাগাই।রক্তিম অধরার এহেন কান্ডে হো হো করে হেসে উঠলো।আর আনমনে বলে উঠলো,
~বোকা মেয়ে।

সন্ধ্যায় আমি পা টিপে টিপে রুমে আসলাম ডানে বামে ভালো মতো চেক করে নিলাম।দেখে নিলাম যে কোথাও সে রাক্ষসটা নেই তো নাহ নেই।আমি খুশি মনে কার্বাড খুলে একটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে চলে গেলাম তারপর শাড়িটা পরে বাহিরে এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে হিজাব বাঁধলাম তারপর ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে নিলাম।দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করলো রক্তিম আমাকে একনজর দেখে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আমি ভেংচি কাটলাম আর বললাম,
~ব্যাটা খচ্চর এভাবে তো সারদিন বলতে থাকে অধরা তোমাকে সুন্দর দেখা যাচ্ছে কিন্তু আজকে একবারও বললোনা।কীভাবে বলনে আজ সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত রাহির সাথে যে দেখা করতে যাবে।
বিড়বিড় করতে করতে খাটে পা ঝুলিয়ে বসে পরলাম।রক্তিম ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে আমাকে দেখে বললো,
~আমরা একটুপরই বের হবো।
আমি কিছু নাবলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।

আমরা এখন রায়হান চাচ্চুর বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিচ্ছি।রক্তিম গাড়ি ড্রাইভ করছে আর আমি জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে ব্যত হঠাৎ রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~অধরা,বাহিরে এমন কী আছে যে?এতো মনোযোগ দিয়ে দেখছো।
আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~বাহিরে আপনার মতো হুতুম পেঁচা নেই।
রক্তিম হালকা হেসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলেন।
কিছুসময় পর আমরা রায়হান চাচ্চুর বাসায় পৌছে গেলাম।বাড়ির ভিতরে ঢুকেই বুঝতে পারছি তারা অনেক শৌখিন মানুষ কারণ তাদের সোফার ঘরটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। সোফার ঘরে প্রবেশ করতেই একজন সুন্দরী মেয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে তার মুখে এক অমায়িক হাসি লেগে আছে।আমি যদি ভুল না ভেবে থাকি এই মেয়ের নামই রাহি।

রক্তিম আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
~ও হচ্ছে রাহি।
রাহি আমাদের সামনে এসে কুশলাদি করে আমাকে দেখে বললো,
~তুমিই অধরা রাইট।
আমি মুচকি হাসলাম রাহি রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,
~রক্তিম বাবাকে আমি সব বুঝিয়ে বলতে চাই কারণ আমি অভিকে বিয়ে করতে চাই।আর অভি আজ আমাদের বাসায় আসবে।সুতরাং আজই সব কিছু করতে হবে।
আমর রাহির কথা শুনে ডিসকো ড্যান্স করতে মন চাইছে যাক সতীন রাস্তা থেকে সরে গেলো।
রাহি বললো,

~ওইতো অভি চলে এসেছে।
রাহির কথায় আমি পিছন ঘুরে দেখি একজন সুদর্শন যুবক আমাদের দিকে হেঁটে আসছে।রক্তিম একটু আগে বেড়ে অভির সাথে হ্যান্ডশেক করলো।তারপর তারা ভিতরে চলে আসলো অভি আমার সাথে কুশলাদি করলো।রাহি বললো,
~বাবা উপরে আছে।তোমরা বসো আমি বাবাকে ডেকে নিয়ে আসছি।
আমরা সোফায় বসে পরলাম। একটুপর রাহি একজনকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে আসলেন।সেই বয়স্ক ব্যক্তিটি রক্তিমকে দেখে একগাল হেসে বললো,

~কেমন আছো?
রক্তিম হেসে বললো,
~ভালো।আপনি কেমন আছেন চাচ্চু?
রায়হান চাচ্চু বললেন,
~ভালো।তোমার সাথে এরা কারা?
রাহি বললো,
~বাবা,এই মেয়েটা হচ্ছে অধরা রক্তিমের বউ।
রায়হান চাচ্চু বিস্ফোরিত চোখে তাকালো রাহির দিকে আর বললো,
~এ কেমন মজা রাহি?
রাহি বললো,
~বাবা,রক্তিম আমেরিকা থেকে এসেই অধরাকে বিয়ে করেছে আর অধরাকে সে ভালোবাসে।সেদিন হাসপাতালে সে বাধ্য হয়ে আমার হাতে আংটি পরিয়ে দেয়।আর বাবা আমি অভিকে ভালোবাসি তাকেই নিয়ে করতে যাই।
রায়হান চাচ্চু বললেন,
~রাহাত কোথায়?
রক্তিম বললেন,
~প্লিজ চাচ্চু এটাতে বাবার কোনো ভুল নেই।
রায়হান চাচ্চু বললেন,

আমার শহরে তুমি পর্ব ১১

~না বাবা,এতে আমার ভুল কোনো কিছু না ভেবে তোমাদের বিয়েটা আমি ঠিক করেছি আর রাহাত তো আমাকে অনেকবার নিষেধও করেছে কিন্তু আমি শুনিনি।আর রাহি তোর বিয়ে অভির সাথেই হবে তুই চিন্তা করিস না।
বাবার কথা শুনে রাহির চোখ চকচক করতে লাগলো। সে খুশি হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে রায়হানও মেয়ের খুশিতে খুশিতে।রক্তিমকে উদ্দেশ্য করে রায়হান বললো,
~তোমার আর তোমার বউকে আমার মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নিতে হবে কী পারবে না অধরা।
আমি মুচকি হেসে মাথা নাড়ি।রায়হান চাচ্চুর বাসা থেকে ডিনার করে বাসার জন্য বের হয়ে যাই।
তখনই তুমুল জোড়ে বৃষ্টি নামে আমি জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখছি আর রক্তিম গাড়ি ড্রাইভ করছে।
আমি রক্তিমকে বললাম,

~চলেন না বৃষ্টি বিলাস করি।
রক্তিম বললো,
~বৃষ্টি বিলাস করলে সর্দি বিলাস হয়ে যাবে।
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৩