আমার শহরে তুমি পর্ব ১৫ ||  Alisha Rahman Fiza

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৫
 Alisha Rahman Fiza

অবশেষে আমার আর রাহির পছন্দ সই ব্রাইডেল লেহেঙ্গা দেখা পেলাম।সেই দোকানে ডুকে পরলাম আমরা সেই লেহেঙ্গাটা রাহি নিজের গায়ে জড়িয়ে আয়নার সামনে দাড়ালো অভিকে ডেকে বললো,
~এই দেখেতো কেমন লাগছে?
অভি একদম অভিজ্ঞদের মতো চোখ করে বললো,
~একদম পার্ফেক্ট।লাল রঙ্গটা তোমায় বেশ মানায়
রাহি লজ্জা মাখা হাসি দিলো।আমি বললাম,
~বিয়ের লেহেঙ্গা তো হলো কিন্তু আরো অনেক কিছু কিনতে হবে।
রক্তিম বললো,
~এখনো আরো কেনাকাটা বাকি আছে দিনের বাজে ১টা।সারাদিন এভাবেই ঘুরতে হবে
আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম,
~তাহলে চলে যান এসেছেন কেন?
রক্তিম বললো,

~আচ্ছা রাগ করোনা। আমি তো এমনেই বললাম এখন খাওয়া দাওয়া করে তারপর আবার বের হয়ে যাই মিশনে।
সবাই তার কথায় সহমত পোশন করলো।আমরা খাওয়ার পর আবার শপিংয়ের জন্য বের হয়ে গেলাম।আমাদের শপিং শেষ হলো রাত৭.৩০টায় সবার জন্যই মোটামোটি শপিং করা শেষ এখন আমরা বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিবো তখনই রক্তিম অভিকে বললেন,
~তোমরা চলে যাও।আমাদের একটু কাজ আছে।
রাহি মজার সুরে বললো,
~সারাদিন বউকে পাওনি তাই এখন বউকে নিয়ে ঘুরবে।Good very good.
বলেই সে হো হো করে হেসে উঠলো আর এখানে আমার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।রক্তিম তার ৩২টা দাঁত বের করে বললো,

~After all i am a best husband.
অভি রক্তিমের কথা শুনে বললো,
~আমার বিয়েটা হয়ে নিক তারপর বুঝবেন কে best husband.
রাহি তাদের কথায় ফোরন কেটে বললো,
~হয়েছে তা বুঝা যাবে নে পরে।অভি এখন চলো বাবা ওয়েট করছে
অভি রাহির কথায় সহমত পোষন করলো তারা গাড়িতে উঠে পরলো আমরা তাদের বিদায় জানালাম। রাহি আর অভি চলে গেলো আর আমি রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
~এখন বলেন আপনার কথা।
রক্তিম বললো,
~দেখো রাহির জন্য সব কেনাকাটা শেষ তো এখন শুধু তোমারটা বাকি আর শপিং মল বন্ধ হতে এখনও সময় আছে।তো এখন তোমার পালা
আমি ক্লান্ত স্বরে বললাম,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

~রক্তিম আমি অনেক ক্লান্ত।আজ থাক আগামীকাল আবার আসবো নে আমরা।
রক্তিম বললো,
~তোমার কোনো কিছু করতে হবে না।আমি সব সিলক্টে করে রেখেছি তুমি শুধু confirm করবে।
বলেই আমার হাত ধরে আবার শপিং মলে নিয়ে গেলেন।একটা শাড়ির দোকানে ডুকে সেখানের এক ছেলেকে রক্তিম ডাক দিলো।সেই ছেলেটি রক্তিমকে দেখে বললো,
~স্যার, আপনি কী শাড়ি গুলো আবার দেখবেন?
রক্তিম বললো,
~আপনার ম্যাডামকে সব গুলো শাড়ি দেখান তো।
ছেলেটি বললো,

~sure sir.এদিকটায় আসেন
আমরা সেই ছেলের পিছে পিছে চলে আসলাম।ছেলেটি অনেক গুলো শাড়ি আমার সামনে রেখে দিলেন সব শাড়ি গুলোই অনেক সুন্দর। রক্তিম বললো,
~দেখো তোমার এখান থেকে কোনটা ভালো লাগে।
আমি সব গুলো শাড়ি দেখে ২টি শাড়ি আমার হাতে নিলাম।একটা কালো কালার,আরেকটি হালকা গোলাপী। কালো শাড়িটি আমার গায়ে জড়িয়ে নিলাম রক্তিম আমার পিছে দাড়িয়ে বললো,
~এই শাড়িটা ধন্য হয়েছে তোমার হাতের ছোয়া পেয়ে।
আমি রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
~হয়েছে আপনার এখন এ দুটি প্যাক করে চলেন বাসায়।পা ব্যাথা করছে
রক্তিম তাড়াতাড়ি করে পেমেন্ট করে শপিং ব্যাগ হাতে নিলো।আমরা শপিং মল থেকে বেড়িয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম রক্তিম পিছনের সীটে শপিং ব্যাগ রেখে দিলো তারপর গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলেন।রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে বললেন

~আজ শপিং মলে সারাদিন কাটিয়ে আপনার কেমন লাগলো?
আমি বললাম,
~ভালো কিন্তু পা অনেক ব্যাথা করছে।
রক্তিম বললো,
~বাসায় গিয়ে গরম তেল দিয়ে মালিশ করলে চলে যাবে।
এভাবেই কথা বলতে বলতে আমরা বাসায় পৌছে গেলাম কিন্তু বাসার ভিতরে ডুকতেই অনেক চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ আসছে বেশি আওয়াজ আসছে
সাহারা রায়জাদা আর রাতের।

আমি আর রক্তিম তাড়াতাড়ি বাসার ভিতরে চলে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি সারা সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।সারার পাশেই রাত দাড়িয়ে সাহারা রায়জাদার সাথে গলা উঁচু করে বলছে,
~সারা যা বলছে তাই করবো।তুমি এতে নাক গলাবে না সারা যদি চায় বিয়ের পর আমরা এখানে থাকবো না তাহলে থাকবো না।
রাতের কথা শুনে সাহারা রায়জাদা রেগে গিয়ে বললেন,
~তুই কী বলছিস?সারার জন্য তুই এ বাসা ছেড়ে চলে যাবি?
রাত বিরক্তি নিয়ে বললো,
~মা এসব মেলোড্রামা করবে না।আর শোনো আমরা তো আর তোমাদের ছেড়ে দিচ্ছি না ছুটির দিনে তোমাদের সাথেই থাকবো।
রাতের কথা শেষ হতেই সারা বললো,
~রাত তোমার সিদ্ধান্ত তুমি জানিয়ে দিও।আর শোনো আগামীকাল ঢাকার বাহিরে যাবো বাবার সাথে so don’t worry.

সারা কথা শেষ করেই বাহিরে চলে গেলো আমাদের দেখে সারা কিছু না বলেই চলে যায়।
রক্তিম আমার হাতে ব্যাগ দিয়ে রাতের কাছে গিয়ে তার কাঁধে হাত রেখে বললো,
~রাত কী হয়েছে মা এমন করছে কেন?
রাত রক্তিমের হাত সরিয়ে বললো,
~ভাই খুবই সিম্পল ব্যাপার আমি আর সারা বিয়ের পর এই বাসায় থাকবো না।কিন্তু মা scene create করছে।
রক্তিম তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে রাতের দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে।রক্তিম বললো,
~রাত এ ব্যাপারে এখন আর কোনো কথা হবে না।বাবা আসার পর সব কথা হবে।এখন তুমি রুমে যাও
রক্তিমের কথায় রাত উপরে চলে গেলো।রক্তিম মায়ের কাছে গিয়ে বললো,

~মা চিন্তা করো না বাবা রাতকে বুঝিয়ে বলবে
তুমি রেস্ট নাও।
রক্তিমের মা সেখান থেকে তার রুমে চলে গেলো।
আমি রক্তিমের কাছে গিয়ে বললাম,
~আপনি কোনো টেনশন নিয়েন না সব ঠিক হয়ে যাবে।
রক্তিম বললো,
~তাই যেন হয় আল্লাহ তাদের ভালো রাখুক।
আমি আর রক্তিম রুমে এসে পরলাম।আমি একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে বের হলাম
আমাকে বের হতে দেখে রক্তিম তার কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকলেন।আমি শপিং ব্যাগ গুলো কার্বাডে রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম কিছুক্ষন পর মনে হলে কেউ আমার পা ধরে রেখেছে।আমি ভয় পেয়ে চোখ খুলে দেখি রক্তিম তেল দিয়ে আমার পা টিপছে।

রক্তিমকে দেখে আমার ভয় তো দূর হলো কিন্তু লজ্জাটা বেড়ে গেলো।আমি শোয়া থেকে উঠে বসে যেই না পা সড়াতে যাবো রক্তিম আমার দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে বললো,
~একদম লড়বে না।আর খাবার না খেয়ে শুয়ে পরেছো কেন?
আমি কাঁচুমাচু মুখ করে বললাম,
~আমার ঘুম পাচ্ছিল তাই।
রক্তিম বললো,
~খাবার এনেছি খেয়ে নেও।
আমি বললাম,
~পা ছাড়েন।

রক্তিম আমার পা ছেড়ে দিলেন আমি বিছানা থেকে উঠে প্লেটে খাবার নিয়ে রক্তিমের পাশে বসে খাবারের লোকমা তার মুখের সামনে ধরলাম।রক্তিম বললো,
~খিদে নেই।তুমি খাও
আমি বললাম,
~আমারও খিদে নেই।
রক্তিম হালকা হেসে খাবারটা মুখে পুরে নিলেন।আমিও খাবার খেতে লাগলাম খাবার খাওয়া শেষে আমি সব গুছিয়ে রুমে এসে দেখি রক্তিম রুমে নেই তাই বারান্দায় চলে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি রক্তিম আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে তার চোখের কোণা বেয়ে পানি পরছে।রক্তিমের চোখে পানি দেখে আমার বুকটা ধক করে উঠলো কেনজানি অনেক খারাপ লাগছে আমি দেরি না করে রক্তিমের পাশে দাড়িয়ে তার কাঁধে হাত রেখে বললাম,

~কী হয়েছে?আপনার চোখে পানি কেন?
রক্তিম আমার উপস্থিতি টের পেয়ে তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন,
~তুমি চোখে বেশি দেখো প্রিয়তমা।আমার চোখে পানি কোথা থেকে আসবে
আমি বললাম,
~মিথ্যা বলতে পারেন না তবুও বলেন কেন?
রক্তিম হেসে তার দুহাত দুদিকে প্রসারিত করে বললেন,
~একটু বুকে আসো তো।
আমি রক্তিমের বুকে মাথা রাখলাম সে দুহাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
~অধরা,আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া তুমি।

আমি কোনো কথা না বলে চুপ করে রক্তিমের বুকে মাথা রেখে দাড়িয়ে আছি।রক্তিম বললো,
~চলো অধরা আমরা শুয়ে পরি সারাদিন তোমার উপর অনেক ধকল গিয়েছে।
আমি বললাম,
~শুধু আমার উপর ধকল গিয়েছে আপনি তো উড়ে উড়ে শপিং করেছেন।
রক্তিম আমার কথা শুনে আমাকে তার বুক থেকে উঠিয়ে বললেন,
~আচ্ছা বাবা আমিও অনেক টার্য়াড।
রক্তিমের কথা শেষ হতেই আমরা রুমে এসে শুয়ে পরলাম।সারাদিনের ক্লান্তি এসে ভর করলো আমার চোখে।

ভার্সিটির জন্য বের হতে চেয়েও হতে পারলাম না।কারণ রাহি ফোন দিয়েছে তার বিয়ের ডেট ফিক্সিড হবে আজ আর তার পাশাপাশি আজই অভিরা আংটি বদল করতে চায়।রাহির কথায় আমি টেনশনে পরে গেলাম এতো তাড়াতাড়ি এসব কীভাবে হবে।রক্তিম আমাকে বললো,
~অধরা,Don’t worry.সব কিছু ঠিকঠাক মতো হয়ে যাবে।আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলবো আর শোনো তুমি শুধু রাহিকে কীভাবে রেডি করবে তা চিন্তা করো
আমি ভার্সিটি থেকে আসছি।
আমি বললাম,

~এটা আবার কেমন কথা?আপনি আমাকে একা ছেড়ে চলে যাবেন।
রক্তিম আমার কাছে এসে বললেন,
~কোনো চিন্তা করো না।রাহিকে আমি সব ডেকোরেশনের ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি।রাহি পছন্দ করেছে সব গুলো আর সে হিসেবেই সব সাজানো হবে।খাবারের মেনুও রেডি আর রাহির পার্লারের ও সব ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে।তুমি কোনো টেনশন নিয়ো না আর আমার সাথেই তুমি চলো আমি তোমাকে রাহির বাসায় ড্রপ করে দিবো।
রক্তিমের কথা শুনে আমি অবাক এতটুকু সময়ে সে সব করে ফেললো।রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই।চলো আমাদের লেইট হচ্ছে।
আমার ধ্যান ভাঙ্গলো তার কথায় আমি রক্তিমের সাথে হাঁটা ধরলাম।
রক্তিম আমাকে রাহির বাড়িতে ড্রপ করে সব কিছু চেক করে সে চলে গেলো।রাহি আর আমি এখন ডিসকাস করছি কীভাবে তাকে সাজানো যায়।পার্লারের লোকেরা এসে পরেছে রাহি অনেক নার্ভাস হয়ে আমাকে বললেন,

~অধরা সব ঠিকঠাক ভাবে হবে তো?
আমি বললাম,
~Be positive everything will be alright.
রাহি মলিন হেসে আবারো সাজগোজে ব্যস্ত হয়ে পরলো।রাহিকে রেডি করাতে করাতে ২টা বেজে গেলো।অভিরাও চলে এসেছে আমি এখন পর্যন্ত পুরোপুরি রেডি হয়নি শাড়ি পড়তে পড়তেই ১২টা বাজছে।অনেকক্ষন চেষ্টা করে শাড়িটা ফাইনালি পরতে পেরেছি হঠাৎ আমার রুমের দরজা ঠেলে রক্তিম ভিতরে এসে পরলো তাকে দেখে আমার চোখ কপালে সাদা রঙ্গের পাঞ্জাবিতে তাকে তে মাশাআল্লাহ লাগছে।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রক্তিম বললো,
~কী দেখছো এভাবে?
রক্তিমের কথায় লজ্জা পেয়ে আমি মাথা নিচু করে ফেললাম।রক্তিম মুচকি হেসে আমার সামনে দাড়িয়ে আমার মুখ তার দুহাতে আবদ্ধ করে বললেন,

~খুব সুন্দর লাগছে।
বলেই আমার নাকে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলেন।হঠাৎ পিছন থেকল রাহি বললো,
~তোমরা রোম্যান্সই করতে থাকো আর আমি singel মরবো।
রক্তিম আমাকে ছেড়ে দিতেই আমি রাহির কাছে গিয়ে বললাম,
~কী হয়েছে?
রাহি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো,
~শাড়িটা অনেক ডিস্টার্ব করছে।
রক্তিম বললো,
~আমি সব চেক করে আসছি।বাবারা মনে হয় চলে এসেছে।
বলেই সে চলে গেলো আর আমি রাহির শাড়ি ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম শাড়ি ঠিক করে দিতেই রাহি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

~অনেক ভয় করছে। আমি জানি আমার love marriage কিন্তু তবুও আমার ভয় করছে।অধরা তুমি বুঝতেই পারছো আমার অবস্থা
আমি রাহির হাতে হাত রেখে বললাম,
~কোনো ভয় নেই নতুন সম্পর্ক গড়তে যাচ্ছ তাই এমন লাগছে।
রাহি কিছু না বলে বিছানা বসে রইলো।কিছুক্ষন পর রক্তিম এসে বললো,
~অভিরা চলে এসেছে।অধরা নিচে চলো
আমি যেতে নিবো তার আগে রাহি আমার কানের কাছে এসে বললো,
~অধরা প্লিজ অভির একটা পিক আমাকে পাঠিয়ে দিও।
আমি কিছু না বলে মুচকি হেসে রক্তিমের সাথে নিচে চলে আসলাম।অভির পরিবারের সাথে কুশলাদি করে অভির কাছে চলে গেলাম তাকে গিয়ে বললাম,

~এই যে রাহির হবু বর আপনাকে দেখার জন্য রাহি অনেক বেকারার হয়ে আছে।তাই বলছি নিজের একটা ভালো ছবি এখনই তুলে তাকে পাঠিয়ে দিন।
আমার কথা শুনে অভি লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকে বললো,
~আচ্ছা ভাবি।
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম খাবার টেবিলে সবাইকে খাবার সার্ভ করা হচ্ছে আমিও সাহায্য করছি।হঠাৎ আমার চোখ পরলো রক্তিমের দিকে বেচারা ঘেমে টেমে একাকার হয়ে গেছে পাঞ্জাবির দুটো বোতম খোলা। এখনই এই অবস্থা বিয়ের সময় কী হবে?
আমি রক্তিমের সামনে চলে আসলাম আমাকে দেখে রক্তিম ভ্রুকুচকে বললো,
~তুমি বাবুর্চি খানায় কী করছো।গরম এখানে অনেক ভিতরে যাও আমি সব হ্যান্ডেল করতে পারবো।
আমি তার কথার জবাব না দিয়ে হাতে থাকা টিসু দিয়ে তার কপালের ঘাম মুছে দিলাম তারপর বললাম,
~আপনি কিছু খেয়েছেন?
রক্তিম বললো,

~খাওয়ার সময়ই তো পেলাম না।সব কাজ শেষ হলে খেয়ে নিবো।
আমি বললাম,
~আপনার বোন থাকলে অনেক ভাগ্যবতি হতো আপনার মতো ভাই পেয়ে।
রক্তিম কিছু না বলে শুধু মলিন হাসলো।হয়তো সে এই কথাটি আশা করেনি।

সময় এসে পরেছে আংটি বদলের তাই আমি গিয়ে রাহিকে নিয়ে আসি।রাহি এখন অনেকটাই নরমাল আমি রাহিকে নিচে নিয়ে আসলাম অভির পাশে বসিয়ে দিলাম।আমি গিয়ে রক্তিমের পাশে দাড়ালাম।রায়হান চাচ্চু মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন বাবা গিয়ে তাদের দুজনকে দোয়া করে দিলেন।সাহারা রায়জাদা আর রাত আসেননি।এখন আংটি বদল করার পালা অভি রাহির হাতে আংটি পরিয়ে দিলো।রাহি কাঁপাকাঁপা হাতে আংটি পরিয়ে দিলো তারপর রাহিও অভিকে আংটি পরিয়ে দিলো।বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হলো মাত্র ১৫দিন পর তাদের বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হলো।রক্তিমের কোনো আপত্তি নেই আমিও খুশি হলাম।হঠাৎ রাহি আমাকে আর রক্তিমকে টেনে নিয়ে স্টেজে দ্বার করিয়ে বললো,

~এখন তোমরা ছবি তুলবে।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই রাহি বললো,
~কোনো কথা শুনতে চাই না।
বলেই আমার হাত রক্তিমের হাতে দিয়ে দিলো।রক্তিম আমাকে কাছে টেনে নিলো এভাবেই অনেক ছবি তোলা হলো।এতো সুন্দর মূহুর্ত গুলো ক্যামেরায় বন্দী হয়ে গেলো সকল কাজ সম্পন্ন করে আমি আর রক্তিম বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম রাত ৯টায়।

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৪

রক্তিম অনেক টায়ার্ড তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে বার বার মাথায় হাত দিচ্ছে হয়তো মাথা ব্যাথা।
এই মানুষটি এমন কেন নিজের প্রতি কোনো খেয়াল নেই সকলের জন্য তার কাছে টাইম আছে কিন্তু নিজের জন্য নেই।
বাসায় পৌছে আমি রক্তিমকে ফ্রেশ হতে পাঠালাম।আমি অন্য রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি রক্তিম বিছানার কপালে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আমি গিয়ে রক্তিমের চুল টেনে দিতে লাগলাম।রক্তিম চোখ খুলে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

~তুমি রেস্ট করো। এগুলো..
তার কথা শেষ হওয়ার আগে আমি রক্তিমের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বললাম,
~চুপচাপ ঘুমিয়ে পরেন।
রক্তিম আমার কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করলেন।কিছুক্ষন পর রক্তিম ঘুমিয়ে গেলে তাকে ঠিক ভাবে শুইয়ে আমিও শুয়ে পরলাম।

অনেক ব্যস্ততার মাঝে কিছুদিন কেটে গেলো।রাহির বিয়ের ৩দিন বাকি এ ৩দিনে অনেক প্রোগ্রাম হবে।তার আয়োজন সব রক্তিম করবে এই কয়েকদিনে রক্তিমের প্রতিটি কাজ আমাকে শুধু মুগদ্ধ করেছে।রক্তিমের প্রতি আলাদা একটা অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে এসব ভাবতে ভাবতে আমার নজর ঘড়ির দিকে পরলো সন্ধ্যা ৬টা।রাহির আজ মেহেদীর অনুষ্ঠান+সঙ্গীতের অনুষ্ঠান ও।
হঠাৎ রক্তিম রুমে এসে বললো,

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৬