আমার শহরে তুমি পর্ব ১৬ ||  Alisha Rahman Fiza

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৬
 Alisha Rahman Fiza

হঠাৎ রক্তিম রুমে এসে বললো,
~অধরা,দেখো আমার পাঞ্জাবির বোতামটা ছিরে গেছে।এখন কী করবো?
রক্তিমের কথায় আমি তার পাঞ্জাবির দিকে তাকিয়ে দেখি আসলেই উপরের দুটি বোতাম নেই।রক্তিম বার বার পাঞ্জাবির দিকে তাকাচ্ছে আবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।রক্তিমকে এখন পুরো বাচ্চাদের মতো লাগছে যে বাচ্চার এখন খেলতে যাওয়ার নেশা লেগেছে কিন্তু ভাঙ্গা ব্যাট নিয়ে যেতে পারছে না।রক্তিমের অবস্থা দেখে আমি মুচকি হেসে কার্বাডে সামনে চলে আসলাম কার্বাড খুলে একটা প্যাকেট বের করে রক্তিমের হাতে দিয়ে বললাম,

~পান্জবীটা চেঞ্জ করে নিন।
রক্তিম একবার তার হাতের প্যাকেটের দিকে তাকিয়ে বললো,
~এটার ভিতরে কী?
আমি বললাম,
~ওয়াশরুমে গিয়ে দেখে নিন।আর আমি রেডি হবো প্লিজ তাড়াতাড়ি করেন
কথা শেষ করে কার্বাড খুলে হাতের শাড়ি নিয়ে পিছনে ঘুরে দেখি রক্তিম নেই ওয়াশরুমে চলে গেছে।রক্তিমরে জন্য এই গিফটা কয়েকদিন আগেই কিনেছিলাম কিন্তু কীভাবে দিবো তাই ভাবছিলাম যাক এখন কাজে লেগে গেলো মনটা ভালো লাগছে ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজে আমি সেদিকে তাকিয়ে দেখি রক্তিম আমার দেওয়া হালকা ক্রীম কালারের পাঞ্জাবিটা পরে বের হলেন।রক্তিমকে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে ইশ কারো যাতে নজর না লাগে।রক্তিম আমার সামনে এসে দাড়াতেই আমার ধ্যান ভাঙ্গলো রক্তিমের মুখে অমায়িক হাসি লেগে আছে।রক্তিম আমার কাছে এসে কোমড় জড়িয়ে ধরে বললেন,

~এই গিফটা কবে কেনা হলো?
আমি রক্তিমের প্রশ্ন শুনে একটু বিব্রতবোধ করলাম তারপর আমতা আমতা করে বললাম,
~এই তো তিনদিন আগে।
রক্তিম বললো,
~দেওনি কোনো?
রক্তিমের শীতল কন্ঠের আওয়াজ শুনে আমার বুকের ধুকপুক বেড়ে গেলো।আমি নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বেশ অভিমান নিয়ে বললাম,
~আপনার কাছে আমার জন্য সময় আছে?এই কয়েকদিন ভালো মতো কথা পর্যন্ত বলেন নি।
অধরার অভিমান মাখা কথা শুনে রক্তিম হাসলো।তার প্রিয়তমা যে তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আকুল ছিল সেটা সে বুঝতে পেরেছে।রক্তিম অধরাকে আরেকটু কাছে টেনে বললো,
~সব অভিমান শেষ করে দিবো আর মাত্র তিনদিন তারপর এই রক্তিম শুধু তার অধরার।
রক্তিমের এহেন কথায় আমি লজ্জাবতী গাছের মতো নুয়ে পরলাম।রক্তিম আমার কানের পিছে চুল গুলো গুজে দিয়ে ফিসফিস করে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

~বিয়ের পর তো আমরা হানিমুনে যাই নি।রাহির বিয়েটা শেষ হলেই তোমাকে নিয়ে চলে যাবো পাহাড়ে কী বলো?
রক্তিমের মুখে এসব কথা শুনে আমার কান গরম হয়ে গেলো।লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলো আমি রক্তিমকে বললাম,
~পরেরটা পরে এখন আমাকে রেডি হতে দিন। রাহির বাসায় যেতে হবে।
রক্তিম আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো,
~তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হও।আমাদের বের হতে হবে
বলেই সে মোবাইল হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলো আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললাম,
~বিয়ের দিন আপনি যেমন বলেছিলেন আমার চোখে আপনার সর্বনাশ তেমনি আজ আমি বলছি আপনার চোখে আমার সর্বনাশ।ভালোবেসে ফেলেছি আপনায় রক্তিম খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে সেটা জানিয়ে দিবো।
এই মনে নিভৃতে যতনে রয়েছে আপনার বসবাস।বড্ড বেশি অভ্যাসে পরিণত হয়েছেন আপনি আমার এই অভ্যাসটাকে আমি সারাজীবন আগলে রেখে এই পৃথিবীতে বাচঁতে চাই।ভালোবাসি প্রিয় আমার মনের গহীনে আপনার বসবাস অন্ততকালের জন্য রয়ে গেলো।

রাহিদের বাড়িতে খুশির ঢেউ বইছে কেনই বা না হবে এই বাসার একমাত্র মেয়ের বিয়ে।রক্তিম কোনো কাজে ঘাটতি রাখেনি একদম একজন বড় ভাই যেমন নিজের ছোট বোনের জন্য সব করে থাকে সে তেমনটি করছে।কোথায় কী প্রয়োজন সে সবটা সামলে নিচ্ছে রাহির পছন্দসই সব করার চেষ্টা করছে।এই কাজের মাঝেই রক্তিমের মনে ভাবনা জাগলো
~রাহি যেমন নিজের বিয়ে এতো enjoy করছে।তার যেমন মনের সব ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে তেমনটি হয়তো আমার অধরারও ছিল হয়তো আমার জন্য তা পূরণ হয়নি।
এটা ভাবতেই রক্তিমের চোখ অধরাকে খুজতে শুরু করে।ছাদের আশেপাশে চোখ বুলিয়ে যে দেখে এতে রাগে রক্তিমের মাথায় আগুন উঠে গেলো।অধরা একটা ছেলের সাথে দাড়িয়ে হি হি করছে তাদের মধ্যে কী কথা হচ্ছে বুঝতে পারছে না সে।অধরা অনেকটাই মিশে গেছে হয়তো সেই ছেলেটির সাথে।

রক্তিম হাতের কাজ কাউকে বুঝিয়ে দিয়ে ছুটলো বউয়ের কাছে তার মনের প্রাণ পাখিরা ঝটপট করছে।
রাহির বাসায় এসে আমি রাহি রুমে যাই তাকে রেডি হতে সাহায্য করি তারপর তাকে নিয়ে ছাদে চলে যাই।রক্তিমের কাজ আসলেই অসাধারণ আমি রাহিকে স্টেজে বসিয়ে রক্তিমকে খুজতে শুরু করি হঠাৎ একটা ছেলের সাথে আমার ধাক্কা লেগে যায়।আমি সেই ছেলেটির দিকে মাথা উঠিয়ে বলি,
~সরি ভাইয়া দেখতে পাইনি।
সেই ছেলেটি বললো,
~ইট’স ওকে আপুনি।আমারও খেয়াল ছিল না
ছেলেটি আমার সমবয়সী হবে।ছেলেটি আবার বললো,
~আপুনি তোমার নামটা কী?
আমি হেসে বললাম,

~অধরা।
ছেলেটি ভ্রুকুচকে বললো,
~রক্তিম ভাইয়ের বউ।
আমি বললাম,
~আপনি কীভাবে জানেন?
ছেলেটি বললো,
~রাহি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ও বলেছে সব রক্তিম ভাইয়ের ব্যাপারে।
আমি বললাম,
~আপনার নাম?
ছেলেটি বললো,
~রাতুল।
আমি হেসে বললাম,
~ওওও।
হঠাৎ পিছন থেকে রক্তিম বলে উঠলো,
~অধরা,এখানে কী করছো?

আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি রক্তিম হাঁপাচ্ছে হয়তো দৌড়ে এখানে এসেছে।আমি ঘাবড়ে গিয়ে তার কাছে গিয়ে বললাম,
~কী হয়েছে আপনার?
রক্তিম রাতুলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
~আপনি কে?আপনাকে ঠিক চিনলাম না।
রাতুল হেসে বললেন,
~রক্তিম ভাই আমি রাহির বন্ধু।
রক্তিম বললো,
~ওহ।
রাতুল বললো,
~আপনার আর অধরা ভাবির কথা অনেক শুনেছি।আজ দেখাও হয়ে গেলো।
রাতুলের কথা শুনে রক্তিম সস্বতির নিশ্বাস ছাড়লো।রাতুলকে বললো,
~ফাংশন কেমন enjoy করছো?সব ঠিকঠাক হয়েছে তো?
রাতুল বললো,

~খুব ভালো হয়েছে।আমি একটু রাহির সাথে দেখা করে আসি
বলেই রাতুল চলে গেলো।রাতুল যেতেই রক্তিম অধরার দিকে তাকতেই দেখতে পেলো অধরা কোমড়ে হাত দিয়ে তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।অধরা রাগী চোখ দেখে রক্তিম ভয় পেয়ে ঢোক গিললো
আমি রক্তিমের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললাম,
~আপনি এভাবে এখানে কী করছেন আর হ্যাঁ আপনার না অনেক কাজ তাই ২মিনিটও আমার সাথে দাড়িয়ে ছবিও তুললেন।
রক্তিম তার ৩২টা দাঁত বের করে আমাকে বললেন,
~সরি ময়নাপাখি এখন তো অনেক সময় আছে চলো ছবি তোলা যাক।
আমার হাত ধরে নিয়ে যেতে চাইলে আমি হাত ছাড়িয়ে বললাম,
~আপনি আমার কাছে এসেছেন কেন?ওই যে রাহির বোনের কী যেন নাম?ওহ হ্যাঁ মনে পরেছে সাবিহা তার কাছে যান।ভালো লাগবে

আমার কথা শুনে রক্তিম আমার হাত শক্ত করে ধরে বললেন,
~কী যে বলো?তুমি আমার বউ তোমার কাছে আসবো না তো কার কাছে আসবো।আর ওরা তো মেহমান প্লিজ লক্ষ্মীটি রাগ করো না।
কথা শেষ করেই আমার হাত ধরে নিয়ে গেলো ক্যামেরা ম্যানের সামনে আর তাকে বললো,
~সুন্দর করে আমাদের ছবি তুলবেন।বুঝেছেন
অনেক ছবি তোলার পর আমাকে ডেকে উঠলো রাহি।আমি রক্তিমকে বলে রাহির কাছে চলে যাই রাহির দুটো হাতেই মেহেদী দিয়ে রাঙ্গানো আমি এখন পর্যন্ত মেহেদী লাগাইনি।আমাকে দেখে রাহি বললো,
~অধরা,তুমি মেহেদী কেন লাগাওনি?
আমি বললাম,
~এখনি লাগাবো।
রাহি বললো,
~নাহ এখনই লাগাতে হবে।
আমি মেহেদী লাগাতে বসে পরলাম।মেহেদী দেওয়া শেষে রাহি মেহেদী দেখে বললো,
~সব ঠিক আছে কিন্তু রক্তিমের নাম নেই।
আমি বললাম,
~তার দরকার নেই।
রাহি বললো,
~কেন দরকার নেই। আলবাত দরকার আছে তুমি ওর বউ তোমার হাতে ওর নামের মেহেদী থাকবে।
রাহি মেহেদী আর্টিস্ট কে ডেকে আমার হাতে রক্তিমের নাম লিখে দিলেন।

মেহেদীর পর সবাই নাচ-গানে ব্যস্ত হয়ে গেলো। অভি ভাই এসেছিলেন কিছুক্ষন থেকে চলে গেছেন তাদের বাসায়ও প্রোগ্রাম চলছে।আমি এক কর্নারে দাড়িয়ে আছি সবাই গানের তালে পা চালাচ্ছে আমও সবাইকে দেখছি তো কখনো রাহির ফোন দিয়ে ভিডিও করছি।রক্তিম আগামীকাল হলুদের ফাংশনের জন্য সমালোচনা করছেন।এখানে আমি দাড়িয়ে এইসবের মজা নিচ্ছি ভিডিও করে রাখছি যাতে রক্তিমকে দেখাতে পারি।এভাবেই আনন্দ উল্লাসে অনুষ্ঠান শেষ হয় রাত ৩টায় আমরা আজ রাহির বাসায় থাকবো।রাহির রুমে এখন আমি বসে আছি ফ্রেশ হয়ে এসেছি সেই কখন হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি মেহেদী একদম লাল হয়ে গেছে রক্তিম লেখা জায়গাটি তো একদম টকটক করছে লাল হয়ে ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজে আমার ধ্যান ভাঙ্গলো আমি তাকিয়ে দেখি রাহি ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছে।রাহিকে দেখে আমি বললাম,

~আগামীকাল আবার হলুদ তুমি এখন ঘুমিয়ে পরো।নাহলে কালকে খারাপ লাগবে
রাহি বললো,
~আসলেই ১৫দিন কীভাবে কেটে গেলো কাল হলুূদ পরশু বিয়ে। টেনশনে হচ্ছে বাবার জন্য একা কীভাবে থাকবে?
আমি বললাম,
~সব হয়ে যাবে কোনো টেনশন করো না।
রাহি আমার কথা হালকা হাসলো তখনই দরজায় কেউ নক করলো রাহি বললো,
~ভিতরে আসেন।
দরজা ঠেলে রক্তিম ডুকলো আমাকে দেখে বললো,
~চলো রুমে।
আমি যেই না উঠতে যাবো তখনই রাহি আমার হাত ধরে চোখ টিপ মেরে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আজ অধরা আমার সাথে থাকুক।
রাহির কথা শুনে রক্তিমের মাথায় হাত এ মেয়ে বলে কী সারাদিন বউকে পাই নি এখন আমার বউ নিয়ে টানাটানি।রক্তিম বললো,

~রাহি,অধরা এখানে থাকলে তুমি অভির সাথে কথা বলবে কীভাবে?তখন তো লজ্জা পেতে হবে।
রাহি বললো,
~কিছু হবে না।
রক্তিম বললো,
~তোমার কিছু হবে না আমার অনেক কিছু।
বলেই আমার হাত ধরে রুম থেকে নিয়ে আসলেন রাহির হাসির আওয়াজ আসছে।রক্তিম আমাকে রুমে এনে দরজা লক করে বললেন,
~দেখেছো কেমন ফাজিল মেয়ে।
আমি কিছু না বলে মুচকি হেসে হাতের দিকে তাকালাম তারপর দুহাত রক্তিমের সামনে মেলে বললাম,
~দেখেন তো কেমন হয়েছে?
রক্তিম আমার কাছে এসে আমার হাত দুটোকে ধরে নিজের মুখের সামনে এনে ঠোঁট ছুয়ালেন রক্তিমের এহেন ব্যবহারে আমার শরীরে শিহরণ বয়ে গেলো।

রক্তিম হাত ছেড়ে আমাকে কাছে টেনে কোমড় জড়িয়ে ধরে বললেন,
~খুব সুন্দর হয়েছে।আমার নামটা তোমার হাতে অনেক সুন্দর লাগছে।
কথা শেষ করে আমার চুল গুলো সরিয়ে ঘাড়ে মুখ গুজে তার ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলেন।রক্তিমের আচরণ স্বাভাবিক না সে আমার অনেক কাছে চায় তা আমি বুঝতে পারছি কিন্ত এখন সঠিক সময় না আমি রক্তিম কে বললাম,
~রক্তিম ফ্রেশ হয়ে আসেন।
আমার কথায় তার কর্ণপাত হলো না।আমি রক্তিমকে বললাম,
~রক্তিম,আপনি অনেক টার্য়াড পাশাপাশি আমিও প্লিজ ফ্রেশ হয়ে আসেন।
রক্তিম আমার ঘাড় থেকে মুখ তুলে বললেন,
~ফ্রেশ হয়ে আসছি।তুমি শুয়ে পরো
রক্তিম চলে যেতেই আমি ঘনঘন শ্বাস নেই তার স্পর্শ এখন সহ্য করার মতো না মনে হয় এখনই জান চলে যাবে।এসব ভাবতে ভাবতে আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম অনেক্ষন পর রক্তিম ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আমার পাশে এসে শুয়ে পরলেন তারপর আমাকে কাছে টেনে কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে জড়িয়ে ধরেন।আমিও তাকে জড়িয়ে ধরলাম পরম আবেশে আর মনে মনে বলি খুব তাড়াতাড়ি আমি আপনার হবো রাহির বিয়ের রাতেই আপনাকে মনের কথা জানাবো।

পরেরদিন সকাল থেকেই রাহিদের বাসায় বিয়ের আমেজ আবার শুরু।রাহির সব ফ্রেন্ডরা কাল রাতে চলে গিয়েছিল কিন্তু আজ সকালেই আবার চলে এসেছে।রাহির কাজিন বলতে হাতে গোনা ৪জন রক্তিম আবারও ব্যস্ত হয়ে পরছেন কাজে আমি রাহির ঘরে বসে আছি সব মেয়েরা ওর রুমেই হামলা করেছে।তখনই রাহির এক বোন যার নাম সাবিহা সে আমাকে বললো,
~তুমি অনেক লাকি।রক্তিম ভাইয়ের মতো একজন লাইফ পার্টনার পেয়েছো।
সাবিহার কথা শুনে তার পাশে বসা মিলি বললো,
~অধরা ভাবি তুমি কী জানো সাবিহা কিন্তু রক্তিম ভাইয়ের উপর ক্রাশ খেয়েছে।
আমার পুরো শরীর রাগে জ্বলে যাচ্ছে তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম,
~সাবিহা যতই ক্রাশ খেয়ে থাকো না কেন রক্তিমের উপর আধিপত্য আমার।
রাহি আমার কথা শুনে বললো,

~একদম ঠিক কথা।যেমন অভির উপর আমার আধিপত্য আর সাবিহা একদম আমার অভিকে দেখে লুচুগিরি করবে না।নাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না got it.
রাহির এমন কথায় সাবিহা মাথা নিচু করে ফেললো এতে ওর দোষ নেই দোষ ওর বয়সের।এই বয়সেই মানুষ আবেগটাকে ভালোবাসা বুঝে ফেলে আমি সাবিহার পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম,
~সাবিহা,তুমি ছোট মানুষ তোমার কাছে এখন সবই ভালোলাগাকে ভালোবাসা লাগবে তার মানে এই নয় তুমি কোনো ভুল করে ফেলবে জীবন একটাই সুন্দর করে পরিচালিত করবে।
সাবিহা মাথা উঁচু করে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~বুঝেছি ভাবি।কিন্তু তোমার বর যেমন তোমায় ভালোবাসে তেমনি একটা বর আমার লাগবে দেবে খুজে?
আমি হেসে সাবিহার নাক টেনে দিয়ে বললাম,

~ওরে ননদিনী অবশ্যই খুজে বের করবো।
আমার কথায় সবাই হেসে উঠলো সাবিহা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
সবার সাথে আড্ডা মেরে রুমে আসতেই দেখি রক্তিম কী যেন খুঁজছে? আমাকে দেখে সে বললো,
~অধরা,আমার শার্ট কোথায় দেখো আমি ঘেমে কী হয়েছি?আর ডোকোরেশনের ব্যাটা সব উল্টাপাল্টা কাজ করেছে।আবার গিয়ে সব ঠিক করতে হবে আর তুমি খাওয়া দাওয়া করেছো নাকি হি হি করতে করতে দিন শেষ।
রক্তিমের কথা শুনে মনে হচ্ছে বেজায় রেগে আছে।এদিকওদিক হাঁটছেন আর ফোস ফোস করে নিশ্বাস নিচ্ছেন।আমি রক্তিমের সামনে গিয়ে দাড়ালাম সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৫

~কী হয়েছে?
আমি কোনো কথা না বলে তাকে জড়িয়ে ধরলাম।আমার এহেন কান্ডে রক্তিম অবাক হলো কিন্তু পরক্ষনে নিজেকে সামলে আমার জড়িয়ে ধরে তারপর বলে,
~আমি ঘেমে একেকার আর এ অবস্থায় তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছো।
আমি বললাম,
~তো কী হয়েছে?
রক্তিম হেসে বললো
~কিছু হয়নি।আমাকে একটা শার্ট দেও তো ফ্রেশ হবো

আমি তাকে ছেড়ে দিয়ে ব্যাগ থেকে শার্ট আর প্যান্ট বের করে দিলাম সে মুচকি হেসে ওয়াশরুম চলে গেলো।
সন্ধ্যায় রাহিকে রেডি করে নিজে রেডি হতে শুরু করলাম আজ সব মেয়েরা বাসন্তী রঙ্গের শাড়ি আর ছেলেরা আকাশী রঙ্গের পাঞ্জাবি। শাড়ি পরে নিলাম চুলে বেলীফুল আর হালকা টাচ আপ করে ছাদে চলে গেলাম ছাদে যেতেই আমি

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৭