আমার শহরে তুমি পর্ব ১৭ ||  Alisha Rahman Fiza

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৭
 Alisha Rahman Fiza

আমি ছাদে গিয়ে পুরো অবাক এতো সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে যে আমার চোখ পুরো জুড়িয়ে গেছে।স্টেজে হলুদ গোলাপ দিয়ে সাজানো আর গোটা গোটা অক্ষরে লেখা রাহির হলুদ সন্ধ্যা। অনেক সুন্দর লাগছে আর সবাই কে তো আরো সুন্দর লাগছে আমার চোখ যে অন্য একজনকে খুজছে সেই যে রক্তিমের সাথে দেখা হয়েছে এখন পর্যন্ত তার দেখা আমি পাইনি।

আশেপাশে তাকিয়ে শুধু খুজছি তাকে কিন্তু কোথাও তার দেখা পাচ্ছি না।হঠাৎ আমার কোমড়ে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি এই স্পর্শ চিনতে একটুও ভুল করছি না রক্তিমের স্পর্শ চিনতে আমার একটুও ভুল হয়নি।আমি চোখ তার দিকে তাকালাম রক্তিম আমার দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে তাকে দেখে আমি তো আরেকদফা অবাক হলাম আকাশী রঙ্গের পাঞ্জাবিতে তাকে সেই লাগছে।রক্তিমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমি অভিমান সুরে বললাম,

~এখন এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?এতক্ষন কোথায় ছিলেন?
রক্তিম শীতল কন্ঠে বললেন,
~একটু ব্যস্ত ছিলাম।
আমি রক্তিমের হাত কোমড় থেকে সরিয়ে বললাম,
~আপনি রুমে নেই যে এমন অসভ্যতামি করছেন।
রক্তিম হালকা হেসে বললেন,
~আমার অসভ্যতামির কী দেখেছো?তোমাকে এতো সুন্দর লাগছে যে আমার অসভ্যতামি আরো বাড়বে।
রক্তিমকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই রক্তিমের বাবা এসে পরলেন তাকে দেখেই আমি রক্তিমকে দূরে সরিয়ে দিলাম।রক্তিমকে ইশারা করলাম সে পিছে ঘুরে দেখলো তার বাবা এখানেই আসছে।রক্তিম আমাকে বললো,
~তুমি এখানে বসো।আমি বাবাকে দেখে আসছি।
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম।রক্তিম চলে গেলো আমি একটা চেয়ারে বসে মোবাইল টিপছি সাবিহা আমার সামনে এসে বললো,
~ভাবি অনেক বড় ঝামেলা হয়ে গেছে।
আমি মুখ তুলে সাবিহার দিকে তাকালাম তার চোখেমুখে ভয় দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক বড় ঝামেলা হয়েছে।সাবিহাকে বললাম,
~কী হয়েছে?
সাবিহা আমার হাত ধরে বললো,
~চলো রাহি আপুর রুমে তারপর বুঝবে।
আমাকে টেনে সে নিচে রাহির রুমে নিয়ে গেলো।আমি রুমে ডুকতেই দেখি রাহি বিছানায় বসে কান্না করছে তার মেকআপের নাজেহাল অবস্থা।রাহির এ অবস্থা দেখে আমার বুকটা ধক করে উঠলো আমি দৌড়ে তার কাছে গিয়ে বললাম,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

~রাহি,কী হয়েছে কান্না করছে কেন?
রাহি আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে বললো,
~অধরা,আমি বাবা কে ছেড়ে কোথাও যাবো না।বাবা তো আমাকে ছাড়া কিছুই করতে পারে না।
রাহির কান্না দেখে নিজেরই কান্না আসছে কিন্তু কিছু করার নেই এটাই নিয়তি মানতে হবে।আমি রাহির পিঠে হাত বুলিয়ে বললাম,
~এখন যদি তুমি এভাবেই কান্না করতে থাকো তাহলে রায়হান চাচ্চু দেখে কষ্ট পাবে।তুমি কী জানো সে এখন কতটা কষ্টে আছে?তার একমাত্র মেয়ে দূরে চলে যাবে কতোটা কষ্ট পাচ্ছে।
রাহি আমার কথা শুনে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চোখ মুছে বললেন,
~আচ্ছা আর কাঁদবো না।কিন্তু মেকআপের কী হবে?
আমি মুচকি হেসে বললাম,

~এখনই সব ঠিক হয়ে যাবে।
কথাটি বলেই রাহিকে আয়নার সামনে বসিয়ে দিলাম। তারপর সাবিহা আর আমি মিলে রাহির মেকআপ ঠিক করলাম।পার্লারের মতো ততটা ভালো হয়নি কিন্তু চলবে।রাহিকে ঠিকঠাক করে বললাম,
~অভি কী আজ আসবে?
রাহি রাগী মুখে বললো,
~ওই গাধার আসার কোনো দরকার নেই।
আমি বললাম,
~ঝগড়া হয়েছে?
রাহি বললো,

~আর বলোনা অধরা আমি অভিকে বললাম যে বাবাকে ছাড়া কীভাবে থাকবো?ওই গাধায় বলে তোমাকে ছাড়া আমি কীভাবে থাকবো?ওর মা ওকে সঠিক নামে ডাকে গাধা।
আমি আর সাবিহা রাহির কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠলাম তারপর আমি হাসতে হাসতে বললাম,
~অভি ভাই গাধা হলে তুমি তো তার হবু বউ তাহলে তুমি গাধী।
রাহি আমার কথা শুনে চোখ চোখ বড় বড় করে বললো,
~একদম না।আমি কেন গাধী হতে যাবো।
রাহির কথায় আমরা হেসে উঠলাম।হঠাৎ রক্তিম দরজা ঠেলে রুমে ডুকে বললো,
~অধরা,রাহিকে নিয়ে আসো।আর এই সাবিহা কই থাকিস তুই তোকে আন্টি খুজছে।যা ভাগ
সাবিহা রক্তিমের কথা শুনে এক দন্ডও সেখানে দাড়ালো না ভো দৌড় দিলো।আমি রাহিকে নিয়ে ছাদের উদ্দেশ্যে বের হলাম রুম থেকে

রাহিকে স্টেজে বসিয়ে আমি নেমে পরলাম।রাহিকে দেখতে অনেক ভালো লাগছে একদম হলুদ পরী কিন্তু কান্না করার ফলে চোখ দুটি ফুলে গেছে তবুও তাকে সুন্দর লাগছে।এক এক করে সবাই তাকে হলুদ লাগাচ্ছে আর আমি সেই মূহুর্তো গুলো নিজের মোবাইলে বন্দি করছি।এইসব করছি সেসময় আমাকে পিছে থেকে কেউ বলে উঠলো,
~এতো সুখ তোমার কপালে সইবে তো অধরা।
আমি কথাটা শুনে পিছে ফিরে দেখি রাত দাড়িয়ে আছে।রাতকে দেখে আমার মেজাজ গরম হয়ে গেলো কিন্তু পাবলিক প্লেস তাই কিছু বলতে পারছিনা।আমি শুধু মুচকি হেসে বললাম,
~আপনাকে চিন্তা করতে হবে না আমার সুখের কথা।আপনি আপনার সুখ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন
রাত তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,
~আমার কথা এখন সহ্য হয় না আগে তো এই মুখের বাণী শোনার জন্য পাগল হয়ে যেতে।
আমি বললাম,

~সেইসময় ভুল করেছি বলে এখনও সেই একই ভুল করবো তাতো ঠিক না। ভুল মানুষ একবার করে বার বার না
আমার কথায় হয়তো রাত রেগে গেছে কিন্তু নিজেকে সামলে বললো,
~এতো আকাশে উড়ো না আবার মাটিতে পরে যাবে।
আমি বললাম,
~আমি মাটির মানুষ মাটিতেই থাকি।আকাশে আপনারা থাকেন সেখানে আমি কেনো নিজের পা দিবো
রাত কটমট করে চেয়ে বললেন,
~বেয়াদবি করো না।
আমি বললাম,
~আরে দেবরজী আপনি তো আমার সম্পর্কে ছোট কিন্তু বয়সে বড় আমি বেয়াদবি করছিনা কথার পৃষ্ঠে কথা বলছি।
রাত রেগে গিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসতেই আমি পিছনে সরে যেতে নিলাম তখনই আমার শাড়ির সাথে আমার পা বেঁধে পরে যাই ফ্লোরে।পায়ে অনেক জোড়ে ব্যাথা লাগায় আমি জোড়ে চিল্লিয়ে উঠি,

~আহহ আমার পা।
আমার এ অবস্থা দেখে রাত ভয় পেয়ে যায়।আমার কন্ঠ শুনে রক্তিম এসে পরে সেখানে আমাকে এভাবে পরে থাকতে দেখে সে আমার কাছে এসে অস্থির কন্ঠে বললো,
~কী হয়েছে তোমার?
আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে রক্তিম আমায় কোলে
তুলে নেয় আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখি অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে।রক্তিমের চোখ রাতের দিকে পরলো কিন্তু ওকে কিছু না বলে রক্তিম আশেপাশের মানুষ গুলো উদ্দেশ্য করে বললো,
~প্লিজ আপনারা প্রোগ্রাম enjoy করুন।এখানে তেমন কিছুই হয়নি
বলেই রক্তিম আমাকে নিয়ে ছাদ থেকে নিচে এসে পরেন তার পিছে পিছে রাত ও আসে।আমাকে রুমে নিয়ে গিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলেন তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,

~কোন পায়ে ব্যাথা পেয়েছো?
আমি ডান পায়ের দিকে ইশারা করলাম।রক্তিম পা হাতল নিতেই আমার মুখ দিয়ে বের হয়ে আসলো,
~ব্যাথা পাই তো।
রক্তিম আমাকে শুইয়ে দিয়ে পা একটা বালিশের মধ্যে রেখে আমাকে বললো,
~আমি ডক্টরকে ফোন দিচ্ছি।
একথা বলে যেই না রক্তিম পিছে তাকালো ওমনেই রাতের দেখা পেলো।রক্তিম রাতকে দেখে বললো,
~কী চাই এখানে অধরাকে ব্যাথা দিয়ে তোর শান্তি হয়নি যে এখন এভাবে সং সেজে দাড়িয়ে আছিস।
রাত কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি বললাম,
~রাত আমাকে ব্যাথা দেয়নি বরং আমার শাড়িতে পা আটকিয়ে অসাবধানতায় পরে গেছি।
রক্তিম আর কোনো কথা না বলে ডক্টরকে ফোন করলো।
ডক্টর আসতে একটু সময় লাগবে তাই রক্তিম আমার পায়ে আইসপ্যাক ধরে রেখেছেন।ব্যাথাটা অনেক বেড়েছে আর সেই জায়গাটা ও লাল হয়ে গেছে।
কিছুক্ষন পর ডক্টর আসলেন তিনি চেক করে বললেন,

~পা টা শুধু মোচকে গিয়েছে আর কোনো সমস্যা হয়নি।এক-দুদিনে ঠিক হয়ে যাবে ব্যাথার জন্য কিছু medicine দিচ্ছি সেগুলো নিয়ম মতো নিতে হবে।পায়ে কোনো জোড় দেওয়া যাবে না বেশি হাঁটা-চলা করা যাবে না।
বলেই prescription টা রক্তিমের হাতে দিয়ে দিলো।ডক্টর যেতেই সাবিহা রুমে ডুকলো আমাকে দেখেই বললো,
~পা ঠিক আছে?আমি রাত ভাইয়ের থেকে শুনলাম তোমার এ অবস্থা।রাহি আপিকে বলিনি
রক্তিম গম্ভীর কন্ঠে বললো,
~সাবিহা তুই অধরার কাছে বস আমি ঔষধ গুলো নিয়ে আসি।আর হ্যাঁ গাধীর মতো রাহিকে বলে দিস না এ কথা।
সাবিহা শুধু মাথা নাড়ালো।

রক্তিম রুম থেকে বের হতেই রাতের দেখা পেলো।রাতকে দেখেই ওর রাগ আরো বেড়ে গেলো রাত রক্তিমের কাছে এসে মাথানিচু করে বললো,
~সত্যি বলছি ভাইয়া,অধরাকে ব্যাথা দেওয়ার কোনো intention আমার ছিল না।pls believe me.
রক্তিম রাতের কাঁধে হাত রেখে বললো,
~অধরার থেকে দূরে থাকবি।তুই যেমন আমার ভাই তেমনি অধরা আমার বউ দুজনই আমার কাছের মানুষ তাই আমি চাই না একজনের জন্য আরেকজন কে কষ্ট দিতে।I hope you understand.
কথা শেষ করে রক্তিম বাড়ির বাহিরে চলে গেলো।রাত এখনও মাথানিচু করে আছে আজ তার মনে অনুতাপের ঝড় বইছে হয়তো সে ভুল করেছে।

রাহির হলুদ আর আমার দেখা হলো না রক্তিমের কড়া নির্দেশ যাতে বিছানা থেকে এক চুলও না নামি।নাহলে রাহির বিয়ের দিন কেউ আমার দেখা পাবে না বজ্জাত লোক সবসময় এমন করে। সাবিহা বেচারি আমার সাথেই বসে আছে একটু আগে খাবার খেয়ে ঔষধ নিয়েছি তাই ব্যাথাটা একটু কমেছে।সাবিহা বসে বসে মোবাইল টিপছে রাত ১টা আমার ঘুম আসছে তাই আমি সাবিহাকে বললাম,

~সাবিহা,আমার ঘুম আসছে।তুমি রুমে চলে যাও তোমার ওতো রেস্টের প্রয়োজন।
সাবিহা বললো,
~না ভাবি,রক্তিম ভাই যদি জানে তাহলে অনেক বকবে।
আমি তাকে অভয় দিয়ে বললাম,
~রক্তিম কিছু বলবেনা।তুমি যাও
আমাদের কথার মাঝেই রুমে রক্তিম এসে হাজির এখনো তার মুখ গম্ভীর সে এসেই সাবিহাকে বললো,
~রুমে যা রাহি তোকে খুঁজছে।
রক্তিমের কথা শেষ করতেই সাবিহা বললো,
~আমি যাই ভাবি।তুমি রেস্ট নেও
সাবিহা চলে যেতেই রক্তিম ওয়াশরুম চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে বের হতেই আমি বললাম,
~মুখ বেলুনের মতো ফুলিয়ে রেখেছেন কেন?
রক্তিম বললেন,

~তাতে তোমার কী?
বলেই আমার পায়ের কাছে বসে পা দেখতে লাগলেন।আমি পা সরিয়ে ফেললাম রক্তিম আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন,
~সারাদিন তো আপনি হাঁটেন না উড়তে থাকেন।ট্রেনের মতো এখান থেকে ওখানে ট্রেন না প্লেনের মতো ফ্লাই করেন।
আমি মুখ কাঁচুমাচু করে বললাম,
~আর হবে না এমন।
রক্তিম আমার গাল দুটো তার হাতে আবদ্ধ করে বললেন,
~আমি তোমাকে বকতে চাই না কিন্তু তুমি নিজের খেয়াল না রাখলে কে রাখবে।
আমি রক্তিমের হাত থেকে গাল ছাড়িয়ে আমার হাতগুলো তার গলায় আবদ্ধ করে বললাম,
~আপনি আছেন না।আমার খেয়াল রাখার জন্য so i don’t have any tension about myself mr.husband.

বলেই রক্তিমের গালে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলাম।রক্তিম আমার এহেন কথায় হালকা হাসলেন তারপর আমায় জড়িয়ে ধরলেন।আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিতে থাকলেন আর বললেন,
~তুমি আসলেই একটা পাগলী।
আমি বললাম,
~আপনারই তো পাগলী।
রক্তিম আর কিছু না বলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে ভালোমতো শুইয়ে দিলেন তারপর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকলেন।তার ছোয়ায় আমার চোখে ঘুম এসে পরলো রক্তিমকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলাম।
রক্তিম অধরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বারবার তার পায়ের দিকে খেয়াল করছে।এক পর্যায়ে তার চোখেও ঘুমের নেমে আসে সেও ঘুমিয়ে পরলো তার প্রিয়তমাকে বাহুডরে আবদ্ধ করে।

সকাল থেকেই রাহির রুমে শুয়ে আছি।রাহি এটা ওটা নিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে ঘুম থেকে ওঠার পরই রক্তিম আমাকে নাস্তা করিয়ে ঔষধ খাইয়ে কাজে লেগে গেছেন।আমার সব কিছু সাবিহা গুছিয়ে দিচ্ছে রক্তিমের দেওয়া কালো শাড়িটা পরবো আজ।পা এখন অনেকটাই ভালো কিন্তু হাঁটতে গেলেই একটু ব্যাথা লাগে।তাই এখন হাঁটার চিন্তা বাঁধ দিয়েছি।রাতে অনুষ্ঠান আজ তো রক্তিমকে আমার মনে কথা বলেই ছাড়বো।যা হয়ে যাক এসব ভাবছি তখনই রক্তিমের বাবা রাহির রুমে উপস্থিত হলো।বাবাকে দেখে আমি উঠে বসলাম সে আমাকে দেখে বললো,

~অধরা মা,এখন কেমন আছো?
আমি বললাম,
~ভালো বাবা।
বাবা বললো,
~পায়ের ব্যাথাটা কমেছে?
আমি বললাম,
~জ্বী বাবা।
বাবা বললেন,
~ঔষধ ঠিক মতো নিয়ো।Take care

বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো।বাবা চলে যেতেই আমি আবার টেনশন নিতে শুরু করলাম কীভাবে রক্তিমকে নিজের মনের কথাটা বলবো তাকে তো জানাতে হবে।আজ তো বাসায় ও চলে যাবো হ্যাঁ বাসায় পৌছেই আমি বলে দিবো।এখন বিয়ে Enjoy করবো রাহির বিয়ে বলে কথা সারাদিন এভাবেই মজা মাস্তিতে কেটে গেলো।রাহিকে সাজানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হলো সাবিহা আমাকে শাড়ি পরতে সাহায্য করলো।মোটকথায় আজকের পুরো সাজের credit সাবিহার আমাকে রেডি করে সাবিহা নিজে রেডি হতে চলে যেতে নিবে তখন আমি বললাম,
~সাবিহা, ধন্যবাদ
সাবিহা মুখ গোমড়া করে বললো,
~কীসের ধন্যবাদ?বর খুজে দেও তাহলেই হবে।
বলেই সে চলে গেলো হয়তো লজ্জা পেয়েছে।আসলেই এ মেয়েটা পাগলী
সব অনুষ্ঠান ছাদে আয়োজন করা হলেও বিয়ের অনুষ্ঠান রাহিদের বাগান বাড়িতে করা হয়েছে।রাহিদের বাসা থেকে মাত্র ১০মিনিটের রাস্তা হেঁটেই যাওয়া যায় কিন্তু আমার পায়ের জন্য রক্তিম strictly বলে গিয়েছেন যে গাড়ি দিয়ে রাহি যাবে সে গাড়িতে করেই যেন আমি আর সাবিহা চলে আসি।সাবিহাকে আমার খেয়াল রাখার জন্য সাথে সাথে থাকতে বলেছেন।

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৬

গাড়ি দিয়ে রওনা দিয়েছি রাহিদের বাগান বাড়ির উদ্দেশ্যে সেখানে পৌছে গাড়ি থেকে নেমে চোখ বুলালাম আশেপাশে লাল নীল বাতি গুলো খুব সুন্দর করে জ্বলছে মেহমানদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।আমি একটা চেয়ারে বসে আছি সাবিহা একটু পর পর আমাকে এসে দেখে যাচ্ছে।রক্তিমের দেখা আমি পাইনি একটুপর বরযাত্রা এসে পরবে আমি ফোন বের করে রক্তিমকে ফোন করলাম কোনো রেসপন্স নেই।
ফোন রেখে বসে আছি তখনই এক আন্টি এসে বললো,
~তুমি কী রক্তিমের বউ?
আমি মাথা নেড়ে বললাম,
~জ্বী।
সেই আন্টি মুখ বাকিয়ে বললো,

~তোমার তো রাতের সাথে সম্পর্ক ছিল।তোমার শাশুড়ি সবই বলেছে তো কীভাবে এই বিয়েটা করলে?
আন্টির কথায় কষ্ট লাগলো ভীষনভাবে আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই পিছন থেকে রক্তিম বলে উঠলো,
~যেভাবে আপনি রাজীব আঙ্কেল কে বিয়ে করেছেন তিন কবুল বলে তেমনি অধরাও আমাকে তিন কবুল বলেই বিয়ে করেছে।

আমার শহরে তুমি পর্ব ১৮