আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৬

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৬
Raiha Zubair Ripte

রুমজুড়ে শীতলতা বিরাজমান। কেননা বাহিরে হালকা বৃষ্টি পড়ছে। পুরো কক্ষে ফুলের ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে। হরেক রকম ফুল দিয়ে আজ সাজানো রুমটা।ফুলে সজ্জিত বিছানায় বসে আছে চিত্রা ।একটু আগেই সকল নিয়ম রীতি শেষ করে তাকে রুমে এসে দিয়ে গিয়েছে তৃষ্ণা আর আর অধরা। অধরা পুরো ঘরটায় একবার চোখ বুলিয়েছিল। ফুলের গন্ধে শ্বাস আটকে আসছিল। ইচ্ছে করছিল সব ফুল গুলো ছিঁড়ে ফেলতে। রুম থেকে বের হবার আগে আরেক বার চিত্রা সহ পুরো রুম টায় অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকায়।

ভয়ে,লজ্জায়,উত্তেজনায় শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে চিত্রার। কিরকম যে এক অনুভূতি। বাহির থেকে চেচামেচির আওয়াজ আসছে। তার মানে তুষার এসে পরেছে। বুকটা ধুকপুক করছে ।পরিহিত বিয়ের লেহেঙা খামছে ধরলো উত্তেজনায় বুক কাঁপছে। চিত্রার ভাবনার ঘোর কাটলো কক্ষের দরজা খোলার আওয়াজে। তুষার এসেছে গলা খাকারি দিলো।
ভয়ে আড়ষ্ট হলো চিত্রা । তুষার ধীরে পায়ে এসে চিত্রার পাশে বসে। একদৃষ্টিতে চিত্রার দিকেই তাকিয়ে থাকে। নিরবতা কাটিয়ে তুষার বলে উঠে-

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-“আপনার হাত টা দিন তো চিত্রা।
চিত্রা কাঁপা কাঁপা হাত টা বাড়িয়ে দেয়।
চিত্রার বাম হাত টা তুষার তার ডান হাতের মুঠোয় নেয়। সারা শরীর জুড়ে অদ্ভুত এক শিহরণ জাগে চিত্রার। তুষার তার মুখটা চিত্রার কানের কাছে নিয়ে ফিসফিস করে বলে,,

-“আমাকে মা”রার প্ল্যান করেছেন আপনি মিসেস খাঁন ।
কথাটা শুনে কেঁপে উঠে চিত্রা । লোকটা কি বলছে এসব। তাকে কখন মা”রার প্ল্যান করলো।
-“এসব কি বলছেন আপনি,আমি কখন আপনায় মা”রার প্ল্যান করেছি?
তুষার আলতো হাতে চিত্রার ঘোমটা টা উঁচু করে সরিয়ে ফেলে। মূহুর্তে তুষারেরর মুখ থেকে ভেসে আসে মাশাল্লাহ শব্দটা। বৃষ্টি চোখ বন্ধ করে ফেলে । তার ভীষণ লজ্জা লাগছে চোখ মেলে তাকাতে। তুষার চিত্রার কপালে চুমু দিয়ে বলে-

-“ এই যে আপনার রূপ এটাই তো যথেষ্ট আমায় মা”রার জন্য। আপনার লেপ্টে যাওয়া কাজল কালো চোখে ভীষণ মায়াবী লাগছে। ইশ তখন কাঁদছিলেন কেনো ওভাবে। আপনি কি জানেন আপনার চোখের একফোঁটা অশ্রু আমাকে কতোটা পিড়া দেয়? আর কখনো আমার সামনে কাঁদবেন না আপনি। এখন যান ফ্রেশ হয়ে আসুন দু রাকাত নফল নামাজ পড়ব।
চিত্রা মাথা নাড়িয়ে বিছানা থেকে নামে। তুষার চিত্রার দিকে চেয়ে বলে-

-“আলমারি তে দেখো তোমার পোষাক আছে সেখান থেকে যেকোনো একটা পছন্দ করে পাল্টে আসো।
চিত্রা আলমারির কাছে গিয়ে আবার থেমে যায়। পেছন ফিরে ভ্রু কুঁচকে বলে-
-“ আপনি কি বললেন?
তুষার চিত্রার দিকে চেয়ে বলে-

-“ বলছি আলমারি তে তোমার পোষাক আছে,খুলে দেখো।
-“ আমি এটার কথা বলি নি।
তুষার ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ তাহলে কিসের কথা?
-“ আপনি তুমি করে সম্বোধন করছেন।
তুষার মুচকি হাসলো। বসা থেকে উঠে চিত্রা দিকে এগিয়ে এসে চিত্রা কে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড় করালো। চিত্রার কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে আয়নায় চিত্রার দিকে তাকিয়ে বলে-

-“ তোমার আর আমার সম্পর্ক এখন কিসের?
-“ হাসবেন্ড ওয়াইফের।
-“ তো আপনি করে তাহলে আর কেনো ডাকবো? আজ থেকেই তুমি ডাকার প্র্যাকটিস করছি। তুমি ও তুমি করে ডাকবে।
চিত্রা তুষারের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। দৃষ্টি অনড়ভাবে রেখে বলে-

-“ সময় লাগবে।
-“ যত ইচ্ছে সময় নাও।
কথাটা বলে চিত্রার গলায় চুমু খেলো। তার পর এক এক করে সব গয়না খুলতে সাহায্য করলো। এখন শরীরে বাম হাতের অনামিকা আঙুলে আংটি ছাড়া আর একটা অলংকার ও নেই। অদ্ভুত সুন্দর লাগছে চিত্রা কে। তুষার দৃষ্টি সংযত করলো।

-“ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো কুইক।
চিত্রা আলমারির কাছে আসলো। আলমারি খুলে দেখে আলমারির এক পাশ শাড়ি আর সেলোয়ার-কামিজ দিয়ে ভরা। সেদিন করা সেই পোষাক গুলে। যেগুলো তুষার পরে দিবে বলেছিল। শাড়ি গুলোর মধ্যে থেকে একটা ব্লাক রঙের শাড়ি বের করে সেটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
মিনিট বিশেকের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে সুতি শাড়ি টা পড়ে ওজু করে বের হয়।

চিত্রা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে তুষার পোষাক চেঞ্জ করে ব্লাক শার্ট আর টাওজার পড়ে আছে। চিত্রা কে আলমারি থেকে জায়নামাজ টা বের করতে বলে তুষার নিজে ওজু করার জন্য ওয়াশরুমে যায়।
তুষার ওজু করে বের হয়ে দেখে চিত্রা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে আছে। তুষার গিয়ে চিত্রার ঠিক কিছুটা সামনপ গিয়ে দাঁড়ায়। দুজনে দু রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নেয়।
নামাজ শেষে তুষার চিত্রা কে নিয়ে বিছানায় বসে। আলমারির ড্রয়ার খুলে একটা প্যাকেট এনে চিত্রার হাতে ধরিয়ে দেয়। হকচকিয়ে যায় চিত্রা ।

-“এটা কি?
-“ ইসলামের মোতাবেক এটা তোমার মোহরানা টাকা। দশলক্ষ এক টাকা।
চিত্রা টাকাগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে বলে-
-“এটা দিয়ে আমি কি করবো।
-“ যা খুশি করতে পারো। যেভাবে খুশি খরচ করতে পারো। এই টাকার মালিক তুমি।
চিত্রা প্যাকেট টা নিয়ে আলমারিতে তুলে রাখে। তুষারের পাশে বসতেই তুষার ইশারায় পাশে শুতে বলে। চিত্রা পাশে শুয়ে বলে-

-“ আমার যা প্রয়োজন সব তো আপনি এনেই দিবেন। ওটা খরচ করার প্রয়োজন হবে না।
তুষার মুচকি হেসে বা হাত দিয়ে চুল গুলো ব্রাশ করে। চোখ মুখে দুষ্ট হাসি এনে বলে-
-“ আজ কি আমাদের জানো তো?

চিত্রা তুষারের মুখের দিকে তাকায়। তার চোখ জোড়া নেশালো। চিত্রার ঠোঁট কাঁপছে। কিছু বলবে কিন্তু মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। তুষার চিত্রার মুখ টার দিকে তাকিয়ে নিজের মুখ টা চিত্রার গলার কাছে নিয়ে যায়। গলায় ওষ্ঠ ছুঁয়ে নাক দিয়ে ঘষতে থাকে। তুষারের গরম নিঃশ্বাস চিত্রার গলায় পরছে। বিছানার চাদর খামচে ধরলো। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। তুষার এবার গলা থেকে মুখ সরিয়ে চিত্রার চোখ বন্ধ করে রাখা মুখশ্রীর দিকে তাকায়। এক হাত রাখে চিত্রার গালে। কিছুটা ধমক দিয়ে বলে-

-“ এই মেয়ে চোখ খুলো।
তুষারের ধমক শুনে চোখ মেলে তাকায়। তুষারের হঠাৎ এমন ধমক শুনে ভরকে যায় চিত্রা । ধিরে ধিরে মুখটা চিত্রার অধরের কাছে নিয়ে আসে তুষার। আস্তে আস্তে চিত্রার অধরে অধর ছোঁয়ায় তুষার। ইশ কি একটা অনুভূতি। চিত্রাকে তুষারের সাথে রেসপন্স করতে না দেখে তুষার ছোট্ট করে চিত্রার ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দেয়। ব্যাথায় আহ শব্দ টাও করতে পারলো না চিত্রা। তুষারের বুকের শার্ট খামচে শক্ত করে ধরে। তুষার নিজের মত করে চিত্রার ঠোঁটে অত্যাচার করতে থাকে। হ্যাঁ এটা অত্যাচার চিত্রার ভাষ্যমতে। চিত্রা ঠিক মতো শ্বাস ও নিতে পারছে না। তুষারের থেকে নিজেকে ছাড়াতে গেলেই তুষার আরো জোরে চেপে ধরছে৷ চিত্রা মনে মনে শ’খানেক বকাবকি করলো তুষার কে।

মিনিট দশেক পর তুষার ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেতেই জোরে জোরে শ্বাস ফেলে চিত্রা। তুষারের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ বিয়ে হতে না হতেই মা-রার প্ল্যান করছেন আমাকে?
তুষার চিত্রার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে-
-“ এখনও পুরোপুরি ভাবে মা-রি নি।

চিত্রা ভ্রু কুঁচকালো। তুষার চিত্রার শাড়ি ভেদ করে উন্মুক্ত পেটে হাত রাখে। চিত্রা অসহায় চোখে তাকায়। তুষার সেটাকে গুরত্ব দিলো না। চিত্রা কে নিজের কাছে টেনে আনে। চিত্রা হুড়মুড়িয়ে তুষারের বুকের উপর এসে পড়ে। তুষার আলতো হাতে চিত্রার শাড়ির আঁচল টা সরিয়ে ফেলে। চিত্রা এবার লজ্জায় চোখ খিঁচে বন্ধ করে। তার এবার মাটি ফাঁক করে গর্তে ঢুকতে ইচ্ছে করছে। আস্তে আস্তে যখন তুষারের স্পষ্ট গাঢ় হতে লাগলো শাড়ির কুঁচি ধরে টান দিতেই চিত্রা তুষার কে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে-

-“ কেমন যেনো লাগছে।
-“ ভয় করছে?
চিত্রা হুম বলে। কন্ঠে মাদকতা নিয়ে বলল-
-“ ভয় কে জয় করতে শিখো মিসেস খাঁন। আমি বলেছিলাম আমি শুদ্ধ পুরুষ নই। এই অশুদ্ধ পুরুষ কে এবার সামলান।
কথাটা বলেই তুষার চিত্রার বুকের ভাঁজে চুমু খেলো। আস্তে আস্তে ডুব দিলো চিত্রার মাঝে। চিত্রা গ্রহণ করে নিলো তুষারের দেওয়া ভালোবাসা।

পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ নিরব। কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউ ভালোবাসার উন্মাদনায় মেতে আছে,আর কেউ এই নির্জন রাতে একাকি বসে দুঃখবিলাস করছে। হ্যাঁ দুঃখবিলাস ই তো। এই দুঃখ না মোচন করা যায় আর না কাউকে বলে নিজেকে হালকা করা যায়। এতো কষ্ট কেনো হচ্ছে? বাস্তব টা মেনে নিতে কেনো পারছে না? এই চব্বিশ বছরের জীবনে কোনো সুখই তো পেলো না অধরা। এতো টাই দুর্ভাগ্য নিয়ে এসেছে সে?

বৃষ্টি থেমে গেছে অনেক আগেই। ছাঁদের ফ্লোর বৃষ্টির পানিতে ভিজতে একাকার। ছাঁদে থাকা দোলনা টায় বসে আছে অধরা। দৃষ্টি তার আকাশ পানে। এই দৃষ্টিতে আছে পৃথিবী কে নিয়ে একঝাঁক অভিযোগ। চোখের পলক বন্ধ করতেই টুপ করে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে। সাথে সাথে মুখ চেপে ডুকরে কেঁদে উঠলো । চোখের জল গুলোও বেহায়া । না চাইতেও কেনো বেরিয়ে আসে? ওরা বেরিয়ে আসলেই তো অধরা ভেঙে পড়ে এক যুদ্ধে হেরে যাওয়া সৈনিকের মতো।

চাইলেই কি এতো সহজে অনুভূতি মুছে ফেলা যায়? যায় না তো। এখন থেকে দুজন কে একই সাথে দেখতে হবে এই বাড়িতে। অধরা সহ্য করবে কি করে? অধরা তো দম বন্ধ হয়ে ম-রেই যাবে। অধরা কান্নারত গলায় বিরবির করে বলে-
-“ আল্লাহ ধৈর্য্য দিয়ো আমায়। আমি মানতেই পারছি না। এতোটা অবুঝ কেনো হচ্ছি আমি? আমার ভাগ্যে যখন তাকে রাখলেই না। তাহলে মন মস্তিষ্ক থেকে তাকে চিরতরে মুছে ফেলতে সাহায্য করো। এই টুকু সাহায্য করে একটু শান্তি দাও আমায়।
কথাটা বলে আবার ডুকরে কেঁদে উঠে অধরা।

-“ মিস অধরা আবার ও কাঁদছেন আপনি?
অধরা তড়িৎ গতিতে কান্না থামায়। কন্ঠের মালিক কে সে চিনে। তাই পেছনে ফিরলো না। রাতুল এগিয়ে এলো অধরার সামনে। নিজের রুম বিছানা ছাড়া রাতুলের ঘুম হয় না। আজও ব্যাতিক্রম না,ঘুম ধরছিলো না। সেজন্য ছাঁদে এসেছিল একটু পায়চারি করতে। কিন্তু হঠাৎ অধরার কান্নার আওয়াজ পেয়ে তাকায়। অধরার মাথা থেকে পা অব্দি দেখে আবার ও বলে উঠে –

-“ আজও কাঁদছেন কেনো?
অধরা হাসার চেষ্টা করে বলে-
-“ আ…আসলে আম্মুর কথা মনে পড়ছিলো তাই….
-“ মিথ্যা বলতে পারেন না আপনি, তাহলে কেনো মিথ্যা বলার চেষ্টা করছেন?
জহুরির চোখে অধরাকে দেখে কথাটা বলে রাতুল।
অধরা আমতা আমতা করে বলে-

-“ ন..না না মিথ্যা বলবো কেনো সত্যি বলছি।
-“ আপনি নিজেও জানেন আপনি মিথ্যা বলছেন অধরা।
অধরা আর কিছু বললো না। সত্যি টা তো বলা সম্ভব নয়। আর মিথ্যা টা যখন বিশ্বাস করছে না তার পরিবর্তে নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয়। রাতুল অধরার পাশে বসে তপ্ত শ্বাস ফেলে বলে-
-“ তুষারের বিয়ে টা মানতে পারছেন না এখনও?

অধরা চমকে উঠলো। তড়িৎ গতিতে পাশ ফিরে তাকালো। অধরার চমকে উঠা মুখশ্রী দেখে রাতুল মুচকি হাসলো।
-“ আমি বিষয় টা আগেই আন্দাজ করতে পেরেছি অধরা যে আপনি তুষার কে পছন্দ করেন। আপনার চাহনি সব তাই বলে দিত। শিওর হলাম সেদিন যেদিন এই ছাঁদে আপনাকে একাকী বসে কাঁদতে দেখলাম। ট্রাস্ট মি সেদিন নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছিল। আপনার চোখে অন্য পুরুষের জন্য জল দেখে হৃদপিণ্ডটা কয়েকশো টুকরোয় বিভক্ত হচ্ছিল।

আচ্ছা মিস অধরা আপনার তো তুষার কে পাওয়া অসম্ভব, আর আপনিই তো বলেছিলেন একা জীবন চলে না। আপনি কি আমায় আপনার সাথে পথ চলার সঙ্গী করবেন? আমি আপনার শখের পুরুষ কখনই হতে চাই না। শখের জিনিস গুলো সবসময় ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকে,আর আমি তো আপনার ধরাছোঁয়ার বাহিরে নই। আমি আপনার সখা হতে চাই। আপনি কি হবেন আমার সখী? ট্রাস্ট মি একটু ও কষ্ট পেতে দিব না।সবসময় আগলে রাখবো,বিনিময়ে আপনি না হয় সারাজীবন আমার পাশে থাকবেন,আর রোজ নিয়ম করে একটু খানি ভালোবাসবেন..ব্যাস পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ টা আমি।

অধরা নিশ্চুপ রইলো। রাতুলের এমন আকুতিভরা কন্ঠে বলে উঠা কথা গুলো ভীষণ পিড়া দিচ্ছে তাকে। রাতুলের ভালোবাসা গ্রহণ করার সাধ্যি তার নেই। একজনের মায়াই তো সে কাটিয়ে উঠতে পারছে না,দ্বিতীয় কারো মায়ায় কি করে পড়বে সে? রাতুল অধরার নিশ্চুপতা দেখে অসহায় চোখে তাকালো। অধরা আশেপাশে তাকিয়ে ধরা গলায় বলল-

-“ প্রেম ভালোবাসা আসলেই কঠিন জিনিস। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সবচাইতে কঠিন জিনিস। আপনি দয়া করে আমাকে এই কঠিন জিনিস থেকে বের করুন। উনাকে ভুলতে আমায় সাহায্য করবেন? আমি উনাকে ভুলতে চাই। উনাকে যতবার মনে পড়ে ততবারই এক মরণব্যাধি যন্ত্রণায় বুকটা ছাড়খাড় হয়ে যায়। আমি এই ট্রমা থেকে বের হতে চাই। একটু কি করবেন সাহায্য আমায়?
রাতুলের মুখে হাসি ফুটলো আশ্বাস ভরা চোখে বলল-

-“ করবো সাহায্য বিনিময়ে কি আপনি আমাকে রাখবেন আপনার পাশে?
-“ খুব,ভীষণ ভাবে চেষ্টা করবো।
-“ আচ্ছা তাহলে এখন রুমে যান। কাঁদবেন না আর। আপনার ভেজা অশ্রু নয়ন জোড়া ভীষণ কষ্ট দেয় আমায়।
অধরা প্রতিত্তোরে কিছু বললো না। মিনিট কয়েক চুপ থেকে বসা থেকে উঠে রাতুল কে “ আসি” বলে চলে যায়।
রাতুল অধরার যাওয়ার পানে তাকিয়ে বলে-

-“ অনুমতি পেয়ে গেছি,সব রকম চেষ্টা করবো আপনাকে নিজের করে পাওয়ার। আল্লাহ বলেছেন মন থেকে কিছু চাইলে আর সেটা আমার জন্য কল্যাণকর হলে সেটা আমায় তিনি নিজ দায়িত্বে দিয়ে দিবে। আই হোপ আল্লাহ আমার ভাগ্যে আপনাকে রাখবে।
মধ্যে গভীররাত্রী চিত্রা বারবার শিউরে শিউরে উঠছে। তুষারের উন্মুক্ত শরীর খামচে ধরে বলে-

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৫

-“ আপনিতো খুবই বাজে।
তুষার আরো বাজে হতে হতে বলে-
-“সত্যিই তো! আমার মতো বাজে একটা ছেলেকে মিসেস খাঁন কি করে সামলাচ্ছে এতক্ষণ ধরে?”

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৭