আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ৩৮

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ৩৮
Raiha Zubair Ripte

হসপিটালের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে খাঁন পরিবার। চিত্রার মা কেঁদে কেঁদে আল্লাহ কে স্মরণ করছে। তৃষ্ণা তানিয়া বেগমের হাত শক্ত করে ধরে বসে আছে। তুষার কে এখনও ফোনে পাওয়া যায় নি। ফোন বেজে চলছে কিন্তু ফোন রিসিভ হচ্ছে না।

ডক্টর জানিয়েছে চিত্রার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। সার্জারি করতে হবে। প্রচুর ব্লাড লস হয়েছে। ইমিডিয়েটলি বি নেগেটিভের ব্লাড লাগবে। তাদের হসপিটালের ব্লাড ব্যাংকে এই গ্রুপের রক্ত এখন নেই। তানিয়া বেগম অধরা কে ফোন করছে। অধরার ব্লাড গ্রুপ বি নেগেটিভ। কিন্তু অধরাও ফোন ধরছে না। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তানিয়া বেগমের।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

এদিকে এত বড় দূর্ঘটনা ঘটে গেছে কিন্তু যাদের এখন বেশি দরকার তারাই নেই।
তামিম খাঁন না পেরে রাতুল কে ফোন করলো। রাতুলের ফোন বন্ধ বলছে। বিষয় টা মোটেও ভালো লাগলো না। তুষার রাতুলের সাথে লিমন কে এবার ফোন করলো। লিমন ফোন রিসিভ করতেই তামিম খাঁন বলল-

-“ তুষার রাতুল কোথায়?
লিমন হয়তো তাড়ায় আছে৷ কন্ঠ শুনে তেমনটাই মনে হলো। ভেঙে যাওয়া কন্ঠে তড়তড় করে বলল-
-“ তুষার ভাইয়া রাতুল ভাইয়ার কাছে গেছে। রাতুল ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে।
কথাটা তামিম খাঁনের কর্ণকুহর হতেই বেসামাল হয়ে পড়ে যেতে নিয়েও নিজেকে সামলে নিলেন। কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন-

-“ র..রাতুল এক্সিডেন্ট করেছে!কিভাবে?
সবাই চকতি তাকালো তামিম খাঁনের দিকে।
-“ তুষার ভাইয়ার যাওয়ার কথা ছিলো সিএমবি তুষার ভাইয়া মিটিং এর জন্য যেতে পারে নি। তাই রাতুল ভাইয়া গিয়েছিল। আর যাওয়ার পথেই গাড়ি ব্রেক ফেইল করে খাদে পড়ে গেছে।

-“ রাতুল ঠিক আছে তো?
-“ রাতুল ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ খুঁজছে।
-“ আমি আসছি এক্ষুনি।
তামিম খাঁন ফোন কেটে দিতেই তানিয়া বেগম ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে কাঁপা গলায় বলল- র.. রাতুলের কি হয়েছে?
-“ এক্সিডেন্ট করেছে।

দু কদম পিছিয়ে গেলো তানিয়া বেগম। তৃষ্ণা ধরে নিলো। তামিম খাঁন সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে যেতে নিলে সাহেল আহমেদ বলেন-“ আমিও যাই তোর সাথে?
তামিম খাঁন না করলেন। এই পরিস্থিতিতে হসপিটালে শক্ত পোক্ত কাউকে থাকা দরকার।

তুষার হন্যে হয়ে খাদের নিচের দিকটায় রাতুল কে খুঁজে চলছে। ঘন জঙ্গল। রাতুলের নাম ধরে চিৎকার করে ডাকছে তুষার। কিন্তু কোনো আওয়াজ ভেসে আসছে না। তুষার হাঁটু গেড়ে বসলো। আকাশের পানে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলো। বারবার আল্লাহ কে ডেকে বলতে লাগলো রাতুলের যেনো কিছু না হয়।

আকবর এসেছে ছেলের এক্সিডেন্টের কথা শুনে। যতই হোক ছেলে তো। ছেলের এমন মর্মান্তিক খবর শুনে কোনো বাবাই ঠিক থাকতে পারে না। তুষার কে দেখা মাত্রই তুষারের দিকে তেড়ে যায়। তুষারের কলার ধরে হুংকার দিয়ে বলে- আমার ছেলের যদি কিছু হয় আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো না তুষার।

অন্য সময় হলে তুষার রেগে যেত আকবরের এমন স্পর্ধা দেখে। কিন্তু এবার সে পানির মতই শীতল রইলো। পুলিশ এসে জানালো রাতুলের বডি পাওয়া যায় নি। এদিকে রাত ও হয়ে এসেছে।
তামিম খাঁন আসলেন। ছেলের বিধ্বস্ত রূপ দেখে নিজেও ভেঙে গেলেন ভেতরে। রাতুল ছেলেটাকে নিজের ছেলের মতোই দেখে এসেছে এতকাল। ছেলের পাশে এসে বললেন-

-“ পাওয়া গেলো রাতুল কে?
তুষার বোবার মতো দু দিকে মাথা নাড়ালো। পুলিশ অফিসার এগিয়ে এসে তুষার দের চলে যেত বলল। তারা খুঁজবে হন্যে হয়ে। এমপির আত্মীয় বলে কথা।
তামিম খাঁন তুষার কে সাইডে টেনে নিয়ে চিত্রার কথা বললেন। তুষার চিত্রার কথা শুনেই আতঙ্কিত হয়ে বলে-
-“ ও ঠিক আছে তো বাবা?

-“ অবস্থা ভালো না। একদিকে চিত্রা আরেক দিকে রাতুল। আল্লাহ কোন ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে আমাদের?
সাইড থেকে আকবরের কন্ঠ ভেসে আসলো। আকবর যাবে না সে পুলিশদের সাথে থেকেই ছেলেকে খুঁজবে। ফোনের লাইট জ্বালিয়ে খুঁজতে লাগলো রাতুল বলে। তুষার সেদিকে একবার তাকালো। তামিম খাঁন ছেলেকে ধরে হাঁটা ধরলেন।

খাদের শেষ প্রান্তে গাছের সাথে ঝুলে আছে রাতুল। চেষ্টা এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার। এই খাদ থেকে নিচে পড়ে গেলে নির্ঘাত মৃ’ত্যু হবে। এই উঁচু খাদের নিচে রয়েছে গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তা।
আকবর ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে খাদের শেষ প্রান্তে আসে। সামনের দিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। হাঁটতে হাঁটতে আকস্মিক সামনে কিছু পড়ার শব্দ শোনা যায়। আকবর থেমে যায়। ফোনের লাইট সামনে ধরে দেখে তার সামনে পিস্তল রাখা আছে। হঠাৎ এমন জিনিস এখানে দেখে ভ্রু কুঁচকালো।

এগিয়ে গিয়ে পিস্তল টা তুলে নিলো। পিস্তল টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে সেটা হাতে নিয়েই সামনে এগোলো আর রাতুল বলে চিৎকার করে উঠলো। রাতুলের গলায় জোর নেই। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। মৃত্যুর দুয়ারে দাড়িয়ে আছে। ভয়ে কন্ঠ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না।

আচমকা চোখের সামনে আলোর রশ্মি দেখতে পেয়ে বুকে এক ফোঁটা আশা জাগে বাঁচার। পরক্ষণেই আলো টি ক্রমশ সামনে এগিয়ে আসে। স্পষ্ট হয় আলোর পেছনে থাকা মুখশ্রী। রাতুল গাছের ডাল শক্ত করে ধরে বলে-
-“ আপনি?

আকবর ছেলেকে পেয়ে যেনো দেহে প্রাণ ফিরে পায়। পিস্তল টা হাতে নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে ছুট লাগায়। রাতুল ভয় পেয়ে যায়। গলায় খানিকটা জোর এনে কষ্ট করে শুধায়-
-“ আপনি মারতে এসেছেন আমায়?
আকবর থেমে যায়। -“ না না আমি তোকে মারতে আসি নি। বাঁচাতে এসেছি।
-“ পিস্তল হাতে করে এসেছেন বাঁচাতে!
আকবর পিস্তল টা সামনে তুলে ধরে। হেঁসে বলে-

-“ না রে পাগল এটা এখানে পেয়ছি। তুই থাক আমি আসছি। নড়বি না। আমি দড়ি নিয়ে আসছি।
কথাটা বলে আবার ছুট লাগায় পিস্তল টা মাটিতে রেখে। রাতুল ক্লান্ত হয়ে আসে। হাত দুটো অসার হয়ে আসে। চোখ দুটো থেকে বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে। বিধাতার কাছে খুব করে বলছে এ যাত্রায় বাঁচিয়ে দিতে। কথা গুলো মনে মনে আওড়িয়ে সামনে তাকায়।

মুহূর্তে পরিচিত এক মুখশ্রী দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠে। কিন্তু সেই হাসিটা ক্ষণস্থায়ী হলো না। সামনে থাকা ব্যাক্তি পিস্তল তাক করে রেখেছে তার দিকে। বিশ্বাসের পাহাড় ভেঙে গুড়িয়ে গেলো। মুখ তুলে কিছু বলার আগেই পরপর দুটো গুলি রাতুলের বুকের খাঁচা টাকে ভেদ করে বেরিয়ে যায়। হাত ফস্কে খাদে পড়ে যায় রাতুল। চিৎকার করার সময় টুকুও পেলো না।

আকবর তড়িঘড়ি করে গাড়ির কাছে এসে দড়ি নিয়ে ছুটে যায় ছেলের কাছে। খাদের কিনারায় আসতেই দেখে রাতুল নেই। সহসা বুক ধক করে উঠলো। খাদের কিনারা দিয়ে মাথা খানিক টা ঝুকালো। কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। রাতুল কি পড়ে গেছে তাহলে? মাটিতে ধপ করে বসে পড়লো আকবর। মাথা কাজ করছে না। এটা তো হবার ছিলো না। খেলা পাল্টে গেলো কি করে?

আজ জাহাঙ্গীর নগর ভর্তির এডমিশন পরীক্ষা চলছে। সেই উপলক্ষে ক্যাম্পাসের রাস্তার সাইড দিয়ে বিভিন্ন স্টলের দোকান বসেছে৷ সেখানে অধরাদের ক্লাসের কয়েকজন একটা স্টল দিয়েছে। নানি কে নিয়ে সেই স্টলেই এসেছিল অধরা। ওয়াশরুমে চাপ আসায় তাসলিমা খাঁন কে স্টলে বসিয়ে ওয়াশরুমে গিয়েছিল। হালকা পাতলা ঠান্ডা খেয়ে তারপর দাদি কে নিয়ে বের হলো ক্যাম্পাস থেকে। বাহিরে বের হয়ে অধরা ফোন চেক করতেই দেখে তানিয়া বেগমের ফোন কল। ফোন সাইলেন্ট থাকায় বুঝতে পারে নি। অধরা তাড়াতাড়ি কল ব্যাক করলো। ফোন কানে নিতেই জানতে পারলো চিত্রার খবর। ব্লাড লাগবে। অধরা তাসলিমা খাঁন কে নিয়ে তড়িঘড়ি করে গাড়িতে উঠলো। যতদ্রুত সম্ভব হসপিটালে যেতে হবে।

হসপিটালে এসে রিসেপশন থেকে সার্জারির রুম নম্বর জেনে ছুটে গেলো সেখানে। সবাই কেবিনের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। অধরা তানিয়া বেগমের কাছে ছুটে গিয়ে বলে-
-“ মামি তুমি বললে ব্লাড লাগবে। আমি এসেছি। ডক্টর কে ডাক দাও।

সাহেল আহমেদ ডক্টর কে ডেকে আনে। ডক্টর আলাদা কেবিনে নিয়ে গিয়ে অধরার থেকে ব্লাড কালেক্ট করে।
তুষার এলোমেলো পায়ে হন্তদন্ত হয়ে হসপিটালে ঢুকে। কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে অস্থির কন্ঠে বলে-
-“ চিত্রা কেমন আছে মা? আর এসব হলো কি করে?

তুষার কে দেখে যেনো মনে বল পেলো তানিয়া। তখনকার সব ঘটনা খুলে বলল তুষার কে। তুষার নিশ্চুপ হয়ে গেলো। মনের ভেতর বইছে ঝড়। একদিকে স্ত্রী সন্তান আর আরেক দিকে প্রাণপ্রিয় বন্ধু। ধপ করে বসে পড়লো তুষার। কিছুক্ষণ পর পর ওটি থেকে বের হচ্ছে ডক্টর। তুষার উঠে দাঁড়ালো এগিয়ে গিয়ে বলল-
-“ ডক্টর আমার স্ত্রী সন্তান ঠিক আছে তো?

-“ আপাতত কিছু বলতে পারছি না। আল্লাহ কে ডাকুন।
কথাটা বলে ওটির ভেতরে ঢুকে পড়ে ডক্টর৷ ওটির বাহিরে পায়চারি করে তুষার। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর ওটির বাতি নিভে। ধড়াস ধড়াস করে লাফিয়ে উঠলো হৃদপিণ্ডটা।
ডক্টর এগিয়ে আসলো। গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠল-

-“ বেবিটার অবস্থা ভালো না। কাঁদছে না। কিন্তু শ্বাস কার্যক্রম চলছে।
তুষার অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলো-
-“ আমার স্ত্রী কেমন আছে?
-“ পাঁচ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারবো।
-“ মানে?

-“ অনেক ব্লিডিং হয়েছে। তার শরীর ভীষণ দুর্বল। এখন কতোটুকু সার্ভাইব করতে পারবে সেটা বলা মুশকিল।
-“ আর বাচ্চা টা? কোলে নিতে পারবো আমরা?
তানিয়া বেগম কথাটা বলে উঠলেন। ডক্টর অভয় দিয়ে বললেন- পরিষ্কার করিয়ে দেওয়া হবে।
চলে গেলো ডক্টর। কিছুক্ষণ পর সাদা কপাড়ে মুড়িয়ে এক নবজাতক শিশু কে নিয়ে আসা হলো। তানিয়া বেগম এগিয়ে গিয়ে কোলে তুলে নিলেন। পিটপিট করে তাকাচ্ছে বাচ্চাটা। এই টুকু বাচ্চার তো কাঁদার কথা। কিন্তু বাচ্চাটা কাঁদছে না।

-“ তুষার তোর ছেলে।
তুষার তাকালো। বিরবির করে বলল-
-“ আমাদের ছেলে। কোলে নিলো তুষার। কেবিন থেকে চিত্রা কে বের করে অন্য কেবিনে শিফট করা হলো। তুষার বাচ্চা কে কোলে নিয়েই চিত্রা কে রাখা কেবিনে ঢুকে পড়লো। চিত্রা চোখ বন্ধ করে রেখেছে। হাতে স্যালাইন। মুখে অক্সিজেন মাস্ক। তুষার পাশে টুল টেনে বসলো।

-“ বাবু কে দেখবে না চিত্রা? তাড়াতাড়ি চোখ মেলে তাকাও। বাবুর তো তোমাকেই প্রয়োজন বেশি। উঠো তাড়াতাড়ি লক্ষীটি।
অধরা কেবিন থেকে বের হলো। শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে ব্লাড দিয়ে। তৃষ্ণার কাছে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ চিত্রা আর বাবু সুস্থ আছে?

তৃষ্ণা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়। অধরার মুখে হাসি ফুটে উঠে। ফোন টা ব্যাগ থেকে বের করে বলে-
-“ রাতুল কে ফোন দেই। আসার পথে মিষ্টি নিয়ে আসবে।
কথাটা বলে ফোন দিতে থাকে। আশ্চর্য রাতুলের ফোন বন্ধ বলছে। অধরা বিরক্ত হয়। -“ কাজের সময় পাওয়া যায় না। ফোন কেনো সুইচ অফ বলছে?

তানিয়া বেগম তৃষ্ণা কে বলল অধরাকে নিয়ে বাসায় চলে যেতে। তৃষ্ণা অধরা কে নিয়ে বাসায় চলে গেলো। রাতটা চিত্রা আর বাচ্চার কাছে রইলো চয়নিকা বেগম সাহেল আহমেদ আর তুষার।
বাসার বসার ঘরে বসে তৃষ্ণা আর তানিয়া বেগম একে ওপরের দিকে তাকায়৷ সত্যি টা কি করে বলবে এই মেয়েকে সেই সাহস টা পাচ্ছে না। তানিয়া বেগম অধরাকে ধরে পাশে বসিয়ে বলে-

-“ কথাটা কি ভাবে বলবো বুঝতে পারছি না।
-“ কি কথা মামি?
তানিয়া বেগমের কন্ঠ কেঁপে উঠে। তৃষ্ণা এগিয়ে এসে বলে-
-“ আপু।
-“ হু।
-“ রাতুল ভাইয়া..
-“ হুমম রাতুল কি?
-“ রাতুল ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে।

কথাটা বলে শ্বাস ফেলে তৃষ্ণা। অধরা বসা থেকে তড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়ালো।
অধরা হাসার চেষ্টা করে বলল-
-“ মজা করছিস তাই না?
-“ না। সত্যি রাতুল ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে। বডি এখনও পাওয়া যায় নি। সে জন্য তোমার ফোন তুলছে না।
অধরা এর প্রতিত্তোরে কি রিয়াক্ট দিবে ভুলে গেছে। এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলো তৃষ্ণার দিকে। আচমকা তানিয়া বেগমের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল-

-“ সত্যি মাি?
তানিয়া বেগম মাথা ঝাকালো। মুহূর্তে ঢলে পড়ে গেলো অধরা। এমনি তে শরীর দূর্বল ব্লাড দেওয়ায় তার উপর এমন নিউজ, শরীর সইতে পারে নি। তানিয়া বেগম তড়িঘড়ি করে অধরা কে ধরলো। তৃষ্ণা কে তাড়াতাড়ি পানি আনতে বলে। তৃষ্ণা পানি আনে। অধরার চোখে মুখে পানি দেয় কিন্তু অধরা উঠে না। আর তখনই দরজায় কলিং বেল বাজে। তৃষ্ণা গিয়ে দরজা খুলে। রাফি হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অথচ তৃষ্ণার মুখে হাসি নেই। তৃষ্ণা কে খুশি হতে না দেখে রাফি ভ্রু কুঁচকায়।

-“ খুশি হও নি?
তৃষ্ণা সরে দাঁড়ালো দরজা থেকে। রাফির চোখ গেলো ফ্লোরে পড়ে থাকা অধরার দিকে। চোখ মুখে বিস্ময় নিয়ে বলল-
-“ অধরার কি হয়েছে?
তৃষ্ণা ডুকরে কেঁদে উঠলো।

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ৩৭

-“ আপনি আসতে এতো দেরি করলেন কেনো? চিত্রা হসপিটালে৷ রাতুল ভাইয়া নিখোঁজ ।
রাফি ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে-
-“ মানে?
তৃষ্ণা সব খুলে বলে। রাফি তড়িৎ গতিতে একটা শক খায়। হাতের ল্যাগেজ টা ছেড়ে দিয়ে অধরার দিকে এগিয়ে যায়। অধরা কে পাঁজা কোলে তুলে রুমে নিয়ে গিয়ে শোয়ায়।

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ৩৯