আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ২১

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ২১
লেখনীতে সালমা চৌধুরী

তৎক্ষনাৎ মেঘের অভিব্যক্তি বদলে গেলো, চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কপাল কুঁচকালো। মনে মনে বললো,
“আমি ওনাকে নিয়ে ভাবছি কেনো? ? ওনাকে নিয়ে ভাবার তো মানুষ আছেই। তাছাড়া ওনি আমায় মে*রেছেন তার শা*স্তি আল্লাহ ওনাকে দিয়েছেন। আমার তো এতে খুশি হওয়ার কথা।”
কথাগুলো ভেবেই গাল ফুলালো তারপর মায়ের মলিন মুখের পানে একবার তাকিয়ে আবার মনে মনে বলা শুরু করলো,

“যেখানে আম্মু-আব্বু আর ভাইয়া কোনোদিন আমার গা*য়ে হা*ত তু*লে নি, সেখানে ওনি আমার গা*য়ে হা*ত তুললেন কোন অধিকারে? তাও আবার আরেকজনের জন্য। ওনি আমাকে পছন্দ করলেও মেনে নিতাম, ওনি তো জান্নাত আপুকে ভালোবাসেন তাহলে আমার উপর অধিকার দেখাতে আসেন কেন? কারো জীবনে অবা*ঞ্ছিতের ন্যায় পড়ে থাকার চেয়ে, একাকী জীবন কাটানো অনেক ভালো। আমি আপনার জীবনে অবা*ঞ্ছিত হয়ে থাকতে চাই না।
আজ থেকে আমার মনে হি*টলারের কোনো অ*স্তিত্ব থাকবে না। একবার সুস্থ হয় শুধু, আমার জীবনের সকল সিদ্ধান্ত আমি নিবো৷ আমার ব্যাপারে কাউকে নাক গ*লাতে দিব না । ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

হালিমা খান মেয়ের কপালে হাত রেখে ব্যস্ত হলেন জলপট্টি দেয়ার জন্য । গতরাত থেকে নাওয়াখাওয়া এক করে মেয়ের যত্ন নিচ্ছেন। চোখ- মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। মেঘের মাথায় জলপট্টি দিতে দিতে মেঘের চুলে হাত দিলেন। দীর্ঘ চুলে জট লেগে অগোছালো হয়ে আছে।
হালিমা খান কোমল কন্ঠে মেয়েকে বললেন,
“তুই সুস্থ হলে, তোকে নিয়ে পার্লারে যাব।”
মেঘ ছোট করে শুধালো,

“কেন?”
হালিমা খান শ্বাস ছেড়ে,শীতল কন্ঠে বললেন,
“তোর চুল গুলো কাটাতে হবে। ”
মেঘ আঁতকে উঠে বললো,
“না….. চুল ছোট করবো না আমি।”
হালিমা খান মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ঠান্ডা স্বরে বুঝাচ্ছেন,

“তুই তো নিজের যত্নই নিতে পারিস না, চুলের যত্ন কিভাবে নিবি? তার থেকে ভালো এখন চুল গুলো কেটে দিলে, ভর্তি পরীক্ষা দিতে দিতে দেখবি বড় হয়ে যাচ্ছে! ”
মেঘ চুপচাপ মায়ের কথা শুনছে, কোনো প্রতিবাদ করলো না,চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। এখনও জ্বর ১০০° c তেই আছে। ঔষধ খাওয়ানো হচ্ছে, তারপরও কমছে না। প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলে না, সারাক্ষণ চোখ বন্ধ করেই শুয়ে থাকে আর না হয় ঘুমায়।

তানভির বিকেলে বের হয়েই এমপির সম্মেলনে গেলো। সেখানে পোগ্রাম শেষ করে, তারা কয়েকজন মিলে এলাকায় বেরিয়েছে ভোট চাওয়ার জন্য। এক গলিতে কয়েকটা বাসায় ভোট চাওয়ার পর আচমকা তানভিরের নজর পরে মেইনরোডে। সাথের কয়েকজনকে দায়িত্ব দিয়ে তানভির দৌড়ে বেড়িয়ে এসেছে গলি থেকে।
মেইন রোডে এসে গলা উঁচু করে ডাকলো,

“এই মেয়ে, দাঁড়াও । ”
বন্যা সহসা পিছনে ঘুরলো, তানভিরকে দেখে বিস্মিত হয়ে বললো,
“ভাইয়া আপনি?”
তানভির কয়েক কদম এদিয়ে বন্যার মুখোমুখি হয়ে গম্ভীর কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
“আমি তোমার কোন জন্মের ভাই?”
তানভিরের গোমড়ামুখো কথায় বন্যা কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেলো, উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললো,
“না মানে, আপনি মেঘের ভাইয়া তাই….”

তানভির এবার কিছুটা ক*ড়া স্বরে বললো,
“আমাকে ভাইয়া ডাকার অধিকার শুধু মেঘের। তোমার ইচ্ছে হলে তানভির ভাই বলতে পারো কিন্তু মায়ের পেটের ভাইয়ের মতো ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকবা না। ”
বন্যা আস্তেআস্তে বিড়বিড় করলো,
“মেঘের ভাইগুলো এমন কাটখোট্টা কেন? এতদিন শুধু মেঘের মুখেই শুনতাম এখন দেখি সত্যি সত্যি । ”
তানভির টিস্যু দিয়ে নাক মুখে, ছোট করে শুধালো,
“কোথায় যাওয়া হচ্ছিলো?”

বন্যা তটস্থ হয়ে বললো,
“ফুচকা খেতে। ”
বন্যা পুনরায় স্বাভাবিক কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
আপনি এখানে কেনো ভাইয়া……..
প্রশ্ন শেষ করার আগেই চোখ পরলো তানভিরের দিকে। তানভির তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। বন্যা ঢুক গিলে ছোট করে বললো,
“সরি, তানভির ভাই!”

তানভির মুচকি হেসে উত্তর দিলো,
“সামনেই নির্বাচন তাই ভোট চাইতে এসেছিলাম৷”
বন্যা নিরুদ্বেগ কন্ঠে বললো,
“ওওও”
তানভির কপাল কুঁচকে বললো,
“এভারে রিয়েক্ট করলা কেন? আমাদের এমপিকে কি পছন্দ না? ভোট দিবা না?”
বন্যা আতঙ্কিত হয়ে তাকালো তানভিরের দিকে,
ডানে-বামে মাথা নাড়িয়ে বললো,

“না না তেমন কোনো বিষয় না। তাছাড়া আমি তো ভোটার ই হয় নি৷ ”
তানভির বিরক্তি নিয়ে বললো,
“তাতে কি হয়েছে? তোমার আব্বু, আম্মু, বড় বোন তো আছে, তারা তো ভোটার। যেভাবে রিয়েকশন দিচ্ছো মনে হচ্ছে, গোষ্ঠীর কাউকে ভোট দিতে দিবে না। ”
বন্যা মুখ ফুলিয়ে শ্বাস ছেড়ে আস্তে করে বললো,
” আপনাদের এমপিকেই ভোট দিতে বললো। ”
তানভির মোলায়েম কন্ঠে বললো,

“ঠিক আছে। এখন বাসায় যাও। কিছুক্ষণের মধ্যেই তোমাদের বাসায় আসছি। সবাইকে হালকা নাস্তা দিও ”
বন্যা চোখ গোল গোল করে চাইলো। তারপর ছোট করে বললো,
“আমি ফুচকা খেতে যাচ্ছিলাম। ”
তানভির কন্ঠ ভারী করে বললো,
“একদিন ফুচকা না খেলে কি ম*রে যাবে?”
বন্যা নির্বাক চোখে চেয়ে রইলো।
তানভির গলা খাঁকারি দিয়ে পুনরায় বলে উঠলো,

” ভেবো না তোমায় জোর করছি। সত্যি বলতে সম্মেলন থেকে সরকারি এদিকে চলে আসছি, ওরা সকালের পর থেকে এখনও খায় নি কিছু। তোমাদের এদিকে নাস্তা খাওয়ার মতো কোনো দোকান, রেস্টুরেন্ট কিছুই নেই। কাজ না শেষ করে যাওয়াও সম্ভব না।আবার সন্ধ্যার আগে কাজ শেষ করতে হবে। তুমি বনুর বেস্টফ্রেন্ড সেই সুবাদে তোমাকে বলছি। আমাকে না খাওয়ালেও চলবে ওদের জন্য একটু চা বিস্কুট আর হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করে দিলে খুব ভালো হতো। ”

বন্যা স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
“জ্বি অবশ্যই । আমি বাসায় গিয়ে ব্যবস্থা করছি , আপনি সবাইকে নিয়ে বাসায় আসবেন প্লিজ। ”
বন্যা পুনরায় প্রশ্ন করলো,
“বাসা চিনেন? ”
তানভির উপর নিচ মাথা নাড়লো।
বন্যা আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বাসার দিকে হাঁটা দিলো।

বন্যাদের মধ্যবিত্ত পরিবার। বাবা সরকারি কর্মকর্তা । বন্যারা ২ বোন আর ১ ভাই। বন্যার বড় বোনের স্নাতক শেষ এখন চাকরির জন্য পড়াশোনা করছে আর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছে, বন্যা ছোট মেয়ে, তাছাড়া বন্যার একটা ছোট ভাই ও আছে এখন ক্লাস ৮ এ পড়ে নাম রিদ।
বন্যা বাসায় গিয়ে আম্মুকে আর বোনকে বলে রান্নার ব্যবস্থা করছে। কিচ্ছুক্ষণ সময়ের মধ্যেই নুডলস, পাকোড়া, ফিরনি সাথে চা বিস্কুট রেডি করে ফেলেছে।

কিছুক্ষণ পর হাজির হলো সকলে। এলাকার সববাড়িতে বলে শেষের দিকেই গিয়েছে বন্যাদের বাসায়। কলিং বেল চাপতেই কিছুক্ষণের মধ্যে বন্যা এসে দরজা খুলে দিলো। তানভির দুটা শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিলো বন্যার দিকে।
সবাইকে বসতে বলে বন্যা ভিতরে চলে গেছে। বন্যার আম্মু সকলকে নাস্তা দিতে ব্যস্ত৷ বন্যার বোন কাজ শেষ করে আগেই নিজের রুমে চলে গেছেন।
একটা শপিং ব্যাগ খুলতেই চোখে পরলো পার্সেল করা ফুচকা। বন্যা আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে আছে আর বিড়বিড় করে বলছে,

“তানভির ভাই আমার জন্য ফুচকা এনেছেন? ওনি কবে থেকে এত ভালো মানুষ হলেন?”
তারপর দ্বিতীয় শপিং খুলে দেখলো এতে আপেল,মাল্টা আরও কি কি ফল।
বন্যাদের বাসায় টুকটাক নাস্তা করে বেরিয়ে পরছে সকলে । বন্যা রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে মায়ের সাথে মেইনগেইট পর্যন্ত এসে দাঁড়িয়েছে।
তানভির হাসিমুখে বন্যার মায়ের বিদায় নিলো। তারপর বন্যার দিকে চেয়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
“তোমার বান্ধবী অসুস্থ , খোঁজ নিও ওর। আসছি ”
তারপর চুপচাপ বেড়িয়ে চলে গেলো তানভির।

তানভির যাওয়ার পরপরই বন্যা রুমে এসে মেঘকে কল দিলো। টানা দু’বার কল বেজে শেষ হয়েছে, তৃতীয় বার রিসিভ হলো।
বন্যা চিন্তিত স্বরে শুধালো,
“তুই নাকি অসুস্থ ? কি হয়েছে তোর?”
মেঘ জ্বরের ঘোরে কথা বলতে পারছে না। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
“জ্বর! তোকে কে বললো?”
বন্যা স্বাভাবিক কন্ঠে জবাব দিলো,
“তানভির ভাই আসছিলো। ওনিই বলে গেলেন। ”

মেঘ কপাল কুঁচকে গলায় একটু জোর দিয়ে বললো,
“ভাইয়া তোদের ওখানে গেছিলো কেন?”
বন্যা বললো,
“আমাদের এলাকাতে ভোট চাইতে এসেছিলেন আরও কয়েকজন ছিল। আমাদের বাসায় হালকা নাস্তা করে গেছেন আর তোর কথা বলে গেছেন। ”
মেঘ ঠান্ডা কন্ঠে বললো,
“ওহ আচ্ছা ”

বন্যা পুনরায় শুধালো,
“জ্বর কি বেশি? আর জ্বর কিভাবে বাঁধালি? ”
মেঘ ভরাট শীতল কন্ঠে উত্তর দিলো,
” হুম অনেক জ্বর, এমনেই উঠছে।”
মেঘ মনে মনে ভাবছে,
“আবির ভাই থা*প্পড় মে*রেছে এটা কোনোভাবেই বন্যাকে বলা যাবে না। ”
বন্যা উত্তেজিত কন্ঠে বললো,
“বেবি, শুন না?”

মেঘ জ্বরের ঘোরেই বলছে,
“বল শুনছি”
বন্যা দ্বিগুণ উত্তেজিত কন্ঠে বললো,
“জানিস তোর ভাই তো আমার জন্য ফুচকা নিয়া আসছে আজ। ”
মেঘ এবার চোখ গোল গোল করে চাইলো। গলা ঝেড়ে বললো,
“কাহিনী কি পুরোটা বল। ”

বন্যা এবার স্বাভাবিক কন্ঠে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বললো। সবটা শুনার পর মেঘের সোজাসাপ্টা উত্তর ,
“শুন আমার ভাই যতই রা*গ দেখাক না কেনো, দিনশেষে আমার পছন্দের সব জিনিস ভাইয়াই এনে দেয়। আবির ভাইয়ের মতো এত নি*ষ্ঠুর না। তাই ভবিষ্যতে আমার ভাইয়াকে নিয়ে বা*জে কথা বলবি না ”
বন্যা উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললো,

“আবির ভাইয়ের সাথে আবার কিছু হয়েছে নাকি?”
মেঘ থা*প্পড়ের কথা এড়িয়ে গিয়ে বললো,
“ওনার ফোনে একটা মেয়ের ছবি দেখেছি তাছাড়া জান্নাত আপুর সাথেও গতকাল কত মধুর স্বরে কথা বলেছেন । আমার মনে হয় জান্নাত আপুকেই ওনি পছন্দ করেন। ”
বন্যা বিরক্তি নিয়ে বলা শুরু করলো,

“ফা*লতু ব্যা*টারে নিয়া একদম ভাববি না তুই। তোর জন্য কি*উট একটা বয়ফ্রেন্ড খোঁজে দিব। তুই কোনো চিন্তা করিস না। ঐ ব্যা*টার কথা তো ভুলেও ভাববি না। ঐ ব্যাটা কি হারাচ্ছে সেটা একদিন ঠিক বুঝবে। ”
মেঘের অক্ষিপট ভিজে আসছে, গলা খাঁকারি দিয়ে আস্তে করে বললো,
“সময় পেলে আমায় দেখতে আসিস, রাখছি এখন। ”

সঙ্গে সঙ্গে কল কেটে দিলো মেঘ। বন্যাও বুঝতে পারলো মেঘের মন খারাপ। তাই আর বিরক্ত করে নি। মেঘ নিরবে কিছুক্ষণ চোখের জল ফেলে বিড়বিড় করে বললো,
“আমাকেও অ*নুভূ*তিহীন আর নি*ষ্ঠুর হতে হবে যাতে দুনিয়ার কোনো ক*ষ্ট আমায় ছুঁতে না পারে। ”

তারপর রুমের ছাদের দিকে চেয়ে অন্যমনস্ক কন্ঠে গুনগুন করে গান গাইছে,
আবছায়া চলে যায় হিজলের দিন,
অ*ভিমান জমে জমে আমি ব্য*থাহীন।
আহারে জীবন…আহা জীবন
জলে ভাসা পদ্ম যেমন….

রাত ৯ টার দিকে আলী আহমদ খান আর মোজাম্মেল খান বাসায় ফিরেছেন। খাওয়াদাওয়া শেষ করে আবিরকে দেখতে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তানভির ও বাসায় ঢুকেছে। নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মেঘের রুমে গেলো। হালিমা খান মেঘের মাথায় জলপট্টি দিচ্ছেন, মেঘ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। মেঘের কাছে কিছুক্ষণ বসে আবিরের রুমে চলে গেলো তানভির। মালিহা খান ছেলের মাথার কাছে বসে বসে মাথায় হাত বুলাচ্ছেন , জ্বর কিছুটা কমেছে তবে হাতে হালকা ব্যথা সাথে ফুলাটাও আছে। আলী আহমদ খান আর মোজাম্মেল খান চেয়ারে বসে আছেন।। তানভির রুমে ঢুকে অন্যপাশে ঘুরে এসে আবিরের বিছানায় বসলো। কপালে হাত দিয়ে তাপমাত্রা বুঝার চেষ্টা করলো।

আলী আহমদ খান গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
“আবার কোথায় মা*রপিট করেছিলে ?”
আবির নিস্তব্ধ হয়ে ছাদের দিকে চেয়ে আছে।
আলী আহমদ খান পুনরায় শুধালেন,
“কি হলো? কাকে মে*রে নিজের হাতের এই অবস্থা করেছো?”
আবির আব্বুর দিকে চেয়ে নরম স্বরে বললো,

“আমি খুবই ভদ্র ছেলে, মা*রপিট একদমই পছন্দ করি না। আপনি শুধু শুধু টেনশন করেন আমাকে নিয়ে। ”
আবিরের ভাবের কথা শুনে তানভির বিস্ময় চোখে চেয়ে আছে আর মনে মনে বলছে,
“বাহ ভাইয়া বাহ! কি নাটক টায় না করছো? বলতেই হয়,
আপনি গুরু আমি শিষ্য বুদ্ধি আমার কম,
আপনি বুঝাইয়া দিলে বুঝিতে সক্ষম। ”
মোজাম্মেল খান কঠিন স্বরে বলে উঠলেন,
“মা*রপিট যদি না ই করবা তাহলে এই অবস্থা হলো কেন শরীরের?”
আবির আমতা আমতা করে বললো,

” রাস্তায় কিসের সাথে ধা*ক্কা লেগে কে*টে গেছিলো। ”
তানভির মিটিমিটি হাসছে আর মনে মনে বিড়বিড় করছে,
” আহারে বেচা*রা ভাই আমার।”
আলী আহমদ খান বিরক্তির স্বরে বললেন,
“আগেই বলেছিলাম বাইক না কিনতে। তিন তিনটা প্রাইভেট কার থাকার পরও তোমাদের হয় না। আজকে যদি গাড়িতে চলাচল করতে তাহলে বৃষ্টিতে ভিজতেও হতো না, হাতের এ অবস্থাও হতো না, আর এখন এভাবে জ্বরে পরে থাকতা না।”

শ্বাস ছেড়ে আবার বলা শুরু করলেন,
“ঠিকই তো তোমার বন্ধু সেদিন এসে তোমার কোম্পানির ওপেনিং ডে’র ইনভাইটেশন দিয়ে গেলো, তুমি আ*ধমরা হয়ে পরে থাকলে ওপেন কে করবে?”
আবির ছোট করে বললো,
“আমি ই করবো। ”
কপাল কুঁচকে আলী আহমদ খান হু*ঙ্কার দিয়ে বললেন,

“এসব ভ*ণ্ডামি বাদ দিয়ে কাজে মনোযোগ দাও। মা*রপিট করে জীবনে কিছুই করতে পারবা না, শুধু শ*ত্রুর সংখ্যা ই বাড়াবা। কোম্পানি শুরু করার অনুমতি চেয়েছো, অনুমতি দিয়েছি। এখন যদি কোম্পানির কাজের বাহিরে নিজের মর্জি মতো চলো তাহলে আমাকেও কঠোর হতে হবে। এই আমি বলে রাখলাম। ”
মালিহা খান কোমল কন্ঠে বললেন,
“ও তো বললো মা*রপিট করে নি!”
আলী আহমদ খান গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন,

“তোমার ছেলের বয়সটা আমিও পার করে এসেছি, কোন কারণে কি হতে পারে সে সম্পর্কে আমার সম্পূর্ণ ধারণা আছে। একটা সময় রা*জনীতি আমিও করেছি, রা*জনীতির জন্য কত কত জায়গায় আমিও মা*রপিট করেছি । কি লাভ হয়েছে তাতে? দিনশেষে সব ছেড়ে ব্যবসা শুরু করতে হয়েছে। তোমার ছেলেকে সময় থাকতে বুঝাও এসব ঝা*মেলাতে না ঝরিয়ে, কাজে মন দিতে। ”

আলী আহমদ খানের কথা শুনে আবির,তানভির আর মালিহা খান তিনজনই বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পর মালিহা খান নরম স্বরে বলে উঠলেন,
“আপনার র*ক্ত ই তো পেয়েছে। ”
বড় আম্মুর কথা শুনে তানভির ফিক করে হেসে উঠলো।
আলী আহমদ খান বিরক্ত হয়ে বললেন,
“তোমরা ছেলেকে লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলছো। তুলো, তুলো আমার সমস্যা নেই। একদিন শুধু আমার কানে ওর মা*রপিটের খবর আসুক……””
কথা না শেষ করেই রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেলেন আলী আহমদ খান। তানভির নিঃশব্দে হেসেই চলেছে।
মোজাম্মেল খান কঠিন স্বরে বলে উঠলেন,
“এত হেসে লাভ নেই, রা*জনীতি করার অনুমতি পেয়েছো বলে যা তা করে বেড়াবে তা কিন্তু সহ্য করবো না আমরা ৷
তোমাদের দু’ভাইকেই সাবধান করে দিচ্ছি, এই বাড়িতে থাকতে গেলে বাধ্য ছেলের মতোই থাকতে হবে। ”
মোজাম্মেল খানও বেড়িয়ে গেছেন।
মালিহা খান ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
“তুই এত বছর বাহিরে ছিলি, এখানে কার সাথে ঝা*মেলা করিস?”
আবির কপাল কুঁচকে তাকালো মায়ের দিকে, কন্ঠ ভারী করে বললো,
“আম্মু, তুমি অন্ততঃ এসব কথা বলো না। আমি মা*রপিট করি নি। এমনেই কে*টে গেছে। এত চি*ন্তা করো না তো। ”

আবির শ্বাস ছেড়ে আবার বললো,
বিশ্বাস না করলে তোমার সামনে তানভির কে জিজ্ঞেস করছি,
“কিরে তানভির, আমি কি মা*রপিট করি?”
আবিরের এরকম প্রশ্নে ভ্যাবাচেকা খেলো তানভির৷ কিছুটা নড়েচড়ে, হাসি চেপে বললো,
“না… একদম ই না। ভাইয়া র মতো নিষ্পা*প একটা শিশু কি মা*রপিট করতে পারে? বড় আম্মু তুমি শুধু শুধু চি*ন্তা করছো। ”

মালিহা খান কিছু বলার আগেই আবির বলে উঠলো,
“আম্মু তুমি এখন আব্বুর কাছে যাও৷ রাগে ফুঁস*তেছে মনে হয়। তুমি ওনাকে সামলাও গিয়ে। আমি ঠিক আছি। সমস্যা হলে কল দিব নে৷ ”
মালিহা খানও ছেলের কথামতো বেড়িয়ে মেঘকে দেখে নিচে চলে গেলেন।
আবির মোলায়েম কন্ঠে তানভিরকে শুধালো,

“মেঘ কেমন আছে?”
তানভির স্বাভাবিকভাবেই উত্তর দিলো,
“শরীরের তাপমাত্রা তো কমছে না। ঘুমাচ্ছে দেখে আসলাম। আম্মু বললো বিকেলে একটু নাকি কমেছিল জ্বর। ”
আবিরের চেহারায় চিন্তিত ভাব স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
তানভির কিছুটা তপ্ত স্বরে বললো,
“নিজেকে আ*হত করে কি লাভ হলো? দিব্যি দুজন দুই রুমে পরে অসুস্থতায় ভুগতেছো। তুমি সুস্থ থাকলে তো বনুর কেয়ার করতে পারতা। ”
আবির চুপচাপ শুয়ে আছে। কিছুই বলছে না। আবিরকে নিরব থাকতে দেখে তানভির ছোট করে শুধালো,

“ব্যথা কমেছে হাতের?”
আবির গম্ভীর কন্ঠে উত্তর দিলো,
“কিছুটা”
তানভির পুনরায় প্রশ্ন করলো,
“খেয়েছো ভাইয়া?”
আবির সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলো,
“হ্যাঁ”

আবির হঠাৎ ই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে তানভিরকে প্রশ্ন করলো,
“কোথায় যাবি বলছিলি? গেছিলি? কি খাওয়ালো?”
তানভির হাসিমুখে উত্তর দিলো,
“নাস্তা খাওয়াইছে। ”
আবির স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
“Go ahead ”
তানভির শান্ত স্বরে বললো,
“রেস্ট নিবা? লাইট অফ করে দিব?”

আবির উপরনিচ মাথা নাড়লো শুধু।
তানভির লাইট অফ করে বেরিয়ে গেছে। ঘন্টাখানেক পর আবির কোনোরকমে উঠে নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে ধীরগতিতে মেঘের রুমে এসেছে। হালিমা খান কোনো কারণে নিচে গেছেন। বারান্দার লাইটের আলোতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, মেঘ গভীর ঘুমে মগ্ন । ২৪ ঘন্টার জ্বরেই অষ্টাদশী মুখমণ্ডল মলিন হয়ে গেছে। মেঘের ঘুম বরাবরই খুব গভীর। বাড়িতে বড়সড় দূ*র্ঘটনা হলেও,ঘুমে থাকলে মেঘ কিছুই বুঝতে পারে না। এখন তো জ্বর, তারউপর ঔষধের প্রভাবে সারাদিন রাত শুধু ঘুমায়।

আবির বিছানার পাশে মেঘের কাছাকাছি এসে বসেছে। বাম হাত এগিয়ে দিলো অষ্টাদশীর কপাল বরাবর । জ্বরের তীব্রতা বুঝতে পেরে দীর্ঘশ্বাস ফেললো৷ অষ্টাদশীর চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বিড়বিড় করে বললো,
“আল্লাহ, ওর সব ব্যাধি আমায় দাও, তবুও ওকে তুমি সুস্থ করে তুলো প্লিজ। ওর এই অসুস্থতা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। ”

কিছুটা সময় নিস্তব্ধ হয়ে চেয়ে রইলো অষ্টাদশীর ক্লান্ত বদনে৷ মনে মনে কতশত ভাবনারা যেনো বাঁধ ভেঙে ছুটোছুটি করছে। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে শীতল কণ্ঠে বলা শুরু করলো,
“I am Sorry Megh, আর কোনোদিন তোর গায়ে হাত তুলবো না। প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দিস আমায়। গত ৯ বছরের মতো, এবার অন্তত দূরে সরিয়ে দিস না । রা*গ কর আর যাই কর কিন্তু কথা বলিস প্লিজ । তুই কথা না বললে এবার হইতো দেশ নয়, দু*নিয়া ছেড়েই চলে যাব। ”

কথাগুলো একবারে বলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ধীর পায়ে রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে চলে গেলো আবির৷
রুমে গিয়েই ফোন হাতে নিয়ে ডাক্তারের নাম্বারে কল করলো, ডাক্তারের সাথে কথা শেষ করে একটা ছোট পৃষ্ঠাতে দুটা ঔষধের নাম লিখতে লিখতে তানভিরকে কল করলো।
তানভির ১ মিনিটের মধ্যে রুমে হাজির হলো। আবির ওয়ালেট থেকে ১০০০ টাকার নোট বের করলো। ঔষধের নাম লেখা পৃষ্ঠা আর টাকা টা তানভিরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
“কষ্ট করে এই দুটা ঔষধ নিয়ে আসবি প্লিজ, আর বাকি টাকা দিয়ে ওর জন্য খাবার নিয়ে আসিস। ”

তানভির পৃষ্ঠা হাতে নিয়ে ঠান্ডা স্বরে বললো,
“টাকা লাগবে না আমার কাছে আছে।”
আবির শক্ত কন্ঠে বললো,
” নিতে বললাম নে। আর ঔষধ এনে একটা ওরে এখনই খাওয়াইয়া দিস। ”
তানভির “ঠিক আছে” বলে টাকা নিয়ে বেড়িয়ে পরেছে।

আবির বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসে ফোনের ওয়ালপেপারে দেয়া মেঘের ছবিটা মনোযোগ দিয়ে দেখছে। আবির দেশে ফেরার পর শুক্রবারে যখন সব আত্মীয়রা আবিরকে দেখতে আসছিলো সেই সময়ে, সোফায় আবির আর মেঘ মুখোমুখি বসেছিল তখনই আবির মেঘের ছবি তুলেছি। সেই ছবিটায় ইডিট করে ওয়ালপেপার দিয়ে রেখেছে।৷ ছবিটা দেখতে দেখতে হঠাৎ ই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো আবিরের তারপর গুনগুন করে গান গাইতে শুরু করলো,

তুই তো আমার সব রে পা*গল,
তুই তো আমার সব
তুই তো আমার বেঁচে থাকার
বড়ো অনুভব।

কেটে গেলো দু’দিন আবির কিছুটা সুস্থ হয়েছে, হাতের ব্যথা একেবারে সারে নি, ঔষধ চলছে। এরমধ্যে রাকিব,রাসেল সহ বাকি বন্ধুরাও দেখতে এসেছিল আবিরকে৷ এই দুদিনে মেঘের জ্বর কমেছে ঠিকই তবে শরীর অ*তিরিক্ত দূ*র্বল। হালিমা খান ঘন্টায় ঘন্টায় মেয়ের জন্য এটা সেটা রান্না করে নিয়ে আসে আর মেয়েকে জোর করে খাওয়ান। আবির রাতে- দিনে বেশ কয়েকবার করে মেঘকে এসে দেখে যায়। মেঘ সজাগ থাকলেও আবিরকে দেখলেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। আবির দু-একটা কথা বললেও মেঘ যেনো নিস্ত*ব্ধ হয়ে থাকে, সর্বোচ্চ মাথা নাড়ে শুধু ।

রবিবার রাতে আবির বিছানায় বসে বামহাতে ল্যাপটপে কাজ করছিলো। আগামীকাল ১ তারিখ। আবিরের অফিসের ওপেনিং ডে।
ইকবাল খান দরজায় এসে হালকা কাশি দিয়ে বললেন,
“ভিতরে আসবো?”
আবির ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে কাকামনির দিকে চেয়ে বললো,
“কাকামনি, ভেতরে আসো। ”
ইকবাল খান চেয়ারে বসতে বসতে শুধালেন,
“শরীরের কি অবস্থা এখন? কাল কি অফিস করতে পারবি?”
আবির ঠান্ডা কন্ঠে জবাব দিলো,

“পারবো। তাছাড়া রাকিব, রাসেল তো আছেই সমস্যা হবে না আশা করি। ”
ইকবাল খান একটু শক্ত কন্ঠে বললেন,
“কালকে কিন্তু বাইক নিয়ে বের হবি না। আমি তোকে নিয়ে যাব। ”
আবির মাথা নিচু করে বললো,
“আমি যেতে পারবো বাইকে। ”
ইকবাল খান এবার কিছুটা রে*গেই বললেন,
“তোকে তো তোর বাবা চাচার সাথে যেতে বলছি না। তুই আমার সাথে যাবি। আমি তো নিজের টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছি। এখানে ওনাদের অধিকার নেই। ”
আবির গম্ভীর কন্ঠে বললো,

“তারপরও”
ইকবাল খান রা*গান্বিত কন্ঠে বলে উঠলেন,
“তারপরও বলতে কিছু নেই। তুই আমার সাথে যাবি এটায় শেষ কথা। আর তুই যদি এই অবস্থায় বাইক নিয়ে বের হতে যাস তখন তো ভাইজান ডাইরেক্ট নি*ষেধ করবেন। তখন তো বাবার আদেশ মানতে ঠিকই বা*ধ্য হবি। এত ঝামেলার দরকার নেই তুই কাল আমার সাথে যাচ্ছিস এটায় শেষ কথা। ”
আবির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
” ঠিক আছে ।”

সোমবার সকাল সকাল আবির একেবারে পরিপাটি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে মেঘের রুমে ঢুকলো। ফিটফাট, সুদর্শন আবির ভাইকে দেখে মেঘের বুকের ভেতর ধুকপুক শুরু হয়ে যাচ্ছে। মেঘ বিপুল চোখে তাকিয়ে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছে,
“ওনাকে এত ভাল্লাগে কেন ? দেখলেই যেনো মনটা শান্তিতে ভরে যায়।”
আবির মেঘের কাছাকাছি এসে মোলায়েম কন্ঠে শুধালো,
“বসতে পারি?”

মেঘ নির্বাক তাকিয়ে রইলো, কয়েক মুহুর্ত পর মাথা হেলিয়ে বুঝালো, বসার জন্য।
আবির মেঘের কাছাকাছি বসে, ঠান্ডা হাতে মেঘের কপালে আলতো করে ছুঁতেই মেঘ কিছুটা কেঁ*পে উঠলো ।
আবির চিন্তিত স্বরে বললো,
“জ্বর তো নেই তারপরও চোখমুখ এত শুকনো লাগছে কেন? খাস না কিছু?”
মেঘ কিছুই বলছে না।
আবির পুনরায় বললো,

“বাহিরের কিছু খাবি? আসার সময় নিয়ে আসবো?”
মেঘ সঙ্গে সঙ্গে মাথা নেড়ে না করলো।
আবির উদগ্রীব হয়ে বললো,
“কি খাবি বল, রেস্টুরেন্টের খাবার? কেক, বিস্কিট, চানাচুর, চিপস, চকলেট নাকি আইসক্রিম? ”
মেঘ আস্তে করে বললো,
“কিছু খাবো না। ”
আবির ভ্রু নাচিয়ে শুধালো,
“চিপস ও খাবি না?”
মেঘ ছোট করে বললো,
“না।”
না বলেই সঙ্গে সঙ্গে ওষ্ঠ উল্টালো।

আবির তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
” আচ্ছা বাদ দে, আজ আমার নিজস্ব অফিসের প্রথম দিন। দোয়া করিস আমার জন্য । ”
মেঘ আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে,
“আবির ভাই আমার কাছে দোয়া চাইতে এসেছেন! এটা কি স্বপ্ন নাকি?”
মেঘ মন খারাপ সরিয়ে হাসিমুখে বললো,
“ফি আমানিল্লাহ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো। ”
মনে মনে বললো,

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ২০

“দোয়া করি আপনি আপনার ব্যবসা আর জান্নাত আপুকে নিয়ে সু*খে থাকুন।”
আবির স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
” ধন্যবাদ। তুই সাবধানে থাকিস আর খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করিস। আসছি”
আবির রুম থেকে বের হতে হতে মনে মনে বলছে,
“দোয়া কর যেনো খুব তাড়াতাড়ি সাকসেসফুল হতে পারি আর তোকে আমার করে নিতে পারি। ”

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ২২