পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৯

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৯
লেখিকা: সুরাইয়া ইসলাম ছোঁয়া

৩ মে, ২০১৯
স্কুলের চত্বরে ঘোরাঘুরি করছে ছোঁয়া। মাইশা সেই যে লামিয়ার সাথে কই গেলো আশার নাম নাই।
এতক্ষণ ছোঁয়া ক্লাসরুমে বসেছিলো মাইশা আর লামিয়াকে আসতে না দেখে বের হলো ছোঁয়া।
মেয়েটা পুরো স্কুল রাউন্ড দিয়ে ফেলেছে তবু ওদের দেখা নেই। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো।
বিরক্তিকর কন্ঠে বলল,
উফ কই গেল ওরা?

তখনই পিছন থেকে কেও একজন ডেকে উঠল ওকে।
ছোঁয়া!!
ছোঁয়া পিছনে ফিরে দেখল নীরব দাঁড়িয়ে।
নীরব ছোঁয়ার সাথে একই ক্লাসে পড়ে, ওদের নতুন ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে এখনো পর্যন্ত ততোটা ক্লোজ না তবে মোটামুটি ভালই।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেয়ে ফ্রেন্ড তো ৪-৫ জন হয়েছে আর ছেলে ৩ জন। নীরব, ফারহাদ, সিয়াম।
বাকিরা সবাই ওদের সাথে মোটামুটি ভালই ফ্রি একমাত্র ছোঁয়া ছাড়া। মেয়েটা একটু ইন্ট্রোভার্ট স্বভাবের, সহজেই সবার সাথে মিশতে পারে না তবে যাদের সাথে মিশে তাকে একদম নিজের ফ্যামিলির অংশ মনে করে সকল দুষ্টুমি বাচ্চামো সব তাদের সাথেই। ওকে বাইরে থেকে দেখে অনেক ম্যাচুয়ার লাগে বোঝাই যাবে না মেয়েটা যে কতটা বাচ্চামো স্বভাবের।
যেখানে ও মেয়েদের সাথে সহজে মিশতে পারে না সেখানে ছেলেদের সাথে এত সহজে কিভাবেই বা মিসবে, সবার দেখাদেখি টুকটাক কথা বলে কথা বলে।

নীরব বললো,
একা একা কি করছো এখানে তুমি?
আসলে মাইশা লামিয়াকে খুজছিলাম, সেই যে বেরোলো আর ক্লাসে আসার নাম নাই!
ওহ’ ওদের খুঁজছিলে, আমি আসার সময় দেখলাম লাইব্রেরীতে গেছে কি জানি কিনতেছে।
ও আচ্ছা, তাহলে তুমি ক্লাসরুমে যাও আমি বাহিরে যাচ্ছি ওদের কাছে।
ওকে।
ছোঁয়া লামিয়া আর মাইশার কাছে বাহিরে যাবে এমন সময় দেখলো গেইট দিয়ে ওরা দুইজন আসছে, ছোঁয়া দৌড়ে গেলো ওদের কাছে।

কিরে এতোক্ষন কই গেছিলি?
মাইশা বললো, আরে আর বলিস না কলম কিনতে গেছিলাম।
হুহ জানি, পুরো স্কুল খুঁজে ফেলছি তোদের তারপরে নীরবের সাথে দেখা হয়েছে, ও বলল তোরা নাকি বাহিরে লাইব্রেরীতে গেছিস।
হু।
লামিয়া বললো,
আচ্ছা চল এখন একটু পরেই স্যার চলে আসবে রুমে।
ওকে চল।

ওরা উপরে উঠে ক্লাসরুমে না গিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিনজন গল্প করতে লাগলো সাথে লাবনী আর তানিয়ারও বেরিয়ে এলো।
ওদের পাঁচজনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে নীরব, সিয়াম, ফারহাদ এলো।
সবাই মিলে একসাথে টুকিটাকি কথাবার্তা বলছে। ছোঁয়া পাশে ফিরে তাকালো রাদিফদের ক্লাসরুমের সামনে, অন্য কয়েকজন ছেলে মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাদিফ নেই হয়তো আসেনি। ক্লাসের ঘন্টা পড়ে যাওয়ায় সবাই রুমে গিয়ে যার যার জায়গায় বসে পড়লো।

টানা ৪ টা ক্লাস শেষে টিফিন আউয়ারের ঘন্টা পড়েছে।
টিফিন আওয়ার টিফিন কমপ্লিট করে ছোঁয়া, মাইশা, লামিয়া, লাবনী, তানিয়া মিলে বসে বসে গল্প করছিলো। ছেলেরা কেউ ক্লাসরুমে নেই, এই সময় থাকেও না। টিফিন আওয়ার কমপ্লিট হওয়ার কিছুক্ষণ আগে আসবে ওরা।
হঠাৎ ছোঁয়া বললো,
চল বাইরে থেকে ঘুরে আসি,এক জায়গায় বসে থাকতে আমার মোটেও ভালো লাগে না।

লামিয়া বললো,
এক জায়গায় বসে থাকতে পারিস না চুপচাপ এত ঘুরাঘুরি কেনো রে।
ছোঁয়া করুন কন্ঠে বললো, আমার বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে দম বন্ধ হয়ে আসে 🥹
তোরে দেখলে মনে হয় কি চুপচাপ একটা মেয়ে অথচ তুই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চঞ্চল।
হিহিহি।
আচ্ছা এবার চল বইন, আমার ভালো লাগতেছে না এভাবে বসে থাকতে।
বারান্দায় গিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই রাদিফদের ক্লাসরুমের দিকে চোখ পড়লো। আশ্চর্যজনকভাবে রাদিফ দাড়িয়ে আছে।
ছোঁয়া মনে মনে ভাবছে, তাহলে আমি সকালে দেখলাম না কেনো ওকে। হয়তো আসতে লেইট করছে বা ক্লাসরুমের ভেতর ছিলো, যাকেগে আসছে তো।

ওরা নিচে যাবে এমন সময় নীরব, ফারহাদ, সিয়াম সহ ক্লাসের আরো অনেক ছেলেই ক্লাসরুমের দিকে আসছে।
ছোয়া ভ্রু কুচকে তাকালো।
মনে মনে বললো,
আজকে এত তাড়াতাড়ি চলে এলো ওরা এমনিতে তো টিফিন আওয়ার শেষ হওয়ার 10-15 মিনিট আগে আসে।
ওদেরকে দেখে সিয়াম বললো,
কিরে কোথাও যাচ্ছিলি তোরা?
মাইশা বললো, না তেমন কোথাও না এমনিই বের হয়েছিলাম আর কি।

ওহ, আর কোথাও যাওয়া লাগবে না রুমে চল আমরা সবাই মিলে গানের কলি খেলি।
লামিয়া উৎফুল্ল হয়ে বললো,
সত্যি! আচ্ছা চল অনেক দিন খেলি না গানের কলি।
তারপর সবাই মিলে ক্লাস রুমে চলে গেলো।
ছেলেরা এক টিম মেয়েরা এক টিম। হাই বেঞ্চের ওপর উঠে বসেছে ওরা, মাঝখানে একটা টেবিল খালি রেখে মুখোমুখি হয়ে দুই টিম বসেছে। ছোঁয়ারা ৫ জন সহ ওদের আরো ক্লাসমেট আছে ওদের টিমে।

দুই টিম দুর্দান্ত খেলছে, যে অক্ষর দিয়েই আসছে না কেনো দুই টিমের থেকে কেউ না কেউ একজন গান গেয়ে ফেলছে।
ছোঁয়া নিজে থেকে একটা গানও গাইছে না, এতো মানুষের সামনে কি গান গাওয়া যায় ওর লজ্জা করছে। ওর টিম কোনো অক্ষরে আটকে গেলে ও কানে কানে গান বলে দেয় আর সেটা মাইশা গেয়ে ফেলে।
খেলতে খেলতে “ধ” অক্ষরে আটকে গেল মেয়েরা। ছেলেদের টিম কাউন্ট শুরু করে দিয়েছে কিন্তু ওরা কেউই গাইতে পারলো না। “ধ” তে যে গান জানতো সব গাওয়া শেষ। ছেলেদের টিম এক পয়েন্ট পেয়েছে, ওরা তো পারলে খুশিতে নাচে।

আরো কিছুক্ষণ খেলার পরে “প” অক্ষরে আটকে গেছে ছেলেরা। মেয়েরা তো সবাই হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে আর বলছে,
সামান্য “প” তে গান পারিস না তোরা হাহাহা!
তোমরা কত সব কিছু পাইরা উল্টাই দিছো।
হ্যাঁ তোদের চেয়ে ভালই পারি এখন বাদ দে কাউন্ট শুরু করি।
মেয়েদের কাউন্ট করা শেষ কিন্তু ওরা আর “প” তে গাইতে পারল না। পয়েন্ট সমান সমান।
খেলার মাঝেই টিফিন আওয়ার শেষের ঘন্টা দিয়ে দিলো।

লাবনি বললো,
উফ এখনই ঘন্টারটা দিতে হলো।
সিয়াম বললো,
আচ্ছা থাক সমস্যা নাই স্কুল খুললে তারপর আমরা আবার খেলবনি।
ওকে,, আজকে তোদের হারাতে পারলাম না তো কি হয়েছে আরেকদিন আসিস দেখবি কিভাবে হারাই দেই।
ইহ কি করবা জানা আছে।
হু তুই চুপ থাক দেইখা নিস কি করি।
সিয়াম কিছু বলবে তখনই মাইশা বলে উঠলো, হইছে ঝগড়া থামা পরেরটা পরে দেখা যাবে এখন যার যার জায়গায় গিয়ে বস স্যার আইসা এভাবে দেখলে সব কয়টারে পিটাবে।

তারপর সবাই উঠে যে যার জায়গায় গিয়ে বসলো।
সিয়াম হঠাৎ ছোঁয়ার সামনে গিয়ে ওকে বললো,
ছোঁয়া তোমার নাম্বারটা দেওয়া যাবে? না মানে আসলে আমরা তো ফ্রেন্ড মাইশা, লামিয়া, লাবনী, তানিয়া ওদের সবার নম্বরই আছে আছে শুধু তোমারটা নাই অনেক দিনের জন্য স্কুল বন্ধ তাই আর কি।
ছোঁয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, আচ্ছা তুমি গিয়ে বসো আমি নম্বর লিখে নিয়ে আসছি।
সিয়াম ওর কথা সুনে নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়লো।

ছোঁয়া খাতা কলম বের করে নিযের নাম্বারটা উঠালো, সিয়ামকে গিয়ে দিয়ে আসবে এমন সময় রুমের স্যার চলে আসলো। ছোঁয়া ভাবলো রেখে দেই ছুটির সময় দিয়ে দিবো।
রাদিফ সারাটা টিফিন আওয়ার ক্লাসরুমের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো, কিন্তু ছোঁয়ার দেখা নাই।
স্যার পড়া বুঝাচ্ছে ওর সেই দিকে কোন খেয়ালই নেই। ও ভাবছে,
সেই যে মেয়েটা গেলো ক্লাসরুমে আর বের হবার নাম নেই। সকালবেলা আমি আসলাম দেরিতে আর এখন মেয়েটা রুমে গিয়ে বসে ছিলো উফ ভালো লাগেনা।

পাশ থেকে সাব্বির ওকে খোঁচা মেরে বললো, কিরে, তোর ধ্যান খেয়াল কোথায় স্যার পড়া বুঝাচ্ছে আর তুই কি ভাবছিস?
কিছু না শুনছি তো, তুই চুপ কর।
সাব্বির কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইল ওর দিকে।

তিনটা ক্লাস শেষে মাত্রই ছুটির ঘন্টা দিয়েছে। ঘন্টা দেওয়ার সাথে সাথেই সব ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসরুম থেকে বের হতে লাগলো। ছোঁয়া মাইশা লামিয়া তানিয়া লাবনি ওরা এক সাথে বের হলো। সিঁড়ির কাছে আসতেই রাদিফকে দেখতে পেলো ছোঁয়া। এক পলক তাকয়ে মাথা নিচু করে নিলো। রাদিফও ওকে এক পলক দেখে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো যাতে কেউ বুঝতে না পারে। কিন্তু ছোঁয়া তো বুঝে। একটা ছেলে একটা মেয়ের দিকে দশ মাইল দূর থেকে তাকলেও মেয়েটা বুঝতে পারে। কোন ছেলেটা তার দিকে কি নজরে তাকায় মেয়েরা সেটাও খুব সহজেই ধরে ফেলে। রাদিফ হয়তো ওর দিকে খুব কম তাকায় তবে ওর অল্প অল্প তাকানোর মানে ছোঁয়া বেশ ভালো করেই বুঝে।
এসব ভাবতে ভাবতে ওরা সবাই নিচে নেমে গেলো।

রাদিফের প্রাইভেট আছে ছুটির পড় তাই ও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারলো না। এক পলক ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে গেলো স্কুল থেকে।
নীরব এসে ছোঁয়াদেরকে বললো,
নতুন যে টিচার এসেছে তার কাছে আজকে প্রাইভেটে যাবো তোমরা তো বলছিলে যাবা।
ছোঁয়া বললো,
হ্যাঁ, ইংলিশে আমি বেশ দুর্বল আরেকটা প্রাইভেট লাগবে তবে ছুটির পর না। ছুটির পর আমার বাসায় গিয়ে প্রাইভেট আছে।

আরে স্যার বলেছে বন্ধের পরে থেকে আমাদের টাইম সকালে দেবে আজকে তো দেখবো গিয়ে।
কিন্তু বাসায় তো বলিনি।
আরে সমস্যা হবে না চলো।
ছোঁয়া ওদের সাথে গেলো সাথে অবশ্য মাইশা আছে, মাইশা না থাকলে ও যেতো না।
১ ঘন্টা প্রাইভেট শেষে বের হলো ওরা। ছোঁয়া সিয়ামের দিকে একটা কাগজের টুকরো বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
তুমি না নাম্বার চাইছিলা এই নাও। তারপরে ওদের তিনজনকে উদ্দেশ্য করে বললো, নাম্বার সেভ করে আমাকে নক দিও তোমরা হোয়াটসাপ আর ইমো আছে।

ওরা মাথা নাড়ালো। ওদের সবার থেকে বিদায় নিয়ে ছোঁয়া আর মাইশা বাসার উদ্দেশ্যে চলে গেলো।
বাসায় যেতেই আনিতা বেগম ছোঁয়া কে বললেন,
তোর আজকে এত দেরি হলো কেনো?
আম্মু তোমাকে বলছিলাম না নতুন একটা ইংলিশ টিচার আসছে আজকে ওনার কাছে ছুটির পরে এক ঘন্টা প্রাইভেট পড়ে আসলাম রোঝার বন্ধের পরে থেকে আমাদের সকালে টাইম দিবে।

আচ্ছা বাসায় বলে তো যাবি নাকি আমার টেনশন হয় না।
আরে আম্মু আমি তো জানতাম না ওরা জোর করলো তাই গিয়েছি।
আচ্ছা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে তামিম এক্ষুনি পড়াতে চলে আসবে। আনিতা বেগম কথাটা বলতে না বলতেই কলিং বেল বেজে উঠলো, উনি দরজা খুলে দেখলেন তামিম দাঁড়িয়ে। ছোঁয়া ততক্ষণে রুমে চলে গেছে ফ্রেশ হতে।
অনিতা বেগম তামিমকে বললেন, তুমি বসো ছোঁয়া ফ্রেশ হয়ে বেরোলে তারপরও ওর রুমে যেও।

তামিম কিছু বললো নাহ মাথা নারলো। আনিতা বেগম ছোঁয়ার রুমে গিয়ে ওকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তাড়াতাড়ি বের হ আমি চলে এসেছে। ৫ মিনিটের মধ্যে ছোঁয়া ফ্রেশ হয়ে বেরোলো।
আনিতা বেগম তামিমকে রুমে আসতে বললেন তারপরে উনি সাফিকে কোলে নিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন।

ছোঁয়া টেবিলে বসতেই তামিমকে প্রশ্ন করল, আজকে স্কুল থেকে আসতে এত দেরি কেনো হয়েছে?
আসলে নতুন একটা স্যার এসেছে উনার কাছে প্রাইভেট পড়েছিলাম এক ঘন্টা।
তা ছুটির পরে দুইটা প্রাইভেট সামাল দিতে পারবে, এখন না হয় দিন বড় কিন্তু যখন দিন ছোট হবে তখন কি করবা।
আরে ওনার কাছে তো আজ এমনি পড়লাম। রোজার পরে থেকে প্রাইভেট পড়বো তখন সকালে টাইম দিবে আমাদের।
আচ্ছা, ম্যাথ বই দাও।

স্যার একটা কথা মনে আছে আপনার,
কি!
ওই যে বলছিলাম আমার এক বান্ধবী পরবে আমার সাথে।
হু তো কি হইছে?
আসলে স্যার ও রোজার পরে থেকে পড়বে আমরা একসাথে পরব আপনার কাছে ও আমাদের বাসায় আসবে।
তামিম বিরক্ত হলো, ও ছোঁয়াকে একা পড়ায় ওকে মন ভরে দেখে এখন নাকি আবার ওর সাথে আরেকজন পড়াতে। ও বিরক্তি নিয়ে বললো,
তোমার আম্মুরে বলো যাও।

ছোঁয়া যেন তামিমের কথায় খুশি হলো, ও খুশি খুশি ভাবে বললো আম্মুরে তো বলছি আম্মু বলছে আসতে।
তামিমের বিরক্তির মাত্রা দ্বিগুণ বেড়ে গেলো।
ও কিছু না বলে নিজেই বই টেনে নিলো। ছোৃয়া মুখটা ভোতা করে তাকিয়ে রইলো তামিমের দিকে।
মাগরিবের আজানের একটু আগে আগে তামিম ছোঁয়াকে ছুটি দিয়েছে। বই খাতা গুছিয়ে ও বারান্দায় এসে বসে আছে।
সূর্যাস্ত দেখছে আর ভাবছে।

আচ্ছা রাদিফ কি আমাকে পছন্দ করে? কি জানি হয়তো বা আচ্ছা ও যদি আমাকে কখনো প্রপোজ করে তাহলে আমি কি করবো আমিতো অনেক ছোট তাছাড়া আমি যদি বড় হতাম তাহলেও তো এইসবে যেতাম আমি তো গুড গার্ল।
ধুর এত কথা ভেবে নিজের মাথা নষ্ট করে লাভ আছে আমি গুড গার্ল গুড গার্ল হয়েই থাকবো। ওকে তো দূর থেকেই ভালো লাগে আমার সেভাবেই ভালো লাগুক।
ছোঁয়া একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার সূর্যাস্ত দেখায় মনোযোগ দিলো।

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৮

আসলে এই বয়সের বাচ্চারা নিজেদের অনেক বড় মনে করে। ভাবি ওদের সবকিছু বোঝার করার বয়স হয়ে গেছে, নিজের ভালো মন্দ নিজেরাই বুঝতে পারবে এমনটা মনে করে। আবেগটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে নেয়, ভালো লাগাকে নিয়ে কত কিছু ভেবে ফেলে। সেটাই হচ্ছে এখন ছোঁয়ার সাথে।

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ২০