পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৮

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৮
লেখিকা: সুরাইয়া ইসলাম ছোঁয়া

গোধূলি বিকেল…
এমন সুন্দর একটি বিকেল কে না চায়। তবে এই সুন্দর বিকেলও অনেকের কাজের ব্যস্ততার শেষ নেই। এইতো ছোঁয়া ব্যালকনিতে বসে বসে তাদের ছোট্ট বাগান পেরিয়ে গেটের বাইরে মেইন রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ব্যস্ত মানুষজন দেখছে। ওইদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বাগানে ফুল গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে প্রকৃতি বিলাস করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

অন্য সময় হলে পুরো বাসা এখন টই টই করে বেড়াতো তবে এখন মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছে তাই চুপচাপ ব্যালকনিতে বসে আছে সে। স্কুল থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দেয়ে বই নিয়ে পড়তে বসে সেভাবে ঘুমিয়ে পড়েছিলো ও। তা ছাড়া একটু পরেই তামিম আসবে পড়াতে আর এসে যদি ওকে এভাবে টই টই করে ঘুরতে দেখে তবে কথা শোনাতে ছাড়বেনা, কারন কাল থেকে পরীক্ষা ওর তাই।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আনতা বেগম ছোঁয়ার রুমে এসে দেখে ও রুমে নেই, তারপর বেলকনিতে গিয়ে দেখে চুপচাপ বসে বসে ঝিমুচ্ছে।
আনিতা বেগম একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বল্লেন,
কিরে তুই এখানে বসে বসে ঝিমুচ্ছিস ওই দিকে তামিম এসেছে পড়াতে, ছেলেটা পড়াতে এসে বসে আছে আর তুই কিনা বসে বসে ঝিমাচ্ছিস যা পড়তে যা তাড়াতাড়ি।
মায়ের আওয়াজ পেয়ে ছোঁয়ার ঘুম ঘুম ভাবটা উবে গেলো।
সে আলসেমি নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

যাচ্ছি আম্মু।
তারপরে হাই তুলতে তুলতে বই খাতা নিয়ে ড্রয়িং রুমে গেলো পড়তে।
পেছন থেকে আনিতা বেগম বলে উঠলেন,
এই যাচ্ছিস ভালো কথা চোখে মুখে পানি দিয়ে যা তুই কি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়বি নাকি।
কে শুনে কার কথা ও তো বই খাতা নিয়ে চলে গেছে, আর আনিতা বেগম কপাল চাঁপড়ে বললেন, উফ এই মেয়েকে নিয়ে আমি আর পাড়ি না।

ড্রয়িং রুমে গিয়ে বই খাতা টেবিলের উপর রেখে তামিমের বরাবর সামনের সোফাটায় ধপাস করে বসে পড়ল ছোঁয়া।
তামিম ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ভালো করে ওর দিকে তাকাতেই তামিমের যেনো হার্টবিট মিস হয়ে গেলো।
উফ মেয়েটা এমন কেনো, ও কি বোঝেনা ওকে দেখলে আমার ভেতর কেমন লাগে। তার উপর আবার ওর এই সদ্য ঘুম থেকে ওঠা মায়াবী মুখ খানা দেখে আমিতো ভেতরে ভেতরে মরেই যাচ্ছি, তবুও কেনো এতো জালায় আমায় ও মেয়েটা কি একটুও বোঝেনা আমার অনুভূতি! এভাবে আমার সামনে আসার কি খুব দরকার ছিলো,,

তামিমের ভাবনার মাঝে ছোঁয়া ঘুম ঘুম কণ্ঠে বললো,
ভাইয়া কোন টপিক পড়াবেন আগে?
ইস মেয়েটার ঘুম ঘুম কন্ঠটা দারুন,,
পরমুহূর্তেই চোয়াল শক্ত করে নিলো তামিম। মুখটা কঠিন করে নিয়ে বললো,
তোমায় না বলছি ভাইয়া ডাকবা না স্যার বলবা।

ছোঁয়া ভ্রু জোড়া কুচকে নিলো, তারপরে বললো,
ভাইয়া ডাকলে সমস্যা কোথায় আপনাকে তো সব সময় ভাইয়াই ডেকে এসেছি।
এতো কথা বলো কেনো, আর ঘুম থেকে উঠেই পড়তে চলে এসেছো। এভাবে পড়লে মাথায় ঢুকবে পড়া যাও ফ্রেশ হয়ে এসো তাড়াতাড়ি।
ছোঁয়া কথা না বাড়িয়ে বিড়বিড় করতে করতে বিরক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।

মাঠের কোনায় বসে আছে রাদিফ। সাথে ওর এলাকার কিছু বন্ধুরাও রয়েছে। যদিও এইটা স্কুলের মাঠ কিন্তু বিকেলে এলাকার ছেলেরা এখানে খেলে।
মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছে ওরা বসে বসে স্প্রিট খাচ্ছে আর খেলা দেখছে।
বিকেলের এই সময়টা প্রতিদিনই রাদিফ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয় মাঝেমধ্যে ফুটবল খেলে তারপরে সন্ধ্যার আযানের মধ্যেই বাসায় গিয়ে পড়তে বসে পড়ে।

রাদিফ কিছু একটা ভেবে ওর বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বললো,
বন্ধু বাসায় যেতে হবে রে, কালকে থেকে পরীক্ষা আর আজ যদি সারা বিকেলে বসে বসে আড্ডা দেই তো বাসায় গেলে মায়ের বকা একটাও মাটিতে পড়বে না। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই বাসায় যেতে হবে আজকে।
সন্ধ্যা হতে এখনো অনেক সময় বাকি আছে আরো কিছুক্ষণ পরে যাস আর তুমি চান্দু কি পড়াটা পইড়া উল্টায়ে দিবা আমার জানা আছে হেহ।

তুমি তো পাকানা সবই জানবা, এখন চুপ যা তুই বাসায় যাবো কালকে দেখা হবে থাক বাই।
এই বলেই রাদিফ ওদের কাওকে কিছু বলতে না দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে চলে গেলো।
রাত ১০ টা।
বই নিয়ে এক নাগারে পড়ছে ছোঁয়া। এর মধ্যে আনিতা বেগম দুইবার খেতে ডেকে গিয়েছেন ছোঁয়া যেন শুনেও শুনেনি। খাওয়ার প্রতি ওর তীব্র অনিহা। আনিতা বেগম ওকে ধরে ধরে তিন বেলা নিজের হাতে করে খাইয়ে দেয় তবেই ও খায়।
খাবার টেবিলে সাহেদ চৌধুরী বসে আছেন। সুফি আর শাফি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আনিতা বেগম সাহেদ চৌধুরীকে খাবার বেড়ে দিচ্ছেন।

সাহেদ চৌধুরী বললেন,
ছোঁয়া কই ওকে ডাকো।
আপনার মেয়ে কি আর এমনি এমনি আসবে ওনাকে তো এখন আমার হাতে করে ধরে নিয়ে খাইয়ে দিতে হবে তবেই সে খাবে, আহ্লাদ দিয়ে দিয়ে তো মেয়েটাকে মাথায় উঠাইছেন।
আহা রাগ করো কেনো বাচ্চা মানুষ ও।
হ্যাঁ হইছে আর বলতে হবে না। আমি যাই ওকে খাইয়ে দিয়ে আসি কিছু লাগলে আমাকে ডাক দিয়েন।
আচ্ছা যাও তুমি।

মাত্রই ডিনার শেষ করে এসে বই নিয়ে বসলো রাদিফ।
পড়তে পড়তেই হঠাৎ ছোঁয়ার মায়াবী মুখটা চোখে ভেসে উঠলো।
কি হলো এটা,, বাহ মেয়েটা এখন কল্পনাতেও আসছে ভালোই।
তুমি শুধু শুধু আমার কল্পনায় কেনো আসছো তোমাকে তো মেরে আলু ভর্তা বানানো দরকার। আমি বেচারা ছোট মানুষ, থাক সমস্যা নেই একটু বড় হয়ে নেই তারপর তোমার সাথেই প্রেম করবোনি বেশি দিন নেই কলেজে উঠি।

এসব ভেবে ভেবে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো রাদিফ।
পাশের রুম থেকে রাদিফের আম্মু চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
রাদিফ কালকে তোর পরীক্ষা আর তুই পড়ালেখা বাদ দিয়ে এখন ফোন টিপছিস, আমি আসবো নাকি তুই ভালোয় ভালোয় পড়বি।
আরেহ আম্মু পড়ছি তো।
উফ এতো পড়ি তাও এমন করে।
না রাদিফ উল্টাপাল্টা ভাবনা বাদ দিয়ে পড়তে বস। বারোটা পর্যন্ত পড়ে তারপর ঘুমাবো কাল পরীক্ষা।

খাওয়া শেষ করে একটু পড়তে বসেছিল ছোঁয়া। ১১ টা বাজতে না বাজতেই ধপাস করে গিয়ে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে গেছে। এখন যদি না ঘুমাতো তাহলে কাল পরীক্ষার হলে কাল ঘুমাতো ও। কই থেকে যে এতো ঘুম আসে মেয়েটার কে যানে।
সাহেদ চৌধুরী আস্তে করে ছোঁয়ার রুমে ঢুকলেন। তারপরে দুই মেয়ের কপালে চুমু দিয়ে কাঁথা টেনে দিয়ে আস্তে করে চলে গেলেন।

পরের দিন সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলো ছোঁয়া। ওঠে কোন রকমে ফ্রেশ হয়ে বই নিয়ে বসে গেলো পড়তে। টানা ৪:৩০ পর্যন্ত পড়ে তারপরে উঠলো। এখন তাড়াতাড়ি করে রেডি হচ্ছে।
আনিতা বেগম এসে টেবলে খেতে ডেকে গেলো। ও একটা দীর্ঘশ্বাস নিলো,
উফ যাই হয়ে যাক না কেনো আমার মা আমাকে খাইয়েই ছাড়ে।

টেবলে গিয়ে দেখলো সাহেদ চৌধুরী আগে থেকেই বসে আছে সাথে সুফিও রয়েছে, ওর স্কুলে যেতে হবে তাই বাবার সাথে সেও বসে পড়েছে।
বাবাকে দেখে ছোঁয়া মিষ্টি করে এক গাল হাসলো। বিনিময়ে সাহেদ চৌধুরীও হাসলো।
ছোঁয়া টেবিলে বসতেই আনিতা বেগম ওর প্লেটে রুটি তুলে দিলেন।
সাহেদ চৌধুরী খেতে খেতে প্রশ্ন করলেন,
প্রিপারেশন কেমন তোমার আম্মু?

আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
যাক ভালো তাহলে।
খাওয়া শেষ করে ছোঁয়া আব্বু আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো স্কুলের উদ্দেশ্যে।
সাহেদ চৌধুরী মেয়ের হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়েছেন।
মাইশা আর ছোঁয়া একসাথে স্কুলে চলে গিয়েছে। তারপরে নিজেদের সিট খুজে যার যার ক্লাসরুমে গিয়ে বসে পড়লো।
ওরা ক্লাসরুমে বসার কিছুক্ষণ পরেই রুমে স্যার প্রবেশ করলো।
টানা তিন ঘন্টা এক্সাম দেওয়ার পর বেরোলো ওরা।
এক্সাম মোটামুটি ভালই হইছে।

ছোঁয়া মনে মনে ভাবছে,
রাদিফের তো আসতে অনেক দেরি, এতক্ষণ তো আর স্কুলে থাকা যাবে না। তাহলে আর দেরি করে কি হবে বাসায় চলে যাই।
তারপরে দেরি না করে মাইসাকে সাথে নিয়ে বাসায় চলে গেলো ও।
রাদিফ স্কুলে এসে ভাবছে,
ছোঁয়াদের পরীক্ষা তো আরো অনেকক্ষণ আগেই শেষ চলে গেছে হয়তো ও এতক্ষণে।
চলে যাওয়ারই কথা।

বিকেল বেলা তামিম এসেছে পড়াতে। ছোঁয়া স্কুল থেকে এসে শাওয়ার নিয়ে খেয়ে এতক্ষণ বই নিয়ে পড়ছিলো। তামিম এসেছে শুনে বই খাতা নিয়ে ড্রয়িং রুমে গেলো পড়তে।
ছোঁয়া সোফায় বসতেই তামিম প্রশ্ন করলো,
এক্সাম কেমন হইছে?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
আচ্ছা যাক ভালো হইলেই ভালো, এখন বই দাও।

তামিম ছোঁয়াকে পড়া বুঝাচ্ছে আর এদিকে সাফিটা বড্ড জ্বালাচ্ছে। প্রতিদিনই এমন করে ও। আনিতা বেগম ওকে রুমে নিয়ে গেলেও কান্নাকাটি করে বাইরে চলে আসে। তারপর বাইরে এসে একটুও পড়তে দেয় না ছোঁয়াকে।
আনিতা বেগম তামিমকে বললেন,
তুমি বরং ছোঁয়ার রুমে গিয়ে পড়াও এখানে পড়ালে ও সান্তি দিবে না।
কিন্তু আন্টি…

দেখতেই তো পাচ্ছো কতো দুষ্টামি করছে আর মেয়েটারও পরীক্ষা।
আচ্ছা আন্টি।
ছোঁয়া যা তামিমকে নিয়ে।
অন্য কেউ হলে আনিতা বেগম এভাবে রুমে গিয়ে পড়ার অনুমতি দিতেন না, তবে তামিম ছেলেটা অন্যরকম সে ভালো করেই জানে।
তামিম ছোঁয়ার রুমে এসে একবার পুরো রুমটায় নজর বুলালো।
তারপর বললো,
এতো
অগোছালো কেন?

আসলে ভাইয়া আম্মু গুছিয়ে দেয় আর আজকে স্কুল থেকে ফিরে তো পড়ছিলাম তাই আর আম্মু রুমে আসেনি গোছানোও হয়নি।
এতো বড় হইছো নিজে রুম গুছাইতে পারো না।
তারপর বিড়বিড় করে বললো,
একটা রুম গুছাইতে পারে না আমারে আবার কেমনে গুছাবে পুচকি একটা মেয়ে।

কিছু বললেন?
আব… নাহ কি বলবো টেবিলে বসো বই বের করো।
এই বলে নিজেও টেবিলের কাছে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো।
এভাবে কয়েক দিন কেটে গেছে, আজ রাদিফদের পঞ্চম পরীক্ষা।
সে ভেবেছে আজকে আধাঘন্টা আগে স্কুলে যাবে যদি মেয়েটাকে দেখতে পায়। যেই ভাবা সেই কাজ তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে গেলো রাদিফ।

বের হবার সময় ওর মাকে বলে বের হতে নিলেই তিনি বলে উঠলেন,
তোর পরীক্ষা তো আরো পরে রোজ তো আরো দেরি করে বেরোস তাহলে আজকে তারাতারি বেরোচ্ছিস কেনো?
আসলে আম্মু স্যার বলেছে তাড়াতাড়ি যেতে কি যেনো একটা দরকার আছে।
আচ্ছা যা তাহলে সাবধানে যাস।
আচ্ছা আম্মু।

এদিকে ছোঁয়া আজ যে করেই হোক রাদিফকে দেখে তারপর বাড়িতে যাবে। পরীক্ষা শেষে ক্লাসরুম থেকে ১০ মিনিট লেট করে বের হয়েছে সে। তারপরে মাইশাকে টেনেটুনে নিয়ে ফুচকা খেতে গিয়ে ইচ্ছে করে দেরি করে খাচ্ছে লেইট করার জন্য। রাদিফ যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসবে ওই রাস্তাতেই ফুচকা ওয়ালারা বসে। ছোঁয়া রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু রাদিফ কে আসতে দেখিনি।

তারপরে যখন স্কুল গেটের সামনে আসলো ওরা রিক্সা নিবে তখনই ছোঁয়া বলে উঠলো,
মাইশা থাম স্কুলের ভেতোর যেতে হবে আমার হিজাব ঠিক করতে হবে।
মাইশা বিরক্তি নিয়ে বললো,
উফ আজকে যত ঝামেলা হতে হলো এমনিতেই লেট হয়ে গেছে, চল তাড়াতাড়ি।
আসলে ছোঁয়ার হিজাব কিছুই হয়নি ও আরো কিছুক্ষণ স্কুলে থাকার জন্য মিথ্যা কথা বলছে। এখন হুদাই হিজাব টেনেটুনে ঠিক করছে আর টাইম নষ্ট করছে।

কিরে হইছে তোর?
এইতো হয়েছে দারা।
মাইশা ছোঁয়ার সামনে এসে ওকে পরখ করে নিয়ে বললো,
সব ঠিক আছে চল এখন।
ওকে চল।
ছোঁয়া মনে মনে ভাবছে এতক্ষণ দেরি করলাম তাও আসলো নাহ এখনো।

মাইশা আর ছোঁয়া সিঁড়ি দিয়ে নেমে মাঠের কোনা দিয়ে যাওয়া আসার জন্য যে রাস্তা করে দেওয়া সেখান দিয়ে হাটতেছে তখনি ছোঁয়ার পাস দিয়ে রাদিফ চলে গেলো। ছোঁয়া চমকে তাকালো, দেখলো রাদিফ ও তাকিয়ে থাকতে থাকতে রাদিফ ওকে ক্রস করে চলে গেছে। ছোঁয়া পিছু ফিড়ে তাকিয়ে ওকে দেখলো, তারপর একটুখানি মুচকি হেসে আবারো মাইসার সাথে সামনের দিকে চলে গেলো।

এদিকে ছোঁয়া রাদিফকে দেখার আগে রাদিফ ওকে দেখছে কিন্তু ওর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওর দিকে তাকায় নাই।
তারপরে আবার দ্রুত দোতলায় উঠে ওর যাওয়ার পানেই তাকিয়ে ছিলো।
বিকেলে ছোঁয়া তার ছোট্ট বাগানটায় গিয়ে ফুল আর ফুল গাছেদের সাথে খেলা করছে। বাচ্চাদের মতো ছোটাছুটি করছে। আনিতা বেগম কয়বার এসে ওকে ডেকে গেলেন কিন্তু ওর বাসার ভিতরে ঢোকার নাম নেই। কেনোই বা যাবে এখন তো আর ওর কোন কাজ নেই পড়বে তো সন্ধ্যার পর আর তামিমও পড়িয়ে চলে গেছে।

ছোটাছুটি করতে করতে হঠাৎ ওর চোখ যায় আকাশ পানে।
ওয়াও কি সুন্দর সূর্যটা, এটা ব্যালকনি থেকে সুন্দর ভাবে দেখা যাবে।
তারপর দৌড়ে চলে গেলো ব্যালকনিতে সূর্য ডোবা দেখার জন্য।
আনিতা বেগম ওকে এভাবে ছুটতে দেখে বললেন,
আরে আস্তে পরে যাবি তো, উফ মেয়েটাকে নিয়ে আর পারিনা।

ছোঁয়া বসে বসে সূর্যাস্ত দেখছে। রাদিফকে দেখেছে তাই আজকে ওর মনটা ভীষণ ভালো তাই তো এভাবেই বাগানে ছোটাছুটি করলো এখন আবার সূর্যাস্ত দেখে মনটা আরো ভালো হয়ে গেলো।
এই সূর্যাস্তের সময় এখনো সে রাদিফের কথা ভেবে চলেছে।

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৭

কিন্তু এই কিশোরী নিজের অনুভূতি সম্পর্কে অবগত নয়।সে জানে না এটা কিসের অনুভূতি, ভালোবাসা নাকি বয়সের দোষের কারণে শুধুই ভালোলাগা?

পূর্ণতায় অপূর্ণতা পর্ব ১৯