আসক্তি সিজন ২ পর্ব ৬

আসক্তি সিজন ২ পর্ব ৬
লেখায়ঃআফিয়া আজাদ নিঝুম

প্রতিটা মানুষের জীবনেই অতীত থাকে।আর সেটা কখনোই সুমিষ্ট হয় না;হয় তিতা। জীবনের প্রতিটা মূহূর্তে মানুষ সেই অতীতকে ভুলতে চায়।কিন্তু সত্যিই কি একেবারে ভোলা সম্ভব!না।
রাত হয়েছে অনেক আগেই।ইনায়াহ্কে খাইয়ে ঘুমিয়ে দিয়েছে পাখি।পাখিকে জড়িয়ে ঘুমানোর অভ্যেস হয়ে গেছে আজকাল।গত কয়েকদিন ধরে পাখির সঙ্গ পেয়ে শানের সাথে ইনায়াহ্’র একটা দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে।এই যেমন শানের সাথে ঘুমায় না, খায় না।সারাক্ষন পাখির সাথেই থাকে ইনায়াহ্।

শান প্রতিদিনকার মতো ল্যাপটপে কয়েকটা কাজ সেড়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেই হঠাৎ ইনায়াহ্’র মুখটা মানোষপটে ভেসে ওঠে।
“থাক কাল সকালে দেখবো,”ভেবে আবার চোখ বন্ধ করতেই ইনায়াহ্কে দেখতে পায়।মুখে মুচকি হাসির রেখা টেনে দ্বিধায় পরে যায় শান।
“রাত বাজে ১২ টা। এতো রাতে ইনায়াহ্ নিশ্চই ঘুমে।আর ও তো এখন একা না।মেয়েটা আছে ওখানে।যাওয়াটা কি উচিত হবে?”
শানের কাছে ব্যপার টা কেমন দোটানার তৈরী করে ফেললো মূহূর্তেই।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“কি হয়েছে আমার বাড়ি, আমার সব।এ বাড়ির প্রতিটা কোণায় যেকোন মূহূর্তেই যাবার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে আমার।”,ভাবতেই শানের চোখে মুখে দাম্ভিকতার রূপ ভেসে ওঠে।এগিয়ে যায় ইনায়াহ্’র ঘরের দিকে।
পাখির ঘুম আসছে না আজ।ইনায়াহ্’র জড়িয়ে ধরা হাতটা আলগোছে সরিয়ে বিছানার উপর হাঁটু মুড়ে বসে জীবনের অতীত খাতার হিসেব কষছে সে।

“কি পেলাম!কি’ই বা আর পাওয়ার বাকি আছে! আজ অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা হয়ে আছি অথচ কতো সম্পদের মালকিন আমি;যার কোনকিছুই আর আমার নয়।”,ভাবতেই চোখ ভরে আসে পাখির।কেন জানে না আজ চোখের অবাধ্য পানিগুলোকে আটকাবার ইচ্ছে করছে না পাখির।পড়ুক না কিছু পানি অঝোড়ে তাতে যদি মনটা হালকা হয়।মাঝে মাঝে কাঁদতে হয়। কাঁদলে নাকি মন মস্তিষ্ক ভালো থাকে।
নাকে আসা পানিটা ওড়নার আঁচলে মুছে আয়ানের কথা মনে ওঠে।

“একদিন আয়ান নিজ হাতে এই চোখের পানি মুছে বলেছিলো’আজ থেকে তোকে আর কাঁদতে দিবো না রে পাখি।আমি এসেছি তো’
সবটাই তোমার নাটক ছিলো আয়ান ভাই!”,বিড়বিড় করে বলতেই কান্নার বেগ বেড়ে যায় পাখির।
নাক ছিচকানো শব্দে ইনায়াহ্ একটু নড়েচড়ে যায়।পাখি সেদিকে চেয়ে চোখ মুখ মুছে ইনায়াহ্’র মাথাটা হালকা করে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।ইনায়াহ্ ঘুমের ঘোরেই বলে,”মুন সাইন”
“বেবি,এইতো আমি”,ইনায়াহ্’র কপালে উড়ে আসা অবাধ্য চুল গুলোকে সরিয়ে একটা গাঢ় চুমু এঁকে বলে পাখি।পাখির সংস্পর্শ পেয়ে ইনায়াহ্ পূনরায় ঘুমিয়ে পরে।

বিছানার সংস্পর্শ আজ পাখির বড্ডো বিরক্ত লাগছে।এপাশ ওপাশ ফিরেও নিজেকে বিছানার সাথে অভ্যস্থ করতে পারছে না আজ।কেমন যেন বুকটা কান্নায় ভারী হয়ে আসছে।আবারও হাঁটু মুড়ে বসে একহাতে ইনায়াহ্’র মাথা বুলিয়ে ভাবে,”কতো অদ্ভুত আমার জীবন।চিনি না জানি না অথচ আজ তুমি কতো আপন।আত্মার টানে আজ তোমার মুন সাইন হয়ে গেলাম ”

না চাইতেও ভিতর থেকে দীর্ঘশ্বাস চলে আসে।মূহূর্তেই শানের খারাপ আচরন মনে আসতেই মুখ চেপে কেঁদে ফেলে পাখি।কষ্টের কথা গুলো মনে আসলে কোন কষ্টই সেদিন আর বাদ থাকে না।জীবনের আনাচেকানাচে জমানো সব কষ্টই এক হয়ে ধরা দেয়।
“একটা মানুষ কি’ই ভাবেই না অপমান করতে পারে বিনা কারনে”,চাপা চাপা স্বরে একা একাই বিড়বিড় করে পাখি।হঠাৎ চোখ ঝলসানো আলোতে ঘর ভরে যায়।ভরকে যায় পাখি।চারিদিকে চেয়ে বুঝতে পারে ঘরের লাইট জ্বলে উঠলো।লাইটের সুইচের দিকে তাকাতেই শানকে দেখতে পায় পাখি।তড়িৎগতিতে মুখ ফিরিয়ে দুহাত দিয়ে চোখের পানি মুছে নেয়।

“এখনো জেগে!কি করছিলো?কান্না?তাই তো মনে হচ্ছে,”শান পাখির দিকে সরুচোখে তাকিয়ে আনমনে ভাবতে থাকে।এরপর এগিয়ে আসে বেডের কাছে।পাখি ততোক্ষনে উঠে বিপরীত দিকে মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। শানের পায়ের আওয়াজে বুঝতে পারে এদিকে আসছে শান।ভ্রুকুচকে ভাবতে থাকে,”উনি আজ এতো রাতে?এ ঘরে?”

ভেবেই নিজের অজান্তে গায়ের ওড়নাটা ভালো করে গায়ে সেট করে নেয়।শান সেদিকে একবার কটাক্ষের চোখে চেয়ে পাশ কাটিয়ে ইনায়াহ্’র মাথার কাছে বসে।পাখি বিপরীত মুখে দাঁড়িয়ে কয়েক হাত দূরে সরে যায়।ফ্যানের হালকা বাতাসে কপালের উপর উড়ন্ত পাতলা চুলগুলো সরিয়ে শান পরপর কয়েকটা চুমু দেয় ইনায়াহ্’র কপালে।আবার কিছুক্ষন ইনায়াহ্কে দেখে মুচকি হেসে দুই গালে চুমু দেয় শান।পাখি আড়চোখে সেসব দেখে চলে।আর ভাবে,”নিজের সন্তান না অথচ এতো ভালোবাসেন তিনি ইনায়াহ্কে। কেন?”

শান উঠে এক পা আগাতেই থেমে যায়।পিছন ঘুরে গলায় দু’বার শব্দ করে। পাখি ভ্রুকুচকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে।কিছুক্ষন পর বুঝতে পারে শান তাকে কিছু বলতে যায়।কুচকানো ভ্রুজোড়া সোজা করে পাখি ডানে সামান্য বাঁকা চোখে তাকায়।পাখির তেড়ামিতে শান বিরক্ত হয়ে বলে,”আগেও বলেছি একবার, কারো….”
“ব্যাক সাইড দেখে কথা বলার ইন্টারেস্ট নেই আপনার,তাই তো?”,শানের কথাকে থামিয়ে বলে পাখি।শান কোন প্রতিউত্তর করতে পারে না।কারণ সত্যিই সে এটা বলতেই উদ্যত হয়।
শানকে চুপ থাকতে দেখে পাখি বিপরীতমুখী হয়ে আবার বলে,”আর আপনার মুখ দেখে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করে না।”

পাখির কথায় শান অবাকের থেকেও অপমানিত বোধ করে বেশি।রাগে দাঁতে দাঁত চেপে যায়।হাতের মুঠি শক্ত করে আবার ছেড়ে দেয়।চোখজোড়া বন্ধ করে লম্বা লম্বা কতোকগুলো নিঃশ্বাস ছেড়ে রাগকে নিয়ন্ত্রন করার আপ্রান চেষ্টা করে।কারণ শান এতো রাতে কোন খারাপ পরিস্থিত সৃষ্টি করতে চায় না। যাতে ইনায়াহ্’র ঘুম ভেঙ্গে যায়।রাগকে কোনমতে আয়ত্তে এনে পাখিকে কিছু বলতে উদ্যত হতেই পাখি পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পা আগায়।শান ওর বাম হাত টা ধরে ফেলে।পাখি অবাক হয়ে সামনে চেয়ে থাকে।

শান এবার চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,”আমি কিছু বলব।যতোক্ষন না বলা শেষ হবে এক পা ও নড়বে না। গট ইট!”
পাখি ঠাঁয় দাঁড়িয়েই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে।কিন্তু মুখে কোন কথা বলছে না।
“থ্যাংকস “, শব্দ শানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতেই থমকে যায় পাখি।ঢোক গিলে আবার হাত মুচড়ানো শুরু করে। পাখির অবস্থা দেখে শান রেখে গিয়ে টেনে সামনে এনে দাঁড় করায় পাখিকে।চেপে ধরে রাখা হাতটা উপরে তুলে ধরে।সেদিকে একবার চেয়ে শান পূনরায় বলে, “সরি”

“সরি!কেউ চায় না আপনার সরি। আচ্ছা সরি টা কিসের জন্যে শুনি একবার?আর আগে যেন কি বললেন, থ্যাংকস।সেটা কিসের জন্যে?”,হাত টা ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে করতেই বলে পাখি।
শান এতোক্ষনে পাখির দিকে ভালো করে তাকায়।হরিণটানা চোখ দুটো ফুলে উঠে একাকার।চোখের পাতা এখনো ভেজা।রাগে চোখ দুটো রক্তবর্ণ ধারন করেছে পাখির।শান বুঝতে পারে এতোক্ষন অন্ধকারে বসে কাঁদছিলো পাখি।পাখির চোখ থেকে চোখ সরিয়ে কম্পনরত ঠোঁটজোড়ার দিকে নজর পড়ে শানের।তিলটা নজরে আসার পূর্বেই চাহনী ফিরিয়ে নির্লিপ্ত চোখে জবাব দেয়,”থ্যাংকস ফর টেকিং গুড কেয়ার অব্ মাই ইনায়াহ্। এন্ড সরি ফর নট হেল্পিং দ্যাট ডে”

পাখি রেগে গিয়ে জবাব দেয়, “সরি মাই ফুট।জুতো মেরে গুরু দান করার কোন প্রয়োজন নেই।কে বলেছে সেদিন হেল্প করেন নি!না করলে আমি এখানে কি করে বলুন তো।ভাগ্যিস আপনার গাড়িটা সেদিন আমায় তাড়ায় নি।গাড়িটার প্রান না থাকুক হয়ত মনুষ্যত্ব ছিলো।যা অনেক প্রানীর নেই।আর থ্যাংকসের কোনই প্রয়োজন নেই।আমি আমার ভালোবাসা থেকে ইনায়াহ্’র যত্ন নিচ্ছি আপনার থ্যাংকসের জন্যে না।”

রাগে এবার শানের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে।চোখ বন্ধ করে কয়েক সেকেন্ড পর আবার চোখ খুলে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,”এতো এটিটিউড কাকে দেখাচ্ছ তুমি?সরি বললাম বলে আসমানে উড়ো না।সেদিন তোমার বিপদ ছিলো আমি জানতাম না।বুঝতে পারি নি তাই হেল্পও করি নি।তোমার জায়গায় কোন ছেলে থাকলে অভিয়াসলি হেল্প করতাম।তোমার দূর্ভাগ্য কি জানো?তুমি একটা মেয়ে।এন্ড আই হেইট দ্য হোল উইমেন।”

“হেইট উইমেন হলে এসব কি?নাকি রাতের আঁধারে সুযোগ খুঁজছেন?নাকি এটা ধরেই নিয়েছেন বাড়ির সাথে সাথে বাড়িতে অবস্থানরত মানুষগুলো আপনার”, চেপে রাখা হাতটার দিকে কথা ইশারা করে বলে পাখি। হাতটা ঝটকা মেরে ছেড়ে দেয় শান।রাগে চোখের পাতা কাপছে শানের।তর্জনি আঙ্গুল উচিয়ে বলে, “নেভার ডেয়ার টু শো মি ইওর চিপ টাইপ ফা** এটিটিউড।ট্রাই দিজ সামওয়ান ইল্স।গট ইট!”

পাখি ব্যথাসূচক অনুভূতিতে হালকা চেঁচিয়ে উঠে হাতটা ডান হাতে চেপে ধরে।শান পিছন ফিরে চলে যেতেই পাখি বলে,”আজ আমার অতীত সম্পর্কে জানলেন বলে করুনা হচ্ছে?তাই সরি বলতে এসেছেন।না জানলে তো কখনোই নিজের দোষ স্বীকার করতেন না”
শান ধীরভাবে আবার পিছন ফিরে বলে,”আড়িপাতা ব্লাডি উইমেনদের স্বভাব;সুপুরুষদের নয়।তোমার অতীত সম্পর্কে জানার জন্যে তোমার আর চাচির কথায় আড়িপাতার দরকার পরে নি আমার।নিজ গরজে জেনেছি।”

মুখে কটাক্ষ ভাব এনে শান পূনরায় বলে,”হাহ্,তোমার কী মনে হয়?তোমার মতো একজন অজানা, অচেনা মেয়েকে এমনি এমনি বাড়িতে রাখব?সবথেকে বড় কথা ইনায়াহ্’র টেইক কেয়ারের জন্যে রাখব?”
পাখি ছলছলে তাকিয়ে হাত টা ডান হাতে চেপে তাকিয়ে থাকে শানের দিকে।শান পাখির মুখের দিকে সামান্য এগিয়ে বলে,”ডোন্ট বি অভার কনফিডেন্ট। তোমার কি এমন পরিচয় আছে যে তোমায় না জেনেই রেখে দিবো এই আহমেদ ম্যানশানে?তোমার ব্যপারে সব ডিটেইলস জেনে তবেই মনঃস্থির করেছি তোমায় রাখতে।”

বলেই শান দু কদম এগিয়ে আবার পিছন ফিরে বলে,”ওয়ান মোর থিং,মাথায় ঢুকিয়ে রাখো।স্টিল নাউ ইউ আর স্ট্যান্ডিং মাই হাউজ।তাই আমার সাথে নো এটিটিউড ”
চলে যায় শান।পাখি তার যাওয়ার দিকে চেয়ে চোখের গভীরে আটকে রাখা জল টা ছেড়ে দেয়।বুক ভেসে যায় মূহূর্তেই।কোথাও গিয়ে দাঁড়াবার মতো জায়গা তার নেই। নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে সহায়হীন মানুষ মনে হয় তার।

“একটা মানুষ এতোটা জঘন্য কি করে হতে পারে?”,ভাবতেই রাহেলার কথা মনে আসে পাখির।অবিশ্বাসের স্বরে বলে,” তিনি আদৌ কোন ভালো মানুষ নয় চাচি।এই মানুষের আগা-গোড়াই অহঙ্কারে পরিপূর্ণ।”
নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে চেপে ধরে রাখা স্থানটায় ছিটে ছিটে রক্তের দাগ।পুরুষালী হাতের পাঁচটা আঙ্গুলের স্পষ্ট দাগ।
“আদ্যোপান্ত মনুষ্যত্বহীন একজন নিকৃষ্ট মানুষ তিনি।যার বিবেকবোধ বলতে কিচ্ছু নেই”,বিড়বিড় করে বলতে বলতে পাখি বিছানায় ধপ করে বসে পরে।

হাত টা বেশ জ্বলছে।চেপে ধরে রেখে বুঝতে পারছে না কি করবে।কি করলে জ্বলুনি টা কমবে।উপায়ান্তর না পেয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পানির নিচে হাত টা ধরে।কিছুক্ষন পর বের করলে পূর্বের থেকে আরো বেশি জ্বলতে থাকে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে পাখি।এভাবে ঘন্টাখানিক পর হাত টা একটু স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসলে পাখি চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে ঘরে চলে আসে।

আসক্তি সিজন ২ পর্ব ৫

তোয়ালেতে মুখ টা মুছতে মুছতে ইনায়াহ্’র দিকে চোখ ফেলে বুঝতে পারে ইনায়াহ্ ঘমন্ত অবস্থায় পাশে হাতরিয়ে তাকে খুঁজছে।পাখি দ্রুত তোয়ালে টা সোফায় ছুড়ে এগিয়ে গিয়ে ইনায়াহ্কে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরে।ইনায়াহ্ মুচকি হেসে পাখিকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে।পাখি ইনায়াহ্’র হাতে চুমু খেয়ে বলে,”আই’ম সরি বেবি।আমায় মাফ করে দিও।এতো কষ্ট, এতো অপমান সহ্য করে তোমার সাথে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।তাই কাল যা সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি তা যেন সবার জন্যেই ভালো হয়।”.

ইনায়াহ্কে বুকে জড়িয়ে বলে,”হয়ত তোমার আমার সম্পর্কের পথটা এটুকুই ছিলো”
কখন ঘুমিয়ে পরে বুঝতে পারে না।

শান নিচ থেকে বোতলে পানি ভরে নিজের ঘরে যাবার সময় দরজাটা খোলা বুঝতে পারে।সাথে সাথে পাখির ব্যবহারের কথা মনে ওঠে শানের।রাগ চরমে উঠে যায় মূহূর্তে।ভেড়ানো দরজার আড়াল থেকে দেখা যাচ্ছে পাখি বাম হাত ছড়িয়ে ডান হাতে ইনায়াহ্কে বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছে।শানের নজর গিয়ে ঠেকে পাখির বাঁ হাতের কব্জিতে কালশীটে দাগটার উপর।কপালে ভাঁজ ফেলে বোঝার চেষ্টা করে সেটা কি।পরোক্ষনে নিজের করা আচরনের জন্যে বেশ অপরাধবোধ জেগে ওঠে।শান বুঝতে পারে নি চেপে ধরা টা এতোটাই জোড়ে ছিলো যে হাতের পাঁচ আঙ্গুল কালো হয়ে ভেসে উঠেছে।

দ্রুত নিজের ঘর থেকে ঔষধ টা এনে ইনায়াহ্’র ঘরে পা রাখতেই এলোমেলো ভাবে পাখিকে শুয়ে থাকতে দেখে শান। নজর সরিয়ে নেয় ।কি করবে বুঝতে না পেরে দরজার পাশে ওয়ারড্রবের উপর মেডিসিন টা রেখে লাইট অফ করে চলে যায়।

আসক্তি সিজন ২ পর্ব ৭