এই কেমন ভালোবাসা গল্পের লিঙ্ক || নুর নাফিসা খুশি

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ১
নুর নাফিসা খুশি

কখনো কি শুনেছেন ভার্সিটির প্রথম দিনে কান ধরে এক পায়ে দারিয়ে থাকে কেও তাও ভার্সিটির মাঠে সবার সামনে। হ্যাঁ আমি থাকি আমার পরা কপাল যে আজ আমি খালামনির বাসায় না গিয়ে আগে ভার্সিটি এসেছি আর এসেই এক দানবের হাতে পরেছি কি কপাল আমার। এখন আমার গলা ছেরে কাদতে ইচ্ছা করছে। কেও আমাকে বাছান আমার পায়ে বেথা করছে।।

এক পায়ে কান ধরে দারিয়ে টলমল করছে আর নিজে নিজে বকবক করছে খুশি। খুশি আহমেদ, দেখতে সুন্দরী একদম পিচ্চি পিচ্চি লাগে, বয়স উন্নিশে পা দিয়েছে কিন্তু বাচ্ছাদের মতো সভাব এখনো যাইনি তার। গ্রাম থেকে কলকাতার মেডিকেল কলেজে এসেছে পরাশনা করতে, কলকাতাই খুশির খালামনির বাড়ি আগে সেখানে যাওয়ার কথা ছিলো খুশির কিন্তু পাকনামি করে আগে কলেজে এসেছে আর এসেই পরেছে মহা বিপদে।
কিছুখন আগের কথা।।

কাধে ব্যাগ নিয়ে কলেজের ভিতর ধুকে খুশি এই কলকাতা শহর তার কাছে অচেনা বাবার কাছে কলেজের ঠিকানা আর খালামনির বাড়ির ঠিকানা কাগজে লিখে নিয়ে এসেছে। সেই ছোট বেলায় খালামনির বাড়ি তে এসেছিল খুশির।খুশির নিজের মনে হেটে যাচ্ছিল ঠিক তখনি কিছু সিনিয়র ছেলে খুসি ডাকে।
“এই যে মামনি এই দিকে আসতো দেখি।(একটা ছেলে)
খুশি তাদের দিকে ব্রু কুছকে তাকায়, কিছুখন ছুপ করে থেকে বলে।

” আমাকে বলছেন?
“হ্যাঁ মামনি তোমাকেই বলছি।
খুশি এবার ছেলেগুলোর কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে।
” ওহ আচ্ছা তো বলেন আমার পুত্র (সন্তান) কি চায়?
” এই মেয়ে পুত্র মানে কি? (আরেক টা ছেলে বলে)
“ওমা বুঝেন নি? আমি যদি আপনাদের মামনি হয় তাহলে সেই হিসেবে আপনারা আমার পুত্র ই তো হন।
খুশির কথা শুনে এক ছেলে ফিক করে হেসে দেই, তখনি একটা ছেলে তার দিকে রাগি চখে তাকালে সে চুপ হয়ে যায়। একটা ছেলে খুশি কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই খুশি তাদের মধ্যে থাকা এক ছেলেকে ঠাস করে থাপ্পড় মেরে দেই,, সবাই খুশির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওকে মারল কেন সেটাই বুঝছে না কেও। খুসি বলে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” মামনির সামনে সিগারেট খেতে লজ্জা লাগে না? অসভ্য ছেলে।
ছেলেটা সিগারেট খাচ্ছিল তাই মেরেছে খুশি। এখন এই সিনিয়র ছেলেগুলোর মনে হচ্ছে এই মেয়ে কে ডেকেই ভুল করেছে তারা আর সব থেকে বড়ো ভুল একে মামনি ডাকা। এতো দিন তারা সবার র‍্যাগ করেছে এখন খুসি তাদের করছে। আরেক ছেলে রেগে বলে।
“এই মেয়ে এতো সাহস আসে কই থেকে তোমার?
“ঠাসসস!! এই মেয়ে কি কথা হ্যাঁ ? আমি তোমাদের মামনি হয় মানে আম্মা আর মামনি কে সন্মান দিতে জান না? (খুশি ছেলেটাকে থাপ্পর মেরে বলে)
সব ছেলে গুল চুপ করে আছে এখন এরা বুঝে গেছে ভুল মেয়ের সঙ্গে পাংগা নিয়েছে। খুসি বলে।

” তো বাচ্ছারা আমি এখন যায় থাক তোমরা আর হ্যাঁ আমাকে কথাও দেখলেই সালাম দিয়ে কথা বলবা ওকে এখন টাটা।।
কথা গুলা বলেই খুশি পিছনে ঘুরে যেতে নিবে তখনি এক দেওয়ালের সংগে ধাক্কা লেগে নিছে পরে যাই খুশি।নিছে পরে খুশি ভাবে এখানে দেওয়াল এল কই থেকে? সামনে তাকিয়ে দেখে তিন জরা পা,, খুশি আস্তে আস্তে অপরে তাকিয়ে দেখে এক হান্ডসাম ছেলে পান্টের পকেটে হাত ভরে দারিয়ে আছে। ব্লাক জিন্স ব্লাক শার্ট চুল গুলো দেখেই অনেক সিল্কি মনে হচ্ছে, এমন সুন্দর ছেলে খুশি আগে কখনোই দেখেনি এক ট্রাক ক্রাশ খেয়ে বসে খুসি।দারিয়ে থাকা ছেলেটা হাত বার করে খুশির সামনে তুরি বাজাই এতে খুসির ধ্যান ফিরে পায়। খুশি নিজের কাজে নিজেই লজ্জিত নিজেকে সামলে নিয়ে ছেলে টাকে দুই একটা কথা সনাবে বলে উঠে খুশি।।উঠে নিজের জামা ঝেরে বলে।।

“ওই মিয়া চখে দেখেন না? এমন খাম্বার মতো সামনে দারিয়ে আছেন কেন।(রাগি ভাব নিয়ে কমরে হাত দিয়ে বলে খুশি)
ছেলেটা কিছু বলতে যাবে তখনই পিছনের ছেলে গুলা বলে উঠে।।
“মাহির ভাই এই মেয়ে খুব ফাজিল কলেজের প্রথম দিন এসেই র‍্যাগ করা শুরু করেছে, আমাদের থাপ্পর ও মেরেছে।।
খুশি রাগি চখে পিছনে তাকিয়ে বলে।
” ওই ব্যাটা মিত্থা বলস ক্যান? আমি র‍্যাগ করতে গেছি নাকি তরাই করতে এসেছিস আমি উচিত শিক্ষা দিয়েছি তদের।
“কে কাকে র‍্যাগ করেছে আমি সব দেখেছি।(মাহির নামের ছেলে টা বলে)

খুশি আবার মাহিরের দিকে তাকায়, আর পিছনের ছেলে গুলা ভয়ে ভয়ে মাহিরের দিকে তাকায়,, তারা জানে র‍্যাগ করার শাস্তি কি হতে পারে,, মাহির র‍্যাগ করতে দেই না কখনো এই কলেজে আর যে করেছে আর মাহিরের চখে পরেছে তাদের অনেক বড় শাস্তি হয়েছে। খুশি আবার বলে।।
” এই মিয়া আপনি দেখলেন কি দেখলেন না তাতে আমি কি করবো? দেখি সরেন তো আমার ক্লাস আছে।
এই বলে খুসি চলে যেতে নিলে মাহির খুশির হাত ধরে আবার সামনে নিয়ে আসে।।আর বলে।।
“আমি কে সেটা কিছু খন পরেই জেনে নিবে,, এখন র‍্যাগ করার শাস্তি টা নিয়ে যাও।(রাগি গলায় বলে)
খুশি রাগ অনেক ভয় পায় তবে সবার রাগে না তার আব্বুর রাগ ভয় পায় আর এই প্রথম এই মাহিরের রাগ ভয় পাচ্ছে খুশি তবুও বলে।

” কসের শাস্তি?
“কলেজে নিউ এসে র‍্যাগ করার শাস্তি।
” আমি করিনি ওরাই করেছে,,আমি ওদের শাস্তি দিয়েছি শুধু।
“এখন তুমি শাস্তি নাও। এক পায়ে কান ধরে দারাও।
” কি? এটা আমি কখনো করব না।
“এটা না করলে আর বড়ো শাস্তি পাবে।
মাহিরের পাস থেকে এক ছেলে বলে।

” এই মেয়ে তোমার ভাগ্য ভালো যে তুমি এতো কম শাস্তি পাচ্ছ। এর আগেও র‍্যাগ করার ওপরাধে তাকে এক দিন কলেজের স্টোর রুমে বন্দি করে রেখেছিল এক ছেলেকে।
ছেলেটার কথা শুনে খুশি ভয় পেয়ে যায় একে তো নতুন শহর আবার এই ঝামেলা, খুশি আর কিছু না বলে এক পা তুলে কান ধরে দারিয়ে থাকলো। র‍্যাগ করতে আসা ছেলে গুলো হেসে সেখান থেকে কেটে পরে।। মাহিরের সংগে থাকা দুই টা ছেলে কে ইসারায় মাহির কি যেনো বুঝালে ছেলে দুইটা সেখান থেকে চলে যাই। আর মাহির ওখানের একটা বেঞ্চে বসে ফোন টিপ তে লাগে।।।এই দিকে খুসি মনে মনে হাজার গালি দিচ্ছে মাহির কে।।

মাহির চৌধুরী সাদমান চৌধুরীর এক মাত্র ছেলে মাহির দেখতে মাসাআল্লাহ কলেজের সব মেয়ের ক্রাশ। তবে কোন মেয়ে কে পাত্তা দেই না মাহির সব সময় মুড নিয়ে থাকে বেসি কথা বলা একদম পছন্দ না মাহিরের।কলেজের নেতা সব তাকে অনেক ভয় পায়। মাহিরের ভয়ে কেও কলেজে রাগিং করে না এটা মাহির একদম না করে দিয়েছে তবুও কিছু ছেলে র‍্যাগ করে বসে আর শাস্তি পায় মাহিরের কাছে। খুশি কিছু না করেও মাহিরের শাস্তির সিকার হলো আজ।।।

“ক্রাশ যে এমন বাশ দিবে আগে যানলে কখনো ক্রাশ খেতাম না এই দানবের অপরে, বজ্জাত ব্যাটা দেখিস তোর বিয়ে হবে না, বিয়ের রাতে বউ পালিয়ে যাবে তকে বাশর ঘরে একা রেখে তখন করিস বাসর বেডের ফুল এর সংগে নইত কলবালিসের সংগে।ছেরে দে না আমার পায়ে বেথা করছে আমাকে এমন করে দার করিয়ে রেখে নিজে দেখ কতো সুন্দর ফোন টিপে,, বজ্জাত। (এমন হাজার বকা দিচ্ছে খুসি মাহির কে)
কিছুখন পরে মাহির বলে উঠে।।

” তুমি এখন যেতে পার পরের বার যেমন এমন ভুল না দেখি এবার প্রথম তাই ছেরে দিলাম।।(বলেই মাহির হন হনিয়ে চলে গেলো সেখান থেকে)
খুসি পায়ের বেথায় ধপ করে গাসে বসে পরে।কখনো এমন শাস্তি পায়নি খুসি। মাহিরের মনে মনে ৩৬ টা বাজালো খুসি, আজ আর ক্লাশ না করে খালামনির বাসায় চলে যায়।খুসির আব্বু আগের দিন এসে খুসির জামা কাপর সব দরকারি জিনিস রেখে গেছিল খালামনির বাসায় খুসির কাজ থাকায় আস্তে পারেনি গতকাল। খুসি ঠিকানা মিলিয়ে একটা বড়ো বাড়ির সামনে এসে দারায় এটা তার খালামনির বাড়ি আগেও এসেছে এই বাড়ি তে খুসি ছোট তে। ভিতরে গিয়ে কলিং বেল চাপে খুসি। একবার বাজালো কিন্তু কেও খুলে না আবার বাজালো কিন্তু এবার কেও আসে না, খুসি এবার রেগে পাচ ছই বার বেল বাজানর চিন্তা করে বেল বাজাতে যায় আর তখনি কেও একজন খুলে দেই দরজা। সামনে তাকিয়ে দেখে খালামনি। খালামনি দেখেই খুসি জরিয়ে ধরে আর বলে।

“কেমন আছ খালামনি?
” এই তো তুই এসে গেছিস এখন অনেক ভালো তুই কেমন আছিস?
“আমিও ভালো খালামনি।
” আই ভিতরে তোর জন্যে অপেক্ষা করে ছিলাম।
খুসি ভিতরে যেতে যেতে বলে।
“খালামনি আঙ্কেল আর ভাইয়া কথায়?
” তোর আঙ্কেল তো এখন অফিসে আর আমার গুনধর ছেলে সারাদিন বাইরে টই টই করে বেরায়। আমি একা বাড়ি তে বসে মাছি মারি।
খালামনির কথা সুনে খুসি হেসে দেই।।খালামনি আবার বলে।

“তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি,, লতিফা(কাজের মেয়ে) খুসি কে ওর রুম দেখিয়ে দে।।
লতিফা এসে খুসি কে অপরের একটা রুমে নিয়ে যায়। অনেক বড় রুম টা আর অনেক সুন্দর। খুসি তার ব্যাগ থেকে জামা বের করে গোসল করে নেই একেবারে। তারপর নিছে চলে যায়।। নিছে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে খালামনির সংগে গল্পে মেতে উঠে। অনেক খন গল্প করার পর খুসি নিজের রুমে চলে আসে রেস্ট নিতে। রুমে এসে নিজের জামা কাপর বই সব গুছিয়ে নিল এখন থেকে এখানেই থাকতে হবে তাই সব ঠিক করে বেডে শুয়ে পরে খুসি শুয়ে পরতেই রাজ্জের ঘুম এসে যাই খুসির চখে।।
খুসির ঘুম ভাংগে রাত ৯ টাই ঘুম থেকে উঠে খুসি অবাক এতো ঘুমিয়েছে সে খালামনি কি ভাব্বে। খুসি তারাতারি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিছে চলে যাই।দেখে খালামনি খাবার টেবিলে খাবার সাজায় রাখছে খুসি ও গিয়ে হাত লাগালো।

” আরে তুই কি করছিস বস আমি খাবার দেই তোর আঙ্কেল ও আসবে এখন খেতে।
খালামনির কথায় খুশি আর কিছু না বলে বসে পরে,, তখনি আঙ্কেল আসে এসে খুসির সংগে টুকটাক কিছু কথা বলে। খুসির খাওয়া শেষ হলে উঠে যেতে নিলে খালামনি বলে।।
“খুশি এই খাবার টা তোর ভাইয়া কে গিয়ে দিস একটু ও আজ অপরে নিয়ে জেতে বলেছে। তোর পাসের রুম টাই ওর।
” ঠিক আছে খালামনি দাও।

খুশি খাবার টা নিয়ে অপরে চলে যায়, ভাইয়ার রুমের কাছে এসে নক করে কিন্তু কেও কিছু বলে না তাই খুসি আর কিছু না ভেবে ভিতরে চলে যায়, ভিতরে গিয়ে দেখে বেডে পেট পেরে শুয়ে লাপ্টপে কি যেন করছে ভাইয়া মুখ টাও দেখতে পাচ্ছে না খুশি সেই ছোট বেলায় দেখেছে এখন কতটা বড়ো হয়ে গেছে ভাইয়া। খুশি খাবার টেবিলে রেখে ডাক তে লাগে।
“ভাইয়া এই ভাইয়া খালামনি খাবার দিয়েছে খেয়ে নে।(ছোট বেলায় তুই করেই বলত খুশি তাই এখনো বলল)
কার আওয়াজ সুনে পিছনে তাকায় ভাইয়া, খুশি ভাইয়ার মুখ দেখে তো হা হয়ে যাই এই টা কাকে দেখছে খুসি, মনের ভুল ভেবে হাত দিয়ে চখ কছলে আবার তাকায় খুশি কিন্তু না এটা তো মাহির কেই দেখছে খুসি। খুশি এবার মনে করল মাহির ত ভাইয়ার ই নাম।।

” ভাইয়া তুই ওই ছেলে?
“চুপ!! আমার রুমে না বলে কেন ধুকেছ? আর তোমার থেকে ৫বছরের বড়ো ছেলে কে তুই বলতে লজ্জা করে না?আর তুমি আমার বাড়ি তে কেন?(রেগে বলে মাহির)
” ভাইয়া আমি খুশি তুই চিনতে পারিস না ছোট বেলায় কতো খেলেছি এক সংগে।আর আগে তকে তুই করেই বলতাম এখন কি সমস্যা?
“ওহ সেই খুশি ই তাহলে তুই? বড়ো হয়ে ভালই সুন্দরি হয়েছিস তো কইটা বয়ফ্রেন্ড আছে?
” ছি ভাইয়া এটা কি বলছিস তুই?

“চুপ এক দম চুপ!! আমার রুমে না বলে কখনো আসবি না আর আমাকে ভাইয়া বা তুই কনটাই বলবি না মনে থাকে কেয এখন বের হয়ে যা রুম থেকে।।
” ভাইয়া বলবো না তো কি বলবো?
“তোর যা মন চাই বল কিন্তু ভাইয়া বলবি না যা এখন।
” তাহলে কাক্কু?
“খুশিইইই!!(রেগে)
” সবেই রাগ করে তাহলে কি বলবো?
“কিছু বলা লাগবে না যা তুই আমার চখের সামনে থেকে আর আমার রুমে আসবি না।
খুসি আর কিছু বলে না বলে না মনে মনে বলে।
” বজ্জাত একটা। (বলেই চলে যায়)

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ২