এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ২ || নুর নাফিসা খুশি || SA Alhaj

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ২
নুর নাফিসা খুশি

ভরে উঠে খুশি নামাজ পড়ে বাড়ি টা ঘুরে দেখতে বের হলো, সেই ছোট বেলায় দেখেছে এই বাড়ি তখন একটু আলাদা ছিলো এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। নতুন কত জিনিস নিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। খুশি ছাদে চলে যাই,ভর হলেই খুশির আর শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না উঠে নামাজ পরে হেঁটে বেরাতে খুশির খুব ভালো লাগে। গ্রামেও সকালে উঠে নামাজ পরে ধান খেতের আল দিয়ে কতো হেঁটে বেরিয়েছে খুশি।

খুশি ছাদে এসে তো অবাক পুরো ছাদ খুশির পছন্দের ফুলে ভরা, খুশি এতো এতো ফুল দেখে তাও তার পছন্দের খুশিতে লাফাতে লাগে ছুটে ফুল গাছের দিকে চলে যাই। অনেক রকম ফুল আছে লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, অনেক রকম রঙের টেবিল ফুল আছে, বড়ো একটা টবে সূর্য মুখি ফুল, রজনীগন্ধা, আরো অনেক।খুশি ফুল গুলো নেরেচেরে দেখছে অনেক ভালো লাগছে খুশির গতকাল আসার সময় বাড়িতে বাগান দেখলেও ফুল গাছ দেখেনি সকালে ছাদে এসে এমন দেখবে ভাবতেও পারেনি খুশি।

মন টা একদম বাগান বাগান হয়ে গেলো।। ছাদ টা অনেক বড়ো একপাসে ফুলের গাছ শুধু, খুশি এবার ছাদ টা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো তখনই কানে একটা শব্দ এলো ছাদের অন্য পাস থেকে। খুশি সেদিকে গিয়ে দেখে তো খুশির মুখ হা হয়ে গেল সামনে তাকিয়ে। কাকে দেখছে এটা খুশি আরো এক দফা ক্রাশ খেয়ে বসে খুশি। মাহির ব্যাম করছে পরনে শুধু ট্রাউজার প্যান্ট, সাদা ধপধপে শরির বডি তো মাশআল্লাহ,ঘেমে পুরো শরিরে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।।খুশি ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে।।পরখনে নিজেকে ঠিক করে নিজে নিজে বলে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“ছি খুশি ছি তুই এতো লুচ্ছা কি করে হলি? একটা ছেলেকে অসভ্যের মতো তাকিয়ে দেখতে তোর লজ্জা লাগে না ছি ছি খুশি।।(নিজে নিজেই বলে খুশি কিন্তু কথা গুলা একটু যরেই বলা হয়েছে যা মাহির শুনে খুশির দিকে তাকিয়ে বলে।)
” তুই তো ছোট বেলা থেকেই লুচু মেয়ে, মনে আছে তোর ছোট তে তুই আমার কাছে ছাড়া ঘুমাতি না আমি তকে নিতাম না তবুও তুই অসভ্যের মতো চলে আসতি।
মাহিরের কথা শুনে খুশির অনেক লজ্জা লাগে কিন্তু এমন করেছিলো খুশি তা খুশির একটুও মনে নেই। খুশি বলে,,
“ভাইয়া তুই মিথ্যা কেন বলছিস? আমি এমন কোনদিন ও করিনি।।
” তোর মনে নেই আমার সব মনে আছে,, আর তুই আবার আমাকে ভাইয়া আর তুই করে বললি?(শেষের কথা টা রাগ নিয়ে বলে খুশি)

“তাহলে কি বলবো?
” যেহেতু আমি তোর অনেক বড়ো তাই আপনি করে বলবি নইত তুমি করে আর আমার নাম আছে মাহির বলে ডাকবি।।
“এটা কেমন কথা তুই থুক্কু আপনি আমার বড়ো তাহলে নাম ধরে ডাক তে হবে কেন? আচ্ছা আমি মাহির দা বলে ডাকি।
” উফফ যা ইচ্ছা ডাক ভাইয়া বলবি না।এখন এখান থেকে যা আমার কাজে ডিস্টার্ব হচ্ছে।
“একটা প্রশ্ন করি শুধু?
” কি?

“তুই থুক্কু আপনি এতো দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি কেন? খালামনি কতো গেছে আমাদের বাড়ি তে আপনি কেন আসেননি? আর আপনাকে তো কখনো দেখায় হয়নি। দেখা হলে কতো ভালো হতো বলেন তো। কলেজে আপনিও আমাকে চিনতেন আর আমিও আপনাকে চিনতে পারতাম তাহলে আপনি আর আমাকে কান ধরা দিতেন না।(মন খারাপ করে বলে খুশি)
“তকে চিনলেও তুই শাস্তি পেতি আর না চিনলেও মাহিরের কাছে ভুলের ক্ষমা নেই আর বকবক শেষ হলে এখন যা। (বিরক্ত হয়ে)
“কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর?

” সময় হলে সব যানতে পারবি এখন যেতে বলেছি যা ডিস্টার্ব হচ্ছে আমার।
“আমি তো ডিস্টার্ব এর কিছুই করিনি শুধু কিছু কথা জিজ্ঞেস করেছি।।আচ্ছা এটা কি লহা হাতে নিয়ে উঠা নামা করছিস মানে করছেন কেন? এটা তো অনেক ছোট আমি ই পারবো চারতে।(ভাব নিয়ে বলে)
” নে তুই চেরে দেখা।(বলেই লহার বল টা খুশির সামনে রাখল)
খুশি অনেক ভাব নিয়েই বল টা চারতে গেল,,কিন্তু কোন মতেই চারতে পারছে না খুশি অনেক ট্রাই করছে।অনেক চেস্টা করেও যখন পারলো না তখন নিছে বসে পরে আর হাফাতে থাকে।মাহির গমরা মুখ করেই বলে।

“তোর অজন কত?
” ৪২কেজি(খুশি হাপাতে হাপাতে বলে)
“ওহ আমি আরো কম ভেবেছিলাম যাই হক এটা তোর অজনের থেকেও বেসি অজন বুঝলি এখন এখান থেকে বিদেই হ নয়তো খবর আছে।।
খুশি মুখ ভেংচি কেটে নিচে চলে যায়। নিজের রুমে কলেজের জন্য একেবারে রেডি হয়ে নিচে আসে খুশি। খুশি আজ একটু বেসি সেজেছে অনেক সুন্দর লাগছে খুশি কে দেখতে। খালামনি খুশি কে নাস্তা দেই আর বলে।

” খুশি এখানে কোন অসুবিধা হচ্ছে না তো তোর?
“না খালামনি সব ঠিক আছে।(শুধু তোমার ছেলে ঠিক নেই _মনে মনে )
” আচ্ছা কিছু দরকার হলেই আমাকে নয়তো মাহির কে বলবি, এখন খেয়ে নে।
খুশি খাচ্ছিলো তখনি মাহির অপর থেকে রেডি হয়ে নিচে নামে খুশি মাহির কে দেখে মনে মনে বলে।
“উফফ এই ছেলেটা এতো জসস কেন?(মনে মনে)
মাহির খুশি দের দিকে না তাকিয়েই চলে যেতে নেই তখনি খালামনি ডাক দেই মাহির কে।

” মাহির না খেয়ে বাইরে যাবি না একদম।
মায়ের কথায় ঘুরে দারাই মাহির আর বলে।
“আম্মু আমি বাইরে খেয়ে নিব আমার একটা জরুরি কাজ আছে তারাতাড়ি যেতে হবে।
” একটু দারা খুশি কেও নিয়ে যাবি সাথে।
মাহির এবার ব্রু কুচকে খুশির দিকে তাকায় খুশি এতো খন মাহিরের দিকেই তাকিয়ে ছিলো মাহিরের তাকানো দেখে চোখ নামিয়ে নেয় খুশি।মাহির বলে।
“এই মেয়ে এখন দশ ঘন্টা ধরে খাবে আর আমি এর জন্ন্যে বসে থাকব নাকি?
খালামনি কিছু বলতে যাবে তখনি খুশি টেবিল থেকে উঠে বলে।
” আমার খাওয়া শেষ চলেন।।

মাহির রাগি চখে তাকায় খুশির দিকে কিন্তু খুশি পাত্তাই দিলো না।খালামনি বলে।
“নে হয়ে গেছে এবার যা।
মাহির আর কিছু বললো না রাগে ফুস্তে ফুস্তে বেরিয়ে গেলো, মাহিরের পিছু পিছু খুশি ও গেলো। দুই জনে গারি তে গিয়ে বসে মাহির রেগে আগুন আর খুশি ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। মাহির গারি চালাছে আর খুশি এদিক ওদিক তাকয়ে দেখছে। খুশির কথা বলতে খুব ইচ্ছা করছে কিন্তু মাহির কথায় বলে না,, খুশি আর চুপ থাকতে না পেরে বললো।।
” মাহির দা আপনি হাসতে জানেন না?
খুশির কথা শুনে চখ গরম করে তাকায় মাহির, খুশি ভয় পেয়ে বলে,,
“না মানে এমনিতেই বললাম আর কি,।(জর করে হেসে)
মাহির কোন উত্তর দিল না,,কিছুখন গারি চালিয়ে থেমে গেলো মাহির,গারি থামালে দেখে খুশি বলে।

” কি হলো?
“নেমে যা।
” মানে কি?
“মানে খুব সজা আমি তকে কলেজে নিয়ে যেতে পারবো না তুই একা যা।।
” এটা কি ধরনের কাজ একটা মেয়েকে একা ফেলে চলে যাবি তুই?
“আমার গারিতে যাওয়ার খুব শখ তোর এখন সখ মেটা নাম গারি থেকে।(ধমক দিয়ে)
খুশি ভয়ে নেমে পরে, খুশি নামা মাত্রই মাহির খুব জরে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো, এই দিকে খুশি রেগে বম।
” সালা বজ্জাত ব্যাটা হাতি তোর বিয়ে হবে না দেখিস তোর বউ ও তকে মাঝ রাস্তায় ফেলে চলে যাবে তখন তুই একা বসে বসে কান্না করবি আর আমি তোর কান্না দেখে হাসবো দেখিস ব্যাটা খচ্ছর।এখন আমাকে হেঁটে যেতে হবে।।

মাহির খুশি কে এমন জায়গায় নামিয়ে দিয়েছে যে কোন গাড়ি পাবে না,,আর এতো গরমের মধ্যে খুশির অবস্থা পানি পানি। খুশি এক বুক কষ্ট নিয়ে হেঁটে যেতে লাগলো।। অনেক খন পরে কলেজে এলো খুশি মুখের অবস্থা শেষ এতো সুন্দর করে সেজেছিল সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। খুশি কলেজের ওয়াশ রুমে গিয়ে চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিল। তারপর বেরিয়ে এসে ক্লাসের দিকে যেতে লাগে, যেতে যেতে একটু দূরে তাকিয়ে দেখল মাহির গতকালের ছেলে দুই টার সাথে বসে আছে। দেখেই রাগ লাগলো খুশির সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে চলে গেলো।।

প্রথম ক্লাস টা শেষ করে খুশি বাইরে বের হচ্ছিলো, দরজার কাছে গেছে আর তখনি একটা মেয়ে খুব জরে ছুটে এসে ক্লাসে ধুকছিল,, দুই জনে ধাক্কা লেগে নিচে পরে যায়। ওদের এভাবে পরে যাওয়া দেখে ক্লাসের সবাই জরে হেসে উঠে। খুশি বলে।
“আআহ এই মেয়ে উঠে দারাও আমার বেথা লাগছে কোমর টা আর নেই আল্লাহ।।(খুশি নিচে পরেছে আর খুশির ওপর মেয়েটা তাই খুশি একটু বেথা পেয়েছে।)
মেয়েটা বলে।।

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ১

” আরে তুমি মেয়ে দূর বাবা আমি ভেবেছি গল্পের মতো এক সুন্দর হান্ডসাম ছেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পরে গেছি তুমি আমার রোমান্টিক মুডে পানি ধেলে দিলা।।(মেয়েটা মন খারাপ করে বলে)
“আরে তুমি রোমান্টিক মুডে পরে যাবা এখন আমার ওপর থেকে উঠে যাও প্লিজ।।
মেয়েটা খুশির কথা শুনে উঠে দারায় তারপর খুশির দিকে হাত বারিয়ে দেই উঠার জন্যে, খুশি মেয়েটার হাত ধরে উঠে যায়।মেয়েটা বলে,,
” আসলে আমি ক্লাসে আস্তে দেরি করে ফেলেছি আজকে ও আম্মু ঘুম থেকে উঠাই নি তাই জলদি জলদি আসছিলাম। আচ্ছা তোমার নাম কি তুমি কি আমার সঙ্গে এক ক্লাসে? আমি অথৈ।। (খুশি কে কিছু বলার সুজগ না দিয়ে সে নিজেই বকবক করেই যাচ্ছে)

“আরে আমাকে কিছু বলার সুজগ তো দাও।(খুশি)
” আচ্ছা আচ্ছা বল এবার।
“আমি খুশি। নিউ এসেছি।
” ওহ আচ্ছা তুমি আমার ফ্রেন্ড হবে? আমি তোমাকে তুই করে বলি আসলে তুমি বলতে কেমন লাগে।
খুশি হেসে দেয় অথৈ এর কথা শুনে মেয়ে টা খুব চঞ্চল আর মিশুক দেখেই বুঝা যাচ্ছে ফ্রেন্ড করলে খারাপ হয় না এমনি তেও খুশি নিউ এখানে কাওকে চিনে না তেমন।।
“আচ্ছা তুই করেই বলবো।।
তারপর অথৈ কথার ঝুলি নিয়ে বসে। যেন কতো বছর চুপ ছিলো আজ খুশি কে পেয়ে সব কথা বলছে আর খুশি ওর কথা শুনে হেসেই যাচ্ছে।।।

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ৩