এই কেমন ভালোবাসা শেষ পর্ব || নুর নাফিসা খুশি || SA Alhaj

এই কেমন ভালোবাসা শেষ পর্ব
নুর নাফিসা খুশি

আজ ১০ দিন খুশি তার নিজের বাড়িতে চলে গেছে। এতে মাহিরের কষ্ট হলেও খুশি ব্যাপার টা ইনজয় করেছে। এই দশ দিনে প্রেম করার ইচ্ছে টা পূরন হয়েছে খুশির। সারারাত ফোনে কথা প্লাস চ্যাটিং। একদম বিএফ জিএফ এর মতো। মাহির অপেক্ষায় ছিলো কবে তারা রামপুর যাবে বিয়ের কথা বলতে। অবশেষে মাহিরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেই দিন এলো। আজ মাহিরের ফ্যামিলি যাবে রামপুর। মাহির খুশির নানুর কথা বিয়ে গ্রামেই হবে। তাই মাহির আগেই খুশি আর তার বিয়ের শেরওয়ানি আর লেহেঙ্গা বাকি যত বিয়ের শপিং করেছে সঙ্গে বাড়ির সবার জন্যও। খুশি নিজের বিয়ের শপিংয়ে আসতে পারেনি তাই তার সব কিছু মাহির পছন্দ করে কিনেছে।

মাহিরের ফ্যামিলি সহ আবির, অথৈ, রোদ ও যাচ্ছে তাদের সঙ্গে। বাকি মেহেমান হলুদের দিন আসবে,, গ্রামে পৌছাতে তাদের রাত হয়ে যায়।সাবাই এসেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরে।কাল খুশিকে দেখতে যাবে মাহিরের পরিবার। সঙ্গে বিয়ের দিন ঠিক করতে। মাহির বলেছিল খুশি কে ” তোকে আর কি দেখবো এমনেই তো দিন ঠিক করা যায়”। কিন্তু খুশি বলেছিল, ” না না আমার কত ইচ্ছা আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে আমি লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে তাদের সামনে চা নিয়ে যাবো “। খুশির এমন ইচ্ছার কথা শুনে মাহির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। খুশির ইচ্ছাতেই খুশি কে দেখতে যাচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

পরের দিন বিকেলে খুশিকে দেখতে যাওয়ার জন্য সবাই রেডি হচ্ছে। মামা,মামি, নানু ও যাবে। মাহিরের আব্বু, আম্মু,আবির,রোদ,অর্জুন সবাই যাবে শুধু মাহির যাবে না।
” আপনার সব প্রয়োজনীয় জিনিস সব আপনার লাগেজে আছে। সব ড্রেস গুছিয়ে রাখবেন।” (অথৈ রোদ কে বলে)
“কেন? তুমি কোথায় যাবা? এগুলা তো তুমিই গুছিয়ে রাখো।”(রোদ অবাক হয়ে বলে)
” আমি খুশির বিয়ে পর্যন্ত খুশির কাছে খুশির বাড়িতে থাকব।আপনি আপনার ফ্রেন্ডের কাছে থাকেন।”
“মানে কি! এতো দিন তোমাকে ছাড়া থাকব আমি?”(ছলছল নয়নে)
” হ্যাঁ থাকবেন। মাত্র কয়টা দিন।আপনিও আপনার ফ্রেন্ডের বিয়ের মজা নেন আর আমিও আমার বেস্টির বিয়ের মজা নেই। বাট মজা নিতে গিয়ে কোন মেয়ের সঙ্গে ঢলাঢলি করবেন না আবার।মনে থাকে যেনো!”(অথৈ রোদ কে শাসিয়ে বলে শেষের কথা গুলো)

খুশিদের বাড়িতে,
খুশির আম্মু অনেক রকমের নাস্তা বানাচ্ছে সবার জন্য। অরিন খুশিকে সাজাচ্ছে। খুশি শাড়ি পরেছে হাল্কা গোলাপি কালারের। চুল গুলো খোপা করেছে। তখনি ঘরে হুরমুর করে ঢুকে অথৈ। খুশি অথৈকে দেখেই জরিয়ে ধরে।
“আরে বা তোকে অনেক সুন্দর লাগছে তো! মাহির ভাইয়া দেখেই জ্ঞান হারাবে।”(অথৈ)
” হিহিহি।সবাই কি চলে এসেছে?”(খুশি)
“হুম। শুধু মাহির ভাইয়া আসেনি।”
” ওহহ।”(মন খারাপ করে খুশি)
মাহির কেন আসে নি খুশির সেটা জানা। মাহির নিজেই বলেছিল।”আমি তোদের বাড়ি একেবারে জামাই হয়ে যাবো তার আগে না”।

সবাই নিচে বসে আছে খুশির আম্মু নাস্তা দিচ্ছে সবাই কে । খুশির মামি খুশির আম্মু কে হেল্প করতে লেগেছে এসেই।মামা মামির তো বেশি কাজ, দায়িত্ব।দুইটা ভাগ্না ভাগ্নির বিয়ে।খুশির বাড়িও দেখতে হবে মাহিরের ও। খুশিকে নিচে আসতে বলে মাহিরের আম্মু।
“অরিন অথৈ! পাত্রপক্ষ দেখতে আসলে তো লজ্জা পেতে হয় কিন্তু আমার লজ্জা আসছে না কেন?”(মুখ ফুলিয়ে বলে খুশি)
” শালি তোর কোন দিন লজ্জা ছিলো যে আজ আসবে?(অরিন)
“একটা কাজ কর,তুই লজ্জা পাওয়ার অভিনয় কর তাহলেই হবে।”(অথৈ)
” আচ্ছা।”(খুশি)

খুশি মাথায় ইয়া বড় একটা ঘোমটা গিয়ে অরিন আর অথৈএর সঙ্গে আস্তে আস্তে হেঁটে নিচে যায়। খুশিকে এতো বড়ো ঘোমটাতে দেখে বাকি সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে খুশির দিকে। আবির সঙ্গে সঙ্গে মাহির কে ভিডিও কল করে দেখাতে লাগে সব কিছু চুপি চুপি।
“আরে খুশি তুই ঘোমটা দিয়েছিস কেন?”(মাহিরের আম্মু)
” আসলে আন্টি খুশির অনেক লজ্জা লাগছে তাই।”(অথৈ)
এটা শুনে অর্জুন ফিক করে হেসে দেয়।সে ভাল করেই জানে খুশি কেমন। কিন্তু অরিনের চোখ রাঙানো দেখে চুপ হয়ে যায় অর্জুন। আবির,রোদ মিটি মিটি হাসছে। এই দিকে মাহির তাকিয়ে আছে খুশি কি করে তা দেখার জন্য।
“আর লজ্জা পেতে হবে না ঘোমটা সরাও।”(মাহিরের আম্মু)

বলার সঙ্গে সঙ্গে খুশি ঘোমটা সরিয়ে দেয়।কারণ এটা বলার অপেক্ষায় ছিলো এতক্ষন ঘোমটা দেওয়ার কারনে কিছু দেখতে পাচ্ছিলো না। খুশি লজ্জা পাওয়ার ভান করে সালাম দেয় সবাই কে।তারপর সোফায় বসে একদম লজ্জাবতি লতিকা হয়ে। খুশিকে দেখে বুঝায় যাচ্ছে খুশি ড্রামা করছে লজ্জা পাওয়ার।কেউ কিছু বলছে না।সবাই তাকিয়ে আছে খুশির দিকে কি করে দেখার জন্য। এই দিকে অর্জুন তার হাসি আটকে রাখতে না পেরে সেখান থেকে উঠে বাইরে গিয়ে জোরে জোরে হাসতে লাগে। খুশি কে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে না দেখে খুশি নিজেই বলে।
“তোমরা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবা না?আমার নাম কি? আমি কোন ক্লাসে পড়ি? চুল কতটা বড়, ঠিক ভাবে হাঁটতে পারি কি না, রান্না করতে পারি কি না?

খুশির কথায় সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। আবির রোদ দাঁতে ঠোঁট চেপে মাথা নিচু করে বসে আছে। একেই তো অপরিচিত যায়গা তারপর খুশির এই কান্ড দেখে খুব হাসি পাচ্ছে।কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে হাসতেও পারছে না। মাহির এই দিকে এই সব দেখে হেসেই যাচ্ছে।তার হাসি কেউ শুনতে পায়না মিউট করা আছে তাই। নানু বলে
“এই ছেড়ি! তোমার নাম কি?”
” তুমি জানো না বুড়ি? আবার জিগাও!”(ভ্রু কুচকে তাকিয়ে)
“এই মেয়ে আমি আমার নাতির পক্ষে এসেছি সম্মান দিয়ে কথা বলো।”(নানু)
” ওহ তাই তো।সরি ভুলে গেছিলাম। ইয়ে মানে আমার নাম খুশি আহমেদ,নানু বুড়ি।”(লজ্জা পেয়ে আবার)
“তো কোন কেলাস পর্যন্ত পড়ালেহা করছো?”(নানু)

“মেডিকেল কলেজে পরে আছি।পড়াশোনা করি না হুদাই অ্যাডমিশন করিয়েছে। আমি তো বিয়ে করে সংসার করবো।”
” এই মেয়ে যে লজ্জার ভান করতে গিয়ে লাজ লজ্জার মাথা খাচ্ছে সেটা কি বুঝে না।”(অরিন অথৈকে ফিসফিস করে বলে)
“আচ্ছা অনেক হয়েছে লজ্জা আর প্রশ্ন। খুশি মামনি তুই আমার ঘরের বউ না মেয়ে হয়ে যাবি তোর কোন রান্না করতে হবে কাজ করতে হবে আমার ছেলে কে দেখে রাখলেই হবে। ”

খালামনির কথায় খুশি মুচকি হাসে। বড়রা মিলে বিয়ের ডেট ঠিক করতে লাগে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান, রাতে মেহেদী শুক্রবার বিয়ে। রিসিপশন কলকাতায় মাহিরের বাড়িতে হবে। আর মাত্র পাঁচ দিন পর গায়ে হলুদ। হাতে খুব কম সময়।যদিও মেহমানদের সবাই কে বলা আছে শুধু ফোন করে ডেটটা বলে দিবে। বাকি ডেকোরেশন,সেটা লোকদের বলে দেওয়া হবে তারাই করবে। খাওয়া দাওয়া ক্যাটারিং এর লোক দেখবে।
এর মধ্যে দুই দিন কেটে যায়।দুই বাড়িতে বিয়ে বিয়ে আবেশ।এর মধ্যে অনেক মেহেমান চলে এসেছে দুই বাড়িতে। ছোট ছোট বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করে খেলা করে বেরাচ্ছে।তারা আছে বলেই বিয়ে বাড়ি টা আরও মেতে উঠেছে। আজ খুশি মাহিরের গায়ে হলুদ। খুশিদের বাড়িতে খুশির গায়ে হলুদ হচ্ছে আর মাহিরের তার নানু বাড়িতে। মাহিরকে আগে হলুদ দিয়ে খুশিকে হলুদ লাগাবে সবাই।

আজ খুশি হলুদ কালারের শাড়ি। পরেছে সাথে কাঁচা ফুলের অর্নামেন্টস। দেখতে পুরাই হলুদ পরি লাগছে।অরিন অথৈ সেম হলুদ লেহেঙ্গা পরেছে ওদের দুই জন কেও খুব সুন্দর লাগছে। খুশিদের বাড়ির উঠানে হলুদের জন্য স্টেজ তৈরি করা হয়েছে। সবাই অনেক মজা করছে।বড়রা হলুদ বাটছে শিল নোরা দিয়ে। খুশি কে এনে তার জায়গার বসিয়েছে।অরিন অথৈ নাচ করে অনেক সুন্দর করে। কিছুক্ষন পরে মাহিরের বাড়ি থেকে কিছু মেয়ে হলুদ নিয়ে আসে। একে একে সবাই খুশি কে হলুদ মাখিয়ে দিয়েছে। এই দিকে মাহিরকে কিছু পারার ভাবি মিলে গোসল করাতে আসলে মাহির লুকিয়ে পরে। সে কোন মতেই ভাবিদের কাছে গোসল করবে না। রোদ অর্জুন ভাবিদের বুঝিয়ে তাদের পাঠিয়ে দেয়।পরে ওরা নিজেই গোসল করিয়ে দিল মাহির কে। এই দিকে খুশিরা অনেক মজা করে হলুদ প্রোগ্রাম শেষ করে। সব কিছু ভিডিও পিক তুলে মাহিরকে পাঠিয়েছে। মাহির তো খুশিকে দেখে ফিদা।

রাতে নানু বাড়ি তে মেহেদী হবে। নাচ গান এখানে দুই পরিবারের লোক এক হবে। দুই পরিবারের মেহমান একই তাই নানু বাড়িতে মানে পাত্রের বাড়িতে মেহেদী প্রোগ্রাম হবে। সন্ধ্যায় সবাই রেডি হয়ে জমিদার বাড়িতে আসে।খুশি গোল্ডেন কালারের লেহেঙ্গা পরেছে, হাল্কা মেক আপ।অনেক সুন্দর লাগছে খুশিকে। সবাই সুন্দর করে সেজেছে।খুশিকে দুইটা মেয়ে মিলে মেহেদী পরিয়ে দেয় দুই হাত ভরে। বাড়ির ছোট বড় সবাই মেহেদী দেয় দুই হাত ভরে। মাহির মেহেদী দিতে চাইনি।তার ধারনা এটা মেয়েদের দেওয়ার জিনিস সে কেন দিবে। বাট মাহিরের কথা কেউ না শুনে।তাকেও মেহেদী দিয়ে দেয়। বিয়েতে বর বউ কে মেহেদী দিতেই হবে এমন তাদের কথা।

এবার আসে নাচের সময়।অথৈ রোদ,অরিন অর্জুন দুই কাপল মিলে নাচে।”সালামে ইক্স” গানে। ওদের নাচ দেখে সবাই মুগ্ধ।অনেক সুন্দর করে ডান্স করেছে। এই দিকে আবির পরেছে মহা বিপদে।জান্নাত নামের এক মেয়ে সেই আসার পর থেকে যে পিছু পরেছে তো ছাড়ার নাম নেই। এখন ডান্স করার জন্য জোর করে। আবির বাধ্য হয়ে জান্নাতের সঙ্গে যায় ডান্স করতে। একে একে সবাই ডান্স করে।খুশি মাহির ও করে। রাত ১২ টায় অনুষ্ঠান শেষ করে খুশি তার আম্মু আব্বুর সঙ্গে নিজের বাড়িতে চলে যায়। যদিও মাহির আসতে দিচ্ছিল না। কিন্তু কাল বিয়ে, অনেক কাজ আর সবার রেস্ট নেওয়া খুব জরুরি।

পরের দিন সকালে জমিদার বাড়িতে সবাই নিজ নিজ রুমে সাজতে বিজি। রোদ,আবির,অর্জুন মিলে মাহিরকে বর সাজে সাজিয়ে দেয়। রেড গোল্ডেন মিশ্রিত শেরওয়ানি, মাথায় পাগরি। মাহির এমনেই দেখতে সুন্দর।বর সাজে কোন রাজপুত্তের থেকে কম লাগছে না।বরের ওপর অনেক মেয়ে ক্রাশ খেয়ে বসবে। আবির,রোদ,অর্জুন ও খুব সুন্দর করে রেডি হয়েছে।গ্রামের মেয়ে আর কলকাতা থেকে আসা মেয়েদের আজ মাথা ঘুরিয়ে ছাড়বে। বর কে তো বরের মতো সুন্দর লাগছেই এদের তিন জমকেও কম লাগছে না।

এবার আসে বিয়ে করতে যাওয়ার সময়। মাহিরের আম্মু মাহিরের মাথার চুল ঠিক করে পাগরি টা ভালো করে পরিয়ে দেয়। পাশ থেকে এক বয়স্ক মহিলা বলে উঠে।
“বল ‘মা,তোমার জন্য দাসি আনতে যাচ্ছি’।”
মাহির মুচকি হেসে বলে,
” আম্মু আমি তোমার জন্য মিষ্টি একটা মেয়ে আনতে যাচ্ছি।যে তোমার সঙ্গী হবে।”
মাহিরের কথায় বাকিরা অবাক আর মাহিরের আম্মুর মুখে ফুটে উঠে হাসি। আর বলে।
“সাবধানে যেও বাবা।”

মাহিরের জন্য ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করা হয়েছে। রাজা মহারাজার যেমন বড় বড় রত থাকে ঠিক তেমন। রোদ, আবির তো মহা খুশি এমন দেখে। কখনো এমন দেখেনি। বরের আগে তারাই উঠে বসেছে ঘোড়ার গাড়িতে। তা দেখে বাকি সবাই হাসে। মাহির ও উঠে বসে। মাহির, আবির, রোদ, অর্জুন ঘোড়ার গাড়ি করে যাবে বাকিরা অন্য গাড়িতে যাবে।
বউ সেজে বেডে বসে আছে খুশি।লাল টুকটুকে লেহেঙ্গা পরেছে,ভারি মেক আপ। বউ সাজে অনেক সুন্দর লাগছে খুশিকে। মাহির ঘোড়ার গাড়ি করে পুরো গ্রাম ঘুরে খুশির বাড়িতে আসে। পুরো গ্রামের লোক তাকিয়ে দেখেছে বর যাত্রীদের। খুশিদের বাড়িতে বর ঢুকতেই অরিন,অথৈ সহ আরও অনেকে গেট ঘিরে দাঁড়ায়।

“৫০ হাজার টাকা দেন।তারপর বিয়ে করতে পাবেন। নয়তো বউ ছাড়া আবার চলে যান।”(অথৈ)
“৫০ হাজার একটু কম হয়ে গেলো না?আরও বলো, দিচ্ছি।”(রোদ মজা করে বলে)
“আমরা ৫০ হাজার বলেছি।এখন আপনাদের টাকা বেশি থাকলে বেশি করে দিতে পারেন। আমরা কিছু মনে করবো না।”(অরিন)
“গেট ছাড়ো।কোন টাকা পাবে না।”(অর্জুন)
” না ছাড়ব না। টাকা দেন তারপরে।মাহির ভাইয়া ভেবে দেখেন,বউ ছাড়া যেতে হবে।”(অথৈ)
“দেখ ভাই আমি বউ ছাড়া যেতে পারব না।আর এটা ওদের পাওনা, দিয়ে দে।” (মাহির)

মাহিরের কথায় সব মেয়ে ইয়া হু করে উঠে। রোদ টাকা দিয়ে দেয় তার পরে গেট ছাড়ে। মাহির কে মিস্টি পানি খাইয়ে স্বাগতম করে। সবাই নিজের নিজের মতো মজা করছে। অরিন,অর্জুন, রোদ অথৈ এক সঙ্গে আছে এখন। কিছুক্ষন পরে বিয়ে পড়ানো শুরু হয়।আগে খুশির কাছে গিয়ে সাইন নেয় আর দোয়া পরে কবুল বলতে বলে। খুশি একটু চুপ থেকে কবুল বলে দেয়। পরে মাহিরের কাছে গিয়ে কবুল বলে। অতঃপর দুই জনের বিয়ে হয়ে যায়।সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে। বিয়ে শেষে খাওয়া দাওয়া শেষ করে খুশি কে মাহিরের কাছে আনা হয়। দুই জনের অনেক কাপল পিক তোলা হয় অনেকে এসে খুশি মাহিরের সঙ্গে পিক তুলে যায়। খুশি অনেক মজা করেই পিক তুলছে কারণ পিক তুলতে তার খুব ভালো লাগে। কিন্তু মাহির ক্লান্ত এতো পিক তুলে।খুশি হাজার রকম পোজ দিয়ে পিক তুলছে।

এবার আসে বিদায় এর পালা। দিদায়ের সময় খুশির কি কান্না! আর কান্না করবেই না কেন। এই সময় টা একটা মেয়ের কাছে কি তা একটা মেয়েই বুঝে। আব্বু আম্মু কে জরিয়ে ধরে অনেক কান্না করে খুশি। মাহির খুশির আর কান্না দেখতে না পেরে খুশিকে সবার সামনে কোলে তুলে নেয় খুশির আব্বু আম্মু কে উদ্দেশ্য করে বলে,
” আজ যা কান্না করলো করলো।এরপর ওর চোখে আর পানি আসতে দিব না। আসি তাহলে আম্মু আব্বু।”(মাহির)
মাহিরের কথায় খুশির আব্বু আম্মু অনেক খুশি হয়। হাসি মুখে বিদায় দেয়।মাহির খুশিকে তার গাড়ির সামনে বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে। রোদ,আবির কে বলে তাদের বাড়িতে যেতে রাত হবে। বলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় মাহির। বাকি সবাই ও বিদায় দিয়ে চলে যায়।

এই কেমন ভালোবাসা পর্ব ২৬

মাহির ড্রাইভ করে খুশিকে গ্রামের বাইরে নিয়ে যায়। খুশি বলেছিল কই যাচ্ছি মাহির বলেছিল লং ড্রাইভে। কতো মজার বিষয় তাই না? বিয়ের দিন বর,বউ লং ড্রাইভে! খুশি মাহিরের কাধে মাথা রেখে সামনে তাকিয়ে ভাবছে।
“আজ থেমে এই মানুষ টা শুধুই আমার।সব থেকে আমার অধিকার বেশি। কেউ কেড়ে নিতে পারবে না আমার কাছ থেকে। অনেক ভালোবাসি মাহির অনেক ভালোবাসি।”(মনে মনে)
মাহির অনেকক্ষন গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এসে একটা জায়গায় এসে থামে। মাহির গাড়ি থেকে বের হয়ে খুশিকে বের করে। খুশি বাইরে এসে তো অবাক। এতো সুন্দর পরিবেশ। পাহাড় আর বড় বড় গাছ। আশে পাশে কতো ফুলের গাছ। কোন লোক নেই শুধু খুশি আর মাহির। গোধুলি বেলা, অনেক সুন্দর পরিবেশ। মাহির খুশিকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলে।

” ভালোবাসি বউ।”
মাহিরের মুখে বউ শুনে মনে এক অন্য রকম ভালোলাগা ফিল করে খুশি।
“১২ বছরের অপেক্ষা আজ শেষ হলো। ফাইনালি আজ তোমাকে নিজের করে পেলাম। অনেক ভালোবাসি।এই আকাশের চেয়ে বেশি। কখনো কষ্ট দিব না কথা দিলাম।অনেক ভালোবাসা দিব।”
খুশি মাহিরকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে। মাহির খুশির কপালে চুমু একে দেয়। আজ দুই মনের মিলন হলো, ভালোবাসার মিলন হলো।এমন ভাগ্য খুব কম জনের হয়। কতো ভালোবাসার মানুষ,যারা পরিবারের চাপে আলাদা হয়ে যায়,ভেঙ্গে যায় দুই মন। সেই ক্ষেত্রে মাহির,খুশি অনেক লাকি।তারা এক হতে পেরেছে। দোয়া করি সকল ভালোবাসার মানুষ এক হোক। বেঁচে থাকুক মাহির খুশির মতো হাজারো ভালোবাসা।

————————সমপ্তি————————–

[আসসালামু ওয়ালাইকুম(সালামের উত্তর আশা করছি)। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ এতোদিন আমার সঙ্গে থাকার জন্য। গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন। গল্পটা যেভাবে সাজাতে চেয়েছিলাম হয়তো সেভাবে হয়নি। এই গল্প চলাকালীন অনেক সমস্যায় পরেছি,গাফিলতি করেছি, ডিপ্রেশনে পরেছি। জানি না কেমন হয়েছে। বানান ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। নতুন গল্প খুব জলদি আসবে। ভালো থাকবেন সবাই আর আমাকে ভুলে যায়েন না আবার। আল্লাহ হাফেজ️।??‍♀️]

(লেখাঃ নুর নাফিসা খুশি) এই লেখিকার আরও লেখা গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন এবং এই গল্পের সিজন ২ পড়তে চাইলেও এখানে ক্লিক করুন

2 COMMENTS

Comments are closed.