কাঞ্চাসোনা পর্ব ১০

কাঞ্চাসোনা পর্ব ১০
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

দুপুরের দিকে সকালের প্রচন্ড পেট ব্যাথা হয়ে মান্থলি পিরিয়ড শুরু হয়।নতুন পরিবেশ,নেই কোন পদক্ষেপ।হাজারো অসস্থি নিয়ে মনোয়ারাকে জানায়,তিনি তখনি প্রয়োজন সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেয়।সবসময়ই সকালের প্রচন্ড পেট ব্যাথা হয়।মায়ের কাছে থাকাকালীন সারাক্ষণ মায়ের কাছে শুয়ে থাকতো মাথায় হাত ভুলিয়ে দিতে বলতো,আর প্যানপ্যান করে এটা সেটার আবদার করতো।তার শাশুড়ী ফ্রী মানুষ,সকালকে খুবই ভালোবাসে আর যত্ন করে।উনি সকালকে গিয়ে শুয়ে থাকতে বলেন।

মনোয়ারার মনে পড়ে তার নতুন বউ হয়ে আসার পরের গল্প।প্রেম করেই বিয়ে করেছিলো দুজনে।কিন্তু শশুড়-শাশুড়ী মেনে নিতে পারেনি,বিশেষ করে উনার শাশুড়ী।কথায় কথায়,প্রতিটা কাজে মনোয়ারাকে খুঁচা দিয়ে কথা বলতেন।মনোয়ারা আসাদের মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ থাকতেন।না পারতেন সইতে না পারতেন মা বাবাকে বলতে।বাবা-মা কে কিভাবে বলতো নিজের পছন্দের বিয়ে করেছে তো!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আসাদ অবশ্য ভালো ছিলো,সে বুঝতে পারতো মনোয়ারার কষ্ট হচ্ছে,তাই উনাকে বুঝাতেন,ভালোবাসায় কষ্টটা ভুলিয়ে দিতে চাইতেন।পিরিয়ডের ব্যাথায় যখন কান্না করতো তখন উনার শাশুড়ী বলতেন “এসব কাজ না করার ধান্দা।যত্তডং।”মনোয়ারা ব্যাথা নিয়েই কাজ করতো মাঝে মাঝে আসাদ মায়ের থেকে লুকিয়ে এটা সেটা করে দিতো।তারপর আরেক সমস্যা হলো মনোয়ারার বাচ্চা হয় না।

দশ বছরেও যখন বাচ্চা হলো না তখন শাশুড়ী আসাদকে আবার বিয়ে করাতে চাইলে আসাদ না করে দেয়,তারপর দুজনকে ঘর থেকে বের করে দিলে আসাদ মনোয়ারাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসে।আসার বছরেই মনোয়ারার কোলজুড়ে আসে,মিতু-ধ্রুব।দুজনের সেকি আনন্দ।শেষ বয়সে অবশ্য তার কাছেই তার শশুড়-শাশুড়ী ছিলেন,উনি নিজেই তাদের সেবা যত্ন করেছেন।

কিন্তু ওই যে মনে একটা কষ্ট লেগেছে,সেটা ভুলতে পারেননি।উনার মনে হয়না উনার শাশুড়ী উনার সাথে কোনদিন ভালো করে কথা বলেছে,বা একটু বউয়ের সম্মান দিয়েছে।সবসময় কাজের মেয়ের মতোই ব্যবহার পেয়ে মনোয়ারা ভেবেছেন,আমার ছেলের বউ আমার আরেক মেয়ে হবে,কখনো কষ্ট দিবো না।বুকে আগলে শিখাবো।আমার প্রতি শ্রদ্ধা জাগিয়ে তুলবো।আমি যেই কষ্টগুলো পেয়েছি আমার বউকে কখনোই এই কষ্টগুলো পেতে দেবো না।

ধ্রুবর অফিস থেকে আসতে আসতে রাত হয়ে যায়।আজকে একটু বেশিই কাজ ছিলো।বাসায় এসে সকালের শুকনো মুখ দেখে।সকাল মুখ শুকনো করেই সবার সাথে খেতে বসলো।অল্প খেয়ে উঠে গেলো।ধ্রুব চুপচাপ দেখলো।রুমে গিয়ে দেখে সকাল শুয়ে ঘুমিয়ে গেছে।আজ এতো তাড়াতাড়ি ঘুমানোর কারনটা ধ্রুব বুঝলো না,ভাবলো শরীর খারাপ লাগছে হয়তো তাই।

বউয়ের সঙ্গ না পেয়ে ধ্রুব মন খারাপ করে শুয়ে পড়ে,কিন্তু ঘুম আসেনা,মাত্র দশটা বাজে এতো তাড়াতাড়ি ঘুমানো যায়!চুপ করে বিছানায় শুয়ে থাকে।
সকালের পেটের ব্যাথায় অসহ্য লাগছে।দাঁত কামড়ে সহ্য করে মাকে খুব মনে পড়ছে।মা একটু হাত ভুলিয়ে দিলেই যেন ব্যাথাটা নিমিষেই দূর হয়ে যায়।ফুপিয়ে কেঁদে উঠে।শব্দ না হলেও হালকা ফুপানো শোনা যায়।ধ্রুব উঠে লাইট জ্বালিয়ে সকালের সামনে এসে ফ্লোরে বসে।অবাক হয়ে বলে,

“তুমি ঘুমোও নি?”
সকাল হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে।
“কাঁদছো কেন?বাবা মাকে মনে পড়ছে?”
সকাল কিছু বলেনা।উনার সাথে এতোটা ফ্রী এখনো হয়নি যে নির্দিধায় সব বলা যায়,আড়ষ্ট হয়ে সকাল চোখ বন্ধ করে নেয়।ধ্রুব শান্ত হয় না সে থাকতে তার এতো আদরের বউ কান্না করবে কেন?

“দেখি উঠে বসো তো।”
ধ্রুব সকালকে টেনে বসায়।
মুখোমুখি বসে সকালের হাত তার দু’হাতে মুঠোয় নিয়ে আদর মাখিয়ে বললো,
“সোনা পাখিটার কি হয়েছে ? আমাকে না বললে বুঝবো কি করে?”
সকাল আস্তে করে বললো , “এমনিই।”
“মিথ্যা বলা লাগবে না সত্যিটা বলো।”

সকাল যানে ধ্রুব সত্যিটা বের করবেই।সে আস্তে বললো,
“পেট ব্যাথা।”
ধ্রুব ব্যাস্ত হয়ে বললো,
“হঠাৎ পেট ব্যাথা কেন?কখন থেকে?”
সকাল বিব্রতবোধে চোখ নামিয়ে নেয়।ধ্রুব বুঝতে পারে ব্যাথাটা কিসের।কিছুক্ষণ চুপ করে বললো,
“কখন শুরু হলো?”
ধ্রুব বুঝে গেছে?কিভাবে বুঝলো?সকালের এবার লজ্জায় মরে যাবার অবস্থা।চোখের মনি এদিক ওদিক ঘুরায়।ধ্রুব সকালের লজ্জা দেখে বলে,

“সকাল পিরিয়ড হওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যাপার।এটাতে এতো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।এটা আল্লাহ প্রদত্ত।আর ভেবো না ছেলেরা এসব বুঝে না বা জানে না।সব ছেলেরাই বুঝে।আমিও বুঝি।আমি তোমার হাজবেন্ড তোমার সব ব্যাপারে আমাকে বলবে।তোমার কি বেশী কষ্ট হচ্ছে?”
ধ্রুব সব কথা এতো সহজ স্বাভাবিকভাবে কি করে বলে?সকাল চুপ থাকে।ধ্রুব সকালের হাতে আলতো চাপ দিয়ে বললো,
“বেশি ব্যাথা করছে?”
প্রচন্ড ব্যাথা করছে সকাল মাথা নাড়িয়ে কেঁদে দেয়।সকালকে কাঁদতে দেখে ধ্রুবর ভালো লাগেনা।কাছে টেনে একহাতে জড়িয়ে ধরে।

“ওষুধ খেয়েছো?”
“মা দিয়েছে।”
ধ্রুব সকালের চোখের পানি মুছে বললো,
“দেখি,কেঁদে কি অবস্থা করেছো মুখের।যাও ফ্রেস হয়ে আসো।”
সকাল ফ্রেস হয়ে আসতে আসতে ধ্রুব রান্না ঘরে যায় পাতিলে পানি নিয়ে চুলায় বসায়,সচরাচর তার আব্বাকে দেখেছে পানি গরম করে হট ব্যাগে নিয়ে তার আম্মাকে দিতে আজকে সে দিবে তার বাচ্চাটাকে ।সকাল ধ্রুবকে রুমে না পেয়ে বেরিয়ে এসে রান্না ঘরে পায়।অবাক হয়ে বলে,

“আপনি এখানে কি করছেন?”
ধ্রুব বললো,
“পানি গরম করে হট ব্যাগে নিয়ে দিব।তুমি পেটের উপর রাখলে আরাম পাবে।”
ধ্রুবর এই ছোট ছোট খেয়াল,যত্নগুলো সকালের মনে ভালোবাসা বাড়ায়।নিজেকে খুব ভাগ্যবতী ভাবায়।চুলায় বসানো পাতিলের দিকে তাকিয়ে থাকে।ধ্রুবই আবার বলে,

“তখন ভাত খেতে পারলেনা,কিছু খাবে?”
সকাল দুষ্টুমি করে বললো,
“খেলে কি রান্না করে খাওয়াবেন?”
“বলেই দেখো।”
সকাল ভেবে বললো,
“নুডুলস খাবো।”

ধ্রুব মাথা নাড়িয়ে হাসে আর বলে, “যাক বাবা পারা জিনিসই খেতে চাইলে।”
ধ্রুব নুডুলসের সামগ্রী রেডি করে।সকাল এগিয়ে পাশে এসে দাঁড়ায়।
“কেন আর কিছু রান্না করতে পারেন না?”
“ভাত,ডাল,আলু ভর্তা,মাছ ভাজি,নুডুলস,কফি।এগুলোই৷ পারি।আম্মা শিখিয়েছে একা থাকলে যেন চলতে পারি।”
সকাল অবাক হয়ে ধ্রুবর কথাগুলো শুনে।

“তারপর বলে আম্মা যদি এখন দেখে আমার জন্য রান্না করছেন কিছু বলবেনা?”
ধ্রুব জ্বিভ দিয়ে ‘চ’কারান্ত শব্দ করে বললো,,
“কিছু বলার কি আছে?আমার বউকে আমি রান্না করে খাওয়াতেই পারি।”
“আমাদের গ্রামে হলে বলতো বউয়ের নেউটা।আঁচলের নিচে পড়ে থাকা পুরুষ।”
সকালের কথা শুনে ধ্রুব হাসে।
মাথা নেড়ে বলে,

“বউয়ের নেউটা হবো না তো পাশের বাড়ির ভাবির নেউটা হবো?”
সকাল মুগ্ধ চোখে ধ্রুবকে দেখে শ্যামবর্ণা গায়ে কালো গেঞ্জি ভেতর দিয়েই বলিষ্ঠ দেহ নজর কাড়ছে।ধ্রুবর সাথে বিয়ে হবার পর থেকেই সকালের নজর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এই যে চুপিচুপি ধ্রুবর আগাগোড়া গ্রোগাসে গিলে এটা কি ভালো কথা?ধ্রুব আড়চোখে বালিকার সুচালো দৃষ্টি দেখে মনে মনে হাসে।রান্না শেষ হলে সকাল খায়,খেয়ে খুব প্রসংসা করে।ধ্রুব প্রশংসা শুনে খুবই খুশী হয়।

তারপর ধ্রুব আর সকাল দুজনে বিছানার মধ্যিখানে বসে।ধ্রুব তার বুকে হেলান দিয়ে সকালকে বসিয়ে পেটে হট ব্যাগটা রাখে।সকাল মাথা নামিয়ে মুচকি হাসলে ধ্রুব বলে,
“সুন্দরী হেসো না হেসো না।যা কষ্ট দিচ্ছো সারাজীবন মনে থাকবে।”
ধ্রুব সানিধ্যে সকালের মন ভালো হয়।সব কথাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুব্দ।বিরবির করে বলে,
“কি কষ্ট দিলাম।”

ধ্রুব মাথা কাত করে সকালের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
“যদি সেটা বুঝতে,পাগলের মতো শুধু আমাকেই খুজতে।”
সকাল মনে মনে ভাবে,ধ্রুব বাবু আমি বোধহয় কিছুটা বুঝে গেছি।তাইতো আপনি কাছে এলে সারা শরীরে বিষব্যাথা চিরবিরিয়ে ওঠে।আপনার ঘ্রান পেলেই মাথা গরম হয়ে যায়।মাথা দুলিয়ে বললো,
“আচ্ছা।”

সকাল খুব সহযভাবে ধ্রুবর কোলে শুয়ে পেটে মুখ গুজে দিলো।যদিও কাজটা খুব সহজ ভেবেই করেছিলো এখন নাকের ডগা লাল হচ্ছে,ধ্রুব শরীরের মাতোয়ারা ঘ্রান নাকে দিয়ে ফুসফুসে গিয়ে ধাক্কা দিচ্ছে।সকাল পেটে নাক ঘষে ঠোঁঠ নাড়িয়ে ধ্রুবর শোনার মতো ফিসফিস করে বললো,

“মাথায় হাত ভুলিয়ে দিন।”
ধ্রুবর মুখ আবেশে ভরে উঠে।চোখ স্থির করে সকালকে দেখে।সকালের ছোঁয়ায় পিঠ বেয়ে ঠান্ডা স্রোত ছুটে যায়।সে যানতো অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।সকাল যেন তার ছোট ছোট দোলায় তাকে দুলিয়ে যাচ্ছে।তার দেহ অবস হয়ে আসে।সকালের কথা মতো মাথার চুলে আলতো করে হাত ভুলায়।সকাল চোখ খুলে ধ্রুবকে দেখে।ধ্রুব সকালের তাকানো দেখে হেসে ফেলে বললো,

“কি দেখো?”
সকাল এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো,
“গান শুনবো।”
ধ্রুব মাথা নাড়িয়ে বললো,
“আমিতো গান পারি না জান।”
সকাল বাচ্চাদের মতো করেই বললো,
“না আমার জন্য পারতে হবে প্লিজ।”

“এটা কি গান গাওয়ার সময়?”
সকাল ভাব নিয়ে বললো,
“বউ বললে,অসময়ও সময় হয়ে যায়।”
ধ্রুব সকালের নাক টেনে দিয়ে বললো,
“আরে বাব্বা আমার বউ তো বেশ কথা শিখেছে।”

সকাল আহ্লাদী মুখে হাসে।ধ্রুব মিষ্টিমুখের অধিকারীনির দিকে তাকিয়ে থেকে মাথাটা নিচু করে চিবুকে একটা চুমু খায়,ফিসফিস করে বললো,
“তোমাকে এতো আদর আদর লাগে কেন জান।”
সকাল ছটফটিয়ে বললো,
“গান শুনবো।”

“শুনে আবার হাসবে না কিন্তু।”
সকাল ভালো মেয়ের মতো মাথা নেড়ে বললো,
“আচ্ছা।”
ধ্রুব কিছুক্ষণ চুপ থাকে।ভার্সিটিতে থাকতে বন্ধুরা মিলে কতো গান গাওয়া হতো।সে তার পুরুষালী গলায় গেয়ে উঠে,
❝ঘুমাও তুমি ঘুমাও গো জান,

ঘুমাও আমার কোলে…..
ভালবাসার নাও ভাসাবো,
ভালবাসি বলে….❞
❝তোমার চুলে হাত বুলাবো,
পূর্ণ চাঁদের তলে …..
কৃষ্ণচূড়া মুখে তোমার,
জোসনা পড়ুক কোলে…..
আজকে জড়ায় ধরবে,
তোমার মনকে আমার মন….
গাইবে পাখি, গাইবে জোনাক ;

গাছ গাছালি বন….❞
❝এত ভালবাসা গো জান,
রাখিও আঁচলে….
দোলাও তুমি, দুলি আমি ;
জগত বাড়ি দোলে …..❞
❝শব্দ ঘুমের মূর্ছনাতে,
বাতাসও সুর তোলে…..
ভালবাসার শিশির কণা,
পড়বে ও আঁচলে….
এত ভালবাসা গো জান,
রাখিও আঁচলে….

দোলাও তুমি, দুলি আমি ;
জগত বাড়ি দোলে …..
ঘুমাও তুমি ঘুমাও গো জান,
ঘুমাও আমার কোলে…..
ভালবাসার নাও ভাসাবো,
ভালবাসি বলে……❞

সকাল এক নজরে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে থাকে।ধ্রুব সকালের দিকে তাকিয়েই গানটা গায়।সকালের চোখে মুখে সুখের রেশ লেগে আছে।ধ্রুব বিবস হয়ে তাকিয়ে আছে,এই যে অপেক্ষা এই যে দাঁত কাঁমড়ে পড়ে থাকা,এগুলো তো এই মেয়েটার খুশীর জন্যই।ধ্রুব সকালে চোখে স্পষ্ট ভালোবাসা দেখতে পায়,এই যে এখন ডাগর চোখের ঝাপটানোতে পাগলের মতো তাকে কাছে ডাকছে ধ্রুব এই জায়গাটা তৈরি করে নিয়েছে বলেই তো!ধ্রুব ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়।হালকা হয়ে আসা গলায় বলে,

“কি দেখো? ”
সকালের দুই চোখ তখনো ধ্রুব সারা মুখে বিচরন করছে।লাল কালচে ঠোঁট গুলো ছোঁয়ার অদম্য ইচ্ছায় ভেতরটা কুঁকড়ে যাচ্ছে।ভেতরে কি জানি ভাঙ্গচুর হচ্ছে সেই ভাঙ্গচুরের চোটে গলা বুজে আসে।বুজে আসা গলায় বললো,
” আমার এতো পাগল পাগল লাগছে কেন?”

সকালের এই কথাগুলো ধ্রুবকে সুখ দেয়।কিছু না বলে গভীর চোখে সকালকে দেখে।সকালের চোখে আজ অন্য নেশা নেই ভয়,শুধু উজ্জ্বল চোখে তাকে দেখছে।দুজনের চোখে চোখে কথা হয়,অনুভূতির বিচরণ হয়।সম্মোহনী চোখে তাকিয়ে দুজনের মন অজানা কথায় মেতে উঠে।সকালের এমন সম্মোহনী দৃষ্টি দেখে ধ্রুব সাহস পায়।সে তার তুলতুলে বাচ্চা বউটাকে খানিকটা উপরে তুলে নরম গোলাপী ঠোঁটে স্বাধ খুঁজে নেয়।সকালের চোখে পানি আসে,অবশ্যই সুখের পানি।ধ্রুবকে ঠেলে দুরে সরিয়ে বালিশে শুয়ে বলে,

“আমি ঘুমাবো ডিস্টার্ব করলে মিতু আপুর রুমে চলে যাব।”
ধ্রুব মনে মনে হু হা করে হাসে।হুমকি দিচ্ছে?আজকে কি বেশীই লাজে লাল হচ্ছে না?আদরের পরিমান বেশী হয়ে গেলো নাকি?আহা বাচ্চা বউ!অসুস্থ পাখিকে আর বাসা থেকে উড়াতে ইচ্ছে করে না,আজকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উড়েছে,ধ্রুব এখনো উড়ছে,একাকি।

কাঞ্চাসোনা পর্ব ৯

❝পাঠকমহল পিরিয়ড নিয়ে কথা বলেছি বলে কেউ আবার মারতে টারতে চলে আসবেন না।আজকাল এটা সবাই বুঝে,নাইন টেনের বইয়ে বিস্তারিত লিখা থাকে,ইন্টারনেট,ফেসবুক সব জায়গায় পিরিয়ড নিয়ে সতর্কতা।সেগুলো কি ছেলেরা দেখে না?দেখে,বুঝে।আর এটা নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই।আচ্ছা এখন সবাই বকা দিতে পারেন।❞
❝অনেকেই বলে সকাল আহ্লাদী, বেশীই আহ্লাদ করে।আমি বলি কি মেয়েরা জামাইর সাথে আহ্লাদ না করে কি আপনার আমার সাথে আহ্লাদ করবে? ভাই আহ্লাদেরও দাম আছে,এমনি এমনি আহ্লাদ করা যায় না প্রিয় মানুষটা কাছে থাকলেই আহ্লাদ আসে।❞

কাঞ্চাসোনা পর্ব ১১