কাঞ্চাসোনা পর্ব ৪

কাঞ্চাসোনা পর্ব ৪
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

ধ্রুবরা বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত দুইটা বেজে যায়।জ্যাম ঢেলে এসে সবাই ভালোরকম ক্লান্ত।ধ্রুব ভেবেছিল বাসায় এসে বউ কাছে পাবে কিন্তু মিতু তা হতে দিলো না।সে সকালকে নিয়ে ধ্রুবর রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিল।ধ্রুব কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে চুপচাপ গেস্টরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিল।বর্তমানে মিতুর দখলে তার বউ তা না হলে মিতুর অবস্থা বারোটা বাজিয়ে ছাড়তো।সে আধাঘন্টা পরে রুমের সামনে গিয়ে নক করলো।মিতু দরজা ফাক করে মাথা বের করে বলল,

“কি সমস্যা?”
ধ্রুব কি বলবে ভেবে পেল না।মাথা চুলকে বলল,
“একটু দরকার আছে।”
মিতুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ধ্রুব দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ে।তারপর স্তব্ধ হয়ে ড্রেসিংটেবিলের দিকে তাকিয়ে থাকে,লম্বা কালো চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে।গায়ে জড়িয়েছে কালো পাড়ের লাল সুতির শাড়ী,সকালের মোমের মতো ফর্সা শরীর চকচক করছে।ধ্রুব একনজরে তাকিয়ে থাকলো।সকাল ধ্রুবের উপস্থিতি টের পেয়ে জড়োসড়ো হয়ে আঁচল টেনে মাথায় দিল।ধ্রুব কাছে আসলেই সকালের হাটু কাঁপে সাথে কাঁপে হৃদপিণ্ড।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মিতু ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে,তার শতোভাগ আস্তা ছিল ধ্রুবর মেয়ে পছন্দ হবেই,হলোও তা।মিতু কাছে এসে ধ্রুবর কাধে ধাক্কা মেরে বলল,
“কি!বিয়ে করবি না করবি না জপলি এখন বউ দেখতেছিস কেন?আম্মার পছন্দের বউ আম্মা দেখবে, যা যা রুম থেকে যা।”
মিতুর কথা শুনে ধ্রুব বিব্রত হয়।মিতুর দিকে তাকিয়ে বলে,

“আজব তুই আমার সাথে এমন করছিস কেন?বউটা আমারই তো তাহলে দেখলে কি সমস্যা?অনেক রাত হইছে এবার ভাগ।যা।”
ধ্রুবের কথায় মিতু হাসে।তারপর আদেশের ভঙ্গিতে বলে,
“যা আব্বার রুম থেকে টেবিল ফ্যানটা নিয়ে আয়।”
ধ্রুব চোখ কুচকে বলে,
“সিলিং ফ্যান থাকতে টেবিল ফ্যান দিয়ে কি করবি?”
মিতু সকালকে ইশারা করে বলে,

“তোর বউয়ের তো হাটু সমান লম্বা চুল,কিভাবে শুকাবো?না শুকালে ঠান্ডা লাগবে আর চুল থেকেও ভিজা গন্ধ আসবে তাই টেবিল ফ্যানের বাতাস দিয়ে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নিবো।”
বউয়ের দরকার শুনে ধ্রুব আর দেরী করল না।চুপচাপ গিয়ে ফ্যান এনে সেট করে দিল।মিতু সুন্দর করে সকালের লম্বা চুল নেড়েচেড়ে শুকিয়ে দিল।ধ্রুবর ইচ্ছে করছিল সে শুকিয়ে দেবে,কিন্তু লজ্জায় বলা হলো না,খাটে আধাশোয়া হয়ে বসে মোবাইল দেখার বাহানা করে সকাল’কেই দেখছিল।চুল শুকিয়ে যেইনা মিতু চলে যেতে নিবে সকাল তখনি এক কাজ করে বসে।

মিতুর হাত আঁকড়ে ধরে।মিতু সকালের দিকে তাকায় মেয়েটার মুখটা খুবই ফ্যাকাসে লাগছে।সে জিজ্ঞেস করে,
“কি হয়েছে সকাল?”
মিতুর কথা শুনে সকাল কেঁদে দেয়,ফুপিয়ে কেঁদে বলে,
“আপু আমি আপনার সাথে ঘুমালে কি বেশি সমস্যা হবে?”
মিতু সকালের মনের অবস্থা খুব বুঝতে পারে,অচেনা মানুষ অচেনা জায়গা সব মিলিয়ে মেয়েটা খুবই নার্ভাস।এই যে চেহারাটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে এটা তো ভয় পাচ্ছে বলেই হচ্ছে।এখন এখানে থাকলে ভয়ে ঘুমাবেও না জার্নি করে না ঘুমালে শরীর খারাপ করবে তাই মিতু সিধান্ত নিল সকাল তার সাথেই থাকবে।আদর করে সকালের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“কোন সমস্যা হবেনা আপু।চল আজকে দু’বোন একসাথেই ঘুমাবো।চল।”
সকালের মুখে হাসি ফুটে উঠে আর চোরাচোখে ধ্রুবকে দেখে।ধ্রুব স্তব্ধ হয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে সকাল চোখ নামিয়ে ফেলে।

ধ্রুব এতোক্ষণ চুপচাপ দুজনের কথাই শুনছিল।একেকটা কথা মিসাইলের মতো আঘাত করছিল।মিতু যখন বলল চল তখন অসহায় খরগোশ ছানার মতো তাকিয়ে রইল,মিতু চাইলে বুঝিয়ে রেখে যেতে পারতো কিন্তু না সাথেই নিয়ে গেল।ছোট মেয়েদের বিয়ে করার এই এক জ্বালা,বউ কি কখনো জামাই রেখে ননদের সাথে ঘুমাতে যায়?তাও প্রথম রাতে!তার বউ গিয়েছে,যেমন তেমন যাওয়া না কেঁদেকেটে গিয়েছে,আম্মা শুনলে ভাববে তার হুরপরীকে কি না কি করে ফেললাম।আচ্ছা বউটা কি ধ্রুবকে ভয় পাচ্ছে?

ধ্রুব মুচকি হাসলো ভাবলো সকালের সাথে ধ্রুব ভয়ের কোন কাজই করবেনা,আগলে নিবে,ভালোবাসা শিখাবে,মায়ের কথামতো ম্যাচিউরিটি শিখাবে।তারপরেও আজকে রাতটা তো তাদের দুজনের জন্য স্পেশাল রাত।ধ্রুবর মনে হলো বিয়ে করতে অমত করার শাস্তি এটা,বউ ছাড়া বাসর রাত!ধ্রুবর ঘুম আসেনা ছটফট করে উঠে বসে।ধ্রুবর মন চাইছে পাশের রুম থেকে সকালকে কোলে করে নিয়ে আসতে,কিন্তু ওই যে মন যা চায় তা করা সম্ভব না।সে কোলবালিশ জড়িয়ে ভাবে, বউয়ের সাথে বাসর না হয়ে কোলবালিশের সাথে কোলাকুলি করতে হচ্ছে একেই বলে কপাল।তারপর হঠাৎ নামাজের কথা মনে হলে ঝটপট দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নেয়।

সকাল মিতুর সাথে ঘুমাবে।সে ভেবেছিল তার শাশুড়ী কি না কি বলেন,কিন্তু মনোয়ারা কিছু মনে করে নি,হাসিমুখে সকালের চুল বেনী করে দেয়,সকাল বিছানায় শুয়ে ভাবলো তার এভাবে চলে আসা ঠিক হলো না,সবাই মুখে কিছু না বললেও মনে মনে নিশ্চয়ই খারাপ ভাবছে।ভাবুক তাতে কি তারপরেও ধ্রুবর থেকে তো দূরে,সকালের থেকে বয়সে কতো বড়ো হবে,উনি তাকালে সকালের বুক কেঁপে ওঠে।আচ্ছা বিয়ে করা বর কে এতো ভয় পেলে সংসার হবে কি করে?এসব ছাইপাঁশ ভাবতে ভাবতে সকাল ঘুমিয়ে গেল।

ধ্রুব সারারাত ঘুমাতে পারলো না।ভোরে চোখ লেগে গেলো।নাস্তার টেবিলে ডাক পড়াতে খুবই বিরক্ত সে,মাথা ভার হয়ে চোখ ভিষন জ্বলছে,তখনি মনে হলো নতুন সদস্যের কথা,যার কথা ভেবে সারারাত দু’চোখের পাতা এক করা হয়নি।ঝটপট ফ্রেস হয়ে ডাইনিং টেবিলে উপস্থিত হলো,কিন্তু ধ্রুবর কপাল বরাবরের মতো ভীষন খারাপ,সবাই উপস্থিত থাকলেও বেনীওয়ালী অনুপস্থিত।মনের আশা পুরন না হওয়াতে ধ্রুবর মন খারাপ হয়।চুপ করে নাস্তা খায়,আজকে অফিসে যেতে হবে সুতরাং এখন না দেখলে আর দেখার সুযোগ হবে না,সবাই যার যার মতো চলে যাওয়ার পরে ধ্রুব মিতুকে বলল,

“এই মিতু আমার বউ কই?”
মিতু রুটি চিবুতে চিবুতে বলল,
“এতো বউ বউ করিস কেন?নিলজ্জ কোথাকার।”
ধ্রুব পানির গ্লাস হাতে নিয়ে বলল,
“বউ কে বউ না বলে কি খালাআম্মা বলবো?গাধা।”
মিতু হেসে বলে,

“তোর বউ ঘুমায়।বেচারীর শরীরটা খুব খারাপ।”
ধ্রুব মাথা চুলকে বলল,
“একটা নাপা টাপা খাওয়াই দিতি।”
মিতু হেসে বলল,

“আম্মা খাওয়াইছে।উনি তো তোর বউকে পারেনা মাথায় তুলে রাখে।আমাকে ডেকে নিয়ে বলে,দেখলি মিতু বলছিলাম না মেয়ে পরীর মতো দেখতে।এখন দেখ সকাল আমার বাসায় আসাতে বাসা টা আগের থেকেও বেশী ঝিকমিক করছে।”
ধ্রুব মুচকি হাসে।তার বউয়ের প্রশংসা শুনতে ভালোই লাগছে।মিতু রান্নাঘরে চলে যাওয়ার পরে ধ্রুব ফট করে মিতুর রুমে ঢুকে যায়।তারপর বিছানায় দিকে আস্তেধীরে এগিয়ে যায়।

ধ্রুব সকালের মুখের দিকে তাকায় বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে ঘুমাচ্ছে,ধ্রুবর কাছে খুব আদুরে লাগলো।কপালের ছোট চুলগুলো মুখে লেগে আছে।সকাল এপাশ কাত হয়ে ঘুমাচ্ছে,তার লম্বা চুলের বেনী বিছানা ছেড়ে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে।ধ্রুব এগিয়ে যায় নিচু হয়ে সকালের বেনী হাতে নেয়,চুল থেকে ভুরভুর করে শ্যাম্পুর ঘ্রান আসছে।ঠিক তখনি সকাল ফট করে চোখ মেলে তাকায়,চোখের সামনে অচেনা পুরুষ দেখে ভরকে যায় মূহুর্তেই মনে পড়ে এটা তার স্বামী।জলদি করে উঠে বসাতে,ধ্রুবর হাতে থাকা চুলের বেনীতে টান পড়ে,সকাল।অস্ফুটে শব্দ করে, ধ্রুব বেনী ছেড়ে বলে সরি।

সকাল অবশ্য এদিকে খেয়াল করলো না,সে মনোযোগ দিয়ে তার শরীরের কাপড় দেখছে।শাড়ী পড়ে ঘুমানোর অভ্যাস না থাকায় ভয় ছিল কাপড় না নড়েচড়ে যায়,কিন্তু কাপড় ঠিক দেখে সস্থির শ্বাস ফেলে।পলক তুলে ধ্রুবকে দেখে,ধ্রুব তখনো মন দিয়ে সকালকে দেখছে।সকাল অকারনেই লজ্জা পেল,সে মাথা নিচু করে বসে রইলো।ধ্রুবর খুব ভালো লাগছে।এলোমেলো বেশে ঘুম থেকে উঠা সকালকে তার খুব ভালো লাগছে।লজ্জামাখা লাল মুখটা দেখতেও কি আদুরে লাগছে।ধ্রুব সেদিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে বলল,

“আপনার গালগুলো এতো লাল কেন সকাল?”
সকাল চোখতুলে ধ্রবকে দেখলো।এটা কি রকমের প্রশ্ন?এর উত্তর কি দেয়া যেতে পারে?লোকটা তার কাছে আসলেই এমন উদ্ভট প্রশ্ন করে কেন?সকাল কি বলবে ভেবে পেল না মাথা নিচু করে হাতে কাপড়ের আঁচল পেচাতে থাকলো,তখনি মিতু এলো।ধ্রুবর পিঠে কিল মেরে বলল,

“চোরের মতো আমার রুমে কি করিস?”
ধ্রুব পিঠে হাত দিয়ে থমথম খেয়ে বলল,
“কি করি মানে!কি করবো আর,এমনি আসছিলাম তোর রুমে অনেকদিন আসা হয় না।”
মিতু চোখ বড়ো করে বলে,
“ওহ আচ্ছা।তাই!”

ধ্রুব মিতুর কথার কোন উত্তর দিল না।বউকে কাছে না পাবার কারনে এবার বেশ রাগ হলো,ছোট বাচ্চাদের মতো অভিমানের ছাপ মুখে ফুটে উঠলো,আর কিছু না বলে লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেল।
মিতু হেসে মাথা নাড়ে।এবার একটু সুযোগ দেয়া দরকার,ধ্রুব বেচারী বউ না পেয়ে রেগে গেছে।ধ্রুব চলে যাবার পরে মিতু সকালকে বলে,

“ধ্রুব কি তোমার ঘুম ভেঙ্গেছে সকাল?”
সকাল দ্রুত বলল,
“না আপু আমিই উঠে পড়েছি।”
“আরো ঘুমাবে? ”
“কয়টা বাজে আপু?”
মিতু মোবাইলে টাইম দেখে বলল,
“এইতো আটটা বাজে।”

নতুন বউ হয়ে এতো বেলা করে ঘুমানো ঠিক হয়নি।সকাল ফ্রেস হয়ে রান্নাঘরে যায়।মনোয়ারা নাস্তার থালাবাটি ধুয়ে পরিষ্কার করছেন,সকাল ভাবলো এতো বেলা করে ঘুমানোর জন্য বোধহয় তার শাশুড়ী খুব রাগ করবেন,সে তার গ্রামে এমনটাই হতে দেখেছে।মনোয়ারা সকালকে দেখে মিষ্টি করে হাসে,
“শরীর কেমন লাগছে সকাল?”
সকাল মনোয়ারার কথায় হাপ ছেড়ে বাঁচে।মিষ্টি স্বরে বলল,

“ভালো মা।”
তারপর আবার বলল,
“দিন মা আমি ধুয়ে দেই।”
মনোয়ারা চায়ের পাতিল থেকে চা কাপে চান নিলেন,তারপর সকালের হাতে দিয়ে বললেন,

“এসব কাজ পড়েও করা যাবে এখন ধ্রুবকে দিয়ে আসো ও আবার অফিসে যাওয়ার আগে রঙ চা খায়।”
সকাল বিব্রত মুখে ধ্রুবের রুমে ঢুকলো।ধ্রুবর মেজাজ তখন পারদ কাঠির উর্ধে।অফিসের পোশাক পড়ে হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি পড়ছে,দরজা ঠেলে সকালকে আসতে দেখে মুখের বিরক্তিভাব মূহুর্তে উধাও হয়ে যায়।সকাল চায়ের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে মিনমিন করে বলল,

“আপনার চা।”
ধ্রুব স্পষ্ট শুনতে পেয়েও সকালকে লজ্জা দিতে বলল,
“কি বললেন শুনি নি।”
সকাল মাথা নামিয়ে বলল, “চা!আপনার জন্য।”
ধ্রুব গভীর চোখে সকালকে দেখে।তারপর পায়ে পায়ে সকালের সামনে এগিয়ে যায়,সকালের হাত থেকে কাপটা নিয়ে টেবিলে রাখে।তারপর হাতমুড়ে দাঁড়িয়ে সকালকে দেখে।সকালের কাছে ধ্রুব দাঁড়ানোর পর সুন্দর একটা ঘ্রান পায়।ধ্রুব ঘন হয়ে আসা গলায় বলে,

“আমি আপনার কি হই সকাল?”
সকাল কি বলবে ভেবে পেল না,শুধু ধ্রুবর গভীর চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ ঝাপটে তাকালো।ধ্রুব তো এই চোখ ঝাপটানো দেখেই মরেছে।ধ্রুব খুব ফিসফিস করে বলল,
“বললেন না যে!”
সকাল কি বলবে ভেবে পেল না,এই লোকটা এতো আজব আজব প্রশ্ন কেন করে?ধ্রুবর মতোই ফিসফিস করে বলল,
“পরে বলি।”

সকালের লাল হওয়া নাকের ডগার দিকে তাকিয়ে ধ্রুব মুচকি হাসে।তারপর বলে,
“আপনার বেনীটা একটু দেখাবেন!”
সকাল দম বন্ধ করে খুব ছেলেমানুষী আবদারটা শুনলো।তারপর ধ্রুবর দিকে তাকালে ধ্রুব বাচ্চাদের মতো মুখ করে বলল,
“একটু প্লিজ।”

ধ্রুবর এই ছেলেমানুষী গুলো সকালের খুব ভালো লাগছে।সে ঘোমটা সরিয়ে বেনীটা সামনে টেনে আনলো।ধ্রুব মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে বলল,
“একটু ছুঁয়ে দেখি?”

ধ্রুবর এই ছোট ছোট আবদারগুলো সকালের মনে শান্তির দানা পুতে দিয়ে যাচ্ছে।সে কিছু না বলে টানা চোখে তাকালো ধ্রুবর দিকে,ধ্রুব বোধহয় চোখের ভাষাটা বুঝে নিলো আলতো করে মোটা লম্বা বেনীটা হাতে নিল,হাতে কয়েকবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখলো।তার ইচ্ছে করছে চুলে চুমু খেতে,কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি আগানো যাবে না,তার বউটা যে খুব বাচ্চা,এমনিতেই ভয় পায় এসব করলে যদি আর কাছে টাছে না আসে,তাই ধ্রুব সব ইচ্ছা মাটিচাপা দিয়ে বেনীটা ছেড়ে দিলো।

কাঞ্চাসোনা পর্ব ৩

সকাল ধম বন্ধ করে দাঁড়িয়েছিল,বেনী ছাড়ার পরে কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।ধ্রুব যাওয়ার পথে তাকিয়ে আছে,আচ্ছা এতো লজ্জা পায় কেন বউটা।ধ্রুবর আজকে অফিসে যেতেও মন চাইছে না।একি যন্ত্রনা শুরু হলো তার!বিয়ের আগেই তো ভালো ছিল এখন তো মহা বিপদ দেখা যায়।রাতে ঘুম হয় না,অফিসে যেতে মন চায় না,বউ দেখলে হাত পা শিরশির করে।সব যন্ত্রণা একসাথে ব্যাগে পুরে ধ্রুব অফিসে চলে গেলো।বাসায় রেখে গেলো লজ্জায় নুয়ে পড়া বউকে।

কাঞ্চাসোনা পর্ব ৫