কোন কাননের ফুল গো তুমি পর্ব ১২

কোন কাননের ফুল গো তুমি পর্ব ১২
মুন্নি আক্তার প্রিয়া

“আপনাকে বিয়ে করার চেয়ে আইবুড়ো থাকা ঢের ভালো।”
বলেই মিতুল রূপকের মুখটা হাত দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল। সিগারেটের গন্ধে তার গা গুলিয়ে আসছে। রূপক আহতস্বরে বলল,
“আমি দেখতে এতটাও মন্দ নই।”
“আপনার বাহ্যিক রূপ নিয়ে কথা বলল কে?”
“তবে?”

“আমার সিগারেট পছন্দ না। কিন্তু আপনি সিগারেট খান।”
“যদি আমি সিগারেট ছেড়ে দেই?”
মিতুল চমকে তাকাল। বিস্মিত হয়ে বলল,
“সিগারেট কেন ছাড়বেন? আমার জন্য?”
রূপক সতর্ক হলো। সোজা হয়ে বসে বলল,
“তোমার জন্য কিনা জানিনা! তবে যে আমার বউ হবে সে যদি সিগারেট পছন্দ না করে তাহলে আর খাব না।”
মিতুল ছোটো করে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“ভালো।”
ততক্ষণে রিকশাও ভার্সিটির গেইটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। মিতুল নেমে ভাড়া দিতে গেলে রূপক বাধা দিয়ে বলল,
“আমি দিয়ে দেবো।”
এরপর রিকশাওয়ালাকে তাড়া দিল যাওয়ার জন্য। মিতুল কিছু বলার সুযোগই পেল না। সে ঠোঁট উলটিয়ে ভেতরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো। পেছন থেকে মিষ্টি কণ্ঠের ডাকে পরক্ষণেই থমকে যেতে হলো তাকে।
মিষ্টি কণ্ঠটি পরপর দু’বার ডাকল,

“মিতুল, মিতুল।”
মিতুল মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকাল। তার থেকে কিছুটা দূরত্বে গোলাপী রঙের থ্রি-পিস পরা একটা মেয়ে। তার দিকেই এগিয়ে আসছে। মেয়েটাকে কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। কোথাও দেখেছে মনে হচ্ছে এর আগেও। কিন্তু কোথায়? আর এই মেয়ে ওর নামই বা জানল কী করে?
মিতুল তখনো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। মেয়েটা কাছে এসে জিজ্ঞেস করল,
“কেমন আছো?”

মিতুল সহসা কোনো জবাব দিতে পারল না। পরক্ষণে নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না।”
“আমার নাম চৈতি।”
“আমি কি আপনাকে চিনি?”
“আমরা কোথাও বসে কথা বলি?”
মিতুল হাত ঘড়িতে সময় দেখে বলল,
“আমার ক্লাস আছে। হাতে বেশি সময় নেই। দশ মিনিট দিতে পারব।”

চৈতি হেসে বলল,
“ওতেই হবে।”
ওরা ভার্সিটির ক্যাফেতে গিয়ে বসল। চৈতি কফি অর্ডার দেওয়ার পর মিতুল জানতে চাইল,
“এবার বলুন, আমি কি আপনাকে চিনি?”
“চিনতে পারো। তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা এই ক্যাফেতেই হয়েছিল।”
মিতুল এবার একটু মনে করার চেষ্টা করতেই লাফিয়ে উঠে বলল,

“নওশাদ স্যারের সাথে?”
চৈতি হেসে বলল,
“হ্যাঁ।”
“আই সী! আপনি কেমন আছেন?”
“আমি ভালো আছি। তোমার সামনা-সামনি বসে কথা বলার ভীষণ ইচ্ছে ছিল। তাই চলে এসেছি। তুমি কি রাগ করেছ? আসলে আমি একটু এমনই। মনের ইচ্ছে, আগ্রহ, কৌতুহল দমিয়ে রাখতে পারি না।”
“না, রাগ করব কেন? কিন্তু আপনি আমাকে চেনেন কীভাবে?”

“নওশাদ তোমার ব্যাপারে আমাকে সব বলেছে গতকাল রাতে। আমার ভীষণ আগ্রহ হলো শুনে। মন তোমায় কাছ থেকে দেখার আকুলতা প্রকাশ করছিল। আসলে আমি যাকে এতটা ভালোবাসি, সেই মানুষটা অন্য কাউকে ভালোবাসে এটা ভাবতেও কেমন কষ্ট লাগে। অপ্রকাশিত ঈর্ষার বশে হলেও হয়তো মন এজন্যই তোমার সাক্ষাৎ চেয়েছে।”
মিতুলের এই প্রসঙ্গে কিছু বলার নেই বলে সে চুপ করে রইল। কফি আসার পর অনিচ্ছাকৃত চুমুক দিল। কারণ তিতকুটে কফি তার অপছন্দ। সে একবার ব্যস্ত হয়ে ঘড়ি দেখে বলল,

“আমাকে ঈর্ষা করার কোনো কারণ নেই। কম বয়সে আবেগের কারণে ছোটো একটা ভুল করে ফেলেছিলাম। নওশাদ স্যারের জন্যই সেই ভুল সংশোধন করার সুযোগ পেয়েছি। এখন আর তার প্রতি আমার কোনো টান, ভালোলাগা, ভালোবাসা কিছুই নেই। আমি যখন আমার অনুভূতিগুলো স্যারকে বলেছিলাম তখন সে আমাকে একটা কথা বলেছিল। সে বলেছিল, এগুলো পাগলামি; আমার ভালোবাসা নয়।

একটা আকর্ষণ মাত্র, আবেগ এবং মোহ। এখন বর্তমান সময়টাতে আমার মনে হয়, স্যার সেদিন ঠিক কথাই বলেছিলেন। সে যাই হোক, আমি তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে যা বলার বলে দিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক কোনোদিনই সম্ভব নয়। আমি আপনাকে পার্সোনালি চিনি না। আপনার সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাও নেই। তবুও আপনাকে দেখে অদ্ভুত কারণেই আমার কেন জানি মনে হয়েছিল, আপনিই স্যারকে ভালো রাখতে পারবেন। আমি চাই, আপনারা যত দ্রুত সম্ভব বিয়েটা করে নিন। আমাকে এখন উঠতে হবে।”

কথাগুলো বলতে বলতেই উঠে দাঁড়িয়েছে মিতুল। স্মিত হেসে বলল,
“আসছি। ভালো থাকবেন।”
প্রত্যুত্তরে চৈতিও মৃদু হেসে বলল,
“আমার কথায় কিছু মনে কোরো না। কষ্ট দিয়ে থাকলে সরি। তুমিও ভালো থেকো।”

এ কথার পিঠে মিতু্ল কেবল মুচকি হাসি উপহার দিল। ক্লাসে গিয়ে সে বিষয়টা সম্পূর্ণ ভুলেই গিয়েছে। আর্শি এবং রায়ার সঙ্গে গল্পগুজব, পড়াশোনাতেই সময় কেটে গেছে। শুধু নওশাদের ক্লাসটাতেই সে রয়েসয়ে বসল। একটা জিনিস খেয়াল করে দেখল, নওশাদ তার ফোকাস মিতুলের থেকে দূরেই রাখছে। আগের মতো অকারণে আর তাকায় না। পড়ার ছুঁতো ধরেও কথা বলেনি আজ। মিতুল মনে মনে স্বস্তি পেল। যাক, নওশাদ স্যার এটলিস্ট মুভ অন করার চেষ্টা তো করছে।
ক্লাস শেষ করে যখন রায়া এবং আর্শির সঙ্গে বের হচ্ছিল তখন মাঠে নওশাদের ডাক পড়ে। মিতুল ওদেরকে সামনে আগাতে বলে নিজে একা দাঁড়াল। নওশাদ এসে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে কোনো রকম ভনিতা করা ছাড়াই বলল,

“তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।”
“বলুন।”
“আমি চৈতিকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
চৈতি বেশ অবাক হলো। সঙ্গে খুশিতে ঝলমল করে উঠল তার শ্যামবর্ণ মুখ। সে আনন্দিত কণ্ঠে বলল,
“সত্যিই? এটা তো খুবই ভালো কথা।”
“হ্যাঁ। তুমি খুশি?”

“খুশি না হওয়ার তো কারণ দেখছি না।”
নওশাদ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল,
“ঠিক আছে। যাও। সাবধানে যেও।”
মিতুল ঘাড় নাড়িয়ে চলে গেল। আশেপাশে তাকিয়ে একবার অনিককেও খুঁজল। অনেকদিনই হয়েছে ওকে ক্যাম্পাসে দেখে না। তবে তিশার সাথে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। অনিক আর তিশা ক্লাসমেট হওয়াতে অহরহ দেখা হওয়াটাও স্বাভাবিক। মিতুলের চাওয়া ব্যর্থ গেল না। সে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে দেখল অনিক বাইক নিয়ে এসেছে। সঙ্গে তিশাও আছে। মিতুলকে দেখে হেসে অনিক বলল,

“কেমন আছো বেয়াইন?”
মিতুলও হেসে বলল,
“ভালো আছি। আপনি?”
“আমিও ভালো আছি।”

কথা বলার মাধ্যমেই জানতে পারল তিশাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে যাচ্ছে অনিক। তাই মিতুল আর বেশি সময় ওদেরকে দাঁড় করাল না। রায়া এবং আর্শিও বিদায় নিয়ে চলে গেল। ইতোমধ্যে ওরা নওশাদের ব্যাপারে অল্পবিস্তর জানে। মিতুলের থেকেই শুনেছে। মিতুল রিকশা খুঁজতে খু্ঁজতে হাঁটছিল। কিছুদূর আগানোর পর দেখল রূপক রিকশায় বসে সিগারেট খাচ্ছে। আর রিকশাওয়ালা রিকশার সাথে হেলান দিয়ে রিকশা টানছে। আহা! সে কী দৃশ্য। নয়ন দিয়ে দুনিয়া ভস্মিত করে দেওয়ার মতো। মিতুলকে দেখে রূপক গম্ভীরকণ্ঠে বলল,

“এতক্ষণে আসার সময় হলো তোমার? কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।”
“কে বলেছিল অপেক্ষা করতে?”
“কেউ বলেনি। আমিই করেছি। এখন রিকশায় ওঠো।”
“আমি আপনার সঙ্গে যাব না।”
“কেন?”
“আমার ইচ্ছে।”

“তা বললে তো হবে না। সকালে আমি ভাড়া দিয়েছি। এখন তুমি ভাড়া দেবে। তাছাড়া আমার কাছে টাকা নেই। ১৫ টাকা ছিল। সিগারেট কিনে ফেলেছি। এখন তুমিই আমার শেষ সম্বল, শেষ ভরসা। একা ছেড়ে দিও না।”
মিতুল বিস্ময়ে হা হয়ে গেল। বাড়িওয়ালার ছেলে। অথচ পকেটে নাকি টাকা নেই! মিতুল ব্যাগ থেকে টাকা বের করতে করতে বলল,

“আমি টাকা দিচ্ছি। আপনি বাড়ি চলে যান।”
“তোমার টাকা আমি এভাবে কেন নেব? আমি কি ফকির নাকি?”
“আপনার ভাবসাবে তো বড়োলোকও মনে হয় না।”
“মিতুল রিকশায় উঠবে তুমি?”
রাগে গজগজ করতে করতেই রিকশায় উঠে বসল মিতুল। রিকশা চলছে তার মতো। আর মিতুল নাকে-মুখে ওড়না গুঁজে বসে আছে। মাঝরাস্তায় রিকশা থামিয়ে রূপক নামল এবং মিতুলকেও নামাল। ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে বলল,

“এসো।”
মিতুল বিস্মিত হয়ে রূপকের পিছু যেতে যেতে বলল,
“আপনি না বললেন আপনার কাছে টাকা নেই? মিথ্যে কেন বলেছেন?”
“না হলে কি তুমি আসতে?”
“আপনি একটা অসভ্য, মিথ্যাবাদি।”
“সভ্য দিয়ে হবেটা কী?”
“আমরা এখানে কেন নেমেছি?”
“ফুচকা খেতে।”
“আমি খাব না।”

“ঠিক আছে। বসে বসে আমার খাওয়া দেখবে তাহলে।”
রূপক দুই প্লেট ফুচকা অর্ডার দিল। রূপক যখন ফুচকার প্লেট মিতুলের দিকে এগিয়ে দিল তখন আর সে না করতে পারল না। মুখ গোমড়া করেই নিল। মিতুলের কাঁচা মরিচের ঝাল ভীষণ প্রিয়। সে দোকানদারের কাছে গিয়ে বলল,
“মামা, কাঁচামরিচ দিন তো।”
মধ্যবয়সী দোকানদার বলল,

“আম্মা, কাঁচামরিচ তো কাটা নাই। শুকনা মরিচ দেই?”
“না, সমস্যা নেই। দিন আমিই কেটে নিচ্ছি।”
ক্রেতাদের ভিড়ভাট্টা দেখে মিতুল নিজেই কাঁচামরিচ কাটছিল চাকু দিয়ে। আর বিপত্তিটা বাঁধল তখনই। মরিচ কাটা শেষে চাকু রাখতে দিয়ে ডান হাতের একটা আঙুলে লেগে সঙ্গে সঙ্গে র’ক্ত পড়তে শুরু করে। ব্যথায় আর্তনাদ করে উঠল সে। রূপক ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে এলো,

“দেখি, দেখি কী করেছ!”
মিতুল অন্য হাত দিয়ে আঙুল চেপে ধরে রেখেছে। রূপক ওকে চেয়ারে বসিয়ে ডাক্তারের কাছে গেল। ওয়ান টাইম আর তুলা এনে র’ক্ত পরিষ্কার করে ওয়ান টাইম লাগিয়ে দিল। অনামিকা আঙুল কে’টে যাওয়াতে খাওয়ায় অসুবিধা হবে বলে মিতুল চুপ করে বসে আছে। রূপক একবার ওর আঙুলের দিকে একবার ওর মুখের দিকে তাকাল। এরপর নিজেই ফুচকাতে টক দিয়ে মিতুলের মুখের সামনে ধরল। মিতুল আশেপাশে তাকাল। তার কেমন জানি লজ্জা লাগছে। বাড়ির মানুষ ছাড়া সে অন্য কারও হাতে খায় না। সেখানে সে কোনো ছেলের হাতে খাবে? তাও আবার এত মানুষের সামনে!
রূপক ভ্রু কুঁচকে বলল,

“কী হলো? মুখ খুলছ না কেন?”
মিতুল মাথা নত করে বলল,
“খাব না আমি।”
“এখন আবার খাবার কী দোষ করল? তুমি কি লজ্জা পাচ্ছ?”
“না, এমনিই।”
“এমনি বললে তো আমি শুনব না।খাবার নষ্ট করতে নেই। হা করো।”

মিতুল রূপকের মুখের দিকে তাকাল। তার চোখ আটকে গেল রূপকের চোখে। এরপর সে চোখ সরিয়ে হা করল। রূপক মিতুলকে খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেও খেয়ে নিল। উপস্থিত অনেকেই ওদের দিকে তাকাচ্ছে। এসব দেখে মিতুলের অস্বস্তি হলেও রূপকের মাঝে কোনো ভাবান্তর নেই। সে মিতুলকে খাইয়ে পানিটাও মুখের সামনে ধরল। মিতুল অবশ্য বাম হাতে গ্লাস নিয়ে নিজেই খেয়ে নিয়েছে। স্টল থেকে বেরিয়ে কিছুদূর হাঁটার পর রূপক জিজ্ঞেস করল,

“হাওয়াই মিঠাই খাবে?”
মিতুল বলল,
“না।”
“খাবে না কেন? মেয়েদের মন হয় হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো নরম। কিন্তু তোমার মন বেশ কঠিন। তোমার উচিত সকাল, দুপুর, রাত তিনবেলা নিয়মমাফিক হাওয়াই মিঠাই খাওয়া।”
“এতে লাভ কী?”
“তাহলে যদি একটু মনটা নরম হয় আরকি!”

মিতুল এবার হেসে ফেলল। হঠাৎ করেই সে বায়না ধরে বলল,
“আমি এই সবগুলো হাওয়াই মিঠাই নিয়ে একটা ছবি তুলব।”
“আচ্ছা দাঁড়াও। আমি তুলে দিচ্ছি।”

মিতুল হাওয়াই মিঠাইয়ের বড়ো লাঠিটা ধরে দাঁড়াল। রূপক নিজের ফোনেই বেশ কয়েকটা ছবি তুলে দিল। এরপর হাওয়াই মিঠাই কিনে রাস্তা পার হওয়ার জন্য দাঁড়াল। গাড়ি দেখে রূপক মিতুলের হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছে। মিতুল লক্ষ্য করল কিন্তু কিছু বলল না। তার মন কেমন যেন খুশি খুশি লাগছে এভাবে ঘুরতে পেরে। তার খুশিকে দ্বিগুণ করতেই বোধ হয় শুভ্র আকাশটা মেঘলা বরণ ধারণ করল। খুশির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে ঝুপঝুপ করে বৃষ্টি পড়া আরম্ভ করেছে। রূপক ছাউনির নিচে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মিতুলের হাত ধরে দৌঁড়াচ্ছে। মিতুল দাঁড়িয়ে পড়াতে হাতে টান লাগল। রূপক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

“কী?”
“বৃষ্টিতে ভিজব।”
বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসবে, ঠাণ্ডা লাগবে। এসব জানা সত্ত্বেও রূপক বারণ করতে পারল না। মিতুলের আবদারে আহ্লাদ ছিল,বলার ধরণে এমন কিছু ছিল যে কোনো পুরুষের পক্ষেই এই আহ্লাদিত আবদার উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই সে হেসে মিতুলকে নিয়ে আবার রাস্তার কিনারে চলে এলো। দুজনে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হাঁটছে। চোখে-মুখে বৃষ্টির পানি পড়তেই মিতুল খিলখিল করে হেসে ওঠে। রূপক আড়দৃষ্টিতে সেই হাসে দেখে। তার হাতের মুঠোতে তখনো মিতুলের পেলব হাত আবদ্ধ করে রাখা। হাত ধরে রেখেই রূপক বলল,

কোন কাননের ফুল গো তুমি পর্ব ১১

“দাঁড়াও তো এখানে, একটা ছবি তুলি।”
মিতুল লক্ষী মেয়ের মতো দাঁড়াল। রূপক ফোন বের করে ছবি তুলে বলল,
“সুন্দর!”
“কী?” জানতে চাইল মিতুল।
রূপল ঘাড় কাৎ করে মুচকি হেসে বলল,
“বৃষ্টিবিলাসী।”

কোন কাননের ফুল গো তুমি পর্ব ১৩