চৈতালি পূর্ণিমা গল্পের লিংক || Writer Asfiya Islam Jannat

চৈতালি পূর্ণিমা পর্ব ১
Writer Asfiya Islam Jannat
পাত্র হিসাবে নিজের ভার্সিটির স্যারকে দেখে ভড়কে গেল স্পর্শী। বিমূঢ় দৃষ্টিতেই স্থির হয়ে বসে রইলো সেভাবে। সামনে বসে থাকা ব্যক্তিটির অবস্থাও বিপরীতমুখী নয়। আকার ভঙ্গি স্পষ্ট জানান দিচ্ছে, সেও এই বিষয়ে অবগত ছিল না। অথচ আজ তাদের আকদ, কি অদ্ভুত তাই না? দুইজনের জন্য পরিবেশটা এখন বেশ অস্বস্তিকর। স্পর্শী অবিন্যস্ত দৃষ্টিতে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে, রুদ্ধদ্বার অবস্থা তার।
বিয়ের জন্য যে মানা করবে বা পাত্রের সাথে কথা বলতে চাইবে তারও সুযোগও নেই। কথা পাকাপাকি হয়ে গিয়েছে, এমনকি কাজী সাহেবও চলে এসেছেন। কাগজ-পত্র গুছাচ্ছেন তিনি, মিনিট দুই-একের মাঝেই হয়তো বিয়ে পড়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। স্পর্শী বুঝতে পারছে না সে কি করবে। এই বিয়ে করাটা কি আদৌ ঠিক হচ্ছে? তাও যাকে সে বিন্দুমাত্র পছন্দ করে না? উফ! কি বিশ্রী এক অবস্থা। নিজের কপাল নিজেরই চাপড়াতে ইচ্ছে করছে এখন তার, কেন সে আগে পাত্রের ছবি দেখলো না? তার মা সাহেলা বানু কত করে বলেছিলেন একবার ছবিটা দেখতে, কিন্তু জীদের বসে দেখলো না সে। মা-বাবার পছন্দের উপরই ছেড়ে দিল সব।
একবার পাত্রের ছবিটা দেখলে হয়তো আজ এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না তাকে। কিন্তু তারও বা দোষ কোথায়? কথা ছিল আজ ছেলে পক্ষের সকলে এসে দেখে আংটি পড়িয়ে চলে যাবে। সেটা ভেবেই স্পর্শী ঠিক করেছিল পাত্রের সাথে কথা-বার্তার পাঠ আজ চুকিয়ে নিবে। কিন্তু ভাগ্য যে প্রথম দেখাতেই তাদের বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করে দিবে তা কে জানতো? স্পর্শী দৃষ্টি নত করলো, থুতনি গিয়ে ঠেকালো চিবুকে। আঁচলটা হাতের মাঝে পুরে হত্যাকাণ্ড চালালো তার উপর, ডান পায়ের বৃদ্ধা আঙুলটি অবিশ্রান্ত ঘষামাজা করতে থাকলো মার্বেল টাইস করা মেঝের উপর। উৎকন্ঠা, সংশয়,অস্বস্তিতে মন-মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে পড়েছে। ভাবতে পারছে না সে আর কিছু।
মিনিট পাঁচেক নিভৃতে গড়িয়ে যেতেই কাজীর কণ্ঠধ্বনি কর্ণধারে এসে বারি খেল। বিয়ে পড়াচ্ছেন তিনি। স্পর্শী নিষ্প্রভ চাহনিতে চারদিক পরোক্ষ করলো। বর ও কনে ব্যতীত সকলের মুখেই শোভনীয় হাসি। স্পর্শী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে পুনরায় দৃষ্টি নত করলো। পলক ফেলার ব্যবধানেই তার বিয়েটা হয়ে গেল। হয়ে উঠলো সে নির্বাণ সাইয়্যেদ নামক ব্যক্তিটির স্ত্রী।
 চারদিকে কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ। টেবিলে উপর জমেছে মিষ্টান্ন বক্সের স্তুপ, তার বা-দিকেই উঁকি মারছে হরেক রকমের ফলসমূহ। বাড়ির কর্ত্রীরা হয়ে উঠেছে ব্যস্ত, রান্নাঘরে চলছে মহাভোজের আয়োজন।  নতুন জামাই ও বেয়াইনদের আপ্যায়নে কোন কমতি রাখতে চাচ্ছে না তারা। কর্তারা বসেছে বৈঠকঘরে, বিয়ে-সংসার নিয়ে আলোচনা করছেন নিজেদের মধ্যে। দুইপক্ষের সাম্প্রতিক সম্পর্কে নিবিড়তা আনার ক্ষীণ প্রচেষ্টা।
সোফার এক কর্ণারে আঁটসাঁট হয়ে বসে গুরুজনদের কথা শুনছে নির্বাণ। নিরংশু দৃষ্টি চোখ বোলাচ্ছে চারদিকে। আপন লোকগুলো ব্যতীত সবই অচেনা মুখ। দুই হাত মুঠোয় পুড়ে চেপে বসো সে। চরম অস্বস্তিতে মেজাজ উগ্র হয়ে উঠেছে। অকস্মাৎ হওয়া বিয়েটা কিছুতেই হজম করতে পারছে না সে। উপরন্ত, তার বউ হচ্ছে তারই ছাত্রী। প্রথমে ধরতে না পারলেও কিছু সময়ের ব্যবধানে ঠিকই ধরতে পেরেছিল। কিন্তু ততক্ষণে সম্পূর্ণ বিষয়টাই ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে, পিছ-পা হওয়ার কোন সম্ভাব্যতাই নেই। ফোঁস করে নিশ্বাস ছাড়লো সে, স্বাদের পেশা তাকে এইভাবে আথান্তরে ফালাবে তা আগে জানলে সে ভুলেও এই পেশায় ঢুকতো না। বিতৃষ্ণায় ‘চ’ উচ্চারণ করার মত শব্দ করলো নির্বাণ। পুনরায় নড়ে চড়ে বসলো, ভাল্লাগছে না তার কিছুই।
কিছু প্রহর বিতৃষ্ণায় পরিবাহিত হতেই পাশ থেকে নাহিদ কুনোই দিয়ে নির্বাণের পেটে হালকা গুঁতো মেরে ফিসফিসিয়ে বলে,
— ভাই, তোর কি প্রেশার পড়সে? বাথরুম যাবি?
নাহিদের এহেন কথা নির্বাণ দৃষ্টি চওড়া করে তাকালো। কন্ঠে কঠোরতা মিশিয়ে বলে,
— ফাজলামো করিস আমার সাথে?
নাহিদ অবাক হয়ে বলে, “ফাজলামো কেন করবো? তুই তো কখন ধরে কৈ মাছের মত ছটফট করছিস, তাই ভাবলাম.. “
নির্বাণ নিচুস্বরে এক ধমক দিয়ে বলে, “তোকে ভাবতে কে বলেছে হ্যাঁ? নিজের ভাবনায় তালা দিয়ে বসে থাক।”
” আমাকে বকা না দিলে তোর পেটের ভাত হজম হয়না? নতুন বর তুই, কই একটু লজ্জা পাবি তা না।”
” তোর কি আমাকে মেয়ে মনে হয়, ষ্টুপিড? এইভাবেই মাথা হ্যাং হয়ে আছে তার উপর তোর বেহুদা প্যাঁচাল। চুপচাপ বস, নাহলে তোর গাল লাল করতে আমার দেরি হবে না।”
 কন্ঠে তেজ রেখেই মৃদুস্বরে কথাগুলো বলল নির্বান। নাহিদ ভেংচি কেটে মুখ ঘুরিয়ে নিল, আপনমনে বিরবির করে কিছু একটা বলে চুপ হয়ে গেল সে। নির্বাণ নাহিদের কথা শুনেও না শোনার ভাণ করলো। আপাতত তার ভাবনা অন্য কিছুতে নিহিত।
নিকষকৃষ্ণ আকাশে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে তুলো রাশির দল। তাদের মাঝেই মোহনীয় দ্যুতি ছড়াচ্ছে বৃত্তাকার চাঁদটি। মাধুর্য বাড়াচ্ছে দীর্ঘ রজনীর। এক ফালি মাধুর্যযুক্ত আলো জানালার শিকল ভেদ করে গলিয়ে পড়ছে স্পর্শীর পদতলের নিকট। সে অংশটুকুতেই একমনে তাকিয়ে আছে স্পর্শী। গায়ে জড়ানো এখনো লাল জামদানী শাড়িটি। দেখতে তাকে শান্ত দেখালেও মেজাজ উঠে আছে তুঙ্গে। পাশে অযত্নে পড়ে থাকা মুঠোফোনটি বেজে উঠছে বারংবার। কিন্তু স্পর্শী সেদিকে কোন আগ্রহই প্রকাশ করছে না। সে ব্যস্ত সম্পর্কের সমীকরণ মিলাতে। ঘন্টাখানিক পূর্বেও সব স্বাভাবিক ছিল, অথচ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই জীবনটা পুরো বদলে গেল তার।
অগোছালো হয়ে গেল। বিয়ে নিয়ে প্রচন্ড অস্বস্তি কাজ করছে তার। মায়ের মুখে শুনেছিল, ছেলে পেশাগত শিক্ষক৷ কোন এক ভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরেই আছে। কিন্তু সেটা যে তারই ভার্সিটি এবং তারই ডিপার্টমেন্ট হবে সেটা সে ইহকালেও ভাবেনি। বিষয়টা যে কি বিশ্রী হয়ে উঠেছে তা না বললেই নয়। স্পর্শীর এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। কেন সে, জীদের বসে না জেনে-শুনে একবারে ছেলেপক্ষের সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ালো? আর বাবা-মাও কি ভালো মত সব খোঁজ খবর নেই? তারা বা কিভাবে পারলো হুট করে বিয়েটা দিয়ে দিতে? ধ্যাৎ!
স্পর্শীর মুঠোফোন পুনরায় বেজে উঠতে স্পর্শী অবশেষে বিরক্ত হয়ে ফোনটা তুললো। কানের কাছে ফোনটা রাখতেই উচ্চস্বরে কেউ বলে উঠলো,
— ওই হারামি, কই তুই? ফোন ধরস না কেন? কতক্ষণ ধরে ফোন দিতাসে জানোস?
স্পর্শী ক্ষিপ্ত কন্ঠেই বললো, “বাসর ঘরে আছি,আসবি তুই? আয়, দুইজনে একসাথে বাসর রাত পালন করি।”
“আস্তাগফিরুল্লাহ! কিসব নাউজুবিল্লাহ মার্কা কথা কইতাসোস তুই? ঠিক আছোস তো?”
স্পর্শী তিক্ষ্ণ কন্ঠে বলে, “আমার কথা রাখ। এতক্ষন ধরে পাগলের মত ফোন দিচ্ছিলি কেন? কে মরসে?”
নিধি জিহ্বার ডগা নিয়ে ঠোঁট দু’টো ভিজিয়ে নিয়ে  বলে, “রুদ্রকে কি তুই ব্লক দিয়েছিস? ওই তোর খোঁজে আমাকে আর বাকি সবাইকে ফোন দিয়ে জ্বালিয়ে মারছে রে।”
রুদ্রের কথা শুনে স্পর্শীর চোখমুখ আরও শক্ত হলো, তেজী কন্ঠে বললো, “ওর ফোন তোদের ধরতে বলসে কে? এখনই ওর নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে ফালা।”
“দোস্ত মাথা ঠান্ডা কর। একবার শুনে দেখই না ও কি বলতে চায়।”
“আমি কিছুই শুনতে চাই না। ওর থেকে একদমই না। আর তুই জানোস না ওই কি করসে? তাও ওর হইয়া সুপারিশ করতে লজ্জা করে না? “
“ও অনুতপ্ত দোস্ত। আমাদের কাছে ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করতাসিল।”
“কান্না করছিল বলে কি কোলে তুলে নিতে হবে ওকে এখন? যতসব! এমনেই জীবনে ক্যাঁচালের অভাব নাই, আবার এইসব। আরেকবার যদি তুই ওর জন্য আমায় ফোন করেছিস তাহলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না।”
কথাটা বলেই খট করে ফোন কেটে দিল স্পর্শী। রাগে তার শরীর তিরতির করে কাঁপছে। ইচ্ছে করছে নিজেকেই নিজেই খুন করতো। তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল রুদ্র। একমাত্র ওর জন্যই আজ তার জীবন এত অগোছালো।
স্পর্শী মাথা ফেটে যাচ্ছে রাগে, সে যদি এখন রুদ্রকে সামনে পেত নির্ঘাত খুন করে বসতো। কোন কুলক্ষণ সময়ে যে ওর সাথে রুদ্রের দেখা হয়েছিল কে জানে। নিজের রাগ দমাতে চট জলদি উঠে দাঁড়ালো বিছানা থেকে। কাবার্ড থেকে একসেট কাপড় নিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে। শাওয়ার না নেওয়া পর্যন্ত সে স্থির হতে পারবে না।
সকলের আলোচনার শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো স্পর্শীর তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল এক্সামের পর পরই আয়োজন করে স্পর্শীকে উঠিয়ে দেওয়া হবে। সে সাথে, আজ রাতটা নির্বাণ এই বাসাতেই কাটাবে। কাল সন্ধ্যায় না-হয় চলে যাবে। নির্বাণ এতে আপত্তি জানালেও, মায়ের আদেশে অগত্যা রাজি হতে হলো। এই বাসায় রাত কাটাতে হবে ভেবেই অস্বস্তিটা যেন আরও গাঢ় হলো নির্বাণের।
 যেহেতু নির্বাণ ব্যতীত বাকি সকলে চলে যাবে সেহেতু খাবারের আয়োজন দ্রুত করা হলো। খাবারের পর্ব চুকিয়ে সকলে বিদায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে নেয়। এমন সময় নাহিদ নির্বাণের পাশে এসে দাঁড়ায়। ফিসফিসিয়ে বলে, “ভাই প্লিজ দোহাই লাগে, বাসর ঘরে গিয়ে নিজের টিচারগিরি শুরু করে দিস না? তোর ভাষনে ভাবী ঘুমিয়ে পড়লে আমার আর চাচ্চু ডাক শোনা হবে না রে।”
নিবার্ণ অগ্নিময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্বগোতক্তি কন্ঠে বলে, “তুই এখনই এইখান থেকে বের হো। তোর ছাঁয়াও যাতে আমি এই বাসার ত্রিসীমানায় না দেখি।”
” বাহ রে! শ্বশুরবাড়ি ঠিক হওয়া মাত্র ভাইকে অবজ্ঞা করা শুরু করে দিলি? এই তোর মনুষ্যত্ব?”
“মাকে ডাক দিচ্ছি দাঁড়া।”
নাহিদ দ্রুত লাফিয়ে উঠে বলে, “ভাইদের একান্ত ব্যক্তিগত কথার মাঝে মাকে টানিস কেন বেদ্দব? যাচ্ছি তো আমি।”
কথাটা বলেই নাহিদ কেটে পড়লো। নির্বাণ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গেল মায়ের কাছে।
রুমের মধ্যে তখন কৃষ্ণতা ছেঁয়ে আছে। চাঁদের স্থান পরিবর্তন হয়েছে, জানালার ধারে নেই তার অস্তিত্ব। তাই নিজের অস্ত্বিত্ব রক্ষার্থে বারান্দার শিকল গলিয়ে তীব্র প্রচেষ্টা করছে রুমের মেঝেতে হামাগুড়ি খাওয়ার। হালকা বাতাসে জানালার পর্দাগুলো বার বার কেঁপে উঠছে। পরিবেশটা নীরব হলেও, রাতটা মোহনীয়৷ পূর্নিমার চাঁদ উঠেছে গগনে, বিভূষণ ভালোবাসার স্বাক্ষী হতে।
এরই মাঝে স্পর্শী ওয়াশরুমের দরজা খুলে বের হলো, হাতের মুঠোয় থাকা তোয়ালেটা চুলের মাঝে গভীরভাবে ডুবিয়ে। মুখ ঢাকা পড়লো তাতে। স্পর্শী হাতরে ওয়াশরুমের লাইট অফ করে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেল। চুল মুছা শেষে চোখ তুলে তাকালো উপরে। পুরো রুম আঁধারে আবৃত দেখে ভ্রু কুঁচকে এলো তার, বিরবির করে বলল, “রুমের লাইট কে অফ করলো?”
কথা ভেবেই এগিয়ে গেল সুইচ বোর্ডের দিকে। ক্ষণেই বিছানার পাশে কারো পুরুষালী অবয়ব দেখে থমকে যায় সে। ভালো মত পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করল আসলে পুরুষালী অবয়বটির মালিক কে? স্পর্শীর রুমে সচরাচর কেউ আসে না, কাজিনরা বলতেও সব বাচ্চা টাইপ। এক বাবা-চাচা ব্যতীত কোন পুরুষ নেই তাদের বাড়িতে। আর তারা এখন আসবে না স্পর্শী জানে।  তাহলে কে তার রুমে? রুমের দরজার দিকে একবার  তাকালো স্পর্শী। দরজা ভিতর দিয়ে আটকানো। স্পর্শীর এইবার কেন যেন ভয় হলো। সে অস্ফুটস্বরেই জিজ্ঞেস করলো, “কে?”
অপর পক্ষ থেকে কোন উত্তর আসলো না। স্পর্শী আবারও একই প্রশ্ন করলো। কিন্তু উত্তর মিললো না, উল্টো এইবার ছায়ামূর্তিটি নিঃশব্দে তার দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করলো। স্পর্শী এতে ভড়ে উঠলো, লেপ্টে গেল দেয়ালের সাথে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে চিৎকার দেওয়ার প্রস্তুতি নিল। ছায়ামূর্তিটি হয়তো বুঝে যায় স্পর্শী পরিকল্পনার সম্পর্কে, ক্ষণেই সে দৌড়ে এসে তার বলিষ্ঠ হাত চেপে ধরে স্পর্শীর মুখ। অচেনা পুরুষের ছোঁয়া পেয়ে ভয়ে সর্বাঙ্গ শিথিল হয়ে পড়লো স্পর্শীর, তীব্র কাঁপন ধরলো শরীরে। হাতের মুঠোয় থাকা তোয়ালেটা লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে।

চৈতালি পূর্ণিমা পর্ব ২