চৈত্রিকা পর্ব ২৮

চৈত্রিকা পর্ব ২৮
বোরহানা আক্তার রেশমী

ক’দিন কেটেছে মাঝে। প্রহরের পা এখন আগের থেকে বেশ ভালো। নিজে নিজেই অল্প স্বল্প হাঁটতে পারে। এ ক’দিন পুরোপুরি চৈত্রিকার ওপর নির্ভর করে থেকেছে৷ চৈত্রিকাই সকালে ফ্রেশ হওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত পাশে থেকেছে। নিজেদের অজান্তেই মেতে উঠেছে খুনশুটিতে। দুজনের মাঝের দূরত্ব যে কিছুটা হলেও কমেছে তা খুব ভালো ভাবেই বোঝা যায়।

এ ক’দিন ঘরে বসেও চিত্রকে খোঁজার কোনো রকম প্রচেষ্টা বাদ দেয়নি প্রহর। তবে ফলাফল বরাবরই শূণ্য। প্রহর হাল ছাড়েনি। প্রতিদিনের মতোই প্রহরকে ঘুম থেকে উঠায় চৈত্রিকা। আকাশের অবস্থা আজও খুব খারাপ। যেকোনো সময় ঝুম বৃষ্টিরা এসে হানা দেবে। তবে আজকের আবহাওয়া বেশ ভালোই লাগছে চৈত্রিকার। বৃষ্টির জন্য আলাদা রকম প্ল্যান করাও তার শেষ। প্রহর ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে চৈত্রিকা বিছানায় বসে পা দুলাচ্ছে। মন মেজাজটাও যে বেশ ফুরফুরে তা বুঝতে আর বাকি নেই। চৈত্রিকার অজান্তেই মুচকি হাসে প্রহর। তারপর মুখটা গম্ভীর করে চৈত্রিকার সামনা সামনি দাঁড়ায়। ভ্রু কিঞ্চিত কুঁচকে বলে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ব্যাপার কি! মন মেজাজ এতো ফুরফুরে কেনো? দেখে মনে হচ্ছে নতুন প্রেমে পড়েছো!’
চৈত্রিকা ভেংচি কেটে নিজের জায়গা থেকে উঠে পড়ে। বলে, ‘প্রেম ট্রেম চৈত্রিকার জন্য না। আজকের আবহাওয়া দেখেছেন! যখন তখন বৃষ্টি আসতে পারে। আর আজ আমি বৃষ্টিতে ভিজবো। শুধু আমি না! অর্থি, নীরা আপু, অর্পিতা আপু আমরা সবাই।’

প্রহর কিছু বলে না। হাত বগলদাবা করে চৈত্রিকার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। চৈত্রিকা ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে ‘কি!’ প্রহর জবাব দেয় না। চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে চৈত্রিকার চোখের দিকে। চৈত্রিকা চোখ নামিয়ে দিয়ে প্রহরের সামনে থেকে সরে আসে। দৃষ্টি এদিক ওদিক করে বলে,
‘নিচে চলেন! আম্মাজান ডাকে খাওয়ার জন্য।’

প্রহর ছোট্ট করে ‘হুম’ বলে। চৈত্রিকা কৈফিয়ত দেওয়ার ভঙ্গিতে বলে, ‘ওহ হ্যাঁ! অর্পিতা আপু আর অর্থিকে আবার ভুল বুঝবেন না। ওরা চিত্র ভাইকে নিয়ে খুবই চিন্তায় আর অন্যমনষ্ক থাকে। অনেক কষ্টে আজ ওদের ছাঁদে বৃষ্টিতে ভিজতে যাওয়ার জন্য রাজি করিয়েছি।’
‘সমস্যা নেই। ওরা তো ছোট। এতো টেনশন নিলে কবে আবার মানসিক রোগী হয়ে যাবে তার কি কোনো ঠিক ঠিকানা আছে!’
চৈত্রিকা ঠোঁট চেপে হাসে। পেছনে ঘুরে প্রহরের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়। পা উচু করে প্রহরের কানের কাছে মুখ নেওয়ার চেষ্টা করে ছোট্ট করে বলে, ‘ধন্যবাদ জমিদার সাহেব।’

চৈত্রিকা ছুটে ঘর থেকে বের হয়। প্রহর সেদিকে তাকিয়ে হাসে। মেয়েটা তার সাথে মিশে যাচ্ছে দিন দিন। মাঝে মাঝে তার অবাকতার শেষ থাকে না। মানুষ এমনও হয়! চৈত্রিকার হঠাৎ এভাবে বদলে যাওয়ার কারণ চারপাশ হাতড়েও খুঁজে পায় না প্রহর। তার বিশ্বাস আছে চৈত্রিকার ওপর। চৈত্রিকা কখনোই তাকে ঠ’কাবে না। চৈত্রিকা পেছন থেকে আ’ঘাত করার মতো মেয়ে নয়। প্রহর হাজারটা চিন্তা ভাবনা করে যখন এগোচ্ছিলো তখন নিজেদের ঘরের মেঝেতে একটা কাগজের টুকরো পায়।

প্রহর ভ্রু কুঁচকে তা হাতে তুলে নেয়। কাগজটা তখন চৈত্রিকার আঁচল থেকে পড়েছিলো। প্রহর হাসি হাসি মুখেই কাগজটা মেলে ধরে। কাগজে থাকা দু লাইনের বাক্যই যথেষ্ট ছিলো প্রহরের মুখের হাসি মিলিয়ে দেওয়ার জন্য। রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। চোখে মুখে গম্ভীরতার এক অদ্ভুত আবরণ সৃষ্টি হয়। চোখ দুটো মুহুর্তেই লাল টকটকে হয়ে যায়। রাগে কাগজটা মুড়িয়ে ফেলে দিতে নিয়েও আবার সুন্দর করে মেলে ধরে। কাগজে বড় বড় অক্ষরে স্পষ্ট করে লিখা,

‘অনেক তো স্বামীর প্রতি দুর্বলতার নাটক করলে, এবার আসল কাজ করো! নাকি প্রহর রেনওয়াজের সাথে ভালোবাসার নাটক করতে করতে তাকে সত্যিই নিজের স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছো! আমি জানি তুমি নিজের লক্ষ্য থেকে সরে যাওয়ার মতো মেয়ে নও। তাই এক এক করে জমিদার বাড়ির সদস্যদের মা’রার প্রস্তুতি নাও।’
প্রহর আলগোছে কাগজটা ভাজ করে নিজের পকেটে রেখে দেয়। চৈত্রিকার ওপর এক আকাশ সমান রাগ নিয়ে এগিয়ে যায়। তবে মুখে টু শব্দটিও করে না।

সকাল পেড়িয়ে দুপুর হয়ে যায় কিন্তু বৃষ্টির দেখা আর পাওয়া যায় না। আকাশে মেঘলা ভাবটা থাকলেও মেঘেরা বৃষ্টির ফোটা হয়ে ঝড়ে পড়ছে না। এ নিয়ে চৈত্রিকার আফসোসের শেষ নেই।, অর্পিতা, অর্থি আর নীরা গোসল করে ফেললেও চৈত্রিকা বৃষ্টির আশাতেই আছে। যেনো বৃষ্টি না আসলে আজ আর সে গোসলই করবে না। বার বার গাল ফুলিয়ে ঘরে আসছে নয়তো ব্যালকনিতে যাচ্ছে। প্রহর গম্ভীর মুখ নিয়ে বিছানায় বসে বসে শুধু দেখে গেছে। মূলত চৈত্রিকার ভেতর বাহিরটা পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করছে। চৈত্রিকা মিনিটে ২ বার ঘরে আসে আর ব্যালকনিতে যায়। যতবারই ঘরে আসে বাচ্চাদের মতো মুখ করে প্রহরের দিকে তাকিয়ে বলে,

‘বৃষ্টি আসছে না কেনো জমিদার সাহেব? বৃষ্টি কখন আসবে?’
প্রহর একবারও জবাব দেয়নি। এজন্যই আরো বেশি বিরক্ত চৈত্রিকা। লোকটা কি কথা বলতে পারে না? সামান্য একটা প্রশ্নই তো করছে তবুও তার জবাব দেওয়ার নামমাত্র নেই! এতো গম্ভীর হয়ে থাকতে হবে কেনো? সময় কাটতে কাটতে প্রায় ২ ঘন্টা চলে যায়। তবুও বৃষ্টিও আসে না চৈত্রিকা নিজের জায়গা ছেড়ে নড়েও নাহ। প্রহর নিজেও পুরোটা সময় বিছানায় বসেই কাটিয়েছে। শেষ মুহুর্তে হুট করেই যখন আকাশে গুড়ুম গুড়ুম শব্দ হয় আর বাতাস ধেয়ে আসে তখন খুশিতে চৈত্রিকা লাফিয়ে ওঠে। ব্যালকনি থেকে ছুটে এসে প্রহরকে বলে,

‘বৃষ্টি আসার সময় হয়ে গেছে জমিদার সাহেব। যাবেন নাকি ভিজতে? আমি কিন্তু যাচ্ছি!’
চৈত্রিকা ঘুরে যেতে নিলে হাত টেনে ধরে প্রহর। চৈত্রিকা পেছনে ফিরে তাকায়। ঠোঁটের কোণে হাসি ধরে রেখেই ভ্রু নাঁচায়। প্রহর কোনো কথা ছাড়াই চৈত্রিকাকে টেনে নিজের বুকে আনে। ঘটনার আকস্মিকতায় বেশ অবাক হয় চৈত্রিকা। প্রহর হুট করেই চৈত্রিকার সাথে গভীর হয়। হাতের ছোঁয়া ভীষণ দৃঢ় করে। অথচ মুখভঙ্গী স্বাভাবিক করে রেখেছে। প্রহরের কোনো কথা বার্তা ছাড়া এমন ব্যবহারে এতো বেশি চমকায় যে চোখ মুখে তা স্পষ্ট ফুটে ওঠে। চোখে মুখে অস্বস্তির রেখা মিলে। কোনো রকমে বলে,

‘কি করছেন জমিদার সাহেব? হঠাৎ এমন করছেন কেনো? ছাড়ুন!’
প্রহর ছাড়ে না।৷ দূরত্ব মিটিয়ে নিয়ে মুখটা কাছাকাছি আনে। চৈত্রিকা দু হাতে প্রহরের বুকে ধাক্কা দেয়। বড় বড় শ্বাস নিয়ে বলে, ‘দেখেন প্লিজ ছাড়েন! আমার অস্বস্তি হচ্ছে।’
প্রহর আর এগোয় না। ছেড়ে দেয় চৈত্রিকাকে। চৈত্রিকা ছাড়া পেয়েই কোনোদিকে না তাকিয়ে দৌড় লাগায়। ততক্ষণে বাহিরে বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে গেছে। চৈত্রিকার যাওয়ার পানে তাকিয়ে প্রহর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়। ঘন ঘন শ্বাস ত্যাগ করে বিড়বিড় করে আওড়ায়,

‘কাজটা তুমি মোটেও ভালো করোনি চৈত্রিকা। প্রহর রেনওয়াজের সাথে বিশ্বা’সঘা’তক’তার পরিণাম ভ’য়ং’কর। তুমি ভালোবাসার অভিনয় করতে পারলে আমি সত্যি সত্যি তোমাকে ভালোবাসতে বাধ্য করিয়ে একটু একটু করে নিঃশেষ করতেও পারি।’
চৈত্রিকা সরাসরি ছাঁদে চলে আসে। বৃষ্টির মাঝখানে দাঁড়িয়ে চোখ পিটপিট করে। প্রহরের ব্যবহারে সে বেশ সন্দিহান। হঠাৎ করে এমন করার কোনো কারণ চৈত্রিকা খুঁজে পেলো না। বৃষ্টিতে ভিজতে চাওয়ার এতক্ষণের আনন্দ কোথায় যেনো উবে গেলো৷ ঝুম বৃষ্টিতে দাঁড়িয়েও চিন্তায় ডুবে যায় চৈত্রিকা। বৃষ্টির ফোঁটা রা তাকে ছুয়ে যাচ্ছে গভীরভাবে।

বাহিরে বৃষ্টি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই নিবিড় এসেছে অর্থিকে পড়াতে। ইদানীং অর্থির নিবিড়কে দেখলে ভারী লজ্জা লাগে। নিবিড় যদিও বোঝে অর্থির লজ্জা পাওয়াটা। বাহিরে বৃষ্টি, সামনে নিবিড় এবং পড়ালেখা। অর্থির মন বার বার বৃষ্টির দিকে চলে যাচ্ছিলো। পা দিয়ে মেঝেতে নখ খুঁটতে খুঁটতে দৃষ্টি এদিক ওদিক করে। নিবিড় অর্থির মুখ ভঙ্গি দেখে জিজ্ঞেস করে,

‘কোনো সমস্যা অর্থি?’
অর্থি প্রথমে চমকে মাথা দুদিকে নাড়লেও পরে মুখটা কাঁদো কাঁদো করে মাথা উপরনীচ নাড়ে। নিবিড় ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘কি হয়েছে?’
অর্থি আঙুল দিয়ে বাহিরে ঈশারা করে মাথা নিচু করে নেয়। ছোট্ট করে বলে, ‘বৃষ্টিগুলো আমার সমস্যা মাষ্টারমশাই।’
‘বৃষ্টি আবার তোমার সমস্যা হয় কেমনে? তোমার পড়া এটা আর তুমি সমস্যা দেখাও বৃষ্টিতে! পা’গল টাগল হলে নাকি?’
অর্থি ফুঁসে ওঠে। নাক ফুলিয়ে বলে, ‘আমি মোটেও পা’গল হইনি। তাছাড়া আমি কি পড়া শুরু করেছি যে সমস্যা বইয়ে পাবো!’

‘এতক্ষণ থেকে কি করছো তবে?’
‘কেনো! বৃষ্টির শব্দ শুনছি।’
অর্থি দাঁত কেলিয়ে হাসে। নিবিড় কপাল চাপড়ায়। অর্থি মুখটা আবারও কাঁদো কাঁদো করে বলে, ‘আজ আমি উঠে যাই মাষ্টারমশাই? বৃষ্টির শব্দ শুনে ভীষণ ভিজতে ইচ্ছা করছে।’
‘পরে ভিজো! এখন পড়ো।’
‘পরে কি বৃষ্টি থাকবে নাকি!’
‘না থাকলে ভিজবে না।’

অর্থি মুখটা কাঁদো কাঁদো করে রাখে৷ অনেকটা সময় প্যান প্যান ঘ্যান ঘ্যান করার পর নিবিড় অনুমতি দেয়। পড়ানো বাদ দিয়ে চেয়ার টেনে একটু দুরে বসে। অর্থি খুশিতে নিবিড়কে ঘরে রেখেই দৌড় লাগায়। নিবিড় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। দ্বিধাদন্দ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অর্থির যাওয়ার দিকে। অর্থি ততক্ষণে চোখের আড়াল হয়ে গেছে। সাহস নিয়ে নিবিড় নিজেও পিছু পিছু উঠে যায়। অর্থি ছাঁদে এসে চৈত্রিকাকে একা একা দাঁড়িয়ে ভিজতে দেখে। ছুটে এসে চৈত্রিকাকে ধরে৷ চৈত্রিকা চমকায়। অর্থি খুশিতে চেঁচিয়ে বলে,

‘একা একা ভিজেন কেন বড় ভাবীজান? আমাকে ডাকলেন না কেনো?’
চৈত্রিকা সব চিন্তা ভাবনা ভুলে যায়। মুহুর্তেই বৃষ্টিতে মেতে ওঠে অর্থির সাথে। পেছনে আসা নিবিড় বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা দুটি রমনীকেই দেখে। দ্রুত চোখ সরিয়ে নিয়ে নিজেও সরে যায়। সরাসরি জমিদার বাড়ি থেকে বের হয়ে নিজেও বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে৷ দুরে ভিজতে থাকা ছোট্ট অর্থিকে দেখে হৃদপিন্ডের গতি বাড়ে। তবুও অপলক চেয়ে রয় অর্থির হাসি খুশি মুখটার দিকে। এই চেয়ে থাকাতে নেই কোনো চা’হিদা, লা’লসা। যা আছে পুরোটাই মুগ্ধতা। এক কিশোরীর মিষ্টি হাসির প্রতি মুগ্ধতা।

বেশ অনেকটা সময় পর চৈত্রিকাকে খুঁজতে আসে প্রহর। ছাঁদের দরজায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে লাফাতে থাকা চৈত্রিকা আর অর্থিকে দেখে ছাঁদের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। দুজনের লাফালাফি দেখতে থাকে মন দিয়ে। মুখে জমা বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির ফোঁটায় চৈত্রিকার সৌন্দর্য দ্বিগুণ হয়েছে। প্রহর কিছুক্ষণ সে মুখের সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে আওড়ায়,
‘তুমি ভালোবাসা নও, তুমি ধোঁয়াশা। তুমি বাস্তব নও, কল্পনা চৈত্রিকা।’

বৃষ্টি খানিকটা হালকা হতেই বেশ জোড়ে সোড়ে কিছু পড়ার শব্দ হয়। চৈত্রিকা, অর্থি নিজেরা থেমে গিয়ে ছাঁদের রেলিং ঘেষে দাঁড়ায়। প্রহর নিজেও আসে দেখতে। কিন্তু ৩ জনই নিচে চোখ রেখে অবাক হয়ে যায়। জমিদার বাড়ির সামনে কাঁদায় মাখামাখি একজন মানুষ পড়ে আছে। অর্থি এ ঘটনায় বেশ ভয় পেলেও প্রহর আর চৈত্রিকা ছুটে যায়। নিবিড়ও দুর থেকে ছুটে আসে। জমিদার বাড়ির পাহারাদাররা তখন বৃষ্টির কবল থেকে বাঁচার জন্য অন্য জায়গায় বসে ছিলো। প্রহর, চৈত্রিকা, নিবিড়, অর্থি সরাসরি মানুষটির কাছে আসে।

বৃষ্টির ফোঁটারা তখনও আছেই। প্রহর জোড়ে জোড়ে দুজন পাহারাদারকে ডেকে পানি আনায়। এক বোতল পানি লোকটার মুখে দিতেই মুখটা স্পষ্ট হয়ে যায়। আঁতকে ওঠে সবাই। অর্থি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। প্রহর দু পা পিছিয়ে যায়। চৈত্রিকা দ্রুত অর্থিকে আগলে নেয়। প্রহর আর অর্থির অবস্থা দেখে নিবিড় নিজেই চিত্রের পালস রেট চেক করে। বাহিরের চেচামেচিতে জমিদার বাড়ির সকলেই বের হয়ে আসে। চিত্রকে ওমন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে বাড়িতে কান্নার ধুম পড়ে যায়।

চৈত্রিকা পর্ব ২৭

(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। জানি ছোট হয়েছে😑 কেউ বকা দিবেন না😬 অসুস্থ শরীর নিয়ে লিখেছি৷ এর থেকে বেশি আজ আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দুঃখিত।
আর গল্প নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা! আগামীকাল #চৈত্রিকা উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছদের সমাপ্তি পর্ব পাবেন। হঠাৎ করে সমাপ্তি দেখলে অনেকেই চমকাবেন এজন্যই জানিয়ে দিলাম।)

চৈত্রিকা পর্ব ২৯