চৈত্রিকা পর্ব ৭

চৈত্রিকা পর্ব ৭
বোরহানা আক্তার রেশমী

চিত্র বাড়িতে ফিরেই প্রথমে প্রহরের রুমে যায়। দরজার বাহিরে গিয়ে নক করতেই প্রহরের গম্ভীর স্বরে অনুমতি মিশ্রিত কন্ঠের আওয়াজ আসে। চিত্র বিনাবাক্যে রুমের মধ্যে ঢুকে যায়। আশে পাশে চোখ বুলিয়ে তাকায় বিছানার ওপর বসে থাকা প্রহরের দিকে। হেলান দিয়ে বসে চোখের ওপর হাত রেখে আছে। চিত্র নিঃশব্দে বসে পড়ে। প্রহর চোখ বন্ধ রেখেই বলে,

‘কিছু বলবি?’
চিত্র খানিকটা ইতস্তত করলেও সাহস নিয়েই বলে, ‘হবু ভাবীজান কে দেখতে গিয়েছিলাম। উনি তো অনেকটাই ছোট বড় ভাইজান! অন্তত তোমার বয়সের তুলনায় তো উনি অনেকটাই ছোট।’
প্রহর চুপচাপ শোনে। কোনো রকম জবাব দেয় না। চিত্র কিছুক্ষণ হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ফের বলে, ‘তুমি আসলেই মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাও ভাইজান?’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

প্রহর চোখের ওপর থেকে হাত সরায়। উঠে বসে গম্ভীর মুখে তাকায় চিত্রের দিকে। কন্ঠেরও গাম্ভীর্যতা ধরে রেখে বেশ কড়া ভাবেই বলে, ‘কাল বিয়ে তাই আজ এসব বলে কোনো রকম লাভ আছে? আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। বিয়ে কালই হবে আর তাও চৈত্রিকার সাথেই হবে।’

চিত্র বেশ হতাশ হলো। তার ভাইজানের এমন সিদ্ধান্ত কেনো? তিনি তো এমন না। চিত্র হতাশা নিয়ে বসে থেকেই বেশ বিধ্বস্ত স্বরে বলে, ‘বড় ভাবীজান মা’রা গেছে কেবল ৩ মাস। এর মাঝেই ২য় বিয়ে করাটা কি খুব জরুরী ভাইজান?’
‘আমি তোর বড় তাই কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ তা আমি ভালো করেই জানি৷ নিজের ঘরে যা!’

প্রহরের চোয়াল শক্ত করে বলা কথায় চিত্র আর উল্টো কিছু বলার সাহস পেলো না। কেবল করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো। চিত্র বের হয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই প্রহর রাগে বিছানার কাছের ছোট্ট টেবিলের ওপর থাকা পানির গ্লাস ফেলে দেয়। শব্দ করে ভেঙে যায় গ্লাসটা। প্রহরের চোখে মুখে ফুটে ওঠে রাগ, ঘৃ’ণা, ক্ষো’ভ।

চিত্র প্রহরের রুম থেকে বের হয়ে চুপচাপ চলে আসে ছাঁদে। বেশ গভীর ভাবে ভাবতে থাকে প্রহরের কথা। কি এমন হলো! যে ভাই বড় ভাবীকে এতো ভালোবাসতো সে ভাই বড় ভাবীর মৃত্যুর পরও একটুও অস্বাভাবিক হলো না কেনো? কই আগে তো ভাবীর কিছু হলেই বড় ভাইজান বেশ অস্থির হয়ে পড়তো! তাহলে ভাবীর মৃত্যুর পর ভাইজান এতো স্বাভাবিক কিভাবে! আবার এখন বিয়েও করছে তাও আবার তার চেয়ে বয়সে প্রায় ১১ বছরের ছোট একটা মেয়েকে! মাথার মধ্যে সব জট পেকে গেলো। নিজের ভাবনার মাঝেই পিঠে কারো হাতের ছোঁয়া পায়। চমকে পেছনে তাকায় চিত্র। অর্পিতা তাকিয়ে আছে তার দিকে। চিত্র নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,

‘তুই এখানে! সন্ধ্যাবেলা ছাঁদে কি করিস?’
‘তোমাকে দেখলাম আসতে তাই আসলাম। কিছু হয়েছে চিত্র ভাই?’
চিত্র জবাব দিলো না। কথা ঘুরিয়ে অর্পিতাকে বললো, ‘তোর পড়ালেখা কেমন চলছে?’
‘চলছে।’
অর্পিতা বেশ অনেকটা সময় চুপ থেকে ফের বলে, ‘পিয়াস ভাইজানের অবস্থা দেখেছো চিত্র ভাই? কে যেনো খুব মে’রেছে!’

চিত্র তাচ্ছিল্যের সুরে বলে, ‘ওমন মানুষ যে এখনো বেঁচে আছে এটাই বা কম কি! তার যা চরিত্র, ব্যবহার তাতে মানুষ তাকে পি’টিয়ে মে’রে ফেলেনি এটাই অনেক।’
‘এর মধ্যেই কি কাল বিয়ে হবে চিত্র ভাই?’
‘জানি না। তবে যা বুঝলাম প্রহর ভাইজান কালই বিয়েটা করবে।’
চিত্র দীর্ঘশ্বাস নেয়৷ এরপর দুজনেই চুপ করে থাকে। রেলিং এ হাত দিয়ে তাকিয়ে থাকে দুরে। দুজনের মধ্যে বেশ অনেকটা সময় নীরবতা চলে। এই নীরবতার সমাপ্তি ঘটিয়ে বেশ ধীরে অর্পিতা বলে,

‘তুমি কি আমার ওপর রেগে আছো চিত্র ভাই?’
চিত্র একপলক তাকায় অর্পিতার দিকে তারপর বড় করে শ্বাস নিয়ে বলে, ‘তুই তখন ছোট ছিলি তাই তোর ওপর ওসব নিয়ে রেগে থাকার কোনো কারণ নেই। ওমন বয়সে ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক।’
‘যদি বলি সেই ভুলটা আমি আজ ৪ বছর ধরে প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি। তবে?’

চিত্র বেশ চমকালো। এই প্রথম সে সরাসরি তাকালো অর্পিতার চোখের দিকে। চোখের সে ভাষা সে বুঝে উঠলো না। তবে অসহায় মুখে চেয়ে থাকা অর্পিতার মনের আকুতি সে ঠিকই বুঝলো৷ কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা, কোনটা আবেগ, কোনটা ভালোবাসা সে বুঝে পেলো না। সত্যিই কি অর্পিতার আবেগ নাকি প্রখর অনুভূতি তার জন্য! অর্পিতার এই অনুভূতি গুলোকে কি আদৌও ভালোবাসা বলা যায় নাকি শুধুই আবেগ, মোহ ধরা যায়! ৪ বছরও কি এক পাক্ষিক আবেগ, মায়া, মোহ ধরে রাখা যায়! দৃষ্টি চঞ্চল হলো চিত্রর। অর্পিতা ফাঁকা ঢোক গিলে বিড়বিড় করে বললো,

‘আমি সেই কিশোরী সময় থেকে আজও, আজও তোমার মোহ কাটাতে পারিনি চিত্র ভাই৷ আমি আজও তোমার বলা আবেগেই ফেঁসে আছি। আমি আজও তোমাকে নিজের করে পাওয়ার চিন্তা এতটুকুও বাদ দিতে পারিনি। মানুষের আবেগ তো এতো সময় নিয়ে থাকে না। তবে আমার এই এক পাক্ষিক আবেগ কেনো কাটে না? কেনো আমি তুমি ছাড়া কারোর আবেগে জড়াতে পারি না! কিশোরী বয়সে তো সবকিছুই রঙিন লাগে, ভালো লাগে তবে আমার তুমি ছাড়া সবকিছুই রঙহীন কেনো মনে হয়? আমি কি তবে সত্যি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি?’

বিড়বিড় করে বললেও শুনশান, আওয়াজহীন ছাঁদে পুরো কথাটুকুই স্পষ্ট ভাবে শুনলো চিত্র। বেশ চমকালেও তা বাহিরে প্রকাশ করলো না। গটগট শব্দে ছাঁদ থেকে নিচে নেমে যায়। অজান্তেই অর্পিতার চোখ বেয়ে কয়েক ফোঁটা জল গড়ায়।

যোহর বাদে চৈত্রিকা আর প্রহরের বিয়ে। দিনটা শুক্রবার। তাই সবাই জুম্মার নামাজ পড়েই আসবে বিয়ের জন্য। পল্লবী, নীরা, অর্পিতা, অর্থি, শায়লা সবাই আগেই এসেছে। যেহেতু একই গ্রামেই বিয়ে তাই তেমন অসুবিধা নেই। কিন্তু জমিদার বাড়ির বউ হবে চৈত্রিকা অথচ তাকে সাজাবে না তা তো আর হয় না। তাই জমিদার গিন্নিরা শাড়ি, গহণা যা যা লাগে সব নিয়ে আগেই হাজির হয়েছে।

সোনিয়া বেগম সবাইকে বসতে দিয়ে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। চৈত্রিকা আর সাথী একটা রুমে বসে আছে। আজম আলী বিরক্ত হলেও সবটা একবার দেখে গেছে। মনে মনে তার আক্ষেপের শেষ নেই৷ চৈত্রিকার বিয়েটা সে ভাঙার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। পিয়াস যাও সঙ্গ দিতো তাও এখন সে জমিদারের বাড়ির একটা কক্ষেই বন্দী৷ সে আসতেও পারবে না বিয়েতে। আসবে কিভাবে?

হালকার ওপর ঝাপসা করে কেউ তাকে বিছানায় শায়িত করে দিয়েছে। আজম আলী মনে মনে বেশ ক্ষো’ভ নিয়েই সকল কাজ করছে। যেহেতু বিয়েটা সাথীদের বাড়িতে তাই খাওয়া দাওয়ার সব ব্যবস্থাই এখানে। সোনিয়া বেগম সেসব কাজেই ব্যস্ত। অনেকক্ষণ ধরেই অন্য রুমে বসে থাকতে থাকতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নীরা। এক সময় ধৈর্য রাখতে না পেরে পল্লবীকে বলেই বসে,

‘আম্মাজান কনে কই? আমরা সাজাবো কখন? বউকে দেখবো না?’
পল্লবী কোনো জবাব দেওয়ার আগেই অর্থি বেশ উৎফুল্ল স্বরে বলে, ‘আরে মেজো ভাবীজান তুমি বড় ভাবীজানকে দেখবে? জানো তো বড় ভাবীজান না অনেক সুন্দর! চলো যাই!’
অর্থি উঠে যেতে নিলে পল্লবী আটকায়। কন্ঠস্বর কঠিন করে বলে, ‘এতো তাড়া কিসের তোমাদের? সবাই একসাথেই যাবো। বসো এখানে!’

অর্থি গাল ফুলিয়ে বসে পড়ে। শায়লা মুখ বাঁকায়৷ মন খারাপ করে বসে থাকে নীরা। তার যে কোথায় পু’ড়ছে এটা সে কিভাবে বুঝাবে! পল্লবী উঠে বাহিরে যায়। বেশ খানিকটা সময় পর এসে সে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,
‘আসো সবাই!’

সবাই উঠে দাঁড়ায়। সব থেকে বেশি আগ্রহ নিয়ে উঠে অর্থি। মেয়েটা এতোবার চৈত্রিকাকে দেখেও দেখার আগ্রহ দমাতে পারে না। পল্লবীর পিছু পিছু সবাই চৈত্রিকার রুমে আসে। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে মাথায় আঁচল দেওয়া মেয়ের দিকে। পল্লবী, নীরা, শায়লা হা করে তাকায়। বাসন্তী রঙের শাড়িতে মেয়েটার সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। পল্লবী মুখ দেখেই ধীর স্বরে বলে,

‘মাশাল্লাহ।’
নীরা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে নিচু স্বরে আওড়ায়, ‘এজন্যই বুঝি উনারা দু’ভাই-ই এই মেয়ের জন্য পাগল হয়েছেন!’
সাথী ঘরে ছিলো না। পল্লবীরা ঘরে ঢোকার পরই সে ঘরে আসে। চৈত্রিকা তখন দ্বিধাদ্বন্দ মন নিয়ে বসে আছে। বিয়েটা করা ঠিক হচ্ছে কি না ভেবেই যাচ্ছে তবুও কোনো কুল কিনারা পাচ্ছে না। বিয়ের পর কি হবে! ভবিষ্যৎ যে একদম অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে তা সে বেশ ভালো করে বুঝলেও নিজের উদ্দেশ্য ছেড়ে পিছু আসার মতো অবস্থাও নেই।

নিজের মনকে শক্ত করে। কিসের ভবিষ্যৎ! যেখানে তার আপন বলতে এই পৃথিবীতে শুধু মাত্র সাথী আর তার মামি ছাড়া কেউ নেই সেখানে তার নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবাটা বিলাসিতা। বার বার সে নিজের লক্ষ্য ছেড়ে কিছুতেই পিছু আসতে পারে না। তাার ভাবনার মাঝেই সাথী এসে তার পাশে বসে। পল্লবী চৈত্রিকার থুতনীতে হাত রেখে মুখ উপরে তুলে বলে,

‘মাশাল্লাহ। জমিদার বাড়ির যোগ্য বড় বউ।’
ভ্রু কুঁচকে তাকায় চৈত্রিকা। সে বুঝে উঠে না পল্লবীর কথার মানে। তবে পরক্ষণেই নিজের ভ্রু ঠিক করে সালাম দেয় সে। শায়লা সালাম নিয়ে তখনো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। অর্থি চৈত্রিকার পাশে বসে ফিসফিস করে বলে,
‘ভাবীজান আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে।’

চৈত্রিকা বড় করে শ্বাস নেয়। মেয়েটা সবসময়ই তাকে এই কথা বলে। আচ্ছা এই মেয়ের কাছে কি কখনোই তাকে দেখতে অসুন্দর মনে হয় না? হয়তো না। হলে তো আর প্রতিদিন মুখ ব্যাথা করে একই কথা আওড়াতো না। নীরা শুধু তাকিয়ে দেখে আর মনে মনে ক্ষো’ভ বাড়াতে থাকে। পল্লবী সবার সাথেই পরিচয় করিয়ে দেয় তাকে। অর্পিতা আর পল্লবী মিলে সাজানোর কাজ শুরু করে। ভারী বেনারসি, গহণা, নুপুর, নাকের নথ, টিকলি, বড় টায়রা আর সাথে ঘোমটা। মুখে হালকা প্রসাধনী।

অর্থি সাজানোর পর কিছুক্ষণ তাকিয়েই ছিলো মুখের দিকে। এতে বেশ লজ্জা পায় চৈত্রিকা। সাথী শুধু সবটা দেখে মুখে কিছু বলে না৷ তার মন সায় দেয় না এ বিয়েতে। এই বিয়ে যে কতটা বিপদ নিয়ে আসবে তা কেনো চৈত্রিকা বোঝে না! দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাহিরে সনিয়া বেগমের কাছে যায়। জুম্মার নামাজ ততক্ষণে শেষ হয়েছে। চয়ন, শিমুল, প্রহর, চিত্র, অয়ন আরো কয়েকজন একসাথে নামাজ পড়ে সরাসরি চৈত্রিকার বাড়ি এসেছে। তাদেরকে আপ্যায়ন করতে করতে সনিয়া বেগমের অবস্থা নাজেহাল।

চৈত্রিকা আর প্রহরকে দু রুমে রেখেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। চৈত্রিকা ‘কবুল’ বলার সময় বেশ যথেষ্ট সময় নেয়। বার বার গলা কেঁপে উঠছিলো। কোনো রকমে নিজেকে সামলে ৩ কবুলে বিয়ে সম্পন্ন করে। ব্যাস সে জুড়ে গেলো প্রহরের সাথে। জমিদারপুত্র প্রহর রেনওয়াজের সাথে। সে এই মুহূর্ত থেকেই হয়ে গেছে মিসেস চৈত্রিকা প্রহর রেনওয়াজ। ঘৃণা নিয়ে শুরু হলো নতুন এক জীবন।

নতুন সংসার, নতুন পথচলা। আদৌও কি এ সংসারের নতুনত্ব টিকবে নাকি ঘৃ’ণায় ধসে পড়বে তা কেউই জানে না। কেবল ‘কবুল’ শব্দটি পড়া দুটি মানুষই জানে তাদের মনে চলা সকল কথা, ঘৃ’ণার প্রখরতা, একেকটা লক্ষ্য। চৈত্রিকা নিজেকে শক্ত করে নেয়। এরপর খাওয়া দাওয়ার পার্ট শেষ হতেই কেউ একজন সবার অগোচরে চৈত্রিকার হাতে গুজে দেয় একটা ছোট্ট চিরকুট। সেখানে স্পষ্ট করে লিখা,

চৈত্রিকা পর্ব ৬

‘প্রহর রেনওয়াজকে বিয়ে করেছো বলে নিজের লক্ষ্য, নিজের উদ্দেশ্য ভুলে যেও না৷ সে তোমার স্বামী বলে আবার দুর্বল হয়ে তার অন্যায়গুলো ক্ষমা করো না। মনে রেখো ওই বাড়ির মানুষগুলোই তোমার জীবনের ঝড়ের কারণ। সাবধান! ভুল করেও স্বামীর প্রেমের সাগরে পড়ো না তবে তা থেকে আর কখনো উঠতে পারবে না।’

চৈত্রিকা পর্ব ৮