চৈত্রিকা পর্ব ৯

চৈত্রিকা পর্ব ৯
বোরহানা আক্তার রেশমী

সকাল বেলা গোসল সেড়ে রুমে থাকা একটা লাল শাড়ি পড়ে চৈত্রিকা। অর্থি সেই ভোর বেলা থেকে ডেকে ডেকে চৈত্রিকাকে তুলেছে। প্রহর নিশ্চিন্ত মনে তখনো ঘুমাচ্ছে। চৈত্রিকা চোখ মুখ কুঁচকে একবার প্রহরের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ মাথায় ঘোমটা টেনে ঘরের দরজা খুলে বের হয়। ভেজা চুলগুলো তখন এলোমেলো করে রাখা। অর্থির ঘর কোনটা তা জানেনা চৈত্রিকা। তবে ভাগ্যবশত ঘর থেকে বের হওয়ার পর সামনে পরে অর্পিতা। অর্পিতাকে দেখে সৌজন্যমূলক হেঁসে বলে,

‘আপু অর্থির ঘর কোনটা? আসলে ‘ও’ আমাকে ডেকে আবার চলে গেছে তো!’
অর্পিতা কিছুক্ষণ চেয়ে থাকে চৈত্রিকার মুখপানে। কি স্নিগ্ধ মেয়েটার মুখ! গোসলের পর যেনো মেয়েটার সৌন্দর্য আরো কয়েকগুণ ধরা দিয়েছে। অর্পিতা মুচকি হেঁসে চোখের কাজল নিয়ে চৈত্রিকার ঘাড়ে লাগিয়ে দেয়। চৈত্রিকা খানিকটা চমকালেও পরমুহুর্তে অর্পিতা কি করছে বুঝতে পেরে নিজেকে সামলে নেয়। অর্পিতা হেঁসে বলে,
‘মাশাল্লাহ। কারো নজর না লাগুক! অবশ্য আপনি যতটা সুন্দর তাতে সবার নজর লেগে যাবেই। আর আমাকে আপু বলে ডাকছেন কেনো বড় ভাবীজান? আমি তো সম্পর্কে আপনার ছোট ননদ!’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘সম্পর্কে আপনি আমার ছোট হলেও বয়সে তো বড়! তাই আপু বলতে সমস্যা নেই৷’
অর্পিতা ঠোঁট প্রসারিত করে হাসে। নাহ! মেয়েটার আচার-আচরণও বেশ ভালো। সে ভেবেছিলো এতো সুন্দরী মেয়ের নিশ্চয় অনেক অ’হং’কার হবে! কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে মেয়েটা খুবই মিশুক এবং ভালো মনের বের হলো। দুজনে আরো কিছুটা গল্প করে একসাথেই অর্থির ঘরে আসে। অর্থি তখন বিছানার ওপর সবগুলো বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিয়ে বসে আছে। অর্পিতা ফিক করে হেঁসে দিলেও চৈত্রিকা খানিকটা ভ্রু কুঁচকালো। অর্থির মুখের অবস্থা দেখে তার ভালো ঠেকে না। অর্থি চৈত্রিকা আর অর্পিতাকে দেখেই ঠোঁট ফুলায়। কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে,

‘ওহ ভাবীজান দেখুন নাহ আম্মাজান আমারে বই নিয়ে বসিয়ে দিয়েছে! আপনিই বলেন তো বড় ভাইজানের বিয়ের সময় কেউ পড়তে বসে?’
অর্পিতা অর্থির মাথায় গাট্টা মে’রে বলে, ‘বিয়েটা তো তোর ভাইয়ের তোর তো আর না! তাহলে পড়তে সমস্যা কি?’
চৈত্রিকাও এগিয়ে এসে অর্থির পাশে বসে। অর্থি অর্পিতার কথা পাত্তা না দিয়ে বেশ উত্তেজিত স্বরে বলে, ‘এটাই! এটাই তো আমার সমস্যা। পড়া!’

চৈত্রিকা বুঝতে পেরে নিজেও ফিক করে হেঁসে দেয়। হাসতে হাসতেই বলে, ‘পড়াটাই তোমার সমস্যা? তবে তোমার ভাইজানকে বলে বিয়ের ব্যবস্থা করি?’
‘হ্যাঁ! করো করো, আমার সমস্যা নেই।’
অর্থির ফট করে এমন কথায় চৈত্রিকা খানিকটা ঘাবড়েই যায়। অর্পিতা অর্থির মাথায় ফের গাট্টা মে’রে বলে, ‘বিয়ে বিয়ে না করে পড়! এতো আগে জেঠাই তোর বিয়ে দেবেন না। তাই পড়ে পড়েই শহিদ হও ছোট বোন।’
অর্থি এবার বেশ বড় সড় করে গাল ফুলালো। তার গাল ফুলানো দেখে চৈত্রিকা আর অর্পিতা দুজনই শব্দ করে হাসে। অর্থি হা করে তাকায় চৈত্রিকার দিকে। গালে হাত দিয়ে সেদিকে তাকিয়েই বলে,

‘আপনার হাসিটা অনেক সুন্দর ভাবীজান।’
চৈত্রিকার হাসি বন্ধ হয়ে যায়। মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নেয়। অর্পিতা নিঃশব্দে হাসে। তারপর অর্থিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে, ‘তোমার ভাবীজানের শুধু হাসি কেনো? সে পুরোটাই সুন্দর। এখন তুমি পড়ো নয়তো বড় আম্মুকে পাঠাচ্ছি আমি!’

‘আজ না পড়লে কি হয়? ভাইজান তো কেবল কাল বিয়ে করলো তাহলে আর দুদিন পর থেকেই না হয় পড়ি!’
‘জ্বি নাহ। এখনই পড়! তুই এমনেই ফাঁকিবাজ তারওপর কিছু পারিস না। একদম ফাঁকি দিবি না। সব পড়া পড়বি। আমি এসে পড়া নিবো! বড় ভাবীজান চলুন নিচে যায়!’
অর্পিতা উঠে দাড়ালে চৈত্রিকা নিজেও ওঠে। অর্থিকে বেশ নরম স্বরে বলে, ‘পড়া শেষ করে তুমিও নিচে আসো। কেমন!’

অর্থি গাল ফুলিয়েই মাথা নাড়ে। চৈত্রিকা হেঁসে নিজের মাথার আঁচল আরও একটু টেনে নিয়ে অর্পিতার পিছু পিছু নিচে নামে। চৈত্রিকাকে দেখে খানিকটা সময় তাকিয়ে থাকে পল্লবী। মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বোঝার চেষ্টা করে। নিজের কাজ করতে করতে বিড়বিড় করে বলে, ‘মেয়েটা খুব চতুর! এর থেকে সাবধানে থাকতে হবে।’

চৈত্রিকা নিজেও তাকায় পল্লবীর দিকে। মনে মনে হাসে সে। বেশ মজাও পায়। হল রুমের সোফায় চয়ন, পিয়াস, চিত্র বসে ছিলো। অর্পিতা আর চিত্র দুজনেই একপলক নিজেদের দিকে তাকায়। চয়ন নিজের মতো চা পান করছে। পিয়াসের চোখ তখন চৈত্রিকার দিকে। চৈত্রিকার দিকে থমকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রয়। তাদের ক্রস করে যখন চৈত্রিকা রান্নাঘরের দিকে যায় তখন পিয়াসের চোখ পড়ে চৈত্রিকার ভেজা চুলে। ব্যাস! হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রক্তচক্ষু নিয়ে সেদিকে তাকিয়ে রয়। যেনো চোখ দিয়েই সবটা ভ’স্ম করা গেলে সে এমুহূর্তে তাই করতো! তার এই রুপ সবার নজর এড়িয়ে গেলেও এড়ালো না চৈত্রিকা আর নীরার চোখ। নীরার মনের ক্ষো’ভ বাড়লেও চৈত্রিকা মনে মনে কু’টিল হাসি হাসে। বিড়বিড় করে আওড়ায়,

‘এ তো কেবল শুরু পিয়াস রেনওয়াজ। বড় ভাইয়ের সুখ সহ্য হয় না বুঝি! তোমরা যত নিজেদের মধ্যে লড়বে আমি তত এগিয়ে যাবো নিজের লক্ষ্যে। শক্তিতে নয় বুদ্ধিতেই একটু একটু করে মা’রবো তোমাদের। একটাও পা’প করে পাড় পাবে না।’

সকালের খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই যখন নিজেদের নিজেদের কাজে বেড়িয়েছে তখন চিত্রও বাড়ি থেকে বের হয়। বেশ অনেকদিন গ্রামের কিছুই দেখা হয় না। অনেক কিছুর কি পরিবর্তন ঘটেছে নাকি আগের মতোই আছে! মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। একটু শান্তি দরকার। তাই চুপচাপ পকেটে হাত গুজে বের হয়ে এলো বাড়ি থেকে। পেছন পেছন অর্পিতাও বের হয়ে আসে। পেছন থেকে বেশ নিচু স্বরেই ডাকে চিত্রকে। চিত্র ঘাড় বাকিয়ে পিছু তাকাতেই অর্পিতাকে চোখে পড়ে। পুরোপুরি পেছনে ফিরে ভ্রু নাঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘কি?’

‘কোথায় যাচ্ছো চিত্র ভাই?’
‘কোথাও না। আমি এমনিই বের হয়েছি। গ্রামটা অনেকদিন ঠিক মতো দেখা হয় না। এবার যখন অনেক দিন আছি তখন না হয় একটু ঘুরে দেখি!’
‘তুমি এবার অনেকদিন থাকবে?’
‘হুম।’

চিত্রর ছোট্ট জবাবে চুপ করে যায় অর্পিতা। চিত্র নিজের রাস্তায় ঘুরে যেতে যেতে বলে, ‘বাড়ির মধ্যে যা!’
অর্পিতা সাহস নিয়ে ফট করে বলে, ‘আমি আসি তোমার সাথে?’
পা থেমে যায় চিত্রর। কপালে ভাজ ফেলে পিছু তাকিয়ে বলে, ‘তুই কেনো যাবি?’

‘এম-এমনি। তুমি যাচ্ছো তাই ভাবলাম যাই! আসলে আমিও তো অনেকদিন থেকে গ্রামে আসি না। তাই আরকি!’
চিত্র কিছু বলে না। অর্পিতাকে ‘আয়!’ বলে নিজে হাঁটা লাগায়। অর্পিতা নিজেও ঠোঁট এলিয়ে হেঁসে চিত্রর পাশাপাশি হাঁটতে শুরু করে। দুজনে বেশ অনেকটা পথ নীরবতা নিয়েই হাঁটে। গ্রামের শেষের দিকে একটা নদী রয়েছে। দুজনে ঠিক সেখানেই আসে। চৈত্র মাসের রোদের তাপে নদী শুকিয়ে গেছে প্রায়। ভ্যাপসা গরমে জান যায় যায় অবস্থা। অথচ এ রোদের মধ্যেই দুজন দাঁড়িয়ে আছে নদীর পাড়ে। চিত্র বেশ নরম স্বরে ডাকে, ‘অর্পি!’

অর্পিতা চমকে তাকায়। কতগুলো দিন পর চিত্রর মুখে সেই আগের মতো আদুরে ডাক শুনে চোখ বন্ধ করে নেয়। ভেতরটা শীতলতায় ভরে ওঠে। চিত্র আড়চোখে অর্পিতার প্রশান্তি ভরা মুখ দেখে চোখ ফিরিয়ে নেয়। নিজেকে প্রস্তুত করে অর্পিতার মন ভাঙার জন্য। চোখ দুটো অন্যদিকে নিয়ে বেশ দ্রুত স্বরে বলে,
‘তুই আমার কাছে যা চাচ্ছিস তা সম্ভব না অর্পি। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি৷ তাই তোর জন্য এটাই মঙ্গলের যে তুই আমার থেকে দুরে থাক!’

বিকেলের দিকে চয়নের ঘরে যায় প্রহর। চোখে মুখে তার ভীষণ গম্ভীরতার ছাপ। শার্টের হাতা গুটিয়ে নিয়ে চয়নের সামনে যায়। চয়ন প্রহরকে এই সময় নিজের ঘরে দেখে ভ্রু কুঁচকায়। ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘এই সময় তুমি! কিছু হয়েছে প্রহর?’
প্রহর জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। তারপর রয়ে শয়ে বলে, ‘আমাদের বউভাতের ব্যবস্থা করুন আব্বাজান। গ্রামের সকল মানুষ সহ যত আত্মীয়-স্বজন আছে সবাইকে দাওয়াত করুন!’

চয়ন অবাক দৃষ্টিতে তাকায় নিজের বড় ছেলের দিকে। সাথে ভেতরে ভেতরে বেশ চমকেও যায়। হঠাৎ প্রহরের এহেন সিদ্ধান্তের কিছুই বুঝে ওঠে নাহ। তবে কিছু বলতে নিলে প্রহর তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজেই আবারও বলে,
‘আমি যা বলেছি ভেবেই বলেছি। আপনি সবকিছুর ব্যবস্থা করুন।’
‘তুমি আসলেই ভেবে বলছো প্রহর? এতে কি হতে পারে তা তুমি বুঝতে পারছো?’
‘জ্বি আব্বাজান। আর হ্যাঁ! কোনো আত্মীয়কে বাদ দিবেন না। আমার জানামতে আপনার নিমন্ত্রণ কেউ ফেলতে পারবে না তাই কাউকে বাদ দিবেন না।’

চয়ন গম্ভীর দৃষ্টিতে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার বুঝতে বাকি নেই তার ছেলে তাকে কি বুঝিয়ে গেলো! তবে এমন সিদ্ধান্তের আগা মাথা কিছুই তার মাথায় ঢুকলো না। প্রহর নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে চুপচাপ কক্ষ ত্যাগ করে। প্রহরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে কেউ খুব গোপনে শ’য়’তা’নী হাসি হাসে।

প্রহর নিজের ঘরে এসে দেখে চৈত্রিকা আর অর্থি বসে আছে। দুজনে জমিয়ে গল্প করছে। প্রহরকে দেখে অর্থি ছুটে আসে তার কাছে। নিজের হাত বাড়িয়ে দিতেই প্রহর হেঁসে পকেট থেকে চকলেট বের করে দেয়। অর্থি বেশ খুশি মনেই ঘর ছেড়ে বের হয়ে যায়। চৈত্রিকা নিজের মতো তখনো ঠায় বসে রয়েছে। প্রহর কোনো শব্দ না করে নিজের জামাকাপড় নিয়ে গোসলখানায় ঢুকে পড়ে। বেশ অনেকটা সময় পর এসেও সে চৈত্রিকাকে নিজের জায়গাতে বসে থাকতে দেখে বলে,

‘বাহ! এখনো আছো? আমি তো ভেবেছিলাম আমি আসতে আসতে তুমি পালিয়ে যাবে!’
চৈত্রিকা ভ্রু কিঞ্চিত কুঁচকে বলে, ‘পালাবো কেনো? আমি কি চো’র নাকি ডা’কাত জমিদার সাহেব? যে পালাতে যাবো!’
‘সে তো তুমিই ভালো জানো। কাল রাতে যেভাবে পালাই পালাই করলে তাতে তো আমার মনে হলো তুমি আমার ঘরের বউ না কোনো শ’ত্রু!’

চৈত্রিকা চমকায়। প্রহরের ঠোঁটে হাসি৷ চৈত্রিকা নিজেকে সামলাতে সামলাতেই প্রহর এসে শুয়ে পড়ে তার কোলে। চৈত্রিকা আরো এক দফা চমকে সরে যেতে নিলে প্রহর আটকে দেয়। হাত দিয়ে কোমড় জড়িয়ে উদরে মুখ গুঁজে দেয়। চৈত্রিকা জমে যায়। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
‘আপনি এমন চিপকে আসছেন কেনো? দুরে সরুন!’

প্রহর পাত্তাই দিলো না। নিজের মতো শুয়ে থেকেই বললো, ‘আমার ঘুম পাচ্ছে। ঘুমাবো! এভাবেই থাকো।’
‘এই অবেলায় কে ঘুমায়? আর ঘুমাবেন নিজের বালিশে ঘুমান। আমাকে ছাড়ুন!’
প্রহর ছাড়ে না। প্রহরের ভেজা চুলের পানিতে চৈত্রিকার শাড়ি ভিজে লেপ্টে যায়। চৈত্রিকা তা খেয়াল করে সব ভুলে খ্যাক করে ওঠে। রাগী স্বরে বলে,

‘চুল না মুছে শুয়ে পড়েছেন কেন আপনি? আপনার চুলের পানিতে আমার শাড়ি ভিজে যাচ্ছে। উঠুন এক্ষুণি! ছাড়ুন আমাকে! চুল মুছে এসে বিছানায় মাথা দিয়ে ঘুমান।’
প্রহর কপালে ভাজ ফেলে মাথা উচু করে তাকায় চৈত্রিকার দিকে। কিছুক্ষণ চৈত্রিকার মুখের দিকে তাকিয়ে বেশ গম্ভীর স্বরে বলে, ‘সমস্যা কি মেয়ে? এতো পটর পটর কেনো করো? মুখটা একটু বন্ধ রাখতে পারো না? আমার চুলের পানি নিয়ে সমস্যা হলে নিজে মুছে দাও।’
‘আমি আপনার চুল মুছবো?’

‘হ্যাঁ। কারণ সমস্যাটা তোমার, আমার না। তোমার শাড়ি ভিজে যাচ্ছে, আমার না।’
চৈত্রিকা কটমট করে তাকায়। প্রহর ফের নিজের মতো মুখ গুজে দিয়ে এক হাতে তোয়ালে এগিয়ে দেয় চৈত্রিকার কাছে। চৈত্রিকা কিছুতেই প্রহরের চুল মুছবে না। নিজের শাড়ি ভিজছে ভিজুক তবুও সে নিজ ইচ্ছায় এই লোককে ছুঁয়েও দেখবে না। ক্ষো’ভ নিয়েই মনে মনে আওড়ায়,

‘নিজ ইচ্ছায় আপনার মতো প’শুকে আমি ছুঁবো না প্রহর রেনওয়াজ। বাধ্য না হলে আপনাকে নিজের এতোটা কাছে কখনোই আসতে দিতাম না। নেহাৎই আপনি আমার নামমাত্র স্বামী।’
তাচ্ছিল্যের সুরে হাসে চৈত্রিকা। ভেতরের আগুন যেনো দাউদাউ করে জ্ব’লছে। প্র’তিশোধের নেশায় বুদ হওয়া হৃদয়টা জ্ব’লছে তখনো। প্রহরের দিকে চেয়ে চৈত্রিকা মনে মনে কিছু ভাবে। তখনই ভেসে আসে প্রহরের কন্ঠের দু লাইন বাক্য,

চৈত্রিকা পর্ব ৮

‘ভেতরের আগুন ভালোবাসায় না নিভে যায় চৈত্রিকা!
ভালোবাসা কিন্তু বড্ড খারাপ জিনিস, সবকিছু এক নিমিষেই না জ্বা’লিয়ে দিতে পারলে শান্তও করে দিতে পারে। সাবধান বউ!’

চৈত্রিকা পর্ব ১০