জলকাব্য পর্ব ১১ || লেখিকা:সুরাইয়া আয়াত

জলকাব্য পর্ব ১১
লেখিকা:সুরাইয়া আয়াত

বিকালবেলা নীলু ঘুম থেকে উঠেছে , এতোটা জার্নি করার পর আর তাছাড়া চিন্তায় চিন্তায় শরীরটা আর পেরে উঠছিলো না তাই অল্প কিছু খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলো ৷ শরীরটা এখন ম্যাজ ম্যাজ করছে ঘুম থেকে ওঠার পর , উঠানটাও খুব একটা বড়ো নয় যে সেখানে হাটাহটি করবে, তাই একটু ছাঁদে যাবে, সেখানে গিয়ে যদি মনটা ভালো হয় , এই ছাদ থেকে নীলুর নিজের বাড়ি দেখা তাই ৷ শ্রাবন আর নীলু একই কলোনীতে থাকে , ছোট্ট এলাকা তাই অলি গলি অনেক , সেই জন্য মনে যেন দুটো বাড়ির মধ্যে দূরত্ব অনেকটা কিন্তু এই সরু আর আকবাকা অলি গলি গুলো না থাকলে মনে হয় যেন এক পা বাড়ালেই শ্রাবনের বাড়িতে যাওয়া যাই ৷ ছাদে এখন খুব হাওয়া হচ্ছে নিশ্চয়ই , সেখানে দু বাহু প্রসারিত করে নীলু প্রান ভরে প্রশ্বাস নেবে আর শরীরের সমস্ত কুলষিতা দূর করবে ৷

বিছানা থেকে নেমে কল ঘরের দিকে যেতেই দেখলো শ্রাবনের মা গেটের দরজা খুলে বাড়ির ভিতরে ঢুকছেন ৷ নীলু চটপট চোখে মুখে জল দিয়ে ওনার কাছে ছুটে গেলেন , দৌড়ে যাওয়ার কারনে নীলু ওর পাজমাতে পা আটকে পড়ে যেতে নিলেও সামলে নিলো ৷ নীলুকে ওভাবে ছোটাছুটি করতে দেখে শ্রাবনের মা ওর কাছে এগিয়ে গিয়ে খানিকটা রাগী চোখে তাকিয়ে ভারী গলায় বললেন
” এইটা থাপ্পড় দিবো ৷ এভাবে কেউ দৌড়ায় ? এক্ষুনি যদি কোন অঘটন ঘটতো তাহলে কি হতো ?”
নীলু কান ধরে বাচ্চাদের মতো করে বলল

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” সরি আর হবে না, তোমাকে ফিরতে দেখে তাই তো ওমন করে ছুটে এলাম ,রাগ করোনা প্লিজ ৷”
কানে হাত দিয়ে বাচ্চামো ভঙ্গিতে নীনুকে কথা বলতে দেখে উনিও আর বেশিখন নীলুর ওপর রাগ করে থাকতে পারলেন না , নীলুর কান থেকে হাতটা নামিয়ে দিয়ে বললেন
” হয়েছে হয়েছে, এরপর যেন এমন ব্যাস্ততা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে না দেখি ৷”
নীলু একটু মুচকি হাসি দিলো ৷ আজ কতদিন পর অজান্তেই নীলুর মুখে হাসি ফুটে উঠেছে ৷ এই হাসি যেন কখনো মিলিয়ে না যাই সেই আশায় করতে লাগলো শ্রাবনের মা ৷
” আচ্ছা তুমি কোথায় গিয়েছিলে ৷”

” একটু দোকানে গিয়েছিলাম , চল এখন ঘরে চল, জিলাপি এনেছি খাবি ৷”
” হমম সে না হয় খাবো কিন্তু তুমি কি দরকারে গিয়েছিলে বললে নাতো ৷”
উনি কথা ঘোরানোর জন্য বললেন
” সে না হয় পরে বলছি আগে ঘরে চল ৷”
” নাহ তুমি বলো আগে কোথায় গিয়েছিলে ৷”
উনি সত্যি কথাগুলো নীলুকে বলতে চাইছিলেন না কিন্তু নীলুর জোরাজুরিতে উনি বলেই ফেললেন
” গহনার দোকানে গিয়েছিলাম ৷ আমার বাবা আমার বিয়ের সময় একজোড়া কানের দিয়েছিলেন, সেটা বিক্রি করতে গেছিলাম ৷”

নীলু অবাক হয়ে বলল
” আন্টি তুমি ওটা বিক্রি করতে গেলে কেন? ”
উনি নীলুর জলে ভেজা গালে হাত রেখে বললেন
” সামনে তোর অনেক বড়ো একটা লড়াই হতে চলেছে নীলু মা ৷ যুদ্ধে যখন নামতেই হবে তখন খালি হাতে নিজের প্রান বিসর্জন দেওয়ার কোন মানেই হয় না , তাই যাতে টাকা পয়সার কোন ঘাটতি না থাকে তাই কানের জোড়া বিক্রি করলাম

নীলুর হৃদস্পন্দন যেন থেমে গেল, নিমেষেই উত্তেজনাতে পরিপূর্ণ শরীরটা যেন মাটিতে মিশে যেতে চাইছে ৷ নীলু শ্রাবনের মাকে আঁকড়ে ধরলো ৷ নীলু নিস্তব্দ , কোন কথা আসছে না মুখে, চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া নোনাজলগুলো ওর ভেজা মুখের জলের সাথে মিশে যাচ্ছে ৷ নিজের মানুষরাও যেখানে ওকে আশ্রয় দেইনি সেখানে একজন দূর সম্পর্কের মানুষ যার সাথে ওর রক্তের সম্পর্কও নেই তারা নীলুর জন্য এতোকিছু করেছে যা নীলুর কাছে কল্পনা মাত্র ৷নীলু নিরবে চোখের জল ফেলছে আর শ্রাবনের মায়ের ঠোঁটের কোনে আছে একচিলতে হাসি , এই হাসি তৃপ্তির হাসি❤ ৷

” কি চাই আপনার এখানে ? আপনার মেয়ের সাথে তো আমার আর কোন সম্পর্ক নেই, তার সাথে আমার ডিভোর্স হয়েছে তাই আপনি এখন কোন দাবী করতে আসলেও আমি শুনবো না ৷”
নীলুর মা ঝাঝালো কন্ঠে বললেন
” তা ডিভোর্স টা তো আর আমার মেয়ে ইচ্ছা করে দিতে চাইনি , তুমিই তো আর কাছ থেকে জোর করে ডিভোর্স টা নিয়েছো , তার পেটের সন্তানটাকে তো তুমিই নষ্ট করে দিয়েছো তাই এখন এসব কথা বললে চলবে ? ”
রুদ্র রেগে গিয়ে কিছু বলতে গেলেই মিঠি ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল

” দেখুন অন্টি একটা সময় আপনার মেয়ের সাথে রুদ্রর একটা বৈবাহিক সম্পর্ক ছিলো কিন্তু এখন আর সেইরকম কোন সম্পর্ক নেই তাই অযথা এমন টাকা পয়সার ডিমান্ড করা বন্ধ করুন ৷ যতদিন সম্পর্ক ছিলো ততদিন ও দিয়েছে কিন্তু এখন ও আমার স্বামী, তাই ও আর আপনাদেরকে কোনভাবেই টাকা পয়সা দিয়ে হেল্প করবে না ৷”
মিঠির কথা শেষ হতেই রুদ্র বলে উঠলো
” আপনি যা যা দাবী করছেন তার পক্ষে আপনার কাছে কোন প্রমান আছে? আমিই যে নীলুর বাচ্চাটা নষ্ট করেছি তার কোন প্রমান আছে আপনার কাছে ৷”

রূদ্র আর মিঠি ওনাকে রিতীমতো তাদের কথার জালে ফাসাচ্ছে তা উনি বুঝতে পারলেন কিন্তু উনিও যে থেমে থাকার পাত্রী না , উনিও এবার ঝট করে ওনার ব্যাগ থেকে একটা চাকু বার করে নিজের পেট বরাবর ধরলেন আর বললেন
” আমি এতশত কিছু জানি না যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল , কিন্তু তুমি যদি টাকা পয়সা দিতে রাজি না হও তাহলে আমি এক্ষুনি এখানে নিজের শরীরে চাকু মেরে দেবো ,তারপর আমার মৃত্যুর জন্য তোমরা সারাজীবন জেল খাটবে তখন বুঝবে ৷”

মিঠি কিছু বলতে গেলে রূদ্র থামিয়ে দিয়ে বলল
” বাদ দাও মিঠি এরা টাকা ছাড়া কিছুই চেনে না, সামান্য কয়েকটা টাকাই তো , তাছাড়া বেকার ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করার কোন প্রয়োজন ই নেই ৷”
কথাটা বলে রূদ্র রূমে চলে গেল ৷ তখন মিঠি বলল

” এরপর যদি নীলুকে আমাদের ঘাড়ে চাপাতে চান তাহলে আমিই আপনাকে জানে মেরে দিবো বলে দিলাম ৷”
কথাটা বলে ও রূমে চলে গেল ৷ রূদ্র এসে 15 হাজার টাকা ওনার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল
” প্লিজ এবার বিদায় হন ,আর মাসে মাসে এইভাবে বাড়িতে এসে টাকা চেয়ে ছোটলোকের মতো ব্যবহার করার কোন দরকার নেই , আপনারা আগে যেমন ভাবে টাকা পেতেন তেমনভাবে টাকা পেয়ে যাবেন আর যদি ভেবে থাকেন যে নীলুকেও এখন এখানে পাঠাবেন তাহলে আপনার নামে আমি মানহানির মামলা করব বলে দিলাম ৷”
উনি টাকাগুলো ব্যাগে রাখতে রাখতে বললেন

” সে নীলুকে আমি পাঠাচ্ছি না,নীলুকে আমি আবার ভালো কোথাও বিয়ে দেবো ৷ শুধু তুমি মাসে মাসে টাকা গুলো দিও তাহলেই হবে ৷ আর হ্যাঁ আগে তোমার আংকেলের একাউন্টে টাকা পাঠাতে তবে এখন থেকে আমার একাউন্টে টাকা গুলো পাঠিও কেমন ! ”
কথাটা বলে উনি চলে গেল টাকা নিয়ে ৷

রাত 11:30 বাজে, নিলু বারবার এপাশ ওপাশ করছে তবুও ওর ঘুম আসছেনা ৷ শ্রাবণের মায়ের সাথে ঘুমায় নিলু ৷ উনি রোজ রাত্রে একটা করে ঘুমের ওষুধ খান , না হলে উনার ঘুম আসেনা ৷ শ্রাবণের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে উনার চোখ থেকে ঘুম উঠে গেছে তাই ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খান তাই ওনি একবার ঘুমিয়ে গেলে সহজে উনার ঘুম ভাঙ্গে না , তাই এই মুহূর্তে নিলু ওনার পাশ থেকে উঠে কোথাও চলে গেলেও উনি বুঝতে পারবেন না ৷ নীলুর মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে ৷ সবকিছুর একটা সমাধান এর প্রয়োজন আর তা কেবল মাত্র হবে একমাত্র শ্রাবণের সাথে কথা বললে ৷ আজকে শ্রাবণের মা নিজের কানের দুল জোড়া নীলুর জন্য বিক্রি করে দিয়েছে সেটা নীলু মানতে পারছেনা , মনে-মনে এর জন্য অনুশোচনা হচ্ছে আর বারবার মনে হচ্ছে আজ ও যদি স্বাবলম্বী হতো তাহলে ওর নিজের কেসটা লড়ার জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো না ৷

নিলু দ্রুত পায়ে শ্রাবনের রুমের দিকে গেল , শ্রাবনের রুমের সামনে যেতেই দেখল দরজাটা খোলা যার অর্থ হলো শ্রাবণ ঘরে নেই ৷ শ্রাবণ এত বেখেয়ালি নয় যে নিজের ঘরের দরজা খুলে রেখে কোথাও চলে যাবে এত রাতে ৷ তাহলে শ্রাবণ কোথায় যেতে পারে এত রাত্রে ! কথাটা ভাবতে ভাবতে নিলু ওর ঘরে ফিরে আসতে গেলেই কানে একটা গিটারের সুর ভেসে আসলো ৷ গিটারের আওয়াজ পেয়ে ওর বুঝতে আর দেরী হলো না যে শ্রাবণ ছাদে এখন গান করছে ৷ নীলু একটু মুচকি হেসে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো ৷ সিঁড়ির ধাপগুলো যতই পেরিয়ে উপরে উঠছে ততই গিটারের সুর কানে এসে পৌঁছাচ্ছে গাঢ়ো হয়ে ৷ শ্রাবণ বরাবরই অনুপম রায়ের ভক্ত, বেশিরভাগ সময় অনুপম রায়ের গান করে এখনো ঠিক তাই করেছে ৷

” আমাকে আমার মত থাকতে দাও
আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি (2)
যেটা ছিলনা ছিলনা সেটা না পাওয়াই থাক
সব পেলে নষ্ট জীবন ৷”
গানটা শেষ না হওয়া অবধি নীলু সিঁড়িঘরে দাঁড়িয়ে রইলো, না হলে গানের মাঝখানে শ্রাবণের সামনে গেলে শ্রাবণ হয়তো গানটা মাঝপথে থামিয়ে দেবে, আর মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটবে , তাই পুরো গানটা শুনে তারপরে শ্রাবনের কাছে গেল নীলু
শ্রাবণ গিটার টা পাশে রেখে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে নিলু নিরবে শ্রাবণের পাশে গিয়ে বসলো ৷ শ্রাবন উপস্থিতি অনুভব করতে পেরে নীলুর দিকে ঘুরে তাকালো কিন্তু কিছু বললো না নিরব রইলো ৷
নিলু শ্রাবণের দিকে হালকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল “শ্রাবণ ভাইয়া একটা কথা বলি ?”
শ্রাবণ মিষ্টি সুরে বলল

” হমম বল ৷”
“আমার জন্য একটা জব খুঁজে দেবে ?যদিওবা এটা অনেকটা কল্পনার মত কারণ আমি ততটা পড়াশোনাও জানিনা না গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেনি, যে কেউ আমাকে জব দেবে না ৷ একটা কোম্পানিতেও জব করার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা লাগে সেটুকুও আমার নেই তবুও চেষ্টা করতে বাধা কোথায়? এমনিতেই তোমাদের দুজনের সংসারে আমি বাড়তি একজন মানুষ যুক্ত হয়েছি ,তোমাদের খরচা বেড়েছে তাছাড়া আমি তোমাদের সাথে থাকি, আমারও একটা দায়িত্ব আছে তোমাদের প্রতি ৷

তুমি হয়তো আমার কথাটা শুনে বলতেই পারো “যে তোর কিছু করার দরকার নেই আমি আছি তো ৷” তাহলে আমি মনে করবো তুমি আমাকে তোমাদের পরিবারের একজন হিসেবে ভাবই না ৷ একটা পরিবার যেখানে তৌরি হয় সেখানে প্রতিটা মানুষের প্রত্যেকের প্রতি দায়িত্ব থাকে ৷ আজ আমার জন্য আন্টি তার কানের দুল জোড়া বিক্রি করে দিয়েছে শুধুমাত্র টাকার জন্য, আজ আমি যদি একটা জব করতাম তাহলে আন্টিকে তার কানের দুল জোড়া কখনোই বিক্রি করতে হত না ৷ আমি নিজেকে নিজে ক্ষমা করতে পারছিনা তাই আমি বলবো যদি পারো একটা ছোটখাটো কাজ হলেও যদি জোগাড় করতে পারো ৷”

নীলুর মুখ থেকে এত কিছু শুনে শ্রাবণ বলল
” অ্যাসিস্ট্যান্ট কাকে বলে জানিস?”
নীলুর এতগুলো কথা বলার পর শ্রাবনের মুখ থেকে এই কথাটা শুনে নীলু অবাক না হয়ে পারল না ৷ নিলু খানিকটা অবাক হয়ে বললো
” ঠিক বুঝলাম না ভাইয়া !”
শ্রাবণ আবার বলে উঠলো
” আমি বলতে চাইছি যে অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ কি সেটা বলতে পারবি?”
নীলু এবার খানিকটা উৎসাহ নিয়ে বলে উঠল
” ওহহ এটা ! এটা তো খুবই সহজ একটা উত্তর ,কেন পারব না ৷”
” তাহলে বল দেখি ৷”

” অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ হলো তার বসের সমস্ত দায়িত্ব পালন করা, যাবতীয় কাজ করা , তার অর্ডার মেনে নেওয়া ৷ কিন্তু আমার তাতে কোন সমস্যা নেই আমি ঠিক করে নেব ৷ আমার শুধুমাত্র একটা জবের প্রয়োজন ৷”
শ্রাবণ নীলুর দিকে তাকিয়ে বলল
” আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হবে নীলু ?”
নীলু কথাটা শুনে মুচকি হেসে উঠলো ৷
শ্রাবণ নীলুর হাসির দিকে খানিকক্ষণ চেয়ে থেকে বলল

“হাসাটাই স্বাভাবিক ৷ যদিও আমি জানিনা আমার ভবিষ্যতে কি আছে ৷ আমার ভবিষ্যৎ টা সম্পূর্ণ অনিশ্চিয়তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে ৷ আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়া মানে তোর নিজের ভবিষ্যৎ ও অনিশ্চয়তার মাঝে ৷তবুও আমি চাই তুই আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হ,আমার যাবতীয় দায়িত্বভার তুই নে ৷”
নীলু এবার শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল “তোমার মতে অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ কি শ্রাবণ ভাইয়া ?সেটা যদি তুমি বলতে মানে আমাকে কি কি করতে হবে সেটা যদি বলতে!”
শ্রাবণ নীলুর মাথায় হাত রেখে বলল

জলকাব্য পর্ব ১০

“আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়া মানে আমি যেখানে যাব সেখানে তুই ও যাবি, আমি যে গানের অনুষ্ঠানে যাবো তোকেও আমার সাথে সাথে যেতে হবে , আমার সাথে সাথে থাকতে হবে, আমার পাশে পাশে থাকবি তুই ৷ আমার গানের সুরে ভুল হলে সেটাও তুই আমাকে ধরিয়ে দিবি যে এখানে আমার ভুল হয়েছে , আমার ভুলক্রটি শোধরানোর দায়িত্বটা কিন্তু তোর ‌৷ এটাই হবে তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ ৷
নিলু হাতে গিটার টা তুলে নিয়ে গিটারের তারে আলতো করে ছুয়ে দিয়ে বলল
” আপনার এই আদেশ শিরধার্য হোক জাহাপনা ৷”
কথাটা বলে দুজনেই হেসে ফেললো ৷
শ্রাবণ মেঝে থেকে উঠতে উঠতে বলল

” কালকে আমার একটা অডিশন আছে , আমাকে যেতে হবে , তুই যেহেতু আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট তুইও আমার সাথে যাবি মনে থাকবে তো?”
” জো হুকুম ৷”
দুজনেই মুচকি হাসলো ৷ আরও একটা সুন্দর রাতে সাক্ষী থাকলো এই খোলা আকাশ ৷

জলকাব্য পর্ব ১২