ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ১০

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ১০
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ

তন্নি দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে তার মা আর মামার সব কথা শুনে ফেললো।সে তো ভাবতেই পারছে না এইভাবে তার মনের আশা এতো সহজে পূরণ হয়ে যাবে।নোমানকে সে সারাজীবনের জন্য আপন করে পাবে ভাবতেই তার পুরো শরীর কম্পিত হতে লাগলো।বুকের ভিতর ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেলো।এখন সে কি করে নোমানকে ভাইয়া বলে ডাকবে আর কি করেই বা তার সামনে যাবে?বিয়ে না হতেই কেমন যেনো লজ্জা লজ্জা লাগছে তার!

ঠিক সেই সময়ে নোমান এলো তন্নির কাছে।আর বললো তন্নি তুই কি আমান ভাইয়ার সাথে একাই যেতে পারবি?তোর সাথে আর একজন গেলে ভালো হতো না?
তন্নি নোমানের কথা শুনে আরো বেশি লজ্জা পেলো।সে বুঝতে পারলো নোমানও তাদের সাথে যেতে চাচ্ছে।কিন্তু সেটা পরিষ্কার করে বলছে না কেনো নোমান?তাহলে কি নোমানও তাদের দুইজনের বিয়ের কথা জানে?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

–কি হলো তন্নি?ওভাবে হা করে কি দেখছিস আমাকে?দেখিস নি কোনোদিন?
তন্নি নোমানের কথা শুনে হেসে উঠে নিচ মুখ হলো।সে কি করছে এটা?এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো নোমানের দিকে?
নোমান তন্নিকে এমন করা দেখে তার কাছে এসে তার মাথায় টেলা দিয়ে বললো,কি রে তোর হয়েছে টা কি?
এমন বিহেভ করছিস কেনো?

না বিয়ে বাড়ি যাবার আনন্দে পাগল টাগল হয়ে গেলি?
তন্নি সেই কথা শুনে হঠাৎ দৌঁড়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
অন্যদিকে নোমান বেচারা মনে মনে বলতে লাগলো,যাকেই বোঝাতে যাচ্ছি সেই বুঝতে পারছে না তাকে।কারো কি বোঝার ক্ষমতাই নাই তাকে।তার মনের কথা কেউ কি বুঝতে পারছে না?নোমান তখন উপর দিকে তাকিয়ে বললো,
One’s unlucky, Always unlucky(অভাগা যেদিকে চায়,সাগর শুকিয়ে যায়)
নোমানকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে হঠাৎ তাহমিনা চৌধুরী আসলো সেখানে,আর বললো, বাবা নোমান আজ তুমি ওয়ার্ডে যাবে না?

–না ফুপি।আজ কেনো জানি ভালো লাগছে না।
–কেনো?কি হয়েছে?শরীর খারাপ লাগছে?এই বলে তাহমিনা নোমানের কপালে হাত দিয়ে চেক করতে লাগলো।আর বললো,না তো,সব কিছু তো ঠিকই আছে।তা বাবা কেনো তোমার এতো খারাপ লাগছে আজ?
নোমান তখন তাহমিনা চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে বললো, জানি না ফুপি।আজ কেনো জানি কিছুই ভালো লাগছে না।ইচ্ছে করছে দুই তিন দিনের জন্য কোথাও গিয়ে ঘুরে আসি।আর সারাক্ষণ বই নিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে না।
তাহমিনা চৌধুরী সেই কথা শুনে বললো, তাহলে তন্নির সাথে তুমিও যাচ্ছো না কেনো?

নোমান তাহমিনা চৌধুরীর কথা শুনে যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো।খুশিতে তার চোখমুখ একদম গদগদ হয়ে গেলো। তখন সে মনে মনে ভাবলো,কেউ যেতে বললে তো সে যাবে।কিন্তু কেউ তো বলছেই না যেতে।
যাক অবশেষে কেউ একজন বুঝতে পারলো তার মনের কথা।
–কি হলো নোমান?কি এতো ভাবছো?এতো ভেবে লাভ নাই।যাও তন্নির সাথে একটু বিয়ে বাড়ি থেকে ঘুরে আসো।দেখবে মনটা একদম ভালো হয়ে যাবে।তাছাড়া কখনোই তো তুমি গ্রামের বিয়ে বাড়িতে যাও নি।গ্রামের বিয়ে বাড়িতে কিন্তু অনেক মজা হয়।একবার গেলে বার বার যেতে চাইবে।

নোমান বেশি আগ্রহ প্রকাশ করলো না।কারণ বেশি আগ্রহ দেখালে তার ফুপি ভাববে সে আগে থেকেই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে।তবে নোমান তার ফুপির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো আর একবার ভালো করে বলো ফুপি।আরেকটু জোর করো আমাকে।তুমি না বললে আর কেউ বলবে না।আমার যে খুব বেশি দেখতে ইচ্ছে করছে তানিশাকে।সরি,সরি তানিশার গ্রামকে।কি ভাবছি এসব ভুলভাল আমি।
তাহমিনা চৌধুরী হঠাৎ আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলেন।নোমান বুঝতে পারলো না কিছু।আদৌ কি তার যাওয়া হবে?ফুপি কি তার যাওয়ার একটা ব্যবস্থা করে দেবে?
রাতের বেলা সবাই যখন একসাথে খাবার খাচ্ছিলো হঠাৎ নোমানকে খাবার টেবিলে দেখে তায়েব চৌধুরী বললেন,
নোমান তুমি আজ ওয়ার্ডে যাও নি?

–না বাবা।
–কেনো?
–আজ যেতে ইচ্ছে করলো না।
–হ্যাঁ ঠিক করেছো না গিয়ে।মাঝে মাঝে একটু বিরতি নেওয়ারও দরকার আছে।তুমি তো পড়াশোনার বাহিরে আর কিছু ভাবতেই চাও না।
–জ্বি বাবা।নোমান কিছুক্ষন তার বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো, যদি তার বাবা নিজের মুখে তানিশাদের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে।কিন্তু তায়েব চৌধুরী আর একটা কথাও বললেন না।আপন মনে খাবার খেতে লাগলেন।

কিন্তু নোমান যখন দেখলো রাত পেরোলেই ঠিক ভোরে আমান আর তন্নি বের হবে বাসা থেকে,আর এখন পর্যন্ত কেউ তার যাওয়ার ব্যাপারে সিরিয়াস হলো না তখন নোমান রাগ করে খাওয়া বাদ দিয়ে টেবিল থেকে উঠে গেলো।
কিন্তু তাতেও কেউ কিছু বললো না।শুধু তার বাবা বললো,এই নোমান, খাওয়া বাদ দিয়ে যাচ্ছিস কেনো?ব্যাস,এইটুকুই।সেজন্য নোমান বুঝতে পারলো তার যাওয়া অনিশ্চিত। আর আশা করে লাভ নেই।

নোমান সারারাত ছটফট করতে করতে পার করে দিলো।এক ফোঁটা ঘুম এলো না তার চোখে। সে বুঝতে পারছে না তার এমন হচ্ছে কেনো?কেমন যেনো শূন্য শূন্য লাগছে সবকিছু।তার মনের অবস্থা প্রকাশ করার ক্ষমতা সত্যি তার নেই।যদি প্রকাশ করতে পারতো তাহলে বোধহয় এতো অসহায় লাগতো না তাকে।সারারাত নির্ঘুমে কাটিয়ে দিলো সে।
তন্নি ঠিক ভোর পাঁচটায় উঠলো।আমানও উঠেছে।দুইজন একদম পুরোপুরি রেডি।তন্নি পড়েছে সাদা আর লালের কম্বিনেশনে হাতের কাজ করা সুন্দর একটি থ্রি পিচ।

সে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়তে চাইছিলো কিন্তু তার মা বারণ করে দিলো বিধায় এই ড্রেস টা পড়েছে সে।তন্নির গায়ের কালার কিন্তু লাল ফর্সা।বেশি ধবধবে সাদা নয় সে।তবে তার চেহারায় একটা আলাদা মাধুর্য আছে।কারণ হাসলে গালে একটা টোল পড়ে।উচ্চতা ৫” ৩ এর মতো হবে।চুলগুলো বেশি বড় না।সেজন্য চুল গুলো বেশিরভাগ সময় সে খুলেই রাখে।আজ তন্নিকে একটু বেশিই সুন্দর লাগছিলো।অন্যদিকে আমান পড়েছে আকাশী কালারের শার্টের সাথে ধূসর কালারের নরমাল প্যান্ট।

সাথে আবার কালো সানগ্লাস।আমান বেশিরভাগ সময় নরমাল প্যান্টই পড়ে।কারণ সে তার বেশি উচ্চতার কারণে মন মতো প্যান্ট খুঁজে পায় না।আমানের উচ্চতা ফুল ৬ ফুট।অনেক বেশি লম্বা হওয়ার কারণে তাকে তালগাছের মতো দেখা যায়।
তন্নি আর আমান দুইজনই যখন তাদের লাগেজ নিয়ে বের হচ্ছিলো ঠিক তখনি দেখে নোমান নিজেও একদম সেজেগুজে দাঁড়িয়ে আছে।সাদা কালারের শার্ট সাথে আবার টাইট ফিটিং জিন্সের প্যান্ট পড়েছে সে।আর চোখে তার ডেইলি ব্যবহারের সেই চারকোনা ফ্রেমের অবতল লেন্সের মাইনাস পাওয়ারের চশমা।নোমান চশমা ছাড়া দূরের জিনিস ঝাপসা দেখে যার কারণে সবসময় তাকে চশমা পড়েই থাকতে হয়।নোমানের উচ্চতা ৫” ১০. আমানের থেকে দুই ইঞ্চি শর্ট হওয়ায় আমান সবসময় তাকে বেটে বলে ক্ষেপায়।আর কানা কানা করে তার কান একদম ঝালাপালা করে দেয়।

আমান আর তন্নি বেশ অবাক হলো নোমানকে দেখে।তারা বিস্ময় ভরা চোখ নিয়ে দুইজন দুইজনার দিকে তাকাতেই তায়েব চৌধুরী এসে বললেন, তোমরা রেডি?যাও তাড়াতাড়ি গাড়িতে গিয়ে বসো।
তন্নি আর আমান সেই কথা শুনে গাড়ির দিকে চলে গেলেও নোমান তার জায়গাতেই দাঁড়িয়ে রইলো।
তায়েব চৌধুরী তখন বললো, কি হলো নোমান?তুমি যাচ্ছো না কেনো?নোমান তখন একটু ঝাঁঝালো কন্ঠে বললো,বলছি তো আমি যেতে চাই না।আমার ভালো লাগে না কোনো অনুষ্ঠানে যেতে।

তায়েব চৌধুরী তখন বললো, বাবা জিদ করো না এমন।তুমি না গেলে তানিশার বাবা ভীষণ মন খারাপ করবেন।আমিও যাচ্ছি না, অন্তত তোমরা তিনজন যাও।তবুও একটু খুশি হবেন তিনি।
আসলে তহিদুল সাহেব সকালবেলা আবার ফোন করেছিলো তায়েব চৌধুরী কে।তারা কখন বের হবেন জানার জন্য?
কিন্তু তায়েব চৌধুরী যখন বললো তিনি যাচ্ছেন না তন্নি আর আমান যাচ্ছে তখন তহিদুল সাহেব বললেন,শুধু আমান আর তন্নি কেনো?নোমান বাবাজিকেও পাঠিয়ে দিয়েন।সেই কথা শুনে তায়েব চৌধুরী বললেন ঠিক আছে।আর সেজন্য তিনি সকাল সকাল নোমানকে ডেকে দিয়েছেন।

নোমান তো জেগেই ছিলো।সেজন্য তার বাবার এক ডাকেই সে উঠে পড়েছে।আর তানিশার বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে এক লাফে বিছানা থেকে নেমে রেডি হয়ে তার কাপড়চোপড় প্যাক করাও শেষ করেছে।
এখন যাওয়ার সময় হয়ে গেছে তাদের।এতোক্ষণ দিয়ে নোমান বলতেছে,বাবা আমাকেও যেতে হবে?আমি না গেলে হয় না?

তায়েব চৌধুরী তখন বললো, আবার সেই একই কথা।যাও গাড়িতে গিয়ে বসো।
এদিকে নোমানের মনে তো খুশির ঠেলায় লাড্ডু ফুটতেছে।
নোমান গাড়িতে বসতেই আমান বললো,মুখখানা ওমন ভার করে আছিস কেনো?এভাবে জোর করে যাওয়ার কি দরকার ছিলো?যেতে যখন মন চাইছেই না তাহলে যাস না।তাই না তন্নি?
তন্নি সেই কথা শুনে হেসে উঠে নিচমুখ হলো।কারন নোমানের মুখ খান দেখে সত্যি তার হাসি পাচ্ছে।কেমন হুতুম প্যাঁচার মতো চুপটি করে বসে আছে।বোঝাই যাচ্ছে তাকে জোর করে পাঠানো হচ্ছে।

নোমান মনে মনে ভাবতেছে তার ডাক্তার হওয়ার পাশাপাশি সে এক্টর হলেও ভালো কিছু করতে পারতো।কি মারাত্মক রকমের এক্টিং জানে সে?একদম নিঁখুত অভিনয়।বোঝাই যাচ্ছে না মনে মনে সে খুশির ঠেলায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।তার মন শুধু বলছে কখন বের হবে তানিশাদের বাড়ি।আর কখন সে তানিশাকে দেখতে পাবে।সরি তানিশার বড় বোনকে।যার বিয়ে তে সে যাচ্ছে।

নোমানের মনে বার বার তানিশার কথা কেনো আসছে সত্যি সে বুঝতে পারছে না।
সে তো তানিশার গ্রাম,এলাকা,এলাকার মানুষ জন কে দেখতে যাচ্ছে।তানিশা কে দেখার মোটেও ইচ্ছে নাই তার।
নোমানকে এমন বিড়বিড় করা দেখে আমান বললো,কি রে পড়া মুখস্ত করছিস নাকি?তা দুই চারখানা বই সাথে নিলেও তো পারতিস।তাহলে এভাবে বিড়বিড় করা লাগতো না।আমরা বিয়ে বাড়িতে মজা করতাম আর তুই বই হাতে নিয়ে বিড়বিড় করে পড়তিস।

তন্নি আমানের কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠলো।
ঠিক তখনি নোমান তার ব্যাগের চেন খুলে সত্যি সত্যি একটা বই বের করলো।আর চুপচাপ দেখতে লাগলো।
আমান নোমানকে এভাবে বই পড়া দেখে বললো,তুই ভালো হবি না জীবনে?তুই সত্যি সত্যি বই নিয়ে এসেছিস?বিয়ে বাড়িতে বই নিয়ে যেয়ে কি করবি?

–ভাইয়া ডিস্টার্ব করো না প্লিজ।আমার বিষয় আমাকেই ভাবতে দাও।
আমান সেই কথা শুনে কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে গান শুনতে লাগলো।
আর তন্নিকে চুপচাপ থাকা দেখে বললো, তুই বসে আছিস কেনো?তুই ও বই বের করে পড়া শুরু কর।
তন্নি সেই কথা শুনে বললো না আমি পড়বো না।

–তাহলে গান শোন।এই বলে আমান আরেকটা ইয়ার ফোন তন্নির দিকে ছুঁড়ে মারলো।
নোমান বই হাতে আর আমান,তন্নি গান শুনতে শুনতে পাঁচ ঘন্টার রাস্তা পারি দিলো।তারা সাতটায় গাড়িতে উঠে ঠিক বারোটায় তানিশাদের গ্রামে পৌঁছলো।কিন্তু তানিশাদের বাড়ির রাস্তা আসলে কোনটা সেটা বুঝতে পারলো না কেউ।তানিশা আজ যেহেতু একটু ব্যস্ত সেজন্য তারা তাকে ফোন করে আর বিরক্ত করলো না।
আমান এবার ড্রাইভার কে গাড়ি থামিয়ে দিতে বললো আর জানালা খুলে উঁকি মেরে লোকজন খুঁজতে লাগলো।হঠাৎ একদল পিচ্চি ছেলে গাড়ি দেখে এগিয়ে আসলে আমান বললো,তানিশাদের বাড়ি কোনটা?

তখন এক পিচ্চি বললো কোন তানিশা?
তখন ঐ দলেরই অন্য আরেক পিচ্চি আবার আরেক পিচ্চিকে বলছে,মনে হয় ডাক্তার ম্যাডামের কথা কচ্ছে।
আমান ডাক্তার ম্যাডাম নাম শুনে বললো হ্যাঁ হ্যাঁ ডাক্তার ম্যাডামের বাড়ি।
আসলে তানিশাকে যে তার এলাকার সবাই এখন ডাক্তার ম্যাডাম নামে চেনে সেটা আমান ভালো করেই জানে।তন্নিও জানে এটা।কারণ তানিশা নিজেই এ কথা বলেছে তাদের।সেজন্যই তো আমান ফেক আইডি দিয়ে মেসেজ দেওয়ার সময় ডাক্তার ম্যাডাম সম্বোধন টি ব্যবহার করেছিলো।

তবে নোমান আজ দিয়ে ফাস্ট শুনলো যে তানিশাকে সবাই ডাক্তার ম্যাডাম বলে ডাকে।নোমান তখন মনে মনে ভাবতে লাগলো ফাইনাল ইয়ারে উঠেও আজ পর্যন্ত কেউ তাকে বললো না এই ছেলেটি ডাক্তার হতে চলেছে, আর তানিশা ফাস্ট ইয়ারেই ডাক্তার ম্যাডামের উপধি পেয়ে গেছে!সত্যি মেয়েটা সৌভাগ্যবান।
পিচ্চি ছেলেগুলোর সহায়তায় নোমানরা তানিশার বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগলো। গাড়ি নিয়ে গ্রামের ভিতর ঢোকা যাবে না বলে।কারণ গ্রামে ঢোকার রাস্তাটি ভীষণ চিকন ছিলো। সেজন্য তারা এখানেই নেমে গেলো।আর ড্রাইভার গাড়িটি একটা প্রাইমারি স্কুলের মাঠে পার্কিং করলো।

তানিশাদের গ্রামের নাম ছিলো সুন্দর পুর।আসলেই গ্রামটি ভীষণ সুন্দর।সেজন্যই বোধ হয় এ গ্রামের নাম সুন্দরপুর রাখা হয়েছে। গ্রামের পাশেই রয়েছে একটি বড় ঝিল।যাতে নানা রকমের পদ্ম আর শাপলা ফুটে আছে।গ্রামের চারপাশে রয়েছে সবুজের মেলা।বিভিন্ন রকমের ফলমূলের গাছ,শাকসবজি,আর হরেক রকমের পাখির ডাক গ্রামটিকে করে তুলেছে যেনো এক শান্তির দ্বীপ।বিশাল এক ফলের বাগানের মধ্য দিয়ে তারা তানিশার বাড়িতে ঢুকলো।

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ৯

এই ফলের বাগানটি ছিলো তানিশার বাবার।এই বাগানে খেলাধুলা করেই তানিশার শৈশব কেটে গেছে।তানিশা তাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করেছে আর নিকটতম এক হাইস্কুলে তার মাধ্যমিক লেভেল পার করেছে।কিন্তু তহিদুল সাহেব যখন দেখলেন তার মেয়ে যথেষ্ট মেধাবী আর পড়াশোনায় ভীষণ মনোযোগী তখন তিনি তানিশাকে ঢাকার কলেজে ভর্তি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন।ঢাকার কলেজে ভর্তি হয়েই তানিশা আজ এতোদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে।

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ১১